#ভালোবাসবে_তুমিও❤
#পর্ব__১৭
#অদ্রিতা_জান্নাত
মাথায় যন্ত্রনা করছে প্রচুর ৷ মাথা চেপে ধরে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম ৷ বেরোতেই চৈতিকে দেখতে পেলাম ৷ ওর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম,,,,,,,,,
“তুমি এখানে?”
চৈতি আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলে উঠলো,,,,,,,,,,
“তোমার কি হয়েছে? কি রকম জানি দেখাচ্ছে? তোমার শরীর ঠিক আছে তো?”
“আমার আবার কি হবে? আমি ঠিক আছি ৷ আমাকে এক পাতা ঘুমের ওষুধ দাও তো ৷”
চৈতি কপাল কুচকে বলে উঠলো,,,,,,,,
“ভাইয়া না তোমাকে কয়েকদিন আগে এনেদিল?”
“ওগুলো শেষ তো ৷ তোমার কাছে থাকলে দাও প্লিজ আমার মাথায় যন্ত্রনা করছে ৷”
“শ্রেয়া তোমার কি হয়েছে? ইদানিং ধরে তুমি এই এক কথা বলে যাচ্ছো ৷ আমি ভাইয়াকে বলে আসি আগে ৷”
চৈতি যেতে নিলেই আমি ওর হাত ধরে আটকে দিয়ে বলতে লাগলাম,,,,,,,,,
“তুহিনকে কিছু বলার দরকার নেই ৷ তাহলে উনি শুধু শুধু চিন্তা করবেন ৷ আর আমার কিছু হয়নি ৷ তুমি ওষুধটা দেও ৷ একটা ঘুম দিলেই ঠিক হয়ে যাবে ৷”
“সত্যি তো?”
“হুম ৷”
“আচ্ছা তাহলে নিচে চলো আগে খেয়ে পরে নাহয় ওষুধ খেয়ো ৷”
বলেই চৈতি আমাকে নিচে নিয়ে গেল ৷
৷
৷
৷
৷
পরেরদিন ৷
ভার্সিটি থেকে বাড়িতে ফিরতেই বাড়ির সামনে এতো বড় একটা গাড়ি দেখে অবাক হলাম আমি আর চৈতি ৷ এই গাড়িটা এই বাড়িতে আগে কখনো দেখেছি বলে তো মনে হচ্ছে না ৷ তাহলে হঠাৎ কোথা থেকে আসলো ৷ আমি আর চৈতি বাড়ির ভিতরে ঢুকে গেলাম ৷ বাড়ির ভিতরে গিয়ে আশেপাশে তাকাতেই আমার চোখ ছলছল করে উঠলো ৷ দৌঁড়ে গিয়ে আম্মু আব্বুকে জড়িয়ে ধরলাম ৷ আম্মু আব্বু দুজনেই আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো ৷ পুরো একবছর পর তাদের হাতের ছোঁয়া পেয়ে কষ্টটা যেনো আরো বেড়ে গেল ৷ আম্মু আমার দুগালে হাত রেখে বলতে লাগলো,,,,,,,,
“কতটা শুকিয়ে গেছিস তুই ৷”
বলেই কেঁদে দিল ৷ আমি আম্মুকে একসাইড দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলাম,,,,,,,,,
“আরে আর কত কাঁদবে? আমার কিন্তু ভালো লাগছে না এখন ৷”
আম্মু চোখের পানি মুছে হালকা হাসলো ৷ এখানে শুধু আমার বাবা মা না তুহিনের বাবা মাও আছে ৷ আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললাম,,,,,,,,,,
“এতো তাড়াতাড়ি তোমরা কীভাবে এলে?”
“সবকিছু তুহিন করেছে ৷ আমাদের আসা যাওয়ার জন্য যা যা লাগবে সব ও নিজেই রেডি করেছে ৷”
অবাক হয়ে তাকালাম তুহিনের দিকে ৷ উনি আমার দিকেই তাকিয়ে ছিলেন ৷ আমি তাকানোর সঙ্গে সঙ্গে চোখ ফিরিয়ে নিলেন ৷ তাকে উদ্দেশ্যে করে বলতে লাগলাম,,,,,,,,,,
“এতো তাড়াতাড়ি কীভাবে কি করলেন?”
তুহিন মাথা চুলকে উত্তর দিলেন,,,,,,,,
“ওই আর কি ৷”
আমি মুচকি হেসে বললাম,,,,,,,, “থ্যাংক ইউ!”
