#শূন্য_থেকে_আসে_প্রেম
#পর্ব – ২৭
#আভা_ইসলাম_রাত্রি
ড্রয়িং রুমের সোফায় আমি মাথা টা নিচু করে বসে আছি। নজর পায়ের উপর সীমাবদ্ধ আমার। আর আমার মুখোমুখি সোফায় সৌরভ ভাইয়া বসে আছেন। তীক্ষ্ম নজরে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। চোখ মুখে রাগের আভা এতটাই স্পষ্ট যে আমি ভয়ে বারবার ঢুক গিলছি। কিছুসময় পর উনি শান্ত গলায় বলেন,
” তা বলো ,, তোমার এত সাহস কোথা থেকে উদয় হলো ?? কি করে এত বড় সিদ্ধান্ত নিলে তুমি ?? আনসার মি dammit … ”
শেষের কথার অনেকটা গর্জনের মত আমার কানে এসে ঠেকেছে। আমি বলি,
” আমার মনে হয় এটাই বেস্ট ডিসিশন হবে আমদের দুজনের জন্যে। খামোকা নড়বড়ে সম্পর্ক এগুনোর কোনো মানে হয়না। ”
উনি এবার ধমকের সুরে বলেন,
” কোনটা বেস্ট ডিসিশন হবে তা বুঝার জন্যে আমি এখনও বেঁচে আছি। মরে যায়নি আমি। আমি মরার পর নাহয় সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করো। তার আগে তো কখনোই না। Got it ?? ”
উনার মুখে মরার কথা শুনে আমার কেনো যেনো বুকে ছেত করে উঠলো। চোখগুলো তে জল চিকচিক করে উঠতেই আমি নিজেকে সামলে বলি,
” আমি আপনাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। যতই নিজেকে বুঝানোর চেষ্টা করছি ততই আমার পুরোনো কথা চোখের সামনে ভেসে উঠে। আপনার সেই তীরের মত তীক্ষ্ম কথাগুলো , সেই হিংস্র আচরণ আমি কোনোভাবেই ভুলতে পারছি না। তাই আমার মনে হয়েছে এটাই বেস্ট ডিসিশন হবে আমাদের দুজনের জন্যে। ”
কথাগুলো বলে আমি থামলাম। ঠোঁট কামড়ে কান্না গুলো আটকানোর চেষ্টা করেই ক্ষান্ত হলাম। উনি আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার পাশে বসলেন। দুহাত দিয়ে আমার মুখটা ধরে উচু করে আলতো গলায় বললেন,
” আমি জানি আমি যা করেছি সব ভুল ছিল । সব। তার জন্যে তুমি যা বলবে আমি তাই করবো। সারাজীবন তোমার কাছে এর জন্যে ক্ষমা চাইবো। কিন্তু এই আলাদা হওয়া ত কোনো বেস্ট ডিসিশন নয়। আচ্ছা তুমি কি পারবে আমার থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে ?? এতটাই সহজ তোমার জন্যে সবকিছু ?? কই আমি যখনই তুমিহীন নিজেকে চিন্তা করি বুক ভারী হয়ে আসে আমার। শূন্যতায় চারপাশ ঘিরে যায় আমার। দম বন্ধ হয়ে আসে তখন। নিজেকে অসহায় থেকে অসহায় মনে হয়। আর তুমি এত সহজে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে নিলে। এত সহজে ?? ”
বলেই আমাকে ছেড়ে দিয়ে সোফা থেকে উঠে দাড়ালেন। আমার দিকে ফিরে তাকিয়ে বললেন,
” একটা কথা অন্তত মানো। কিছুদিন নিজেকে টাইম দাও। আমাকে অন্তত একবার বুঝার চেষ্টা করো। তারপরও যদি মনে হয় আমাকে ছাড়া তুমি ভালো থাকবে তাহলে ডিভোর্স নাহয় আমাদের আলাদা করে দিবে। কিন্তু তার আগে একবার চিন্তা করে দেখ আমিহিনা কি তুমি থাকতে পারবে ?? নাকি শুধুই আমার দম বন্ধ হয়ে আসবে তোমার কি তাতে কিচ্ছু যায় আসবে না ?? Think it .. ”
বলেই উনি নিজের রুম চলে গেলেন। আমি উনার যাওয়ার দিকে বিষন্ন চোখে তাকালাম। নিরন্তর ভাবলাম। কিন্তু এই ভাবনার কি কোনো শেষ সমাধান আছে ??
