#বর্ষণের সেই রাতে ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ৪৯
.
মধ্যরাত, সুইডেনে তেমন বৃষ্টি হয়না, প্রতিবছর পাঁচশ থেকে আটশ মিলিলিটার এর মতো বৃষ্টি হয় । তবে এখন বাইরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। পরিবেশটা নিস্তব্ধ। হালকা ঠান্ডা বাতাসে কেমন একটা শীত শীত ভাব আসছে। প্রকৃতিও আজ বেশ গম্ভীর ভাব প্রকাশ করছে। বিছানায় বসে দুই হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে আছে রিক। আদ্রিয়ান পাশে বসে বলল,
— ” ঘুমোবেনা?”
রিক আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে একটা শ্বাস ফেলে আবার সামনে তাকিয়ে বলল,
— ” ঘুম আসবে না আজকে আর।”
আদ্রিয়ান কথাটা শুনে কিছু একটা ভেবে বলল,
— ” আচ্ছা চলো দুজনেই একসাথে জেগে থাকি। এমনিতেও তোমার সাথে তেমন কথা হয়নি। আজ একে ওপরকে ঠিক করে চিনেই নেওয়া যাবে।”
রিক মুচকি হাসলো। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
— ” আচ্ছা ঠিকাছে আমি কফি আনাচ্ছি তাহলে?”
আদ্রিয়ান সম্মতি জানিয়ে বলল,
— ” হুম কফি হলেতো ভালোই হয়। ঘুম ভাব যেটুকু আছে কেটে যাবে।”
রিক ফোন করে দুমগ কফি আনতে বলল। এরপর রিক আদ্রিয়ানের দিকে তাকাতেই আদ্রিয়ান রিকের কাধে হাত রেখে বলল,
— ” মনকে শক্ত করো। কিছু কিছু জিনিস থাকে যেটা মেনে নেওয়া কষ্টকর হয়। তবে যেটা সত্যি সেটা সত্যিই আর তোমাকে মানতে হবে।”
রিক আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে একটা মলিন হাসি দিলো যার অর্থ আমি নিজেকে সামলে নিয়েছি। আদ্রিয়ান ও সামনের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো আর ভাবতে লাগল যে মুখে হাসি ফুটিয়ে নিজেকে সামলে নিয়েছি বলাটা যতোটা সহজ, বাস্তবে নিজেকে সামলে নেওয়াটা ততোটাই কঠিন হয়।
এদিকে অনিমা আর স্নিগ্ধাও ঘুমোয় নি দুজনেই জেগে বসে আছে। দুজনেই বসে বসে চিপস খেতে খেতে গল্প করছে। আদ্রিয়ান আর অনিমার পরিচয় হওয়া, এরপর বন্ধুত্ব, আদ্রিয়ানের অনিমাকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে নিজের কাছে জোর করে আটকে রাখা। সব শুনে স্নিগ্ধা অবাক প্লাস এক্সাইটেড হয়ে বলল,
— ” ওয়াও! এটাতো পুরো ফিল্মি ফিল্মি ব্যাপার।”
স্নিগ্ধার কথা শুনে অনিমা হালকা হেসে বলল,
— ” হুমম। আমার লাইফটাও তো একটা ফিল্মের মতোই। জন্মের পরে আম্মু কে দেখিনি, অসময়ে আব্বুও চলে গেলো, এরপর আমার জীবণে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যেটা কনো ফিল্মের চেয়ে কম নয়। লাইক ট্রাজিডি মুভি ইউ নো। তবে জীবণের ভালো কিছু পাওয়ার মধ্যে পেয়েছি কিছু বন্ধু আর আদ্রিয়ানকে। এমন একজন মানুষ যে আমাকে নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। ”
স্নিগ্ধা মুচকি হেসে বলল,
— ” আর তুই?”
