বসন্তের ছোঁয়া পর্ব ৮+৯

❤ বসন্তের ছোঁয়া ❤
লিখাঃ Ayesha Ariya Afiya
পর্বঃ ৮/৯
,
রাজঃ( চুলকানে চুলকাতে) Oh! God Please save me, this dangerous girl.
,
সারাঃ( হাসতে হাসতে) খুব শখ না মেহেরিমার বার্থডে পার্টিতে যাওয়া যা এবার ব্যাটা আমিও দেখি কিভাবে যাস!আর এত সেজেগুজে হুম আমার নামও সারা কিন্ত খুব খারাপ লাগছে সো স্যরি জান এটা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না তোমায় আটকানোর! আই লাভ ইউ।
,
রাজঃ সারা তুমি কাজটা একদম ঠিক করলে না! এর জন্য তোমায় চরম মূল্য দিতে হবে ( রাগী গলায়)
,
সারাঃ( মুচকি হেসে) তাই তা কি করবে শুনি খুব লেগেছে না! ইসস সো স্যরি জান আসলে আমি বুঝতে পারিনি! এতটা লেগে যাবে।
,
সারা কাছে যেতেই ঠাস ঠাস
রাজঃ You know what? Are you really sick, Just go to hell.
,
সারাএকটুও আফসোস না করে দ্রুত Hexisol দিয়ে পুরো শরীর মুছে দেয় এখন ফোলাটা একটু কমেছে! রাজ দেখছে রাগ উঠছে বাট দেখাতে পারছে না! রাজ অবাক মাত্র ই থাপ্পড় দিল কিন্ত কোনো রিয়্যাকশন নেই রাজের সারার কাছে আসলেই যেন কেমন অন্য রকম একটা জড়তা কাজ করে, সেটা নিজে ও জানে না।
,
সারাঃ স্যরি আমি বুঝতে পারিনি টি শার্ট আর ব্লেজার টা পড়ে চলে যাও পার্টি শুরু হয়ে যাবে মেহেরিমা বার বার ফোন দিচ্ছে।
,
রাজঃ( সারার দিকে তাকিয়ে) হ্যালো মেহের।
,
মেহেরিমাঃ বেবী তুমি কোথায় আমি কখন থেকে তোমার জন্য ওয়েট করছি প্লিজ তাড়াতাড়ি চলে আসো।
,
রাজঃ হুম আসছি।
,
সারাঃ রাজ গিফট টা নিয়ে যাও( এগিয়ে দিয়ে)
,
রাজ কিছু না বলে গিফট টা নিয়ে সোজা কার নিয়ে বেরিয়ে গেল পার্টির উদ্দেশ্য সারার যেন কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে সহ্য হচ্ছে না। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে রাজের যাওয়ার পথে তাকিয়ে ছিল। রাজ কোনো দিন ওকে মেনে নিবে না। কিন্ত ভালোবাসা তো সত্যি হ্যা সত্যি। পেছন থেকে কেউ একজন ঘাড়ে হাত রাখলো।
,
সারাঃ দাদা ভাই কেমন আছো এতদিন পর আমার কথা মনে পড়লো ( জড়িয়ে ধরে)
,
অনিকঃ এই পাগলী কাঁদছিস কেন? আমি গত কালকে শুনেছি তোদের বিয়ের কথা জরুরি অপারেশন ছিল।তাই আসতে পারিনি একদম কাঁদবি না আমি এসে গেছি। তোর সাথে রাজের করা অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেতে পারবো না কিন্ত আজকের পর থেকে ঢাল হয়ে থাকবো।
,
সারাঃ আমি কত খুঁজেছি তোমায় কিন্ত আমার ফোনটা চুরি হয়ে গিয়েছিল তাই তোমায় বলতে পারিনি।
,
অনিকঃ বললাম তো একদম কাঁদবি না।আমি এসে গেছি তো নাকি রাজ কোথায়?
