প্রেমের শুরু পর্ব ১+২

~তোর বউকে কোনোদিন সময় দিয়েছিস? কোনোদিন চেষ্টা করেছিস মেয়েটার মনের অবস্থা বোঝার?
বোন হিয়ার কথা শুনে ইলহাম অবাক দৃষ্টিতে হিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো সে তো কোনো অভাবে রাখেনি তার বউ হেমন্তিকে।ইলহামের চাহনি দেখে হিয়া নিঃশব্দে হেসে বললো,
~ইলহাম,আমরা জমজ ভাই-বোন তোর মনের অবস্থা আমি একটু হলেও বুঝি।
ইলহাম আমতা আমতা করে বললো,
~তুই কী বলছিস বুঝতে পারছিনা?
হিয়া বিছানা ছেড়ে উঠে বুকে হাত গুজে বললো,
~গতকাল ড্রিংক করে বাসায় কেন এসেছিলি?
ইলহাম আবারো অবাক হলো বোনের কথায় হিয়া বললো,
~বিয়ে হয়েছে বলে বাসার কোনো খবর আমি রাখবোনা সেই ভুল ধারনা তুই ছেড়ে দে।জামিল চাচা আমায় সব বলেছে হেমন্তি তোকে কী ভাবে সামলিয়েছে তাও বলেছে।
ইলহাম মাথানিচু করে রইলো বিয়ের ৬মাস হয়েছে এখনই সে ক্লান্ত হিয়া বললো,
~হেমন্তিকে তোর ভালো লাগে না তাই তো?
ইলহান অক্ষি যুগল তুলে বোনের দিকে তাকালো হিয়া বললো,
~আমি তোর বিয়ে করিয়েছিলাম যাতে তুই একা না হয়ে পরিস বাবা-মা নেই আমাদের তাই ভেবেছি তোর একটা গতি করে দেই।তোকে আমি জিজ্ঞেসও করেছিলাম তোর কোনো পছন্দ আছে কিনা?কিন্তু তুই সেসময় সম্পন্ন না বললি এই ব্যাপারে তাই তো আমি হেমন্তিকে এবাসার বউ করে নিয়ে আসলাম।
ইলহাম বোনের প্রতিটি কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলো তারপর বললো,
~হিয়া,তুই যা ভাবছিস তেমন কিছু না আসলে হেমন্তি আমাকে ভয় পায়। সবসময় আমার থেকে দূরে থাকতে চায়
হিয়া বললো,
~এটার কারণ কী জানিস?
ইলহাম বললো,
~নাহ।
হিয়া বললো,
~বিয়ের দ্বিতীয় দিন তুই ওকে শার্ট দেওয়ার জন্য ধমক দিয়েছিলি।
হিয়ার কথা শুনে ইলহামের মনে পরলো বিয়ের পরের দিন হেমন্তি তাকে একটা শার্ট এনে দেয় সেটা দেখে ইলহাম রেগে যায় নতুন বউ কেন কাজ করবে?তাই তো সে হেমন্তিকে ধমক দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিল।হিয়া ইলহামের ভাবনা দেখে বললো,
~আমি আজকে এসেছি হেমন্তিকে কিছুদিন আমার কাছে নিয়ে যাবো তাই।ওকে এই সংসার থেকে দূরে নিয়ে যাই কিছু দিনের জন্য তুইও রেস্ট নে কিছুদিন।
হেমন্তিকে নিয়ে চলে যাবে সে কথা শুনতেই ইলহামের বুকটা ধ্বক করে উঠলো ইলহামের মুখশ্রী দেখে হিয়া মুখ টিপে হেসে বললো,
~তোর ভাইয়া এসে পরবে রাতের খাবার সেরে হেমন্তিকে নিয়ে আমরা রওনা দিয়ে দিবো।
ইলহাম শুকনো ঢোক গিলে বললো,
~ওকে এখন নিয়ে না গেলে হয় না কারণ আমার অফিসে এখন অনেক কাজ।
হিয়া মুখে গম্ভীরতা নিয়ে বললো,
~তোর অফিসে কাজ সেটাতে হেমন্তির কেন প্রয়োজন?
ইলহাম কিছু না বলে বসা থেকে দাড়িয়ে সোজা রুম থেকে বের হয়ে আসলো। পাঞ্জাবির হাতা গুটিয়ে সে নিজ রুমের দিকে হাঁটতে লাগলো তখনই রান্নাঘর থেকে গুনগুন করে গান গাওয়ার আওয়াজ আসতেই তার পা থেমে গেলো।সে নিজ ঠিকানা পরিবর্তন করে রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেলো সেখানে পৌছে ইলহাম দেখলো তার অর্ধাঙ্গিনী কোমড়ে শাড়ির আঁচল গুজে চুলগুলো হাত খোপা করে রান্নায় ব্যস্ত।ইলহাম ধীরপায়ে হেমন্তির পিছে গিয়ে দাড়ালো কারো উপস্থিতি টের পেয়ে হেমন্তি হকচকিয়ে পিছে ঘুরতেই ইলহামকে দেখে সে অনেকটাই ভয় পেয়ে গেলো।হেমন্তি ইলহামের থেকে চোখ সরিয়ে বললো,
~আপনার কী কিছু লাগবে?
ইলহামের ঘোর কেটে যায় হেমন্তির কথা শুনে সে দুকদম পিছিয়ে বললো,
~পানি নিতে এসেছি।
হেমন্তি রান্নাঘর থেকে উঁকি দিয়ে টেবিলের দিকে ইশারা করে বললো,
~টেবিলে পানির জগ রাখা আছে।
ইলহাম বিব্রতবোধ করলো সে হেমন্তির দিকে একবার তাকিয়ে রান্নাঘর থেকে বের আসলো।ইলহাম যেতেই হেমন্তি একটা স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লো হেমন্তি আবার নিজ কাজে মনোযোগ দিলো ননদ আর ননদের জামাইয়ের জন্য সে রান্না করছে আজ।