অনিমা কিছু না বলে চোখ সরিয়ে নিয়ে মুচকি হাসলো। স্নিগ্ধা দুষ্টু এক হাসি দিয়ে বলল,
— ” হুমমম। মনে প্রেম মুখে লাজ তাই তো?”
অনিমা মাথা নিচু করে হাত কচলাতে কচলাতে বলল,
— ” সেরকম কিছু না..”
স্নিগ্ধা ভ্রু কুচকে বলল,
— ” সেরকম কিছু না মানে কী? ভালোবাসিস না তুই আদ্রিয়ানকে?”
অনিমা মাথা নিচু করে ইতস্তত করে বলল,
— ” নাহ মানে হ্যাঁ ।”
স্নিগ্ধা একটা শ্বাস ফেলে বলল,
— ” হুমম। তোর না মানে হ্যাঁ এর মানে খুব ভালোভাবে বুঝে গেছি আমি। বলেছিস ওনাকে এখনো? ”
অনিমা না বোধক মাথা নাড়ল। স্নিগ্ধা একটা হতাশাজনক চাহনী দিয়ে বলল,
— ” তুইও না। এক ছেলে তোকে এতো ভালোবাসে। ইনফ্যাক্ট তুইও ওকে এতো ভালোবাসিস অথচ বলতেই পারলি না।”
অনিমা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে কিছু একটা ভেবে বলল,
— ” আমার টা ছাড় তোরটা বল। তুইও তো রিক কে ভালোবাসিস তাইনা?”
স্নিগ্ধা হালকা ব্লাস করার সাথে সাথে মুচকি হাসিও দিলো। তারপর অনিমার দিকে তাকিয়ে বলল,
— ” ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু তোর মতো আমার ভাগ্যটা এতো ভালো না। আমি ওকে খুব বেশি ভালোবাসলেও ও আমাকে ভালোবাসেনা। ও তো তোকে ভালোবাসে।”
অনিমা মাথা নিচু করে ফেলল। কী আর বলবে? একটু আনইজি ফিল হচ্ছে ওর। স্নিগ্ধা মুচকি হেসে বলল,
— ” তবে আমি এটুকুতেই খুশি যে রিক দার যদি কোনো বেস্ট ফ্রেন্ড থেকে থাকে সেটা আমি। ”
অনিমা স্নিগ্ধা দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি ফুটিয়ে বলল,
— ” একজন বেস্ট ফ্রেন্ডই কিন্তু একজন বেস্ট লাইফ পার্টনার হতে পারে।”
স্নিগ্ধা একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,
— ” ও কোনোদিন আমাকে ভালোবাসতে পারবেনা রে। ওর মনে শুধু তুই আছিস। ওকে আমি যতোদূর চিনি ও কোনোদিন তোকে ভুলতে পারবেনা। ”
অনিমা মুচকি হাসি দিয়ে বলল,
— ” কাউকে ভালোবাসা মানে এটা নয় যে নতুন করে কাউকে ভালোবাসা যাবে না। নতুন কাউকে ভালোবাসার জন্যে আগের ভালোবাসাকে ভোলার কোনো প্রয়োজন হয়না। পুরোনো ভালোবাসাকে মনের এককোণে রেখে দিয়েও নতুন কারো জন্যে জায়গা তৈরী করা যায়। আর তুই চাইলেই পারবি রিকের মনে জায়গা করে নিতে।”
স্নিগ্ধা হেসে অনিমাকে একটা হাগ করলো। অনিমাও স্নিগ্ধাকে জরিয়ে ধরে রেখে একটা শ্বাস ফেলল আর মনে মনে প্রার্থনা করলো যাতে রিক খুব তাড়াতাড়ি স্নিগ্ধাকে বুঝতে পারে। আর ওর সাথেই নতুন করে সব শুরু করতে পারে।
_____________________
তীব্র অফিসের কাজ সেরে সবে ঘুমিয়েছে, হঠাৎ করে ফোন বেজে ওঠাতে বিরক্ত হয়ে উঠে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো স্নেহার ফোন। এইসময় হঠাৎ স্নেহার ফোন পেয়ে বেশ অবাক হলো তীব্র। তবুও রিসিভ করে দুষ্টুমি করে বলল,
— ” খুব মিস করছিলে বুঝি?”
