মেঘের পালক চাঁদের নোলক পর্ব -০১

আজ বড় বোনের বিয়ে৷ বাড়িতে তুমুল হইচই। গান বাজনা বাজছে। বসে আছি ঘরের এক কোণে৷ ঠিক বসে নয়৷ বন্ধি করে রাখা হয়েছে লোক চক্ষুর আড়ালে। তালা বন্ধ বাহির থেকে৷ বের হওয়ার কোন উপায় নেই৷ যৌতুকের বিনিময়ে আমার সৎ বোন তিতির আপুর বিয়ে হচ্ছে৷ আমি বরাবর যৌতুকের বিরুদ্ধে ছিলাম৷ তাদের মুখে শুনেছি ছেলে সরকারি চাকরি করেন৷ এক কথায় রাজি হয়ে যান৷ যৌতুকের প্রসঙ্গ উঠলে প্রথমে ঘাবড়ে গেলেও পরে ঠিক রাজি হয়ে যান৷ দশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিয়ে হচ্ছে তিতির পাখির৷ বোনটা আমার বড্ড অবুঝ। ভালোবাসার কাঙাল। মা বাবার মিষ্টি কথায় ভুলে বিয়েতে রাজি হয়ে যায়৷ একে তো বাল্য বিবাহ৷ তার উপর যৌতুক৷

চোখের পাতায় তন্দ্রা এসে হানা দিচ্ছে৷ মস্তিষ্কের নিউরন জানান দিচ্ছে ঘুমের৷ গান বাজনার আওয়াজেও আমার তন্দ্রা থেমে নয়৷ ছোখের পাতা ভারী হওয়ার পিছনে দায়ী আমার সৎমা৷ খাবারের সাথে ঘুমের মেডিসিন মিশিয়ে দিয়েছেন৷ তিতির আপু্কে এক পলক দেখার বহু জনমের ইচ্ছা৷

আঁখি মেলে তাকাতেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম অন্ধকার ঘরে৷ কখন অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে! কপাটের ফাটল দিয়ে আসছে এক ফালি আলো৷ বাহিকে ঝলমল করছে বাহারী রকমের লাইটিং৷ কপাটের ফাটক দিয়ে কাউকে দেখার চেষ্টা করলাম৷ আশেপাশে কাউকে দেখতে পেলাম না৷ বিকট শব্দে গান বাজনা বাজছে। আমার আওয়াজ কারো কর্ণ অব্দি যাচ্ছে না৷ চারদিকে মিলিয়ে যাচ্ছে আমার আওয়াজ৷ অন্ধকারকে আপন মনে হচ্ছে৷ সুপ্ত হৃদয়ে বেদনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে৷ সৎ বোন বলে তিতির বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারল না৷ অন্য কোন কারণ আছে৷ আযানের ধ্বনি কানে আসতেই তন্দ্রা ভেঙে যায়৷ কখন চোখের পাতায় তন্দ্রা এসে হানা দিয়েছে ! কপাট খুলে প্রবেশ করলেন সৎমা তনিমা আফরোজ। মনের ভিতর সুপ্ত অনুভুতি জেগে উঠল৷ ক্ষোভ নিয়ে সৎমা কড়া ভাষায় বলে উঠলেন,

“নিধি নামাজ পড়ে জলদি আয় তো৷ অনেক কাজ বাকী আছে৷ দ্বিতীয়বার ডাকতে না হয়৷”

