বসন্তের ছোঁয়া পর্ব ১০+১১

❤বসন্তের ছোঁয়া❤
লিখাঃAyesha Ariya Afiya
পর্বঃ ১০/১১
,
,
সারা নিচে তলিয়ে যাচ্ছে এমন সময় অনিক এক ঝাঁপ দিয়ে সারাকে নিচ থেকে তুলে খুব কষ্টে উপরে তুললো।
,
অনিকঃ সারা সারা কথা বল এই বোন ( পেটে চাপ দিতে দিতে)
,
কিছু লোক এসে হাজির সারার শাড়ি টা ভিজে শরীর দেখা যাচ্ছে অনিক সাথে ওর শরীরের ব্লেজার খুলে গায়ে জরিয়ে ড্রাইভার কে নিয়ে সোজা ছুটলো হসপিটালে।
রাজ অনিক কে বলেছে সারাকে নাকি আজকে যেভাবেই হোক মেরে ফেলবে তাই অনিক জানার সাথে সাথে ছুটে আসলো বাঁচাতে নিজের বোনের মত আদর করে সারাকে।
পেট থেকে সব পানি বের করা হয়েছে সারার সেন্স ফিরেছে কিন্ত কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে।
,
সারাঃ দাদা ভাই ( আস্তে করে)
,
অনিকঃ আজকেই রাজের শেষ দিন! খুন করে ফেলবো ওকে আমি বন্ধু বলে এত দিন কিছু বলিনি কিন্ত আজকে শেষ করে দিব ( প্রচন্ড রেগে)
,
সারাঃ( অনিক রাগে সারা কাছ থেকে যেতে নিলেই হাত ধরে) ওকে তুমি কিছু করো না প্লিজ অনেক ভালোবাসি আমি! দাদাভাই প্লিজ রাজকে মেরো না। এটা তোমার ছোট বোনের রিকুয়েস্ট রাজকে আমি শাস্তি দিব।
,
অনিকঃ( মুচকি হেসে মাথায় হাত বুলিয়ে) এত ভালোবাসিস রাজকে কিন্ত ও তো তোকে ভালোবাসে না। কেন শুধু শুধু পরে আছিস ওখানে আমি তোর ভাই হয়ে বলছি আমার সাথে চল আমার বাড়িতে অনিমার সাথে থাকবি কেমন।
,
সারাঃ( খুশি হয়ে) তুমি বলেছো এতেই আমি খুশি যেতে হবে না। এবার রাজ দেখবে সারার আসল রুপ আমার হাত থেকে ওর মুক্তি নেই। জানো দাদা ভাই ওকে অনেক করে বলেছি আমায় বাঁচাও কিন্ত না। মেহেরিমাকে নিয়ে সুন্দর করে হাসতে হাসতে চলে গেল। পানিতে ডুবে তলিয়ে যেতে যেতে মায়ের মুখটা খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল।ভেবেছি আর দেখতে পারব না এই পৃথিবীর আলো বাতাস তুমি আমায় বাঁচালে সত্যি সত্যি তুমি আমার দাদা ভাই।
,
অনিকঃ হুম আমি তো তোরই ভাই আপাতত তুই রেস্ট নে আমি আসছি কেমন।
,
অনিক বাহিরে গেল সারার ড্রেসটা পাল্টে একটা থ্রী পিছ পড়িয়ে দিয়েছে নার্স।
সারাঃ রাজ তুমি অনেক বড় ভুল করেছো আজকের পর থেকে তোমার জীবন টা আমি বিভীষিকা ময় বানিয়ে দিব। সামিনা ইয়াসমিন সারা কে তুমি চিনো না। তোমার নিশ্বাস প্রশ্বাস চলবে আজকের পর থেকে আমার কথায়। ভালোবাসি তোমায় এটাই আমার দোষ তোমায় ভালো করতে চেয়েছিলাম রাজ নতুন একটি জীবন দান করতে চেয়েছিলাম। কিন্ত তুমি তা হতে দিলে না তো বেশ দেখো আমি কি করি শুধু একটু সুস্থ হয়ে নেই তারপর দেখবে কি হাল করি তোমার।
,
সারাকে অনিক সোজা হসপিটাল থেকে নিজের বাড়ি নিয়ে যায় সার্ভেন্টরা সারার টেক কেয়ার করছে অনিক অনিমা দুজনে সারাকে সারাটা সময় গল্প করে কাটিয়েছে যাতে ওর একা একা মনে না হয়।
,
অনিমাঃ আচ্ছা আপু তুমি কিভাবে এখনো রাজ ভাইয়া কে এতটা ভালোবাসো প্লিজ বলবা।
,
সারাঃ( মুচকি হেসে) ভালোবাসা আসে অন্তরের অন্তস্তল থেকে যা কখনো ভুলবার মত নয় আমুও রাজকে ভুলিনি ওকে মাফ করে দিয়েছি কারণ ভালোবাসি যে। ভালোবাসতে গেলে স্যাকরিফাইস তো করতে ই হয় আমিও তাই ( দীর্ঘ একটা নিশ্বাস নিয়ে)
,
অনিকঃ( রুমে ঢুকে) কফি এসে গেছে।
,
সারাঃ দাদা ভাই তুমিও না কে বলেছে কফি বানাতে যদি হাত পুড়ে যেত?
