#মন_গহীনে
#পর্বঃ১৩
#দোলন_আফরোজ
ট্রিপল সোফায় বসেছে আবিরের মা মাহি আর চাচী। ওর পাশের পাশের দুটো সিংগেল সোফাতে পর পর বসেছে আবিরের বাবা ও চাচা। সাইডের ডাবল সোফাতে আবির আর পিয়াস। আবিরের সাথেই সোফার হাতলে বসেছে কাব্য। আবিরের বোন আঁখি আর দোলাভাই আরেকটা ডাবল সোফাতে বসেছে।
মেয়ের বাবা সামনের একটা ডিভানে বসেছেন। মা নাস্তা দেয়াতে ব্যস্ত।
হালকা পাতলা নাস্তা খাওয়ার পর আহনাফ সাহেব বলেন ভাই সাহেব মামনি কে আনার ব্যবস্থা যদি করতেন। তখন মেয়ের বাবা উঠে মেয়ের মাকে গিয়ে বলে মেয়েকে আনতে।
এদিকে আবির বার বার ঘামছে। একটা রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম গুলা মুছে নিয়ে আবির ভাবছে বাবা তুমি যা ভাবছো তা কখনো ই হতে পারে না। আমি বিয়ে করতেই পারবো না।
তখন ওখানে মেয়েকে আনা হয়। দুটো মেয়ে দুই পাশে। পাত্রী মাঝখানে। মেয়েকে আসতে দেখে মেয়ের বাবা বলে এদিকে এসো মা। বলতেই সবাই এক সাথে মেয়ের দিকে তাকায়। কি মনে করে আবিরের ও চোখ চলে যায় সেদিকে। আবির তো পুরাই হা হয়ে আছে।
এতো তমা।😯
সে অবাক হয়ে একবার কাব্যর দিকে আরেকবার তার বাবা মার দিকে তাকাচ্ছে। চোখ দুটো ডলে আবারো দেখলো সে কি ঠিক দেখছে নাকি। হুম ঠিক ই তো দেখছে, এতো তমা ই। সাথে সাথে ওর লেডি ভিলেন বোন টা।
আবিরের কান্ড দেখে ওর বাবা মা চাচা চাচী মুখ টিপে হাসছে। কাব্য নরমালি হাসে কম, তাই তার আগের ভাবমূর্তি ই বজায় আছে। কাব্যর দিকে তাকাতেই কাব্য বলে, কোনো সমস্যা? ওয়াশরুম যাবি?
কথাটা শুনে আবির কটমট করে তাকায়। তখন পিয়াস বলে মামা ওরে এতো শক না দিলেও পারতি বলে হাসা শুরু করে।
আবিরকে দেখে তিথী বড় বড় চোখ করে ফেলে। এম্মা, এ আমার জিজু হবে?🫢টুপ করেই সে তমার আড়ালে লুকিয়ে পড়ে। আসতে আসতে সে কেটে পরার ধান্দা করতেই হৃদি ওর হাত ধরে ফেলে। কিরে কই যাচ্ছিস?
তিথী একটা মেকি হাসি দিয়ে বলে, আসছি আমি হৃদিপু, তুমি যাও আপুটিকে। বলেই ও দৌঁড় লাগায় মায়ের ওখানে কিচেনে। মা বুঝতে পেরে কিছু বলেন না।
তমা আসতেই ওর বাবা হাত বাড়িয়ে বলে আমার কাছে বসো। বলে উনার সাথে ডিভানে বসিয়ে দেন।
তমা সবাইকে সালাম দিয়ে ওর বাবার পাশে গিয়ে বসে।এতোক্ষণে তানিয়া বেগম ও ওখানে এসে উপস্থিত হন।
আবিরের মা তমাকে বলে তুমি আমার কাছে এসে বসো মা। বলে হাত বাড়িয়ে দেয় তমার দিকে। মাহি উঠে গিয়ে কাব্য পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। কাব্য এক নজর বিরক্তির সাথে তাকিয়ে আবার চোখ ঘুড়িয়ে নেয়।
আবিরের মা তমার চিবুকে ধরে মুখ টা তুলে বলেন মাশাল্লাহ, আমার বউ মা তো অনেক সুন্দর।
তমার ফর্সা মুখ টা নিমিষেই রক্তিম বর্ণ ধারণ করে বউ মা কথাটা শুনার পর। কিসে পড়েন কি সাবজেক্ট নিয়ে এগুলো কিছু স্বাভাবিক প্রশ্ন করেন তিনি। আহনাফ সাহেব তারেক রহমান এর সাথে কথা বলছেন। আবির হা করে তমাকেই দেখে যাচ্ছে। হালকা আকাশি রঙের একটা কাতান শাড়ি পরেছে। মাথায় ঘোমটা টানা, মুখে হালকা মেকাপ, চোখে মোটা করে কাজল দেয়া আর ঠোঁটে ম্যাট লিপস্টিক। দেখতে যেনো স্বর্গের অপ্সরি লাগছে। চোখ ফেরাতে পারছে না আবির।তার মনে হচ্ছে সে স্বপ্ন দেখছে।
আবিরের মা কথা বার্তা শেষে চাচীকে ইশারা করতেই উনি একটা বক্স বের করে আবিরের মায়ের কাছে দেন। উনি একটা ডায়মন্ড রিং বের করে তমাকে পড়িয়ে দেন সাথে একটা মোটা চেইন তমার গলায় পড়িয়ে দেন।
