#মেঘের_আড়ালে_বৃষ্টি
#বিশ
#প্রজ্ঞা_জামান_দৃঢ়তা
সনির মন আজ খুব খারাপ। এতগুলো দিন হয়ে গেল রহিম কোন যোগাযোগ করছে না। যে ছেলে একদিন তার সাথে কথা না বলতে পারলে পাগল হয়ে যেত। এতদিন সে কেন কথা বলছে না। কীভাবে পারছে কথা না বলে থাকতে? একটু বেশীই অবাক লাগছে তার।
রহিম বরাবরই তার রাগ ভাঙাতে অনেক কিছু করে। অথচ এখন এই ছোট একটা বিষয়ে কিনা কথা বলাই বন্ধ করে দিল!
সনির ভীষণ অস্থির লাগছে। কখনো এতদিন কথা না বলে থাকে নি সে। তবে কী রহিম অন্য কোনো মেয়ের সাথে প্রেম করছে বলে আমাকে ইগনোর করছে। হতেই পারে, এখন হয়তো অন্য কাউকে পেয়ে গেছে। তাই তার মত সাধারণ মেয়ের কথা কেন মনে থাকবে।পুরুষ জাতই এমনই। লুচু মার্কা এরা নতুন পেলে পুরাতন ছেড়ে দেয়। দাঁড়া অপেক্ষা কর আমি তোর নতুন আর তোকে কী করি দেখ রহিম্মা।
তুই প্রতিবার আমার বাসায় আসতি আমার রাগ ভাঙাতে, আজ আমি যাব তোর বাসায়। কিন্তু রাগ ভাঙাতে না, তোর ঘাড় মটকাতে। নানা কথা ভেবে
খুব তাড়াতাড়ি সে রেডি হয়ে বের হয়ে যায় রহিমের বাসার উদ্দেশ্যে।
রিকশায় উঠে, বারবার রিকশা মামাকে বলে, “মামা একটু তাড়াহুড়ো করে চালান আমার জরুরি কাজ আছে।”
আজ তার ইচ্ছা করছে উড়ে চলে যেতে। বড্ড অশান্ত লাগছে নিজেকে। এভাবে তো থাকা যায় না। কিন্তু এতো খারাপই বা লাগছে কেন ওই লুচু রহিম্মার জন্য? অসহ্য লাগছে তার নিজেকে। সে কেন এই ছেলের কথা এতো ভাবছি দূর। এসব অদ্ভুত চিন্তা করতে করতে সে রহিমের বাসায় এসে গেছে।
বাসায় ঢুকে দেখে রহিমের মা দরজা খুলছে। অনেকবার এই বাসায় আসায় রহিমের সব বন্ধুকে চেনে রহিমের মা।
“সনি তুমি?”
“জি, আন্টি। কেমন আছেন আপনি?”
“ভালো মা তুমি কেমন আছো? অনেকদিন আসো না তুমি। রহিমকে বলি শুনে না।”
” আন্টি এই যে দেখেন আমি চলে আসলাম”।
“তুমি বসো মা, আমি তোমার জন্য নাস্তা নিয়ে আসছি।”
সনি উনাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “আরে আন্টি আপনি এত চিন্তা কেন করছেন। আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হতে হবে না। আমি রহিমের কাছে কিছু নোট নিতে এসেছি।”
“আচ্ছা মা তুমি যাও দেখো গিয়ে। এখনও তোমার বন্ধু ঘুমাচ্ছে। সারাদিন ঘুমায়। কী হয়েছে কে জানে। বাইরে যায় না। একদম ঘরবন্দী হয়ে আছে। তোমরা আজকালকার ছেলে মেয়ে তোমরাই তোমাদের ভালো বুঝো।”
“আচ্ছা আন্টি আপনি একদম চিন্তা করবেন না। আমি দেখছি কীসের এতো ঘুম উনার।”
“এই তোমরা আবার মারামারি শুরু করো না। ”
“আন্টি আপনার ছেলে আমাকে মারতে আসলে আমি কিন্তু ছাড়বোনা।”
“আচ্ছা, আচ্ছা যাও। পাগল মেয়ে।” হাসতে হাসতে চলে গেলেন তিনি।
