রংধনুর মিল পর্ব -১২ ও শেষ

#রংধনুর_মিল
#পর্বঃ১২ (শেষ)
#মাহিয়া_মুন

আকাশের মাঝে দৃশ্যমান শুকতারার আলোয় রাতের প্রথম প্রহর হয়ে উঠেছে আলোকিত। সেই সাথে থালার ন্যায় পূর্নিমার চাঁদ দিনে সূর্যের আলো গ্রহণ করে এই আঁধারে নিমজ্জিত রজনীতে সেই আলো নিজ দায়িত্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে। চাঁদ এবং শুকতারার আলোয় ধরণী এক অপার সৌন্দর্যে নিমজ্জিত হয়েছে।
এই মন মাতানো সৌন্দর্যের মাঝে ছাদের এক কোনায় দাড়িয়ে থেকেও মন গহীনে সুখের আলো দেখছে নাহ নুজহাত। এতো আলো নিজের গায়ে মাখিয়েও চারপাশ অন্ধকার লাগছে। যেখানে মনের অন্দমহলে নেই মানষিক শান্তি, সেখানে ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটবেই বা কি করে। এই আলো যেন তার কাছে আরো বিরক্তের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবিদের সাথে করা অন্যায় গুলো তাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। সত্যিকারের ভালোবাসা বুঝতে বড্ড ভুল করে ফেলেছে। এখন চাইলেও আর তাকে ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। সেকি আসবে তার মতো অপরাধীর কাছে। হয়তো আসবে নাহ, তবে নুজহাতের যে এখন আবিদ কে চাই, খুব কাছে। যেখানে দুজন দুজনকে অনুভব করতে পারবে। একজনের হৃদস্পন্দনের শব্দের তালে মিলে যাবে অপর জনের হৃদস্পন্দন। এই পূর্নিমার চাঁদ এর আলো গায়ে মাখবে দুজন। গভীর রাতে রাস্তায় হাতে হাত ধরে হাঁটবে। পালতোলা নৌকায় চড়ে ভেসে যাবে অজানায়। পূর্বের ন্যায় তার হাত মুড়িয়ে দিবে কাঁচের চুড়ি তে। আরো কতো শত ইচ্ছে রয়ে গেছে মন গহীনে। এগুলা পুরন করা কি আদও সম্ভব। কোথায় সে আর কোথায় আবিদ। একই আকাশের নিচে থেকেও আজ দুজন বহু দূরে। গত পরশু তাকিয়ার থেকে জানতে পেরেছে আবিদ নাকি চাকরী পেয়েছে। বেশ ভালো বেতনেই চাকরী করে। কথার ছলে একটা ছবিও দেখেছে আবিদের। দেখতেও কোনও রাজপুত্রের থেকেও কম লাগছিল নাহ্।
একটি দীর্ঘশ্বাসের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটালো নিজের ভাবনাগুলোর। আজ সপ্তাহখানেক হয়েছে নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছে। প্রায় তিন মাসের মতোই চলেছে তার চিকিৎসা। একবারে সুস্থ্য হয়ে তবেই ফিরে এসেছে নিজ গৃহে। রাফির ভাবনা মাথায় আসলেও তাকে নিয়ে আর ভাবে নাহ নুজহাত। যে সেদিন তাকে এভাবে মাঝ পথে ছেড়ে চলে গেছে তাকে নিয়ে ভেবে নিজেকে অপমান করার কোনো মানেই হয় নাহ। আগের থেকেও বেশ শান্ত হয়ে গেছে। যাকে ধরলেও গরম তেলে পানি পরার ন্যায় ছ্যাত করে উঠতো, তার পাশে বোমা ব্লাস্ট করলেও যেন তার যায় আসে নাহ।