,
অনিমাঃ ভাইয়ার অভ্যাস আছে কফি টা খুব ভালো বানায় বুঝলে আমাকেও মাঝে মাঝে করে খাওয়ায়।
,
অনিকঃ অনিমা তুই এখন ঘুমিয়ে পড় অনেক রাত হয়ে গেছে সারা তুইও কেমন কালকে সকালে কথা হবে।
,
সারাঃ ওকে।
,
অনিকঃ কফির মগটা কে নিবে হুম?
,
সারাঃ দাও দাও আমার ভাই বানিয়েছে দেখতে হবে না। কপমন হয়েছে।
,
অনিমাঃ গুড নাইট আপি।
,
সারাঃ গুড নাইট।
,
অনিকঃ যা বলার কালকে ওকে আজ এখন এই মুহূর্তে তুই রাজের কথা না ভেবে ঘুমানোর চেষ্টা কর আমি আসি।
,
সারাঃ হুম আর শোন কফিটা অনেক ভালো হয়েছে।
,
অনিকঃ পাগলী বোন আমার( মাথায় হাত বুলিয়ে)
অনিক অনিমা নিজের রুমে যেয়ে শুয়ে পড়লো আর সারা কফির মগটা হাতে নিয়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দেখছে ব্যস্ত শহর ঢাকা কে কি সুন্দর মনোরম দৃশ্য যত দূর চোখ যায় শুধু লাইট আর লাইট মুচকি হাসলো সারা অতপর কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো।
,
,
রাত বার টা
ক্লাবে ইনজয় করছে রাজ সাথে মেহেরিমা কি যে খুশি তারা দুজন সারা মারা গেছে ভাবা যায় বিষয় টা।
মেহেরিমাঃ ডারলিং পথের কাটা শেষ আমরা কয়েক দিনের ভিতর বিয়ে করব কেমন।
,
রাজঃ হ্যা মাই সুইট হার্ট মাত্র কয়েক দিন ওকে।
,
মেহেরিমাঃ বাট তোমার ফুপি?
,
রাজঃ সেটা নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না। সুইট হার্ট এখন সব প্রপারটি আমার নামে সো ইনজয় দ্যা মোমেন্ট।
,
কথাটা বললেও কেন জানি সারার জন্য খারাপ লাগছে প্রথমত প্রেমের অভিনয় করেছে রুমডেটের অফার দিয়েছে রাজি না হওয়ায় তুলে এনে রেপ করে সেই ভিডিও ওর ফ্রেন্ডসদেরকে দেখিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে রাজ চৌধুরী যা চাই তা না পেলে কেড়ে নেই। আবার যখন সারা ফিরে আসলো তখন আবার আজকে পানিতে ধাক্কা মেরে ফেলে দিল যাতে মারা যায়। বিষয় টা ভেবে রাজ একের পর এক ওয়াইন গিলেই যাচ্ছে নেশাটা বেশি লেগে গেছে এখন আপাতত বাড়ি যাওয়া দরকার মেহেরিমাকে খুঁজছে বাট নেই।
,
রাজঃ মেহের মেহের তুমি কোথায় ডারলিং ?