,
সারাঃ রা,,,জ দাদা ভাই রাজ তো।
,
অনিকঃ মেহেরিমার বার্থডে পার্টিতে গেছে নিশ্চয়ই।
,
সারাঃ হুন।
,
অনিকঃ তুই কি আমায় এভাবে দাঁড় করিয়ে রাখবি। তোর শ্বশুর বাড়িতে এসেছি কিছু খাওয়াবি না( মৃদু হেসে)
,
সারাঃ তুমি বসো আমি এখনই আসছি।
,
রেহেনাঃ সারা তোমার কোথাও যেতে হবে না।আমি এসে গেছি ( ট্রেতে করে বিস্কুট নুডুলস আরও কিছু খাবার)
,
অনিক রাজের ছোট বেলার বন্ধু সে একজন ডাক্তার রাজের সাথে রিলেশন হওয়ার পর থেকেই সারা অনিককে দাদা ভাই বলে ডাকে। অনেক গল্প গুজব করে অনেক ফিরে গেছে নিজের কর্ম স্থলে।
রাত ১ টা
রাজ এখনো বাড়ি ফিরেনি সারাও ঘুমায়নি ফোনে গাল শুনছে তো গেমস খেলছে। তখনই গাড়ির হর্ন বেজে ওঠে সারা বেলকনিতে উঁকি দিল রাজ এসেছে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে বাড়ির কাজের লোকেরা ঘুমিয়ে আছে বিধায় ডাক না দিয়ে নিজেই দরজা খুলে দিল কিন্ত একি মেহেরিমা সাথে রাজ হেলতে দুলতে কোনো রকম দাঁড়িয়ে আছে।
,
সারাঃ রাজ তুমি ড্রিংক করেছো?
,
রাজঃ হুম করেছি বেশ করেছি তাতে তোমার কি হ্যা তুমি বলার কে? সরে দাঁড়াও আমার সামনে থেকে মেহের আমায় রুমে নিয়ে যাও তো।
,
মেহেরিমাঃ ( খুশি হয়ে) বেবী কি বলছো তোমার জলজ্যান্ত বউ সামনে দাঁড়িয়ে আছে তো আমি কি করে রুমে যাব।
,
রাজঃ তোমায় যেটা বলছি সেটা কর।
,
মেহেরিমাঃ ওকে বেবী।
,
সারাঃ এই যে ক্যারেক্টারলস মেয়ে চুপচাপ রাজকে সোফায় বসিয়ে কেটে পড় নয়তো থাপ্পড় দিয়ে তোমার সবগুলো দাঁত আমি ফেলে দিব।রাজ৷ আসো আমার সাথে।
,
মেহেরিমাঃ দেখলে বেবী আমায় কি বললো আমি নাকি ক্যারেক্টারলস তুমি কিছু বল প্লিজ( ন্যাকা কান্না কেঁদে)
,
রাজঃ সারা তুমি কিন্ত বাড়াবাড়ি করছো? মাফ চাও মেহেরিমার কাছ থেকে।
,
সারাঃ তাই এই শাকচুন্নি তুই যাবি নাকি আমি তোকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে এই বাড়ি থেকে বের করে দিব কোনটা।
,
মেহেরিমা ভয়ে কেটে পড়লো সারাও রাজ কে সোফায় বসিয়ে পেছন পেছন গেল। একটা ছেলের সাথে মেহেরিমা কারে উঠে পড়লো কিন্ত মুখটা দেখতে পারেনি।
,
সবকিছু উপেক্ষা করে রাজ নিয়ে সোজা ওয়াশিরুমে শাওয়ার টা ছেড়ে দিয়ে নিচে বসিয়ে রেখেছে। তেঁতুল পানি খাইয়েছে গড়গড় করে পেট থেকে সব মদ বের করে।
রাজঃ আহ সারা কি করছো আমায় কেন? শাওয়ারের নিচে বসালে ঠান্ডা লাগছে প্রচুর।
,
সারাঃ ঠান্ডা লাগছে না? একটা থাপ্পড় মেরে সবগুলা দাঁত ফেলে দিব তোমার বলে দিলাম চুপচাপ বসে থাকো। চেঞ্জ করে নাও কিছু দরকার লাগলে আমায় বল আমি বাহিরে গেলাম।
,
রাজঃ তুমি করিয়ে দাও না।
