মনের_গভীরে_তুমি পর্ব শেষ

#মনের_গভীরে_তুমি❤
#পর্ব_১৫শেষ
#M_Marufa_Yasmin

মইন খান টিপের মুখটা খুলে দেয়।টিপ চেঁচিয়ে বলল

—” আপনি একটা শয়তান।ছি আপনার মতো মানুষ কে বাবা কত ভালোবাসতো আর আপনি! কি ভেবেছেন আরাভের থেকে আমাকে দূরে করলে আমি আপনাকে ভালোবাসবো কখনো না।
আপনি আমাকে কখনো পাবেন না ।

মইন খান রেগে টিপ কে একচর মারে।আর চেঁচিয়ে বলতে লাগল
—” তুমি ভালো না বাসলেও আমি তোমাকে ভালোবাসি।আর তোমাকে আমি আমার করেই ছাড়বো ।

—“সে আশা আপনার পূর্ণ হবে না।আরাভ আমাকে ঠিক খুঁজে বের করবে।

—“দেখায় যাক ।
তখনই একজন রুমে প্রবেশ করলো

—“দা ভাই তোমাকে তো বলেছিলাম এই মেয়েকে মেরে দাও ।মারলে না কেনো?

টিপ অবাক হয়ে সামনের দিকে তাকালো
—“মিরা তুই!

—“হ্যা আমি তোর ওপর প্রতিশোধ নাওয়ার জন্য দা ভাইকে তোর বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম।কিন্তু দা ভাই তোকে ভালোবাসে।তাই মারেনি।কিন্তু আরাভ আর তোদের সন্তান কে ঠিক মারবো ।

—“না এটা হতে দেবো না ।

দুই ভাই বোন জোরে জোরে হাসতে লাগল ।
ওদিকে নিক আরাভ কে সব বলে ।

—“আরাভ আমি জানি দা ভাই টিপ কে কোথাও লুকিয়ে রেখেছে ।কারন দা ভাই টিপ কে ভালোবাসে।

—“এইসব কি বলছো তুমি? যা বলছো সব সত্যি?

—“হ্যা আরাভ সব সত্যি ।

—” তুমি জানো মইন টিপ কে কোথায় লুকিয়ে রেখেছে?

—“হয়তো জানি তবে আমাদের সাবধানে যেতে হবে ।

এই কয়দিন ইশরা নিথি কে সামলেছে ছোট্ট শিশুটি মা ছাড়া বড্ড অসহায়।

****

মইন এর বাংলো তে।
মইন খান টিপ কে নানারকম করে অত্যাচার করছে।

—” জানো আমি তোমার জন্য সব করতে পারি শুধু একবার বলো ভালোবাসো।

—“ভালোবাসা জোর করে পাওয়া যাই না বুঝেছিস! আর তোর মতো শয়তান কে আমি কখনো ভালোবাসবো না ।

মইন খান রেগে টিপ কে জোরে চর মারে ।
আর চেঁচিয়ে বলল
—“তুমি একদম চুপ করো তুমি জানো আমি তোমাকে কত ভালোবাসি কেনো বোঝো না ।
টিপ কাঁদতে থাকে।

অন্য দিকে নিক আরাভ আর আর্য বাংলোর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।বাংলোটা একটা বড়ো নদীর তীরে জোরে বাতাস দিচ্ছে আর নারকেল গাছ গুলো বাতাসে দুলছে।তিন জোন একটা জঙ্গল এর ভেতর লুকিয়ে আছে। বাংলোর বাইরে অনেক গুণ্ডা লোক দাঁড়িয়ে হাতে বন্দুক নিয়ে।

—“নিক আমরা ঢুকবো কেমন করে? এখানে তো অনেক গার্ড।

—” আরাভ আমি ও সেটাই ভাবছি।

ভেতরে টিপের বাঁধন খুলে মইন খান টিপ কে খাইয়ে দিচ্ছে।টিপ খাবে না তাও জোর করে খাইয়ে দিচ্ছে।
টিপ মইন খান কে ধাক্কা মেরে বাইরে পালিয়ে যায়।একদম নদীর তীরে।দৌড়ে যাচ্ছে।পেছনে মইন খান আর তার লোক।মইন খান দৌড়ে গিয়ে টিপ কে ধরে ফেলে ।
টিপ তাও নিজেকে মইন খানের হাত থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে।মিরা এসে টিপ কে চর মারে সেটা দেখে মইন খান প্রচন্ড রেগে যায়।আর মিরা কে চর মারে
মিরা রাগে চেঁচিয়ে বলল

—“দা ভাই তুমি আমাকে মারলে? তাও আবার এই মেয়ের জন্য?

—“তোর সাহস কি করে আমার কলিজা কে চর মারার।ভুলেও আর কোনোদিন এই ভুল করবি না ।

—“ঠিক আছে দা ভাই ।
এই সুযোগে টিপ মইন খানের কোমর থেকে রিভলভারটা বের করে মিরা আর মইন খানের দিকে তাক করে বলল

—“এগোবেন না ।না হলে আমি কিন্তু গুলি চালিয়ে দেবো।আপনার লোকদের কে যেতে বলুন! বলুন!

