#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_০৪
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
সন্ধ্যা বেলায় পশ্চিম আকাশের সূর্য টা ঢলে পরেছে।
ছাদের এক কোনে দাঁড়িয়ে সেটাকে উপোভোগ করছি আর জীবনের সুতো টায় কোথায় কেথায় গিট পরেছে তা বুঝার চেষ্টা করতেছি।
জীবনকে যদি কোন সুতোর সাথে তুলোনা করা হয় তবে আমার জীবনের সুতোটা এক দম পেচিয়ে গেছে।
এমন এমন গিট তাতে পরেছে যা খোলা আমার মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়৷
জীবন নামের সুতোটাও আমার সাথে বেইমানি করলো।
সুন্দর একটা জীবনকে তচনচ করে দিলো এক নিমিষেই।
আমি নিরুপায় হয়ে বসে রইলাম এক কোনে ভাবনার গভীরে।
–আপু কি করছিস৷
রাইমার কথায় বাস্তবে ফিরলাম।
–কিছু না রে এমনি দাঁড়িয়ে ছিলাম।
–আপু সত্যি করে একটা কথা বলবি।
–কি বলবো বল।
–আপু প্রেয়ন ভাইকে তো তোর কখনো ভালো লাগতো না আপু।
–হটাৎ এই প্রশ্ন কেন?
–না আপু ছোট থেকেই দেখে এসেছি তুই কখনো ওনার কথায় কথা বলিস নি।
উনি যেখানে থাকতো তুই তার অপর দিকে থাকতি।। তাহলে বিয়ে তাও এই পরিস্থিতি তে!
–রাইমা তুই কখনো রেশমি সুতো দেখেছিস?
–হ্যাঁ।
–রেশমি সুতো না অনেক কোমল হয় আর একটু ছাড়া ছাড়া খুব যত্ন করে না রাখলে তাতে গিট ধরে আর এক বার গিট ধরলে আর তা ছাড়ানো সম্ভব হয় না তা কি দেখেছিস।
–হ্যাঁ আপু কিন্তু এখানে রেশমি সুতো কি করে আসলো৷
–আসলো রেশমি সুতার মতো আমার জীবনের ও গিট পরে গেছে যত্ন নিতাম না যে৷
–আপু আমি না বুঝতেছি না।
–বাদ দে এখন।
–কিন্তু,
–রাইমা যা পড়তে বস।
–আচ্ছা।
রাইমাকে নিচে পাঠিয়ে আমি আবারো আমার প্রকৃতি দেখার খেলায় মজে গেলাম।
আসরের আজান কানে আসলো মাথায় কাপড় দিয়ে খোলা আকাশের নিচে মোনাজাত করলাম।
এমন করলে আমার মন টা ভালো হয়৷
মোনাজাত শেষ করতে হটাৎ কারোর উপস্থিতি আমার পেছনে টের পেলাম৷
পেছনে ফিরার আগেই প্রেয়ন বলে উঠলেন,
–এই সন্ধ্যা বেলায় একটা পরি শাড়ি পরে চুল খোপা করে প্রকৃতি দেখাছে।
কি অপরুপ সুন্দর দৃশ্য তাই না৷
–মানুষ সে তো মানুষ হয় কোন পরি নয়।
–আমি কফি খাবো।
–অপেক্ষা করুন আমি আনছি।
–এখানে এনো চাঁদটা বেশ সুন্দর দেখাবে আজ।
পূর্ণ পূর্ণিমা হবে যে।
–হুম।
আমি নিচে চলে এলাম।
কফি বানাতে।
আমারো মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে হয়তো কাঁদার জন্য তাই নিজের জন্য ও কফি বানিয়ে নিলাম।
কফি বানিয়ে শিড়ি বেয়ে উপরে উঠে এলাম৷
প্রেয়ন দোলনায় বসে আছে।
আমি গিয়ে ওনাকে কফি দিলাম৷
–এখানে বসো পৃথু।
ওনার পাশে যায়গা করে দিলো।
আমি বসে পরলাম।
–চাঁদটা সুন্দর তাই না।
–হুম।
–আচ্ছা পৃথু তোর নাম তো পৃথুলা কখনো জানতে ইচ্ছে হয় নি আমি কেন পৃথু বলে ডাকি।।
–না।
–কেন?
