#যদি_জানতে
Part:02
Written by: Shawon
বাসরঘরে বসে আছি,এই অল্প সময়ের মাঝেই অন্যকিছু ঠিকঠাক মতো হোক আর না হোক রুমটা আর খাট’টা ঠিকই সাজানো হয়েছে।বাসর ঘর নিয়ে কতই না স্বপ্ন ছিলো,কিন্তু এখন আর নেই।কারণ ভালোবাসার মানুষটার সাথের অনুভূতি আর অচেনা অজানা মানুষের সাথের অনুভূতি দিন-রাত পার্থক্য।খুট করে আওয়াজ হলো,বুঝতে পারলাম ওনি রুমে এসেছেন।দরজা লক করে আস্তে আস্তে আমার কাছে এসে বসলো।আমি ঘোমটা একটু লম্বা করে দেওয়া,যারফলে আমার মুখটা ওনি দেখতে পাচ্ছেন না।হঠাৎ করে ওনি দাঁড়িয়ে গেলেন,আর বলতে শুরু করলেন….
-“আমি জানি না,তোমাকে কিভাবে কথাগুলো বলবো?আর কথাগুলো শুনার পর আমার সম্পর্কে তোমার কেমন ধারনা হবে?কিন্তু কথাগুলো তোমাকে আজকেই বলে দেওয়া উচিত,নয়তো পরে হয়তো তুমি আমাকে ভুল বুঝতে পারো।”
আমি ওনার কথাগুলো শুনে কিছু বুঝতে পারছিলাম না।আমি চুপচাপ বসে আছে দেখে,ওনি আবার বলতে শুরু করলেন….
-“আমি এই বিয়ে টা মানি না,মানে আমি মন থেকে এই বিয়ে করিনি।আমি বাবার জন্য বাধ্য হয়ে এই বিয়েতে মত দিয়েছি,নয়তো বাবা আমাকে তার সম্পত্তির ভাগ থেকে বাদ দিয়ে দিতো।আর তাছাড়া আমি অন্য একজনকে খুব বেশী ভালোবাসি,তাকে আমি কোনো মতেও হারাতে পারবো না”
ওনার কথাগুলো শুনে আমি আর নিজের রাগ টাকে ধরে রাখতে পারলাম না।সর্বজোরে ওনার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলাম।ওনি অনেকটা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালেন,আমি চোখগুলো বড় বড় করে বললাম….
-“আপনি আমাকে আপনার সম্পত্তির ভাগ পাওয়ার জন্য বিয়ে করেছেন!!আমাকে কি আপনার সম্পত্তির ভোগের হাতিয়ার মনে হয়??আপনারা ছেলেরা নিজেদের কে কি মনে করেন??যখন যেভাবে ইচ্ছে তখন সেভাবে ব্যাবহার করবেন??আর আপনি কি বললেন,আপনি অন্য কাউকে ভালোবাসেন!তাকে কোনো মতে হারাতে পারবেন না!তাহলে আমাকে কেন বিয়ে করলেন?আপনার বাবা মাকে আপনার ভালোবাসার কথা বলতে পারতেন,ভালেবাসার মানুষ টাকে সবার সামনে নিয়ে আসতে পারতেন।শুধু শুধু আমার সাথে কেন এমন করলেন?তাও আবার সবটুকু অতীত জেনেও?
“আমার কথাটা তো শুনো”
“ব্যস,আমি আপনার আর কোনো কথা শুনতে চাচ্ছি না।আমি এখনি এই মুহুর্তে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো”
এই কথাগুলো বলে,আহিন চলে যেতে নিলে শাহরিয়ার তার হাত ধরে টেনে বিছানায় ফেলে দিয়ে বলে…
-“রাগের মাথায়,তুমি কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছো তা তুমি বুঝতে পারছো?আজকে তুমি এখান থেকে চলে গেলে,তোমার আব্বু আম্মুর অবস্থা কি হবে বুঝতে পারছো!তোমার আব্বু আম্মুর কথাটা না হয় বাদই দিলাম তোমাদের সমাজ কি বলবে?তোমার আব্বু আম্মু,তুমি,মেনে নিতে পারবে সমাজের কটুকথা??”
-“আপনি কি এখন আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন?”