আহনাফ সাহেব তারেক রহমান কে বলেন, ভাই সাহেব কথা তো আমাদের আগেই হয়ে গেছে, এখন শুধু বিয়ের ডেট টা ফিক্স করবো।
তারেক রহমান বলেন আবির বাবাকে কেমন যেনো দেখাচ্ছে, ওরা আগে নিজেদের মাঝে কথা বলে নেক। আহনাফ সাহেব আর আবিরের মা ও তাতে সায় দেন। তখন তানিয়া বেগম হৃদি কে আর কাব্য কে তমাকে আর আবির কে ছাদে নিয়ে যেতে। তখন তমা হৃদি, আবির কাব্য আর পিয়াস ছাদে যায়।
পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে আবির তমা। দুজনের চুপচাপ, কেউ কোনো কথা বলছে না। আবিরের বুকের ভিতর যেনো পৃথিবীর সব সুখ এসে ধরা দিয়েছে। আর তমা লজ্জায় মাথা ই তুলতে পারছে না।
আবির ই প্রথম কথা বল্লো, তুমি কি আমায় বিয়ে করতে চাও?
আব্বু আম্মু তাই চায়।
উহুম, আমি আব্বু আম্মুর কথা জানতে চাইনি। তোমার কথা জানতে চাইছি।
——–
কিছু বলো তমা। আমার বুকের ভিতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। তোমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কি উনারা বিয়ে দিতে চাইছেন??
তমা মাথাটা দুদিকে নাড়ায়।
আবিরের অধর কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠে। তুমি কি বিয়েটা করতে চাইছো?
এবার তমা মাথাটা উপর নিয়ে নাড়ায়।
কেনো করতে চাও?
তমা চুপ।
পছন্দ করো তুমি আমায়?
এবারো চুপ।
আচ্ছা আমার যা বুঝার তা বুঝে গেছি আমি। পছন্দ করো না তুমি আমায়।গিয়ে বলছি বিয়েটা হচ্ছে না।
এবার মুখ খুলে বলে, পছন্দ করি তো।
আবির যেনো পৃথিবীটা হাতে পেয়ে গেছে। সে বিশ্ব জয়ের হাসি দেয়।
হৃদি আর পিয়াস ছাদের এক পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। কাব্য ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে নিকোটিন এর ধোঁয়া ছাড়ছে। তখন আবিরের কাছে এসে দাঁড়ায় মাহি।একদম কাছ ঘেঁষে।
কি মশাই, আপনার বন্ধুর তো হিল্লে হয়ে যাচ্ছে আপনার টা কবে হবে?
কাব্য আবার তার বিখ্যাত বিরক্তিকর চাহনি টা দেয়। এসবে মাহির পাত্তা দেয়ার টাইম নাই। সে আজকের মতো সুযোগ আর পাবে না। তাই এই সুযোগ সে কিছুতেই মিস করতে চায় না।
মাহি একদম কাব্য মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, চোখে চোখ রেখে বলে ভালোবাসি, সেই স্কুল লাইফ থেকে ভালোবাসি আপনাকে।
জোর পূর্বক হাসি দেয় কাব্য। তারও আগে থেকে আমি কাউকে ভালোবাসি, বুকের বা পাশটায় হাত রেখে, এখানে ১৬ বছর থেকে একজন ই কাবু করে বসে আছে।
সেই সময় তিথী আসে ছাদে। পুরো ছাদে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। কাব্য আর মাহির মাঝে ২ইঞ্চির দূরত্ব।
কাব্য আর মাহি কে দেখে মনে মনে বলে, লোক টা আসলেই লুচু, হুহহ।
হৃদিপু, তোমাদের হলে নিচে যেতে বলেছে।
বলেই সে নিচে চলে যায়।
কাব্য একবার তিথীর দিকে আরেকবার তাদের দেখে দুকদম পিছিয়ে যায়।
সবাই নিচে আসার পর বিয়ের ডেট ঠিক করার আগে আবির বলে আমি এখন বিয়ে করতে পারবো না।
কথাটা শুনে সবাই অবাকের শীর্ষে পৌঁছে যায়। তমা চোখ তুলে দেখে আবির কে। তারেক রহমান আর তানিয়া বেগম একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করে। তিথীর অমন কান্ড ঘটানোর ফলেই হয়তো ছেলেটা বিয়ে করবে না।
মাথা নিচু করে ফেলেন উনারা।
তিথীর আর বুঝতে বাকি নেই তার জন্য ই বিয়েটা করছে না আবির।
কাব্য আবির কে বলে কি বলছিস ভেবে বলছিস তো?
