#প্রেম_ছোয়ালে
Part:05
Writer:Suvhan Årag (ছদ্মনাম)
এক সপ্তাহ পর সব কিছু ঠিক থাকে।কিন্তু আসে এক ঝড়।কে জানতো এই ঝড় ই নীলিকা র আর আশফির জীবন টাকে তছনছ করে দেবে।আর দুজনকে নিয়ে ছিটিয়ে পড়বে নদীর দু পাশে
এক সপ্তাহ পর
আশফি ল্যাপটপে বসে কাজ করছিল।আর বিশ দিন পর ওর আর নীলিকা র বিয়ে
হঠাত্ আশফির চোখ যায় নতুন দুটি ইমেইল এসেছে এবং দুটিই তার স্কলারশিপ এর ইমেইল
প্রথম টি তে আশফি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে ও হাভারড ইউনিভার্সিটি তে ওয়েটিং লিস্ট এ আছে।যে কোন সময় তাকে ডেকে নেওয়া হতে পারে
আর দ্বিতীয় টি তে আশফির চোখ খুশিতে জ্বলজ্বল করছে।সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে একজন শিক্ষার্থী তার ভর্তি বাতিল করেছে।আর এ কারণে আশফি সিলেক্ট হয়েছে।এক সপ্তাহ র মধ্যে তাকে ভিসার জন্য এপলাই করতে হবে
আশফি কি করবে ভেবে পারছে না ।আজ তার স্বপ্ন পূরণ এর দিন।কিন্তু হঠাত্ আশফির মনে হলো,নীলিকা ও ঐ একি ইউনিভার্সিটি তে সিলেক্ট হয়েছিল।আর সেখানে স্পষ্ট করে লেখা আছে একজন শিক্ষার্থী তার ভরতি বাতিল করেছে।এজন্য তার টার্ন এসেছে
আশফি চিন্তা তে মগ্ন
–তবে কি নীলিকা র জায়গায় আমি সিলেক্ট হয়েছি
আশফি কিছু ভেবে পারছে না ।ও নিচে গিয়ে ওর মা বাবা আর বোন মাইশা কে সবটা জানায়
–তবে কি করবি তুই?এতো বড় সুযোগ ছেড়ে দিবি
চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বললেন আশফি র বাবা
–বাবা আমি যাব না।আমার জন্য নীলিকা ওর ভরতি বাতিল করেছে বাবা।আমি ওকে ঠকাতে পারব না
–এতে ঠকানোর কিছু নেই আশফি।তুমি যদি চান্স পেয়ে থাকো নিজের যোগ্যতা তে পেয়েছো।আর তাছাড়া তুমি না হয় চার বছর পর ফিরে এসে নীলিকা কে বিয়ে করবে।না হলে বিয়ে করে তবে যাও
–না বাবা ।আনমেরিড হয়ে আমাকে যেতে হবে।না হলে সমস্যা হবে পরে।তাছাড়া ভিসার সময় তো আমার সব ডিটেলস ও ওরা সেভাবে চেক করবে।আমি যাব না
আশফি র মা চোখে র পানি ছেড়ে দিলেন
–তা কেন যাবি।আমরা তো তোর কেউ নই।
–মা এসব কেনো বলছো
–বলবো না মানে।কতো কষ্ট করে তোদের মানুষ করেছি।তোর ঐ নীলিকা তো এটা বুঝবে না।তোর থেকে ওর পরিবার যথেষ্ট উন্নত।আমাদের মধযবিও পরিবার এর কাছে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে।তোর চাচাতো ভাই রা পড়াশোনা করে বিদেশ গিয়ে সংসার করছে।তোর চাচা চাচী কে দেখেছিস কি আরাম করছে বসে ছেলেরা তার কোন অভাব অপূর্ণ রাখে নি।আর তুই আজ ও একটা চাকরি করতে পারলি না
–মা তাই বলে আমি ওকে ধোঁকা দেব
–ধোঁকা দেওয়ার কি আছে।মেয়েটি কে বল অপেক্ষা করতে।আর তাছাড়া তুই কি মনে করেছিস তোর শশুর এর যথেষ্ট টাকা।এজন্য তো তোকে বেকার হিসেবে মেনে নিচ্ছে ।বিয়ে র পর প্রথম সবই ঠিক থাকবে।কিন্তু পরে দেখিস এর ঝাল কতো।শশুর তোকে কিভাবে টাকার খোঁটা শোনাবে