🖤🖤🖤
সৌরভ নিজের রুমে গিয়ে বিছনায় বসলো। মাথাটা দুহাত দিয়ে চেপে ধরে রাগ কমানোর বৃথা চেষ্টা করলো। ও জানে এতে ঈপ্সিতার কোনো দোষ নেই। ও যা করেছে তারপর ঈপ্সিতার অস্বাভাবিক আচরণ করাই কাম্য। হটাৎ ওর ফোনে কল এলো। জিন্সের পকেট থেকে ফোন বের করে রিসিভ করলো। ওপাশ থেকে সৌরভের মা বলেন
” পেয়েছিস ইপ্সিতা কে ?? ”
” হুমম । ”
” কোথায় ও ?? ফোন টা ওর কাছে দেত। একটু কথা বলি। ”
“এখন না। আর শুনো আন্টিকে বলে দিও ও আমার কাছে আছে। চিন্তা না করতে। ”
” আচ্ছা। মরিয়ম আর ইকবাল [ ঈপ্সিতার বাবা ] চিন্তায় দিনে একশোবার ফোন দিচ্ছে তোর বাবাকে। মেয়েটা ফোনও ধরছে না তাদের। ”
” রাগ মাথায় চড়ে আছে উনার। তাই । আচ্ছা তুমি ওদের বলে দিও। রাখছি। ”
” ঠিক আছে। আর শুন কোনো বাজে ব্যাবহার করবি না ওর সাথে বলে দিলাম। ”
” আরে ঠিক আছে মা। করব না। রাখছি। ”
” হুমম। ”
সৌরভ ফোনটা রেখে বিছানার উপর রাখলো। মাথায় দুহাত আবার চেপে ধরে চোখ বুজে বিছানায় গা এলিয়ে দিল। হটাৎ তার চোখ গেল দরজার দিকে। ঈপ্সিতা দরজার সামনে উকি ঝুঁকি দিচ্ছে। সৌরভ আবার চোখটা বুজে বলে,
” ভিতরে আসো। তোমারই ঘর। ”
উনার গম্ভীর আওয়াজ শুনে আমি ধীর পায়ে রুমে ঢুকি। উনার পাশে দাড়িয়ে ক্ষীণ আওয়াজে বলি,
” আপনি শপিংয়ে যাবেন না ?? ”
উনি চোখটা বুজে রেখেই জবাব দিলেন,
” কেনো ?? ”
” আ..আমার জা. জামা ?? ”
উনি এবার উঠে বসলেন। আমার পা থেকে মাথা অব্দি একবার চোখ বুলালে আমি চোখ গরম করে উনার দিকে তাকাই। উনি চোখ ছোট ছোট করে বলেন,
” তুমি এখন কি পড়ে আছো ?? জামা ছাড়াই আছো নাকি ?? ”
আমি উনার এইসব লাগামহীন কথা শুনে চোখ পাকিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে বলি,
” কিসব বলছেন আপনি ?? দিনতো দিন শুধুই বেশরম হচ্ছেন আপনি। ছি। ”
” যাক বাবা । আমি কি বললাম। তুমিইতো বললে তোমার জামা নেই। এখন আমার দোষ। বাহ ভালোই। ”
আমি এক নিশ্বাস ফেলে বলি,
” আপনি এত কথা পেঁচান কেনো ?? আমি এখন আপনার জামা পরে আছি। আমার জামা, মানে মেয়েদের জামা কই ?? আপনি না বললেন যে শপিং থেকে জামা নিয়ে আসবেন। এখনও যান নি কেনো ?? হুমম ?? ”
উনি ভাবলেশহীন ভাবে বলেন,
” না দরকার নেই কোনো জামার। এরকমই থাকো। অনেক হট লাগছে। ”
বলেই বাকা হাসলেন উনি। আমি নিজের দিকে একবার তাকলাম। এই ঢিলা জামায় আমাকে হয়ত লাগছে ?? কিভাবে ?? আমি মাথাটা তুল উনার দিকে তাকিয়ে বলি,
” আমার আজিব লাগছে। আপনি যাবেন কিনা বলুন ?? ”