_____♥_____

হেমন্তির পুরো নাম নাবিলা ইসলাম হেমন্তি সবাই তাকে হেমন্তি বলেই ডাকে।বাবার নাম ইমরান খান সে চাকরি করে আর মায়ের নাম ইরিনা বেগম সে গৃহিণী। হেমন্তির একটা ছোট বোন আছে তার নাম কেয়া।হেমন্তি অর্নাসের ১ম বর্ষের ছাত্রী বিয়ের পরও ইলহাম তাকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বলেছে এতে তার কোনো আপত্তি নেই।
ইলহামের পুরো নাম ইলহাম হোসেন অয়ন তাকে সবাই ইলহাম বলেই ডাকে বাবা-মা কেউ জীবিত নেই তার শুধু একটা জমজ বোন আছে তার নাম হিয়া।হিয়ার বিয়ে হয়েছে ২বছর তার স্বামীর নাম ওমর ফারুক সে একজন চাকরিজীবি মানুষ।ইলহামও একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে ভালোই বেতন পায় সে।হিয়া হেমন্তিকে দেখে পছন্দ করে ইলহামের সাথে বিয়ে দিয়েছে হেমন্তির বাবা-মাও এতো ভালো পাত্র পেয়ে হাত ছাড়া করেনি খুবই সামান্য ভাবে তাদের বিয়েটা হয়ে যায়।হেমন্তি সংসার সামলিয়ে নিতে পারলেও ইলহামকে সামলাতে পারিনি আর ইলহামও হেমন্তিকে আপন করে নিতে পারেনি।দুজনের মধ্যেই এক প্রকার জড়তা কাজ করছে কিন্তু ইলহাম এখন হেমন্তিতে অভস্ত তাই তো ঘাবড়ে গেলো হিয়ার কথা শুনে।
হিয়া হেমন্তির সাথে সাহায্য করছে রান্নার কাজে হিয়া হেমন্তিকে দেখে অনেক খুশী খুশী লাগে সংসারটাকে সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছে সে।হিয়ার চাহনি দেখে হেমন্তি বললো,
~আপু এভাবে কী দেখছো?
হিয়া হাতে থাকা চাকুটা সাইডে রেখে বললো,
~হেমন্তি,সংসার তো সামলে নিলে ইলহামকে কবে সামলাবে?
হেমন্তি হিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো হিয়া বললো,
~আমার ভাই অনেকটাই চাপা স্বভাবের তাই হয়তো নিজ অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেনা একটু খেয়াল রেখো তার।
হিয়া একনাগাড়ে কথা গুলো বলে রান্নাঘর থেকে বের হয়ে আসলো।হেমন্তি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বিড়বিড় করে বললো,
~আপনার ভাই তো আমাকে দূরে ঠেলে দেয় তাহলে আমি কীভাবে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাবো?
রাতের খাবারের সময় হিয়া,ফারুক,ইলহাম,হেমন্তি একসাথে খেতে বসেছে। হিয়া প্লেটে খাবার নিতে নিতে বললো,
~হেমন্তি ব্যাগ গুছিয়ে ফেলো তুমি আমাদের সাথে যাবে কিছুদিন আমার সঙ্গী হবে।
হেমন্তি একবার ইলহামের দিকে তাকালো বিয়ের ৬মাসে সে বাবার বাড়ি থেকেছে শুধু ২রাত। কারণ ইলহাম তাকে থাকতে দেয়নি মুখে কিছু না বললেও সে অধিকার খাটিয়ে তাকে এ বাসায় নিয়ে আসে।ইলহামকে নিশ্চিন্তে খেতে দেখে হেমন্তি হিয়াকে বললো,
~ঠিক আছে আপু আমি ব্যাগ গুছিয়ে রাখছি।
হেমন্তির বলা শেষ হতেই ইলহাম মুখের খাবার শেষ করে জোর গলায় বলে উঠলো,
~হেমন্তি কোথাও যেতে পারবেনা তার পরীক্ষা অতি দ্রুত শুরু হবে।আর তোর বাসায় ওর পড়া হবেনা।
ফারুক ভ্রুকুচকে বললো,
~কেন হবে না?আমরা খেয়াল রাখবো তুমি চিন্তা করোনা এসব বিষয়ে।
ইলহাম এবার রেগে বললো,
~আমি যেটা বলিছি সেটাই হবে।
বলে সে প্লেট হেমন্তির দিকে ঠেলে দিয়ে গটগট করে রুমে চলে গেলো।হিয়া আর ফারুক নিজ খাওয়ায় মনোযোগ দিলো হেমন্তি তাদের দিকে তাকিয়ে বললো,
~আপনারা কিছু মনে করবেন না উনি হয়তো কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তিত।
ফারুক চিকেন রোস্ট চিবুতে চিবুতে বললো,
~সে কোনো ব্যাপার না আমিও আমার বউকে নিজ থেকে দূরে রাখতে পারিনা।
ফারুকের কথা শুনে হেমন্তি লজ্জায় লাল হয়ে গেলো তা দেখে হিয়া বললো,
~এতো লজ্জা না দেখিয়ে যাও তোমার বরকে খাবারটা দিয়ে আসো।
হেমন্তি একটু ভয় পেয়ে বললো,
~রেগে আছে আপু।বকা দিবে
হিয়া হালকা হেসে বললো,
~খাবার প্লেট সামনে রেখে বলবে তুমি কোথাও যাচ্ছোনা তাহলেই হবে।
হেমন্তি আর কিছু না বলে প্লেটটা হাতে নিয়ে রুমের কাছে চলে আসলো।ফারুক হিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
~তোমার কী মনে হয় তোমার গম্ভীর ভাই মনের কথা বলবে?
হিয়া বললো,
~সময় লাগবে সবকিছু ঠিক হতে হেমন্তি অবশ্যই পারবে।