হুম একদম। এখন বিয়ে করতে পারবো না আমি। আপু একটু আমার সাথে আয় বলে আঁখি কে ডেকে একপাশে নিয়ে যায়। আঁখির কানে কানে কি বলে তারপর আঁখি এসে সবাইকে হাসি মুখে বলে, বিয়ের ডেট ২ মাস পর দিলে কি খুব প্রব্লেম হবে আংকেল? তারেক রহমান কে বলে।
আসলে আমার ভাই এই দুটো মাস তার বউ এর সাথে প্রেম করতে চায়। আসলে ওর জীবনে তো কখনো প্রেম করেনি, আর বিয়ে হয়ে গেলে তো আর তা হবে না। তাই আমার ভাই তার মনের এই ইচ্ছে টা অপূর্ণ রাখতে চায় না। যদি খুব সমস্যা না হয় তবে আমরা ঠিক ২ মাস পর বিয়ের আয়োজন করি। তাই না।
আঁখির কথা শুনে সবাই হেসে দিলো। কাব্য আবিরের পিঠে চাপড় মেরে, মাম্মা তুমি তো ব্রিলিয়ান্ট।
তারেক রহমান আর তানিয়া বেগম এর কেমন যেনো খটকা লাগছে ব্যাপার টা। কাব্য কে আলাদা করে ডেকে নিয়ে কথা বলেন উনারা। কাব্য আস্বস্ত করার পর উনারাও স্বাভাবিক হন কিছুটা। তারপর বিয়ের ডেট ঠিক করা হয় ২ মাস পর।
ওরা বের হয়ে যাওয়ার আগে তিথী গিয়ে আবিরের সামনে দাঁড়ায়। আমি খুব খুব স্যরি ভাইয়া। আমাকে কি কোনো ভাবেই ক্ষমা করা যায় না? ( মুখ টা মলিন করে)
হেই তুমি আমার একমাত্র পিচ্চি শালিকা। তোমার সাথে রাগ করে থাকলে কি আমার চলবে হুম? শালি মানে আধে ঘার ওয়ালি,তুমি তো আমার আধে ঘার ওয়ালি। বলেই তিথীর মাথার চুল গুলো এলোমেলো করে দিলো।
তখন পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো কাব্য, কাব্য কে বলে আবির, তুই কি বলিস?
কি?
শালি মানে আধে ঘার ওয়ালি, তিথীতো আমার আধে ঘার ওয়ালি।
তোর টা তুই সামলা। আরেকজনকে নিয়ে টানাটানি করছিস কেনো? বলেই কাব্য চলে যায়।
যাহ বাবা এর আবার কি হলো।🙄🙄
যাই হোক শালি সাহেবা, আপনার রাগ টা একটু কমাতে হয় যে, নয়তো তো বিয়ে দিতে পারবো না।
আমি তো বিয়েই করবো না জিজু।
অপস স্যরি, আপনাকে জিজু বলেছি, রাগ করেননি তো?