এই কথাটা আশফি র বুকে গিয়ে বিধলো।আসলেই তো সে তো বেকার।হ্যাঁ নীলিকা তাকে ভালোবাসে ।কিন্তু বিয়ে র পর যদি নীলিকা বদলে যায়
–কিন্তু মা ওদের বাড়িতে সবাইকে দাওয়াত দেওয়া, কমিউনিটি সেন্টার সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে।আর তো মাত্র পনেরো দিন বাকি
মাইশা একদিক থেকে যেমন নীলিকা র কথা ভাবছে।আরেক দিক থেকে নিজের ভাইয়া র কথা।কিন্তু কথায় আছে না পর কখনো আপন হয় না।আর মানুষ বড়ই স্বার্থপর
–ভাইয়া এটা কোন যুক্তি হলো না।নীলিকা আপুকে তুই বোঝা ও ঠিক বুঝবে।আর ও যদি তোকে এতো ভালোবাসে তাহলে এই টুকু অপেক্ষা করতে পারবে না।আর একবার তুই বাইরে থেকে ডিগ্রি নিয়ে আয় তারপর দেখবি ওর চেয়ে ভালো শত নীলিকা তোর পেছনে ঘুরবে
–মাইশা,ভুলে যাস না আমি শুধু নীলি কে ভালোবাসি।ও যেমন তেমন ই আমার কাছে সবচেয়ে সেরা
–ভাইয়া আমি সেটা বলতে চাই নি,মানে নীলিকা আপুর ফ্যামিলি এটা শুনে দেখবি ঠিক রাজী হবে।সবাই তো তার মেয়ে র ভালো চায় বল
আশফি কিছু ভেবে পারছে না ।না পেরে আশফি সিদ্ধান্ত নিল হ্যাঁ সে বিদেশ যাবে।তার বিশ্বাস আছে তার নীল পরী তার জন্য অপেক্ষা তে থাকবে অবশ্য ই থাকবে।
এর পর দিন আশফি কনফরম করে ভিসার এপলাই করলো।আশফি পাসপোর্ট ছিল।এক বছর আগে তার চাচাতো ভাই দের সাথে সে বিদেশ ভ্রমণ করেছিল।পাসপোর্ট এর মেয়ে দশ বছরের।তাই আশফির তেমন সমস্যা হবে না
কিন্তু এতো কিছু আশফি করেছে তার কিছুই সে নীলিকা কে জানায় নি।তার মা বাবা বলে দিয়েছে যেহেতু তার বিশ্বাস নীলিকা সব মেনে নেবে তাই তার আগে ভিসার কাজ করা উচিত তার পর না হয় মাথা ঠান্ডা করে নীলিকা আর তার পরিবার কে বোঝানো যাবে
সন্ধ্যা বেলা
আশফি ফোন অন করে দেখে সকাল থেকে নীলিকা র অনেক গুলো মিসড কল।আজ সারাদিন এর ব্যস্ততাতে আশফি একটি বারের জন্য ও কথা বলতে পারে নি তার নীল পরীর সাথে
আশফি নীলিকা কে কল দিল।সাথে সাথে ওপাশে ফোন রিসিভ হলো
চাতক পাখির মতো যেন নীলিকা বসে ছিল ফোন হাতে নিয়ে ।আশফি র নাম্বার দেখতেই সে হাসি ভরা মুখে কল রিসিভ করলো।যেন বহু পথ ঘুরে আসা তৃষ্ণার্ত কাক সামনে পানি পেয়ে যেমন করে
–হ্যালো আশফি,তুমি কেমন নীল পুরুষ গো।সারাদিন একবার ও ফোন দিলে না।এখনি এভাবে ভুলে যাচ্ছ,বিয়ে র পর তো দেখা যাবে তোমার যে একটা বৌ আছে সেটাও জানবে না
–আচ্ছা নীল পরী,তুমি কি ভুলে যাবে আমাকে,যদি কখনো দূরে চলে যাই,অনেক দূরে ,তুমি কি অভিমান করবে খুব।নাকি আমার ফেরার অপেক্ষা করবে,তারপর সব অভিমান ভুলে গিয়ে তোমার নীড়ে আমাকে একটু জায়গা দেবে
চলবে———