তারপর আব্বু আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললাম,,,,,,,,,,
“ফ্রেশ হয়ে এসে তোমাদের সাথে গল্প করবো ৷”
তারপর চৈতি আর শ্রেয়া উপরে চলে গেল ৷ তুহিনও ওর রুমে চলে গেল ৷ চৈতির বাবা, শ্রেয়ার বাবা মা আর তুহিনের বাবা মা এক সাথে সোফায় বসলেন ৷ কয়েকজন সার্ভেন্ট এসে তাদের সামনে খাবার দিয়ে গেল ৷ শ্রেয়ার বাবা চৈতির বাবাকে বলতে লাগলেন,,,,,,,,,,
“ধন্যবাদ ভাই ৷ আমার মেয়েটাকে আপনার কাছে সুরক্ষিত রাখার জন্য ৷”
চৈতির বাবা মুচকি হেসে বললেন,,,,,,,
“শ্রেয়াকে আমি আপনার মেয়ে হিসেবে নিজের কাছে রাখি নি কিন্তু ৷ ওকে আমি নিজের মেয়ে হিসেবে রেখেছি ৷”
শ্রেয়ার মা বলতে লাগলেন,,,,,,,,
“সত্যি আপনাদের মতো ভালো মানুষ পৃথিবীতে খুব কম দেখেছি আমি ৷ দেশে থাকতে মেয়েটার জন্য চিন্তা হতো অনেক ৷ কিন্তু আপনারা থাকতে আমার মেয়েটা ভালো থাকবে ৷ সেটা আজ নিজ চোখে দেখে চিন্তা মুক্ত হলাম ৷”
চৈতির বাবা বললেন,,,,,,,,,
“সেটা নাহয় ঠিক আছে ৷ কিন্তু আমার কিছু দরকারি কথা আছে আপনাদের সাথে ৷”
তুহিনের মা কপাল কুচকে বলে উঠলেন,,,,,,,
“কি কথা ভাই?”
চৈতির বাবা কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে উঠলেন,,,,,,,,,,
“আমার মনে হয় শ্রেয়া আর তুহিন দুজন দুজনকে পচ্ছন্দ করে ৷”
ওনার কথায় শ্রেয়ার মা বললেন,,,,,,,,
“আমার তো মনে হয় তুহিন শ্রেয়াকে পচ্ছন্দ করে ৷ কখনো তো এটা মনে হয়নি শ্রেয়াও তুহিনকে পচ্ছন্দ করে ৷”
“হুম সেটা ঠিক ৷ কিন্তু পরে যে ও পচ্ছন্দ করবে না তেমন তো কোনো কথা নেই ৷” (চৈতির বাবা)
“কি বলতে চান আপনি?” (শ্রেয়ার বাবা)
“দেখুন আমি শ্রেয়ার সম্পর্কে সব কিছু জানি ৷ সবসময় তুহিন শ্রেয়ার পাশে ছিল ৷ শ্রেয়াকে সব রকম ভাবে ও সব সময় সাহায্য করেছে ৷ কেউ কারো জন্য এতোটা কি করে করতে পারে? তুহিন শ্রেয়াকে ওর মনের কথা জানাতেও ভয় পায় ৷ যদি শ্রেয়া ওকে ভুল বুঝে? আমি জোর করবো না ৷ শুধু বলবো তুহিনের মতো শ্রেয়াকে আর কেউ বুঝবে না ৷ শ্রেয়া আমার মেয়ের মতো ৷ তাই আমার মেয়ের সুখের জন্য কোনটা ঠিক সেটা আপনাদের বললাম ৷ এখন বাকিটা আপনাদের হাতে ৷”
শ্রেয়ার মা বাবা কিছুক্ষন চুপ থেকে ভাবতে লাগলেন কি করবেন ৷ কিছুক্ষন পর শ্রেয়ার বাবা কিছু বলতে যাবে তার আগেই শ্রেয়ার মা বলে উঠলেন,,,,,,,,,
“ভাই আপনি একদম ঠিক বলেছেন ৷ একা একা অনেক লড়াই করেছে আমার মেয়েটা আর না ৷ অরূপের জন্য ও দেশেও যায় নি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে ৷ ওর মনে এখনো ওর নাম গেঁথে রয়েছে ৷ ওর মন থেকে ওই নামটা মুছে ফেলতে হলে আমাদের শ্রেয়াকে তুহিনের সাথে বিয়ে দিতে হবে ৷”
শ্রেয়ার বাবা বললেন,,,,,,,,,
“এসব তুমি কি বলছো? শ্রেয়াকে না জানিয়ে এতো বড় সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক না ৷ ও জানলে কষ্ট পাবে ৷”
