মরিচাধরা মনের খাঁচা পর্ব -১৩

#মরিচাধরা_মনের_খাঁচা
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা
পর্বঃ ১৩

ফজরের আযান হতেই সিলেট জেলায় প্রবেশ করলো অয়নদের গাড়ি। সারারাত পাল্টাপাল্টি করে ড্রাইভ করেছে অয়ন আর তয়ন। অয়ন পাশের সীটে তাকিয়ে দেখলো তয়ন ঘুমিয়ে আছে। রাস্তার পাশে একটা মসজিদ দেখে গাড়ি পার্ক করলো অয়ন। দরজা খোলে বাইরে পা রাখতেই ঠান্ডা বাতাস সারা শরীরে শিহরণ বইয়ে গেলো। অয়ন চোখ বন্ধ করে লম্বা একটা শ্বাস নিলো।

বিড়বিড় করে বললো, আমি তোমার অনেক কাছে চলে এসেছি নিঝুম। আর মাত্র কিছুটা সময় পরই আমি দাঁড়াবো তোমার সামনে। তোমার সব অভিমান ভুলিয়ে নিজের মনের খাঁচায় বন্দী করবো সারাজীবনের জন্য।

অয়ন মুচকি হেসে এগিয়ে গেলো মসজিদের দিকে। ওজু করে জামাতের সাথে দাঁড়িয়ে গেলো সালাত আদায় করতে। হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ হয়েছিলো জামাতে। সালাত শেষে সবাই চলে গেলো ধীরে ধীরে। অয়ন তখনো মোনাজাত ধরে বসে আছে। শুকরিয়া আদায় করছে আল্লাহ তা’আলার কাছে। এত তাড়াতাড়ি নিঝুমকে খোঁজে পাইয়ে দেওয়ার জন্য। নিজের করা অন্যায়ের জন্য মাফ চাইলো মহান আল্লাহ তা’আলার কাছে, সাথে এটাও চাইলো যাতে সে নিঝুমের রাগ ভাঙাতে পারে তাড়াতাড়ি। অয়ন মোনাজাত শেষ করে উঠে দাঁড়াতেই দেখলো মসজিদের মধ্যবয়স্ক ইমাম তাকিয়ে আছে তার দিকে।

ইমাম সাহেব মুচকি হেসে বললো, কিছু নিয়ে চিন্তায় আছো বাবা ?

জি ইমাম সাহেব।

চিন্তা করো না, আল্লাহ চাইলে সবই ভালো হবে।

সেই ভরসাতেই আছি, আল্লাহ যেনো সব ভালো করেন।

অয়ন মুচকি হেসে বের হয়ে গেলো মসজিদ থেকে। গাড়িতে এসে দেখলো তয়ন নেই, তাই আশেপাশে তাকিয়ে খুঁজতে লাগলো।

তয়ন পেছন থেকে অয়নের কাঁধে হাত রেখে বললো, কাউকে খুঁজছিস ?

অয়ন চোখ গরম করে তাকিয়ে বললো, তোকে ছাড়া আর কাকে খুঁজবো ? কোথায় গিয়েছিলি তুই ?

তয়ন এক আঙ্গুল উঁচু করে বললো, আরে ভাই মানুষের প্রকৃতির ডাক আসতে পারে না ?

অয়ন ড্রাইভিং সীটের পাশের সীটে বসে বললো, ঠিক আছে এবার ড্রাইভ কর।

তয়নও কিছু না বলে ড্রাইভিং সীটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো।

অয়নের দিকে তাকিয়ে বললো, এখন তাহলে আগে একটা হোটেলে রুম গিয়ে ফ্রেশ হওয়া যাক।

অয়ন বললো, না আমি আগে নিঝুমের কাছে যাবো।

আরে আমার বউ পাগল ভাই, বউয়ের জন্য এতো ভালোবাসা আগে কোথায় ছিলো ?

অয়ন ভ্রু কুঁচকে বললো, মানে ?