চোখ দু’টো লাল রক্তবর্ণ ধারণ করেছে৷ হয়তো তিতির আপুর জন্য সারারাত কান্না করেছেন৷ ভালোবাসার একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন৷ তবুও রাগী স্বভাবটা এখনও রয়ে গেছে। নিধি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানাল৷ হনহনিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়৷ নিধি মাথায় ওড়না দিয়ে বাহিরে পা রাখল৷ চারদিকে এক পলক তাকিয়ে পর্যবেক্ষণ করে নিল৷ ওযু করে এসে ফজরের সালাত আদায় করে নিল৷ সৎমার আদেশ পালন করতে ধীর পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে৷ সৎমায়ের ঘরে প্রবেশ করতে দেখতে পেল কিছু লোকের সাথে কথা বলছেন৷ বাবা নিরব মাহমুদ নিস্তব্ধ হয়ে বিছানার এক কোণে বসে আছে৷ চোখে মুখে হাজারও চিন্তার ভাজ৷ নিধি গুটি পায়ে বাবার পাশে বসতেই বাবা কেঁপে উঠল। ভেজা নয়নে নিধির দিকে তাকাল৷ তনিমা আফরোজ নিধির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে বললেন,

“আমার ছোট মেয়ে নিধি৷ রুপে লক্ষী গুণে সরস্বতী। নিধিকে ইশারা করে কাছে ডাকল৷ ভালোবাসায় আলতো করে জড়িয়ে ধরে বললেন,

“তোকে অনেক লেখাপড়া করাবে৷ মাসুদ, হাফিজ তোকে ঢাকা নিয়ে যাবে। তোকে বড় স্কুলে ভর্তি করবে৷”

আনন্দে চোখের কোণে জল আসল। সৎমাকে জড়িয়ে নিধি বলল,

“সত্যি মা! আমি ঢাকায় লেখাপড়া করব৷ আমি অনেক বড় ডাক্তার হবো৷ আমি গ্রামের সবাইকে বিনা টাকায় চিকিৎসা করব৷ আর কেউ বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না৷

তনিমা আফরোজ নিধির কপালে ওষ্ঠ স্পর্শ করে বললেন,

“হ্যাঁ মা৷ তোর জন্য অনেক দোয়া রইল৷ খুব খারাপ লাগছে তোর জন্য। আজই তোকে চলে যেতে হবে৷”

অবুঝ নিধি হাসিমুখে জবাব দিল,

“কোন সমস্যা নেই৷ আমি আজই উনাদের সাথে ঢাকায় যাব৷”

নিরব মাহমুদ নিরবে নিভৃতে বসে চোখের জল লুকানোর চেষ্টা করছেন৷ এক মেয়ের ভালো করতে গিয়ে অন্য মেয়ের ধ্বংস দেখছেন স্বয়ং চোখে৷ বাবা হয়েও কিছু করতে পারছে না৷ সূর্যের সোনালী কিরণ ধরনীর বুকে পড়তেই ঢাকার উদ্দেশ্য বের হচ্ছে নিধি৷ মনের মাঝে অজানা ভয় কাজ করছে৷ দৌড়ে বাবা নিরব মাহমুদকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কান্না করেছে৷ পনেরো বছর কিশোরী মেয়ের এটাই মনে হয় শেষ জড়িয়ে ধরা৷ আর কোনদিন দেখা হবে না বাবার সাথে৷ তনিমা আফরোজ নিধির হাত ধরে হাফিজের হাতে তুলে দিয়ে বললেন,

“নিধিকে নিয়ে যান৷” নিধিকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

“নিধি প্রথম দিকে একটু খারাপ লাগবে মা৷ ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে৷ মন খারাপ করবি না৷ ছয় মাস পর পর তোকে বাড়িতে ঘুরতে নিয়ে আসবে৷”