প্রথম প্রহর কাটিয়ে রাতের প্রায় মাঝ প্রহর শুরু হয়ে গিয়েছে। রাত অনেক হয়েছে বুঝতে পেরে আকাশ এর থেকে নজর সরিয়ে পিছনে ফিরতে নিতেই হঠাৎ থেমে গেল। মনে হচ্ছে তার পিছনেই কেউ দাড়িয়ে আছে। কিছুক্ষন ভালোভাবে অনুভব করতেই নিশ্চিত হলো যে তার ভাবনাই সঠিক। বহু পরিচিত সেই পারফিউম এর সুবাস নাকে আসছে। এই সুবাস তার চিনা, বড্ড বেশীই চিনা। কিন্তু এ কি করে সম্ভব। ভূত প্রেত এর উপর বিশ্বাস তার কখনোই ছিল নাহ। তবে এখন কেন যেন মনে হচ্ছে তার পিছনে কোনো ভূতুই দাড়িয়ে আছে। এতো রাত অবধি ছাদে থাকা কিছুতেই উচিত ছিল নাহ। এখন কি করবে। চিৎকার করবে নাকি। নিশ্চয়ই তাকে মেরে ফেলবে। নাহ্ নাহ এতো তাড়াতাড়ি মরতে চায় নাহ।
নুজহাতের আজগুবি ভাবনার সমাপ্তি ঘটিয়ে পিছন থেকে ভেসে আসলো একটি পুরুষ কন্ঠস্বর।
“এতো রাতে ছাদে দাঁড়িয়ে আমার কথাই ভাবছিলে বুঝি।”
নুজহাত ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো। এতো দ্রুত পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে চায় নাহ সে। ভয়ে যেন কলিজা কেপে কেপে উঠছে। গলা শুকিয়ে কাঠ।
“কি হলো, বলছো না যে। এতো রাতে ছাদে দাঁড়িয়ে থাকা কিন্তু মোটেই শুভ লক্ষন নয় মিস নুজহাত।”
নুজহাত এবার দ্রুত নিজের চোখ খুলে ফেললো। এই ভূত তার নামও জানে। ভূত গুলো কি সবার নাম জানে নাকি যাকে মারতে আসে তার নামই জেনে আসে। এবার খুব মিনমিনিয়ে বলে উঠলো,
“ভূ… ভূ… ভূত। আমি…আমি আপনার কোনো ক্ষতি করি নি। আমাকে ছেড়ে দিন দয়া করে।”
এবার পিছন থেকে মোটা স্বরে পূনরায় শুনা গেল,
“এতো সহজে তো ছাড়বোনা। আমার অনেক বড় ক্ষতি করেছো তুমি। এর জন্য আমার তো ক্ষতিপূরণ চাই।”
“কি…কি চাই। আর আমি কি ক্ষতি করেছি।”
“কি ক্ষতি করেছো সেটা তো পরে জানতে পারবে তবে কি চাই সেটা বলতে পারি। যদি বলি…..”
এই বলেই থেমে গেল কন্ঠস্বর।
নুজহাত এর হৃদস্পন্দন যেন বাসের গতিতে চলছে। যে কোনো সময়ে বাস অ্যাকসিডেন্ট করবে। হঠাৎ করেই নিজের কাঁধে কারো চাপ দাড়ির স্পর্শ পেল। চোখ বন্ধ করতেই শুনতে পেলো পূনরায় সেই কণ্ঠ।
“যদি বলি তোমার মুচকি হাসির কারণ হতে চাই। তোমাকে নিয়ে এই পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় হাঁটতে চাই। পালতোলা নৌকায় পাড়ি জমাতে চাই কোনো এক অজানায়। তোমার শাড়ির কুঁচি ধরতে চাই। তোমার এই কোমড় সমান চুলে খোঁপা করে ফুলের গাজরা পরিয়ে দিতে চাই। তোমাকে নিজ হাতে সাজাতে চাই। তোমার খালি হাত গুলো কাঁচের চুড়িতে মুড়িয়ে দিতে চাই। উপন্যাসের পাতা জুড়ে তুমি আমি থাকতে চাই। প্রবল বৃষ্টিতে তুমি আমি একত্রে ভিজতে চাই। সব শেষে বলবো আমি তোমাকে চাই।”
নুজহাতের সর্বাঙ্গে কাপন সৃষ্টি হলো। শরীর জুড়ে ঠান্ডা শিহরণ বয়ে গেল। মস্তিষ্কে প্রতিটি কথা পূনরায় বাজতে লাগলো। ভয় গুলো যেন কোথায় হারিয়ে গেল। ভূত বা যাই হোক, মন গহীনে এই মাতাল করা কণ্ঠস্বরের মালিককে দেখার বাসনা জাগলো । আর কিছু না ভেবে দ্রুত পিছন ফিরে তাকালো। আর তাতে চমকে উঠলো। দ্রুত চোখের পাতা বন্ধ করে ফেললো।
