#ভালবাসার_প্রহর
#লেখনীতে_মায়া_মনি
#পর্ব৪
বহুদিন পর একান্তে ঘুমাচ্ছে জেরিন।প্রতিদিনের ঝামেলা থেকে একটু দূরে। তবুও,ঘুমন্ত মুখে চিন্তার ছাপ আছে এখনো।ঠিক চিন্তা না, ভয়।বিয়ে থেকে না হয় পালিয়ে এলো কিন্তু,বাড়ি ফিরলে হবে কী?দরজায় কড়া পরতেই চোখ কুঁচকে নিলো জেরিন।সকালের আলো চোখে পরেছে তার।বাম হাতে চোখ ঢেকে আবার ঘুমাতে চাইলো।কিন্তু দরজায় আবার শব্দ হলো।অনিচ্ছা শর্তেও উঠে বসে জেরিন।চোখ ঢোলে অলস পায়ে দরজা খুলে দিলো।সাদা কালো ফর্মাল পোশাকে একটু সুন্দর ছেলে দাঁড়ানো।জেরিন ভালো করে তাকিয়ে কপাল কুঁচকে নিলো।ছেলেটা অতি নম্রভাবে বলে,
—-“ম্যাডাম আমি জয়।রিসেপশন থেকে এসেছি।সাথে রুম সার্ভিস ও আছে।আমি কী রুম সার্ভিস করিয়ে দিবো?”
জেরিন হাসার চেষ্টা করে দরজা ছেড়ে দাঁড়ায়।ছেলেটা হাল্কা হেসে একটা বয় যে নিয়ে রুমে প্রবেশ করে।জয়ের কথা অনুযায়ী রুমটা ক্লিন করা হচ্ছে।জেরিনের চোখে এখনো ঘুম ঘুম ভাব।সোফায় পা তুলে গালে হাত দিয়ে বসে সে।জয় পকেটে হাত রেখে পাশেই দাঁড়িয়ে আছে।জেরিন ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে,
—-“আচ্ছা এখন কয়টা বাজে মি.জয়?”
জয় এমন কন্ঠ শুনে হাসলো।হেসে বলে,
—-“জ্বি ম্যাডাম,১০টা বাজে এখন।”
জেরিনের চোখের ঘুম হঠাৎ উধাও হয়ে গেলো।পাশে থাকা জয়ের পকেটে রাখা বাম হাত টেনে চোখের সামনে আনে।চোখ বড় করে সময় দেখে বলে,
—-“ওহ নো!এতো সময় ঘুমিয়েছি আমি?ওদিকে কি হচ্ছে কে জানে!”
জয় একটু ব্যস্ত হয়ে বলে,
—-“কোনো প্রবলেম ম্যাডাম?চাইলে সেয়ার করতে পারেন।”
জেরিন মাথা দুলিয়ে না বলে।জয় সার্ভিসিং করিয়ে চলে যায়।জেরিন বিছানায় এসে বালিশের নিচ থেকে ফোনটা বেড় করে।সাথে সাথেই নাজমুল ইসলামের ফোন আসে।ধরবে কী ধরবে না বেশ অস্বস্তিকর অবস্থায় পরে যায় জেরিন।বার দু-এক ফোন দেওয়ার পর রিসিভ করল সে,
—-“হ্যালো?”
জেরিন চুপ করে রইল।নাজমুল শান্ত গলায় বলে,
—-“ঠিক আছো তুমি?”
