প্রেম ছোঁয়ালে পর্ব ৩

#প্রেম_ছোয়ালে

Part:03
Writer:Suvhan Årag (ছদ্মনাম)

মাইশা কে কলেজে নামিয়ে দিয়ে আমি ওখানেই অপেক্ষা করতে থাকি।অপেক্ষা করতে থাকি বললে ভুল হবে আমি থমকে যাই সামনে থাকা মেয়ে টিকে দেখে ।

নীল রঙের সালোয়ার কামিজ পড়ে,চুলগুলো একপাশে রেখে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছিল কলেজের দিকে।

মেয়ে টি যখন এদিকে আসছে তখন মাইশা দেখি গিয়ে কথা বলা শুরু করে মেয়ে টিকে দেখে

–আসসালামু আলাইকুম নীলিকা আপু।কেমন আছো?
–ওয়ালাইকুম আসসালাম ।এই তো ভালো মাইশা ।তোমার খবর কি?
–জি আপু ভালো

হ্যাঁ সেই নীল পরী টা আর কেউ না তুমি ছিলে নীলি।লোকমুখে উপন্যাস এর ভাজে অনেক পড়েছি প্রথম দেখাতেই নাকি প্রেমে পড়া যায় ।আগে কখনো বিশ্বাস করতাম না।কিন্তু ঐ দিন তোমার প্রেমে র ছোয়াতে সেই উপন্যাস এর ভাজের লেখাগুলো যেন সুপ্ত অনুভূতি র মতো আমাকে গ্রাস করেছিল

বার বার একটা কথাই মন বলছিল–“”কে বলেছে যায় না।যায় তো যখন উপন্যাস এর প্রতি পাতার মতো আবেগ গুলো মাথায় গিয়ে জড় হয়,তখন প্রেয়সী র পেঁচার ন্যায় চোখ ও অনুভূত হয় হরিনের টানা চোখের মতো,আর আর বাকিটা সেটা তো অনুভূতি, যায় তো বোঝা প্রেমের উপস্থিতিতে,প্রেমের অনুভূতি তে,আর প্রেমের ছোয়াতে “”

তারপর তো শুরু হলো গল্প ।আমাদের গল্প

–এই মাইশা ঐ মেয়ে টা কে রে?
–কোন মেয়ে টা
–ঐ তে আজকে যেই নীল পরীর সাথে কথা বললি
–কি রে ভাইয়া তোর মাথা কি গেছে।আমি আবার কোন নীল পরীর সাথে কথা বললাম
–কেন,ঐ তো আজকে।কি যেন নাম নীলিকা ই তো বলেছিলি বোধ হয়
–ও হ্যাঁ নীলিকা আপু।উনি তো এবার অনার্স চতুর্থ বর্ষ এ।কেন বলতো।এই ভাইয়া তোর কাহিনী কি রে।কখনো তো কোন মেয়ে র কথা তোকে জিজ্ঞাসা করতে শুনি নি

আশফি সেদিন মুচকি হেসে মাথা চুলকাতে চুলকাতে জবাব দিয়ে দিয়ে ছিল।সে আরো নিশ্চিন্ত হয়েছিল এটা জেনে যে ঐ নীল পরীর জীবন এ কেউ নেই।কোন পুরুষ

“”প্রিয় নীল পরী,

কেমন আছো?শোনো তোমাকে কিন্তু ঐ নীলিকা বলে ডাকতে পারবো না।কি কঠিন নাম।উচ্চারণ করতে গেলে তো আমার দুধ দাঁত ও বোধ হয় আবার উঠে তারপর ভেঙে যাবে ।এই শোনো,একদিন নীল শাড়ি পড়ে চুলে খোপা করবে।আমি তোমার খোপাতে বেলী ফুলের মালা গুঁজে দেব।শোন এখনো বেকার আছি তাই বেশি না দশ টাকা র মালাই তোমাকে দেব।ওহ জানো কি তোমার আমার মাঝে এক অদ্ভুত মিল আছে ,আমি ও না নীল রঙ খুব পছন্দ করি।শোনো আমাদের বিয়ে তে আমরা দুজনে ই কিন্তু নীলে সাজবো ।তুমি নীল বেনারসি আর আমি নীল পানজাবি ।ও তোমাকে তো বলা হয় নি আমি ও তোমার একই বর্ষ ।আচ্ছা ভালো থেকো।চিঠির উওর এর আশাতে বসে আছে এই পথিক।