এমনভাবে বলছিস যেনো তুই ভাবিদের বাড়ির এড্রেস জানিস ?

জানি না তো কী হয়েছে ? আঙ্কেলের অফিস থেকে জেনে নিলেই হলো।

তোর শশুর, তোর জন্য এই ভোরবেলা অফিস গিয়ে বসে আছে আর বলছে, আমার একমাত্র মেয়ে জামাই আসবে তার জন্য অপেক্ষা করি।

অয়ন রাগী চোখে তাকালো তয়নের দিকে। তয়ন এবার বোকা হেসে বললো, আমার মিষ্টি ভাইয়া সকাল নয় বা দশটার আগে কোনো অফিস খুলবে না আর এখন কেবল বাজে সকাল ছয়টা। আগে কোথাও ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে তারপর বের হওয়া যাবে।

অয়ন গম্ভীর গলায় বললো, ওকে চল।

২৪.
নিঝুমদের বাংলোর সামনে রাস্তায় গাড়ি পার্ক করে গাড়িতে বসে আছে অয়ন আর তয়ন। প্রায় আধঘন্টা হলো এভাবেই আছে।

তয়ন রেগে বললো, আর কত সময় এখানে এই গাড়ির ভেতর বসে থাকবো ? আসার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছিলি আর এখন সামনে যেতে ভয় পাচ্ছিস ?

অয়ন অসহায় গলায় বললো, কীভাবে দাঁড়াবো ওর সামনে ?

তাহলে চল ফিরে যাই।

নিঝুমকে ছাড়া আমি কোথাও যাবো না।

তয়ন বিরক্ত হয়ে বললো, উফফ মহা জ্বালা তো। সকাল থেকে কত খোঁজে ঠিকানা জোগাড় করলাম আর এখন যেতে পারছে না। থাক তুই গাড়িতে বসে, আমি গেলাম।

তয়ন গাড়ি থেকে বের হয়ে বাংলোর দিকে হাঁটা শুরু করলো।

অয়ন পেছন থেকে ডেকে বললো, তুই কোথায় যাচ্ছিস ?

তয়ন পেছন ফিরে তাকিয়ে বললো, তোর শশুর বাড়ি। তুই গাড়িতে বসে থাক, আমি আর পারছি না বসে থাকতে।

যাস না তয়ন।

অয়নের আর কোন কথা না শুনেই চলে গেলো তয়ন। অয়ন ফোঁস করে নিশ্বাস ছেড়ে আবার গাড়ির ভেতরে গিয়ে বসলো। দুপুরের রোদে আশপাশের কুয়াশা কেটে গেছে পুরোপুরি। অয়ন গাড়িতে বসে আশপাশটা একবার দেখে সীটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো।

তয়ন দু’বার কলিং বেল বাজিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। একটু পর দরজা খোলে দিলো সাথী। তয়ন আশপাশে তাকিয়ে দেখছিলো।

সাথী ভ্রু কুঁচকে বললো, কাকে চাই ?

তয়ন সামনে ফিরে তাকিয়ে সাথীকে দেখে চোখের সানগ্লাস খোলে ফেললো। ওড়না কোমরে গুঁজে, ঘামার্ত মুখে দাঁড়িয়ে আছে সাথী। সাদা গাল দু’টো আগুনের তাপে রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। তয়ন কিছু সময়ের জন্য থমকে তাকিয়ে রইলো সাথীর দিকে।

ভেতর থেকে সেলিনা বললো, কে এসেছে সাথী ?

আমি চিনি না মা আর কথাও বলছে না।

তয়নের ঘোর কাটলো সেলিনার ডাকে। তয়ন বুঝার চেষ্টা করলো সাথী কে। তয়ন জানে নিঝুম তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তাহলে এই মেয়ে কে আর নিঝুমের মাকে মা কেনো বলছে ?

সাথী এবার বিরক্ত হয়ে বললো, কথা বলছেন না কেনো আপনি ?

