মিস্টার সিনিয়র পর্ব -১৯

#মিস্টার__সিনিয়র
#পর্বসংখ্যা_১৯
®ফিহা আহমেদ

“ঘুম চলে যায়
তোমার চোখে বেড়াতে
পারি না তাকে
কোনোভাবে ফেরাতে”। (২)

“আমার মন তোমার
মনের পাড়ায়
বোকাসোকা হয়ে আড়ালে আবডালে দাঁড়ায়”।

“তোমাকে ছোঁয়ার নেইতো
আমার সাধ্য
দেখতে পাওয়া সেইতো
বড় ভাগ্য”।

“মনটা অবাধ্য
হচ্ছে প্রায়শঃ
কষ্টের বোঝা বেড়ে
যাচ্ছে ক্রমশঃ”।

“ঘুম চলে যায়
তোমার চোখে বেড়াতে
পারি না তাকে
কোনোভাবে ফেরাতে”।

“বায়বীয় প্রেম আকাশ পাতাল সমতল
বাস্তবতায় খাবি খায় শুধু
হারায় না তার
মনোবল”।(২)

“তোমাকে ছোঁয়ার নেই তো
আমার সাধ্য
দেখতে পাওয়া সেই তো
বড় ভাগ্য”।

“মনটা অবাধ্য
হচ্ছে প্রায়শঃ
কষ্টের বোঝা বেড়ে
যাচ্ছে ক্রমশঃ”।

“ঘুম চলে যায়
তোমার চোখে বেড়াতে
পারি না তাকে
কোনোভাবে ফেরাতে”।

“কেন যে তোমার সাথে মনের এত টান
কথা হয় না দেখেছি শুধু
তবু কিসের অভিমান”।

“তোমাকে ছোঁয়ার নেই তো
আমার সাধ্য
দেখতে পাওয়া সেই তো
বড় ভাগ্য”।

“মনটা অবাধ্য
হচ্ছে প্রায়শঃ
কষ্টের বোঝা বেড়ে
যাচ্ছে ক্রমশঃ”।

~ (কন্ঠে – মাহতিম সাকিব💛)

গানটি শেষ হতেই কয়েক ফোঁটা চোখের পানি গড়িয়ে পড়লো নিহানের।পিছন থেকে কাঁধে কেউ হাত রাখতেই নিহান দ্রুত চোখের পানি মুছে পিছনে তাকালো।

“আপু এত রাতে ছাঁদে কেন তুই ? (নিহান)

“তুই এত রাতে ঘুম না যেয়ে এখানে গিটার বাজাচ্ছিস। তোর সাথে নয়ন দেখা করতে এসেছে”। (রুবি)

নয়নের কথা শুনে নিহানের মন বিষন্ন হয়ে গেল। নিহান কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে বললো ,,,,,,

“পাঠিয়ে দেও”।

“তুই নিচে চল। মেয়েটা এত রাতে কত কষ্ট করে এসেছে আবার এখানে আসতে বলা কি ঠিক হবে”। (রুবি)

“না আসতে পারলে সোজ বাড়ির রাস্তা দেখিয়ে দিও চলে যাবে”। (নিহান)

“আচ্ছা রাগ করিস না। আমি নিচে গিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছি”। (রুবি)

কিছুক্ষণ পর নয়ন আসলো ছাঁদে নিহানের কাছে। নয়ন গুটি গুটি পায়ে নিহানের সামনে এসে দাঁড়ালো।নিহান আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। নয়ন নিহানের মুখের সামনে একটা কার্ড ধরলো। নিহানের ব্রু কুঁচকে আসলো নয়নের কাজে। নিহান নয়নের দিকে না তাকিয়ে ই গম্ভীর কণ্ঠে বললো ,,,,,

“কেন এসেছিস ?

