#গল্পের_নাম_প্রেমের_শুরু
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ৩
ইলহাম বাসায় পৌছে কলিংবেজে টিপ দিলো কিছুক্ষন পর হেমন্তি এসে দরজা খুলে দিলো।ইলহাম একনজর হেমন্তির দিকে তাকিয়ে দেখলো হেমন্তির শাড়ির আঁচল তার কোমড়ে গুজে রাখা আর হাতে বেসন লাগা আছে।ইলহামের বুঝতে বাকি রইলোনা হেমন্তি কাজে ব্যস্ত হেমন্তি দরজা থেকে সরে দাড়ালো ইলহাম বাসায় প্রবেশ করে দরজাটা লাগিয়ে দিলো।হেমন্তি ইলহামের দিকে তাকিয়ে বললো,
~আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন আমি শরবত করে দিচ্ছি।
ইলহাম কিছু না বলে কাধের ব্যাগটা শক্ত করে ধরে রুমের দিকে চলে গেলো।হেমন্তি রান্নাঘরে গিয়ে সবজির পাকোরা সব ভেজে একটা প্লেটে সাজিয়ে হাত ধুয়ে নিলো।তারপর শরবত বানানোর কাজে লেগে পরলো নরমাল পানি দিয়ে লেবুর শরবত বানিয়ে সে ট্রেতে করে পাকোরা আর শরবত নিয়ে রুমের দিকে চলে গেলো।ইলহাম ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় পা উঠিয়ে বসে আছে হেমন্তি রুমের দরজা ঠেলে রুমে প্রবেশ করে বিছানার পাশের টেবিলে খাবার রেখে দিলো।ইলহাম হেমন্তির দিকে তাকিয়ে বললো,
~ব্যাগটা একটু আমার কাছে নিয়ে আসো তো।
হেমন্তি ওয়ারড্রবের উপর থেকে ব্যাগটা এনে ইলহামের পাশে রাখলো ইলহাম ব্যাগের সামনের পকেট থেকে অনেকগুলো বেলীফুলের মালা বের করলো।ইলহামের হাতে বেলীফুলের মালা দেখে অনেকটাই অবাক হয়ে গেলো।ইলহাম হাতে থাকা বেলীফুলগুলো হেমন্তির দিকে এগিয়ে দিয়ে ইশারা করলো সেগুলো নিতে।হেমন্তি কাঁপা কাঁপা হাতে সেগুলো নিয়ে বললো,
~বেলীফুলগুলো আমার পছন্দ এটা আপনি জানলেন কী করে?
কথাটি বলে বেলীফুলগুলো নাকের সামনে নিয়ে তার মনোমুগ্ধকর ঘ্রাণ নিতে লাগলো।হেমন্তির মুখে প্রশান্তির ছাপ দেখে ইলহাম তার দিকল একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।এতো ছোট্ট একটা উপহার পেয়ে যে কোনো মানুষ এতোটা খুশি হতে পারে তা ইলহামের জানা ছিল না।
এই পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যারা তাদের প্রিয় মানুষের থেকে দামী উপহার আশা করেনা। তারা আশা করে যাতে তাদের প্রিয় মানুষ একটু পাশে বসে তাদের সাথে সময় কাটায়।ছোট ছোট উপহার দিয়ে তাদের মনটাকে খুশি করে দেক এমন মানুষেরা মনের প্রশান্তির জন্য তাদের প্রিয়জনকে খুজে।
ইলহামকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে হেমন্তি একটু লজ্জা পেয়ে বললো,
~আমি এখান থেকে একটা মালা আমার খোঁপায় পরি?
