#শুধু_তুমি
#পর্ব-৩
#Nirzana(Tanima_Anam)
-পৃথিবীতে কি ছেলের অভাব পড়েছিলো যে নিজের বোনের সংসার ভেঙ্গে নিজের সংসার গড়তে হলো??
হটাৎ নূসরাতের কথা শুনে সরব নূহী দুজনেই থতমত খেয়ে যায়।
এরকম একটা সময় হুট করে নুসরাত চলে আসবে এটা দুজনের কেউই আশা করে নি।।
[একটু আগে]
সকালে….
বেশ বেলা হয়ে গেছে।সূর্য মাথার উপর দপদপ করে জ্বলছে।
সরব ধরপর করে উঠে পড়ে কাল বেশ রাত করে ঘুমিয়েছে কারণ নূহীকে বিছানা ছেড়ে দিয়ে সোফায় শুতে হয়েছে তাকে তাই ঠিক করে ঘুমোতেও পারে নি।
কিন্তু এতো এতো বেলা হলো কেউ ডাকতে ও এলোনা।
আনমোনে কথাগুলো ভাবতেই সরবের চোখ যায় বিছানার দিকে।নূহী গুটি শুটি মেরে শুয়ে আছে।
সরব নূহীর দিকে একপলক তাকিয়ে মুচকি হেসে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।
একটা লম্বা সাওয়ার নিয়ে বের হতেই দেখে নূহী ঢুলু ঢুলু চোখে বিছানায় বসে আছে।সরবকে বের হতে দেখে নূহী উঠে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ায়।সরবের পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় হটাৎ করে পা পিছলে সরবের বুকের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে।সরবও নূহীকে জড়িয়ে নেয়।ডুব দেয় নূহীর চোখের মাঝে।সরবের দৃষ্টি নূহীর চোখের অতলে বার বার তলিয়ে যাচ্ছে।
এমন সময় নুসরাতের অগমনে দুজনই হকচকিয়ে যায়।
সরব নূহীকে ছেড়ে দিয়ে ছিটকে দূরে সরে যায়
নুসরাত সরবের দিকে একবার চোখ বুলিয়ে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকায় নূহীর দিকে….
নূহী ভয়ে গুটিশুটি মেরে দাড়িয়ে আছে।সরবের সাথে নূহীর এভাবে লেপ্টে থাকা যে নুসরাত মানতে পারছে না তা সে বেশ ভালোই বুঝতে পেরেছে।
নুসরাত নূহীর কাছে গিয়ে এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে দূরে সরে আসে।
নূহী অপরাধীর ন্যায় নুসরাতের দিকে তাকিয়ে আছে।
-নুসু আপু তোমার কি আমাকে ওমন মনে হয়??
-না মনে হয়ে আর কি করার আছে বল তো এই ঘর টা আমার হবার কথা ছিলো কিন্তু তার দখল তুই নিয়ে নিলি।এখন তো আমার প্রিয় মানুষটার দখলও তুই নিয়ে নিলি।বোন হয়ে নিজের বোনের এতো বড় সর্বনাশ কি করে করলি বল তো????
-আপু মানুষের জীবনে এমন অনেক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে।সেগুলো কে মেনে নিতে হয়।তবে তুমি ভেবো না আমার এই দুঃস্বপ্নের দায় ভার তোমাকে নিতে হবে না যা তোমার তা তোমারই
দুই বোনের কথার মাঝে সরব নিরব দর্সক মাত্র।
তবে নূহীর কথাগুলো নুসরাত না বুঝলেও সরব ঠিক বুঝতে পেরেছে।
নূহী নুসরাতকে কথাগুলো বলেই ঘর থেকে চলে যায়
সরব নুসরাতের দিকে এগিয়ে আসতেই নুসরাত সরবের কলার ধরে টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।
-কেন করলে এমন হুম্ম আমার সাথে??
-কি করেছি আমি?এমন করছো কেন??
-তুমি জানো না তুৃমি কি করেছো?
-আমি যাই করি না কেন কোনো অন্যায় করি নাই
-তাই না কি??
-হুম্ম
-তুমি নূহীকে কেন বিয়ে করলে?কেন আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে দিলে??যদি তুমি এমন না করতে তাহলে আজ আমি এখানে তোমার ঘরে থাকতাম তোমার বউ হয়ে….কিন্তু তুমি
-(…)
সরব নুসরাতকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু নুসরাত সরবকে আরো আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নেয়।
-সরব তুমি কি জানো না নূহীর অতীত তাহলে??? তাহলে সব জেনে শুনে ওকে….!!!
-লিসেন…..নুসরাত পরিস্থিতি সব কিছু বদলে দেয়।আমি আমরা শুধু মাত্র পরিস্থিতির স্বীকার মাত্র।এই বিয়েটাও শুধু মাত্র…
-ওহ্ তাই… তার মানে তুমি আমাকেই ভালোবাসো তাই তো??নূহী ইচ্ছে করে বিয়ে করো নি??? এটাই তো??
-হ্যা মানে ন….
এবার রূমঝূম নূপুরের শব্দে দুজনই চমকে যায়।
পর্দার আড়াল থেকে কেউ একজন ছুটে পালিয়ে গেল।
সরব বেশ বুঝতে পারছে নূহী হয়তো এতোক্ষন পর্দার আড়ালে দাড়িয়ে দাড়িয়ে তাদের কথা শুনছিলো।
অতীতের কথা শুনে হয়তো খারাপ লেগেছে।তাই
সরব ও যেতে নিলে নুসরাত আবার সরবের হাত টেনে ধরে….
-কি গো ভালোবাসো না?
এবার রাগ যেন সরবের মাথায় চড়ে বসে।সজোড়ে নুসরাত কে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
এদিকে নূহী এক ছুটে নিচে নেমে আসে।নিচে নামতেই দেখে এক জোড়া চোখ তার দিকে তীক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
নূহীর শ্বশুড়ী নূহীর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।চোখ দুটো যেন আগুনের মতো দপদপ করে জ্বলছে।যদি পারতো চোখ দিয়ে এখানেই ভষ্য করে দিতো।
নূহী আর এক পা না এগিয়ে ওখানেই দাড়িয়ে যায়…..
নূহীর শ্বাশুড়ি গুটি গুটি পায়ে নূহীর সামনে দাড়ায়….।।।
রাগে হিস হিস করতে করতে বলে
-আচ্ছা বেহায়া মেয়ে মানুষ তো তুমি….
একেই এতো বেলা করে ঘুম থেকে উঠলে তার উপর এভাবে নেচে নেমে এলে শাড়ি কাপড়ের ঠিক ঠিকানাও তো নেই…. লজ্জা শরম তো তোমার আগে থেকেই কম জানতাম এতো কম সেটা জানতাম না!! ছি ছি!! ইচ্ছে করছে তোমাকে এখনি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিই!!
সরব! সরব! কথাগুলো বলেই নূহীর শ্বাশুড়ি নূহীকে এড়িয়ে উপরে উঠতে থাকে উদ্দেশ্য ছেলের ঘর…
আজই ছেলের সাথে কথা বলবে সে এখনই।।
নুসরাত ও আছে।কথা বলে বোনের সাথে বাড়ি পাঠিয়ে দিবেন ওনি!!
চলবে…….
(