“আমার বিয়ের কার্ড দিতে।সুন্দর না বিয়ের কার্ডটা”৷ (নয়ন একগাল হেসে বললো)

বলা শেষ হতে না হতেই ঠাস করে চড় পড়লো নয়নের গালে। নিহান রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নয়নের দিকে।নয়ন গালে হাত দিয়ে টলমল চোখে তাকিয়ে আছে নিহানের দিকে।

“বের হ্ আমার বাড়ি থেকে।তোর রংঢং অন্য জায়গায় গিয়ে কর আমার কাছে না।বের হ্ আমার বাড়ি থেকে”। (নিহান রেগে চিৎকার করে বললো)

নয়ন ভয় পেয়ে গেল নিহানের চিৎকারে।নয়ন দৌঁড়ে সেখান থেকে চলে আসলো।

“আরে নয়ন এভাবে গালে হাত দিয়ে দৌঁড়াচ্ছো কেন পড়ে যাবে তো। কাজ হয়েছে নয়ন ? (রুবি)

নয়ন কাঁদো কাঁদো চেহারা নিয়ে তাকিয়ে আছে রুবির দিকে।

“তোমার বুদ্ধি কাজে তো লাগলো ই না বরং ঠাসিয়ে একটা চড় খেয়ে আসলাম”। (নয়ন কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো)

রুবি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো ,,,,,,

“তাহলে নিহান এখন ও তার ভালোবাসার কথা স্বীকার করছে না”।

এরই মধ্যে নিহান নিচে এসে নয়নকে দেখে আবার রেগে চিৎকার করে বলা শুরু করলো ,,,,,

“তুই এখনো আমার বাড়িতে। যা আমার বাড়ি থেকে। তোকে যেন আর আমার বাড়িতে না আসতে দেখি”।

নয়ন ভয় পেয়ে বের হয়ে গেল বাড়ি থেকে।

“এটা তুই কি করলি নিহান।এত রাতে মেয়েটা কিভাবে বাড়ি যাবে। যদি রাস্তায় কোনো সমস্যা হয়”। (রুবি)

নিহান কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল।

_____

নয়ন লাল রঙের কার্ডটি হাতে নিয়ে হাঁটছে আর কান্না করছে।

(নিহানের বোন রুবি নয়নকে বলেছে মিথ্যা বিয়ের কার্ড বানিয়ে নিহানকে দিতে। এতে করে নিহান যদি নয়নকে ভালোবাসার কথা জানায়।কিন্তু না কিছু তো হলোই না বরং বেচারি নয়ন চড় খেয়ে আসলো)

নয়ন মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় সে আর নিহানের মুখোমুখি হবে না। অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করাতে নয়নের মাথা চক্কর দিতে লাগলো।নয়ন হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে পড়ে যাচ্ছিলো তার আগে কেউ তার কোমর জড়িয়ে ধরলো।

সে আর কেউ নয় নিহান।নয়ন চোখগুলো ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে নিহানের দিকে।

দু’জন দু’জনের দিকে অপলক তাকিয়ে আছে। বাতাসে নয়নের ছোট ছোট চুলগুলো চোখের ওপর এসে পড়ছে বারবার।এতে নয়ন ভীষণ বিরক্ত হচ্ছে। চুলগুলোর জন্য শান্তিতে নিহানকে সে দেখতে পারছে না।নিহান নয়নকে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে একগাল হেসে নয়নকে কোলে তুলে নিলো। নিহানের কাজে নয়নের চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল।নিহান নয়নকে কোলে নিয়ে রাস্তায় ধীর পায়ে হেঁটে যাচ্ছে আর নয়ন নিহানের গলা জড়িয়ে ধরে রেখেছে।

বাতাসে গাছের পাতা নড়ার শব্দ হচ্ছে আর নিহানের হাঁটার শব্দ হচ্ছে। দু’জন নিরবে দু’জনকে অনুভব করছে।নিহানের কাছে এসে নয়ন তার শর্তের কথা ভুলে গেছে। হঠাৎ নয়ন নিহানের বুকে চুমু খেল। নিহান প্রথমে হালকা ভাবে চমকালে ও পরে মুচকি হেসে হাঁটা শুরু করলো। কিছু দূর হেঁটে নিহান নয়নকে কোল থেকে নামিয়ে দিল।নিহান নয়নের হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে নয়নের বাড়ির সামনে আসলো।

