“ভরা প্রেস মিডিয়ার সামনে বিখ্যাত সেলিব্রেটি “আদ্রিয়ান মাহামুদ রিয়াদ” আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে সবার সামনে বলে উঠলেনঃ
—“উনি নাকি আমায় বিয়ে করবেন..
“ওনার এমন কথা শুনে চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার!’হুট করে এমন কিছু হবে তার জন্য একদমই প্রস্তুত ছিলাম না আমি!’মাথায় চক্কর দিয়ে উঠলো একটা!’এসব কি বলছেন উনি আমি ওনার সামান্য একজন এসিস্ট্যান্ট আর উনি কিনা!’
“কিছুক্ষন আগে….
“রিয়াদ স্যারের একটা ফিল্ম হিট হওয়ার জন্য আর নতুন ফিল্মের এগ্রিমেন্টের জন্য কানাডার বিখ্যাত এক শহরে একটা পার্টি থ্রো করা হয়েছে, অবশ্য পার্টিটা থ্রো করেছিলেন রিয়াদ স্যারের আগের ফিল্মের হিরোইন মিস অনন্যা!’রিয়াদ স্যারকে নাকি উনি সারপ্রাইজ দিবে!’অবশ্য এতে আমার কোনো আপত্তি ছিল না!’আমি তো দিব্বি পার্টির মজা নিচ্ছিলাম,,পার্টিতে আসার কয়েক মিনিট পরেই অনন্যা ম্যাম রিয়াদ স্যারকে ডেকে নিয়ে গেলেন আর সবার সামনে রিয়াদ স্যারকে প্রপোজ করে বসলেন,ওনার প্রপোজ শুনেই রিয়াদ স্যার স্টেজ থেকে নেমে আমার হাত ধরে সবার সামনে বলে উঠলেনঃ
—“আমি ওনার পুরনো গার্লফ্রেন্ড আর আমরা শীঘ্রই বিয়ে করছি..
“কিন্তু এগুলো তো সবই মিথ্যে কথা!’
“বর্তমানে….
“আমি কিছু বলবো এর আগেই রিয়াদ স্যার আমার দিকে ঝুঁকে কানে কানে বলে উঠলঃ
—“একদম চুপ থাকবে…
“এরই মাঝে একজন মিডিয়ার লোক বলে উঠলেনঃ
—“আপনি কি সত্যি বলছেন মিষ্টার রিয়াদ,উনি তো আপনার পারসোশান এসিস্ট্যান্ট তাহলে…
—“এসিস্ট্যান্ট তো কি হয়েছে,, আর ওকে আমি ভালোবাসি তাই এসিস্ট্যান্ট বানিয়েছি..
—“তাহলে এতদিন বলেন নি কেন?’
—“আসলে আমার ইচ্ছে ছিল এইবারের ফিল্মটা রিলিজ হলেই আমার আর তানজুর কথা সবাইকে বলে দিবো কিন্তু এভাবে হুট করে যে মিস অনন্যা আমায় কিছু না বলেই প্রপোজ করে বসবে আমি ভাবি নি তাই বাধ্য হয়ে বলা লাগলো!’
“এতটুকু বলে রিয়াদ অনন্যার দিকে তাকিয়ে বললোঃ
—“আই এম এক্সটেমলি সরি অনন্যা,আমি তোমায় হার্ট করতে চাই নি,আসলে আমি তানজুকে ভালোবাসি অনেক আগে থেকে…
“রিয়াদের কথা শুনে অনন্যা কিছু না বলে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে স্টেজ থেকে নেমে গেলেন!’আমি জাস্ট হা হয়ে তাকিয়ে সবটা দেখে যাচ্ছি যেন যা হচ্ছে সব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে!’এরই ভিতর রিয়াদ স্যার সবার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে হাতে গোলাপ নিয়ে আমায় প্রপোজ করে বসলেন’!!আমি জাস্ট অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে,ভরা মিডিয়াদের সামনে হচ্ছে সবকিছু, কিছু বলবো তাও আর হয়ে উঠলো না শেষমেশ বাধ্য হয়ে ওনার হাতের গোলাপটা নিয়ে নিলাম আমি,,গোলাপ নিতেই সবার সামনে জড়িয়ে ধরলেন উনি আমায়!’একের একের পর শকট দিয়ে যাচ্ছে রিয়াদ স্যার আমায় আর আমি হাবলার মতো শুধু তাকিয়ে আছি!’