,
মেহেরিমাঃ (দূরে দাড়িয়ে) বোকা দেখলে বেবী রাজকে কিভাবে আমি বশে এনে আত্মসাৎ করছি লাভ ইউ বেবী (একটা ছেলের কোলে বসে)
,
ছেলেটিঃ লাভ ইউ টু বেবী এভাবেই সব টাকা পয়সা আত্মসাৎ করে আমরা বিয়ে করে কানাডা চলে যাব কেমন সো বেবী আজকের রাতটা।
,
মেহেরিমাঃ ইয়েস।
,
ছেলেটি সাথে সাথে কোলে নিয়ে একটা রুমে গিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দিল।
ছেলেটিঃ May i,,,
,
মেহেরিমাঃ Yes.
শুরু হয়ে গেল অবৈধ মেলামেশা এটা ওদের নিত্য দিনের কাজ রাজের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মেহেরিমা এবং তার বয়ফ্রেন্ড খুব ফুর্তি করে আর রাজ ব্যাটা মেহেরিমা যখন যতটাকা চাই তখনই তত টাকা দেয়।
রাক মেহেরিমাকে খুব খুঁজেছে বাট পায়নি হেলতে দুলতে কোনো রকমে কারে উঠে বাড়ি এসে ধপ করে বিছানায় গা এলিয়ে দিল।
,
,
সকালে ঘুম ভাঙ্গলো সারার হাতে কফি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনিক সারা মুচকি হাসলো এ যেন নিজের আপন ভাই এতটা কেয়ার ভাবা যায়।
,
অনিকঃ গুড মর্নিং মাই সিস্টার। ( পর্দা টেনে সরিয়ে দিতে দিতে)
,
সারাঃ তুমি আসলেই পাগল কে বলেছে এত সকালে কফি করে দাঁড়িয়ে থাকতে আমায় ডাকলেই পারতে( উঠে বসতে বসতে)
,
অনিকঃ আমি তোর দাদা ভাই তাই করেছি চুপচাপ উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে আয় কেমন আমি গেলাম।
,
সারাঃ তুমি আসলেই পাগল মাত্র আটটা বাজে এখনোই ব্রেকফাস্ট তাহলে কফি কখন খাব।
,
অনিমাঃ দুটো একসাথে করে নিবে কেমন তাড়াতাড়ি আসো আই এম ওয়েটিং।
,
সারাঃ ওকে।
,
খাওয়া দাওয়া করে সারাকে অনিমা নিয়ে শপিং মলে গিয়ে ইচ্ছা মত শার্ট প্যান্ট কিছু থ্রী পিছ কিনে বাড়ি ফিরে আসে এখন থেকে সারা এসবই পড়বে পুরো পুরি চেঞ্জ করে ফেলবে নিজেকে রাজকে শায়েস্তা করতে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শয়তানি হাসি দিল। এই হাসির মানে হচ্ছে রাজের দিন ঘনিয়ে আসছে।
,
এভাবেই কেটে গেল ১০ দিন
পুরো রুম খালি সারার কথায় কথায় রাগ দেখানো জোর করে কিস করা রাতে জরিয়ে ধরে ঘুমানো সব কিছু কে খুব মিস করছে রাজ কিন্ত এখনো ভালোবাসা জন্মায়নি।
,
রাজঃ সারার কথা এত মনে পড়ছে কেন? আমি তো নিজের হাতে মেরে ফেলেছি বেশ করেছি আমার প্রপারটি নিজের নামে নিয়ে আমায় ব্লেকমেল করা। বেশ করেছি মেরে ফেলেছি ফুপি খেতে দাও।
,
রাজে ফুপিঃ,,,,,,,,,।
,
রাজঃ আমি কিছু বলেছি এভাবে তাকিয়ে না থেকে খেতে দাও নয়তো বাহিরের থেকে কিছু খেয়ে নিব।
,
রাজের ফুপিঃ রেহেনা ওকে বলে দে তো খাবার টেবিলে রেডি আছে খেয়ে নিতে।
,
রেহেনাঃ হুম রাজ সব কিছু রেডি খেয়ে নে কেমন আমি আমার এক ফ্রেন্ডের বাসায় যাব।
,
রাজঃ ওকে তো ফুপি আমার সাথে কথা বলছো না কেন? জানতে পারি কি অপরাধ করলাম?