–কারন আপনার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কোন কিছুই হয় না তাই জানার ইচ্ছে ও জাগে নি।
–আচ্ছা তাই৷
–হুম।
উনি মলিন হাসলেন৷
কফিটা শেষ করে আমি উঠে আসতে গেলে প্রেয়ন আমার হাত ধরে বসিয়ে দেয়।
আমার কাঁধে হাত রেখে আমাকে টেনে তার চাদরের তলে নেয়।
–কি করছেন৷
–চুপ থাকতে পারিস তো নাকি৷
আমি চুপ থাকলাম।
উনি ভালো মতো চাদর জড়িয়ে পা উঠিয়ে বসলেন।
–আমার কাঁধে মাথা রাখলে মাইন্ড করবো না তো৷
–ব্যাটা খবিশ(মনে মনে)
–কি বলিস মনে মনে?
–কিছু না।
ওনার কাঁধে মাথা দিলাম৷
চাঁদটা ঠিক আমাদের সামনে।
চাঁদের আলোতে আলোকিত পরিবেশ।
চারিদিকে শীতল হাওয়া।
আমার অবশ্য ঠান্ডা লাগছে না।
প্রেয়নের জন্য।
কিন্তু আমার মনের মাঝে কোথাও একটা আমার ভাবনা গুলো উকি দিচ্ছে।
আমার মনে হচ্ছে হাজার রকমারি ফুলের বাগানের মধ্যে নিজের সব থেকে প্রিয় মানুষ টার সাথে আমি বসে আছি।
সময়টা এখানে থমকে যাক আমি সারা জীবন এখানে কাটিয়ে দি।
এমন অদ্ভুত ফিলিংস এর মানে আমার জানা নেই।
তবে তার জন্য মনের মাঝে জায়গা তৈরি হচ্ছে এটা বেশ বুঝতে পারছি।
কিন্তু এ তো মাত্র ১ মাসের বিয়ে কিছু সময়ের শুখ মাত্র।
–পৃথু৷
–হু (অন্য জগতে থেকে)
–কই হারিয়ে আছিস।
–কই কোথাও না (ধ্যান ফিরে)
–তোর মনে হচ্ছে না সময়টা এখানে থমকে দাঁড়াক তুই আমি সারাট জীবন এভাবে কাটিয়ে দি।
–যা হবার নয় তা নিয়ে কখনো আশা করি নি আমি।
–হুম।
–ছাড়ুন আপনিও নেমে আসুন খেতে দিচ্ছি।
কথাটা বলে তার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে নিচে চলে আসলাম৷
রান্না করতে লাগলাম।
রান্না ঠিক না খাবার গরম দিচ্ছি।
সব রেডি করে টেবিলে সাজিয়ে দিলাম।
নার্স বাবার খাবার টা নিয়ে গেল।
আমি রাইমা, প্রেয়ন কে খেতে দিলাম।
খেয়ে নিলো সবাই আমিও কিছু খেয়ে বাবাকে দেখে রুমে চলে এলাম।
প্রেয়ন ভাই ল্যাপটপে কাজ করছে৷
আমি বিছনা বানিয়ে দিলাম।
তার পর এক কোনে শুয়ে পরলাম৷
চোখ বন্ধ করতে,
আজকে সারা দিনের ঘটনা ভেসে উঠলো। আজ একটা দিনে মুহূর্তের মধ্যে আমি কারোর স্ত্রী হয়ে গেলাম।
সবটা কল্পনা করলে এখনো কেমম স্বপ্ন স্বপ্ন মনে হয়।
হটাৎ মনে হলো কেউ আমার পাশে শুয়ে পরলো।
তার মানে প্রেয়ন ভাই।
জীবনে প্রথম কোন ছেলের সাথে এক খাটে আমি।
ভাবতেই কেমন লাগছে।
মনের কথা মনে রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম৷
★
পৃথুলা ঘুমিয়ে গেছে। মিষ্টি রূপের অধিকারিনি সে।
আল্লাহ তাকে ঘুমন্ত অবস্থা নিষ্পাপ লাগে প্রেয়নের ইচ্ছে হচ্ছে তাকে বুকের মধ্যে শক্ত করে জড়িয়ে রাখতে৷