জেরিন এবার অপরাধী গলায় বলে,
—-“সরি মামা।আমি তোমাকে কিছু না জানিয়েই… ”
জেরিনের কথার মাঝেই নাজমুল দ্রুত গলায় বলে,
—-“একদম সরি বলবে না।আরে বাবা তুমি তো ভুল কিছু করনি।আমি যদি পারতাম তোমাকে ডুবাই পাঠিয়ে দিতাম।এখনো অবশ্য জানি না তুমি কোথায় আছো।”
জেরিন মন খারাপ করে বলে,
—-“সবাই যদি একটু বুঝতো আমায় তাহলে পালিয়ে আসতে হতো না।পালিয়ে এসেও ভয় হচ্ছে খুব।”
—-“আরে পাগল,ভয় কেনো পাচ্ছো?তুমি কী অন্যায় করেছো বলো?ওরা চাইলেও পারবে না কিছু করতে।সব উপর ওয়ালার খেলা গো।সে ভাগ্যে কী রেখেছে সেটা তো আমরা জানি না।”
জেরিন কিছুটা অস্থির হয়ে বলে,
—-“মা যদি জানতে পারে আমি কোথায় আছি তাহলে আমাকে নিয়ে যাবে।আমি চাই না ফিরে যেতে সেখানে।যেখানে আমার মূল্য নেই।”
নাজমুল হাল্কা হেসে বলে,
—-“সব ঠিক হয়ে যাবে জেরিন।শাওন আর আমি তোমার পাশেই আছি।চিন্তা করো না কেমন?রাখছি!”
জেরিন ধির কন্ঠে বলে,
—-“আল্লাহ হাফেজ!”
জেরিন ফোন রেখে চোখ বন্ধ করে লম্বাশ্বাস নিলো।যা হবার তা হবেই।শাওন যতদিন আছে চিন্তা নেই। শাওন তো চলে আসবে এখানে তাহলে ভেবে কী হবে?জেরিন স্বস্তির নিশ্বাস নিয়ে বাইরে যাওয়ার জন্য রেডি হলো।হাল্কা আকাশি রঙা জর্জেট থ্রিপিস গায়ে খোলা চুল।কপালে সাদা পাথরের টিপ আর হাতে ঘড়ি।রুমটা লক করে সচেতন পায়ে বাইরে হাটা শুরু করল।খেয়ালে বেখেয়ালে স্পর্শের রুমে বার কয়েক চোখ বুলিয়ে নিলো।রিসেপশন এসে চাবিটা জমা দিয়ে মৃদু কন্ঠে বলে,
—-“আপনার এখানে যদি কোনো মহিলি আমাকে খোজ করে, প্লিজ কোনো ডিটেইলস দিবেন না।”
রিসেপশন থেকে অতি নম্রভাবে বলে,
—-“অবশ্যই ম্যাডাম দিবো না।আপনার পারমিশন ছাড়া আমরা কিছু দিবো না।”
জেরিন হাল্কা হেসে বলে,
—-“ধন্যবাদ আপনাকে।”
জেরিন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে রিসোর্ট থেকে বাইরে চলে গেলো।কক্সবাজার আগে ও বন্ধুদের সাথে এসেছিল। কিন্তু একা একা এতো দূর আসা অসম্ভব ছিল।আজ প্রথম একা একা ঘুরবে সে।কত সময় চিন্তা নিয়ে বসে থাকবে আর?বরং ঘুরে আসলে শান্তি লাগবে।রিসোর্ট থেকে রাস্তায় পা রাখতেই পিএ সাদের সাথে দেখা।এক গাল হাসি নিয়ে সাদ বলে,
—-“গুড মর্নিং ম্যাডাম।”
জেরিন কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে চিনতে পারে সাদকে।হাল্কা হেসে বলে,
—-“কেমন আছেন?”
সাদ অতি ভদ্রতার সাথে বলে,
—-“খুব ভালো আছি।আপনি?”
—-“আমিও ভালো আছি।তা এখানে দাঁড়িয়ে কী করছেন?”
—-“স্যার কে নিয়ে একটা মিটিং করে এলাম।এখন অন্য মিটিং করতে যাবো তাই গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি।ড্রাইভার গাড়ি দিয়ে গেলেই স্যার কে নিয়ে যাবো।”
জেরিন এক গাল হাসি দিয়ে বিদায় জানিয়ে সমুদ্র দেখতে চলে গেলো।জেরিন যেতেই গাড়ি চলে আসে।
.
.
.
.
