মন গহীনে পর্ব -১৪

#মন_গহীনে

#পর্বঃ১৪

#দোলন_আফরোজ

তমা আবিরের বিয়ে আর দুদিন পর। তমাদের ছোট্ট বাসাটায় মানুষ গিজগিজ করছে। আত্নিয় স্বজন এসে পরেছে সব। আগামী কাল গায়ে হলুদ। তিথীর আনন্দ যেনো আর ধরছে না। তার আপুটির বিয়ে, কত প্ল্যান করেছে এতো বছর বসে বসে এই বিয়ে নিয়ে। আর এখন সেই সময় টাই এসে গেছে। সে শুধু ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে উড়ে বেড়াচ্ছে।

কাব্য কে আগে থেকেই তানিয়া বেগম তারেক রহমান বলে রেখেছেন বিয়ের সব দায়িত্ব তার। উনাদের কোনো ছেলে নেই,সব দিক কাব্য কেই খেয়াল রাখতে হবে। তাই কাব্য ও বিয়ের শুরু থেকেই দৌঁড় ঝাপ করছে। এদিকে কাব্যর দায়িত্ব ২গুন। আবির তার কলিজার দোস্ত, ওখানে না থাকলেই নয়। তাই সে দুই যায়গায় ই দৌঁড়া দৌঁড়ি করছে।

বিয়ের আগে শপিং থেকে শুরু করে সব কিছুতেই কাব্য তারেক রহমান কে সাহায্য করছে। সেদিন যখন সবাই মিলে শপিং এ যায় তখন সে তিথীকে একটা লেহেঙ্গা গিফট করেছে আবিরের নাম করে। আবিরের নাম করে দিয়েছে বলেই তিথী আর কিছু বলেনি।কিন্তু বিপত্তি বাধে তখন যখন তিথী আবির কে ধন্যবাদ দিতে যায়। আবির তো পুরাই অবাক, সে কখন লেহেঙ্গা দিলো তিথীকে? সে বুঝতে পারে কাব্য দিয়েছে, কিন্তু কেনো দিয়েছে তা বুঝতে পারেনি।যেই কাব্য মেয়েদের থেকে ১০০ হাত দূরে থাকে সে কিনা তিথীর পিছনে বডি গার্ড এর মতো পরে আছে। কিন্তু কেনো? ভালোবাসে? অসম্ভব, সে তো তার পুতুল বউ করে করে জীবনে কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকায় ই নি।তবে?
জিজ্ঞেস ও করেছে কয়েকবার। কিন্তু সেই, কোনো উত্তর পায়নি কাব্যর কাছ থেকে।

তমাদের বাসার সামনের ফাঁকা যায়গা টায় হলুদের স্টেজ করা হচ্ছে। সেখানে তারেক রহমান এর সাথে কাব্য আর উনার ভাইয়ের ছেলেরা আছে, দেখাশোনা করছে। তিথীর নানি মামি খালারা চলে এসেছে। এসেছে ওদের ছেলেমেয়েরা। বাসায় দম ফেলার অবস্থা নেই। তিথীদের মা বাবার আর দুই বোনের রুম ছাড়াও আরো দুটো গেস্ট রুম আছে। তাই কষ্ট করে সবাই কোনো মতে রাত টা পার করে।

আজ হলুদের দিন।সন্ধ্যার দিকে হলুদের প্রোগ্রাম। কাব্য গেছে আবিরের বাসায় ওখানে আবিরের হলুদের প্রোগ্রাম শেষ করে আবিরের ছোঁয়ানো হলুদ নিয়ে আসে তমার জন্য।
এদিকে যে কাব্যর অপেক্ষায় সারাদিন বসে আছে একজন তা কি সে জানে।

ছেলেরা কাঁচা হলুদ রঙ এর পাঞ্জাবি আর মেয়েরা সেম রঙ এর শাড়ী। সন্ধ্যা হয়ে এসেছে, পার্লার থেকে লোক এসেছে তমাকে সাজাতে। সাজানো প্রায় শেষ, তিথীও পার্লার এর মেয়েদের থেকেই সেজে নিয়েছে, সাথে শাড়ী ও পরে নিয়েছে। তমা তিথীর বাকি কাজিন মেয়েরাও এখানেই সাজগোছ কমপ্লিট করেছে। কিছুক্ষণ পরেই তমাকে স্টেজ এ নেয়া হবে। তার আগে তিথীর ঘাড়ে মহা দায়িত্ব পরেছে। কাব্য কে যে করেই হোক ছাদে নিতে হবে তার। আর এই মহা দায়িত্ব টা তাকে দিয়েছে তার ই খালাতো বোন মিলা। কাল যখন এখানে এসে মিলা কাব্য কে দেখে তখনই তার তাকে পছন্দ হয়ে যায়। কাল থেকেই কয়েকবার ট্রাই করেছে কথা বলার জন্য। কিন্তু তেমন কোনো সুযোগ হয়নি। তাই বলেছে তিথীকে, কাব্য কে যেনো ছাদে নিয়ে যায়।
অসম্ভব তা আমি কি করে করবো? আমি পারবো না মিলাপু। তুমিই নিজে গিয়ে ঔ কাবির সিং এর সাথে কথা বলো।