কোন কথার বলার সুযোগ পেল না ছোট্ট নিধি৷ ভ্যানে করে চলে আসতে হলো ঢাকার বাস স্ট্যাডে৷ নয়ন দ্বয় ঝাপসা হয়ে আসছে অচেনা অজানা দু’টো মানুষের সাথে এতো দূর পাড়ি দিচ্ছে৷ মাসুদ নামের লোকটা তিনটা টিকেট কাটলেন৷ উড়ে পড়লাম বাসে৷ কিছু সময়ের মাঝে আমাদের বাস ঢাকায় উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করল৷ নিধি জানালার পাশে বসে আছে৷ অজানা অচেনা গন্তব্য পাড়ি দিচ্ছে। ঝড়ো হাওয়ায় নিধির অবাধ্য চুলগুলো উড়ছে৷ নিধি প্রথম ঢাকায় যাচ্ছে৷ বাহিরের অপরুপ প্রকৃতির দৃশ্য দেখতে দেখতে নিধির কখন তন্দ্রা চলে বুঝতে পারেনি! হাফিজের ডাকে নিধির ঘুম ভাঙে৷ ঘুম ঘুম চোখে হাফিজকে দেখে ভয় পেয়ে যায়। পরক্ষণেই মনে পড়ে যায় হাফিজ তাকে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন পড়ানোর জন্য৷ নিধি ঘুমমাখা কন্ঠে বলল,

“আমরা এখন কোথায় আছি? আমরা কি ঢাকায় চলে আসছি?”

হাফিজ গম্ভীর কণ্ঠে জবাব দিল,

“হ্যাঁ আমরা চলে আসছি৷ এখন অন্য গাড়িতে করে যেতে হবে৷”

বাস থেকে নেমে একটা সিএনজি ভাড়া করল মাসুদ৷ সিএনজি এসে থামল বিশাল বড় বাড়িতে৷ ভিতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ল অনেক মেয়েকে। ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে নিধির৷ হাফিজ নিধির হাত টানতে টানতে দুইতলা নিয়ে গেল৷ হাফিজ শক্ত করে চেপে ধরে আছে নিধিকে৷ ছেড়ে দিলেই যেন পালিয়ে যাবে৷ একটু বেশি করে চেপে ধরলে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে৷ একটা রুমে এসে হাফিজ নিধির হাত ছেড়ে দিল৷ কারুকাজ করা সুন্দর পালঙ্কে বসে আছেন সুন্দর মাঝ বয়সী রমনী৷ হাফিজ নিধির উদ্দেশ্যে বলল,

” কচি মেয়ে একটা৷ যে কেউ তাকে দেখে ফিদা হয়ে যাবে৷ এই প্রথম সবথেকে কম বয়সী কচি মেয়ে পেলাম বাঈজী।”

ভদ্র মহিলা পান চিবাতে চিবাতে বলল,

“এমনি এমনি ছয় লক্ষ টাকা দেয়নি৷ আমি তার ছবি দেখেই ছয় লক্ষ টাকা দিছি৷ আজ রাতেও শাওন চৌধুরী আসবে৷ তার জন্য এই মেয়েকে তৈরি কর। ছোট্টো খুকিকে দেখে শাওন চৌধুরীর মন উতলা হয়ে যাবে।

নিধির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। বুঝতে বাকী রইল না এই মহলের সবাই দেহ ব্যবসা করে৷ বাংলা ভাষায় বলে নিষিদ্ধ পল্লী। এখানে সমাজের কিছু মানুষ তাদের লোভ লালসা মিটাতে আসে৷ ধপাস করে বসে পড়ল নিধি৷ মুহুর্তের মাঝেই স্বপ্ন ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল। চোখ থেকে অঝোরে রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছে৷ এজন্য বাড়ি থেকে আসার সময় এতো খারাপ লাগছিল৷ বাবা কেন নিরবে নিভৃতে বসে অঝোর কান্না করছিলেন? বাঈজী নামের ভদ্র মহিলা নিধির দিকে এগিয়ে এসে বলল,

“এই মেয়ে, নাম কি তোর? কান্না থামা; যে কাজে তোকে আনছি সে কাজ কর৷ তোর মা তোকে আমাদের কাছে বিক্রি করে দিছে৷”

কান্নায় কথা বলতে পারছে না৷ টাকার জন্য সৎমা বিক্রি করে দিল৷ নিধি বুঝতে পারল তাকে বিক্রি করা টাকা দিয়েই তিতির আপুর বিয়ে দিল। ভেজা কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,

“তাসফিয়া নিধি৷”