,
সারাঃ কিহহহহ( ঝাঁঝি গলায়)
,
রাজঃ না আমি পারবো।
,
সারাঃ হুম তাড়াতাড়ি আসো নয়তো ঠাস করে কানের নিচে দিব একটা।
,
রাজ সারার ঝারি খেয়ে ভয়ে দ্রুত চেঞ্জ করে একটা টাওজার পড়ে দ্রুত বাহিরে এসে চুপচাপ বেডের উপর শুয়ে ঘুমে বিভোর। সারা খাবার নিয়ে এসে দেখে রাজ ঘুমিয়ে পড়েছে রাগে একটান দিয়ে শুয়া থেকে তুলে মুখে খাবার গুঁজে দিল।
,
সারাঃ খাবারটা ফেললে তোমার কি হাল যেন করবো আমি সেটা আমি নিজেও জানি না।
,
রাজঃ৷ আমি খাব না, প্লিজ নিয়ে যাও আমার সামনে থেকে।
,
সারাঃ না না ভাত খেতে তো তোমার ভালো লাগবে না। ঐ সব ছাইপাঁশ খেতে তো খুব ভালো লাগে তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও তারপর আমি খাব।
,
রাজঃ( খেতে খেতে) তুমি খাওনি কেন?
,
সারাঃ এমনি এখন তোমার খাওয়া হলে তোমার প্লেটে খাব সো চুপচাপ খেয়ে ভালো ছেলের মত খেয়ে নাও নয়তো একটা বারি মেরে তোমার মাথা আমি দুইভাগ করে দিব।
,
রাজ ভয়ে চুপচাপ খেয়ে শুয়ে পড়ে শুধু ভাবছে এত ভালোবাসে সারা ওকে যে ওর জীবন টা নষ্ট করে দিয়েছে তাও এত ভালোবাসা হঠাৎ মনে হচ্ছে বুকের উপর কিছু একটা এসে পড়েছে এটা যে সারা বুঝতে কষ্ট হলো না।
,
সারাঃ( মাথা তুলে) কি ব্যাপার এভাবে নড়ছো কেন? আমি কি পর নারী নাকি।
,
রাজঃ তুমি আমার এতটা কাছে আসছো কেন?
,
সারাঃ( কানে কানে) নিজেকে কন্ট্রোল করতে পার না বুঝি।
,
রাজঃ চুপ।
,
সারাঃ( মন খারাপ করে) ঠিক আছে।
রাজের হাতের উপর থেকে অনেক দূরে গিয়ে শুয়ে পড়লো সারা চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করছে বাট না ঘুম আসছে না। সেইম রাজেরও কেমন জানি খালি খালি লাগছে।
,
রাজঃ( আমতা আমতা করে) কারো যদি মন চাই তো হাত টান করলাম শুতে পারেন।
,
সারাঃ পাগল( মনে মনে)
,
রাজঃ আমি কিছু বলেছি কাউকে।
,
সারাঃ( মুচকি হেসে) ভালোই যদি না বাসতে তাহলে এই কথাটা বলতে না।
,
রাজ কিছু বলার আগেই ফোন আসে সারার ফোনে সারা ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে আননোউন নাম্বার।
সারাঃ হ্যালো কে?
,
ফোনের ওপাশে ঃ,,,,,,,,,,,,।
,
সারাঃ এত রাতে ফোন দিলেন আবার কথা বলছেন না? আজব খেয়ে দেয়ে কাজ নেই আপনার।
,
ফোনের ওপাশেঃ,,,,,,,,,,,,,,,,।
,
সারাঃ এই যে মশাই আপনাকে বলছি এত রাতে ফোন কোনো ভালো মানুষের কাজ।
,
ফোনের ওপাশেঃ এত রাতে ফোন ধরাটা কি কোনো ভদ্র মানুষের কাজ( মৃদু হেসে)
,
সারাঃ( উঠে বসে) কে বলুনত আপনি গলাটা কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে।
,
ফোনের ওপাশঃ দেখুন তো ম্যাম চিন্তে পারেন কি না?