হেমন্তির প্রশ্নে ইলহামের ঘোর কাটে সে মুচকি হেসে বললো,
~তোমার উপহার তুমি যেভাবে চাও সেভাবে ব্যবহার করবে।
হেমন্তি মালাগুলো নিয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে পরলো সেগুলে একজায়গায় রেখে চুলগুলো একটানে খুলে ফেললো।হেমন্তির ঘনকালো চুল তার কোমড় ছাড়িয়ে গেলো ইলহাম শরবতের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে আর এই দৃশ্য দেখে যাচ্ছে।হেমন্তি চুলগুলো সুন্দর করে খোপা করলো তারপর চুলের পিন দিয়ে বেলীফুলের মালাটি খোঁপায় বেঁধে নিজেকে আয়নায় দেখতে লাগলো।
বিয়ের ৬মাসে স্বামীর কাছ থেকে এতো সুন্দর একটা উপহার পেয়ে সে অনেক খুশি।ইলহাম যে তার পছন্দের খেয়াল রেখেছে এটাতেই সে মহাখুশি যদি সে পারতো তাহলে এই বেলীফুলগুলোকে সারাজীবন আগলে রাখতো কিন্তু সেটা সম্ভব নয় একদিন এটি ঝড়ে যাবে।হেমন্তি আয়নায় নিজেকে দেখে ইলহামের দিকে ফিরে তাকিয়ে বললো,
~ধন্যবাদ এতো সুন্দর উপহার দেওয়ার জন্য।
ইলহাম হেসে বললো,
~আমার কাছে আসো তো তুমি।
হেমন্তি ইলহামের কথা শুনে গুটিগুটি পায়ে তার কাছে গিয়ে দাড়ালো ইলহাম হেমন্তির পিছে গিয়ে দাড়িয়ে তার খোঁপায় লাগা বেলীফুলটাকে আরো সুন্দর করে পড়িয়ে দিয়ে বললো,
~আপন মানুষদের ধন্যবাদ দিতে হয় না তাদের কাছাকাছি থাকতে হয় তাহলেই সে আপন মানুষগুলো খুশি থাকে।
এতটুকু বলে ইলহাম ঘর থেকে বের হয়ে গেলো হেমন্তি এখনো সেভাবেই দাড়িয়ে আছে সে ইলহামের কথা একটু হলেও বুঝতে পেরেছে হেমন্তি মুচকি হেসে বারান্দায় গিয়ে দাড়িয়ে পরলো তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো,
~আমার একলা আকাশে চাঁদের খোজ পাওয়া গেছে।
যার আলোয় আমার রাত হবে আলোকিত।
______♥_______
রাত ১০টায় ইলহাম বাসায় ফিরলো হেমন্তি ইলহামকে দেখে টেবিলে রাতের খাবার সাজাতে লাগালো।ইলহাম হাত-মুখ ধুয়ে টেবিলে বসে পরলো হেমন্তির দিকে একবার তাকিয়ে দেখলো তার খোঁপায় এখনো সেই বেলীফুলে সোভা পাচ্ছে।হেমন্তি ইলহামকে খাবার দিয়ে নিজে অন্য একটা চেয়ারে বসে পরলো ইলহাম কোনো কথা না বলে খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।দুজনই নিঃশব্দে খাওয়া শেষ করলো ইলহাম চেয়ার ছেড়ে উঠে হাত ধুয়ে রুমে চলে গেলো।হেমন্তি সকল কিছু গুছিয়ে রুমে আসতেই ইলহামকে কোথাও না দেখে বারান্দার দিকে নজর পরলো।
হেমন্তি ধীর পায়ে বারান্দার দরজা ঠেলে সেখানে চলে গেলো।ইলহাম বুকে হাত গুজে অসীম আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে হঠাৎ কারো উপস্থিতি টের পেয়ে নিজের পাশে তাকিয়ে দেখলো হেমন্তি দাড়িয়ে আছে।ইলহামের তাকানো দেখে হেমন্তি অতি শান্ত গলায় বললো,
~মা ফোন করেছিল পরশুদিন কেয়াকে দেখতে আসবে ছেলে নিজে আসবে তাই মা চাচ্ছে আমরাও সেখানে উপস্থিত থাকি।
হেমন্তির কথা শুনে ইলহাম ভ্রুকুচকে বললো,
~কেয়া তো এবার মাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলো এখনই?
হেমন্তি বললো,
~মা বললো ছেলে ভালো আর কেয়ার মতামত দ্বারাই সব কিছু হবে।
ইলহাম দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
~তাহলে ঠিক আছে আমরা যাবো।
হেমন্তি বললো,
~আপু আর ফারুক ভাইকেও নিয়ে যেতে বলেছে।
ইলহাম বললো,
~আমি ফোন করে বলে দিবো।
তাদের কথোপকথন এ পর্যন্তই রয়ে গেলো দুজনই নিরব হয়ে আছে হঠাৎ ইলহাম হেমন্তিকে জিজ্ঞেস করলো,
~আচ্ছা আমাদের বিয়েতে কী তোমার মতামত ছিল?
এই নিরবতার মাঝে ইলহামের এমন প্রশ্ন শুনে হতবাক হেমন্তি সে ইলহামের দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করে বললো,
~বিয়েতে মতামত না দিলে বিয়ে হলো কী করে?
ইলহাম বললো,
~আমি যখন তোমাকে দেখতে গিয়েছিলাম তখনতো তুমি আমার দিকে একবারও তাকাওনি না দেখেই বিয়েতে রাজি হয়ে গেলে কীভাবে?