নুজহাত তাকাতেই ছাদের প্রতিটি কোনায় কোণায় লাইট জ্বলে উঠলো। আর তাতেই চমকে চোখ বন্ধ করে ফেলেছে নুজহাত। কিছুক্ষন যেতেই আস্তে আস্তে চোখ খুলে কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির দিকে তাকাতেই চক্ষুদ্বয় স্থীর হয়ে গেল। মন গহীনে শুরু হলো উত্তাল পাতাল ঝড়। নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। আদও কি সে সত্যিই দেখছে, নাকি তার ভ্রম। নিজেকেই নিজে চিমটি কাটলো। ব্যাথা পেতেই কপাল কুঁচকে গেল। তার মানি তার ভ্রম নয়। এটা সত্যিই।
মুখ দিয়ে অস্পট সুরে বেরিয়ে আসলো,
“আবিদ…”
সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটির মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
“চিনতে পেরেছো তাহলে। আমিতো ভেবেছি ভুলেই গেছো।”
নুজহাত কিছু বললো নাহ। আস্তে আস্তে আবিদের গাল ছুঁয়ে দেখলো। তার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না এটা আবিদ। সেই আবিদ। তার বন্ধু আবিদ।
“সত্যিই আবিদ।”
“ওমা আমি আবার মিথ্যে হতে যাবো কেন নুজু। কোথায় ভাবলাম আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরবি কিন্তু তানা করে কিনা আমাকে মিথ্যে বানিয়ে দিচ্ছিস। তোর মাথা তো আমার মনে হয় এখনো ঠিক হয় নি। কোনো সমস্যা নেই, এই আবিদ যখন চলে এসেছে তখন তোর মাথা এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।”
এই বলে আবিদ চোখ টিপ মারলো।
নুজহাত কিছু বললো নাহ। তার এখনো মনে হচ্ছে সে স্বপ্ন দেখছে। আবিদ সত্যিই এসেছে। আর একটু আগে বলা কথাগুলো আবিদই বলেছে। আবিদ, আবিদ তাকে এখনও ভালোবাসে। আর দমিয়ে রাখতে পারলো না নিজেকে। জাপটে জড়িয়ে ধরলো আবিদকে। চোখের কোন বেয়ে গড়িয়ে পরতে লাগলো কতো শত অশ্রু।
আবিদ মুচকি হেসে নিজেও বেশ শক্ত করেই জড়িয়ে ধরলো নুজহাতকে। সত্যিই ধৈর্য্যের ফল মিষ্টি হয়। আকাশের দিকে তাকিয়ে আল্লাহ কে ধন্যবাদ জানালো। নুজহাত কান্নারত কণ্ঠে বারংবার সরি বলে যাচ্ছে।
আবিদ পূনরায় হেসে নুজহাতের মাথায় চুমু একে দিয়ে বলে উঠলো,
“হ্যাপি বার্থডে আমার হবু মিসেস।”
আবিদের কথা শুনতেই মাথায় আসলো বারোটার পর তার জন্মদিন শুরু হয়েছে। হবু মিসেস কথাটি মাথায় আসতেই বলে উঠলো,
“হবু মিসেস মানে…”
“হবু মিসেস মানে হবু বউ।”
“আমায় কেন বললি।”
“কারন তুই আমার হবু বউ।”
কথাটি শুনতেই হঠাৎ যেন লজ্জা আকড়ে ধরলো নুজহাত কে। আবিদের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই একত্রে ভেসে ছাদের দরজা থেকে ভেসে আসলো অনেকগুলো কন্ঠস্বর।
“হ্যাপি বার্থডে…. হ্যাপি বার্থডে টু ইউ নুজহাত।”
নুজহাত দরজার দিকে তাকালো। একে একে নিজের পরিবার, আবিদের পরিবার, তাকিয়ার পরিবার কেক হাতে নুজহাত কে শুভেচ্ছা জানাতে জানাতে তার পাশে এসে দাঁড়ালো। সবাইকে একত্রে দেখে যার পর নাই অবাক হলো।
তাকিয়া চোখের ইশারায় আবিদকে দেখিয়ে নুজহাত এর মাথায় টোকা দিয়ে বলে উঠলো,
“কেমন লাগলো সারপ্রাইজ টা….”