,
সারাঃ এনামুল কুত্তা বিলাই আমার ঘুমের বার টা বাজিয়ে দিলি তোরে সামনে পেলে আমি কুঁচি কুঁচি করে কিমা বানিয়ে খেতাম( রাগী রাগী)
,
ফোনের ওপাশঃ হু ইজ এনামুল? আই এম আফজাল হোসেন।
,
সারাঃ আ,,,,প,,,,নি,,,, স্য,,,,,,রি।
,
আফজালঃ( মৃদু হেসে) ইটস ওকে তা এনামুল কি আপনার ফ্রেন্ড।
,
সারাঃ জি ( নিচু স্বরে)
,
আফজালঃ আপনার ভাইয়ার সাথে আমিও পার্টিতে ছিলাম। তো তাই ভাবলাম একটু ফোন দিয়ে দেখি ওনি বাড়ি পৌঁছেছে কি না।
,
সারাঃ( রাজের দিকে তাকিয়ে দাঁত কিরমির করে) এসেছে আপনি ও বুঝি ড্রিংক করেছেন?
,
আফজালঃ ওয়াক থু আমি এসব খাই না।
,
সারাঃ ভালো বাট আমার ভাই খেয়েছে ( আস্তে করে)
,
আফজালঃ যে জন্য আপনাকে ফোন দিলাম কালকে একটু দেখা করতে পারবেন।
,
সারাঃ আমি আচ্ছা আপনি আমার ফোন নাম্বার কোথায় পেলেন?
,
আফজালঃ সেটা কালকে আসলে না হয় বলবো।
,
সারাঃ ওকে আচ্ছা কোথায় আসতে হবে।
,
আফজালঃ ঠিকানা টা আমি টেক্সট করে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
,
সারাঃ ওকে বাট,,
,
আফজালঃ বাট কি মিস সারা?
,
সারাঃ বাট ভাইয়া তো কোথাও যেতে দিবে না!৷ আপনি যদি আমায় বাড়ি থেকে একটু কষ্ট করে ড্রপ করে নিতেন তাহলে অনেক ভালো হতো।
,
আফজালঃ( খুশি হয়ে) ওকে ওকে আমি কালকে সকাল দশটার সময় আপনার বাড়ির সামনে আসবো আর হে আপনি কিন্ত আমার সাথে ব্রেকফাস্ট করবেন।
,
সারাঃ ওকে।
,
আফজালঃ ইয়াহু মিস সারা আমার তো আপনাকে চাই হ্যা চাই দেহ নয় আপনার মন সত্যি সত্যি অনেক ভালোবেসে ফেলেছি আপনাকে কালকেই বলে দিব।
,
সারা অবাক লোকটা নাম্বার কোথায় পেল, রাজের দিকে চোখ পড়তেই হালকা ভয় পেল, যেভাবে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে এখনই খেয়ে ফেলবে।
,
সারাঃ কি হয়েছে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
,
রাজঃ কার সাথে এতক্ষণ কথা বলছিলে( দাঁতে দাঁত চেপে)
,
সারাঃ কেউ না এনামুল ঘুমিয়ে পড় অনেক রাত হয়েছে।
সারা ঘুমিয়ে পড়েছে ঠিকই কিন্ত রাজ ঘুমায়নি ফোন টা নিয়ে নাম্বার টা চেক করলো বুঝল এটা কেউ না মিস্টার আফজালের নাম্বার ফোন থেকে নাম্বার টা ডিলিট করে অন্য পাশে শুয়ে পাড়ি জমালো ঘুমের রাজ্য কাল সকালে কি ঘটবে হয়তো বা দুজনে কেউ জানে না।

চলবে……….।

❤ বসন্তের ছোঁয়া ❤
লিখাঃ Ayesha Ariya Afiya
পর্বঃ ৯
,
,