“সারাজীবন যখন কষ্ট পেয়েছে ৷ আজও নাহয় আরেকটু পাক ৷ যে ছেলেটা ওকে এতো ভালোবাসে সে ছেলেটা অন্তত ওকে কষ্ট দিতে পারবে না ৷” (শ্রেয়ার মা)
“কিন্তু…” (শ্রেয়ার বাবা)
“আর কোনো কথা না ৷ আমি আমার মেয়ের খারাপ চাইবো না কখনোই ৷ ভাই আপনি তুহিনের সঙ্গে কথা বলে দেখেন ৷ আমি আমার মেয়েকে রাজি করিয়ে নিব ৷ আর ভাইয়া, ভাবি (তুহিনের মা, বাবা) আপনারা কি রাজি?” (শ্রেয়ার মা)
তুহিনের মা মুচকি হেসে বললেন,,,,,,,,,,
“শ্রেয়াকে আমরা চিনি ৷ তাই আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন ৷ ওরা রাজি থাকলে আমরাও রাজি ৷”
৷
৷
৷
৷
বিকালেবেলা ৷
আমি বিছানায় বসে বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছি ৷ তখনি আম্মু রুমে এলো ৷ হালকা হেসে আমার পাশে বসতে বসতে বলে উঠলো,,,,,,,,,
“পড়ছিস নাকি?”
আমি বইটা সাইডে রেখে আম্মুর কোলে মাথা রাখলাম ৷ আম্মু আমার মাথায় বিলি কেটে দিতে দিতে বলে উঠলো,,,,,,,,,
“তোর শরীর ঠিক আছে তো?”
“হুম আমার আবার কি হবে?”
“তোকে দেখে অন্য রকম লাগছে ৷ নিজের একটু যত্ন করতে পারিস তো নাকি ৷”
আমি কিছু বললাম না ৷ চোখ বন্ধ করে চুপ করে রইলাম ৷ আম্মু কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে উঠলো,,,,,,
“তোর সঙ্গে কথা আছে ৷”
আমি চোখ বন্ধ রেখেই বললাম,,,,,,,,,
“হুম বলো না?”
“আগে বল আমার কথাটা শুনবি? রাখতে পারবি আমার কথা?”
“বলেই দেখো না ৷ আমি কি কখনো তোমার কথার অবাধ্য হয়েছি? কোন কথাটা শুনি নি বলো? না শুনলে বলো আজ শুনবো ৷”
“আগে শুনেছিস কিন্তু আজ নাও শুনতে পারিস ৷”
আম্মুর দিকে চোখ মেলে তাকিয়ে বলতে লাগলাম,,,,,,,
“কি এমন কথা? যে আমি শুনবো না?”
“অতীতকে ভেবে আর কত কষ্ট পাবি বল? নিজের জীবনটাকে নতুন করে গুছিয়ে নে ৷”
“হঠাৎ এই কথা?”
“তুহিনের সঙ্গে তোর বিয়ে ঠিক করেছি আমি ৷”
আম্মুর দিকে একপলক তাকিয়ে উঠে বসলাম ৷ ছলছল চোখে বলে উঠলাম,,,,,,,,,,
“এএটা কি বলছো তুমি? এএএটা হয় না ৷”
“কেন হয় না? তুই কি জানিস না যে তুহিন তোকে ভালোবাসে?”
“ভ…ভালোবাসে?”
“হুম ৷ তুহিন তোকে ভালোবাসে ৷ তুই কি সেটা কখনো বুঝতে পারিস নি? তুহিন সবসময় তোর পাশে ছিল ৷ যখন তোর পাশে কেউ ছিল না ৷ তখন তুহিন ছিল তোর পাশে ৷ সেটা কি এমনি এমনি? অরূপকে তো তুই ভালোবেসেছিস ৷ কিন্তু পরিবর্তে কি পেয়েছিস? শুনেছি অরূপও নাকি তোকে ভালোবাসতো ৷ আর সেই ভালোবাসাটা অবিশ্বাসের ছিল ৷ আর অরূপ তোকে ভালোবাসতো ৷ ভালোবাসে না এখন আর ৷ তাহলে কেন তুই অরূপের স্মৃতি আকড়ে ধরে বেঁচে থাকবি? তুহিন কিন্তু সবসময় তোকে বিশ্বাস করে গেছে ৷ আবার দেখ কাল রাতে তুই আমাদের দেখতে চেয়েছিলি ৷ তাই তুহিনও আজই আমাদের তোর সামনে হাজির করলো ৷ তোর কষ্টটা যে ওর সহ্য হয় না সেটা কি তুই জানিস না? তোর মুখে একটু হাসি ফুটানোর জন্যই তো ও এতো কিছু করে ৷ কিন্তু কেন করে? সেটা জানতে পারিস না?”