_____♥_____

হেমন্তি ঘরের দরজা ঠেলে কাঁপা কাঁপা পায়ে ভিতরে প্রবেশ করলো ইলহাম বিছানায় শুয়ে আছে তার একহাত কপালে রাখা তার চোখ দুটো বন্ধ। হেমন্তি প্লেটটা টেবিলের ওপর রেখে বললো,
~খাবারটা খেয়ে নিন।
ইলহাম ফটফট করে চোখ খুলে ফেললো হেমন্তির দিকে তাকাতেই হেমন্তি বললো,
~আপু বলেছে আমি কোথাও যাবো না এখানে থাকবো।
এতটুকু বলে হেমন্তি ভো দৌড় দিলো ইলহাম হেমন্তির এভাবে চলে যাওয়াটাকে বাচ্চামি ভেবে হালকা হাসলো।খাবারের প্লেটটা নিয়ে খাওয়া শুরু করলো হেমন্তির রান্নার হাতটা ভালো ইদানিং অনেক পাকা হয়ে গেছে রান্নাবান্নায়।ইলহাম খাবার শেষ করল প্লেটটা রেখে ওয়াশরুমে হাত ধুতে চলে গেলো।
হেমন্তি হিয়ার সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে ফারুক টিভি দেখতে ব্যস্ত।হিয়া আর ফারুক আজ এখানেই থাকবে ইলহাম সেখানে এসে ফারুকের পাশে বসে পরলো। হিয়া ইলহামকে দেখে বললো,
~ইলহাম,তোর অফিস থেকে কিছুদিনের ছুটির ব্যবস্থা করলে ভালো হতো গ্রামের বাড়িতে যেতে ইচ্ছে করছে।বাবা-মায়ের কবরটা যিয়ারত করতে মন চাইছে গ্রামের সবার সাথে দেখা করতে মন চাইছে।
ইলহাম টিভির দিকে তাকিয়ে বললো,
~এখন সম্ভব না অনেক বড় প্রযেক্টে কাজ করছি ছুটি নিলে স্যার আমাকে আজীবনের জন্য ছুটি দিয়ে দিবে।
ইলহামের কথা শুনে হেমন্তি ফিক করে হেসে উঠলো তার হাসির আওয়াজ পেয়ে তিনজনই হেমন্তির দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো।হেমন্তি শুকনো ঢোক গিলে আবার চুপ করে বসে রইলো হিয়া বললো,
~ঠিক আছে তোর যখন সময় হয় তখনই আমরা পরিকল্পনা করবো।
ইলহাম বললো,
~হুমম।
তারা কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে যার যার রুমে চলে গেলো হেমন্তি রুমে এসেই ওয়াশরুমে চলে গেলো।ইলহাম বিছানায় শুয়ে পরলো তার ঘুম আসছেনা তবুও সে শুয়ে রইলো।কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসলো হেমন্তি টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছে আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুলে বেনুনি করতে লাগলো।ইলহাম আড়চোখে হেমন্তিকে একবার দেখে পাশ ফিরে শুয়ে পরলো।হেমন্তির কাজ শেষ হলে সে বিছানার একপাশে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে পরলো দুজন দুদিকে শুয়ে আছে।পুরো ঘরে শুধু তাদের দীর্ঘশ্বাসের শব্দ।শীতের রাত তাই চারপাশ নিস্তব্ধতায় ঘেরা ইলহাম একবার ওপাশ ফিরে দেখলো হেমন্তি অপরপাশে মুখ করে শুয়ে আছে।
ইলহাম সাহস নিয়ে আলতো স্বরে বললো,
~হেমন্তি ঘুমিয়ে পরেছো?
ইলহামের ডাক শুনে হেমন্তি অনেকটাই বিচলিত সে ইলহামের দিকে ঘুরে বললো,
~নাহ জেগে আছি।
ইলহাম হেমন্তির দিকে একপলক তাকিয়ে বললো,
~তোমার কী মন খারাপ আমি তোমাকে যেতে দেইনি তাই?
হেমন্তি বললো,
~নাহ মন খারাপ হয়নি আমি কোথাও গেলে আপনার কষ্ট হয়ে যাবে।
ইলহাম হেমন্তির কথা শুনে একগাল হেসে বললো,
~আমার কেন কষ্ট হবে?
হেমন্তি বললো,
~আপনার সকল প্রয়োজনীয় জিনিস তো আমি গুছিয়ে রাখি আপনার সব জিনিসের খেয়াল রাখতে হয় আমার।
ইলহাম বললো,
~তাতো ঠিক।
হেমন্তি বললো,
~একটা প্রশ্ন করি?