বোন আমার, তুই আমার লক্ষি সোনা বোন না? প্লিজ, তুই শুধু যে করেই হোক ছাদে নেয়ার ব্যবস্থা কর, পরের টা আমি দেখে নিবো।
তুই তো জানিস, সেই সকাল থেকে ওর জন্য অপেক্ষা করছি, প্লিজ বোন আমার, এই সাজ যদি ওকেই না দেখাতে পারি তবে সেজে কি লাভ বলতো?

কি পেয়েছো ঔ কাবির সিং এর মাঝে? গম্ভীর একটা খারোছ টাইপ লোক।

হুম হুহ, এমন গম্ভীর পার্সোনালিটির ছেলেই তো ভাল্লাগে বইনা। যাহ তুই যখন প্রেম করবি তখন আমি হ্যাল্প করে দিবোনে, তখন শোধবোধ।

উহহ আমি প্রেম করবো তোমায় বলেছি? আম্মু ঠ্যাং ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখবে। দেখোনা আপুটিও প্রেম করতে পারেনি। তাইতো আংটি পড়ানোর পর করেছে, বলেই ফিক করে হেসে দেয়।

আচ্ছা যা তোর প্রেম করতে হবে না, আমাকে হ্যাল্প কর বইনা।

মিলাপু উনাকে আমার ভয় লাগে তো।

কি বলিস, সারাক্ষণ এক সাথে থাকিস তারপর ও ভয় পাস?🙄কই তমা তো দেখি স্বাভাবিক ই থাকে।

হুটহাট করে তো আর আপুটির হাত ধরে বসে না, একদম কাছে এসে পরে না।(মনে মনে)আরেহ কই একসাথে থাকি। কলেজে নিয়ে যায় নিয়ে আসে। তেমন কথা হয় না তো।

আচ্ছা তোর এতো কথা বলার দরকার নাই, দূরত্ব বজায় রাখা ই ভালো। প্লিজ বইনা, আমার জন্য এইটুকু কর প্লিজ।আর শোন, আমার কথা বলবি না, অন্য কিছু বলে ডেকে আনবি।

মুখ টা কালো করে, আচ্ছা, দেখছি। যেখানেই বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয়।

দেখনা তোর এই বাঘ কে আমি কিভাবে বশে আনি।বলেই একটা বাঁকা হাসি দেয় মিলা।

***************

তমাকে হলুদ দেয়ার জন্য স্টেজ এ নেয়া হয়েছে।কাব্যর উৎসুক চোখ দুটো শুধু খুজছে তার পুতুল বউ কে। আজ ই প্রথম তার পুতুল বউ কে শাড়ী তে দেখবে সে। কেমন লাগবে আমার পিচ্চি টাকে। উফফ ভাবতেই মনের মাঝে যেনো দক্ষিণা হাওয়া এসে দোলা দিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু কই আমার পিচ্চি টা? সবাই এখানে, উনি কোথায় লুকিয়ে বসে আছেন?স্টেজ এর এক কোণে দাঁড়িয়ে ভাবছিলো কাব্য।
তখন ই একটা পরিচিত গলা বলে উঠে, একটু ছাদে আসবেন প্লিজ?

পিছনে ঘুরে কাব্য তো পুরাই হা। হলুদ শাড়ী, সাথে হলুদ গাঁদা ফুল দিয়ে সেজেছে আজ তার পুতুল টা। সাথে মোটামুটি মেকাপ।মুহূর্তেই যেনো কাব্যর নেশা ধরে গেলো। সে হা হয়েই আছে। কি বলেছে তিথী তার কোনো কথাই যেনো তার কানে যায়নি, ছোট্ট করে ঢুক গিলে সে শুধু জিজ্ঞেস করে, ” হু”?