ইলহামের প্রশ্ন শুনে হেমন্তি খিলখিল করে হেসে উঠলো সে মুক্তোঝরানো হাসি দেখে ইলহামের বুকে এক অজানা সুখ অতিবাহিত হলো।হেমন্তি হাসি বন্ধ করার চেষ্টা করলো তবুও তার হাসি থামছেনা অনেক প্রচেষ্টার পর তার হাসি থামলো তারপর সে বললো,
~আপনি হয়তো জানেন না হিয়া আপু আগেই আপনার ছবি আমাকে জোর করে দেখিয়ে ছিলেন।আমি তো এ পর্যন্ত বলে ছিলাম কেন একজন পরপুরুষের ছবি আমি দেখবো?হিয়া আপু তবুও জোর করে আপনার ছবি দেখিয়ে তারপর আমার বাসা থেকে চলে আসেন।
ইলহাম হতবাক হলো হেমন্তির কথা শুনে হেমন্তি বললো,
~আর একটা মেয়ে কী পারবে তাকে দেখতে আসা ছেলের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে?
ইলহাম আলতো হেসে বললো,
~তাও ঠিক।আমার ছবি দেখে তোমার মতামত কী হলো প্রথমে?
হেমন্তি বললো,
~গুরুগম্ভীর মুখটায় আলাদা মায়া আছে।
ইলহাম দুষ্ট হেসে বললো,
~তাই নাকি?
হেমন্তি বললো,
~এই কথাটা কেয়া বলেছিল যাতে মা রাজি হয়ে যায়।
ইলহামের মুখটা চুপসে গেলো সে গাল ফুলিয়ে বললো,
~এর মানে মা আমাকে পছন্দ করেনি প্রথমে?
হেমন্তি বললো,
~আগে করেনি এখন করে একদম নিজ ছেলের মতো করে আপনাকে ভালোবাসে।
ইলহাম মুচকি হাসলো হেমন্তি বললো,
~ঘুমাবেন না?
ইলহাম বললো,
~তুমি যাও আমি আসছি।
হেমন্তি আর কথা না বলে রুমে চলে আসে ইলহাম বিড়বিড় করে বলে উঠলো,
~আর আমি যে প্রথম দেখায় তোমার প্রতি আসক্ত হয়ে পরেছি তা কীভাবে তোমাকে বোঝাবো?তোমার সেই মায়াবী চেহারা আমাকে ঘুমাতে দেয়নি হেমন্তি তুমি আমার কাছে আসার পর থেকে এতো শান্তির ঘুম আমি দিয়েছি যেখানে স্বর্গসুখ আমি পেয়েছি।
______♥______
সকালে ইলহাম অফিস যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে হেমন্তি রুমে এসে ইলহামকে দেখে বললো,
~নাস্তা রেডি করা আছে টেবিলে সাজিয়ে রেখেছি।
বলেই হেমন্তি বিছানায় শুয়ে পরলো ইলহাম অনেকটা অবাক হলো কারণ হেমন্তি এসময় তো কখনো শুয়ে থাকেনা।ইলহাম ধীরপায়ে হেমন্তির পাশে এসে দাড়িয়ে বললো,
~তোমার কী শরীর খারাপ?
হেমন্তি বললো,
~নাহ তেমন কিছু না।
ইলহাম বললো,
~আমার তো দেখে মনে হচ্ছে তোমার শরীর ভালো না।
হেমন্তি কাঁথার নিচে মাথা ডুকিয়ে বললো,
~আপনি বুঝবেন না।
ইলহাম এবার রেগে গিয়ে বললো,
~কী বুঝবোনা? তুমিই তো বুঝাতে চাইছোনা।
হেমন্তি ইলহামের কথায় একটু কেঁপে উঠলো আর বললো,
~আমার পেটে ব্যাথা।
ইলহাম হেমন্তির পাশে বসে বললো,
~বাহিরের খাবার খেয়েছো?
হেমন্তি কাঁথা থেকে মাথা বের করে বললো,
~আপনি এই ব্যাথার কারণ বুঝবেন না।
ইলহাম বললো,
~তাহলে ডাক্তার তো বুঝবে চলো ডাক্তারের কাছে।
হেমন্তি বললো,
~কোনো ডাক্তারের প্রয়োজন নেই দিন কাটলে এভাবেই চলে যাবপ আপনি নাস্তা করে অফিসে যান।
বলে সে আবার কাঁথার নিচে মাথা লুকালো ইলহাম হেমন্তি কাঁথা টেনে ধরে বললো,
~আমি কোনো কথা শুনছিনা তুমি এখনই আমার সাথে হাসপাতালে যাবে।
হেমন্তি এবার রেগে গিয়ে বললো,
~আপনি আপুকে ফোন করে জিজ্ঞেস করুন।
ইলহাম বললো,
~এটাতে হিয়া কী করবে?