-“আমি তোমাকে ভয় দেখাচ্ছি না!আর তোমাকে ভয় দেখিয়ে আমার কি কোনো লাভ হবে?তুমি এখান থেকে চলে গেলে সবাই বুঝবে তুমি তোমার নিজের ইচ্ছেতে চলে গেছো।আমি তোমার ভালোর জন্যই বলছি রাগের মাথায় কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে,কাল সকালে আমরা ঠান্ডা মাথায় কোনো সিদ্ধান্ত নিবো?”
-“কাল সকালে মানে?আজকে কি আপনি এই রুমে আমার সাথে থাকবেন?”
-“থাকতেই পারি,আমি তোমার বিয়ে করা হাসবেন্ড”
-“আর হাসবেন্ড”
আহিন তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে কথাটা বললাম।ওনি বললেন…
-“যাই হোক তুমি বিছানায় শুয়ে পড়ো,আমি গেস্ট রুমে শুয়ে পরবো”
শাহরিয়ার কথাগুলো বলে ওয়াশরুমে চলে গেল।আহিন বিছানার গুটিয়ে বসে পরলো।এতক্ষণ শক্ত হয়ে কথাগুলো বললেও কান্না করতে লাগলো।আর নিজেকে নিজেই ছি ছি করতে লাগলো।কারণ তার ভাগ্যের জন্য।কেনই তার সাথে বারবার এমন হয়?সবকিছু ভুলার জন্যইতো এই নতুন পরিবারে পা রেখেছিলো,ভেবে ছিলো এই নতুন মানুষ তাকে ভালোবেসে অতীতের মানুষটার সব দুঃখ কষ্ট দূর করে দিবে।কিন্তু তাতো হলোই না বরং আরো দ্বিগুন পরিমানে বেড়ে গেল।
সকাল হয়ে গেছে,শাহরিয়ার গেস্ট রুম থেকে নিজের রুমে আসলো।আহিনের দিকে তাকাতেই সে মুগ্ধ হয়ে গেল,ঘুমের মাঝে আহিনকে বড্ড মায়াবী লাগছে।তারসাথে কালকের ম্যাকআপ টা এখনো রয়ে গেছে।কতগুলো চুল সামনে এসে গেছে।ঘড়ির এলার্মের শব্দ শাহরিয়ারের ধ্যান ভাঙ্গলো আর আহিনের ঘুমও।আহিনের মাথাটা চিন চিন ব্যাথা করছে,চোখ খুলে সামনে তাকাতেই শাহরিয়ার কে দেখতে পেল।নিজের কাপড়ের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখলো ঠিকই আছে।শাহরিয়ার বুঝতে পারছিল না কি বলবে তাই বললো…
-“গুড মর্নিং,ঘুম কেমন হয়েছে”
-“আপনার ঠিক কি মনে হচ্ছে আমার ঘুম নিয়ে আপনি বলতে পারেন আমাকে!”
-“দেখো,আমার কিন্তু ত্যাড়া ত্যাড়া কথা একদম পচ্ছন্দের না।আর তোমার যদি এত বেশী প্রবলেম হয় সবকিছু জেনে এই সম্পর্ক টা সবার সামনে চালিয়ে নিতে তাহলে প্লিজ চলে যান!!আর আপনাকে কোনো মিথ্যা বলে যেতে হবে না।কালরাতে আমার বলা সবকথাগুলো নিচে সবার সামনে বলে চলে যেতে পারেন।তাতে যদি আমি সম্পত্তি থেকে বাদও যায় আমার কিচ্ছু হবেনা।তোমাকে যা বুঝানোর আমি রাতে বুঝিয়ে বলেছি”
-“হুম,আমি তো এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবোই,কিন্তু এখন না।আমি আপনার সাথে এই মিথ্যে বিয়ে,মিথ্যে সংসার আর মিথ্যে কাপলের নাটক করতে রাজি।কিন্তু আমার কতগুলো শর্ত আছে।”
-“কি শর্ত??”
