গল্প :- বড্ড ভালোবাসি
পর্ব :- ১১ এবং ১২
Writer :- Labiba Islam Roja
:
:
:
রাহাত কলেজ আসার পরই সকল টিচারদের উপর চিৎকার করছে ।কলেজ থেকে জলজ্যান্ত একটা মেয়ে উধাও হয়ে যায় কি করে।কান খুলে শুনে রাখুন আমাদের রোজের যদি কিছু হয় তাহলে এই কলেজের কি হাল করবো আপনারা নিজেও জানেন না।সবাই রাহাতকে শান্ত হতে বলছে কিন্তু সে সবাইকে ধমক দিয়ে বলে আমার কলিজার টুকরো মিসিং আর আপনারা বলছেন শান্ত হতে।পাশ থেকে একজন বলে উঠলো কে উনি এভাবে সবাইকে শ্বাশাচ্ছোন?আরেকজন বললেন তুমি উনাকে চিনো না।উনি হলেন এই শহরের টপ বিজনেসম্যানদের মধ্যে একজন মিঃরেজওয়ান চৌধুরীর ছেলে রাহাত চৌধুরী।।নাম খ্যাতি কোনো কিছুর অভাব নেই।একটি মাএ ছেলে আর মেয়ে নিয়ে তাদের সুখের সংসার।
.
.
রাহাত কলেজ কর্তৃপক্ষের উপর ভরসা করতে পারছে না।তাই পুলিশে খবর দিতে চাইছে কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে করছে না।তাই নিজে চারদিকে খুঁজচ্ছে।
.
অন্যদিকে রিহান হাত পা গুটিয়ে নেই এদিক সেদিক খুঁজেই চলেছে তার রোজকে কিন্তু কোথাও তার কোনো হদিস নেই।এবার আর রিহান শান্ত থাকতে পারছে না আর কোথায় খুঁজবে সব জায়গাই তো খোঁজা শেষ।আবির রিহানকে শান্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা করছে।
.
.
হঠাৎ রিহানের কলেজের পুরোনো বিল্ডিংটার কথা মনে পড়লো।ওহ মাই গড আবির পুরনো বিল্ডিং তো খোঁজা হয়নি। ওই বিল্ডিংটা মেরামতের প্ল্যানিং চলছে সেখানে কোনো ক্লাস হয়না আর কেউ যায়ও না।তাই রোজকেও ওদিকে খোঁজা হয়নি।আবির বলল রোজ কেন ওই ভাঙাচোরা বিল্ডিংয়ে যাবে।
.
হয়তো যায়নি ওকে কেউ নিয়ে গেছে।আর দেরী না করে ওদিকে চল।দৌড়াতে দৌড়াতে বিল্ডিংয়ে গিয়ে পৌছালো।আবির রিহান আর তাদের বন্ধুরা পুরো বিল্ডিং টা খুঁজে চলেছে।
.
অনেক ডাকাডাকির পরও কারো কোনো সাড়া নেই।এখন আর ডাকার সাধ্যও নেই।অনেক্ষণ অন্ধকারের মধ্যে থাকায় রোজ অনেক দুর্বল হয়ে পরেছে।শরীর নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। চোখে ঝাপসা দেখছে মাথা ঘুরছে পানির পিপাসায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।ভয়ে হাত পা কাঁপছে।নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।দেয়ালের সাথে ঠেস দিয়ে বসে আছে উঠে দাড়াঁনোর শক্তিটুকু পাচ্ছে না।
.
.
রিহান রোজ রোজ বলে পাগলের মতো চিৎকার করছে কিন্তু কারো কোনো সাড়া পাচ্ছে না।
.
রিহানের ডাকে রোজের কানে যাচ্ছে কিন্তু কথা বলার শক্তি পাচ্ছে না।বসা থেকে দাঁড়াতে যাবে তখনি আবার ধব করে মাটিতে পরে যায়।
.