,
রাজের ফুপিঃ কি করিসনি সেটা বল মেয়ে টা আজ দশদিন হলো বাড়িতে নেই কোথায় গেছে সেটাও জানি না আর তুই বলছিস কি হয়েছে? তুই যে কেন আমার নিজের ছেলে হসনি ( দাঁতে দাঁত চেপে)
,
রাজঃ আসলে কি বলতো ফুপি আপদ চলে যাওয়া টাই ভালো কোথা থেকে একটা মেয়ে কে ধরে এনেছো তাও আমায় প্রপারটি না দিয়ে ওর নামে লিখে দিয়েছো। বেশ হয়েছে চলে গেছে আমি অনেক খুশি হয়েছি।
,
রাজের ফুপিঃ তোকে তো মন চাইছে,,,,
,
রেহেনাঃ আহহ মা কি শুরু করলে তুমি রাজ খাচ্ছে তো কে জানে আজকের পর থেকে প্রতিদিন পতিতালয় আর ক্লাবে যেতে পারবে কি না।
,
রেহেনা কথাটা বলে রাজের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিল অতপর বেরিয়ে এলো বাড়ি থেকে ওর বান্ধবীর বাড়ির উদ্দেশ্য।
,
রাজ কথার মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝল না চুপচাপ খেয়ে অফিসে আসতেই পরিবেশ একেবারে শান্ত সবাই ওকে এলিয়েনের মত দেখছে।
,
রাজ: Any Problem.
,
সবাই একসাথেঃ No sir.
,
কেবিনে ঢুকতেই ভূত দেখার মত চমকে উঠলো সামনে আর কেউ না সারা দাড়িয়ে আছে মুখে শয়তানি হাসি দিয়ে।
,
রাজঃ তু,,,,,,মি?

চলবে………….।

❤ বসন্তের ছোঁয়া ❤
লিখাঃ Ayesha Ariya Afiya
পর্বঃ ১১
,
,
রাজঃ তু,,,,,মি?
,
সারাঃ( এগিয়ে গিয়ে) হুম আমি গো কি ভেবেছিলে মারা গেছি তাই না ইশশ খুব কষ্ট হচ্ছে না। আমি মরিনি বলে জানো আমারও না অনেক কষ্ট হচ্ছে তোমার জন্য কারণ আজকে থেকে তোমার শ্বাস প্রশ্বাস চলবে আমার কথায় এই সারা কথায় বুঝলে জান কেমন লাগলো গো সারপ্রাইজ টা।
,
রাজঃ তুমি মরোনি তাহলে ঠিক আছে এখন মারব গলা টিপে ( ডেভিল স্মাইল)
,
সারাঃ তাই নাকি আসো তাহলে জান পাখি চেষ্টা করে দেখো তো।
,
রাজ কাছে যেতেই সারা পা দিয়ে এমন একটা লাথি দিয়েছে হুড়মুড় করে নিচে পড়ে গেল রাজ ব্যাথা পেয়েছে মনে হয়।
,
সারাঃ জান পাখি দেখলে তো আজকের পর থেকে সারার হুকুমে সব কিছু চলবে তোমার ( টেনে তুলে দাঁড় করিয়ে)
,
রাজঃ কি তাই নাকি কিন্ত ম্যাম আপনি নিশ্চয়ই জানেন না যে এখন সব প্রপরটির মালিক আমি( বাহুতে হাত বুলাতে বুলাতে)
,
সারাঃ( তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে) বোকা সেদিন রাতে টিপ সই নিয়েছো তাই না কিন্ত তুমি ভালোভাবে পেপারটা না দেখেই আমার সই নিয়েছো ওখানে স্পষ্ট লিখা তুমি স্বেচ্ছায় তোমার যা ছিল আমার নামে লিখে দিয়েছো ( পেপারস গুলো দেখিয়ে)
,
রাজঃ( ভ্যাবাচেকা খেয়ে) না এটা মিথ্যা আমি নিজে পেপারস রেডি করে তোমার সই নিয়েছি ( পেপরস গুলো উল্টেদে পাল্টে দেখতে দেখতে)
,
সারাঃ তুমি যদি চলো ডালে ডালে তো আমি চলি পাতায় পাতায় কলিজার টুকরা তোমার উকিলের থেকে আনা পেপারস সরিয়ে আমি ফাইলে এই পেপারস গুলো ঢুকিয়ে রেখেছিলাম।