এতো মায়াবি কোন মেয়ে হতে পারে তা তার যানা ছিলো না।
প্রয়ন চোখ বন্ধ করে পৃথুলা কে কাছে টেনে নেয়।
হয়তো এই ১মাস একটা সুন্দর স্বপ্ন হতে চলেছে।
#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_০৫
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
সূর্য পূর্ব কোলে লাল আভা ছেড়ছে।
একটু আগে আজান হলো।
ঘুম ভাঙলো আজান শুনে,
ঘুম ভাঙতে নিজের পাশে কম্বলের তলে বাচ্চাদের মতো ঘুমিয়ে থাকা প্রেয়নকে দেখতে পেলাম।
তার মুখটা মিষ্টি মায়াতে ভরপুর।
অসাধারণ সে, মন চাইছে এভাবে দেখে কাটিয়ে দি৷
কিন্তু এখন নামাজ পড়তে হবে রাইমাকে উঠিয়ে পড়াতে বসাতে হবে।
উঠে ফ্রেস হয়ে নামাজ আদায় করে নিলাম।
তার পর চা বানিয়ে রাইমাকে উঠিয়ে চা দিয়ে পড়াতে বসিয়ে দিলাম।
আমার সংসার টা এমনি চলে মায়ের অবর্তমানে এগুলা তো আমারি দায়িত্ব।
বাবা ঘুম।
আমারো কেমন ঘুম ঘুম পাচ্ছে।
একটু পর উঠে সবার জন্য নাস্তা বানাবো এটা ভেবে আবার গিয়ে এক কোনে শুয়ে পরলাম।
বিছনায় শুতেই ঘুম নেমে এলো চোখে।
।
।
।
মুখের উপর রোদ এসে পরতে ঘুম হালকা হয়ে গেল।
চোখ মেলে তাকাতে দেখি উনি বসে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।
ঘুমোতে গিয়ে কি বেশি ঘুম হলো নাকি।
–পৃথু তুই উঠেছিস এক কাপ কফি আনবি?
–কটা বাজে?
–১০ টা।
–কি বলো প্রেয়ন ভাই আমি এখনো ঘুমিয়ে আছি হায় হায়৷
বিছনা ছেড়ে তড়িঘড়ি করে উঠে দরজার দিকে যাবো হটাৎ আমাকে টান দিলো প্রেয়ন আমি সোজা তার কোলের উপর পরলাম।
–কি করছেন৷
–গিন্নি তুই আমার গিন্নি এবার তো আর ভাই বলিস না রে।
–আপনি এখন এসব বলছেন আমার কাজ আছে ছাড়ুন।
–ছাড়বো না আর ভাই বলবি।
–আচ্ছা বলবো না এবার ছাড়ুন।
–সত্যি।
–৩ সত্যি।
–আচ্ছা ঠিক আছে।
উনি আমাকে ছেড়ে দিতে উঠে এক দৌড় দি৷
প্রেয়ন ঘর থেকে পৃথুলার দৌড় দেখে মুচকি হাসছে।
–পিচ্চি বিয়ে করেছি আমি।
।
–আল্লাহ কতো লেট হয়ে গেল।
খাবার করার আগে ওনার কফিটা বানিয়ে নিলাম।
কফি নিয়ে রুমে এসে দেখি উনি আগের অবস্থান এ বসে কাজ করছেন৷ কফিটা ওনাকে দিলাম।
–ধন্যবাদ পৃথু প্রচুর মাথা ব্যাথা হচ্ছিল।
–জি।
আমি চলে এলাম৷
রান্না করে সবাইকে খেতে দিলাম।
বাবার খাবার টাও দিয়ে দিলাম।
–এতো কজ করিস কষ্ট হয় না।
–না মা মরে যাবার পর থেকে সব আমার রোজকার রুটিন।
–পৃথু বাসায় যেতে হবে যে।
–বাসায় কিন্তু রাইমার উপর সব কিছু,
–কিছু হবে না ওর উপর আমি কথা বলেছি আজই নতুন কাজের ৩ জন মহিলা আসবে ঘরের সব কাজ তারা করবে।
