#শুধু_তোমারই_জন্য পর্ব ১১
#সাবানা_খাতুন
অর্নব এক পা এক পা করে এগোচ্ছে ,গেস্ট রুমের দিকে কাঁকন রুমের ভেতরেই আছে তার চলার শব্দ শোনা যাচ্ছে ।অদম্য সাহস নিয়ে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।টোকা দেবে কিনা ইতস্তত করছে অর্নব ।এমন সময় রিয়ার ফোন আসে,অর্নব রিসিভ করতেই হাউমাউ করে রিয়া কেঁদে বলল দাদা এক্ষুনি হসপিটালে চলে আয়।অর্নব একটু সরে এল রুমের কাছ থেকে আরে কাঁদছিস কেনো?আর হসপিটালে কেন যাবো। বাবার স্ট্রোক হয়েছে রে আর ডাক্তার বলেছে সিরিয়াস অবস্থা ,এটাই শুনে অর্নবের পায়ের নিচের মাটি নড়ে যায়,হাত থেকে ফুলের গুচ্ছ পড়ে গেল নিচে,কি বলছিস তুই ? হ্যাঁ রে দাদা যা শুনছিস সেটাই। মা,আর ঠাকুমাকে সামলাতে পারছিনা তাড়াতাড়ি আয় তুই দেরি করিস না। এক মুহূর্তে সব কিছু যেন উলোট পালট হয়ে গেল অর্নবের এই তো কিছু সময় আগে তো সব ঠিক ছিল মনের ভেতর কতই না আনন্দ ছিল।এক মুহূর্তে সব আনন্দ মিয়িয়ে যায়। আর দাঁড়ায় না অর্নব সোজা চলে গেল হসপিটালে।আর কাঁকনকে দেওয়া হলো না,ফুল, শাড়ি,আর চুড়ি।
ওটির সামনে চেয়ারে বসে রিয়া কাঁদছে ,রুমাদেবী কনকবলা আর রিয়া অঝোর নয়নে কেঁদে যাচ্ছে ।রিয়া অর্নবকে জড়িয়ে ধরে বলল দাদা বাবার কিছু হবেনা তো? সেই কখন থেকে ঢুকিয়েছে এখনো বের করছে না।অর্নব রিয়ার চোখ মুছতে মুছতে বলল, না বোন বাবার কিছু হবে না।রুমা দেবী ও কনকবালা কেঁদে চলছে সমানে,অর্নব কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে সে কাকে স্বান্ত্বনা দেবে বুঝতে পারছেনা।তার নিজের চোখেও জল,পাশে ম্যানেজার দাঁড়ানো ,তাকে অর্নব জিজ্ঞাসা করল এসব কখন হল আমিও তো অফিসে ছিলাম।ম্যানেজার বলল স্যার আসলে দুপুরের একটু পরে মানে এই ধরুন বিকেল ৪ টা কি ৪:৩০ টার দিকে বড় স্যারের ফোনে ফোন আসে ।কার ফোন? অর্নব জিজ্ঞাসা করল।সমর স্যারের ,আমি কেবিনের বাইরে ছিলাম,খুব কথা কাটাকাটি হচ্ছিল ,কিন্ত কি ব্যাপারে সেটা বুঝতে পারছিলাম না,উনি খুব টেনশানে ছিলেন,জাস্ট এই আধাঘন্টা আগে অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠতে যাবেন হঠাৎ করে বললেন ওনার খুব বুকে ব্যথা হচ্ছে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ।আমি আর রিস্ক নেই নি সোজা এখানে এসে ম্যাডাম কে খবর দিলাম।এমন সময় ওটি থেকে ডাক্তার বেরিয়ে আসতে,সবাই তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল,বাবা কেমন আছে?ডাক্তারের মুখ গম্ভীর ।বলল দেখুন উনি খুব টেনশনে ভুগছিলেন আবার হঠাৎ করে একটা টেনশন আসায় চাপ টা নিতে পারেনি।তারপর প্রেশার হাই নিয়মিত মনে হয় ওষুধ নিতেন না,এখন কিছু বলা যাবে না,কাল পর্যন্ত অবজার্ভেশনে রাখতে হবে ,সবাই আবার কান্না জুড়ল।