রিহান কিছু একটার শব্দে পেছনে তাকায় আর বুঝতে পারে শব্দটা রুমের ভিতর থেকে এসেছে।তাই দেরি না করে রুমের চাবি এনে রুমটা খোলে।
.
দরজা খোলার শব্দে রোজ সামনের দিকে তাকায়।তখনি আবছা আলোয় কাউকে দেখতে পায় কিন্তু মুখটা অস্পষ্ট হওয়ায় চিনতে পারছে না।
.
রিহান দরজা খোলতেই রোজকে হাটু ভাঁজ করে বসে থাকতে দেখে।চোখেঁ মুখে খুশির ঝলক ফুটে উঠে।রিহান দৌড়ে রোজের কাছে যায় কোনো কিছু না ভেবে ওকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে।রোজ কি হয়েছে তোমার তুমি ঠিক আছো তো রোজ কথা বলছো না কেন।তুমি রাগ করেছ আমার উপর।কথা বল
.
চোঁখ মেলে তাকাতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু সামনের মানুষটাকে দেখার তীব্র ইচ্ছায় আস্তে আস্তে চোঁখ খুললাম আর বললাম রিহান ভাইয়া। আমি বাড়ি যা….চোখঁ বন্ধ করে ফেলল হাত পা কাপঁছে। জ্ঞান হারিয়েছে রোজ আবির বলল রিহান নিজেকে সামলা রোজকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে গো ফাস্ট।রিহান চোঁখ মুছে রোজকে কোলে তুলে নিয়ে বেড়িয়ে গেলো।
.
রোজকে পাওয়া গেছে এই খবরটা রাহাতকে জানানো হয়েছে। রাহাত দৌড়ে রোজের কাছে যাবে তখন দেখলো রোজকে কেউ এদিকে নিয়ে আসছে।তাই দেরি না করে গাড়িতে বসলো আর রিহানের কাছ থেকে রোজকে নিজের কাছে নিলো।আর রিহানও দেরি না করে গাড়িতে স্টার্ট দিলো।খুব দ্রুত পৌছে গেলো হসপিটালে।রাহাতের বাবার পরিচিত ডাক্তার রোজকে দেখছে….
.
ডাক্তার রোজকে দেখে বললেন___চিন্তার কোনো কারণ নেই ইয়াংম্যান। অনেক্ষন অন্ধকারে থাকার কারনে জ্ঞান হারিয়েছে আর সারাদিন খাওয়া দাওয়াও হয়নি তাই দুর্বল হয়ে পড়েছে।দু-একদিন রেস্ট নিলে ঠিক যাবে।
.
রাহাতঃআঙ্কেল রোজকে আজ নিয়ে যেতে পারি?আর এখন কি রোজের সাথে দেখা করতে পারবো
.
না আজ না কালকে সকালে ডিসচার্জ করে দেবো।ডাক্তার রাহাতের কাধেঁ হাত দিয়ে বললেন চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।আর হ্যাঁ রোজের সাথে দেখা করতে পারবে।
.
রাহাতের বাবা মাও হসপিটালে এসে পৌঁছেছেন।হসপিটালে আসার সময় রাহাত রেজওয়ান সাহেবকে সবটা জানায়।তিনি দেরি না করে স্ত্রীকে নিয়ে চলে আসেন।।রোজের মা প্রায় পাগলের মতো অবস্থা।হবেই বা না কেন নিজের একমাএ মেয়ের এই অবস্থায় তিনি কেন কেনো মা ই নিজেকে সামলাতে পারবেন না।রাহাত মা আর বাবাকে রোজের সাথে দেখা করতে পাঠিয়েছে।আর রিহান আর ওর বন্ধুরা এখনও চুপচাপ ওখানে দাড়িয়ে আছে।
.