“কিন্তু এর জন্য কেন ওনার সঙ্গে আমার বিয়ে দিতে চাইছো?”
“কারন বিয়ের আগেই ও যদি তোর এতোটা খেয়াল রাখতে পারে ৷ তাহলে বিয়ের পর কেন পারবে না?”
আমি বিছানা থেকে নেমে বলতে লাগলাম,,,,,,,,,,,
“না আম্মু এটা হয় না ৷ উনি হয়তো ভালোবাসেন আমাকে ৷ কিন্তু আমি তো ওনাকে ভালোবাসি না ৷ ইভেন পারবোও না কখনো ৷ প্লিজ আম্মু এরকম করো না ৷ আমি তুহিনের সঙ্গে নিজেকে মানাতে পারবো না ৷ পারবো না আমি এই বিয়েটা করতে ৷”
আম্মু আমার কাছে এসে আমার মাথায় হাত রেখে বলতে লাগলো,,,,,,,,,,,,,
“তুই যদি আমাকে নিজের মা ভাবিস তাহলে রাজি হয়ে যা ৷ একটা কথা মাথায় রাখবি মা বাবা কখনো তার সন্তানের খারাপ চায় না ৷ তুই শুধু নিজের কথা ভেবে সবাইকে কষ্ট দিস না ৷ তুই তো অরূপকে ভালোবাসিস তো তুই তো জানিস এক তরফা ভালোবাসার কষ্টটা কি রকম? সেই একই কষ্ট তুহিনকে দিবি?”
আম্মুর দিকে ছলছল চোখে তাকালাম ৷ আম্মু চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বলতে লাগলো,,,,,,,,,,
“যত ইচ্ছা ভেবে নে ৷ যত ইচ্ছা সময় নে ৷ সমস্যা নেই আমার ৷ কিন্তু রাজি হয়ে যাস ৷”
বলেই আম্মু রুম থেকে বেরিয়ে গেল ৷ আমি চুপচাপ ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম ৷
৷
৷
৷
৷
রাতের বেলা ৷
ছাদে দাঁড়িয়ে আছি আমি ৷ হালকা লাইটের আলোয় ছাদের বাহিরে ও ভিতরের সবকিছু দেখা যাচ্ছে ৷ চারপাশে বয়ে চলেছে হালকা ঠান্ডা বাতাস ৷ আশেপাশের সবকিছু চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছি ৷ কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না ৷ কিন্তু সবার জন্য হলেও আমাকে এই বিয়েতে রাজি হয়ে যেতে হবে ৷ হঠাৎ কারো গলার আওয়াজ শুনে চমকে উঠলাম ৷
পাশে তাকিয়ে দেখি তুহিন দাঁড়িয়ে আছেন ৷ চোখ ফিরিয়ে সামনের দিকে তাকালাম ৷ তুহিন হালকা আওয়াজে বললেন,,,,,,,,
“সরি!”
কপাল কুচকে তাকালাম তার দিকে ৷ উনি আমার তাকানো দেখে বলে উঠলেন,,,,,,,,,,
“আসলে আমি বুঝতে পারি নি ৷ ব্যাপারটা এরকম হয়ে যাবে ৷ তোমার চিন্তা করার দরকার নেই ৷ বিয়েটা করতে হবে না তোমাকে ৷ আমি সবাইকে বলে দিব আমি রাজি না ৷ সবাই ঠিক মেনে যাবে ৷ শুধু শুধু নিজে স্ট্রেস নিও না ৷”
“আপনি এতো ভালো নাহলেও পারতেন ৷”
“মানে?”
আমি চোখ ফিরিয়ে নিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে বললাম,,,,,,,,,,
“সবাই যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভালোই নিয়েছে ৷ আপনার আর আমার ভালোর কথা ভেবেছে সবাই ৷ আমি আর অতীতকে আকড়ে ধরে বাঁচতে চাই না ৷”
“তাহলে তুমি রাজি এই বিয়েতে?”
“আমি আমার মা বাবার জন্য রাজি হয়েছি শুধুমাত্র ৷ কিন্তু আমার নিজেকে তৈরি করে নিতে সময় লাগবে ৷”
“জোর করে কেন রাজি হচ্ছো শ্রেয়া?”