____♥____

ইলহাম বললো,
~করো।
হেমন্তি বললো,
~আপনি কালকে মদ খেয়ে এসেছিলেন কেন?
ইলহাম হেমন্তির প্রশ্ন শুনে অনেকটাই বিব্রতবোধ করলো ইলহাম বললো,
~আসলে বন্ধুদের সাথে বসেছিলাম তাই একটু
হেমন্তি বললো,
~আপনি আমার একটা কথা রাখবেন?
ইলহাম হেমন্তির দিকে একটু এগিয়ে বললো,
~রাখবো।
হেমন্তি বললো,
~এসব ছাইপাঁশ খেয়ে এ বাসায় আসবেন না।পবিত্রতা নষ্ট হয় এতে সংসারে রহমত কমে যায়।
ইলহাম বললো,
~কথা দিলাম আর কোনোদিন এসব খেয়ে বাসায় আসবো না।
হেমন্তি হালকা হেসে বললো,
~ধন্যবাদ এখন ঘুমিয়ে পরুন।
হেমন্তি কথা শেষ করে আবার ওপাশ ফিরে শুয়ে পরলো।হেমন্তির দিকে তাকিয়ে ইলহাম একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজেও ওপাশ ফিরে শুয়ে পরলো।
রাত যতো গভীর হচ্ছে ঘুমের দেশে তলিয়ে যাচ্ছে তারা দুজন দুরত্ব বজায় রাখলেও তারা দুজন দুজনার অভ্যাস হয়ে উঠেছে।
মধুর ধ্বনিতে ফজরের আযান কানে আসতেই হেমন্তির ঘুম ভেঙ্গে গেলো হেমন্তি উঠে পরে আড়মোড়া ভেঙ্গে। বিছানা থেকে নেমে ওয়াশরুম থেকে ওযু করে বের হয়ে আসলো তারপর ইলহামের কাছে গিয়ে আলতো করে ডেকে উঠলো,
~এই উঠুন নামাজের সময় হয়ে গেছে।
ইলহাম কোনো জবাব না দিয়ে একপাশ থেকে আরেকপাশে ফিরে শুয়ে পরলো।হেমন্তি বুঝতে পারলো আজও ইলহাম নামাজের জন্য উঠবেনা হেমন্তি সময় অপচয় না করে নামাজে দাড়িয়ে পরলো।হেমন্তি নামাজ শেষ করে রান্নাঘরে চলে গেলো নাস্তা তৈরি করে ইলহাম আর ফারুকের জন্য লাঞ্চ বক্স রেডি করতে থাকলো।হিয়া রান্নাঘরে এসে হেমন্তির কাজ দেখে মুগ্ধ হলো একা হাতে সে খুব সুন্দর করে কাজ করছে।হিয়া ভাবছে এবার ইলহামকে বলতে হবে একটা বুয়া ঠিক করতে মেয়েটা এতো কাজ কীভাবে একা করে?হেমন্তি হিয়াকে দেখে বললো,
~আপু সব তৈরি হয়ে গেছে তুমি টেনশন করোনা।
হিয়া বললো,
~তুমি থাকতে কীসের টেনশন?
হেমন্তি ফিক করে হেসে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো সকাল ৮টা হেমন্তি দাঁত দিয়ে জিভ কেটে বললো,
~ওনার অফিসের জন্য সব কিছু রেডি করতে হবে।
হেমন্তি কথা শেষ করে এক প্রকার দৌড়ে সে রান্নাঘর থেকে বের হয়ে আসলো।হিয়া হেমন্তির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো,
~অনুভূতি তো অবশ্যই আছে কিন্তু কেউ মুখে স্বীকার করে না।
#গল্পের_নাম_প্রেমের_শুরু
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ২
ইলহামের ঘুমভাঙ্গলো কার্বাড খোলার শব্দে সে চোখ খুলে দেখলো হেমন্তি তার শার্ট-প্যান্ট সব গুছিয়ে রাখছে।ইলহাম উঠে বসে পরলো হেমন্তির উদ্দেশ্যে বললো,
~কয়টা বাজে?
হেমন্তি হাতে থাকা জিনিস বিছানার একসাইডে রেখে ইলহামের দিকে তাকিয়ে বললো,
~৮.২০ বাজে।
ইলহাম বললো,
~আজকে অফিস তাড়াতাড়ি যেতে হবে।আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি তুমি নাস্তা টেবিলে দেও।