রাহাত রিহানের দিকে এগিয়ে গেলো আর বলল___তোমাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না।তুমি জানো না আজ তুমি আমাদের কি ফিরিয়ে দিয়েছো।রোজকে ছাড়া আমরা বাঁচতে পারতাম না।ওই আমাদের বাঁচার অবলম্বন বলে কেঁদে দিলো।আমরা তোমার কাছে আজীবন ঝণী থাকব।
.
এসব কি বলছেন ভাইয়া আপনি শান্ত হন আর এটা আমাদের দায়িত্ব।আমাদের কলেজে এরকম একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলো।তার জন্য আমরা দুঃখিত।(আপনি তো জানেন না ভাইয়া রোজকে ছাড়া আমিও বাঁচতে পারবো না)
.
তুমি কেন ক্ষমা চাইবে এতে তোমার কোনো দোষ নেই।চলো রোজের সাথে দেখা করে আসি।অনেক রাত হয়ে গেছে তোমাকেও বাড়ি ফিরতে হবে।
.
এরইমধ্যে রোজের বাবা মা রোজের সাথে দেখা করে বেড়িয়ে এসেছেন।রেজওয়ান সাহেবের স্ত্রী আসতে চান নি কান্না কাটি করছেন বলে তিনি জোর করে নিয়ে এসেছেন।রাহাত নিজের বাবা মাকে জোর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দিলো আর নিজে হসপিটালে থাকবে বলে মনস্থির করলো।
.
রাহাত রোজের কেবিনে ঢুকে দেখলো রোজ চোঁখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।রিহান দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে।আস্তে আস্তে কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলাতে লাগলো।মাথায় কারো স্পর্শ পেয়ে চোঁখ খুলে বলল ভাইয়া।কাঁদো কাঁদো গলায় কিরে কেমন আছিস?
.
এখন ভালো আছি।জানো ভাইয়া তখন কত ভয় পেয়েছিলাম আর তোমাকে ডাকছিলাম তুমি এত দেরি করলে কেন? শেষে মনে হয়েছিলো আমি বোধ হয় মরেই যাব আর তোমাদের সাথে দেখা হবে না।
.
চুপ একদম চুপ কোনো কথা বলবি না খালি অলক্ষনে কথা।তুই না থাকলে আমরা বাঁচতাম কি নিয়ে।কাঁদতে কাদঁতে
.
ভাইয়া তুমি কাঁদছো কেন দেখ এখন তো আমি ঠিক আছি।আর কেঁদে না প্লিজ।আমি মরে গেলে তোমাকে জ্বালাবে কে তোমাকে জ্বালানোর জন্য হলেও আমাকে বাঁচতে হবে।বলে হেসে দিলো…
.
আচ্ছা তুই একটা কথা বল তুই ওখানে গেলি কি করে?
.
(এখন যদি ভাইয়াকে লিনার কথা বলি তাহলে ও মেয়ে বলে ছাড় পাবে না।)কি জানি কিছু মনে করতে পারছি না।আমি তোমার সাথে আর কথা বলব না এই আড়ি দিলাম?অন্যদিকে ফিরে
.
ওকে এত প্রেশার দেওয়ার প্রয়োজন নেই।কেন(অবাক হয়ে)আমি কি করেছি।ওখানে এত দেরিতে পৌঁছেছি বলে।দেখ আমি কান ধরছি ক্ষমা করে দে।দু কান ধরে দাড়িঁয়ে।
.
খিল খিল করে হেসে দিলো আর বলল না ভাইয়া তার জন্য না।তুমি আমাকে চকলেট দাওনি তাই আমি রাগ করেছি(গাল ফুলিয়ে)
.
ওলে বাবা লে সরি রাগ করে না পরী আমার মনে ছিলো না।দাড়াঁ পাঁচ মিনিটে নিয়ে আসছি।বলে পিছন ফিরে তাকাতেই রিহানকে দেখে আবার রোজের কাছে গোলো। রিহান এতক্ষণ ধরে ভাই বোনের খুনসুটি দেখছিলো।রাহাত রোজকে বলল জানিস রোজ আজ তোকে আমি খুঁজে পাই নি।একজন তোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে।এবং হসপিটাল পর্যন্ত নিয়ে এসেছে খুব দায়িত্ববান ছেলে।
.