হেমন্তি বললো,
~আপুই আপনাকে বুঝাবে।
ইলহাম এবার আর জোরাজোরি না করে মোবাইল বের করে হিয়াকে ফোন করলো দুবার রিং বাজতেই হিয়া রিসিভ করে বললো,
~কী খবর?
ইলহাম বললো,
~হেমন্তির পেট ব্যাথা না সে ওষুধ খাবে না সে ডাক্তারের কাছে যাবে।
হিয়া সিচুয়েশন বুঝতে পেরে বললো,
~কিছু করতে হবে না এটা মেয়েলি সমস্যা সময় হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
ইলহামের এবার টনক নড়লো সে কিছু না বলে ফোন রেখে দিলো।হিয়া বুঝতে পেরে ফোন রেখে নিজ কাজে চলে গেলো ইলহাম হেমন্তির কাছে এসে বললো,
~যদি কোনো কিছুর প্রয়োজন হয় আমাকে ফোন করবে।
হেমন্তি কাঁথা থেকে মাথা উঠিয়ে বললো,
~আপনার ফোন নাম্বার নেই আমার কাছে।
ইলহাম হতবাক হলো হেমন্তির কথায় আসলে তার কাছেও হেমন্তির নাম্বার নেই।ইলহাম হেমন্তির মোবাইল খুজে নাম্বার সেভ করে দিলো আর বললো,
~নাম্বার সেভ করে রেখেছি ফোন করবে দরকার পরলে।
হেমন্তি মাথা দুলালো ইলহাম অফিসের ব্যাগ নিয়ে নাস্তা সেরে সোজা অফিসের জন্য বের হয়ে আসলো।হেমন্তি অনেক কষ্টে দরজা লাগিয়ে আবার বিছানায় এসে শুয়ে পরলো।
______♥______
হিয়া তার শাশুড়ীর পায়ে মালিশ করে দিচ্ছে তার শাশুড়ি মহীমা বেগম হিয়ার হাত ধরে বললেন,
~আর মালিশ করতে হবে না মা তুমি যাও রেস্ট করো।
হিয়া মহীমা বেগমের পাশে শুয়ে বললো,
~একা একা কী করবো আমি তাই তো আপনাকে একটু জ্বালাতন করতে চলে আসি।
মহীমা বেগম হিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
~তোমাকে দেখলে আমার মেয়ের আশা পূরণ হয়ে যায়।
হিয়া মহীমা বেগমের হাতে চুমো খেয়ে বললো,
~আপনি যে আমার মায়ের অভাব পূরণ করছেন আমার মনটা যেসময় মায়ের জন্য হাহাকার করে তখন আপনার কাছে ছুটে আসি।
মহীমা বেগম বললেন,
~আমার দোওয়ার তোমার জন্য খোলা মা তুমি আমার চোখের মণি।
ফারুক ঘরের দরজার আড়ালে দাড়িয়ে এ দৃশ্য দেখে অনেক খুশি বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক যে এতোটা সুন্দর হতে পারে তা এদের দেখলে বোঝা যায়।ফারুক মুচকি হেসে নিজ রুমে চলে গেলো হিয়া মহীমা বেগমের কাছেই শুয়ে রইলো।
ইলহাম বাসায় ফিরলো বিকেলে সাথে করে একজন মহিলা নিয়ে আসলো।হেমন্তি এই মহিলাকে দেখে অবাক হলো সেই মহিলা পান খাওয়া লাল দাঁত বের করে হেসে বললো,
~ভাবিজান,আইজ থেইকা আমি সব কাম করুম আফনে বয়া থাকবেন।
হেমন্তি সেই মহিলার কথা শুনে একবার ইলহামের দিকে তাকালো ইলহাম বললো,
~ইনি হচ্ছেন ফিরোজা আপা সবার বাসায় উনি কাজ করেন এখন থেকে এই বাসায়ও করবেন।
হেমন্তি বললো,
~আপনি একটু ভিতরে আসুন তো।
ইলহাম আর হেমন্তি রুমে এসে পরলো হেমন্তি বললো,
~কী দরকার ছিল ওনার আমি সব কাজ করছি তো।
ইলহাম বললো,
~এত কথা বলবেনা আজ শরীর খারাপ নিয়েও কাজ করেছো এসব আর করতে হবেনা।এই আপা তোমার সাহায্য করবে রান্নাটা তুমিই করবে তোমার হাতের খাবার খেতে খেতে আমি অভস্ত্য।
ইলহাম এতটুকু বলে ওয়াশরুম চলে গেলো হেমন্তি ইলহামের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বাহিরে গিয়ে ফিরোজাকে বললো,
~আপা,আপনি কাল সকালে চলে আসবেন।
ফিরোজা খুশি মনে চলে যেতেই হেমন্তি দরজা বন্ধ করে রুমে চলে আসলো কিছুক্ষণ পর ইলহাম ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বললো,
~তোমার পেট ব্যাথার জন্য মেডিসিন এনেছি চিন্তা করোনা মেইন সমস্যা বলেই মেডিসিন এনেছি খেয়ল নিবে।