নয়ন নিহানের হাত ছেড়ে দিয়ে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করতে যাবে তার আগেই পিছন থেকে কেউ জড়িয়ে ধরলো।নয়ন থমকে গেল কয়েক মুহুর্তের জন্য থমকে গেছে।পরক্ষনে নিজেকে সামলে নিল।

“কিছু বলবি নিহান ,,,,,

“হুম” (নিহান নেশাক্ত কন্ঠে বললো)

“ব ,,,, বল” (কাঁপা কন্ঠে বললো)

“ভালোবাসি” ! (নিহান)

নয়ন স্তব্ধ হয়ে গেল নিহানের মুখ থেকে ভালোবাসি শুনে। নয়ন কিছুক্ষন চুপ থেকে পিছনে ফিরে নিহানকে বলে ,,,,

“মজা করছিস ?

“না” (নিহান)

নয়ন নিহানকে জড়িয়ে ধরলো।নিহান এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো নয়নকে। দু’জন দু’জনকে জড়িয়ে ধরে দু’জন দু’জনের হৃৎস্পন্দ শুনছে।এইভাবে পাঁচ মিনিট অতিবাহিত হলো।হঠাৎ নয়ন বলে উঠলো ,,,,,

“আমি তোকে অনেক ভালোবাসি নিহান।বিয়ে করবি আমায়?

নিহান নয়নকে ছেড়ে দিয়ে নয়নের দুই কাঁধে হাত দিয়ে চোখে চোখ রেখে বললো ,,,,,

“করব সময় হলে। এখন বিয়ে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দে।সময় হলে আমি নিজেই তোকে বিয়ে করে নেব”।

নয়ন মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো।

“গুড গার্ল” ! (নিহান নয়নের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো)

বলে নিহান নয়নের কপালে অধর চুইয়ে দিল। নয়ন হাসিমুখে বাড়ির ভিতর চলে গেল।

_____

পরশি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছে। পিছন থেকে কোমরে কারো স্পর্শ পেয়ে পরশি চোখ বন্ধ করে ফেলে। জোভান পরশিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে পরশির ঘাড়ে চুমু দিচ্ছে। পরশি চোখ বন্ধ করে শাড়ির আঁচল খামচে ধরলো।

“মিস্টার সিনিয়র” (পরশি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো)

“বলো মিস জুনিয়র” ,,,, (জোভান নেশালো কন্ঠে বললো)

“ছাড়ুন আমায়” ,,,, (পরশি চোখ বন্ধ করেই বললো)

“ছাড়ব না” । (জোভান পরশির ঘাড়ে চুমু দিয়ে বললো)

“ছাড়ুন তাহলে কিন্তু ,,,,, (পরশি)

জোভান পরশিকে নিজের দিকে ফিরিয়ে বললো ,,,,,

“তাহলে কি মিস জুনিয়র ,,,,

পরশি ধীরে ধীরে চোখ খুলে বলে ,,,,,,

“কি ,,,,,, ছু না” ।

“আমার বউকে আমি জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছি কার কি আসে যায়” । (জোভান পরশির গলায় হাত দিয়ে নেশালো কন্ঠে বললো)

“তাহলে আমি আপনার কি ? (পরশি)

“বউ” ! (জোভান পরশিকে চোখ মেরে বললো)

পরশি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললো।জোভান পরশিকে কোলে তুলে নিয়ে এসে খাটে শুইয়ে দিলো। পরশি কিছু বলতে যাবে তার আগেই জোভান পরশির ঠোঁটে আঙ্গুল চেপে ধরে। পরশি আর কিছু বলতে পারলো না।জোভান পরশির কপালে চুমু দিয়ে রুমের আলো বন্ধ করে দিল।

চলবে…..
_____

(বানানে ভুল-ক্রটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)

(গল্প পড়ে সবাই লাইক – কমেন্ট করবেন। নাইচ,নেক্সট না লিখে গল্প সম্পর্কে গঠনমূলক মন্তব্য করবেন প্রিয় পাঠক-পাঠিকাগণ।)
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here