-“শর্ত নাম্বার এক,আমাকে সবার সামনে আপনার বউ বলে পরিচয় দিতে হবে।শর্ত নাম্বার দুই,আমি যতদিন এই বাড়িতে আছি ততদিন আমার সব দায়িত্ব আপনাকে নিতে হবে কিন্তু আপনি আপনার অধিকার ফলাতে আসবেন না।আমিও আপনার কোনোকিছু’তে অধিকার ফলাতে আসবো না।শর্ত নাম্বার তিন,আমার বা আপনার কেউ কারো পার্সোনাল লাইফ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবো না।শর্ত নাম্বার চার,আমি যেমন আপনার পরিবারের সামনে মিথ্যে নাটক চালিয়ে যাবো আপনাকেও ঠিক একইভাবে আমার পরিবারের সামনে মিথ্যে নাটক চালিয়ে যেতে হবে।শর্ত নাম্বার পাঁচ,আপনার এই রুমের প্রতিটা জিনিসের উপর আমাকে হাফ হাফ ভাগ দিতে হবে।শর্ত নাম্বার ছয়,আমার বলা শর্তগুলো কম্পিউটারাইজ করে আমাকে দিতে হবে এবং আপনি শর্তের স্বীকারোক্তি দিবেন।যদি রাজি থাকেন তাহলে বলুন”
-“ব্যস,এতটুকুই?”
-“হুম,এতটুকু মানলেই হবে”
-“যথাযথ ভাবে মানবো,এখন ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো।সবাই হয়তো আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।”
শাহরিয়ার রুম থেকে চলে গেল।আহিনও ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে গেল।আহিন কথাগুলো শর্ত হিসেব করে বললেও কথাগুলো তার মনের।সে চায় না তার আব্বু আম্মু আবার সমাজের কটুকথার সম্মোক্ষীন হোক।আর আহিন নিজের মন থেকেই সব করবে কিন্তু শর্তটা থাকবে।
শাহরিয়ারের বাবা-মা,ছোট ভাই,শাহরিয়ার,আহিন একসাথে নাস্তা করছিল।তখনই কলিংবেল টা বেজে উঠলো।শাহরিয়ারের মা দরজা খুলার জন্য উঠতে নিলে আহিন না করে,সে নিজেই দরজা খুলতে যায়।দরজা খুলার সাথে সাথেই যাকে দেখলো তাতে করে তার চোখ বড় বড় হয়ে গেল।এতদিন পর আজকে তার সাথে এভাবে দেখা হবে বুঝতেই পারেনি।সে কিছুটা স্তব্ধ হয়ে যায়,গলা দিয়ে কোনো স্বর বের হচ্ছে না।তাহলে কি…..
#চলবে!!!
Part:03
Written by: shawon
।এতদিন পর আজকে তার সাথে এভাবে দেখা হবে বুঝতেই পারেনি।সে কিছুটা স্তব্ধ হয়ে যায়,গলা দিয়ে কোনো স্বর বের হচ্ছে না।তাহলে কি…..
আমি যেমন অবাক হয়ে তারদিকে তাকিয়ে আছি ঠিক সেও আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।ও এখানে কি করছে আমি তা ভাবছি।আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আমার সামনে দাড়িয়ে আছে।বেস্ট ফ্রেন্ড বললে ভুল হবে এক্স বেস্ট ফ্রেন্ড।আমাদের মাঝে এখন দূরত্ব অনেক,সামান্য একটা ভুল বুঝাবুঝি আমাদের এত দূরে সড়িয়ে দিয়েছে।আমার ভাবনার দেয়াল ভাঙ্গলো কাইফা’র কথায়…
-“ওহহ,তারমানে তুই এখনো পাল্টাসনি।অন্যের আপন মানুষটাকে কেড়ে নেয়া এখনো তোর স্বভাবে রয়ে গেছে।”
-“কি বলছিস কি তুই?আর আমি তোকে হাজারবার বুঝিয়েছি আগের ঘটনায় আমি দায়ী নয়।”
-“আগের ঘটনা না হয় বাদই দিলাম তাহলে এখনের টার জন্য কে দায়ী??”
-“এখনের জন্য মানে?”
-“একদম ন্যাকা সাজবার চেষ্টা করবিনা!!”
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই আমার শ্বাশুড়ি মা এসে কাইফ’কে দেখে বললেন…
-“আরে কাইফা,তুই!!কখন এলি?আর বাহিরে দাড়িয়ে আছিস কেন?”