“জোর করে নি আমাকে কেউ ৷ আর কেউ জোর করলেও রাজি হতাম না আমি ৷”
“তুমি সত্যি মন থেকে রাজি হয়েছো?”
তুহিনের গলাটা ভেজা শোনালো ৷ ওনার দিকে তাকালাম আমি ৷ ওনার চোখে পানি কিন্তু কেন? আমি কিছু বললাম না শুধু মাথা নাড়িয়ে ‘হুম’ বললাম ৷ আচমকা উনি আমাকে জড়িয়ে ধরলেন ৷ কেঁপে উঠলাম আমি ৷ চোখ বন্ধ করে তুহিনের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম ৷ তাতে ওনার হুশ ফিরলো ৷ উনি আমাকে বললেন,,,,,,,,,,
“শ্রেয়া আমি…”
“স…সমস্যা ন…নেই ৷”
বলেই ওখান থেকে ছুটে নিচে চলে গেল শ্রেয়া ৷ তুহিন ওখানে দাঁড়িয়ে নিজের কপাল চাপড়িয়ে বলতে লাগলো,,,,,,,,,,,
“শিট কি করলাম আমি এটা? অন্তত শ্রেয়াকে জিজ্ঞেস করে নেয়ার দরকার ছিল ৷”
এদিকে শ্রেয়া রুমে এসে নিজের মাথা হাত দিয়ে চেপে ধরলো ৷ অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছে ৷ মনে হচ্ছে এক্ষুনি মাথাটা ফেটে যাবে ৷ একদিক দিয়ে মনের যন্ত্রনা আরেক দিক দিয়ে মাথার যন্ত্রনা ৷ নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছে ৷ টি টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটা ঘুমের ওষুধ বের করে খেয়ে নিল ৷ এটাই এখন ওর সঙ্গি ৷ এটা না খেলে অশান্তি লাগে ওর ৷ মূহুর্তের মধ্যেই বিছানায় ঢলে পরলো ৷#ভালোবাসবে_তুমিও❤
#পর্ব__১৮
#অদ্রিতা_জান্নাত
মাঝখান দিয়ে কেটে গেল আরো দুই দিন ৷ এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে নিজের গাড়িতে উঠে বসলো অরূপ ৷ আজ সকালের ফ্লাইটেই কানাডা এসেছে ও ৷ গাড়ি চালিয়ে সোজা যেতে লাগলো ওর গন্তব্যের দিকে ৷ বেশ কিছুক্ষন গাড়ি চালানোর পর হঠাৎ ওর গাড়ির সামনে একটা মেয়ে এসে পরলো ৷ জোরে ব্রেক কষে গাড়ি থেকে নেমে চলে গেল ওই মেয়েটার কাছে ৷ মেয়েটার হাত ধরে ওর দিকে ঘুরিয়ে রেগে বলতে লাগলো,,,,,,,,
“এই মেয়ে? দেখেশুনে চলতে পারো না? রাস্তা দিয়ে এভাবে পাগলের মতো দৌঁড়াচ্ছো কেন?”
মেয়েটা হাত ছাড়িয়ে নিল ৷ অরূপের পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার স্ক্যান করে বলে উঠলো,,,,,,,
“দেখে তো ভদ্র বাড়ির ছেলে মনে হচ্ছে ৷ তো কথা বার্তা এতো অভদ্রদের মতো কেন?”
“কি? একি তো আমার গাড়ির সামনে মরতে এসেছো ৷ আবার বড় বড় লেকচার দিচ্ছো?”
“আমি কি আপনার টিচার যে আপনাকে লেকচার দিব?”
“ইডিয়ট!”
বলেই অরূপ গাড়ির দিকে চলে গেল ৷ মেয়েটা পেছন থেকে চিল্লিয়ে বলে উঠলো,,,,,,,,
“ইউ’র বংশ ইডিয়ট!”