সনি রুমে ঢুকে দেখে রহিম বাচ্চাদের মত উপুড় হয়ে ঘুমাচ্ছে। পরনে একটা থ্রি কোয়েটার প্যান্ট।
হাটুর নিচ থেকে পুরো অনাবৃত। হঠাৎ রুমে ঢুকে যাওয়ায় বুঝতে পারেনি। কিন্তু এই প্রথম রহিমের দিকে তাকাতে বন্ধুত্বের চেয়ে বেশী কিছু মনে হচ্ছে সনির।
হঠাৎ শ্যামলা বর্ণের এই ছেলেকে যেন এক অপূর্ব সুন্দর লাগছে। এলো চুল গুলো চোখ ঢেকে দিয়েছে।গালের একপাশ দেখা যাচ্ছে। এত ভালো লাগছে দেখতে। এতক্ষণ মনে পুষে রাখা রাগ যেন কোথায় উদাও হয়ে গেছে।পরম শান্তিতে চারপাশ চেয়ে গেছে।বুকের ভেতর অন্যরকম শব্দ হচ্ছে, যার সাথে সনি কখনো পরিচিত নয়।
আগেও হাজার বার রহিমকে দেখেছে সে। কই তখন তো এমন মনে হয় নি। বন্ধুর চেয়ে বেশী কিছু ভাবেনি সে। তবে আজ কেন এমন হচ্ছে। ৯দিন রহিম কথা বলে নি বলেই কী এমন হচ্ছে! মনে হচ্ছে হাজার বছর পর দেখা হচ্ছে।
আস্তে আস্তে রহিমের মাথার কাছে যায় সে।
হালকা হাতে রহিমের এলো চুলে হাত ঢুকিয়ে দেয়।
ঘুমের মাঝে রহিম নিশির হাত টেনে বুকের নিচে ঢুকিয়ে বলে, কী হয়েছে আর একটু ঘুমাতে দাও না।
রহিমের হঠাৎ স্পর্শে সনির বুকের ভেতর কেমন করে উঠল। কেমন যেন অদ্ভুত একটা কিছু অনুভব করছে সে। এমন কেন হচ্ছে? কই আগে কত রহিম হাত ধরেছে। মারামারি করেছে এমনতো হয়নি। তবে কী আজ শুধু এসব অদ্ভুত কিছু অনুভব করার দিবস। এটার নাম অদ্ভুত দিবস দিলে মন্দ হয় না।
রহিম কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে উপরের দিকে মিটমিট চোখে তাকায় বলে, কী হলো কথা বলছো না কেন ম…..পুরোটা শেষ করার আগে সনিকে দেখে।
আচমকা উঠে বসে। অনেকবার চোখ কছলিয়ে দেখে সনিকে।
সনি বলে, “স্বপ্ন নয় সত্যি।”
“তুই এখানে কী করছিস?”
“কেন আসতে পারি না নাকি?”
“যার সাথে সব সম্পর্ক শেষ তার বাড়ি তুই আসবি তা ভাবিনি।”
“কেন তোর সমস্যা হচ্ছে আমি আসায়?”
“না আমার কিসের সমস্যা। আর হলেও বা তুই কবে কার সমস্যার ধার ধারিস?”
“তুই কী ইনডিরেক্টলি আমাকে খারাপ মেয়ে বলছিস?”
“না, একদম না।আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা যে আপনাকে খারাপ বলব?”
“তুই আবার বাজে কথা বলছিস?” সনির গলায় রাগের আভাস।
“দেখ তুই আমার বাড়ি আসছিস। কিছু খেয়ে চলে যা। আমাকে বিরক্ত করিস না।আমাকে ঘুমাতে দে প্লিজ।”
“এখনতো আমাকে অসহ্য লাগবেই। নতুন পাইলে পুরানোর কূ দাম, তাই না?”
“কী আবোল তাবোল বকছিস। কী নতুন আর কেই বা পুরনো?” চোখেমুখে রহিমের বিরক্তির ছাপ।
“কেন তুমি জনো না মামা। আমি পুরনো, আর যার জন্য আমার সাথে কথা বলতে মন চায়না, সে নতুন।”
“এই তোর আম্মা, আব্বা জানে তুই যে পাগল হয়ে গেছোস?”