–আজি যাবো।
–হ্যা আমার কাজ পরেছে।
–আচ্ছা।
মন খারাপ করে বাবার কাছে গেলাম।
–চলে যেতে হবে গো বাবাই আর থাকা হবে না। বাবাই তেমার মেয়ে বড়ো হয়ে গেছে।
আর ভয় পায় না।
সত্যি তোমার বলা কথা গুলো আমার জীবনে পথ চলার একটা রাস্তা করে দেয়।
।
।
।
–প্রেয়ন ভাইয়া আজ না গেলে হতো না (রাইমা)
–না রে রাইমা বাসায় কাজ আছে।
–আচ্ছা (মন খারাপ করে)
–মন খারাপ করিস না রাইমা আবার আসবো।
–চকলেট নিয়ে আসবা কিন্তু ভাই পরের বার।
–আল্লাহ কি বলিস তোর জন্য চকলেট আমার পকেটে৷
প্রেয়ন পকেট থেকে অনেক গুলো চকলেট বার করে দিলো।
–দেখ।
–ধন্যবাদ। (খুশি হয়ে)
–হুম।
ব্যাগ গুছচ্ছি আর ওদের দুষ্টুমি দেখছি।
সত্যি যদি বিয়েটা ১ মাসের জন্য না হয়ে সারা জীবনের জন্য হতো৷
ব্যাগ গোছানো শেষ হলো।
–চলো পৃথু৷
–হুম চলুন৷
আমরা রওনা হলাম৷
বাবাকে দেখে।
ইচ্ছে তো হচ্ছে না মোটেও কিন্তু ১ মাসের জন্য আমি তো তার স্ত্রী।
গাড়িতে দু’জন ই চুপচাপ ছিলাম কোন কথা হয় নি দুজনের মধ্যে।
বাসায় আসতে ফুপি জড়িয়ে ধরলেন।
তার পর রুমে এলাম৷
কাপড় পাল্টে গোসল করে নিলাম।
একটা হলকা গোলাপি রঙের শাড়ি পরেছি।
ভেজা চুল গুলো মুছতে আছি
তখন হটাৎ মনে হলো কেউ পেছনে এসে দাঁড়িয়ে ছে।
আমি আয়নার সামনে তাকানোর আগেই পেছনে থাকা লোকটা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
আমি বুঝতে পারি একটা প্রয়ন।
–কি করছেন?
–তোকে অনেক মিষ্টি দেখাচ্ছে পৃথু৷
–হয় তো ছাড়ুন।
–কেন গিন্নি তুই না আমার বৌ।
–মাত্র ১ মাসের।
–কথায় কথায় ১ মাস না টানলে হয় না।
–যা সত্যি তা কেন টানবো না। (মলিন হেসে)
–পৃথু।
–বলুন।
–যদি বলি ভালোবাসি।
–কিছু সময়ের জন্য ভালো বেসে লাভ নেই।
–তোর চুলের গন্ধ টা কিন্তু অনেক সুন্দর পৃথু।
ওনার কথায় ভেতরে শীতল হাওয়া বইতে লাগলো।
–ছেড়ে দিলাম তোকে সত্যি ও ১ মাসের জন্য ভালোবেসে লাভ নেই।
ওনার এভাবে কাছে আসা এভাবে ছেড়ে দেওয়া।
একটা জাল বুনে দিচ্ছে আমার মস্তিষ্কের চারি দিকে।
কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।
কিন্তু কষ্ট হয় এটা বুঝতে পারছি।
আমি সরে নিচে চলে এলাম।
–পৃথুলা।
–জি ফুপি।
–ফুপি কে? (বেশ রেগে)
হটাৎ ফুপির রাগে ভয় পেয়ে গেলাম।
–ইয়ে মানে,
–কি মানে ফুপি না মা বলবি মা।
আমি ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম ফুপির দিকে।
–কিরে বলবি না মা।
–হুম মা।
–এই বার হলোনা।
–মা আমি বার হচ্ছি। (প্রেয়ন)
–কই যাচ্ছিস?