হেমন্তি বললো,
~ঠিক আছে।
ইলহাম বললো,
~রাতের রান্না করতে হবে না বাহির থেকে খাবার আনিয়ে নিবো।এখন তুমি শুয়ে থাকো
হেমন্তিও শুয়ে পরলো ইলহাম কাঁথা তার শরীরের ওপর দিয়ে দিলো ইলহাম তার পাশে বসে রইলো।হেমন্তির এতো অসুস্থতার মধ্যেও অনেক ভালো লাগছে ইলহামের কেয়ার দেখে এই মুর্হুত গুলো যাতে এখানেই থেমে যায় এটাই হেমন্তির ইচ্ছা।
#গল্পের_নাম_প্রেমের_শুরু
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ৪
ভোরের আলো চারপাশে ছড়িয়ে পরেছে পাখিরা নিজ বাসা ছেড়ে উড়াল দিয়েছে অন্য এক গন্তব্যে। শীতের ভোর তাই মানুষের আনাগোনা কম ইলহামের ঘুমটা আজ আগেই ভেঙ্গেছে ঘুমের রেশ কেটে যেতেই সে খেয়াল করলো হেমন্তি তার অতি নিকটে ঘুমিয়ে আছে।একহাত হেমন্তির গালের নিচে দেওয়া ইলহামের কাছে হেমন্তিকে এখন নিষ্পাপ এবং পবিত্র যুবতী লাগছে।ইলহাম হেমন্তির কপাল থেকে চুলগুলো সরিয়ে নিজের অজান্তেই তার ওষ্ঠজোড়া হেমন্তির কপালে ঠেকালো।তখনই হেমন্তি চোখ খুলে ফেললো কিন্তু সে এই পরিস্থিতির স্বীকার হবে তা তো জানতোনা।ইলহাম হেমন্তির কপাল থেকে নিজ ওষ্ঠজোড়া সরাতেই তার চোখ হেমন্তির চোখের উপর পরলো।হেমন্তি ইলহামের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে ইলহাম তার চাহনি দেখে মুচকি হেসে অতি শান্তস্বরে বললো,
~তোমার পেট ব্যাথা কমেছে?
হেমন্তির কানে কোনো কথা পৌছাইনি সে এখনো ইলহামের দিকে তাকিয়ে আছে সে এখনো আশ্চর্যের চরম লেভেলে আছে।ইলহাম হেমন্তির কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বললো,
~আমাকে দেখতে ভালো লাগে তোমার তাতো জানা ছিলনা।
ইলহামের এমন কথায় হেমন্তির ঘোর কাটলো সে ইলহামকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দিয়ে নিজে উঠে বসলো।নিজের দিকে তাকিয়ে শাড়ি ঠিক করে বললো,
~এমন কোনো কিছু না ঘুমের রেশ কাটতে সময় লেগেছে তাই।
ইলহাম আলতো হেসে হেমন্তির হাত নিজের হাতে নিয়ে বললো,
~আমি কী জিজ্ঞেস করেছিলাম?
হেমন্তি বললো,
~কমেছে।
ইলহাম বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে বললো,
~আজ তো কেয়াকে দেখতে আসবে তুমি কী যেতে পারবে সে বাসায়?
হেমন্তি বললো,
~হ্যা যেতে পারবো।
ইলহাম বললো,
~ঠিক আছে আমি হিয়াদের জানিয়ে দিয়েছি তারা বিকেলে চলে আসবে।
হেমন্তি বললো,
~বিকেলে কেন দুপুরে আসতে বলতেন?
ইলহাম বললো,
~তোমার শরীরটা ভালো না তাই হিয়া মানা করেছে।
হেমন্তি আর কিছু না বলে বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ালো তখনই ইলহাম বললো,
~এ কয়েকদিন শাড়ি না পরে কামিজ পরো। এতে তোমার সুবিধা হবে
হেমন্তির লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে এ লোকটার মুখে কেন কিছু আটকায়না নাকি বুঝে শুনে এ কাজ করে যাতে সে লজ্জায় পরে।হেমন্তি বললো,
~আপনার এসব ভাবতে হবে না আপনি ঘুমান অফিসের টাইম এখন পর্যন্ত হয়নি।
বলেই হেমন্তি নিজ প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো ইলহাম মুখে হাসি বজায় রেখে চোখ বন্ধ করে ফেললো।
হেমন্তি ওয়াশরুম থেকে বের হতেই কলিংবেল বেজে উঠলো হেমন্তি একবার ভাবলো এতো সকালে কে আসলো?পরক্ষণেই তার মনে পরলো ফিরোজার কথা হেমন্তি টাওয়ালটা বারান্দায় দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে দরজা খুলে দিলো।ফিরোজা একটা হাসি দিয়ে বললো,
~ভাবিজান,আমি কী লেইট কইরা ফালাইসি?