—“ওকে ওকে ।
মইন খান লোকদের ইশারা করে চলে যেতে বলল

—“টিপ দেখো ওটা ফেলে দাও ।

—” না তোর মতো ক্রিমিনাল দের বেঁচে থাকার অধিকার নেয়।আজ আমি তোদের মারবো।
অনেক কষ্ট দিয়েছিস তোরা দুজন ভাইবোন মিলে।কেয়া দি কে মেরেছিস ।

—“কেয়া তোমাকে সিঁড়ি থেকে ফেলে দিয়েছিল তাই মেরেছি ।

পেছন থেকে আর্য আরাভ নিক ছুটে আসছে ।
তার আগেই টিপ দুজন কে গুলি করে দেয়।গুলিটা মইন খানের বুকে একেবারে ।আর মিরার কপালে দুজনে মাটিতে পরে যাই।টিপ ধপপ করে বসে পড়ে।আর চেঁচিয়ে কাঁদতে লাগে।আরাভ এসে টিপ কে জড়িয়ে ধরে বলল

—“এটা কি করলে টিপ? তোদের মেরে দিলে ।

টিপ কান্না করছে।নিক ও কান্না করছে ।
আরাভরা পুলিশ নিয়ে এসেছিল।আগে থেকেই পুলিশ টিপ কে এইসব করতে দেখল।তাই এসে গ্রেফতার করলো।
মইন খান একজন বড়ো অপরাধী ছিল।আর টিপ তাকে মেরেছে তাই টিপের সাজা পাঁচ বছর জেল।
টিপ জেলে।আরাভ নিজের মধ্যে নেয় কেমন পাগল পাগল।

পাঁচ বছর পর **********

আজ টিপ জেল থেকে বের হচ্ছে।আরাভ টিপ কে আনতে গেছে।গাড়ি নিয়ে জেল এর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।তখনই একজন লাল শাড়ি পরে দরজা থেকে বেরিয়ে আরাভের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল ।ছুটে এসে আরাভ কে জড়িয়ে ধরলো।

—“টিপ!

—“আরাভ!

দুজন দুজনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে।কতদিন পর দুটি ভালোবাসার মানুষ মিলেছে।টিপ আরাভ কে ছেড়ে বলল

—“আমাদের মেয়ে নিথি কই?

—“তুমি আগে বাড়ি চলো তারপর সব বলব।

—“আচ্ছা চলুন!

আরাভ টিপ কে বাড়ি নিয়ে যায়।বাড়িটা অনেক পাল্টে গেছে ইশরা শাড়ি চুরি পরে আছে বিয়ে হয়ে গিয়েছে।আবিরের সাথে আর্য ও বিয়ে করেছে।ইশরাত চৌধুরী চোখে চশমা পরেছে।ইমরান চৌধুরী সোফায় বসে আছে ।টিপ গিয়ে তার মা কে জড়িয়ে ধরল।সবার সাথে কথা বলল

—“আচ্ছা আমার মেয়ে কই?

সবাই চুপ
—“কি হলো তোমরা সবাই চুপ কেনো নিথি কই?

আরাভ মুখটা কালো করে বলল

—“তুমি চলে যাওয়ার পর। নিথি চুরি হয়ে যায়।সবাই কেমন জেনো হয়ে গিয়েছিল।ইশরা নিথির জন্য নিচে খাবার আনতে এসেছিল ওপরে গিয়ে দেখে নিথি নেয়।অনেক খুঁজেছি পাইনি।

—“নাহহহহহহ এটা হতে পারে, না তোমরা মিথ্যা বলছো।আমার মেয়ে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে আমি বিশ্বাস করি না ।

টিপ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ।
সন্ধ্যা বেলা যখন টিপের জ্ঞান ফিরলো।তখন দেখল সে তার রুমে।বারান্দায় আরাভ দাঁড়িয়ে আছে টিপ গিয়ে পেছন থেকে আরাভ কে জড়িয়ে ধরল ।আরাভ টিপ কে নিজের দিকে ঘুরিযে জড়িয়ে ধরল।আর বলল

—“টিপ আমাকে ক্ষমা করে দাও।

—” এইরকম বলবেন না।আমাদের ভাগ্য যা ছিল তাই হয়েছে।

—“ভালোবাসি আজ ও।

—“আমি ও।
*
*
*
*
সমাপ্ত

(শরীর খারাপ এর জন্য দিতে পারিনি ক্ষমা করবেন ।গল্পটা ছোট্ট পর্বের মধ্যে শেষ করলাম শরীর খারাপ তাই।কেমন লাগল জানাবেন আর আজ অন্তত গঠনমূলক কমেন্ট করুন।আপনারা চাইলে এটার সিজন টু দিতে পারি তবে নতুন গল্প নিয়ে আবার ফিরবো ইনশাল্লাহ )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here