আমা কাদ কাদ গলায় কথাগুলো বলতেই উনি বিছানা থেকে উঠে দাড়ালেন। উনি মার সামনে কাবার্ড খুললে আমি ত পুরো হা হয়ে যাই। কাবার্ডে একটা মেয়ের যতটুকু জামা দরকার ততটুকুই জামা আছে। উনি আমার দিকে ফিরে তাকিয়ে বলেন,
” তো বলো। এখন ঠিক আছে ?? এখানে যতদিন আছো এই জামাগুলো দিয়েই চলে যাবে। আরো লাগল আমি নিজে কিনে আনবো। তাও তোমার বাড়ি থেকে বের হওয়া মানা। কোথাও যেতে চাইলে আমি নিজে নিয়ে যাবো। তাও তোমায় একলা ছাড়বো না। কারণ তুমি যা মেয়ে। জিদ নিয়ে হারিয়ে যেতেও একবার ভাববে না। ”
আমি বিস্ময় নিয়ে বলি,
” এভাবে কতদিন আটকে রাখবেন ?? সুযোগ পেলে ঠিকই পালিয়ে যাবো। তখন ?? ”
আমার কথা শুনে উনার চেহারার ভাবমূর্তি পরিবর্তন গিয়ে গেলো। মনে হয় পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা ঠিক হজম হয়নি উনার। উনি আমার কাছে ধীর পায়ে এগুতে এগুতে বললেন,
” পালিয়ে যাওয়ার এত শখ ?? দাড়াও আজ সব শখ একেবারে মিটিয়ে দিবো। ”
বলেই নিজের শার্টের বোতাম একটা একটা করে খুলে আমার দিকে এগুতে লাগলেন। আর আমি উনার এই রক্তিম চেহারা দেখে ভয়ে পেয়ে পিছাতে লাগলাম। এর আবার কি হলো। একটাসময় আমি পিছাতে পিছাতে বিছনায় পড়ে গেলাম। উফফ। এখন কই যাবো ?? এই লোকটার মতিগতি সুবিধার লাগছে না আমার। কিন্তু আমি যতটুকু উনাকে চিনি উনি আমার মতে বিরুদ্ধে কিছুই করবেন না। তবুও কেনো যেনো ভয় লাগছে। আমি ভয়ে দুচোখ হাত দিয়ে চেপে ধরে চোখ মুখ খিচে আল্লাহ কে ডাকছি।
#শূন্য_থেকে_আসে_প্রেম
#পর্ব – ২৮
#আভা_ইসলাম_রাত্রি
আমি ভয়ে দুচোখ হাত দিয়ে চেপে ধরে চোখ মুখ খিচে আল্লাহ কে ডাকছি। কিছুসময় পর আমার মুখের উপর কারো উষ্ণ নিশ্বাস আছড়ে পড়ায় আমি কেপে উঠলাম। না দেখেই বুঝলাম যে সৌরভ ভাইয়া আমার উপর উপর হয়ে শুয়ে আছেন। আমি আমার চোখগুলো আরো খিচে বন্ধ করে নিলাম। হটাৎ আমার কানের কাছে ফিসফিস করে উনি বলে উঠলেন,
” এটা ঠিক না ইপশিপাখি। শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু এভাবে এতটা ইনোসেন্ট লাগলে কিভাবে দিবো বলো। কিন্তু শাস্তি তো দিতেই তো হবে। আফটার অল পালিয়ে যেতে চাইছো। শাস্তি তো প্রাপ্য তোমার। ”
আমি এবার চোখ থেকে হাত সরিয়ে উনার দিকে চোখ খুলে তাকাই। উনি আমার দিকে ঝুঁকে কেমন যেনো মাদক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। আমি ভয়ে উনার দিকে তাকিয়ে এক ঢুক গিলে বলি,
” আসলে.. আম.. ”
আমার কথা বলার মাঝখানে উনি হুট করে আমার গালে চুমু দিয়ে সরে আসলেন। আর আমি চমকে চোখ বড়বড় করে উনার দিকে তাকালাম। উনি নেশাকাতুর গলায় বললেন,