তয়ন কিছু বলবে তার আগেই তিথিকে কোলে নিয়ে বের হয়ে এলো সেলিনা। তিথির সাথে মজা করছিলো সে নিজের বেডরুমে বসে। বাইরে এসে তয়নকে দেখে হাসি মুখটা মলিন হয়ে গেলো সেলিনার।

গম্ভীর গলায় বললো, তয়ন বাবা তুমি ?

তয়ন সাথীকে পাশ কাটিয়ে ভেতরে গিয়ে সেলিনাকে সালাম দিয়ে বললো, কেমন আছেন আন্টি ?

সেলিনা মলিন গলায় সালামের উত্তর নিয়ে বললো, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তাআলা ভালোই রেখেছেন। তুমি হঠাৎ এখানে আর ঠিকানা বা কোথায় পেলে ?

তয়ন মুচকি হেসে বললো, সে অনেক বড় ঘটনা। বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে। তার আগে বলুন নিঝুম ভাবি কোথায় ? ভাইয়া গাড়িতে বসে আছে, আসার সাহস পাচ্ছে না।

সাথী হা করে তাকিয়ে সেলিনা আর তয়নের কথা শুনছে। এতক্ষণ বুঝতে পারছিলো না ছেলেটা কে। নিঝুমকে ভাবি বলার জন্য বুঝতে পারলো এটা নিঝুমের দেবর। তয়নের কথা শুনে চমকে তাকালো সেলিনা। অয়ন এখানে কেনো এসেছে বুঝতে পারছে না।

সেলিনা নিজেকে যথেষ্ট শান্ত করে বললো, এখানে কেনো এসেছে অয়ন ? ডিভোর্স পেপার হাতে পেলে সাইন করে পাঠিয়ে দেওয়া হবে, সেটা তো বলেই এসেছিলো নিঝুম।

তয়ন মাথা নিচু করে বললো, তার জন্য আসেনি ভাইয়া ?

সেলিনা ভ্রু কুঁচকে বললো, তাহলে কেনো এসেছে ?

তয়ন দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, ভাইয়া ক্ষমা চাইতে এসেছে ভাবির কাছে ?

এখন আর ক্ষমা চেয়ে কী হবে ? আমার মেয়েটা ভেতরে ভেতরে ভেঙে গুড়িয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছে নিজেকে সামলে নেওয়ার। এখন আবার অয়ন ওর সামনে দাঁড়ালে নিজেকে সামলে উঠতে পারবে না। আর যেখানে সব শেষ হয়ে গেছে, এখন এসব করে কী লাভ ?

তয়ন মুচকি হেসে বললো, কিছুই শেষ হয়নি আন্টি।

সেলিনা অবাক হয়ে বললো, মানে ?

তয়ন হাসিটা বজায় রেখেই বললো, ভাইয়া আর নয়না আপুর বিয়ে হয়নি। শেষ মুহূর্তে বিয়ে ভেঙে দিয়ে চলে এসেছে ভাইয়া।

সেলিনা যেনো চমকে উঠলো তয়নের কথা শুনে। অবিশ্বাসের চোখে তাকালো তয়নের দিকে। তয়ন মাথা নেড়ে বুঝালো সে সত্যি কথা বলছে।

সেলিনা বিস্ফোরিত গলায় বলো, কেনো ?

আবেগ আর ভালোবাসার তফাৎ বুঝতে অনেক বেশি সময় নিয়ে ফেলেছে ভাইয়া। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বুঝতে পেরেছে ঠিকই। ভাইয়া ভাবিকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছে।

সেলিনার মুখে হাসি ফোটে উঠলো তয়নের কথা শুনে। কোনো মা চায় না তার মেয়ের সংসার ভেঙে যাক। চায় না তার মেয়েকে সবাই ডিভোর্সি বলে কথা শুনাক। তেমনি সেলিনাও কখনো চায়নি নিঝুমের ডিভোর্স হয়ে যাক। কিন্তু সে অসহায় ছিলো পরিস্থিতির সাথে। তবে নিঝুম, সে কী এতো সহজে মেনে নিবে অয়নকে ? হাসি মুখটা চিন্তায় গম্ভীর হয়ে গেলো সেলিনার।

তয়ন তা খেয়াল করে বললো, কোনো সমস্যা আন্টি ?