এইবার রুমাদেবী কান্না জড়ানো কন্ঠে বলল সব ঐ মেয়েটার জন্য হলো, অর্নব বলল কার জন্য ? কাঁকন…… রেগে উওর দিল রুমা দেবী ।অর্নব অবাক হয়ে বলল কাঁকনের জন্য কি বলছো তুমি? এবার রুমাদেবী হিস হিসিয়ে বলল আজ সকালে তুই নয়নার সাথে দেখা করে ছিলিস আর তোদের মধ্যে কি কথা হয়।সব আমাকে আরতি বলেছে,তুই নাকি ওকে ছেড়ে কাঁকনকে নিয়ে থাকবি? অর্নব বলল এখানে কাঁকন এলো কোথা থেকে আর মা নয়না আমার যোগ্য নয়,জানো ও কি করেছে।.. ব্যস হাত নেড়ে রুমাদেবী থামালেন আর আমাকে বলতে হবে না কে যোগ্য কে অযোগ্য ।তুই জানিস তোর চলে আসার পর নয়না সুইসাইড করতে গিয়েছিল।কি……অর্নব অবাক হয়ে বলল কেনো? আরে মেয়েটা যে তোকে ভালবাসে সে অন্য কারোর সাথে তোকে মেনে নিতে পারবে না তাই নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল।তার একমাএ মেয়েকে তারা তোর জন্য হারাতে দিতে চায়নি , তাই সমর দা আমাদের সাথে এতদিনের পার্টনারশিপ শেষ করে দিয়েছে ।আরো কত কি দেখতে হবে কে জানে, এমনিতে কোম্পানি লসে চলছিল তারউপর এই এই বিচ্ছেদ ।এটাই তোর বাবা সহ্য করতে পারেনি দেখ কি হালত করেছিস তোর দুজনে।এবার সুখি হ তোরা আনন্দে থাক, বলে রুমাদেবী আবার কান্না শুরু করে।অর্নব কিছুই বলতে পারল দাঁড়িয়ে শুধু বাবার কথা ভাবতে লাগল শুধু তার চোখ থেকে জল গড়াতে লাগল।
এই সময় কাঁকন হন্তদন্ত করে হসপিটালে ছুটে আসে।রুমাদেবী বলল দাঁড়াও আর এক পা এগুবে না,তোমার জন্য আজ এই অবস্থা ।কাঁকন অবাক হয়ে বলল আমার জন্য এই অবস্থা মানে বুঝলাম না? এবার অর্নব পেছন ফিরে খুব রেগে বলল হ্যাঁ তোমার জন্য শুধু তোমার জন্য এসব হলো ।কেনো এলে আমাদের জীবনে? আমরা কত ভাল ছিলাম কত সুখে ছিলাম সব ঠিক চলছিল তুমি এসে সব লন্ডভন্ড করে দিলে।যেদিন থেকে তুমি এলে সেদিন থেকে আমার জীবন থেকে সব সুখ চলে গিয়েছে।কনকবালা বলে উঠল দাদুভাই কি বলছিস তুই? যা বলছি ঠিক বলছি ঠাকুমা ,এই মেয়েটার জন্য আমার এই অবস্থা ।সবসময় ওর কথা ভেবে কত কাজ ভুল করেছি তাই আজ কোম্পানি লসে চলছে,বাবার এই অবস্থা সব এর জন্য ,জীবনে এত কষ্ট পায়নি কিন্তু ও যখন থেকে এসেছে আমার জীবনে শুধু কষ্ট আর কষ্ট পাচ্ছি।কেনো আছো আমাদের জীবন থেকে চলে যাও শান্তি দাও আমাদের বলে অর্নব কাঁদতে লাগল।কাঁকন ঠোঁট কামড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে চোখ থেকে জলের স্রোত গড়িয়ে পড়ছে।আস্তে আস্তে নিঃশব্দে চলে যায় কাঁকন হসপিটাল ত্যাগ করে।
চারদিন পর অভিরাজ একটু সুস্থ হলেন, এই চারদিন অর্নব বাড়ি যায়নি অফিসে সময় কাটিয়েছে।হসপিটাল টু অফিস করত,বাবার এই অবস্থার জন্য বারবার নিজেকে দায়ী করেছে ও,বাড়ি ফিরে এসে নিজের রুমে ঢুকে দেখে রুম সাজানো ফুল গুলি শুকিয়ে গিয়েছে ।মোমবাতির মোম গলে পড়ে আছে মেঝেতে,এইবার অর্নবের খেয়াল এল আরে সেদিন তো কাঁকনকে প্রপোজ করবে বলে রিয়া কে দিয়ে রুম সাজাতে বলেছিল, আর হলো না ঐসব কান্ডে। ইসসস রাগে আর দুঃখে ওকে কত কথাই না শুনালো।খুব অনুশোচনা হচ্ছে অর্নবের ,একবার খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি।