#মনের_গভীরে_তুমি❤
#পর্ব_০৪
#M_Marufa_Yasmin
আরাভ এর কথা শুনে টিপ খুব ভয় পেয়ে গেলো।মনে মনে টিপ বলছে …
—“না না এভাবে হারলে হবে না স্যার কিছু বললে আমি ও বলবো হু আমার নাম টিপ! টিপ কাওকে কে ভয় পাই না ।
আরাভ টিপ কে ভাবতে দেখে বলল
—” ওই কি এত ভাবছো? এত ভেবে কিছু হবে না শান্তি পেতে হবে মানে হবে ।চুপচাপ দুশোবার কান ধরে উঠবস করো ।
টিপ হা হয়ে তাকিয়ে বলল …
—“কিহহহহহ দুশোবার আমি পারবো না ।
—“পারবে, ! চুপচাপ শুরু করো ।
—” আপনার মতো রাক্ষস কে আমি ভয় পাই না।
—“তোমার মতো প্রেত্নী আমাকে ভয় করবে না এটা তো স্বাভাবিক ।
—“কিহহ আমি প্রেত্নী ।আপনি কি? আপনি তো রেড পান্ডা, আফ্রিকার লাল বান্দর ।
—“কিহ তাহলে তুমি কি? তার ছেঁড়া মেয়ে একটা।
—“কি আমি তার ছেঁড়া তাহলে আপনি কি কালো ভল্লুক ।
—“খুব বাড়াবাড়ি হচ্ছে কিন্তু ।
—“কম বাড়াবাড়ি হচ্ছে ।
—“তোমাকে তো …
—“আমাকে তো কি বলুন ।
—“ধ্যাত ভালো লাগে না ।
বলে অন্যদিকে মুখ করে নিলো ।
টিপ ও অন্য দিকে মুখ করে নিলো ।
টিপ সোফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে ।
সকাল বেলা ।
আজকের দিনটা খুব সুন্দর আকাশ মেঘলা।মনে হচ্ছে এখনি বৃষ্টি নামবে অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে।
সূর্য এর দেখা নাই।পুরো আকাশ ঘন মেঘে ঢেকে গেছে।আরাভ চোখ খুলে দেখে চারিদিক অন্ধকার।
মনে মনে বলছে
—“আমি তো রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম এখনো সকাল হয়নি।মনে হয় এটা বিকাল ।ধ্যাত কিসব ভাবছি কনফিউজড হয়ে যাচ্ছি ।তার থেকে ভালো ঘড়িটা দেখি ।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে দশটা বাজছে।ঘড়ি দেখতে দেখতে হঠাত দরজার দিকে চোখ যায়।টিপ চা নিয়ে রুমে ঢুকছে ।ভিজে চুল ছাড়া আছে ।একটা ব্লু সুতির শাড়ি পরে আছে আঁচলটা কোমরে বাঁধা।হালকা লিপস্টিক।হালকা কাজল। সোনার একটা কানের।গলায় একটা সুরু চেন ।কপালে লাল একটা টিপ ‘
গলায় হালকা হালকা পানির বিন্দু লেখে আছে।মনে হয় কিছুক্ষন আগে গোসল করেছে।
আরাভ হা করে তাকিয়ে আছে টিপের দিকে টিপ চায়ের কাপটা টেবিলে রেখে ভুরু কুঁচকে কোমরে হাত দিয়ে ।
আরাভের দিকে তাকিয়ে বলল …
—“ও ভাবে কি দেখছেন?
আরাভ ঘোর থেকে বেরিয়ে বলল
—” বাবা গন্ডি মেয়ে এত সংসারী কবে হলো? মানে আমি স্বপ্ন দেখছি না তো?
—“স্যার খুব খারাপ হচ্ছে কিন্তু ।চুপচাপ চা খেয়ে নিচে আসেন ।
—“ওকে ।
টিপ চলে যেতে আরাভ হাসতে লাগল ।ফ্রেশ হয়ে একটা ব্লু টি সার্ট পরে নিচে গেলো।
গিয়ে দেখে টিপ সবাই কে ব্রেকফাস্ট দিচ্ছে । আরাভ টিপ কে দেখে অবাক এর ওপর অবাক হচ্ছে ।
আরাভ কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ওর আব্বু বলল
—“আরাভ তুই ওখানে কেনো খাবি না? আয় এখানে ।
—“হুম আব্বু ।
ইমরান চৌধুরী কাজের জন্য আরাভের সাথে বকবক করতে লাগলেন ।কেয়া এখনো খেতে আসেনি তার বর ও আসেনি।ইশরাত চৌধুরী তো বারবার টিপ কে কথা শোনাচ্ছে কিন্তু টিপ কিছু না বলে চুপ আছে ।কিছুক্ষন পর কেয়া ও তার বর রনিত এলো।টেবিলে টিপ কে দেখে বলল …
—” এখন এই মেয়েটার সাথে এক টেবিলে আমাকে খেতে হবে নো নেভার আমি ওর সাথে এক টেবিলে খাবো না ।
আরাভ রেগে বলল …
—“দি তোর প্রবলেম কেনো এতো টিপ কে নিয়ে ।কি করেছে ও?