স্নেহা অস্হির কন্ঠে বলল,
— ” বাবা আমার বিয়ে ঠিক করছে তীব্র।”
তীব্র একটু মজা নিয়ে বলল,
— ” ওয়াও। খূব তাড়াতাড়ি একটা দাওয়াত পাবো তাহলে?”
স্নেহা কান্নামিশ্রিত কন্ঠে বলল,
— ” মজা করা বন্ধ করো। আ’ম সিরিয়াস।”
তীব্র বুঝতে পারলো যে স্নেহা যথেষ্ট সিরিয়াস ও মোটেও মজা করছেনা। তাই ঠিক করে উঠে বসে সিরিয়াস কন্ঠে বলল,
— ” মানে?”
স্নেহা কাঁদতে কাঁদতে বলল,
— ” বাবা আমার জন্যে ছেলেও দেখে ফেলেছে। ওনার অফিস ক্লাইনটের ছেলে। খুব তাড়াতাড়ি বিয়ের ডেইট ও ফিক্সট করে ফেলতে চাইছে।”
এটুকু বলে স্নেহা আবার কেঁদে দিলো। তীব্র উত্তেজিত হয়ে বলল,
— ” প্লিজ স্নেহা কান্না বন্ধ করো। বিয়ে ঠিক হচ্ছে, বিয়ে হয়নি এখোনো। তুমি কী আমাদের ব্যাপারে আঙ্কেল কে কিছু বলেছো? তোমার ভয় করলে বলো আমি নিজে কথা বলছি ওনার সাথে। ”
স্নেহা অস্হির কন্ঠে বলল,
— ” আমি বলেছি তীব্র। উনি আমাদের সম্পর্কটা মানছে না। বাবা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি যে আমাকে ওনার দেখা ছেলেকেই বিয়ে করতে হবে।”
কথাটা শুনে তীব্র কিছুক্ষণ চুপ থেকে জিজ্ঞেস করলো,
— ” তুমি কী চাইছো এখন?”
স্নেহা নিচু কন্ঠে বলল,
— ” আমি আমার আব্বুর মতের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারবোনা তীব্র।”
তীব্র ভ্রু কুচকে বলল,
— ” তারমানে তোমার বাবা বললে তুমি অন্য কাউকে বিয়ে করে নেবে?”
স্নেহা ইতস্তত কন্ঠে বলল,
— ” আমি বারবার বাবাকে বোঝানোর চেষ্টা করছি কিন্তু..”
তীব্র একটা শ্বাস ফেলে বলল,
— ” তাহলে আর কী? ওল দা বেস্ট ফর ইউর ফিউচার ম্যারিড লাইফ।”
— ” তীব্র আমার কথা..”
স্নেহাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ফোনটা কেটে দিলো তীব্র। মেজাজ প্রচন্ড খারাপ হয়ে আছে ওর। নিজেকে কিছুতেই শান্ত করতে পারছেনা। এখন ওর নিজের ওপরই রাগ হচ্ছে যে ভালোবাসা নামক এই প্যারায় কেনো ফেঁসে গেলো?