সেলিনা জোর পূর্বক হেসে বললো, নাহ কোনো সমস্যা না। তুমি বরং অয়নকে ভেতরে আসতে বলো। নিঝুম এখন বাসায় নেই, ভার্সিটি গেছে আর একটু পর আসবে।

তয়ন সম্মতি জানিয়ে বের হয়ে গেলো বাসা থেকে। গাড়ির কাছে গিয়ে জানলায় ঠকঠক শব্দ করতেই অয়ন নেমে এলো গাড়ি থেকে।

অয়ন ব্যস্ত গলায় বললো, তোকে কিছু বলেছে ? আমার জন্য শুধু শুধু তুই কথা শুনতে গেলি কেন ?

তয়ন বিরক্ত হয়ে বললো, উফফ ভাইয়া তুইও না। যেটা আগে বুঝা দরকার ছিলো সেটা পরে বুঝছিস আর এখন এটা আবার অতিরিক্ত বুঝছিস ? আমাকে কেউ কোনো কথা শোনায়নি। তুই চল আন্টি তোকে ভেতরে যেতে বলেছে।

অয়ন ভীত গলায় বললো, কিন্তু নিঝুম ?

তয়ন ভ্রু কুঁচকে বললো, ছিহ্ ভাইয়া তুই বউকে এতো ভয় পাস। তুই আমার ভাই হতেই পারিস না।

অয়ন তয়নের পিঠে থাপ্পড় মেরে বললো, আমার জায়গায় থাকলে বুঝতে পারতি কেনো ভয় পাচ্ছি।

কথা বাদ দিয়ে ভেতরে চল এবার।

অয়ন অনেকটা সাহস নিয়ে এগিয়ে গেলো বাংলোর দিকে।

আচ্ছা ভাইয়া, তোর যে একটা শ্যালিকা আছে সেটা তো জানতাম না।

অয়ন ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো, আমার আবার শ্যালিকা আসলো কোথা থেকে ?

ভেতরে একটা মেয়েকে দেখলাম আর একটা বাচ্চাও। মেয়েটা আন্টিকে মা বলছিলো।

ওহ, তুই মনে হয় সাথীর কথা বলছিস।

কে মেয়েটা ?

সাথী একটু প্রবলেমে ছিলো তাই নিঝুম সাহায্য করেছে আর নিজের বাড়িতে রেখেছে।

আর ছোট একটা বাচ্চা দেখলাম, সেটা ?

বাচ্চাটা সাথীর।

তয়ন প্রায় চিৎকার করে বললো, হোয়াট ?

অয়ন কানে হাত দিয়ে রাগী চোখে তাকালো তয়নের দিকে আর বললো, এভাবে ষাঁড়ের মতো চেঁচাচ্ছিস কেনো ?

সরি সরি বাট তুই এটা কী বলেছিস, বাচ্চাটা ঐ মেয়ের ?

নিঝুমের থেকে যতটা শুনেছিলাম তাই বললাম। আমি ওদের কাউকে দেখিনি।

তয়ন আফসোসের স্বরে বললো, ভাইয়া মেয়েটা নিজেই একটা বাচ্চা আর তুই বলছিস বাচ্চাটা তার।

অয়ন সন্দেহের চোখে তাকিয়ে বললো, মেয়েটাকে নিয়ে তুই এতো মাথা কেনো ঘামাচ্ছিস বল তো ?