–একটু কাজ আছে মা।
প্রেয়ন চলে গেল।
আমি তাকিয়ে রইলাম।
আস্তে আস্তে সে চোখের সীমানা অতিক্রম করলো।
–পৃথুলা।
–জি।
–আয় আমি একটা জিনিস দেখায় তোকে।
মা আমাকে অনেক রান্না শেখালেন।
এভাবে দিন কাটলো।
রাত এখন ১০ টা৷
প্রেয়ন এখনো বাসায় আসে নি।
ভালো লাগছে না চিন্তা হচ্ছে।
কি করবো ফোন করবো কিন্তু কি করে ফোন তো নেই।
ঘরের মধ্যে পায়চারি করছি।
আজ প্রথম নিজেকে বৌ বৌ হিসাবে মনে হচ্ছে।
মনে হচ্ছে একটা দায়িত্ব পরেছে সত্যি আমার উপর৷
প্রয়ন কোথায়।
।
রাত ১২ টা,
খাবার টেবিলে বসে আছি। মা ও বসে ছিলো কিন্তু ওনাকে পাঠিয়ে দিছি একটু আগে ঘুমোতে।
হটাৎ কলিং বেল বাজলো।
দৌড় দিয়ে দরজা খুললাম।
ওনাকে দেখে অনেক ক্লান্ত মনে হচ্ছে।
আমি সরে ওনাকে ভেতরে আসতে দিলাম।
রুমে এসে উনি ফ্রেশ হলো।
–খাবার
–খেয়ে এসেছি এগুলা গিন্নি গিন্নি তুমি শুধু এই পরিবারের সামনে তাও ১ মাসের জন্য আমার সামনে এসব নাটক করবে না।
,
কড়া গলায় কথা গুলো বলে বিছনার এক কোনে শুয়ে পরলো
আমার চোখ ভের এলো।
সত্যি তো ঠিকি বলেছে উনি।
উনি খেয়ে এসেছে একটা বার প্রশ্ন করলো না আমি খাইছি নাকি।
কেন করবে আমি কি হই ওনার।
খিদা মিটে গেলো আমার।
আমি চোখ মুছে এক কোনে শুয়ে পরলাম।
।
।
রাত ১ টা হটাৎ মনে হচ্ছে,
চলবে,#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_০৬
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
হটাৎ রাতে মনে হচ্ছে কেউ তার চোখের পানি আমার ঘাড়ে বিসর্জন দিচ্ছে।
পেছনে ফিরে তাকাতে গিয়ে বুঝতে পারছি উনি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে।
তবে কি উনি কাঁদছেন।
কিন্তু কেন?
–আপনি কাঁদছেন।
–না (ভাঙা গলায়)
–আমার তো মনে হচ্ছে ছাড়ুন ফিরতে দিন।
–না৷
–কি হইছে?
–উঠ ভাত না খেয়ে কেন শুয়েছিস। (ভাঙা গলায়)
— আমি খেয়েছি।
–না খাস নি উঠ।
–আমি।
–পৃথু আমি খাবার এনেছি।
–ছাড়েন তবে।
–হুম।
উনি ওনার হাতের বাঁধন আলগা করলো।
আমি উঠে বসলাম।
উনি খাবার এনে আমাকে খাইয়ে দিলেন নিজ হাতে।
ওনার চোখ বলে দিচ্ছে উনি কেঁদেছেন।
কিন্তু কেন?
আমাকে খাইয়ে দিয়ে অন্য পেলেট এর ভাত হতে ধরিয়ে দিলেন ।
–এটা?
–তুই তো খেলি আমাকে খাইয়ে দিবি না৷
–ও।
(নাকি খেয়ে এসেছেন ঝাড়ি তো তেমনি দিলেন রাগ হচ্ছে আমার এখন
মনে, মনে)
কি যে হয় এনার আমি বুঝতে পারি না।
নিজে কষ্ট দিবে নিজে। কাঁদবে সমস্যা কি!
আমি খাইয়ে দিচ্ছি৷
উনি বাচ্চা ছেলেদের মতো খাচ্ছে ।
হটাৎ খাবার নিতে গিয়ে আমার আঙুল কামড়ে ধরলেন।
–আউ৷ কি করছেন?