,
সারা ধাক্কা দিয়ে রাজকে চেয়ারে বসিয়ে ঠোঁটে গভীর ভাবে চুমু দিল।
,
রাজঃ How dare you to touch me.( দাঁতে দাঁত চেপে)
,
সারাঃ দশদিন তোমার থেকে দূরে ছিলাম তাই ভালোবাসার পরশ দিলাম জান ভুলে যেও না আমার অধিকার আছে তোমায় টাচ করার By the Way আমার অনেক কাজ আছে তুমি বরং এই পেপরস গুলো দেখো আজকে তো মিটিং আছে তাই না।
,
রাজঃ তোমায় তো আমি,,,,
,
সারাঃ হুসসসস( ঠোঁটে আঙুল দিয়ে) আজকে সব সত্যি বলব তোমায় আমি তোমার আপন চাচাতো বোন মনে আছে।আমি রাহাত চৌধুরীর মেয়ে সারা চৌধুরী এত দিন গোপন রেখেছিলাম বাট আজকে সবটা ক্লিয়ার করে দিলাম কেমন। রাস্তার মেয়ে আমি না রাস্তার ছেলে তুমি( আঙুল দিয়ে দেখিয়ে) সো সেই হিসেবে সব প্রপারটি তো আমারই থাকার কথা বেশি শকড হয়ে যাচ্ছ না। আমি সারা সামিনা ইয়াসমিন সারা মনি না সারা চৌধুরী
,
কেবিন থেকে বেরিয়ে নিজের কেবিনে গেল সারা আজ থেকে ও প্রতিদিন অফিসে আসবে রাজের পাশের টায় সারার কেবিন রাজ ভাবতে পারছে না। সারা বাঁচল কি ভাবে। তাও আবার ওর চাচাতো বোন মাথা কাজ করছে না। রাজ তাড়াতাড়ি ফোন দিল ওর ফুপি কে সারা যা বললো তা কি সত্যি বললো হুম। রাজ দেওয়ালে একটা ঘুষি দিয়ে জানালার থাই গ্লাস খুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
,
অফিসের সকলে অবাক সারা কে দেখে আগেই ম্যানেজারকে ফোন করে বলে রেখেছে ওর কেবিন টা যাতে আলাদা ভাবে সাজানো হয় যেভাবে বলেছে ম্যানেজার ঠিক সে ভাবেই এ্যারেন্জ করেছে।

সারার পরনে ছিল জিন্স প্যান্ট, একটা হোয়াইট টি শার্ট শার্টের হাতা ফোল্ড করা , চুলগুলো রাবার দিয়ে বাঁধা, হাই হিল, চোখে হালকা কাজল ঠোঁটে লিবস্টিক, চোখে সানগ্লাস,নিজে কার ড্রাইভয়িং করে হাতে লেটেস্ট আই ফোন টিপতে টিপতে লিফট দিয়ে এসে পৌঁছায় নিজের কেবিনে।
,
সারাঃ ম্যানেজার আপনি আমার কেভিনে আসুন( ফোনে)
,
ম্যানেজারঃ মে আই কাম ইন ম্যাম?
,
সারাঃ ইয়েস আপনাকে যে আমি ফাইল দিয়েছিলাম কমপ্লিট করেছেন( ল্যাপটপের দিকে মনোযোগ রেখে)
,
ম্যানেজারঃ( এগিয়ে দিয়ে) জি ম্যাম।
,
সারাঃ( চেক করে ম্যানেজারের দিকে ফাইল ছুঁড়ে মেরে) What the hell is this.
,
ম্যানেজারঃ স্যরি ম্যাম আমি এখনই ঠিক করে দিচ্ছি ( ভয়ে ভয়ে)
,
সারাঃ এটাই লাস্ট চান্স এর পর থেকে যদি কোনো ভুল হয় চাকরি থেকে আউট করে দিব আমার এখনই ফাইল কমপ্লিট চাই জাস্ট টেন মিনিটস।
,
ম্যানেজারঃ ওকে ম্যাম।
,
সারা ল্যাপটপে কাজ রেখে সিসিটিভি ক্যামেরা চেক করছে স্টাফরা কাজ রেখে গল্প জুড়ে দিয়েছে রাগে গজ গজ করতে করতে সামনে যেয়ে দাঁড়াল রাজ সব দেখছে বাট মুখ অফ সারা যা রেগে আছে কিছু বললে পর ঘাড়টাই মটকে দিবে।
,
সারাঃ Attention please.