যে দোষ কাঁকন করে নি তাকে সেই শাস্তি দেওয়া একদম অনুচিত হয়েছে,ক্ষমা চাইবে বলে গেস্ট রুমের দিকে গেল অর্নব গিয়ে দেখে রুমের দরজা আলগা লাগানো।দরজা তে ঠেলা দিতেই এমনি খুলে গেলো অর্নব অবাক হলো,দরজা খুলে রেখে কাঁকন গেল কোথায়?আর কাপড়ের ব্যাগও নেই, রুম থেকে ফিরে আসবে এমন সময় বিছানায় দুটি কাগজ দেখতে পায় অর্নব ।তুলে দেখল একটি চিঠি ,আর একটা ডিভোর্স পেপার অর্নব দেখল এটা সেই ডিভোর্স পেপার যেটা নয়না তাকে দিয়েছিল,এরমানে কাঁকনের কাছে এতদিন ছিল পেপার টা।অর্নব কেঁপে উঠল,পেপারে দেখল কাঁকনের সিগনেচার এরমানে কাঁকন তাকে ডিভোর্স দিয়ে চলে গিয়েছে ।এ আমি কি করলাম নিজেকে প্রশ্ন করল অর্নব ? অর্নব চোখে ধোঁয়া দেখল ,চোখের জলে ঝাপসা হয়ে গেল কাঁকনের সই।
অর্নব কাঁকনের চিঠিটা মেলে ধরল তার চোখের সামনে।কাঁকন লিখেছে,আমি জানিনা তুমি এই চিঠি পড়বে কিনা তবুও লিখছি কারন মনের ভেতর এমন অনেক কথা লুকানো আছে ,যেটা তোমাকে জানাতে না পারলে হয়তো সারাটাজীবন আমি কষ্ট পাবো ।আমার জীবনের চরম তম ভুল করেছি তোমাকে ভালবেসে যার খেসারত আজ পর্যন্ত দিচ্ছি, প্রথম দিন থেকে শুধু অবহেলা,পেয়ে এসেছি তোমার কাছ থেকে।যেদিন একটু আদর ভালবাসা পেতে চেয়েছিলাম সেদিন তোমার কাছ থেকে পেলাম ডিভোর্স পেপার ।তাই আর কোনো আশা রাখতে পারলাম না তোমার প্রতি ,আস্তে আস্তে করে দূরে সরে গেলাম যাতে তুমি সুখে থাকো। অর্নব এইবার বুঝতে পারল কাঁকন তার সাথে ঐরকম অচেনা মানুষের মতো ব্যবহার কেনো করছিলো।সেতো ডিভোর্স পেপারের কথা ভুলেই গিয়েছিল,আর কাঁকন ভুল বুঝল এই ভেবে যে অর্নব তাকে ডিভোর্স দিতে চায়।অর্নবের চোখের জল বাঁধ ভেঙে যাচ্ছিল,চিঠির লেখা গুলি সব ধুয়ে যাচ্ছিল চোখের জলে।আবার চিঠিতে মন দিল, কাঁকন লিখেছে জানো তোমাকে কতবার চেষ্টা করেছি বলার যে তোমাকে কত ভালবাসি ,কিন্ত বলতে পারলাম না,তোমার প্রোজেক্ট ফাইল আমি কমপ্লিট করি,যখন তুমি ঘুমিয়েছিলে তোমাকে ঘুমন্ত অবস্থায় অনেক নিষ্পাপ লাগে,মন ভরে দেখে ছিলাম সেদিন ,তোমাকে মিথ্যা কথা বলার একটা কারন যাতে করে তোমার কাছে আমি ধরা না পড়ে যাই।আচ্ছা তোমার মনে আছে কলেজে যখন তোমার বিপরীত দিক থেকে সরে গিয়েছিলাম তুমি জিজ্ঞাসা করেছিলে কেন সরে গিয়েছিলাম এর কারন হচ্ছো তুমি তোমাকে হৃদয়ে জায়গা দিয়ে ফেলেছিলাম। তোমার হার হলে নিজেকে কোনোদিন ক্ষমা করতে পারতাম না,যেটাকে তুমি আমার জেদ ভাবছিলে সেটা আসলে তোমার কাছে নিজেকে হারিয়ে দিতে চেয়েছিলাম।একবার যদি বলতে কাঁকন আমি তোমাকে ভালবাসি বিশ্বাস করো পৃথিবীর সব সুখ ছেড়ে তোমার কাছে আসতাম।এতো অপমান,এত অবহেলা সব এক নিমিষে ভুলে যেতাম,আমার আত্মমর্যাদা কে তুমি আমার অহংকার ভাবলে,আর আমাকে দিলে চরম শাস্তি ,প্রতারনা করলে ঠকালে আমার বিশ্বাস কে।আমি কি তোমার চোখে এতো খারাপ ছিলাম জানি এই উওর আমি হয়তো কোনো দিন পাবো না।আমার সামনে নয়নাকে নিয়ে যা করছিলে সব সহ্য করে তবুও বুকে পাথর চাপা দিয়ে মেনে নিয়েছিলাম সব কিছু।কিন্ত সেদিন যা করলে আমার পক্ষে সহ্য করা সম্ভব ছিল না,আমাকে দোষারোপ করলে অন্যায় ভাবে, তোমার বাবার এই অবস্থার জন্য আমি দায়ি।