নিধি বাঈজীর পা ধরে ভেজা গলায় বলল,

“আমাকে এখান থেকে যেতে দেন৷ আমি এসব কাজ করতে পারব না৷ আমি আপনার মেয়ের মতো৷ আমাকে এখান থেকে মুক্তি দেন৷”

মহিলার কন্ঠে যেন তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠল। নিধিকে লাথি দিয়ে দূরে সরিয়ে দিল৷ রাগী গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

“তুই এখান থেকে পালিয়েও যেতে পারবি না৷ তোকে আমি টাকা দিয়ে কিনছি৷ এখান শুধু আসার পথ আছে, যাওয়ার পথ বন্ধ। তুই অনেক কচি। পুরুষ মানুষ কচি মেয়ে পছন্দ করে বেশি৷ এখন তোর কাজ হলো পুরুষ মানুষের মন জয় করা৷”

এমন বাজে ভাষা শুনে নিধির ম*রে যেতে ইচ্ছা করছে৷ এখনো এতো বাজে কথা শুনেনি৷ সৎমা সারাদিন কাজ করলেও খারাপ ভাষায় কথা বলেনি৷ নিধি ফ্লোর থেকে উঠে আবারও বাঈজীর পা ধরল৷ অসহায় দৃষ্টি নিয়ে তার দিকে তাকায়৷ চোখে হাজারো স্বপ্ন। মনে হাজারো ভয় বাসা বেঁধেছে৷ নয়ন জোড়া বলে দিচ্ছে নিধি কতো অসহায়। কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠল,

“আমাকে এখান থেকে যেতে দেন৷ আমি সারা জীবন আপনার গোলাম হয়ে থাকব৷ কিন্তু আমি এসব কাজ করতে পারব না৷ আমার উপর দয়া করেন৷”

নিধির চুলের মুড়ি ধরে রাগী গলায় বলল,

“আমার মাঝে কোন দয়া নেই৷ তোর মতো মেয়ের প্রতি দয়া দেখিয়ে আমি পথে বসব৷”

হুংকার দিয়ে ডাকলেন শ্যামলী নামের একজন মেয়েকে৷ সাথে সাথে দৌড়ে প্রবেশ করল শ্যামলী নামের মেয়েটি৷ মেয়েটির চোখে অনেক মায়া৷ ঠোঁটের কোণে কষ্টের রেখা৷ জোর করে ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা বজায় রেখেছে৷ উজ্জ্বল ফর্সা না হলেও গাঢ় লিপস্টিক, কপালে ছোট একটা টিপ, লম্বা খোলা কেশে অনেক সুন্দর লাগছে৷ নিচু গলায় বলল,

“বাঈজী কি করতে হবে?”

নিধিকে শ্যামলী নামের মেয়ের দিকে ধাক্কা দিয়ে বলল,

“এই মেয়েকে ভালো করে কাজ বুঝিয়ে দে৷ আর হ্যাঁ একে দেখে মনে হচ্ছে ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারে না৷ কিন্তু অনেক চতুর মেয়ে৷ চোখে চোখে রাখবি৷ শাওন চৌধুরীর জন্য তাকে তৈরি কর। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে৷ একটু পরেই শাওন চৌধুরী চলে আসবেন৷”

শ্যামলী মাথা নাড়িয়ে নিধিকে টানতে টানতে একটা ঘরে নিয়ে যায়৷ নিধি অনবরত কান্না করেই যাচ্ছে৷ শ্যামলী রুমে এসেই কপাট বন্ধ করে দিল৷ কপাট বন্ধ করার শব্দে নিধির আত্মা কেঁপে উঠল। ম্যামলীর পা ধরে বলল,

“আপনি আমার বড় বোনের মতো৷ আমার সাথে এমন অন্যায় হতে দিবেন না৷ আমাকে দয়া করে এখান থেকে যেতে দেন৷ আপনার ছোট বোনের সাথে এমন হলে আপনি ঠিক থাকতে পারতেন৷”