সারার ঘুম ভেঙে নিজেকে রাজের বুকে আবিষ্কার করলো ওর মনে আছে রাজকে কালকে রাতে জরিয়ে ধরে নি তার মানে ও নিজে থেকেই ধরেছে মুচকি হেসে আলতো করে কপালে চুমু দিয়ে উঠে হাত মুখ ধুয়ে কল লিষ্ট চেক বাট বাট নাম্বার টা নেই।
,
সারাঃ কালকে রাতে কথা বললাম আর এখন ফোনে নাম্বার টা নেই এটা কি করে সম্ভব উফফ কেন যে সেইভ করলাম না
,
রাজঃ খুঁজো খুঁজো আরও খুজো কিন্ত নাম্বার পাবে না! আমার টা খেয়ে আমার টা পড়ে অন্য লোকের সাথে কথা বলা কিন্ত আমার এত লাগছে কেন সারা যা কিছু করুক তাতে আমার কি কালকে কি এমন হয়েছিল ফোনের নাম্বার টা কেটে দিলাম এর মানে আই লাভ হার নো নো রাজ কি ভাবছিস এসব সারাকে ছি ছি এসব তুই ভাবিস রাজ চৌধুরী ব্যবহৃত জিনিস দ্বিতীয় বার ব্যাহার করে না।রাইট এটাই সত্যি এই মেয়ে যা খুশি করুক তাতে আমার কি।
,
সারাঃ গুড মর্নিং মাই লাভ( মুচকি হেসে)
,
রাজঃ সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি তোমার মুখটা না দেখতাম তাহলে অনেক ভালো লাগতো।
,
সারাঃ চুপ।
,
রাজঃ মুখ অফ কেন? আমার সাথে ঝগড়া করবে না?
,
সারাঃ কালকে রাতে কে আমার গায়ে চাদর টেনে দিয়ে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়েছিল! এটা কি রাজ চৌধুরী ছিল নাকি অন্য কেউ বলতো?
,
রাজঃ কিহহহহ আমি তোমায় জরিয়ে ধরেছি ভাবলে কি করে?
,
সারাঃ( জরিয়ে তো আমই ধরেছি জান কিন্ত তোমায় এখন টেপে ফেলবো দাঁড়াও) ( মনে মনে)
,
রাজঃ দেখ সারা আমার আর্জেন্ট মিটিং আছে সো সকাল সকাল মুডটা নষ্ট কর না প্লিজ।
,
সারাঃ ওকে জান আজকে আমার ওআর্জেন্ট মিটিং আছে বাট মিস্টার আফজালের নাম্বার টা কোথায় গেল।
,
রাজঃ( শয়তানি হাসি দিয়ে) খুঁজো খুঁজো কিন্ত পাবে না। আমায় ভয় দেখানো রাজ চৌধুরী কে ভয় দেখায় সামান্য একটি গ্রামের মেয়ে।
,
সারা রাজ তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে নিল সারা আজকে পড়েছে একটা কলা পাতা রঙের শাড়ি সাথে জুয়েলারি উফফ অনেক সুন্দর লাগছে দুজন ই আয়নার সামনে দাড়িয়ে আছে রাজ পেছনে সারা সামনে সারা চুল আঁচড়াচ্ছে আর রাজ টাই বাঁধছে না চাইতে ও চোখ যাচ্ছে বারবার সারার দিকে।
,
সারাঃ এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? লুকিয়ে লুকিয়ে না দেখে সামনাসামনি দেখতে পারো।
,
রাজঃ তোমার মত পেত্নী কে দেখতে আমার বয়েই গেছে কত মেয়ে রাজ চৌধুরীর পায়ের নিচে পড়েছিল তার কোনো হিসেবে নেই ( ভাব নিয়ে)
,
সারাঃ কথাটা কি সত্যি ( চোখে কাজল দিতে দিতে)
,
রাজঃ তো কি আমি মিথ্যা বলছি?