ইশরাত চৌধুরী মেয়ের না খাবার কথা শুনে বলল
—“যার জন্য আমার মেয়ে খাবে না বলছে। তার সাথে আমি ও খেতে পারবো না।
বলে উঠে যায় ।
—“মা তোমাকে এত বোঝানোর পর ও তোমাদের আর কিছু বলার নেই ।
আরাভ হাত মুঠো করে চুপ করে আছে ।এবার ইমরান চৌধুরী রেগে গিয়ে বলল
—” টিপ আমার বউমা এই বাড়ির বউ ।কেয়া ও তোর ভাই এর বউ তুই ওর সাথে এভাবে কথা বলতে পারিস না ।
—” ভাই এর বউ? My foot
টিপ ছলছল চোখে টেবিল থেকে উঠে বলল ..
—“কেয়া দি আমি উঠে যাচ্ছি তুমি বসো ।
কেয়া রেগে বলল ।
—“কে তোমার দি আমি তোমার দি না বুঝেছো তোমার কোনো যোগ্যতা নেয়।আমাকে দি বলার ।
টিপ উঠে চলে যায় ।টিপ কে উঠে যেতে দেখে আরাভ উঠে চলে যায়। একে একে ইমরান চৌধুরী ও ইশরা ও চলে যায়।আরাভ রুমে গিয়ে দেখে টিপ বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে হাওয়াতে টিপের চুল গুলো ভাসছে। শাড়ির আঁচল টাও হালকা হালকা দুলছে ।আরাভ গিয়ে পেছন থেকে বলল …
—“সরি টিপ আমার ফ্যামিলির হয়ে তোমার কাছ থেকে ক্ষমা চাইছি ।জানি তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে।আর কষ্ট হওয়ারই কথা।আমার মা বোন তোমার সাথে যা করছে, ,,ছি আমি খুবই লজ্জিত টিপ প্লিজ ।
টিপ আরাভের দিকে ঘুরে বলল …
—“স্যার কি করছেন আপনি ।আমি মোটেও কষ্ট পাইনি।দেখুন আমি হাসছি ।আমার এসব শুনে অভ্যাস আছে ।আপনি প্লিজ এমন করবেন না ।
আরাভ টিপের দিকে একভাবে তাকিয়ে থেকে বলল ….
—“এসো আমার সাথে ।
টিপ অবাক চোখে তাকিয়ে বলল …
—“কোথায়?
—“আরে এসো না ।
আরাভ টানতে টানতে টিপ কে নিয়ে গেলো।গাড়িতে উঠে টিপ আবার বলল
—“স্যার আমরা কোথায় যাচ্ছি?
—“চুপ করে থাকো না ।
—“ওকে ।
টিপ লক্ষী মেয়ের মতো বসে থাকলো ।কিছুক্ষন পর আরাভ টিপ কে হাওড়া ব্রিজের নিচে নিয়ে এলো গঙ্গা নদীর তীরে।দারুন হাওয়া দিচ্ছে।এক অন্যরকম দৃশ্য। আরাভ টিপের হাত ধরে নিজের পাশে বসিয়ে দিল। আর বলল …
—“দেখো কি সুন্দর ।
—“হুম ।
জল জাহাজ এর ওপর থেকে কেও দূরবীন দিয়ে টিপ কে দেখছে।আর বলছে ….
—“wow পরি তুমি এখানে? আজ আমি যে তোমাকে দেখে পাগল হয়ে গেলাম তোমাকে আবার দেখতে পাবো কোনোদিন ভাবিনি।
কিন্তু তোমার পাশে ওটা কে? যেই হোক না কেনো তুমি শুধু আমার পরি।তোমার আর আমার মাঝে কেও আসতে পারবে না।
মনে মনে ভাবছে কথা গুলো ।পেছন থেকে কেও এসে বলল …
—“স্যার আপনার ডুবাই যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট হয়ে গেছে ।আর ডুবাইতে একটা ঝামেলা হয়েছে।
আপনাকে যেতে হবে ।
—“না ওটা নিক কে সামলে নিতে বলো।আর নিক কে ফোন করে বলে দাও ।আমার যেতে এখন দেরী হবে ।আর সোনা বৃষ্টি হবে জাহাজ নদীর তীরে নিয়ে যাও আমি হোটেলে যাবো ।
–“ওকে স্যার ।
মেয়েটি চলে গেলো ।
এই দুপুর বেলা মেঘলা আকাশে কালোঘন মেঘ আছে তবে এখনো বৃষ্টি হয়নি।হবো হবো করছে ।হঠাত খুব জোরে বৃষ্টি নামলো।আরাভ টিপের হাত ধরে একটা বড়ো গাছের নিচে গেলো।টিপ আর আরাভ পুরো ভিজে গেছে টিপ চুল গুলো হাত দিয়ে ছেড়ে নিচ্ছে। আরাভের চুল গুলো বেয়ে এক ফোট দুই ফোটে করে পানি পরছে।টিপ আরাভের দিকে তাকিয়ে বলল
—“স্যার এবার বাড়ি চলুন ।
—“তোমার মন ভালো হয়েছে?
—“হুম হয়েছে ।
—“চলো কিছু খাবো আগে তারপর বাড়ি যাবো ।
—“আচ্ছা ।
টিপ যেতে নেয় ওমনি পরে যেতেই আরাভ পেছন থেকে টিনের কোমর ধরে ওকে পড়া থেকে ধরে নেয়।টিপ হাতের স্পর্শ পেয়ে শিউরে উঠলো।আরাভ হাতটা ছট করে সরিয়ে নিয়ে বলল
—“দেখে চলো ।
—“হুম ।
*
*
*
*
বাকি
(