নিধির প্রতি শ্যামলীর খুব মায়া হলো৷ অদৃশ্য ভালোবাসার বন্ধন জেগে উঠল। কিঞ্চিৎ ভালোবাসায় ভরে উঠল শ্যামলীর মন৷ নিজেকে বড় বোনের আসনে বসাল। নিধিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিল৷ নিধি হতভম্ব হয়ে গেল৷ ভেজা গলায় বলল,

“আমাদের জীবন চার দেয়ালে বন্ধ হয়ে গেছে বোন৷ এখান থেকে আমাদের মুক্তি নেই৷ আমিও তোর মতোই ছিলাম৷ আমাকে নর পশুরা ছিঁ’ড়ে ছিঁ’ড়ে খেয়েছে৷ তাদের ভোগের বস্তু হয়ে বেঁচে আছি৷”

নিধিকে শ্যামলী নামের মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বলল,

“এখান থেকে পালানোর কোন পথ নেই৷ আমি এখান থেকে পালিয়ে যাব৷ আমাকে একটু সাহায্য করবেন৷ আমি এখান থেকে পালাতে পারলে আপনাকে অন্ধকার জগৎ থেকে বের করে নিয়ে যাব৷”

শ্যামলী নিধির চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল,

“এখান থেকে পালানোর কোন পথই নেই৷ আমিও তোর মতো অনেক পালানোর চেষ্টা করছি৷ দিন শেষে ব্যর্থ হয়ে এখানেই থেকে যেতে হয়েছে৷”

“আমাকে শুধু মূল দরজার বাহিরে বের করে দিবেন৷ তারপর আমি পালাতে পারব৷ আমি সবার চোখ ফাঁকি দিতে পারব৷ যেদিকে দু’চোখ যাবে সেদিকেই যাব৷ তবুও নিষিদ্ধ পল্লীতে থাকব না৷”

নিধিকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে বলল,

“এখান থেকে পালানো যায়না৷ এখান থেকে সেই বেরিয়ে যেতে পারে যাকে কেউ কিনে নেয়৷ তবে তুই দেখতে মাশাল্লাহ খুব সুন্দর। তুই যদি কোন বড়লোক টাকা ওয়ালার মন জয় করতে পারিস তাহলে তোকে এই অন্ধকার জগৎ থেকে নিয়ে যেতে পারে৷ তবুও মুক্তি নেই৷ রক্ষিতা হিসেবে রাখবে তোকে। প্রতিরাতে বিছানা শেয়ার করতে হবে৷ ভালো কাছের জন্য কেউ নিয়ে যাবে না৷”

ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠলেও মুহুর্তের মাঝে বিলীন হয়ে যায়৷ নিধির চোখে মুখে ফুটে উঠল আগুনের লাভা৷ কঠিন কন্ঠে বলল,

“আমি এখান থেকেই আজ রাতেই পালাব৷ আমার কথা মিলিয়ে নিবেন৷ আপনার কাছে ঘুমের মেডিসিন থাকলে দেন৷ সুন্দরী মেয়েরা শুরু রুপ দেখায় না৷ সুন্দরী মেয়েদের কাছে অনেক কলাকৌশল আছে৷ শাওন চৌধুরীই হবে আমার মুক্তির গুটি৷ তার মাধ্যমেই আমি এখান থেকে পালাব৷”

রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে ছেলে মানুষের আনাগোনা বেড়ে গেল৷ ধীরে ধীরে নিষিদ্ধ পল্লী পুরুষ মানুষে ভরে গেল৷ অবশেষে অন্ধকার পল্লীতে প্রবেশ করল শাওন চৌধুরী। নিধির ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠল।

চলবে…..

#মেঘের_পালক_চাঁদের_নোলক
#পর্ব_০১
#অধির_রায়

নিয়ে আসলাম নতুন গল্প। ভালোবাসার যোগ্য হলে রেসপন্স করবেন৷ রেসপন্সের উপর নির্ভর করে এগিয়ে যাব৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here