-“তোমার বউমা আমাকে ঢুকতে দিলো কখন?”
-“হয়তো তোকে চিনতে পারেনি।আহিন ও আমার ভাইয়ের একমাত্র মেয়ে আর কাইফা এ তোর…
-“ভাবী!তোমার ছেলের বউ”
তারপর হাসতে হাসতে আমাকে ক্রস করে ভিতরে চলে গেল।যাবার আগে ও আমার দিকে যে দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল তা অতি ভয়ংকর দৃষ্টি ছিলো।
আমি নিজের রুমে আসতেই যা দেখলাম তাতে করে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।শাহরিয়ার আর কাইফা একে অপরের ঠোঁটের স্বাদ গ্রহন করছে।আমি পিছয়ে যেতে নিলেই পাশে থাকা ফুলদানি নিচে পরে যায়।ভেঙে যাওয়া ফুলদানির শব্দে শাহরিয়ার আর কাইফা দূরে সরে যায়।দরজার দিকে তাকিয়ে আহিন’কে দেখতে পেয়ে শাহরিয়ার স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বলে….
-“আরে,তুমি!!আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম।আর তুমি এসেছো ভালোই হয়েছে।আসো পরিচয় করিয়ে দেয়।ও আমার মামাতো বোন আর আমার জানপাখি।কালরাতে যার কথা বলেছিলাম সেই জানপাখি।কখন থেকে বুঝিয়ে যাচ্ছি আমাদের মাঝে কালরাতে কিছুই হয়নি তাও বিশ্বাস করছে না,তুমি একটু নিজের মুখে বলে দাওতো আমাদের মাঝে কিছু হওয়া দূর তো আমরা দুজন একটা বিছানাতেও ঘুমায়নি।”
আহিন নিজেকে খুব কষ্ট করে সামলে নিয়ে কাইফা’র সামনে গিয়ে বললো…
-“ওনি যা বলছেন সব সত্যি বলছেন।আমাদের মাঝে কিছুই হয়নি।”
-“ওহ প্লিজ,তোমার কথা আমি কখনোই বিশ্বাস করবো না,আমি আমার শাহরিয়ারের কথায় বিশ্বাস করেছি কিন্তু ওর ঠোঁটের স্বাদটা পেতে একটু নাটক করলাম আরকি”
কাইফা কথাটা বলে শাহরিয়ারের দিকে তাকালে,শাহরিয়ার কিছুটা লজ্জা পেয়ে মাথায় চুলকাতে চুলকাতে বাহিরে চলে যায়।শাহরিয়ার চলে যাবার সাথে সাথে কাইফা রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়।তারপর আহিনের সামনে দাড়িয়ে বলে….
-“এতক্ষণে হয়তো তুই বুঝে গেছিস,আমি শাহরিয়ারের শুধু মাত্র মামাতো বোনই নয় ওর ভালোবাসার জানপাখি।কি খুব কষ্ট লাগছে?আমারও ঠিক এমন কষ্ট ই হয়েছিল যখন আমার ভালোবাসার মানুষ টা আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল।”
-“মোটেও না,আমার কেন কষ্ট হবে?আমি কি ওনাকে ভালোবাসি নাকি?ওনার আমার পরিচয় হয়েছে একদিনও হয়নি এর মাঝে আর যায় হোক ভালোবাসা জন্মায় না!!”
-“ভালোবাসা না জন্মাক,নিজের জামাইকে অন্যের সাথে দেখার কষ্ট টা!”
-“এসব ফালতু কথা বলার একদম সময় আমার কাছে নেই।আমাকে যেতে হবে”
-“হুম যা,কিন্তু মনে রাখিস এই রুমে ঢুকার আগে নক করে ঢুকবি কারণ আমি আর শাহরিয়ার যেকোনো পরিস্থিতিতে থাকতে পারি!!”