আরেহ শালি সাহেবা, আমি তোমার একমাত্র দুলাভাই, যা খুশী ডাকো তুমি আমায়।
********************
নদীর পাড়ে বসে আছে আবির আর তমা। আবির মুগ্ধ হয়ে তার প্রেয়সীকে দেখছে, তমা লজ্জায় লাল হয়ে আছে। তমার এই লজ্জা রাংগা মুখ টা দেখতে আবিরের বেশ লাগে। তমাকে লজ্জায় আরো রাংগিয়ে দিতে আবির বলে লজ্জা পেলে তোমার গাল দুটো টমেটোর মতো লাগ হয়ে যায়। তখন মনে হয় সস বানিয়ে খেয়ে ফেলি। এ কথা শুনে লজ্জায় তমার মাটির নিচে চলে যেতে ইচ্ছে করছে।
এভাবে লজ্জা পেয়ো না প্রেয়সী, নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না যে।
রাস্তার পাশে বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কাব্য, তার অনেকটাই দূরে দাঁড়িয়ে আছে তিথী। সে কাব্য কে এভোয়েড করার ই ট্রাই করে যতোটা পারে। কাব্য কে ওর মোটেও সুবিধার মনে হয় না। কথা কম বললে কি হবে, তার কাছে এলে হুট হাট হাত ধরে ফেলে।এটা ওর মোটেও পছন্দ না। মা কেও বলতে পারছে সে কথাটা। কিভাবে বলবে এই লজ্জার কথা।
কিছুক্ষণ আগেও যখন দুজন একসাথে ছিলো তখন হুট করেই হাত ধরে একদম ওকে কাছে টেনে বলে তুমি কবে বড় হবে পিচ্চি, আমায় আর কতো কষ্ট দিয়ে চাও।
কি যেনো ছিলো ওই চোখে। তিথীর ভিতর টা কেমন ধুকপুক শুরু করেছিলো।অনেক কষ্টে হাত টা ছাড়িয়ে এক দৌঁড়ে ঔ দূরে গিয়ে দাঁড়ায়।
একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সিগারেট ধরিয়ে তার ধোঁয়া আকাশে ছাড়তে থাকে।অনেক তো ধৈর্য ধরেছি, আর কতো? তুমি কি সত্যিই এতোটা অবুঝ তিথী?
নাকি বুঝেও চোখ কান বন্ধ করে বসে আছো।
তিথী দাঁড়িয়ে ভাবছে কিভাবে পিছু ছাড়ানো যায় এই কাবির সিং এর। বডি গার্ড এর মতো সারাক্ষণ পিছনে পড়ে থাকে। কবে থেকে স্বাধীন ভাবে নিশ্বাস নিতে পারছিনা।
তখন ই বাইক নিয়ে যাচ্ছিলো তিনটা ছেলে, বাইক স্লো করে বলে কি আনারকলি, একা কেনো? সংগী লাগলে বলো। এই সুন্দর বিকেলে তুমি একা সুন্দরী এভাবে দাঁড়িয়ে আছো দেখতেও তো কষ্ট লাগে নাকি।
সত্যিই খুব কষ্ট লাগছে খুব?(তিথী)
এতোক্ষণে বাইক থামিয়ে নিয়েছে। তিনটা ছেলে তিথীর চারপাশে ঘুরে ঘুরে দেখছে।
রাগে তিথীর চান্দী ফেটে যাওয়ার অবস্থা।
ওফফ দেখ মাম্মা পুরাই পিংক বার্বি। মাম্মা এ তোর মামি হয় চোখ দিবি না একদম।
আরেকটা ছেলে বলে, কি বলিস মাম্মা, এক মুহূর্তে মামি বানিয়ে দিলি? আমি মামি টামি ভাবতে পারবো না। চলো ফুলটুশি তোমায় বাড়ি পৌঁছে দেয়, বলে যেই হাত বাড়াতে চাইছে ওমনি তিথী তার সর্ব শক্তি দিয়ে চড় বসিয়ে দেয়।
শা*লির তেজ দেখছোস মাম্না। তেজি মাইয়া আমার জব্বর লাগে। তোমার সাথেই খেলা জমবো ফুলটুশি।
বলেই হাত বাড়াতে নেয় তখন ই হাত টা কেউ আটকে দেয়। কোন কু*ত্তা*র বাচ্চারে!
ডোন্ট ডেয়ার টু টাচ হার। সি ইজ কাব্য”স প্রোপার্টি।
কি বলছিলি? খেলা জমবে? চল খেলি! এতোক্ষণে ছেলেটার হাতে এমন মোচড় দিয়েছে যে হাত ভেঙে যাওয়ার অবস্থা। আর কে কে খেলবি? আয়।
ওই ছেলেটা খালি বলছে ভাই ভাই মাফ কইরা দেন ভাই, আর কোনো দিন কোনো মাইয়ার দিকে তাকাইতাম না ভাই।বাকি দুইটা পায়ে পরে বলে, ভাই মাফ করে দেন ভাই। আর জীবনে এই ভুল হবে না ভাই। হাত ছেড়ে দেয় আর বলে, এই এড়িয়াতে কোন দিন যদি দেখি কি করবো আর বলা লাগবে?