“রীতিমতো বিষয়টা ভাইরাল হয়ে গেছে!”
____________________
“রাত_১১ঃ০০টা….
“গাড়িতে মুখ গোমড়া করে বসে আছি আমি,কিছুক্ষন আগের ঘটে যাওয়া সব ঘটনা মাথার চারপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে আমার!’আর আমার পাশের সিটেই দিব্বি একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে মোবাইল গুতাচ্ছেন রিয়াদ স্যার!’এমন একটা ভাব নিচ্ছেন যেন কিছুই হয় নি,,কিছুটা হতাশা নিয়ে বলে উঠলাম আমিঃ
—“এটা কি করলেন স্যার….
—“কি করেছি…
“ওনার কথা শুনে চোখ বড় বড় করে বলে উঠলাম আমিঃ
—“কি করেছেন মানে এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলেন?’…
—“ডোন্ট ওয়ারি তানজু ওটা জাস্ট একটা একটিং ছিল…
—“একটিং ছিল সেটা আমিও জানি স্যার বাট এমনটা কেন করলেন,আপনি দেখেছেন সোশ্যাল মিডিয়াতে আমায় আর আপনাকে নিয়ে কি শুরু হয়েছে…
—“ওসব নিয়ে ভেবো না তুমি জাস্ট ইনগোর কর…
—“আপনার কি মাথা ঠিক আছে স্যার আপনি কি বললেন আপনি আমায় বিয়ে করবেন…
“আমার কথা শুনে রিয়াদ স্যার এইবার সিরিয়াসলি আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেনঃ
—“ওই মুহূর্তে ওটা করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না,তুমি তো জানো তানজু আমার অনন্যাকে একদমই পছন্দ নয়,শুধুমাএ ওর বাবা আমায় ফিল্মের কাজে হেল্প করেছিল বলে কখনো কিছু বলতে পারি না কিন্তু তাই বলে ওকে বিয়ে ইম্পসিবেল তাই সেই মুহূর্তে ওই একটিংটা করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না,,
—“কিন্তু স্যার অনন্যা ম্যাম আজ নয় কাল সত্যিটা তো জেনেই যাবে তখন কি করবেন?’
—“সেটা নিয়ে তুমি ভেবো না তখনের বিষয় তখন ভাববো আর একটা জিনিস কাল থেকে আগামী কিছুদিন তোমাকে আমার গার্লফ্রেন্ড হওয়ার অভিনয় করতে হবে….
“রিয়াদ স্যারের এবারের কথা শুনে মাথাটা আবারো চক্কর দিয়ে উঠলো আমার,অবাক হয়ে বলে উঠলাম আমিঃ
—“একটিং,ইম্পসিবল স্যার আমার ধারা এসব সম্ভব না,,,
—“দেখো তানজু,ইম্পসিবল বলে কিছু হয় না আর এই কাজটা করার জন্য তুমি ডাবল পেমেন্ট পাবে…
—“আপনি বুঝতে পারছেন না স্যার পেমেন্টের কোনো বিষয় নয়,একটিং বেকটিং আমার ধারা সম্ভব নয়,তার চেয়ে আপনি বরং সবাইকে সত্যিটা বলে দিন..