নুজহাত কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেল। কি আশ্চর্য্য, তার মতো মেয়ে হঠাৎ লজ্জা পাচ্ছে কেন। আর আবিদ তো তার বন্ধু।
তাকিয়া গলা খাঁকারি দিয়ে বলে উঠলো,
“হইছে আর লজ্জা পেতে হবে নাহ। এবার কেক কাট।”
নুজহাত সকলের সাথে মিলে কেক কেটে নিল। একে একে সবাইকে খাইয়ে দিল। বেশ অনেক্ষন এভাবেই কেটে গেল ।
তাকিয়া আবিদকে ফিসফিস করে বলে উঠলো,
“কিরে এবার রিং টা বের করে প্রপোজ কর।”
আবিদ মাথা চুলকে বলে উঠলো,
“যদি না মেনে নেয়।”
“আরেহ বুদ্ধু মেনে নিবে ও। এই এক সপ্তাহ ওর সাথে দেখা করতে আসলেই তোর কথা বলতো। তোকে তো বলেছিই। কর কু*ত্তা।”
আবিদ বুকে ফুঁ দিয়ে সম্মতি জানালো। তার হঠাৎ করেই ভয় হচ্ছে। যদি মেনে না নেয়। সেদিনের সেই মুহূর্ত বারংবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে।
নুজহাত দাড়িয়ে আবিদের আম্মুর সাথে কথা বলছিল। হঠাৎ করেই কিছু কথা কানে আসতেই সামনে তাকালো।
আবিদ হাঁটু মুড়ে বসে নুজহাত এর দিকে রিং টি বাড়িয়ে দিয়ে বলে উঠলো,
“মিস নুজহাত, হবেন কি আমার মিসেস। আপনাকে একটু আগে বলা ইচ্ছেগুলো কি পূরণ করবেন। আমি কি আপনাকে বৈধ ভাবে সারা জীবনের জন্য আমার করে পেতে পারি।”
নুজহাত অবাক চোখে আবিদের দিকে তাকালো। এই ছেলে কি পাগল। পরিবারের সবাই এখানে আর ও কিনা। নুজহাত ভীতু মুখে নিজের বাবা মায়ের দিকে তাকালো। তারা হাসিমুখেই ইশারায় বুঝালো রিং টি পরে নিতে। এতে নুজহাত আরো বেশি চমকালো। আবিদের দিকে পূনরায় নজর দিতেই দেখলো আবিদ মুচকি মুচকি হাসছে। বুঝতে বাকি নেই যে আবিদ সবাইকে রাজি করানোও শেষ।
নিজেও মুচকি হেসে আবিদের দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে দিল। আবিদ এবার নিজেও চমকালো। নুজহাত যে এতো সহজে তাকে মেনে নিবে কখনো ভাবে নি। তার মানি নুজহাত তাকে চায়, তাকে ভালোবাসতে চায়। খুশীতে যে নাচতে মন চাইছে।এতক্ষন যেন নিঃশ্বাস আটকে ছিল। হেসে নুজহাত কে রিংটি পরিয়ে দিতেই সকলে হাত তালি দিয়ে উঠলো। একে একে সবাই এসে নুজহাত এবং আবিদকে জড়িয়ে ধরতে লাগলো।
এভাবেই হাসি খুশিতে কিছু মুহূর্ত যেতেই সকলে দুজনকে একাকী ছেড়ে একে একে নিচে চলে গেল। তাকিয়া যাওয়ার সময়ে টিপ্পুনি কেটে বলে উঠলো,
“জান’স রা। একটু তাড়াতাড়ি ছাদ থেকে নেমে এসো।”
আবিদ কড়া চোখে তাকাতেই দাত বের করে হাসি দেখিয়ে তাকিয়াও ছাদ থেকে নেমে গেল।
নুজহাত আস্তে করে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ালো। আসলে তার হঠাৎ করেই ভীষণ লজ্জা লাগছে। হঠাৎ করে তার অজান্তে এতো কিছু হয়ে গেল।
আবিদ আস্তে আস্তে গিয়ে নুজহাতকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
নুজহাত এতে করে কিছুটা কেপে উঠলো।
আবিদ নুজহাত এর গালের সাথে নিজের গাল স্পর্শ করিয়ে বলে উঠলো,
“”তুই রাজি হয়ে গেলি।”
নুজহাত কিছু বললো নাহ।
“বিশ্বাস কর আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।”
“কেন?”