একটু ছাদে আসবেন? বলেই তিথী চলে যায়।

কাব্য বুকের বাঁ পাশটায় হাত রেখে বলে আমি কিভাবে পারবো আর অপেক্ষা করতে? কে বলেছিলো তোমায় এতো সাজতে?
পরক্ষণেই তার মনে হয় তিথী তাকে ছাদে ডেকেছে। তারমানে কি তার অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে!!মুহুর্তেই বুকের ভিতর টা প্রশান্তিতে ভরে যায়। সেও প্রফুল্ল মনে দৌঁড় লাগায় ছাদের দিকে।

বাইরে হলুদ হচ্ছে বলে পুরো বাসা ফাকা।কাব্য আর দেড়ি না করে সোজা ছাদে চলে যায়। কিন্তু ছাদে গিয়ে তার মেজাজ টা চরম লেভেলের বিগড়ে যায়। এটা কোনো কথা? সে মনে মনে কি না কি ভেবে নিয়েছিলো??
খুব রাগ আর বিরক্তি নিয়ে সে শুধু তিথীকেই খুঁজছে। স্টেজ এর কাছে এসে দেখে ম্যাডাম তো সবার সাথে আড্ডা মাস্তি তে ব্যাস্ত।
তিথীকে দেখে নিমিষেই তার রাগ যেনো গায়েব। উহুম রাগ গায়েব হলে তো হবে না, ম্যাডাম কে তো তার শাস্তি পেতেই হবে।
কাব্য সুযোগ খুঁজছে কখন তিথীকে একা পায়। একা কিভাবে পাবে সে তো আড্ডার মধ্যমনি হয়ে বসে আছে।😒

তখন তানিয়া বেগম কাব্য কে ডাকে তমাকে হলুদ ছুঁয়ানোর জন্য। তিথী তমার পাশেই বসে ছিলো। কাব্য গিয়ে তমাকে হলুদ ছুঁইয়ে আশির্বাদ করে দেয়,সুখী হও, আর আমার বন্ধু খুব ভালো মানুষ, তাকে সুখে রেখো প্লিজ। তমা ও হাসি মুখে সম্মতি জানায়। এদিকে তিথী ভেংচি কাটে কাব্য কে। তাতে কাব্যর কোনো ভাবলেশ নেই। তিথী ভেংচি কাটাতে তমা ছোটো করে তিথীর উরুতে কিল বসিয়ে দেয়।

টেবিলে মিষ্টি শেষ, তানিয়া বেগম বলেন তিথী যা তো মা, মিষ্টি নিয়ে আয়। তিথী মিষ্টি আনতে গেলে কাব্য ও সুযোগ টা পেয়ে যায়।

তিথী বাসায় ঢুকতেই কাব্য তার পিছনে গিয়ে হাজির। কাব্য কে দেখে তিথী শুকনো ঢোক গিলে।
আ আপ আপনি? আপনি এখানে??

হুম আমি। বলে কাব্য এগুতে থাকে আর তিথী পিছুতে।
পিছুতে পিছুতে দেয়াল এর সাথে মিশে যায়।
এহ হে, আর তো জায়গা নেই। এখন আমি কি করি? কোথায় পালাই? লোক টার মতলব মোটেও ভালো না। এগুলো মনে মনে ভাবতে ভাবতেই কাব্য এসে একদম তিথী সামনে দাঁড়ায়। দুই হাত দুই পাশের দেয়ালে রাখতেই তিথী দু চোখ বন্ধ করে ফেলে।

কাব্য অপলক দৃষ্টিতে দেখছে। কি অমায়িক লাগছে তার পুতুল টাকে। কিন্তু এ সাজ তো সবাইকে দেখালে চলবে না। এ সাজ তো শুধু তার জন্যই সাজতে হবে।
ঘাড় মেরুন লিপস্টিক মাখা ঠোঁটে ইচ্ছে করছে এক্ষুনি তার ঠোঁট দুটো ডুবিয়ে দিতে।

চোখ বন্ধ করে বড় বড় দুটো নিশ্বাস টেনে নেয়।ঝুঁকে একবারে তিথীর মুখের সামনে গিয়ে ডান হাত টা তিথীর গালে রাখে।
চোখ বড় বড় করে চেয়ে উঠে তিথী।
কি কি কি ক কর করছেন? কাঁপা গলায়।

লম্বা শ্বাস নিয়ে, এখনো কিছু করিনি। বলে বুড়ো আংগুল দিয়ে তিথীর ঠোঁট দুটো তে স্লাইড করতে থাকে।

শিউরে ওঠে তিথী। কি করছে লোক টা? পাগল টাগল হয়ে গেলো নাকি? ধাক্কা দিয়ে যে সরাবে তাও পারছে না। পুরো শরীর যেনো অবশ হয়ে যাচ্ছে তার।

ঠোঁটে স্লাইড করতে করতেই, ছাদে ডেকেছিলে কেনো আমায়?