রোজ আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করলো কে সে ভাইয়া?
.
.
#Part :- 12
:
:
রিহান ওখানে দাঁড়িয়ে কেন?এদিকে এসো…রোজ এই হলো সেই যে তোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে।
.
আমি ছোট খাটো একটা ধাক্কা খেলাম।যে কিনা আমাকে সহ্যই করতে পারে না সেই আমাকে বাঁচালো।কিন্তু কেন?অবাক হয়ে লোকটার দিকে তাকিয়ে আছি।চোঁখে মুখে দুশ্চিন্তার চাপ স্পষ্ট।খুব নার্ভাস লাগছে হয়তো আমাকে খুঁজার চক্করে সারাদিন কিছু খায়ও নি।
.
রিহান তুমি এখানে যদি একটু থাকো তাহলে আমি রোজের জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসতে পারতাম।
.
উনাকে কিছু বলতে না দিয়ে ভাইয়া প্রয়োজন নেই আমি একা থাকতে পারবো।আর তোমার হসপিটালেও থাকার প্রয়োজন নেই তুমি অফিস থেকে ফিরে এখনও কিছু খাওনি মনে হচ্ছে।তুমি বাড়িতে গিয়ে রেস্ট নাও সকালে এসে নিয়ে যেও।
.
তোকে আর পাকনামো করতে হবে না আমি জানি আমাকে কি করতে হবে।চুপ করে শুয়ে থাক।
.
ঠিক আছে ভাইয়া আপনি না আসা পর্যন্ত আমি এখানে আছি চিন্তা করবেন না।(ভাইয়া আমি এই চান্সটার জন্যই ওয়েট করছিলাম)
.
ভাইয়া চলে গেলো আমাকে রাক্ষসের হেফাজতে রেখে। ভাইয়া তুমি তো জানো না আমাকে যার কাছে নিরাপদ ভেবে রেখে গেলে তার কাছেই আমি সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ। আমি আর কিছু বলতে পারলাম না রাক্ষসটা নিজের ইচ্ছায় থাকতে চাইছে এখন আমি আর কিই বা বলতে পারি।রাক্ষস টা আর কিসের জন্য কথা শুনাবে কে জানে বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।রাক্ষসটা ধীরে ধীরে এসে আমার সামনে বসলো।
.
এখন কেমন লাগছে রোজ?
….
কি কথা বলবে না আমার সাথে? ওহহ পেত্নী বুঝি আমার উপর খুব রাগ করেছে।
…..
আমি জানি রোজ আমার সাথে তোমার কথা না বলারই কথা।সেদিন আমি তোমার সাথে যা করেছি মোটেও ঠিক করিনি।তোমার সাথে সেদিনের ব্যবহারের জন্য আই’এম সরি।ওকে ভালো থেকো আল্লাহ হাফেজ।
.
ভাইয়া না আসা পর্যন্ত আপনার এখানে থাকার কথা ছিলো।আর সরি বলতে হবে না দোষটা আমারই।
.
হুম ছিলো বাট আমি থাকায় তুমি হয়তো ডিস্টার্ব ফিল করছো। আর এখন তোমার রেস্ট নেওয়া উচিৎ তাই চলে যাচ্ছিলাম।আচ্ছা তুমি তখন মিথ্যা বললে কেন?
.
কখন?
.
ওই যে তোমাকে ওখানে কে নিয়ে গেছিলো।বললে মনে নেই।তুমি না বললেও আমি জানি রোজ তোমাকে কে নিয়ে গিয়েছিলো।
.
(ভ্রু কুঁচকে)আ.আপনি কি করে জানেন?
.