“নাহ মানে তুই তো অন্য একজনকে ভালোবাসিস। আমাকে তো আর ভালোবাসিস নাহ।”
“বাসতাম তবে এখন বাসি নাহ। আর একজনকে তো ধরেই ভুলে যাওয়া যায় নাহ। আমি তাকে ভুলতে চাই সম্পুর্ণ ভাবে। আর তোকে ভালোবাসি নাহ কিন্তু,”
“কিন্তু,,,,”
“আব,,কিন্তু,,”
আবিদ মুচকি হেসে খোচা মেরে পুনরায় বলে উঠলো,
“কিন্তু,,,”
নুজহাত দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবিদের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আবিদের দিকে ফিরে আবিদের চোখে নিজের চোখ রেখে বলে উঠলো,
“কিন্তু ভালোবাসতে চাই।”
আবিদ পলকহীন চোখে তাকিয়ে রইলো নুজহাত এর দিকে। চোখগুলো যেন খুব করে জ্বালা করছে। তাহলে কি তার কান্না আসছে। এই কথাটাই তো সে শুনতে চেয়েছে। লাগবে নাহ ভালোবাসি বলা, এটাই যে অনেক। নুজহাতকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চুপ করে রইলো কিছুক্ষন। নিজেকে শান্ত করে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
“আমি রাফিকে তোর জীবন থেকে ভুলাবো নাহ। কারন ওকে মনে পড়লেই তুই আমায় আরও বেশি ভালবাসতে চাইবি। ও তোর সাথে অন্যায় করেছে বলেই আজ আমি তোকে আমার করে পেয়েছি। ও অন্যায় করেছে বলেই তুই আমার ভালোবাসাটা বুঝতে পেরেছিস। তার উপর তো আমি আরো কৃতজ্ঞ”
শেষ কথাটি শুনতেই নুজহাত এর কপাল কুঁচকে গেল। আবিদের বাহুতে থাপ্পড় মেরে বলে উঠলো,
“কি বললি। ওর নামও নিবি নাহ। ওর প্রতি কৃতজ্ঞ তাইনা।”
“আরেহ আরেহ সরি। আচ্ছা ঠিক আছে। ওর কথা আর বলবো নাহ শুধু ভালোবাসবো।”
নুজহাত ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই আবিদ হেসে নুজহাত এর কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিল।
এভাবেই দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসায় পুর্নতা পেতে চললো নুজহাত এবং আবিদের ভালোবাসা।
*
*
#সমাপ্তি
শেষ হয়ে গেল অবশেষে একটি বাস্তবিক ঘটনার আলোকে লেখা গল্প #রংধনুর_মিল। গল্পের প্রতিটি ঘটনাই আমার চোখের দেখা এক আপুর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা। তবে সেই আপুর কিন্তু এখনও আবিদের সাথে মিল হয় নি। যেহেতু পাঠক মহল হ্যাপি এন্ডিং চান তাই গল্পে তাদের মিলিয়ে দিলাম।
👉এখন আমি এবং আমার পাঠক মহল চাই যাতে গল্পের শেষের ন্যায় তাদের ও মিল হয়ে যায়। আমি জানি আবিদ এবং নুজহাত , তোমরা দুজনেই এই লেখাগুলো পড়বে। আমাদের সকলের তরফ থেকে ছোটো অনুরোধ।👈

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here