কি করে পারলে এত বড় অপবাদ দিতে ।সোজা বলে দিতে পারতে চলে যাও,আমার মনের অবস্থা একবারো চিন্তা করলে না।আমি তারপরেও অপেক্ষা করছিলাম তুমি কখন ক্ষমা চাইতে আসবে।কিন্ত তুমি এলে না, আমি একবার তোমার মুখ দিয়ে শুনতে চেয়েছিলাম সরি কাঁকন আমার,,,, ভুল হয়ে গিয়েছে,,,,,।ব্যর্থ হল আমার অপেক্ষা, আমি জানি নিজের কাছের মানুষের কিছু হলে কেমন হয়,জানো আর পারলাম না নিজের ধৈর্য্য কে বেঁধে রাখতে।কলেজের সেই একরোখা কাঁকন আর নেই কারন তার অস্তিত্ব কে,অর্নব নামের এক বড় বাড়ির ছেলে তার জেদের পায়ের নিচে তাকে মাটিতে মিটিয়ে দিয়েছে।এখন তো চোখের জল ও পড়া বন্ধ করে দিয়েছে। আর পারলাম না, তাই তোমাকে মুক্তি দিলাম,ডিভোর্স পেপারে সই করে দিলাম,ভাল থেকো আর নয়নার সাথে সুখে শান্তিতে দিন কাটাও।
অর্নব শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,এত কথা জমানো ছিল কাঁকনের মনে সে কোনো দিন বুঝতেও পারেনি।কেনো সে এত কষ্ট দিয়েছে তাকে।অনেকক্ষন কাঁদল অর্নব তারপর মুখ শুকনো করে বাড়ির দিকে রওনা দেয়।কনকবালা ,রিয়া অর্নবের মুখ দেখে বুঝতে পারে কিছু হয়েছে।রিয়া বলল দাদা তোর কি হয়েছে চোখ এত লাল কেনো? অর্নব ডিভোর্স পেপার আর চিঠি বাড়িয়ে দেয় রিয়ার দিকে,রিয়া পড়ে অবাক হয়ে গেলো চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ল একটু।কনকবালা অধৈর্য হয়ে জিজ্ঞাসা করল আরে কি হল বলবি তো। বৌ ……বৌদি দাদাকে ডিভোর্স দিয়ে এবাড়ি থেকে চলে গেছে।কনকবালার চোখ ভারি হয়ে এলো আমি জানতাম এটা একদিন হওয়ার ছিল।তুই যে ভাবে ওকে অপমান করেছিস অন্য কেউ হলে কি করত কে জানে?আমরা এত স্বার্থপর যে ওর একবার খোঁজ পর্যন্ত নেইনি।অর্নব বলল তোমরা জানতে এই ডিভোর্স পেপার ওর কাছে ছিলো।আমাকে একবার কেনো বলোনি। কি করে বলব বৌদি বারন করেছিল তোকে বলতে বলল রিয়া।অর্নব আবার কাঁদছে একটা সামান্য মজা,ভুল আনন্দ কিভাবে মানুষের জীবন কে পাল্টে দেয় আজ সে হাড়ে হড়ে বুঝছে।
রিয়া এবার বলল তোকে যেদিন সারপ্রাইজ দেবো বলেছিলাম মনে আছে ।,সেদিন বৌদি তোর জন্য কত সেজেছিল জানিস,রুম পর্যন্ত সাজিয়েছিল শুধু তোকে মনের কথা জানাবে বলে,আর তুই কি করলি ডিভোর্স পেপার দিয়ে দিলিস।অর্নব পুরাই অবাক.. কি বলছিস তুই? ইসসস কত ভুল হয়ে গেলো এই পেপার নয়না দিয়েছিল আর আমি ভুলে ফাইলে রেখে দিয়েছিলাম।আর সেই ফাইলটা তোকে দিয়েছিলাম মনে আছে? হ্যাঁ দাদা বলল রিয়া।কত বড় ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেল বলল অর্নব ।কনকবালা কেঁদে বললেন আমি জানিনা,তুই যেখান থেকে হোক আমার দিদি ভাই কে আন,না হলে এই বুড়ি তোর সাথে কথা বলবেনা।অর্নব মনে মনে বলল কাঁকন তুমি যেখানে থাকো, আমি তোমাকে ঠিক খুঁজে বার করবই।
চলবে……..।।