গভীর মনযোগ দিয়ে মিটিং শেষ করল স্পর্শ।হাত ঘড়িতে সময় দেখে নিলো একবার ৬:২৯ বাজে।সব ডিজাইন এবং মিটিং কমপ্লিট। কক্সবাজার আসার কারণ সাকসেসফুল হয়েছে।সব ক্লাইন্ট যেতেই স্পর্শ চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ায়।সাদ টেবিল থেকে সব ফাইল সাজিয়ে নিলো।স্পর্শ কোট হাতে কনফারেন্স রুম থেকে যেতে যেতে বলে,
—-“আগামীকাল ঢাকার ফ্লাইট বুক করো সাদ।”
সাদ পিছু পিছু যেতে যেতে বলে,
—-“ওকে স্যার! ”
সন্ধ্যা হয়ে গেছে এখন।রিসোর্ট থেকে অনেকটা দূর আছে স্পর্শ। রিসোর্ট যেতে যেতে অনেকটা রাত হতে পারে। গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে স্পর্শ। দুহাত পকেটে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাস্তায়।সাদ পাশেই দাঁড়িয়ে কিছু বলার চিন্তা ভাবনা করছিল।গলা ঝেরে একটু সাহস নিয়ে বলে,
—-“স্যার কাল সত্যি চলে যাবেন?”
স্পর্শ হাল্কা হেসে কপাল কুঁচকে বলে,
—-“হ্যা যাবো।আমাদের তো সব কাজ শেষ।”
সাদ কিছুটা ইতস্তত করে বলে,
—-“ম্যাডামের সাথে কী তাহলে আর কথা হবে না স্যার?”
—-“ম্যাডাম?”
স্পর্শ বেশ অবাক হয়ে প্রশ্ন করে।কয়েক মিনিট সময় নিয়ে ভাবতেই জেরিনের মায়াবি মুখ ভেসে উঠে চোখের মাঝে।মাথা নিচু করে হেসে দিলো স্পর্শ। মাথা সোজা করে শান্ত গলায় বলে,
—-“ভাগ্যে থাকলে দেখা হবে সাদ।আর আমরা কাল যাচ্ছি। হাতে এখনো কালকের সকাল আছে আমাদের।আজ রাতেও দেখা হয়ে যেতে পারে, কে বলতে পারে?”
সাদ হেসে সম্মতি দিলো।কালো রঙের গাড়িটা সামনে এসে থামে।ড্রাইভার দরজা খুলে দিলে স্পর্শ গাড়িতে বসে।কিছু দূর যেতেই শব্দ করে ফোন বেজে উঠে স্পর্শের।ফোনের স্ক্রিণে “ভাইয়া ” নাকটা দেখে হাল্কা হেসে রিসিভ করেম,
—-“বলো ভাইয়া?”
ওপাশ থেকে হাস্যউজ্জ্বল গলায় বলে,
—-“অভিনন্দন ভাই আমার।শুভ মেহরাবের ভাই বাবার মিটিং ও সাকসেসফুল করেছে।”
স্পর্শ হেসে দিলো।হেসে বলে,
—-“আমি কাল ফিরছি ভাইয়া।”
শুভ হেসে বলে,
—-“জলদি এসো ভাই আমার।তোমার জন্য একটা সুখবর আছে।”
স্পর্শ ভ্রু কুঁচকে বলে,
—-“কী সেটা?”
—-“উঁহু এখন বলা যাবে না।কাল এলেই জানতে পারবে সব।”
—-“আচ্ছা আমি তাহলে রাখছি ভাইয়া।পরে কথা হবে।”
স্পর্শ হেসে ফোন রেখে দিলো।বাবার হয়ে এই প্রথম একটা প্রজেক্ট ফাইল করল স্পর্শ। সত্যি নিজের ও ভালো লাগছে আজ।
_____________________________
বসার ঘরে পা তুলে বসে আছে লতিফ সাহেব এবং জেরিনের বড় খালু।বাইরে থেকে লোকজন সব লাইটিং খুলে নিচ্ছে। জসীম সাহেব রুম থেকে বসার ঘরে এলেন।সোফায় বসে দেওয়াল ঘড়িতে চোখ দিলেন।লতিফ সাহেবের স্ত্রী সেলিনা চায়ের ট্রে হাতে উনাদের দিকে এগিয়ে এলেন।সবার সামনে চায়ের ট্রে রাখে।জসীম সাহেবের হাতে চায়ের কাপ দিয়ে বলেন,