না ভাই না। ছেড়ে দিতেই বাইক নিয়ে ছুট।
কাব্য শরীরের সর্ব শক্তি দিয়ে রাস্তার পাশে থাকা গাছটাই লাথি দিয়ে বলে আমার ই ভুল, কেনো তোমায় একা ছাড়লাম। বলেই হাত ধরে টেনে বাইকের কাছে নিয়ে যায়।
এখান থেকে এক পা ও নড়বানা। খুন করে দিবো একদম।
এমনিতেই তিথী ভয়ে ছিলো তার উপর কাব্যর রাগ দেখে সে ভয়ে আরো কুকিয়ে যায়। আমাকে বকছেন কেনো, কেউ বকে নাতো আমায়। ঠোঁট উলটে বলে।
হুম এই জন্যই তো মাথায় চড়ে বসছো।
এবার তিথী খুব জুড়েই কান্না করে দেয়।
এই এই স্যরি স্যরি। বলে কাছে আসতে নিলেই তিথী বলে একদম কাছে আসবেন না, আর হুটহাট হাত ধরবেন না।
দুই হাত উপরে তুলে, ওঁকে ওঁকে, কাছেও আসবো না আর ধরবো ও না। প্লিজ কান্না থামাও। আমার দুনিয়া ভেঙে আসছে।
বাসায় যাবো আমি।ফুফাতে ফুঁফাতে।
আচ্ছা। বলে আবিরকে ডেকে জিজ্ঞেস করে,, আর কতোক্ষণ?
আসছি।
সন্ধ্যার দিকে ওরা বাসায় ফিরে আসে দুটো বাইক নিয়ে।
তমার বিয়ের আর ১ সপ্তাহ বাকি। দুই বোন রাতের আকাশ দেখছে। ছাদে চন্দ্র বিলাস করছে দুজন।
আজ আর তারা গুনছে না তিথী। এইতো আর এক সপ্তাহ পর ই বোন চলে যাবে শ্বশুর বাড়ি। তখন আর থাকা হবে না এক সাথে। একসাথে গুনা হবে না আকাশের তারা।
আচ্ছা আপুটি, বিয়ের পর আর তুমি আমি এভাবে তারা গুনবো না?আগের মতো এক সাথে সময় কাটাতে পারবো না?
তমার মন টা বিষাদে ভরে যায়। চোখের পানি ছেড়ে দেয় সে।
তিথী বুঝতে পারে, এই কথাটা বলা ওর মোটেও উচিৎ হয়নি। আপুটি কষ্ট পেয়েছে।
কথা ঘুড়ানোর জন্য তিথী বলে,আপুটি তোমার ভাই টা যতই এটিটিউড নিয়ে থাকুক, উনি কিন্তু সুবিধার লোক না।
অবাক হয়ে তাকায় তমা। কি করলো আমার ভাই তোকে?
ওযে মেয়েদের দেখলে ভাব দেখায় মেয়েদের পছন্দ করে না,আসলে কিন্তু তেমন কিছু না।
এভার তমা উঠে বসে। কেনো রে কি হয়েছে।
তিথী একটা শুকনো ঢোক গিলে তার সাথে কাব্য কি কি করেছে কি কি বলেছে সব বলে।
তমা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, তাই তোর মনে হয়েছে কাব্য ভাইয়া খারাপ মানুষ।
আরেহ শুধু তাই না, জিজুর চাচাতো বোন এর সাথেও ইটিশপিটিশ করে, হুহ। আমি নিজে দেখেছি।
তমা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মনে মনে বলে তুই যদি একবার জানতিস তুই কাব্য ভাইয়ার কি!! আমার খুব ইচ্ছে হয় তোকে বলে দেই সব। কিন্তু ভাইয়া তো তোকে তার প্রেমের সমুদ্রে ভাসাতে চায়। যখন তুই ও তাকে তার মতো করে ভালোবাসবি তখন সব টা জানাবে তোকে। কিন্তু এটা বুঝতে পারছি না এখনো কেনো তার ভালোবাসার প্রকাশ টা করছে না।
কি হলো? কিছু বলছো না কেনো আপুটি?
কি বলবো? তুই আমার ভাই এর মানে বদমান করছিস।
বদনাম নাগো। সত্যি বলছি।
তমা তিথীর মাথায় গাট্টা মেরে বলে এতো সত্যি না বলে নিজের বুদ্ধিটা বাড়া। একটু বড় হওয়ার চেষ্টা কর।
মাথায় হাত দিয়ে, আমি তো বড় ই।
।
।
।
।
চলবে……