তয়ন আমতা আমতা করে বললো, কই না তো।

অয়ন কিছু সময় তয়নের দিকে তাকিয়ে সামনে চলে গেলো। ভেতরে গিয়ে সেলিনার কাছে মাফ চেয়ে নিলো অয়ন। সেলিনা মাফ করলো কিনা বুঝা গেলো না। যতই হোক চোখের সামনে একমাত্র মেয়েকে ডুকরে কাঁদতে দেখেছে, কষ্ট পেতে দেখেছে। এতো তাড়াতাড়ি কীভাবে সব ভুলে যাবে ? সাথী শরবত করে এনে দু’জনকে দিলো,যদিও শীতের দিন তবু এখন দুপুর টাইম তাই খেয়ে ভালো লাগবে। তয়ন অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সাথীর দিকে। এই ছোট মেয়েটা নাকি এক বাচ্চার মা, সেটা বিশ্বাস হচ্ছে মা তয়নের। তয়নের হঠাৎ মনে হলো সাথী হাসবেন্ড কোথায় ? এদিকে অয়ন গ্লাসটা মুখের কাছে নিতেই কলিংবেল বেজে উঠলো।

সাথী বললো, নিঝুম আপু আইসা পড়ছে মনে হয়।

তয়ন ভ্রু কুঁচকে তাকালো সাথীর কথা শুনে। এতক্ষণ তো ঠিকভাবেই কথা বলছিলো। আর নিঝুমের কথা শুনে অয়নের বুকের ভেতর ধক করে উঠলো। হার্টবিট বেড়ে গেলো কয়েকগুণ। এমন অনুভূতির মুখোমুখি আগে কখনো হয়নি অয়ন। গ্লাসটা টেবিলে রেখে বুকের বা পাশে হাত রাখলো। নিজেই অবাক হয়ে গেলো নিজের অনুভূতি দেখে।

সেলিনা সাথীর দিকে তাকিয়ে হালকা রাগী গলায় বললো, ঠিক করে কথা বলতে বলেছি না তোকে ?

সাথী মাথা নিচু করে বললো, সরি মা আর হবে না।

সাথীর কথা শেষ হতেই আবারও বেজে উঠলো কলিংবেল।

সেলিনা বললো, মনে থাকে যেনো, এখন গিয়ে দরজাটা খোলে দে।

সাথী মাথা নাড়িয়া এগিয়ে গেলে অয়ন বলে উঠলো, আমি খোলে দেই ?

সাথী দাঁড়িয়ে গেলো আর সেলিনাও কিছু বললো না। অয়ন উঠে দাঁড়ালো সোফা ছেড়ে। দরজার দিকে যত আগাতে লাগলো তত হার্টবিট বাড়তে থাকলো। কাঁপা হাতে দরজা খোলে দেখতে পেলো কাংখিত সেই মুখ। নিঝুম সামনে তাকিয়ে অয়নকে দেখে চমকে উঠলো। নিজের চোখের ভুল ভেবে চোখ বন্ধ করে হাত দিয়ে কচলে আবার তাকালো। কই চোখের ভুল তো নয়। সেই প্রথম দিনের মতো কালো শার্ট গায়ে দাঁড়িয়ে আছে অয়ন। শুধু চেহারায় সেদিনের সেই লাবণ্যতা নেই। চোখের নিচে কালি পড়েছে, মাথার চুল খানিকটা ছন্নছাড়া। নিঝুমের চোখ পড়লো মাথার ব্যান্ডেজে। ব্যস্ত হয়ে এগিয়ে গিয়ে আবার থেমে গেলো। মানুষটার উপর আজ যে অন্যকারো অধিকার। কিন্তু সে এখানে কেনো এসেছে ? নিঝুম এবার বিষ্ময় কাটিয়ে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালো অয়নের দিকে৷ এদিকে অয়ন মুগ্ধ হয়ে চোখের তৃষ্ণা মিটিয়ে নিচ্ছিলো এতদিনের। যেনো কত শত বছর পর মুখটা সে দেখতে পেয়েছে। কিন্তু নিঝুমের পিছিয়ে যাওয়া অয়নের মনে যেনো তীরের মতো আঘাত করলো। রক্তক্ষরণ হতে লাগলো হাহাকার করা বুকের ভেতরটায়।

চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here