#পর্ব_৭
গল্পঃ #ভালোবেসে_মরেছি🍂❣
writer: #Ashura_Akter_Anu
_____________________
টেবিলে রাখা কফির কাপটা হাতের হালকা ধাক্কায় গরিয়ে পরলো। এতে অর্নবের কোলে থাকা ল্যাপটপের ওপর অনেকটা কফি পড়ে গেল। হচকচিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে দাড়িয়ে পড়লো সে। ল্যাপটপের ওপর অনেকটা কফি পড়ে যাওয়ায় তা অন হচ্ছিল না। এতে অর্নব মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো।
ভার্সিটির বসন্ত উৎসবের জন্য রাত জেগে অনেকটা কষ্ট করে অডিটোরিয়াম সাজানোর প্লান করেছিল ল্যাপটপে। এখন যদি সেই ল্যাপটপই নষ্ট হয়ে যায় তাহলে কি করে হবে?
বেড এর ওপর বসে নিজের চুল একটা একটা করে ছিড়তে ইচ্ছে করছে তার। টেবিলের ওপর থাকা সমস্ত কাগজপত্র হাত দিয়ে টান মেরে ফেলে দিল সে।বিছানে থেকে মোবাইলটা হাতে তুলে নিয়ে একজনকে ফোন দিলো। “আজ বিকেলের মাঝেই আমার সব রেডি চাই” বলেই আবার ফোনটা কেটে দিল। এছাড়া অর্নবের কাছে আর কেন উপায় নেই। কালকেই অনুষ্ঠান। এই উপায় ছাড়া কালকের মধ্যে কিছুরই অ্যারেন্জমেন্ট করতে পারা যাবেনা।
কিন্তু ওদিকে যে মিহু ওর দলবল নিয়ে সবকিচু কমপ্লিট করছে তা ওনার জানা নেই।
*
সকাল থেকে বিকেল হয়ে গেছে মিহু ও তার দলবল মিলে সবকিছু সাজাচ্ছে। অর্নবের ডাকা লোকজন এসেছিল তবে মিহুই ওদের তাড়িয়ে দিয়েছে।
সবকিছু গোছগাছ করা হয়ে গেলে পুরোটা অডিটোরিয়াম দেখতে অসাধারন লাগছে। বাকি সব টুকটাক কাজ সেরে সন্ধ্যার দিকে ওরা সবাই বাড়ি ফেরে।
অর্নবকে এখন অনেকটা রিল্যাক্স লাগছে। ভার্সিটিতে খোজ নিয়েছিল, কাজ শেষ এটা জানার পর আর অন্য কোন খোজ নেয়নি।প্রয়োজনও মনে করেনি সে।
কাজ করতে করতে হাত পা অবশ হয়ে পরেছে মিহুর। বাসায় ফেরার পর শুধু ড্রেস চেইঞ্জ করে সেই যে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছে আর ওঠেনি৷ খুব আরাম করে ঘুমোচ্ছে মিহু। তবে কাল যে ওর সাথে কি হতে চলেছে তা ও নিজেও জানেনা।
[কারন যাই ঘটবে তা তো আমিই ঘটাবো, কি বলেন?]
_____________________
নীল রংয়ের একটা পান্জাবি সাদা গ্যাবাটিন প্যান্ট,বা হাতে ঘড়ির বদলে একটা কালো ফিতা,চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করা। সব মিলিয়ে অর্নব আজকে সব মেয়েকে মেরেই ফেলবে নিজের লুক দিয়ে, এমন লাগছে। এমনিতেও ভার্সিটির প্রতিটা মেয়েই অর্নব স্যার বলতে পাগল৷ কিন্তু অর্নব স্যার কারও সাথে সেরকম কথা না বলায় কোন মেয়ে লাইন মারার চান্স পায়না বললেই চলে।
সেখানে মিহু একমাত্র মেয়ে যাকে অর্নবের অনেকটা জেনুইন লেগেছিল। যে কারনে নিজে থেকেই মিহুর সাথে হালকা কথা বলেছিল।
মিহুর সাথে ভাব জমাতে নয়, আসলে এটা বুঝতে সবাই কেন রুপের পেছনে ছুটে নিজের ব্যক্তিত্বটা ছোট করে ফেলে।
সে যাই হোক মিহুর সাথে সেদিন হালকা মনমালিন্য হওয়ায় খারাপ লাগলেও দুঃখ পাচ্ছিল না অর্নব। এটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার তাই কিছু মনে করার নেই।
গাড়ি থেকে নেমে যেই না একটু পা ফেলতে যাবে ঠিক তখনি ভার্সিটির বারান্দা ও মাঠের মাঝে অবস্থান করা সব মেয়েরা তাকে ঘিরে ধরে। কাছে এসে সবাই চিল্লাচিল্লি করাতে অর্নবের ভীষন রাগতো হচ্ছেই সাথে বিরক্তিটাও হচ্ছে। রাগকে কন্ট্রোল করতে না পেরে সবার উদ্দেশ্য জোরে একটা ধমক দিয়ে দেয়। সাথে সাথে সবাই চুপ।
মেয়েদের ভীড়ের থেকে খানিকটা দূর দিয়ে একটা মেয়ে ওদের দিকে তাকাচ্ছিল। মাথায় একটা ফুলের টায়রা।বাসন্তী রংয়ের শাড়ী,হাতে সব রংয়ের মিশ্রনের রেশমী চুড়ি কপালে ছোট্ট একটা কালো টিপ,ঠোটে হালকা লাল রংয়ের লিপস্টিক।সব মিলিয়ে যেন একটা স্বপ্নের রাজকুমারী হেটে যাচ্ছে। অর্নবের খেয়াল সেদিকে হতেই যেন ভাষা হারিয়ে যায়।।
সে তো মিহু।
তবে মিহুকে এই বাসন্তী রংয়ের শাড়ীটাতে দেখতে দারুন লাগছে।।
অর্নবের কেন যানি মনে হচ্ছে ওর সবচেয়ে অপছন্দের রংটিও আজকে সেই পারফেক্ট কাউকে পেয়েছে।
অর্নবের অপছন্দের রং বাসন্তী কেন যেনো আজ খুবই ভালোলাগছে।
.
.
.
.
#চলবে___
.
.
.
★