—“হুম সত্যিটা বলে দেই, আর অনন্যার সাথে আমার বিয়েটা হয়ে যাক…
—“অনন্যা ম্যাম খারাপ তো নয় দেখতেও অসম্ভব সুন্দর…
—“এখানে সুন্দর অসুন্দরের প্রশ্ন নয় তানজু,ভালো লাগা আর ভালোবাসার প্রশ্ন যেটার একটাও আমার অনন্যার প্রতি নেই…
—“তাই বলে এত বড় মিথ্যে আপনার অনন্যা ম্যামকে ভালো লাগে না এটা বলে দিলেই তো হয়..
—“তোমার কি মনে এই কথাটা বললে অনন্যা ইজিলি মেনে নিবে সবটা…
—“দেখুন স্যার আমি ওতো শতো জানি না এসব ঝামেলায় জড়াতে পারবো না আমি কালই মিডিয়াদের সবটা বলে দিবো…
“সাথে সাথে রাগীলুক নিয়ে তাকালেন রিয়াদ স্যার তারপর আমার দিকে এগোতে এগোতে বলে উঠলঃ
—“তোমার সাহস তো কম নয় তুমি রিয়াদের প্রপোজাল রিজেক্ট করছো,,তুমি জানো না আমার জন্য কত মেয়েরা পাগল আর তুমি কিনা…
“রিয়াদ স্যারের এমন কাজে ঘাবড়ে গেলাম আমি কিছুটা আমতা আমতা করে বললামঃ
—“দেখুন স্যার আমি সব মেয়েদের মতো নই,আর আপনি তো সত্যি সত্যি প্রপোজ করেন নি জাস্ট একটিং করেছেন,আর আমাকেও করতে বললেন…
—“বললাম তো এই কাজটা করে দেওয়ার জন্য তুমি ডাবল পেমেন্ট পাবে…
—“আমার পেমেন্ট চাই না স্যার…(গাড়ির সাথে লেগে গিয়ে)
—“ভেবে বলছো তানজু,তোমার বোনের বিয়ের জন্য যেন কতটাকা লাগবে…
—“ব্লাকমেল করছেন স্যার…
—“মোটেও না আমি তো তোমায় জাস্ট উপকার করে দিচ্ছে,তুমি আমার কাজটা করে দিলে আমিও তোমার বোনের বিয়ের জন্য যতটাকা লাগবে নিমিষেই দিয়ে দিবো…
“এতটুকু বলে রিয়াদ সরে যায় তানজুর কাছ থেকে!’তারপর গায়ের কোটটা ঠিক করতে করতে বলেঃ
—“অফারটা কেমন লাগলো ভেবে বলো,আর কেনো বুঝচ্ছো না এটা একটা জাস্ট একটিং মাএ…
“রিয়াদের কথা শুনে অনেকক্ষণ ভেবে বলে উঠল তানজুঃ
—“কতদিন করতে হবে এটা…
—“এই ধরো ছয় মাস…
—“কিন্তু আমায় যে এর মাঝখানে দেশে ফিরতে হবে স্যার…
—“ডোন্ট ওয়ারি সেটা আমি দেখে নিবো,তাহলে তুমি রাজি…
“উওরে মাথা নাড়ায় তানজু!’তানজুর মাথা নাড়ানো দেখে মুচকি হাসে রিয়াদ!’
_________________________________________
______________________
“পরেরদিন সকালে….
“সাদা তুলতুলে নরম বিছানায় ঘুমিয়ে আছি আমি!’এমন সময় দরজার নক করলো কেউ, ইচ্ছে না থাকা সত্বেও ঘুমের ঘোরে ঢুলতে ঢুলতে চললাম আমি!”দরজা খুলেই অনন্যা ম্যামকে দেখে চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার!কিছুটা অবাক হয়ে বললামঃ
—“ম্যাম আপনি….
“উওরে কিছু না বলেই হন হন করে ভিতরে ঢুকে গেলেন উনি,তারপর যা বললেন তার জন্য একদমই প্রস্তুত ছিলাম না আমি….
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে……….
#রোদ্দুরে_মেঘের_বর্ষন❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ০১
[