অরূপ রেগে পিছনে একবার তাকিয়ে কিছু না বলে গাড়িতে উঠে বসে চলে গেল ৷ মেয়েটা ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,,,,,,,
“সব গুলা ছেলে এমন ৷ একদিক ভালো হলে আরেকদিক খারাপ ৷ ছেলেটার চেহারা ভালো কিন্তু ব্যবহার খুবই খারাপ ৷ ধূর আমার তো লেট হয়ে গেল এই ত্যাড়া ছেলেটার জন্য ৷ উফ কেন যে আজ ভার্সিটি আসতে গেলাম ৷”
বলেই চৈতি ওর বাড়ির দিকে যেতে লাগলো ৷
৷
৷
৷
৷
আজ তুহিন আর শ্রেয়ার অ্যাঙ্গেজমেন্ট ৷ সেই জন্য বাড়িতে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ৷ পুরো বাড়ির বাহিরের দিক সঙ্গে ভিতরের দিক অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে ৷ চারদিকে অনেক মানুষ ৷ সবাই খুব সুন্দর করে সেজে রয়েছে ৷ একটা রুমে বসে আছে শ্রেয়া ওর গাঁয়ে ডিজাইন করা ডার্ক পারপেল কালারের একটা ভারী গাউন ৷ কানে গলায় আর হাতে মেচিং জুয়েলারী ৷ মুখে হালকা মেকআপ ৷ তবে এসব কিছুর মধ্যেও ওর মুখে কোনো হাসি নেই ৷ কিছুক্ষন পর ওর মা এসে ওকে নিচে নিয়ে গেল ৷ তুহিনের পাশে দাঁড় করানো হলো ওকে ৷ কালো শার্টের উপর ডার্ক পারপেল কালারের কোর্ট প্যান্ট পরেছে ও ৷ স্টেজে দাঁড়িয়ে চৈতির বাবা বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন ৷ সবার সাথে সবার পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন তিনি ৷ শ্রেয়া তুহিনের পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে ৷
৷
৷
৷
নিজের বাড়ির সামনে সেই সেইম গাড়িটা দেখে অবাক হলো চৈতি ৷ তবুও বেশি কিছু না ভেবে দ্রুত ভিতরে চলে গেল ৷ দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকতেই অরূপের সাথে ধাক্কা খেল ও ৷ পেছনে ঘুরে অরূপকে দেখে অবাক হলো ৷ অরূপও অবাক হলো চৈতিকে দেখে ৷ চৈতি সামনে গিয়ে সিকিউরিটিকে বলতে লাগলো,,,,,,,,
“কি হয়েছে আঙ্কেল? এই ছেলেটা কেন এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে আছে?”
লোকটি চৈতিকে বললো,,,,,,
“দেখো না মা ইনভিটেশান কার্ড ছাড়া চলে এসেছে ৷ আর এখন ভিতরে যাওয়ার জন্য জোর জবরদস্তি করছে ৷ সাহেব তো আগেই বলে দিয়েছিল কার্ড ছাড়া কেউ এলাউ না ৷”
“হুম সেটাই যান আপনি এখান থেকে ৷”
চৈতির কথা শুনে অরূপ রেগে বলে উঠলো,,,,,,,,
“এই তুমি কে? আমাকে তাড়িয়ে দেবার তুমি কে? আর তুমিও বা এখানে কেন? সরো সামনে থেকে ৷”
বলেই যেতে নিলে সিকিউরিটি লোকটি আটকে নিলো অরূপকে ৷ চৈতি আবার বলে উঠলো,,,,,,,,,,,,
“এই যে মিস্টার ঘাড়ত্যাড়া! আপনার ত্যাড়ামি অন্য জায়গায় দেখান গিয়ে ৷ এটা আমার বাড়ি ৷ সো এভাবে গুন্ডামি করলে পুলিশ ডেকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিব একদম ৷ আঙ্কেল কার্ড ছাড়া ভেতরে ঢুকতে দিবেন না একে একদম ৷”
বলেই চৈতি ভিতরে চলে গেল ৷ ভিতরে ঢুকেই শ্রেয়াকে খুঁজতে লাগলো ৷ শ্রেয়াকে এক জায়গায় তুহিনের সাথে দেখতে পেয়ে চৈতি সেদিকে চলে গেল ৷ ওর পাশে গিয়ে দাঁড়ালে শ্রেয়া ওর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,,,,,,,,,,,
“এতোক্ষনে আসার সময় হলো?”
“আর বলো না দেরি হয়ে গেল একটু একটা ত্যাড়া ছেলের জন্য ৷”
শ্রেয়া কপাল কুচকে ফেললো ৷ চৈতি হালকা হেসে বললো,,,,,,,,
“তোমাকে না অনেক সুন্দর লাগছে ৷ আমি যাই একটু সেজে আসি হুম?”