“কী কইলি তুই আমারে পাগল বলতেছিস? ওই শাকচুন্নির কবলে পড়ে এখন আমাকে পাগল বলা হচ্ছে।” সনি রাগে গজগজ করছে।
আজ রহিম নিশির এক অন্য রুপ দেখছে,কেমন অগোছালো। অদ্ভুত ও বটে! খুব মজা পাচ্ছে সনির এমন ঈর্ষান্বিত কথাবার্তা দেখে। ভাবল আর একটু ক্ষেপালে মন্দ হয় না।
“এই শোন তুই আমার নতুনকে শাকচুন্নি বলবি না একদম। আমার নতুন আসলে তোর কী? আর তুই চাস আমাদের কথা না হোক। তোর জন্য ভালোই হইছে। তুই এসব থেকে মুক্তি পাইলি, বল?”
“এই শালা এতোদিন আমার সাথে থেকে এখন কোথাকার নতুন না কী তারে নিয়ে আমাদের ভুলে গেলি। আর কী বিচ্ছিরি নাম এই যুগে কারো নাম নতুন হয়! আজব! নিশ্চয়ই কোনো বুড়ি হবে। আগের যুগের নাম। না না ঠিকই আছে তোর কপালে বুড়িই আছে।”
“এই সনি তুই কিন্তু বাড়াবাড়ি করছিস।”
এই বলে বালিশ ছুড়াছুঁড়ি শুরু করে দুজন।
রহিমের মা রান্না ঘর থেকে দৌড়ে আসে। এই তোরা আবার শুরু করছিস,এবার দুজন থাম।
ভালবাসা কী অদ্ভুত তাই না! আমরা যখন তা খুব কাছে পেয়ে যাই। কিংবা না চাইতে পেয়ে যাই। তখন তার কোনো মূল্য আমাদের কাছে থাকে না। কিন্তু যখন সেই ভালবাসা আমাদের থেকে দূরে চলে যেতে চায়। আমরা তার কদর বুঝি। অথচ সেই না চাইতে পাওয়াকে যদি বরণ করে নেই। তাহলে হয়তো প্রতিটি ভালবাসার গল্প সম্পূর্ণ হতো।
কিন্তু মানুষতো সেরকম প্রানীই না। তারা না পাওয়াকে অধিক মূল্য দেয়। অন্যের হয়ে গেলে সেটাই বেশী করে তার চাই। আসলে একটা নির্মম কঠিন সত্য হলো, মানুষ বৈধর চেয়ে তার সাথে অ যুক্ত করতে বেশী পছন্দ করে। যেমন অবৈধ হলেই মানুষ তার মূল্য বুঝে। যদি কোনো এমন যন্ত্র থাকতো। যার মাধ্যমে মানুষের এসব আজব আর উশৃংখল চাওয়া গুলোকে বন্ধ করার। তাহলে আমি নিযে দায়িত্ব নিয়ে মানুষের এই চাওয়াগুলো কে শেষ করে দিতাম। তবে একটা বিষয় মূল্যহীন সত্যি। যা সহজে পেয়ে যায় তা সত্যিই মূল্য পায় না।
★★★
রোদ আর প্রয়াস বসে আছে সিআরবি তে।
চট্টগ্রামে সিআরবি খুব সুন্দর একটা জায়গা। এখানে অনেকে ঘুরতে আসে। সুন্দর সবুজে ঘেরা চারপাশ। চারদিকে গাছ আর গাছ। এত সুন্দর দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়।
রোদ বসেছে একটা গাছের নিচে।
প্রয়াস বলল, “সবসময়ই কী তুমি এমন সিম্পলের মাঝে গর্জিয়াস থাকো?”
“মানে কী? সিম্পল বুঝলাম। আবার গর্জিয়াস ও কেমনে কী?”
“বুঝনি এই যে তুমি ড্রেসআপ করো খুব সিম্পল ড্রেস দিয়ে। কিন্তু তোমায় দেখতে লাগে গর্জিয়াস। কেন বলতো?”