আ আমি ন ন না, মিম মিমমম মিলাপু।মিলাপু ডে ডেকেছিলো।

হুম, কেনো?

প প পছন্দ ক ক করে আপ আপনাকে।

জানি আমি। কাল থেকেই বুঝতে পারছি। আমি কি তোমার মতো বোকা? একটা মেয়ে কি নজরে তাকাচ্ছে তা আমি তার হাবভাব দেখলেই বুঝতে পারি। তুমি কেনো তবে বুঝতে পারছো না তিথী? নেশালো কন্ঠে।

বু বুঝতে পারি আমি।

হাত চলছেই। কি বুঝতে পারো?কি যেনো আছে এই কন্ঠে।

আ আপনার মতলব ভালো না, এটা।

এবার কাব্যর চোখ বড় হয়ে যায়। কিহ?😠

সরুন প্লিজ, আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।

বাঁকা হেসে, আমি কাছে এলেই তোমার দম বন্ধ হয়ে আসে? হুম

যাবো আমি প্লিজ, বলেই কাব্য কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে চলে যেতে নিলে, হাত ধরে ফেলে। ঘুরে তাকায় তিথী।

এতো সাজবানা পিচ্চি, কন্ট্রোল হারিয়ে ফেললে পরে কিছু বলতে এসো না যেনো। আর এতো এট্রেকটিভ লিপস্টিক দিও না। আমার মতো ভদ্রলোক ই পাগল হয়ে যায়, আর বাকিদের কি অবস্থা হবে গড নোজ।
মুচে দিয়েছি, আবার লাগাতে যেয়ো না যেনো।
বলেই হাত টা ছেড়ে দেয়।

ছাড়া পেয়ে এক দৌঁড় লাগায় তিথী বাইরে। বুকে হাত দিয়ে বলে, হুহ উনি নাকি ভদ্রলোক, অভদ্র একটা। 😡

******************

বাসা ভর্তি মেহমান, শুবার জায়গা নিয়ে সমস্যা। তাই তমা সহ সব কাজিন রা মিলে প্ল্যান করেছে সারারাত ছাদে আড্ডা গানে কাটিয়ে দিবে।
কাব্যর ও আজ যাওয়া চলবে না। বিশেষ রিকুয়েষ্ট করেছে তমা।কাব্য ও শেষে রাজি হয়ে যায়।
মিলার মনে লাড্ডু ফুটতে থাকে। তখন কাব্য তাকে ছাদে দেখেই চলে এসেছিলো। পিছনে অনেক ডেকেছে, ফিরেও তাকায় নি।
কিন্তু এখন ব্যাটা কাব্য, পালাবে কোথায়? সারাটা রাত আমার কাছে। আজ তো তোমাকে মনের কথা বলেই ছাড়বো।

সবাই গোল হয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছে। তিথীর পাশে বসেছে তার মামাতো ভাই রনি। রনি তিথীর ৬ বছরের সিনিয়র। রনির হাবভাব তিথীর মোটেও ভালো লাগছে না। কেমন যেনো পঁচা ইংগিত করে। এক্সাম শেষে সেবার নানুবাড়ি যাওয়ার পর ও এমন করেছে। তাই দুদিন থেকেই চলে এসেছে।
রনি পাশে বসাতে তিথী আনইজি ফিল করছে, এটা দেখে তমা তিথীকে ডেকে তার পাশে বসিয়ে দেয়। তখন কাব্য আসে সেখানে।

হলুদ পাঞ্জাবী তে কাব্য কে অন্যরকম সুন্দর লাগছে। ক্লান্ত মুখটা, চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে। তিথী একবার তাকিয়ে ভাবে নাহ আংকেল টা তো সুন্দর আছে। তাইতো মিলাপু এমন পাগল হয়েছে।

কাব্য তিথীর পাশে বসতে চেয়েছিলো। কিন্তু জায়গা নেই। মিলা একটু চেপে বসে কাব্য কে যায়গা করে দেয়। তাই না চাওয়া সত্ত্বেও তার ওখানেই বসতে হয়।