হেমন্তি মুচকি হেসে বললো,
~নাহ।
ফিরোজা বাসায় প্রবেশ করে বললো,
~দ্যান আপনাগো জামা কাফর দ্যান আমি ধুইয়া দিতাসি।
হেমন্তি বললো,
~এই যে বাহিরের ওয়াশরুমে রাখা আছে আপনি ধুয়ে ওই ঘরের বারান্দায় শুকাতে দিয়ে দিন।
ফিরোজা হেমন্তির কথা মতো কাজ করতে লাগলো হেমন্তি রান্নাঘরপ গিয়ে ইলহামের জন্য নাস্তা তৈরি করতে লাগলো। পাশাপাশি ইলহামের দুপুরের খাবারও তৈরি করতে লাগলো ফিরোজা নিজ কাজ শেষ করে হেমন্তির কাছে এসে বললো,
~ভাবিজান,কাফর ধুয়া শেষ আফনে দ্যান সবজি গুলা কাইট্টা দেই।
ফিরোজা হেমন্তির হাত থেকে সব সবজি নিয়ে নিজে কাজ করতে লাগলো।হেমন্তি রুমে চলে আসলো ইলহামের সব প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে দিয়ে। ইলহামকে ডাকতে লাগলো,
~এই যে উঠুন নাহলে দেরি হয়ে যাবে।
ইলহাম আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে বসলো হেমন্তি বিছানা থেকে সরে আসতে নিলে ইলহাম তার হাত ধরে ফেললো আর বললো,
_____♥_____
~এখন তো তোমার কাছে কোনো কাজ থাকার কথা না তাহলে রুম থেকে বের হচ্ছো কেন?
ইলহামের এমন উদ্ভট কান্ডে হেমন্তি বার বার অবাক হচ্ছে হেমন্তির মনে হয় হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাবে ইলহাম হেমন্তিকে নিজের কাছে টেনে তার খোঁপা করা চুল গুলো খুলে দিয়ে বললো,
~তোমার খোলা চুলগুলো আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।
হেমন্তি এবার মুখ খুললো সে বললো,
~আপনার কী জ্বর এসেছে?এমন উদ্ভট কথা কেন বলছেন?
ইলহাম বললো,
~তোমার কাছে এগুলো উদ্ভট কেন লাগছে?আমি কী তোমার সাথে কথা বলতে পারিনা।
হেমন্তি নিজেকে ইলহাম থেকে ছাড়িয়ে বললো,
~আপনি রেডি হয়ে যান নাস্তা টেবিলে রাখা আছে।
বলেই সে গটগট করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো ইলহাম হেমন্তির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে বিছানা থেকে নেমো শিস বাজাতে বাজাতে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
হেমন্তি রান্নাঘরে এসে ঘনঘন নিশ্বাস নিতে লাগলো তা দেখে ফিরোজা বললো,
~ভাবিজান,আপনার কী শরীরডা খারাপ লাগতাসে?
হেমন্তি হাসার চেষ্টা করে বললো,
~নাহ আপু তেমন কিছু না আপনি কাজ করুন।
ফিরোজা নিজ কাজে মনোযোগ দিলো ইলহাম রেডি হয়ে টেবিলে এসে বসলো কোথাও হেমন্তিকে না দেখে জোরে হেমন্তির নাম ধরে ডাকলো,
~হেমন্তি হেমন্তি।
হেমন্তি ইলহামের ডাক শুনে ভয় পেয়ে গেলো না জানি আবার কী করবে?ফিরোজা দুষ্ট হেসে বললো,
~ভাইজান তো আফনারে ছাড়া কিচ্ছু বুঝেনা আমার জামাইটা এমন নাহ সারাদিন কামে ব্যস্ত থাহে।
হেমন্তি ফিরোজার কথায় কান না দিয়ে গুটিগুটি পায়ে টেবিলের কাছে এসে চেয়ার ধরে দাড়িয়ে বললো,
~কী হয়েছে?
ইলহাম বললো,
~আমি কী একা এতো খাবার খাবো?আমি কী রাক্ষস?