–কি করবো খাচ্ছি।
–খাচ্ছেন তো ভালো আমার হাত৷
–হ্যাঁ হাত তো কি হইছে।
মনে মনে রাগ হলো
তার পর খাওয়ানো শেষ করে। হাত ধুয়ে এলাম।
–পৃথু।
–হ্যাঁ।
–মাথাটা টিপে দিবি।
–আসছি।
হালকা ক্রিম লাগিয়ে উঠে এলাম।
উনি আমাকে বসিয়ে আমার কোলে শুয়ে আমার হাত দুটো তার মাথায় দিলো।
এখন চাকরি এটা আমার ওনার মাথা টিপো।
মাথা টিপে দিচ্ছি।
তখন তাকে খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করলাম।
লোকটা মাত্রাতিরিক্ত ফর্সা।
মুখে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি গুলো মন ছুঁয়ে যায়।
৬ ফুট লম্বা এক জন মানুষ। তাকে দেখলে যে কোন মেয়ে ক্রাস খাবে।
ভালো লাগতো তার চেহারা কিন্তু ব্যবহার এখনের মতোই কখনো ভালো লাগতো না।
–এভাবে না দেখলে একটু ঘুম হতো।
ওনার কথায় ধ্যান আসলো,
–নিজেকে বিশ্বসুন্দর মনে হয় নাকি। (হুহ)
–না সুন্দর তো আছি।
–হুহ৷
–আয় পাশে।
ওনার পাশে আমাকে শুইয়ে দিলো।
আর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেল।
মুহূর্ত টা এখানে থমকে যাক।
আমি ওর সাথে এভাবেই থাকি।
।
।
।
সকালে,
ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে নিলাম আগে।
আচ্ছা ওনাকে কি ডাকবো? নামাজের জন্য ? যদি রাগ হয়?
না হবে না নমাজ ই তো রাগ শুনলে শুনবো।
–এই যে।
–হু।
–উঠুন।
–এতো ভোরে কেন(ঘুমের ঘোরে)
–নামাজ পড়বেন না। (ভয়ে ভয়ে)
–নামাজ।
–হ্যাঁ উঠুন না।
–আচ্ছা ।
ভদ্রলোকের মতো উঠে তিনি ফ্রেশ হয়ে নামাজ আদায় করে নিলেন।
–বাহ এক কথায় মেনে নিলেন৷ (মনে মনে)
–এবার ঘুমোই৷
–জি অবশ্যই।
উনি শুয়ে পরলেন।
কিছু সময় পর,
–ঘুম হচ্ছে না তো।
–কেন?
–তুই নয় শুলে হবে না৷
–মানে!
–এদিকে আয়।
–আচ্ছা,
আমি ওনার কাছে যেতে উনি আমাকে টেনে ফেললো।
–এবার ঘুম হবে।
–আল্লাহ এ কেমন মানুষ (মনে মনে)
,
।
।
–পৃথুলা।
–জি মা কি করছিস৷
–পরোটা বানচ্ছি।
–কেন রে মা সব কই।
–মা আমি ওদের বললাম আমি করবো ।
তাই।
–আচ্ছা তুই কর তোর শ্বশুর বাবা আর প্রেয়ন এখন বার হবে।
–আচ্ছা।
আমি সুন্দর করে নাসতা তৈরি করে নিলাম।
–মা জলদি খাবার দেও
প্রয়ন নিচে নামতে নামতে।
–এই যে সব হয়ে গেছে বাবা।
প্রয়ন নিচে এসে বসলো। সাথে বাবাও বসলেন।
–কি রান্না করেছো।
–এই যে এগুলা।
–পরটা এগুলা তো সকালে কেউ করে না মা৷
–আজ রান্না করেছে বৌ মা আমার মিষ্টি বৌ মা।
–ও আচ্ছা
–পৃথুলা খেতে বস।
–মা তুমিও বসো আমি দিয়ে বসছি।
মা বসলেন আমি সবাই কে দিয়ে খেতে বসলাম
এক সাথে খেয়ে নিলাম সবাই।
–রাইমার সাথে একটু কথ বলবো ফোনটা
–নেও একটু জলদি করো বেরোতে হবে(প্রোয়ন)
আমি ফোনটা নিয়ে কথা বলে সব খবর নিয়ে ওনাকে দিয়ে দিলাম ।
বাবা আর উনি এক সাথে বেরিয়ে গেলেন।
–পৃথুলা তোর ঘুম হয় নি রাতে।
–(কি করে হবে তেমার ছেলের ডং দেখে রাত কেটেছে) মনে,মনে
–কিরে বল!
–একটু ক্লান্ত জানি না কেন।
–ওহ আচ্ছা তুই গিয়ে ঘুমো এখন কোন কাজ নেই।
–এখন,
–হুম যা তোর মুখ চোখ ভালো লাগছে না আমার।
–আচ্ছা।
আমি এসে শুতেই ঘুমিয়ে গেলাম।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
ঘুম ভাঙলো,
চলবে,
চলবে?
(আমি চেষ্টা করবো আরো বড়ো করার ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ 💖)