,
সারাঃ উহুম মিথ্যা হতে যাবে কেন? আজকে আমার আর্জেন্ট মিটিং আছে তাই তোমার সাথে কথা বলতে ভালো লাগছে না।
,
রাজঃ যাও আমার সামনে থেকে তোমার চেহারা টাও আমি দেখতে চাই না Just go to hell( হাত নাড়িয়ে বাহিরের দিক ইশারা করে রাগী সুরে)
,
সারাঃ You go to hell বেয়াদব পোলা।
,
,
দুজন বাড়ির সামনে এসে দাড়িয়ে আছে রাজ সানগ্লাস পড়ে কার স্টার্ট দিয়ে সারাকে দেখিয়ে বপর হবে এমন সময় দারোয়ান চাচা গেইট খুলে দিল মিস্টার আফজালের গাড়ি।
,
সারাঃ হাই অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমায় ড্রপ করে নেওয়ার জন্য।
,
আফজালঃ( মৃদু হেসে) উঠে বসুন ও আরেকটা কথা আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে
,
সারাঃ জি ধন্যবাদ।
,
রাজ পেছন থেকে সব দেখছে সারা কিভাবে হেসে হেসে আফজালের কারে উঠে পড়লো না চাইতে ও জেলাস হচ্ছে সারা মুখ বের করতে রাজকে চোখ মেরে মিস্টার আফজালের সাথে চলে আসলো একটা কফি শপে।
,
আফজালঃ তো মিস সারা কি খাবেন বলুন( বসতে বসতে)
,
সারাঃ না মানে আমি হালকা ব্রেকফাস্ট করে এসেছি আপাতত কিছু খাব না। আপনি কি বলবেন বলুন আসলে আমার ভার্সিটি যেতে হবে আজকে কাজ আছে।
,
আফজালঃ কখন যাবেন?
,
সারাঃ এগারো টার সময়।
,
আফজালঃ ওহহহ ওকে আমহ আপনাকে না হয় ড্রপ করে দিব।
,
সারাঃ ধন্যবাদ।
,
আফজালঃ আপনি কি খাবেন বলুন আমি ওয়ার্ডার করি।
,
সারাঃ আপনি যা খাবেন আমিও তাই খাব( একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে)
,
আফজালঃ( মুচকি হেসে) আপনি এত সুন্দর কেন?
,
সারাঃ মানে?
,
আফজালঃ না মানে বলছিলাম যে ,,,,
,
সারাঃ হ্যা বলুন।
সারার মনে হচ্ছে কেউ ওর দিকে তাকিয়ে আছে
পেছন ফিরে দেখে কয়েকজন ক্লাইন্টের সাথে রাজ বসে ডিল ফাইনাল করছে যদিও সারা আফজাল কে দেখেছে কিন্ত কিছু বলেনি চোখ দুটো গরম করে সারার দিকে তাকিয়ে আছে সেই একটা রাগী মুড।
,
সারাঃ( ঢোক গিলে) ওরে আল্লাহ যেভাবে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে আমায় গিলে খাবে মিস্টার আফজাল যা বলার একটু তাড়াতাড়ি বলুন কেমন।
,
আফজালঃ ( হাঁটু গেড়ে বসে সারা হাত ধরে) আমি জানি না আপনি কি ভাবে নিবেন কিন্ত এটাই সত্যি আমি আপনাকে প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছি প্লিজ সারা আমায় ফিরিয়ে দিবেন না। আমি আপনাকে সত্যি ই ভালোবাসি আই রিয়েলি লাই ইউ প্লিজ একসেপ্টেট মাই প্রপোজাল।
,
রেস্টুরেন্টের সবাই সারা আফজালের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই তালি দিচ্ছে আর বলছে হ্যা বলতে সারা রাজের দিকে তাকালো যথেষ্ট শান্ত আশেপাশে তাকালো সকলে সিনেমার শুটিং হিসেবে দেখছে।
,
সারাঃ আমি আপনাকে,,,
,
আফজালঃ( খুশি হয়ে) আপনি আমার প্রপোজাল মেনে নিয়েছেন তাইতো আমি জানতাম( জরিয়ে ধরে)
,
সারাঃ কি করছেন কি মিস্টার আফজাল ছাড়ুন প্লিজ।
,
রাজ এবার আর সহ্য করতে পারলো এত গুলা মানুষের সামনে সারার থেকে আফজাল কে সরিয়ে মারতে শুরু করলো আশেপাশের মানুষগন এসে দ্রুত সরিয়ে নেয় রাজে সারা থ মেরে দাড়িয়ে আছে কি হচ্ছে বুঝতে পারছেও আবার পারছে না।
,
রাজঃ তোর সাহস কি করে হয় সারাকে টাচ করার খুন করে ফেলব জানিস ও আমার কে?