আমি জানি লিনা তোমাকে নিয়ে গেছিলো।সেদিনের ঘটনার পর বলেছিলো ও তোমাকে ছাড়বে না।কিন্তু সত্যি সত্যি যে এসব ঘটাবে আমি ভাবতেও পারিনি।আমি ওকে ছাড়বো না।তোমাকে কষ্ট দেওয়া আমি দেখে নেবো ওকে।(চোঁখ মুখ শক্ত করে)
.
কেন?উনি যা করেছেন আমার সাথে করেছেন তাতে আপনার কি?উনি আমাকে কষ্ট দিতে পেরেছেন তার জন্য আপনার তো খুশি হওয়ার কথা।কারণ আপনিও তো সবসময় চান আমি কষ্ট পাই।
.
বাজে কথা বলা বন্ধ কর।আমি কখনও চাই না তুমি কষ্ট পাও।কি করে বোঝাবো তোমাকে তুমি কষ্ট পেলে….
.
কি হলো থেমে গেলেন কেন?
.
এখন কেমন লাগছে বললে না তো?
.
আগের থেকে বেটার।
.
খুব তাড়াতাড়ি সেরে উঠো পেত্নী তোমাকে অসুস্থ দেখতে ভালো লাগে না।(মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)সেই দুষ্টু চঞ্চল পেত্নী কে আমার চাই।আচ্ছা এবার লক্ষী মেয়ের মতো ঘুমিয়ে পড়ো তো।
.
(একদিনে এত বদল।রাক্ষস টা এভাবে বদলে গেলো কি করে।আমি স্বপ্ন দেখছি না তো।আচ্ছা উনার স্পর্শে এরকম ফিলিংস হচ্ছে কেন।এ যেন অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে কেন এমন হচ্ছে)আচ্ছা আপনি বাড়ি যাবেন না?
.
নাহ যাব না তোমার কাছে থাকবো।কি থাকতে দেবে না আমায়য়?(ভ্রু নাচিয়ে মুচকি হেসে)
.
আপনি সবসময় ফাজলামো করেন কেন?সিরিয়াস হতে পারেন না।
.
কে বলল আমি সিরিয়াস না।আমি খুব সিরিয়াস (সত্যি তুমি এখনও পিচ্চিই রয়ে গেলে আজও আমাকে বুঝলে না)
.
ধ্যাৎ আপনার সাথে কথা বলাই ঠিক না।
.
বলো না কথা আমিও তো কখন থেকে বলছি ঘুমিয়ে পরতে।তুমিই শুধু বক বক করছো।
.
আচ্ছা ভাইয়া বলল আপনি নাকি প্রথমে আমাকে খুঁজে পেয়েছেন আর হসপিটালেও নিয়ে এসেছেন?তাহলে আমার কিছু মনে নেই কেন?আমি তো কিছুই মনে করতে পারছি না।
.
(ভাগ্যেস তোমার মনে নেই)ওসব বাদ দাও।দেখ কথায় কথায় ভুলেই গেছি তুমি ওখানে গেলে কি করে?লিনা তোমাকে কিসের জন্য ওখানে নিয়ে গিয়েছিলো?
.
আপনি যখন জেনেই গেছেন তাহলে বলছি কিন্তু রিকোয়েস্ট করছি আপনি ভাইয়াকে এই ব্যাপারে কিছু বলবেন না প্লিজ।উনাকে তখনকার সব কিছু খুলে বললাম।
.
ওকে।বাট যে তোমাকে এত কষ্ট দিলো তুমি তাকে বাঁচাতে চাইছো কেন?
.
উনি বুঝতে পারেন নি তাই ভুল কররে ফেলেছেন এখন আমরাও যদি উনার মতো করি তাহলে উনার আর আমাদের মধ্যে তফাৎ কি।ভাইয়া যদি একবার জানতে পারে লিনা আপু আমার সাথে এমন করেছেন তাহলে ভাইয়া উনার স্টুডেন্ট লাইফ ক্যারিয়ার সব ধ্বংশ করে দেবেন আর আমি এটা চাই না।
.