হেমন্তি বললো,
~আসতে কথা বলুন ঘরে আরেকজনও আছে।
ইলহাম বললো,
~আমার সাথে নাস্তা করবে।
হেমন্তি বললো,
~ফিরোজা আপুর সাথে করবো।
ইলহাম বললো,
~তাকেও ডাক দেও একসাথে খাবো।
হেমন্তি ফিরোজাকে ডেকে নিয়ে আসলো তারা তিনজন একই সাথে নাস্তা করলো।নাস্তা শেষে ফিরোজা বললো,
~আমি এই ঢাকা শহরে কাম করি ৭বছর ধইরা কেউ এমন টেবিল চেয়ারে বইয়া খাওন খাওয়ায় নাই আফনারা অনেক ভালা মানুষ।
হেমন্তি আর ইলহাম বুঝতে পারলো ফিরোজা একটু ইমোশনাল হয়ে গেছে।ইলহাম হেমন্তির হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে অফিসের জন্য রওনা দিবে তার আগে ইলহাম বললো,
~আমি বিকেলে চলে আসবো তৈরি থেকো।
হেমন্তি মাথা দুলালো ইলহাম মুচকি হেসে হেমন্তির গালে হাত বুলিয়ে চলে গেলো হেমন্তি অবাক হতে হতে আজ মারাই যাবে।
ফিরোজা নিজ কাজ শেষ করে চলে গেলো হেমন্তি সেই একাই বাসায় রয়ে গেলো দুপুরে হেমন্তির ফোন বেজে উঠলো হেমন্তি ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলো ইরিনা বেগম ফোন করেছেন সে ফোন রিসিভ করতেই ইরিনা বেগম বললেন,
~হেমন্তি,তোর সুমনা ফুফু এসে পরেছে এখন কী হবে?
ইরিনা বেগমের কথায় হেমন্তি ঘাবড়ে গেলো কারণ সুমনার ছেলে আরফানের সাথে হেমন্তির বিয়ের কথা ছিল কিন্তু আরফানের চালচলন ভালো ছিলনা বলে হেমন্তির বাবা এই বিয়েতে রাজি হলোনা।হেমন্তিরও এই ছেলেকে পছন্দ ছিল না আরফান যদি ইলহামের সামনে কিছু করে ফেলে তখন কী হবে?
_____♥______
হেমন্তি বললো,
~মা,আমি আসবোনা।
ইরিনা বেগম বললেন,
~এভাবে বলিস না কেয়া রাগ করবে তোর ফুপি যে আসবে তা আমরা জানতাম না হঠাৎ করেই এসে হাজির।
হেমন্তির টেনশনে গলা শুকিয়ে গেলো সে একটুতেই ঘাবড়ে যায় তার হাত-পা কাঁপতে লাগলো।
সে ফোন রেখে বিছানায় বসে পরলো হঠাৎ তার ফোন আবার বেজে উঠলো হেমন্তি ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলো ইলহামের নামটা জ্বলজ্বল করছে।হেমন্তি কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটি রিসিভ করে কানে রাখতেই ইলহাম বললো,
~কী করছো?খাবার খেয়েছো?
হেমন্তি বললো,
~খেয়েছি আপনি খেয়েছেন?
ইলহাম মুচকি হেসে বললো,
~হ্যা খেয়েছি।আমি কাজ গুছিয়ে ফেলেছি কিছুক্ষণের মধ্যেই রওনা দিবো।
হেমন্তি বললো,
~আচ্ছা।
ইলহাম হেমন্তির আওয়াজ একটু অন্যরকম লাগছে তাই ইলহাম জিজ্ঞেস করলো,
~কী হয়েছে তোমার?গলা এমন লাগছে কেন?
হেমন্তি বললো,
~কিছু না এভাবেই।
ইলহাম আর কিছু বললো না ফোন রেখে দিলো।বিকেলের দিকে হিয়া আর ফারুক চলে আসলো ইলহামও চলে আসলো সময় মতো।
তারা ৪জনই রওনা হলো হেমন্তির বাসার উদ্দেশ্যে হিয়া আর ফারুক এক রিক্সায় আর হেমন্তি আর ইলহাম অন্য রিক্সায়।হেমন্তি এখনো সেই চিন্তা নিয়ে বসে আছে
ইলহাম হেমন্তির মুখ দেখে বুঝতে পারছে সে অনেক চিন্তিত।ইলহাম আলতো করে হেমন্তিকে ডেকে উঠলো এতেই হেমন্তি ভয় পেয়ে গেলো ইলহাম তা দেখে বললো,
~ভয় পাচ্ছো কেন?আমিই তো ডেকেছি।
হেমন্তি শুকনো ঢোক গিলে বললো,
~নাহ আসলে ঠান্ডা লাগছে প্রচুর।
ইলহাম বললো,
~তুমি তো ঘামছো তাহলে ঠান্ডা কীভাবে লাগছে?