হেমন্তি মাথা দুলিয়ে নিজ কাজে মনোযোগ দিলো ইলহাম ওয়াশরুমে চলে গেলো।হেমন্তি ইলহামের সব জিনিস গুছিয়ে রুম থেকে বের হয়ে আসলো নাস্তা টেবিলে সাজিয়ে।সে সোজা চলে গেলো হিয়ার ঘরের দিকে সেখানে গিয়ে দরজায় টোকা দিলো।হিয়া ভিতর থেকে বলে উঠলো,
~আসো।
হেমন্তি দরজা ঠেলে ভিতরে ডুকে পরলো হিয়া বিছানায় বসে বই পড়ছে।হেমন্তি বললো,
~নাস্তা তৈরি হয়ে গেছে টেবিলে দিয়েছি।
হিয়া বললো,
~তোমার ভাইয়া একটু রাস্তাশ গিয়েছে চলে আসবে।একসাথে নাস্তা করবো তুমি আর ইলহাম নাস্তা করে নেও।
হেমন্তি বিছানায় বসে বললো,
~সমস্যা নেই আপু।উনিও এখন পর্যন্ত রেডি হননি
হিয়া মুচকি হেসে বললো,
~জানো হেমন্তি,ইলহাম আর আমার বয়স যখন ৬ তখন আমরা গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলাম। ইলহাম গ্রামের পুকুরে গোসল করার জন্য জেদ ধরলো বাবা বাধ্য হয়ে তাকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলো ইলহাম বাবার কাঁধে চড়ে পুকুরে গোসল করতে লাগলো তখনই পানির ভেতর একটা রশি ভেসে উঠলো ইলহাম সেটাকে সাপ ভেবে যে চিৎকার দিয়েছিল সে চিৎকার শুনে পাড়া-প্রতিবেশি এক হয়ে যায় পরে বাবা ইলহামকে পুকুর পাড়ে রেখে সেই রশি এনে ইলহামকে দেখায়। তখন সে আরো জোরে চিৎকার করে বলে উঠলো,
~বাবা,তুমি সেই সাপকে রশি বানিয়ে নিয়ে এসেছো আমাকে বোকা বানানোর জন্য।
সেদিন ইলহামের কথা শুনে সবাই উচ্চস্বরে হেসে উঠলো।
হিয়ার কথা শেষ হতেই হেমন্তি হো হো করে হেসে উঠলো।হিয়া আরো বললো,
~ইলহাম কিন্তু অনেক দুষ্ট ছিল কিন্তু বাবা-মায়ের এক্সিডেন্টের পর থেকে সে এমন গম্ভীর হয়ে উঠলো।
হিয়ার মনটা খারাপ হয়ে গেলো হেমন্তির হাসি হাসি মুখটা বিষাদে ভরে উঠলো।হেমন্তি হিয়ার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে হিয়ার হাতটা আকড়ে ধরে বললো,
~কেন বিষাক্ত স্মৃতি গুলো মনে করো আপু।কতো সুন্দর স্মৃতি তারা তোমাদের দিয়ে গেছে সে গুলোকে আকড়ে ধরে রাখুন দেখবেন মনটা এভাবেই ভালো হয়ে যাবে।
হিয়া হেমন্তির এমন কথা শুনে হালকা হেসে চোখের কোণের জল মুছে হেমন্তি মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
~তোমার কথাগুলো শুনতে আমার অনেক ভালো লাগে।জানো তোমার কথায় একধরনের সৌন্দর্য আছে তাই তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে।সুখে থাকো তুমি সেটাই আমার দোয়া।
হেমন্তি মুচকি হেসে হিয়ার দিকে তাকাতেই ঘরে ফারুক প্রবেশ করলে।ফারুক তাদের দেখে বললো,
~কোন বিষয় কথা চলছে?
হিয়া বললো,
~তোমাকে বলবো কেন?তুমি তোমার কাজ করো।
ফারুক মেকি হেসে বললো,
~হ্যা হ্যাঁ বাবার বাড়ি আসলে আর জামাইর খবর কী রাখা যায়?
ফারুকের কথা শুনে হিয়া আর হেমন্তি দুজনই হেসে উঠলো হেমন্তি হেসে হেসে বললো,
~আপনাদের কথা শেষ হলে নাস্তা করতে আসুন।
হেমন্তি বাহিরে বের হতেই ইলহামের গলার আওয়াজ আসলো ইলহাম এক নাগাড়ে হেমন্তিকে ডেকেই চলছে।
হেমন্তি অপেক্ষা না করে রুমের দিকে পা বাড়ালো