মুগ্ধ নয়নে দেখছি আর ভাবছি সত্যি মেয়েটার কথায় যুক্তি আছে।এইটুকু মেয়ে এত কিছু চিন্তা করছে।যত দেখছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি।খুব ইচ্ছে করছে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিতে কিন্তু এখন এটা পসিবল নয়।
.
আচ্ছা বাদ দাও ভাইয়া কোথায় গেলেন?অনেক রাত হয়ে গেছে আমাকেও বাড়িতে ফিরতে হবে?
.
আমার জন্য আপনাকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হলো।আপনার দিনটাই নষ্ট হয়ে গেলো।সামনেই অনুষ্ঠান তার কত কাজ কি থেকে যে কি হয়ে গেলো।
.
ঠিক বলেছিস রোজ আজ আমাদের জন্য রিহানের অনেকটা সময় নষ্ট হলো।(কেবিনে ঢুকতে ঢুকতে)
.
কি যে বলেন ভাইয়া। তাহলে আমি যাই কাল সকালে দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।
.
রিহান তোমারও তো সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি আমাদের সাথে খেয়ে যাও।
.
না ভাইয়া আজ আসি অন্য একদিন।আসছি রোজ।বলেই বেড়িয়ে গেলেন।
.
নে রোজ তুই হা কর তাড়াতাড়ি খেয়ে নে।ছেলেটা সত্যিই খুব ভালো।আজকালকার দিনে এরকম ছেলে পাওয়া যায় না।
.
ঠিক আছে ঠিক আছে কি একটু সাহায্য করেছে কি না তার জন্য কখন থেকে এত প্রশংসা করছো।এবার থামো
.
ওকে থামলাম এবার খেয়ে নে।
.
.
.
পরেরদিন সকালে তিশা আর শাওন আমার সাথে দেখা করতে এসেছে।একটু পর আমাকে ছেড়েও দেবে কিন্তু আজকে আমার চোঁখ একজনকে খুঁজছে।কেন খুঁজছে তাও জানিনা। বার বার দরজার দিকে তাকাচ্ছি সে এলো কি না।কিন্তু তার আসার কোনো নাম গন্ধও নাই।ধুর ভাল্লাগেনা।হঠাৎ দেখলাম রাক্ষসটা ভাইয়ার সাথে কথা বলতে বলতে কেবিনে ঢুকছে।এতক্ষণে মনে হলো দেহে প্রাণ ফিরে এলো।আচ্ছা আমি উনাকে এত মিস করছি কেন?কি ছিঃ কি জঘন্য কথা ভাবছি।আমার দিকে তাকিয়ে কিছুটা হাসলেন
.
কেমন আছো তোমরা সবাই?
.
ধুর কোথায় আমাকে জিজ্ঞেস করবে তা না।পুরো গোষ্ঠীর খবর নিচ্ছে।(মুখ ভেংচি দিয়ে)নে তোর গোষ্ঠীর খবর আমার কি? তোকে কি স্বাদে রাক্ষস ডাকি।
.
হসপিটালের সব ফর্মালিটিজ মিটিয়ে এসে ভাইয়া বলল চল পরী আমরা বেড়িয়ে যাই।মা বাবা তোর জন্য অপেক্ষা করছে।গাড়িতে বসে আছি ভাইয়া রাক্ষস টার সাথে কি কথা বলছে।ভাইয়া এই ছেলেটার মধ্যে কি যে দেখলো কে জানে?মাএ দু দিনের আলাপ অথচ দুজনকে দেখলে মনে হয় বহুদিনের পরিচিত।রাক্ষস কে বিদায় জানিয়ে ভাইয়াও গাড়িতে বসলেন।রাক্ষস টার দিকে চোঁখ যেতেই দেখলাম আমাকে চোঁখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে।হয়তো কিছু বলতে চাইছে তাই তার চোঁখের দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করলাম কিন্তু বুঝতে পারলাম না।
.
.
চলবে….
.