সবাই ওর দিকে তাকালো
সারাঃ এটা আপনাদের মামার বাড়ি পেয়েছেন নাকি রাজ চৌধুরী পেয়েছেন যে শরীর দেখিয়ে কাজে ফাঁকি দিবেন সেই দিন শেষ আমি সামিনা ইয়াসমিন সারা চৌধুরী নামটা সবাই মাথায় ঢুকিয়ে রাখুন এতে আপনাদের ই ভালো।
,
ম্যানেজারঃ ম্যাম এনি প্রবলেম।
,
সারাঃ আমি আপনাকে কিছু বলছি না স্টাফদের বলছি সো চুপ থাকুন( চোখ রাঙিয়ে)
,
ম্যানেজারঃ ওকে ম্যাম।
,
সারাঃ আমর আধা ঘন্টার মধ্যে ফাইল কমপ্লিট চাই( চিল্লিয়ে) নয়তো সব কয়টাকে আউট করে দিব আর হে অফিস টাইম দশটায় কেউ যদি এক মিনিট ও লেট করে আসেন সোজা রিজাইন লেটার দিয়ে দিব Understand all.
,
সব স্টাফরা একসাথে ভয়ে ভয়ে বললোঃ ইয়েস ম্যাম।
,
,
,
এরপর কেটে গেল ৩ মাস
তিন টা মাস সারা রাজ কে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়েছে জোর করে কিস করেছে। রাজের নিত্য দিনের রুটিন পাল্টে গেছে ড্রিংক করা নিষেধ পতিতা লয়ের নাম টাও উচ্চারণ করতে পারে না। রাজ অনেক টা মোটা হয়েছে কম্পানিও একটা ভালো পজিশনে গেছে এখন।রাজ সারার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্ত মনে মনে মারার জন্য কম চেষ্টা করেনি কিন্ত কথায় আছে না রাখে আল্লাহ মারে কে। আফজালের সাথে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে মেহেরিমা রাজের ধারে কাছে ও ঘেঁষতে পারেনি সারার ভয়ে।
,
সারা নিজের কাজ করছে ল্যাপটপে প্রচুর মনোযোগ দিয়ে একটা জিনিস বুঝতে পারছে না একটু পর মিটিং বাধ্য হয়েই যেতে হলো রাজের কেভিনে।
,
সারাঃ মে আই কামিং।
,
রাজঃ( ল্যাপটপের দিকে মনোযোগ রেখে) ইয়েস।
,
সারাঃ রাজ এই ফাইলটা দ্রুত কমপ্লিট করে দাও।
,
রাজঃ পারব না।
,
সারাঃ ওকে মিস্টার আফজাল কে ফোন দিচ্ছি দাঁড়াও।
,
রাজঃ( হাত থেকে ফাইল কেড়ে নিয়ে) করে দিচ্ছি এসব প্যান্ট আর শার্ট না পড়লে ভালো হয়।
,
সারাঃ এত্ত জেলাস ওয়াও দেটস গ্রেট যাই হোক আজকে কিন্তু আমায় আরও বেশি সুন্দর লাগছে ব্লেক শার্ট টাতে তাই না রাজ।
,
রাজঃ পেত্নীর মত লাগছে( নাক ছিটকিয়ে)
,
সারাঃ এত ভালো ব্যবহার আমায় মারার ধান্দা দাঁড়াও মিটিংয়ের পরে তোমায় দেখে নিব।
,
রাজের থেকে ফাইল নিয়ে দ্রুত কনফারেন্সে রুমে গিয়ে মিটিং করে নিল সবাই তাজ্জব সারাকে এই অবস্থায় দেখে আফজালের তো চোখ ফেরাতে পারছে না। রাজ চুপচাপ এক কোণায় দাড়িয়ে আছে। মিটিং শেষ এখন স্টাফদের নিয়ে মিটিং করল সারা।
,
লান্চ টাইম না খেয়ে শুধু কাজ করছে রাজ তো ক্যান্টিনে গিয়ে খেয়ে নিল বাট সারা না। ও কাজ শেষ করল তখন তিনটা বেজে গেছে বাবার ছবির সামনে দাঁড়িয়ে।