,
সারাঃ স্যরি ওনি আমার ভাইয়া তাই এমনটা করেছে মিস্টার আফজাল আপনি কিছু মনে করবেন না প্লিজ।
,
আফজালঃ ইটস ওকে বুঝতে পারছি।
,
রাজ সারকে টেনে কোলে তুলে বাহিরে নিয়ে এসে কারের ভিতর ঢুকিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দুই বাহু চেপে ধরে।
রাজঃ আমার ঘাড়ে এসে ঝুলেছিস আবার এখন অন্যের লোকের সাথে গা ঢলাঢলি করছিস। আসলে তুই একটা ক্যারেক্টারলস মেয়ে মেহেরিমা না তুই স্বামী কয়টা লাগে তোর বল আমায়।
,
সারাঃ ( কলার চেপে ধরে) আমি ক্যারেক্টারলস হ্যা আমি তাহলে তুমি কি প্রতিদিন মেয়েদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক কর তার মুখে আবার এই কথা ছি ছি লজ্জা করছে না আমার চরিত্র নিয়ে বাজে কথা বলতে ( কার থেকে বের হতে হতে)
,
রাজঃ( হাত ধরে) এখন যদি কার থেকে বের হও ভালো হবে বা কিন্ত।
,
সারাঃ তুমি আসলেই নিচু মনের মানুষ তোমায় ভালোবেসে আমি ভুল করেছি। লোকটা কি জানে তুমি আমার ভাই না স্বামী বল জানে না। সবার সামনে পরিচয় দিয়েছো আমি তোমার বোন আর এখন।
,
রাজঃ সারা আমার কথা শোন তুমি কার থেকে বের হবে না এখন এই মুহূর্তে আমার সাথে বাড়ি যাবে তুমি আসলেই ( দাঁতে দাঁত চেপে)
,
সারা কার থেকে বেরিয়ে ভার্সিটি চলে আসে কাজ শেষে একটা দীঘির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে কাটছে শুধু ভাবছে আজকে যা করলো এটা কি সত্যি নাকি মিথ্যা এসবই ভাবছে হঠাৎ করে কেউ একজন পেছন থেকে ধাক্কা দিতেই ছিটকে গিয়ে পড়ে দীঘিতে অতল সমুদ্রে তলিয়ে যাচ্ছে সারা শুনতে পেল দুজনের অট্টহাসি এরা দুজন আর কেউ না রাজ এবং মেহেরিমা।
,
মেহেরিমাঃ বেবী যা একটিং করেছো আই এম প্রাউড অফ ইউ মর মর তুই পানিতে পড়ে মর খুব শখ না রাজকে বিয়ে করার এবার মর।
,
সারা চিৎকার করছে বাঁচাতে বাট এই নির্জন স্থানে কে আসবে।
মেহেরিমাঃ ভালোই করেছো কালকে রাতে টিপ সই নিয়ে এখন সব প্রপারটি তোমার আমরা দ্রুত বিয়ে করবো কেমন? লাভ ইউ বেবী।
,
রাজঃ লাভ ইউ টু মাই সুইট হার্ট তবে খারাপ লাগছে সারার জন্য আমার সাথে পাঙ্গা দিতে এসে অনেক খারাপ কাজ করেছো সো স্যরি এবার তুমি মর মেহের চলো।
,
মেহেরিমাঃ হুম চলো জান।
,
সারা চিৎকার দিচ্ছে বাঁচাতে সাতার পারে কিন্ত পড়েনে শাড়ি তাই শুধু নিচে তলিয়ে যাচ্ছে সারা দেখেছে রাজকে বলেছে বাঁচাতে কিন্ত আসেনি অতল পানির নিচে তলিয়ে গেছে সারা আর হয়তো দেখা হবে না। এই পৃথিবীর আলো বাতাস সারার শেষ কথাটা ছিল” রাজ বাঁচা ও আমায় খুব ভালোবাসি তোমাকে”

চলবে………❤❤❤❤❤❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here