আমি মাথা নাড়াতেই চৈতি দৌঁড়ে উপরে চলে গেল ৷ কিন্তু কার কথা বললো ও? সেটা বুঝতে পারলাম না ৷ হঠাৎ আমাকে আর তুহিনকে স্টেজে ডাকা হলো ৷ আমি তুহিনের দিকে তাকালে উনি ওনার বাম হাত আমার দিকে বাড়িয়ে দিলেন ৷ উপস্থিত সবার চোখ এখন আমাদের দিকে ৷ জোরে একটা শ্বাস নিয়ে তুহিনের হাত ধরে স্টেজে উঠে গেলাম ৷
৷
৷
৷
৷
এদিকে অরূপকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হলো না ৷ ও রেগে সেখান থেকে চলে যেতে নিতেই একটা লোকের হাতের ইনভিটেশান কার্ডের দিকে চোখ গেল ৷ ও লোকটাকে ডেকে একটু দূরে এনে টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে কার্ডটা ওকে দিয়ে চলে যেতে বললো ৷ লোকটা প্রথমে যেতে না চাইলে অরূপ আরো কিছু টাকা তার হাতে ধরিয়ে দিল ৷ লোকটা কিছু একটা ভেবে চলে গেল ৷ আর অরূপ সেই কার্ডটা নিয়ে বাড়ির ভিতরে চলে গেল ৷ বাড়ির ভিতরে যেতেই শ্রেয়াকে তুহিনের পাশে দেখে অবাক হলো ৷ সঙ্গে রাগও ৷ চারপাশে একবার তাকিয়ে মুখে একটা মাস্ক পরে অাবার শ্রেয়ার দিকে তাকালো ৷
চৈতি রেডি হয়ে নিচে নেমে এলো ৷ শ্রেয়ার সামনে এসে দাঁড়ালো ও ৷ তখনি ওর চোখ যায় অরূপের দিকে ৷ মুচকি হাসলো ও ৷
কিছুক্ষন পর গান বেজে উঠলো ৷ উপস্থিত সবাই জোরেজোরে হাত তালি দিতে লাগলো আর চিয়ারআপ করতে লাগলো ৷ সেই গানের তালে তালে আমি তুহিনের সাথে নাঁচতে লাগলাম ৷ অবশ্য এটার কোনো ইন্টারেস্ট নেই আমার ৷ তবুও করতে হচ্ছে ৷ কিন্তু এখন আমার একটা অদ্ভুত ফিলিং’স হচ্ছে ৷ যেটা বুঝতে পারছি না আমি ৷ এরকম কেন লাগছে? কেন এতো অস্থিরতা হচ্ছে আমার ৷ আশেপাশে তাকিয়ে কাউকে খুঁজতে লাগলাম ৷ কিন্তু কাকে? সেটা জানা নেই আমার৷
মিউজিক বন্ধ হয়ে গেলে তুহিন আমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরলো ৷ ডানহাতে একটা আংটি আর বাম হাত আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে মুখে হাসি নিয়ে বসে আছে ৷ উপস্থিত সবার দৃষ্টি আমাদের দিকে ৷ কিন্তু আমার এই দু চোখ অন্য কাউকে খুঁজছে ৷ বারবার মনে হচ্ছে অরূপ আছেন এখানে ৷ কিন্তু সামনে আসছেন না কেন? হাত বাড়িয়ে তুহিনের হাতের উপর হাত রাখতেই উনি অামার হাতে রিং পরিয়ে দিলেন ৷
এদিকে অরূপ রাগে ফুসছে ৷ পারছে না স্টেজে চলে আসতে ৷ এখন সবার সামনে কোনো সিনক্রিয়েট করতে চাচ্ছে না ও ৷ কোনো রকমে দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে যাচ্ছে ৷ আর অন্যদিকে চৈতি অরূপকে এভাবে রেগে যেতে দেখে কপাল কুচকালো ৷ ও বুঝতেই পারছে না শ্রেয়া আর তুহিনকে একসাথে দেখে অরূপের এতো রাগ হচ্ছে কেন? আপাতত এসব বিষয় বাদ দিয়ে হাতে একটা রিং বক্স নিয়ে স্টেজে উঠে শ্রেয়ার সামনে ধরলো সেটা ৷ তারপর ইশারা করে রিংটা নিতে বললো ওকে ৷ শ্রেয়া রিংটা হাতে নিয়ে চারপাশে তাকাতে লাগলো বারবার ৷ কিন্তু কাউকেই পাচ্ছে না ৷ তাহলে ওর মন কেন এতো টানছে? কেন এতো ছটফট করছে?
অরূপ আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না ৷ হনহনিয়ে বাড়ির বাইরের দিকে চলে এলো ৷ গোলাপ ফুল দিয়ে সাজানো গেইট টায় হাত দিয়ে জোরে চেপে ধরলো ৷ গোলাপের কাঁটায় অরূপের হাত কেঁটে রক্ত পরছে ৷ ও আরো জোরে চেপে ধরলো ৷ ওর ইচ্ছা করছে নিজেকে ক্ষত বিক্ষত করে দিতে ৷ ওর একটা ভুলের শাস্তি শ্রেয়া কেন ওকে এভাবে দিচ্ছে? এতো বড় ভুল করে ফেলেছে ও? যেটা ক্ষমার অযোগ্য?