আহিন চলে যাচ্ছিল কিন্তু কাইফা’র কথা শুনে দাড়িয়ে গেল।ভাবতে লাগলো,”কাইফা তো এরকম ছিলো না, যে কাইফা এতটা লজ্জাবতী ছিল সেই কাইফা’ই আজকে বলছে অন্য পুরুষের সাথে যেকোনো পরিস্থিতিতে থাকতে পারে।যে কাইফা আহিনে’র জন্য সবকিছু করতে পারতো সেই কাইফা’ই আজকে তার থেকে সবকিছু কেড়ে নিতে চাচ্ছে।নাহ এটা বললে ভুল হবে,আমি-ই তো ওর থেকে ওর ভালেবাসা কেড়ে নিচ্ছি।আমাকে এটা নিয়ে ওনার সাথে কথা বলতেই হবে।আহিন কথাগুলো ভেবে দরজা খুলে বের হতে নিবে তখনই কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পরে যেতে নিল।ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিলে কেউ একজন তার কোমড়ে ধরে ফেলে,মিট মিট করে চোখ খুলে দেখে শাহরিয়ার ওর দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।দুজন দুজনের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে,দুজনের চোখেই যেন কি একটা মায়া কাজ করছে।কাইফা দাঁড়িয়ে থেকে সবটা দেখছিল,আহিনের হুশ আসতেই নিজেকে শাহরিয়ার এর থেকে ছাড়িয়ে চলে যেতে নিলে শাহরিয়ার বলে….
-“তোমার কন্ট্রাক পেপার।তুমি যে যে শর্তগুলো দিয়েছিলে আমি সবকিছু ঠিকঠাক মতো করে লেখে নিয়ে আসছি।চায়লে একবার চ্যাক করে দেখতে পারো।আহিন পেপার টা নিয়ে ভালো করে পরে দেখে সবকিছু ঠিকই আছে,শাহরিয়ারের হাত থেকে কলমটা নিয়ে সাইন করে দেয়।আহিন ঐ পেপারে সাইন করে শাহরিয়ারের সাইনও নিয়ে আলমিরাতে রেখে দেয়।তারপর রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
সন্ধ্যায়,সবাই ড্রয়নিং রুমে বসে নাস্তা করছিলো।কথায় কথায় জানা যায় কাইফা কিছুদিন এই বাড়িতেই থাকবে।সবাই খুশি হলেও আহিন একটু চিন্তায় পরে যায়।কিন্তু পরক্ষণেই যখন মাথায় আসলো কাইফা এখানে থাকলে ও আগের সব ভুল বোঝাবুঝি শেষ করে দিতে পারবে তখন আবার মনে শান্তি আসে।
রাতে আহিন বিছানায় শুয়ে আছে তখনই শাহরিয়ার রুমে আসলো।আহিন উঠে বসে,আহিন’কে উঠে বসতে দেখে শাহরিয়ার জিজ্ঞেস করে..
-“কেনো সমস্যা?না উঠে বসলে তো তাই!”
-“নাহ,কেনো সমস্যা না।কিন্তু কিছু জানার ছিলো।”
-“হুম,বলো কি জানতে চাও।যদি আমার কাছে উত্তর থাকে আমি অবশ্যই বলবো।”
-“কাইফা কি আমাকে নিয়ে কোনো সমস্যা করছে?আমি বলতে চাচ্ছি,আমাকে নিয়ে ও কি কি বললো?”
-“বলছে তুমি দেখতে সুন্দর আছো,তোমার কি কোনো কষ্ট হবে কিনা?”
-“ওহহ”
আহিন মনে করেছিল,কাইফা হয়তো তাদের বন্ধুত্বের পরিচয়টা দিবে কিন্তু না কাইফা তেমন পরিচয় দেয়নি।সে আবার শাহরিয়ারকে জিজ্ঞেস করে..
-“আচ্ছা আপনাদের রিলেশন কতদিনের?”
-“দু’বছরের,তোমাকে আরেকদিন সময় করে সবটুকু বলবো।আজকে আমার শরীর ভালো লাগছেনা।ঘুমাতে হবে,তুমি বিছানায় ঘুমিয়ে পরো আমি সোফায় শুয়ে পরছি”
-“আপনি সোফায় কেন ঘুমাবেন?”
-“কি করবো বলো?গেস্ট রুমে কাইফা থাকবে এখন থেকে আর বিছানায় তো আর আমরা একসাথে থাকতে পারবো না।তাই না!!”
-“হুম”
আহিন আর কোনো কথা না বলে শুয়ে পরলো।শাহরিয়ারও ওয়াশরুম থেকে এসে সোফায় শুয়ে পরলো।
#চলবে!!