_____________________
আজ সকালেই বাংলাদেশের ল্যান্ড করেছে আদ্রিয়ান, অনিমা, রিক, স্নেহা, আদিব আর অভ্র। ওরা সবাই একসাথেই ফিরেছে আর এয়ারপোর্ট থেকেই যে যার যার গন্তব্যে চলে গেছে। রিক অনিমাকে বিশেষ কিছু বলেনি তবে আসার সময় শুধু হাতটা ধরে বলেছিলো ‘ভালো থেকো।’ অনিমার রিকের দিকে তাকাতেই খারাপ লাগছিলো কিন্তু ওর কিছুই করার ছিলোনা।
রাতে আদ্রিয়ানের বাড়ির ছাদে বড় দোলনার ওপরে হেলান আছে আদ্রিয়ান। আর অনিমা ওর বুকে মাথা দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। খুব বেশি মিস করছিলো একে ওপরকে একয়দিন তাই আজ একে ওপরকে এতো কাছে পেয়ে মুহূর্তটা মনের মতো করে উপভোগ করছে। অনিমা চোখ খুলে আদ্রিয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,
— ” আপনি কিন্তু বলছিলেন যে ওখান থেকে ফিরে আপনার বাবা মার কাছে যাবেন আর সব ঠিক করে নেবেন।”
আদ্রিয়ান অনিমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
— ” এসব কথা পরে বলি না।”
অনিমা জেদ ধরে বলল,
— ” নাহ আমি কোনো অজুহাত শুনবো না। ইউ প্রমিসড মি আদ্রিয়ান।”
আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বলল,
— ” আচ্ছা ঠিকাছে। কালকেই যাবো আর ওনাদের হবু বউমাকেও ওনাদের দেখাতে হবে তাইনা?”
অনিমা আদ্রিয়ানের কথায় হালকা লজ্জা পেলো তাই চুপ করে মাথা নিচু রইলো। আদ্রিয়ান অনিমার চুলগুলো কানের পিঠে গুজতে গুজতে বলল,
— ” তুমি এতো লজ্জা কেনো পাও বলোতো? জানো তোমার এই লজ্জা পাওয়া মুখটা আমার বুকে গিয়ে লাগে? আর তুমি যদি আমাদের ফার্স্ট নাইটেও এরকমি লজ্জা পেতে থাকো তাহলেতো আমি তোমার এই মুখ দেখেই হার্টফেইল করবো।”
অনিমা উঠে চলে যেতে নিলেই আদ্রিয়ান ওর হাত ধরে টেনে নিজের কোলে বসিয়ে বলল,
— ” কাল আমার বাড়িতে গিয়ে কিন্তু আরেকটা জিনিসও ঠিক করবো।”
অনিমা ভ্রু কুচকে বলল,
— ” কী?”
আদ্রিয়ান অনিমার কানের কাছে ফিসফিসয়ে বলল,
— ” আমাদের বিয়ের ডেট।”
অনিমা কিছু না বলে মাথা নিচু করে আদ্রিয়ানের বুকে আঙ্গুল দিয়ে আঁকিবুকি করতে লাগল। আদ্রিয়ান অনিমার আলতো করে জরিয়ে ধরে বলল,
— ” আই লাভ ইউ।”
অনিমা কিছু না বলে চোখ বন্ধ করে ঐ ম্যাজিক্যাল তিনটে ওয়ার্ডকে উপভোগ করলো, কিন্তু আজকেও কোনো এক জড়তার কারণে বলতে পারলোনা না যে ‘ আই লাভ ইউ টু।’
_____________________
মিস্টার রঞ্জিত আর কবির শেখ মিস্টার রঞ্জিতের বেডরুমে বসে আছে। রিক দরজার কাছে দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বলল,
— ” ডেকেছিলে?”
মিস্টার রঞ্জিত গম্ভীর কন্ঠে বললেন,
— ” ভেতরে এসো।”
রিক ভেতরে গিয়ে সোজা সোফায় গিয়ে বসলো। কবির শেখও গম্ভীরভাবে বসে আছে। মিস্টার রঞ্জিত রাগী কন্ঠে বললেন,
— ” কী শুরু করেছো কী তুমি?”
রিক আলসেমি ঝেড়ে অত্যন্ত নরমাল ভাবেই বলল,
— ” কী করেছি আমি সেটাতো বলবে?”
কবির শেখ এবার মুখ খুললেন। উনিও গম্বীর কন্ঠে বললেন,
— ” তুমি হাসান কোতয়ালের মেয়েকে ঐ আদ্রিয়ানের কাছে দিয়ে আসোনি?”