______♥______

হেমন্তি রুমে ডুকতেই দেখতে পেলো ইলহাম শার্ট পরে দাড়িয়ে আছে।হেমন্তি বললো,
~কী হয়েছে?
ইলহাম বিরক্তি নিয়ে বললো,
~শার্টের বোতাম ছিড়ে গেছে এখন কী করবো?
হেমন্তি বললো,
~আমি অন্য শার্ট দিচ্ছি আপনি এটা খুলে ফেলুন।
ইলহাম বললো,
~আরেকটা শার্ট ইস্ত্রি করা আছে?
হেমন্তি বললো,
~আমি করে দিচ্ছি।
ইলহাম বললো,
~সময় নষ্ট করার প্রয়োজন নেই শার্টের বোতামটা লাগিয়ে দেও তাহলেই হবে।
হেমন্তি একটু অবাক হলো ইলহামের জেদ দেখে হেমন্তি আর কোনো কথা না বলে বললো,
~শার্ট খুলে দিন আমি সেলাই করে দিচ্ছি।
হেমন্তি কথা শেষ করে সুই সুতার বক্স নিয়ে আসলো ইলহাম বললো,
~এভাবেই লাগিয়ে দেও খুলতে পারবোনা।
হেমন্তি নাক ফুলিয়ে বললো,
~এবার আপনি বেশি বেশি করছেন সুই যদি আপনার শরীরে লেগে যায় তখন কী হবে?
ইলহাম দেড়গুন জেদ ধরে বললো,
~এভাবেই করতে হবে।
হেমন্তি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সুই হাতে নিয়ে একপা একপা করে এগিয়ে গেলো হাতের বোতামটা ইলহামের শার্টে সেলাই করতে লাগলো হেমন্তির হার্টবিটটা বেড়ে গেলো ইলহামের এতো কাছে এসে
ইলহাম একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে হেমন্তির দিকে হেমন্তির মায়াবি মুখের দিকে তাকিয়ে সে একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেছে।হেমন্তির ছোট ছোট চুলগুলো কপালে এসে পরলো ইলহাম নিজের অজান্তেই সে হেমন্তির চুলগুলো সরিয়ে দিলো।হেমন্তি ইলহামের স্পর্শ পেয়ে হালকা কেঁপে উঠলো তখনই ইলহাম আহহ বলে উঠলো কারণ হেমন্তির হাতের সুই দিয়ে ইলহামের বুকে খোঁচা লেগে গেছে।
হেমন্তি ঘাবড়ে গিয়ে দুকদম পিছিয়ে গিয়ে বললো,
~আপনার কী অনেক ব্যাথা লেগেছে?আমি তো আগেই বলেছিলাম
ইলহাম হেমন্তির দিকে তাকিয়ে বললো,
~নাহ বেশি একটা লাগেনি।
হেমন্তি কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো,
~আমার জন্য আপনার এতখানি লেগে গেলো।
ইলহাম হেমন্তির এমন চেহারা দেখে মুচকি হেসে বললো,
~তুমি এতো চিন্তা করোনা কিছুই হয়নি।
হেমন্তি এবার শান্ত হয়ে বললো,
~নাস্তা টেবিলে দিয়েছি এসে পরেন।
ইলহাম শার্টের দিকে তাকিয়ে বললো,
~এই সুতা কী এভাবেই থাকবে?
হেমন্তি তা দেখে নিজ কপালে হালকা থাপ্পড় দিয়ে বললো,
~ভুলে গেছি।
হেমন্তি কেঁচি নিয়ে বাকি সুতো কেটে নিলো তারপর হেমন্তি সব গুছিয়ে রুম থেকে বের হয়ে আসলো।
ইলহাম হাতে ফাইল নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে আসলো টেবিলের সামনে এসে দেখলো সবাই উপস্থিত নাস্তার টেবিলে।হিয়া ইলহামকে দেখে বললো,
~নাস্তার টেবিলেও তোর কাজ?
ইলহাম চেয়ারে বসে বললো,
~কাজটা জরুরি আপু।
হিয়া বললো,
~ যান্ত্রিক শহরে তুই নিজেও একটা যান্ত্রিক হয়ে উঠেছিস।