“আপনার মাথা পুরো গেছে। কী আবোল তাবোল বকছেন।”
“আবার আপনি বলা শুরু করছো?”
“ওহ সরি।”
“আসলেই আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে বুঝলে। এটা আমার ও মনে হয় এর জন্য কে দায়ী জানো?”
“কে?” রোদের ঠোঁটের কোণে দুষ্ট হাসি।
“এই যে তুমি।”
“আমি আবার কী করলাম?”
“তুমি কিছুই করনি, শুধু মাথা খারাপ করে দিয়েছো। আমার মস্তিষ্কে, মনণে সারাক্ষণ যদি এভাবে বিচরণ করো আমার মাথা কী ঠিক থাকার কথা?”
রোদ লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলে।
প্রয়াস কানের কাছে এসে বলল, ” ইউ আর মাই হিভেন।”
রোদ হালকা কেঁপে উঠে এই কথায়। ভালবাসার মানুষ যখন কানে ফিসফিসিয়ে কিছু বলে তা যে, কতটা আনন্দে আর শিহরণ দেয়। তা শুধু যার এর সাথে অভিজ্ঞতা আছে সে জানে। আর প্রথম হলেতো কথাই নাই।
একটা ছোট মেয়ে আসে হাতে গোলাপ নিয়ে বলল, “এই ভাইয়া আপার লাইগা গোলাপ নিবেন? আপা কিন্তু খুব খুশী হইবো। ”
“কে বলছে, তোমার আপা গোলাপ নিলে খুশী হইবো?”
“আমি জানি, এইখানে আরও অনেক ভাইয়া আসে তারা আপাগোরে গোলাপ কিইনা দিলে আপারা খুশী অয়। কেউ কেউতো খোপায় গুইজা দেয়।”
মেয়েটার কথা শুনের রোদ প্রয়াস দুজনে হেসে দেয়। কী মিষ্টি মেয়ে,আর কত সুন্দর করে কথা বলে।
“আচ্ছা তুমি কী জানো এখানে যে ভাইয়া আর আপা আসে তারা একে অপরের কী হয়?”
“হ জানি,তারা প্রেরেমিক প্রেরেমিকা অয়।”
রোদ আর প্রয়াস এবার জোরে হেসে দেয়।
প্রয়াস দুষ্টুমি করে আবার বলে,
“তো তোমার কী মনে হচ্ছে আমরা প্রেরেমিক,প্রেরেমিকা?”
“হ। ”
রোদ মেয়েটিকে কাছে টেনে বলল, ” তুমি খুব সুন্দর।”
“আপনি আর ভাইয়া ও খুব সুন্দর আছেন। এক্কেবারে রাজপুত্রর, আর রাজকুমারীর লাহান।”
রোদ, প্রয়াস দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে হাসে।
প্রয়াস মেয়েটা থেকে তিনটি গোলাপ নেয়।
“ভাইজান খালি তিনটি গোলাপ কেন নিলেন?”
“সে আছে একটা কারণ, তবে আমি তোমাকে ৫০০টাকাই দিলাম। এই নাও ওইগুলো বিক্রি করলে আরও টাকা পাবে।”
“৫০০টাকা!” খুব অবাক হয়ে মেয়েটা বলে,
“ভাইজান আমি কোনদিন একলগে ৫০০টাকা দেহি নাই।” কেঁদে দেয় মেয়েটা। রোদ মেয়েটাকে কাছে এনে বুকের সাথে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
মেয়েটা বলল,” আপনারা আবার আইবেন তো?”