সারাঃ জানো বাবা আমি তোমার কেবিনে বসেছি তুমি তো দূর থেকে আমায় নিশ্চয়ই দেখছো আমি অনেক ভালো আছি তোমার সারা অনেক ভালো আছে বাবা আমার কপালটা এরকম কেন বলতো যাকে ভালোবাসি সে শুধু ধোঁকা দেয় আর কেউ পারবে না আমি সামিনা ইয়ামিন সারা চৌধুরী হার মানবো না এই কম্পানি কে আবারও বর্ষসেরা করে গঠন করবো তুমি যেমনটা করতে আমিও করবো হ্যা বাবা মা না এখনো তোমার জন্য খুব কাঁদে।
,
ছবি টা ধরে হাউমাউ করে কাঁদছে রাজ পাশের রুম থেকে দেখছে কে জানি না অপরাধ বোধ কাজ করছে ওর বাবা মা করেছে সারার বাবা মার সাথে অন্যায় আর রাজ নিজে করেছে সারার সাথে অন্যায়।
,
অফিস শেষ চারটা বেজে গেছেম্যানেজার সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে গেল সারাকে রাজ বের হয়ে কারে উঠে স্টার্ট করলো বাট টায়ার পান্চার। বাধ্য হয়ে কার থেকে নেমে দাঁড়িয়ে আছে অফিসের সামনে পেছন থেকে গাড়ির হর্ন সারা সানগ্লাস পড়ে ড্রাইভ করছে।
,
সারাঃ হ্যালো স্যার এভাবে যদি দাঁড়িয়ে থাকেন এক্সিডেন্ট নিশ্চত আর রাস্তার মানুষ কি আমায় ছেড়ে দিত হুম( রাগী গলায়)
,
রাজঃ টায়ার পান্চার হয়ে গেছে তাই।( শান্ত গলায়)
,
সারাঃ ওহহহ আমি লিফ্ট দিতে পারি নয়তো সামনে থেকে সরুন।
,
রাজঃ না মানে সারা প্লিজ আমায় একটু লিফ্ট দাও( নিচু স্বরে)
,
সারাঃ ওকে।
,
রাজ দেখছে সারা কিভাবে ড্রাইভ করছে খুব সুন্দর ভাবে এবং আস্তে আস্তে চোখে সানগ্লাস হেব্বি লাগছে অফিসের সব ছেলে স্টাফ সারার উপর ক্রাস।
কিন্ত রাজের ভালো মানুষের আড়ালে যে আবারও সারাকে মারার প্ল্যান ছিল সেটা কে জানতো
বাড়িতে যেতে না যেতেই মৃত্যু ফাঁদ পেতে রেখেছিল রাজ সেটা সারা কল্পনার বাইরে কিন্ত রাজ ভেবেছে এতক্ষণে নিশ্চয়ই সিঁড়ি থেকে পড়ে গেছে যেই ভাবা সেই কাজ উপরে উঠতেই নিজের ফাঁদে নিজেই পড়েছে রাজ পা মনে হয় মচকে গেছে সারা না জানার ভান করে কাছে এসে বসে।
,
সারাঃ ইশশশ খুব লেগেছে না, কোথায় লেগেছে এখানে বুঝি ( পা মুচড়ে দিয়ে )
,
রাজঃ আহহহহ।
,
সারাঃ এটা তো মাত্র ট্রেইলার কলিজার টুকরা মুভি আসছে যতবার আমায় মারতে চাইবে তত বার তুমি নিজেই সেই ফাঁদে পা দিবে, তোমার ভাবনা যেখানে শেষ আমার ভাবনা ঠিক সেখান থেকেই শুরু কেমন দিলাম মিস্টার রাজ চৌধুরী ভুলে যেও না। আমি সারা সামিনা ইয়াসমিন সারা চৌধুরী ( শয়তানি হাসি দিয়ে)

চলবে……….❤❤❤❤❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here