ইলহাম কিছু না বলে পরোটা প্লেটে নিলো হিয়া বললো,
~তোর পাশাপাশি হেমন্তিও তেমন হয়ে গেছে।
ফারুক বললো,
~সঙ্গ যেমন পেয়েছে তেমনই তো হবে।
হেমন্তি হিয়ার পাশের চেয়ারে বসে পরলো ইলহাম কিছুনা বলে চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে।নাস্তা শেষে ফারুক, হিয়া,আর ইলহাম বের হয়ে আসলো বাসা থেকে।হিয়া নিজ বাসায় চলে আসবে তাই এখনই ফারুক তাকে বাসায় দিয়ে নিজ অফিসে চলে যাবে।
সবাইকে বিদায় দিয়ে হেমন্তি সোফায় বসে বললো,
~এখন আবার একা পথ চলতে হবে।

_____♥______

ইলহাম অফিসে বসে কাজ করছে তখনই তার কেবিনের দরজায় কেউ নক করলো।ইলহাম বললো,
~Come in.
ইলহামের কলিগ ইমরুল সিকদার কেবিনের দরজা ভেদ করে প্রবেশ করলো।ইলহাম ইমরুলকে দেখে বললো,
~কী ব্যাপার ইমরুল সাহেব আজ আমার কাছে আসলেন যে?
ইমরুল আমতা আমতা করে বললো,
~আসলে স্যার আপনি তো জানেন আমার নতুন বিয়ে
ইমরুলের কথা শুনে ইলহাম কাজ রেখে তার দিকে তাকিয়ে বললো,
~কথাটা শেষ করুন।
ইমরুল বললো,
~স্যার,আমার বউয়ের আজ জম্মদিন তাই সে একটু ঘুরতে যেতে চায়।আজ যদি ছুটি দিতেন আমায় আগামীকাল আমি overtime করবো।
ইলহাম বললো,
~তা তো সম্ভব না ইমরুল সাহেব।
ইমরুল বললো,
~অনেক জরুরি ছুটিটা বউ সারাদিন বাসায় একা থাকে আজকের একটা দিন ওকে একা রাখতে চাইনা।
ইলহাম না করতে যাবে তখন কী যেন ভেবে বললো,
~ঠিক আছে কিন্তু কাল অবশ্যই আপনাকে overtime করতে হবে।
ইমরুল হেসে বললো,
~অবশ্যই স্যার।
ইমরুল খুশি হয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে গেলো ইলহান হাতে থাকা কলমটা টেবিলে রেখে চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে রইলো। চোখ বন্ধ করতেই তার চোখের সামনে হেমন্তির সেই মায়াবী মুখটা ভেসে উঠলো।
ইলহামের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো ইলহাম চোখ খুলে ভাবতে লাগলো,
~হেমন্তিও তো সারাদিন একা বাসায় থাকে আমিও তো তাকে কোনো সময় দিতে পারিনা তাহলে সেও কী অভিমান করে আমার সাথে?করলেও আমি বুঝতে পারিনা হয়তো কারণ কথাও তো তার সাথে আমি বেশি করিনা।তাহলে এখানে সম্পূর্ণ ভুলটা কী আমার?আমাদের সম্পর্কটা কী আমার জন্যই এগিয়ে যাচ্ছেনা?
আর ভাবতে পারলোনা ইলহাম চেয়ার থেকে উঠে দাড়িয়ে জানালার সামনে দাড়িয়ে এই ব্যস্ত শহর দেখতে লাগলো।ইলহাম মনে মনে বললো,
~আসলে হিয়াই ঠিক বলেছে আমি হয়তো যান্ত্রিক হয়ে গেছি।
ইলহাম ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো লাঞ্চ টাইম হয়ে গেছে ইলহাম একজন পিয়নকে ডেকে একটা প্লেট আর চামচ নিয়ে আসতে বললো।আগে তো ক্যান্টিনের খাবার জুটতো এখন বাড়ির খাবারই ইলহাম খায় হেমন্তি আসার পর থেকে।ইলহাম খাবার মুখে দিচ্ছে আর ভাবছে কীভাবে নিজেকে বদলাবে হেমন্তির জন্য।