—-“ভাই আপনি চিন্তা করবেন না।যা হওয়ার হয়ে গেছে।”
জসীম সাহেব চায়ের কাপ হাতে তুলে দীর্ঘশ্বাস ফেলল।জেরিনের বড় খালু চায়ের কাপ হাতে তুলে তাচ্ছিল্য হেসে বলেন,
—-“যা হওয়ার হয়েছে এটা কোনো কথা?এত গুলো মানুষকে মুখাবে কি করে?আর জেরিন বা কেমন মেয়ে, এভাবে পালিয়ে গেলো।”
লফিত সাহেব চায়ে চুমুক দিয়ে তাল মিলিয়ে বলেন,
—-“তোর যদি কাউ রে পছন্দ থাকতো আমাদের বলতি। আর পছন্দ হবে কেনো? হাসান থাকতে এইসব পছন্দ অপছন্দ হাস্যকর কথা এগুলা।মানুষ শুনলে তো হাসবো।”
জসীম সাহেব চায়ে চুমু দিয়ে গম্ভীর গলায় বলেন,
—-“আপনার মতো নির্বোধ লোকেরাই হাসবে শুনলে।আমার মেয়ে বাড়ি থেকে চলে গেছে সেই নিয়ে কারো চিন্তা নেই।হাসান হাসান করেই সবাই শেষ।এত মায়া লাগলে আপনার পালক আনা মেয়ে লামিয়া কে বিয়ে দেন হাসানের সাথে।”
লতিফ সাহেবের স্ত্রী এবং লতিফ সাহেব এক সাথেই বলেন,
—-“শয়তানে ধরেছে নাকি, এত কম বয়সী মেয়েকে বিয়ে দিবো তাও এতো বয়ষ্ক ছেলের কাছে।”
জসীম সাহেব এবার হাসলো।বাইরে থেকে এসেই নাজমুল ইসলাম সব কথা শুনতে পায়।ওনাদের কথার পিঠে সচ্ছল কন্ঠে বলেন,
—-“জেরিন কেও শয়তানে ধরেনি যে হাসনে বিয়ে করবে।আপনারা দিবেন না আর দুলাভাই কিভাবে দিবে জেরিন কে।আগে নিজেদের দিক থেকে চিন্তা করবেন সব। ”
জসীম সাহেব ড্রয়িংরুমে তাকালেন।নাজমুল দাঁড়িয়ে আছে।অতি নম্রভাবে জসীম সাহেব কাছে ডাকে নাজমুল কে,
—-“কখন এলে তুমি?এসো চা খাবে। ”
নাজমুল জসীম সাহেবের পাশেই বসে।সেলিনা মুখ কালো করে স্থান ত্যাগ করেন।লতিফ সাহেব মুখ বাকিয়ে উঠে যান।জেরিনের মেঝো খালা জেরিনের রুমেই বসে বসে বাইরে থেকে তাদের কথা শুনলো।স্বামি হারা এই মধ্য বয়সি মহিলা ভালোই জানে জেরিন কেনো চলে গেছে। দেওয়ালে থাকা জেরিনের ছবি দেখে চোখ মুছলেন তিনি।দুই ছেলে বাবার আদর না পেতেই মারা যায় স্বামি।মেয়ের অনেক ইচ্ছে থাকলেও ছিল না।ছোট থেকেই জেরিন কে বহু আদর করেছেন তিনি।গলা পরিষ্কার করে বসার গেলো সে।তাকে দেখে জেরিনের খালু উদ্বেগি গলায় বলেন,
—-“কিরে জেসমিন তুই কি কান্না করে এলি নাকি?”
জসীম সাহেব চায়ের কাপ রেখে বলেন,
—-“জেসমিন আপা কি চলে যাবেন কাল? ”
মেঝো খালা উদাসী কন্ঠে বলেন,
—-“প্রথমে ইচ্ছা ছিল বিয়ে হলে চলে যাবো।কিন্তু এখন জেরিন না আসা পর্যন্ত যাচ্ছি না।কে জানে কিভাবে আছে মেয়েটা।”
নাজমুল হাল্কা হেসে বলেন,
—-“যেখানেই আছে নিশ্চয়ই ভালো আছে।বিয়েটা হলে যতটুকু খারাপ থাকতো তার থেকে দূরে যেয়ে ভালোই আছে।”
জেসমিন হাল্কা হেসে বলেন,
—-“আমার মেয়েটার ভাগ্যে কি আছে জানি না।তবে যা গেছে ভেবে লাভ নেই।জসীম ভাই আপনি চিন্তা করবেন না।হাসানরা সমস্যা করলে আমি দেখবো বিষয়টা।এলাকার মেম্বার আর সম্মানিত হয়ে কি লাভ যদি আপনাদের উপকারে না আসি।”
.