ঠিক হয় সবাই একটা একটা গান গাইবে। তমা থেকে শুরু হয়। যার গলা যেমন ই হোক গান টা মোটামুটি গাওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বিপত্তি হয় তিথীর বেলায়। তার গানের গলা মোটেও ভালো না। সে গান গাইবেই না। কিন্তু সবার জোরাজুরিতে গান তার শুরু করতেই হলো। তার বেশুরা গলাই গান শুনে সবাই হেসে উঠে। তার আরেক কাজিন লামিয়া বলে তুই থাম বইন তুই থাম। রাস্তার কু*ত্তা সব আইসা পরবো। বলতেই সবাই এক সাথে হেসে উঠে।

আমি আগেই বলেছিলাম আমি গান গাইবো না। তোমরা ই তো জোর করলে।(ঠোঁট ফুলিয়ে)

মিলা বলে, তোর মতো এতো সুন্দরী মেয়ের গানের গলা এতো বাজে হয় কি করে রে। তোর জামাই যদি শখ করে তোরে কোনোদিন বলে গান শুনাও তো বউ, তখন যদি তুই গান গাওয়া শুরু করস তখন তো জামাই হার্ট অ্যাটাক করবো রে।
বলতেই সবাই এক সাথে হেসে উঠে।

যাও তোমরাই আড্ডা দাও, আমি যাই। বলেই উঠে যেতে নিলে তমা আটকায় তাকে।

কাব্য রেগে বলে গানের গলা ভালো হতেই হবে এটা কোন যুক্তি রে ভাই। বলে সে ও চলে যেতে নেয়।

তমা বলে প্লিজ ভাইয়া যেয়ো না। ভালো লাগবে না আমার।
তমার দিকে চেয়ে থেকে যায় কাব্য। কিন্তু রাগ কমেনি তার। এমনিতেই চুপচাপ, আরো চুপচাপ আছে সে।

সবাই আবার গান শুরু করে। এবার কাব্যর টার্ন। সে গান গাইবে না কিছুতেই। সবাই রিকুয়েষ্ট করছে,তবু না। তমা বলার পর পর্যন্ত ও গাইলো না।
তখন তিথী বলে আমি আমার বেশুরা গলায় পর্যন্ত গান গাইলাম, আপনি কেনো গান গাইবেন না।

মুচকি হাসে সে। তখন বলে, ফর সামওয়ান স্পেশাল। বলে খালি গলায় গানশুরু করে..

” আমি তোর চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে চাই তোকে”
“আমি তোর মনটা ছোঁয়ে স্বপ্ন দিয়ে আঁকবো যে তোকে”
“তুই থাকলে রাজি ধরবো বাজি কোনো কিছু না ভেবে ”
” একটু নয় অনেক বেশি ভালোবাসি তোকে”

পুরোটা গান সে তিথীর দিকে তাকিয়ে গায়। সবাই কাব্যর দিকেই তাকিয়ে ছিলো।এতো সুন্দর গান গায় তাও আবার খালি গলায়।

তিথীর বুকের ভিতর টা ধুক করে উঠে। কি বুঝাতে চাইছেন উনি!!





চলবে
( আপনারা কি চাইছেন তিথীকে ম্যাচিউর করে বড় বানিয়ে একবারে বাচ্চার মা বানিয়ে দেই? আমি যেই থিম এ গল্প লিখছি সেভাবেই এগিয়ে যাবো। যার ভালো লাগবে পড়বেন আর না লাগলে এড়িয়ে যাবেন। সংসার বাচ্চা কাচ্চা সামলে আমার একটা পর্ব লিখতে ৩/৪ ঘন্টা লাগে। এর পর আপনাদের নেগেটিভ কমেন্ট গুলো মনটা সত্যিই ভেঙে দেয়। এক আপুর তো এটাও সমস্যা তিথী কেনো তমাকে আপুটি ডাকে। উনার নাকি এটা শুনতে weird লাগে।কেনো আপু কে মানুষ আপুটি, আপুনি ডাকে না। আপনার একার better sound এর জন্য আমি গল্প লিখতে বসিনি। ভালো লাগলে পড়বেন না লাগলে পড়বেন না। নেগেটিভ কমেন্ট লেখার আগ্রহ কমিয়ে দেয়। রাইটার হওয়ার আগে আমি একজন রিডার। আমার যদি কোনো গল্প ভালো না লাগে আছতে করে এড়িয়ে যাই, কিন্তু এই পর্যন্ত নেগেটিভ কমেন্ট করিনি কাউকে। লিখতে গেলে বুঝা যায়, লেখাটা কেমন কষ্ট। কারো মন খারাপ করার জন্য কথা গুলো বলিনি। কষ্ট পেলে আমি দুঃখিত)

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here