____♥_____

হেমন্তি মাগরিবের নামাজ শেষ করে চুলোয় চায়ের পানি বসাতেই তার মোবাইল বেজে উঠলো।হেমন্তি রুমে এসে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখলো হেমন্তির মা ইরিনা বেগম ফোন করেছেন।হেমন্তি ফোন রিসিভ করে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
~মা,কেমন আছো?
ইরিনা বেগম বললেন,
~ভালো মা।তুই আর তোর শশুর বাড়ির সবাই কেমন আছে?
হেমন্তি হালকা হেসে বললো,
~ভালে আছে মা সবাই ভালো আছে।
ইরিনা বেগম বললেন,
~শোন কেয়াকে ২দিন পর ছেলেসহ দেখতে আসবে আমি চাই তুই সবাইকে নিয়ে বাসায় চলে আসবি।আমি সবাইকে দেখতে চাই।
হেমন্তি মায়ের কথায় অনেকটাই দ্বিধায় পরে গেলো কী বলবে তাই বুঝতে পারলোনা।হেমন্তি বললো,
~আমি ওনার সাথে কথা বলে তোমাকে জানাচ্ছি মা।
ইরিনা বেগম বললেন,
~শোন ছেলে অনেক ভালো চাকরি করে তাই আমরা আগে বাড়ছি।
হেমন্তি বললো,
~কেয়াকে জিজ্ঞেস করছো?
ইরিনা বেগম বললেন,
~হ্যা ছেলে দেখে সিদ্ধান্ত জানাবে।
হেমন্তি বললো,
~কেয়ার সিদ্ধান্তটা জেনেই সবকিছুতে আগে বাড়বে।
ইরিনা বেগম বললেন,
~হ্যা তাই হবে তুই চিন্তা করিস না।
ইরিনা বেগমের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে হেমন্তি ফোন রেখে দিলো চা তৈরি করে টেবিলে রেখে সে রুমে চলে গেলো।বই নিয়ে পড়তে বসলো সামনেই পরীক্ষা তাই আর দেরি করা চলবেনা।
ইলহাম অফিস থেকে বের হয়ে রিকশার খোজে হাঁটা ধরলো তখনই একটা ১২/১৩বছরের মেয়ে হাতে বেলিফুল নিয়ে এসে বললো,
~ভাইজান একটা কিননা লননা।
ইলহাম সেই মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললো,
~আমি এসব নিবোনা।
সেই মেয়েটি বললো,
~আফনার বউরে যায়া দিয়েন হ্যায় খুশি হইয়া যাইবো।
মেয়েটির কথা শুনে ইলহামের হেমন্তির কথা মনে পরলো সে মানিব্যাগ বের করে ১০০ টাকা সেই মেয়েটিকে দিয়ে অনেক গুলো বেলীফুল কিনে নিলো।
সেই মেয়েটি খুশি হয়ে চলে গেলো ইলহাম হাতে থাকা বেলিফুলগুলোর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে রিলশার খোজে বের হলো।

চলবে

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here