ও একটা শেষ কথা,””বাসি ভালো “”

ইতি
তোমার নীল পুরুষ “”

কম করে হলেও এই নিয়ে দশবার চিঠিটা পড়েছিল নীলি।কলেজের অনেক ছেলেই আছে তাকে পছন্দ করে কিন্তু কখনো কাউকে মনে ধরার মতো পাইনি সে ।সবাই সেই চির প্রচলিত লাল গোলাপ নিয়ে সামনে হাঁটু গেড়ে বসে সিনেমার মতো করে তাকে প্রেম নিবেদন করেছে।বরাবর ই তার কাছে মনে হয়েছে ছেলে গুলো খুবই সিনেমা খোর ।না হলে এভাবে নকল করে।আর প্রতি বার এক কথা, নীলিকা তোমাকে ভালোবাসি, তুমি ছাড়া আমার জীবন এ কেউ নেই,তোমাকে ছাড়া আমি বাচবো না

কিন্তু এই লোকটি কে নীলির ব্যতিক্রম মনে হয়েছে।চরম মাপের ব্যতিক্রম ।প্রথম এ শুরুতে তো তার নাম টা নিলোই না নীল পরী কি অদ্ভুত ।তারপর আবার সরাসরি নীল বেনারসি পরিয়ে তাকে বিয়ে র পিড়িতে উঠিয়ে দিল।আর শেষে কি লিখলো””বাসি ভালো “”

কি অদ্ভুত ।এই চিঠির উওর তাকে দিতেই হবে জানতে হবে কে এই অদ্ভুত নীল পুরুষ

“”এই যে জনাব,

কি নীল পুরুষ না কি বলেছিলেন।শুনুন ঐ সব নীল পুরুষ না হলুদ পুরুষ তা আমার দেখার সময় নেই ।আপনি যদি ভেবে থাকেন প্রেম নিবেদন করবেন আর আমি রাজী হব তাহলে ভুল করেছেন।মারাত্মক ভুল।আমার কাছে প্রেমে প্রস্তাব এ রাজী হওয়া আর না মরে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে থাকা সমান কথা।তাই দয়া করে এসব বাজে জিনিস আমাকে দেবেন না।

ইতি

নীলিকা””

নীলিকা চিঠিটা মাইশার হাতেই দিল।কিন্তু সে এটা বুঝতে পারেনি মাইশা তাদের মধ্যে পদ্মা সেতুর র কাজ করছে

একটা চিঠি দুইটা চিঠি করতে করতে অবশেষে অনুভূতি ধরা দিলো নীলিকা র মনে

তাই তো ফেব্রুয়ারি র চৌদ্দ তারিখে সে নীল শাড়ি আর খোপা চুলে অপেক্ষা করছিল রমনা পার্কে

এতো লোকের ভীড় এ নীলিকা চিন্তা তে ছিল সে কিভাবে চিনতে পারবে তার নীল পুরুষ কে।তার নীল পুরুষ তো তাকে শর্ত দিয়ে ছে তাকেই খুঁজে নিতে হবে নীল পুরুষ

আবার এইদিকে নীলিকা র মনে বার বার আরেক চিন্তা ।তার বোন সাওদা তাকে বার বার বলেছে

–দেখ আপু এভাবে একটা চিঠি পড়ে কারোর প্রেমে পড়িস না।দেখা গেল জেলে বাইট্যা কালো মোটা ভুড়িয়ালা ষাটোরধ বয়স

অবশ্য নীলি সে কথা হেসে উড়িয়ে ছিল।কারণ তার নীল পুরুষ বলেছিল,সেও একি বর্ষ এর

এসব ভাবতে ভাবতে সামনের দিকে তাকিয়ে নীলির মুখে হাসি ফুটে।তার চিনতে অসুবিধা হয় নি

নীল পানজাবি আর এক হাতে বেলী ফুলের মালা ঝুলিয়ে তার দিকে এগিয়ে আসছে এক সুদর্শন পুরুষ

চলবে———

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here