.
.
.
শাওন বন্ধুদের সাথে কথা বলে কাল কক্সবাজার যাওয়ার ব্যবস্থা করছে।বন্ধু মহলে সবাই খুশি জেরিন পালিয়েছে।রেস্টুরেন্ট বসে বন্ধুরা ভাবছে সামনে কি করবে।সাকিব চশমা ঠিক করতে করতে বলে,
—-“দোস্ত আন্টি যদি কিছু না বুঝে তাহলে আমরা কিন্তু জেরিন কে কিডনাপ হয়েছে এমন ভাবে উপস্থাপন করতে পারি।”
শাওন কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে ঝারি দিয়ে বলে,
—-“ধ্যাত! এইসব ফাজলামি মার্কা কথা বলবি না।”
নিলয় কফি মগে চুমুক দিয়ে বলে,
—-“শাওন ঠিক বলছে , এখন ফাজলামির সময় না।অবশ্যই ওর মা বলবে কিডনাপ হলে কেউ কল দেয়নি কেনো?”
সাদিয়া ভাবনিত ভঙিমাতে বলে,
—-“আমরা যদি এইসব না করে অজানাই থাকি ভালো হবে।সবার আড়ালে জেরিন কে সাহায্য করে যাই।চেষ্টা করবো এটা বুঝানোর সব ভুলে নতুন করে জেরিন বাচতে জেনো দেয়।”
শাওন কপালে হাত রেখে চিন্তায় উত্তেজিত হয়ে বলে,
—-“আরে এইসব ঠিক আছে।কিন্তু বাড়ি ফিরলে কি বলবে সেটাই কথা।কত দিন মেয়েটা বাইরে থাকবে শুনি?আমরা টাকা পয়সা বরঞ্চ ১ মাস দিয়ে আড়ালে রাখতে পারবো।”
রাফি শেষ চুমু দিয়ে কফিতে স্বাভাবিক ভাবে বলে,
—-“আমরা এক কাজ করতে পারি। কিছুদিন জেরিন দুরেই থাক। তার পর একটা কেস ফাইল করে রাখবো পরিবার এবং হাসানদের উপর।যাতে নেক্সট টাইম কেউ জোর বা এনিথিং করলে আমরা লিগেল এ্যাকশন নিতে পারি।আর তোরা ভুলে যাচ্ছিস কাল জেরিনের জন্মদিন।১৮পূর্ণ হবে এবং কেউ ঠেকাতে পারবে না। আমরা সবাই ওর জন্য একটা ভালো ছেলে খুঁজবো যাতে নিজের মতে ও বিয়ে করলে পরিবার থেকে মানতে বাধ্য হয়।”
সবাই কিছু সময় ভেবে রাফিকে ধন্যবাদ দেয়।কিছুটা রিলাক্স হয়ে আড্ডা দিলো সবাই।তার পর প্ল্যানিং উনুযায়ী থানায় কেস ফাইল করে সবাই। শাওন বাল্যবিবাহর একটি মামলাও করে।থানা থেকে বাইরে এসে রাস্তায় সবাই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে।সাদিয়া ভ্রু উঁচিয়ে বলে,
—-“দোস্ত জেরিনের মামা নাজমুলের ছোট ভাই তো পুলিশ।সে কোনো ঝামেলা করবে না তো?”
শাওন ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,
—-“কি করবে সে?জেরিন এডাল্ট একটা মেয়ে।”
নিলয় সবার মাঝে উত্তেজনা নিয়ে বলে,
—-“এইসব রাখ এখন।কাল জেরিনের জন্মদিন দোস্ত।ওর জন্য কিছু একটা তো করতে হবে নাকি?চল আমরা সবাই কক্সবাজার যাই।জেরিন অনেক সারপ্রাইজ হবে।”
চলবে….