হেমন্তি অসহায় নজরে ইলহামের দিকে তাকালো ইলহাম রুমাল বের করে হেমন্তির ঘাম মুছে দিলো। হেমন্তি ইলহামের দিকে তাকিয়ে আবার বাহিরের দিকে তাকালো হেমন্তির অনেক ভয় হচ্ছে এভাবেই ইলহামের রাগটা বেশি সেই ছেলে যদি আবার কিছু করে ফেলে তাহলে সেই রাগ আরো বেড়ে যাবে।
কিছুক্ষন পর তারা হেমন্তিদের বাসায় পৌছে গেলো হেমন্তির বুকটা ঢিপঢিপ করছে হেমন্তি বাসার ভিতরে ডুকে কলিংবেল টিপ দিলো।হেমন্তির মা ইরিনা বেগম এসে দরজা খুলে দিলো সবাইকে দেখে ইরিনা বেগম অনেক খুশি হলেন।সে সবাইকে বাসার ভিতরে নিয়ে গেলেন সোফায় বসিয়ে দিলেন হিয়া আর ফারুকের উদ্দেশ্যে বললেন,
~আমি অনেক খুশি হয়েছি তোমরা এসেছো।
হিয়া বললো,
~আপনারা আমাদের এই বিশেষ মূর্হুতে আমাদের মনে রেখেছেন এটাই অনেক বড় কথা।
সবাই কথায় ব্যস্ত আর হেমন্তি ভয়ে ভয়ে এদিক-সেদিক তাকাচ্ছে কেয়াও রুম থেকে বাহিরে চলে এসে সবার সাথে কুশলাদি করে বললো,
~দুলাভাই এখন আমার কথা মনে পরেছে।
ইলহাম বললো,
~এসেছি তো তোমারই জন্য।
সবাই কথা ব্যস্ত তখনই এমন একজন ব্যক্তি হলরুমে উপস্থিত হলো তাকে দেখে হেমন্তি ভয়ে চুপসে গেলো।
_____♥_____
আরফান আর সুমনা ফুফু দাড়িয়ে আছে তারা হাসি হাসি মুখ করে দাড়িয়ে আছে। ইরিনা বেগম তাদের সাথে ইলহামের পরিচয় করে দিলো হেমন্তিকে দেখে সুমনা ফুফু তার পাশে বসে পরলো আর বললো,
~হেমন্তি,তুই তো অনেক সুন্দর হয়ে গেছিস।
হেমন্তি মুচকি হেসে বললো,
~ফুফু কেমন আছো?
সুমনা ফুফু বললো,
~ভালো এসেছিলাম ভাইয়ের সাথে দেখা করতে আর শুনলাম কেয়াকে দেখতে আসবে তাই রয়ে গেলাম।
হেমন্তি আলতো হেসে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলো আরফান আর ইলহাম কথা বলছে হেমন্তি একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো কেয়া হেমন্তি আর হিয়াকে নিয়ে রুমে চলে আসলে হেমন্তি কেয়াকে নিজ হাতে সাজিয়ে দিলো একটু পর ছেলেপক্ষ এসে পরবে।হেমন্তির বাবা ইমরান খান সব কাজ শেষ করে বাসায় ফিরেছেন।
সন্ধ্যার দিকে ছেলেপক্ষরা চলে আসলো তাদের সাথে কুশলাদি করে স্বাগতম জানানে হলো হেমন্তি কেয়ার সাথে বসে আছে কেয়া হেমন্তিকে বললো,
~আপু,ছেলে দেখেছো তুমি?
হেমন্তি বললো,
~হুম দেখলাম তো।
কেয়া বললো,
~দুলাভাই থেকেও হ্যান্ডসাম নাকি?
হেমন্তি হেসে বললো,
~আমার কাছে কী তোর দুলাভাই থেকে বেশি কেউ হ্যান্ডসাম হতে পারে?
কেয়া বললো,
~তাতো ঠিক।
হিয়া সেখানে উপস্থিত হয়ে বললো,
~ছেলের নাম তানভীর আহমেদ দেখতে ঠিকঠাক আছে।
কেয়া বললো,
~ঠিকঠাক হলে তো হবে না বেস্ট হতে হবে।
হিয়া হেসে বললো,
~বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখে যাচাই করবেনা কেয়া মানুষের মনটা সুন্দর হতে হবে।
হেমন্তি বললো,
~হিয়া আপু ঠিক বলেছে কেয়া।
কেয়া তাদের দুজনের কথা শুনে চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেলো সে কীভাবে মানুষটার মন সুন্দর কিনা যাচাই করতে পারবে।
চলবে
(