“অবশ্যই আমরা তোমার সাথে দেখা করতে আবার আসবো। তুমি আমাদের মনে রেখো।”
রোদকে প্রয়াস গোলাপ তিনটি নিড ডাউন হয়ে দেয়।বলে,” ভালবাসি ভালবাসি, ভালবাসি।”
রোদ বলে, “টু,থ্রি, ফোর।”
প্রয়াস বলে, “এটা কী হলো। তুমি এটা করতে পারো না। এতোদিনে একবার ও ভালবাসি বলোনি তুমি।”
“আচ্ছা বলবো। ” মেয়েটা পাশে দাঁড়িয়ে মিটমিট করে হাসছে।
রোদ তিনিটি গোলাপ থেকে একটা মেয়েটাকে দিতে গেলে প্রয়াস বাধা দেয়। বলে, “উঁহু এই গোলাপ থেকে কাউকে দেয়া যাবে না। তুমি ওর থেকে আরেকটি গোলাপ নিতে পারো।”
রোদ আরেকটি গোলাপ নিয়ে,মেয়েটাকে দেয়। “নাও আপুটা এটা তোমার জন্য। সবাইকে তুমি যে আনন্দ দাও আজ তুমি সেই আনন্দ উপভোগ করো। আমি তোমাকে এই গোলাপ ভালবেসে দিলাম।”
মেয়েটার চোখে পানি। রোদ পানি মুচে দিয়ে জড়িয়ে ধরে মেয়েটাকে।
পাশে থেকে একজন মেয়েটাকে ডাকে ফুল নিতে,বিদায় নিয়ে চলে যায় মেয়েটি।
প্রয়াস বলে, ” ফুচকা খাবে রোদ?”
“ওইদিন তো রাগ দেখিয়ে চলে গেলে।”
“আচ্ছা খাবো।”
দুজন ফুচকা ওয়ালার কাছে যায়।
প্রয়াস বলে, “ফুচকা দেন তো মামা?”
ভ্যানের পাশে দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়ার মজাই আলাদা। তুমি খেয়েছো কখনও? রোদ বলল
“হুম খেয়েছি।”
রোদ বলে, ” আমারটায় ঝাল বেশী হবে। প্রয়াস ও বলে।”
দুজনে দাঁড়িয়ে খাওয়া শুরু করে। প্রয়াস প্রথমে রোদের দিকে এগিয়ে দেয় নিজের হাতে। রোদ এই প্রথম বলে একটু লজ্জা পায়। চারপাশে কত মানুষ, যদিও সবাইপ্রায় কপোত-কপোতী। কেউ কারো দিকে তাকাচ্ছে না। সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত।
রোদ চোখ বন্ধ করে হা করে। প্রয়াস বলে আমাকে খাইয়ে দিতে হবে। রোদ সংকোচে খাইয়ে দেয় প্রয়াসকে।
প্রয়াস দুই কী তিনটি খেয়ে ঝালে নাজেহাল হয়ে যায়।
রোদ বুঝতে পারছে প্রয়াস ঝাল খেতে পারে না। কিন্তু তার চোখ ঠোঁট মুখ যেভাবে লাল হয়ে গেছে। বুঝাই যাচ্ছে কষ্ট হচ্ছে তার। পানি এগিয়ে দেয় রোদ, তাতে কোনো লাভ হয় না।
প্রয়াস বলে, “তুমি মুখ দিয়ে ফু দাও রোদ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। ”
রোদ কোনরকম সংকোচ না করে,প্রয়াস বেঞ্চে বসে।প্রয়াসের দু’গালে হাত দিয়ে রোদ মুখ দিয়ে ফু দেয়।
প্রয়াস মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকে রোদের দিকে।অপরূপ লাগছে রোদকে। মুহূর্তেই সব ঝাল উবে যায়।প্রয়াস ডুবে যায় রোদ নামক সমুদ্রে। পলকহীনভাবে তাকিয়ে থাকে রোদের দিকে। খুব কাছে আসায় রোদের শরীরে মিষ্টি ঘ্রাণ আসছে। যা ক্রমশ ঘিরে ফেলছে প্রয়াসকে। ভাবল এমন কাছে পাওয়ার জন্য, এমন যত্ন পাওয়ার জন্য হাজারও ঝাল খেয়ে জীবন কাটিয়ে দিবে সে।
রোদ প্রয়াসের চাহনিতে কিছু একটা টের পেয়ে একটু দূরে সরে বলল, “ঠিক লাগছে এখন?”
“উঁহু এলোমেলো লাগছে। বেসামাল লাগছে। সামলে নাও না আমায় রোদ।”
চলবে