রিক এবারেও স্বাভাবিকভাবেই বলল,
— ” হ্যাঁ তো?”
মিস্টার রঞ্জিত ছেলের খাপছাড়া ভাব দেখে ভীষণ রেগে গিয়ে বললেন,
— ” ঐ মেয়েকে ছেড়ে দেওয়া মানে কী বুঝতে পারছো? ওর খোলা ঘুরে বেড়ানোটা আমার জন্যে কতোটা রিস্কি জানো না তুমি? ”
রিক ভ্রু কুচকে বিরক্তিকর কন্ঠে বলল,
— ” হ্যাঁ জানি।”
মিস্টার রঞ্জিত এবার আর বসে থাকতে পারলেন না, উঠে দাঁড়িয়ে রাগে ফুসতে ফুসতে বললেন,
— ” কী পেয়েছো কী তুমি হ্যাঁ? সবকিছু এতো নরমালি নিচ্ছো? অামাদের কথা চিন্তাও করছো না? আর তুমি নাকি ভালোবাসো ঐ মেয়েকে? তার কী হলো? উবে গেলো নাকি সব ভালোবাসা? আর আমার ছেলে হয়ে তুমি এতো সহজে হার মেনে নিলে?”
রিক এবার শব্দ করে হেসে দিলো। জোরে জোরে হাসছে ও। মিস্টার রঞ্জিত, কবির শেখ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন। রিক কোনোরকমে হাসি থামিয়ে বলল,
— ” কাম অন ড্যাড। তোমার কী মনে হয়? আমি এতো সহছে হার মেনে নেবো? আমি তোমার আর মামার দেওয়া শিক্ষায় বড় হয়েছি ড্যাড! যা করি ঠান্ডা মাথায় প্লান করেই করি। দেখো অনিমাকে এমনিতেও আটকে রাখতে পারতাম না আমি। তাই প্লান করে ওদের টিম জয়েন করলাম। যাতে ওরা কী করছে কী প্লান করছে কী চাল চালছে সবটাই বুঝতে পারি আমি। ওদের টিমে থেকেই ওদের মাত দেওয়াটা খুব সহজ হবে তাইনা? ওরা মাত হলেই তো সবকিছু আমাদের। আদ্রিয়ানও মরবে, প্রমাণ ও লোপাট হবে আর অনিমাও আমার হবে। ওরা না হয় বোকা তাই আমার নাটকটা বুঝতে পারলোনা, বিশ্বাস করে নিলো আমায় । বাট এই ছোট্ট বিষয়টা তোমাদেরও মাথায় ঢুকলোনা?”
মিস্টার রঞ্জিত আর কবির শেখ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন রিকের দিকে। এরপর দূজনেই হেসে দিলেন। মিস্টার রঞ্জিত হাসতে হাসতে বললেন,
— ” আমি তোমাকে বলেছিলাম না কবির ও আমার ছেলে। ওরকম বোকামি ও কোনোদিনও করবে না। দেখলেতো? ঠিক সেটাই হলো?”
কবির শেখ ও একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বললেন,
— ” আরেহ আমি তাইতো বলি যে বাবাই এমন কেনো করবে? আমার আগেই বোঝা উচিত ছিলো যে এটা রিক চৌধুরী।”
রিক হেসে দিয়ে বলল,
— ” এক্সাক্টলি। তোমাদের আগেই বোঝা উচিত ছিলো আমি রিক চৌধুরী। রঞ্জিত চৌধুরীর রক্ত বইছে আমার শরীরে আর কবির শেখ এর শিক্ষা। কাউকে ছেড়ে দেই না আমি, কারো কাছে হার মানাতো দূরের কথা। আর এখনো তো অনেক হিসেব মেটানো বাকি।”
বলেই ওনাদের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলো রিক। মিস্টার রঞ্জিত আর কবির শেখ একই ভঙ্গিতে হাসলেন। যেটাকে বলা হয় বিজয়ের হাসি।
#চলবে…