দ্রুত গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো ৷ গাড়ির গ্লাসে কয়েক বার হাত দিয়ে ঘুষি দিতে লাগলো ৷ তবুও রাগটা কমাতে পারলো না ৷ রক্তাত্ত হাত দিয়ে নিজের মাথাটা চেপে ধরে বলে উঠলো,,,,,,,,,,
“কেন শ্রেয়া কেন? এতোটাই ঘৃনা করো আমাকে? এই একবছর তো দূরে থেকেছো অামার থেকে আবারও দূরে যাওয়ার চেষ্টা কেন করছো? একটা সুযোগ কি দেবে না আমায়? মানুষ তো ভুল থেকেই শিক্ষা নেয় ৷ আমিও নিয়েছি ৷ অতীতকে ভুলে কি আমার কাছে ফিরে আসা যায় না? এতোটাই খারাপ আমি?”
৷
৷
৷
৷
তুহিনের হাতে আংটিটা পরিয়ে দিয়ে আমি সোজা স্টেজ থেকে নেমে বাহিরের দিকে চলে গেলাম ৷ পিছন থেকে কেউ ডাকলেও শুনলাম না আমি ৷ দৌঁড়ে বাহিরের দিকে চলে এলাম ৷ তখনি আমার চোখ গেলো একটা ধবধবে সাদা রঙের গাড়ির দিকে ৷ গাড়ির ভিতরে কেউ একজন আছে ৷ কিন্তু কে আছে সেটাই দেখতে পারছি না ৷ আমি ছুটে চলে গেলাম সেদিকে ৷ গাড়িটা ধরবো এমন সময় গাড়িটা সামনের দিকে এগিয়ে গেল আমাকে ফেলেই ৷ আমি সেটার পিছনে দৌঁড়ে গেলাম ৷ কিন্তু মাঝরাস্তায় হোঁচট খেয়ে পরে গেলাম ৷ আর গাড়িটা আমার চোখের আড়াল হয়ে গেল ৷
তখনি চিল্লিয়ে বলে উঠলাম,,,,,,,,,,
“অরূপ যাবেন না ৷ আপনি এসেছিলেন সেটা জানি আমি ৷ প্লিজ আমাকে না নিয়ে যাবেন না…”
বলেই সঙ্গে সঙ্গে মাথায় হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে ‘আহ’ করে উঠলো শ্রেয়া ৷ তুহিন ছুটে চলে এলো শ্রেয়ার কাছে ৷ ওর পিছে পিছে বাড়ির সবাইও চলে এলো ৷ তুহিন শ্রেয়া মাথাটা নিজের বুকে চেপে ধরে শ্রেয়ার গালে হালকা থাবা দিতে দিতে বলে উঠলো,,,,,,
“এই শ্রেয়া কি হলো তোমার? এরকম করছো কেন তুমি? শ্রেয়া?”
শ্রেয়া মাথায় হাত দিয়ে আবারো চিৎকার করে উঠলো ৷ চোখের কোণ বেয়ে পরতে লাগলো নোনা পানির কণা ৷ চোখ খুলার চেষ্টা করেও চোখ খুলে রাখতে পারলো না ৷ সমস্ত ভার ছেড়ে দিল তুহিনের উপর ৷ তুহিন দু হাতে শ্রেয়াকে আগলে নিয়ে পাগলের মতো একেকজনকে ডাক্তার ডাকতে বললো ৷
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
(সবাই বলছেন নায়কের সাথে নায়িকার মিল হবে আমি কিন্তু এখনো শিওরলি বলি নি এখানে আসলে কে নায়ক😑শুধু এটুকু বলছি এই গল্পে নায়ক দুজন আর নায়িকা একজন ৷ আর গল্পে কার সাথে কার মিল হবে সেটাও বলতে পারবো না এখন ৷ কিন্তু সবাই যেই পরিমানে চাপ দিচ্ছেন এখন তো মনে হচ্ছে শ্রেয়াকে দুজনের হাতেই তুলে দিতে হবে😐আরেকটা কথা বলে রাখি যারা এখন অরূপের উপর রেগে আছেন তারাই একদিন অরূপের জন্য কষ্ট পাবেন ৷ আর আজকের পর্ব ছোট হওয়ার জন্য সরি🙂)
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,