” উফফ কি লাগছে তোমায় ইপশিপপাখী। I’m completely dead.. তোমার ঐ ভয় ভয় মুখ আমার মনে নেশা লাগিয়ে দিচ্ছে। আর এই দেখো,, এই যে তোমার চমকানো চেহারা কি বলবো। আমাকে বেসামাল করে দিতেই এই চমকানো চেহারায় যথেষ্ট। জানো তুমি। ”
আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললাম। হটাৎ উনি আমার ঘাড়ে নিজের মুখ ডুবিয়ে দিলেন উনি। আর এতে আমার ৪৪০ ভোল্টেজের কাপাকাপি শুরু হয়ে গেলো। উনি আমার ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে মাতাল গলায় বললেন,
” আর কতভাবে মারবে আমাকে বলো ?? শুনো তুমি যদি ভেবে থাকো এইভাবে নিজের রূপ , লজ্জারাঙা মুখ দেখিয়ে আমাকে খুন করতে চাও তাহলে শুনে রাখো আমি তোমার ঐ অনুভবে বারবার মরতে রাজি আছি। বারবার। ”
আমি উনার এই ফিসফিস করে আওয়াজে আমি শিউরে উঠলাম। কোনোমতে বললাম,
” ক.কি ক.করছেন ? ছা.ছাড়ুন প.প্লিজ। ”
উনি আরো শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
” উহু। আজ থেকে নো ছাড়াছাড়ি। Only and only প্রেম। ”
আমি আবার বলি,
” আম..আমার অসস্তি লাগছে। প্লিজ ছ.ছাড়ুন। ”
উনি এবার আমাকে ছেড়ে দিয়ে মুখ তুলে আমার দিকে তাকালেন। আমি লজ্জা এর অসস্তিতে মাথা নিচু করে বারবার ঢুক গিলছি। হটাৎ উনি বকে উঠলেন,
” Wow!! what a scene !! “”
উনার দৃষ্টি অনুসরণ করে আমি আমার পেটের দিকে তাকালাম। পেটের থেকে শার্ট খানিকটা উঠে এসেছে। যার ফলে পেটের বেশ কিছু অংশ দৃশ্যমান হয়ে আছে। আমি চমকে জলদি করে শার্ট টা টেনে দিয়ে পেট ঢেকে দিলাম। রাগী চোখে উনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসছেন। আমি রাগী গলায় বললাম
” আপনি তো ভারী বেশরম হচ্ছেন দিন দিন। আগে তো এমন ছিলেন না। আর এখন আপনার চোখগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ছি। ”
উনি অবাক হওয়ার ভান করে বলেন,
” বেশরম আর আমি?? কখন,, কোনবেলায় ?? তোমার চোখে মনে হয়ে সমস্যা হয়ে গেছে। তুমি বোধহয় খেয়াল করো নি আমি আমার বউয়ের সাথে বেশরম হচ্ছি। আর এতে দোষের তো কিছু দেখছিনা আমি। আর তুমি কিনা আমাকে বেশরম তকমা দিয়ে দিলে। যেহেতু দিয়েই দিয়েছো তো কি বলো করবো নাকি বেশরম কোনো কিছু ?? হহুমম ?? ”
বলেই আমাকে চোখ টিপ দিলেন উনি। আমি চোখ বড়বড় করে উনাকে দেখলাম। কি বজ্জাত হয়েছে রে বাবা। আগে কেমন গুম মেরে বসে থাকতো। আর এখন ?? আস্ত বজ্জাত আর বেশরম হচ্ছেন। উনি আবার বলেন,
” বললে না যে করবো নাকি বেশরম কাজ ?? ”
আমি তাড়াতাড়ি করে বলি,
” দয়া করেন। এইসব কথা মুখেও আনবেন না। ”
উনি আমার কথার উত্তরে কিছু বলতে যাবেন তার আগেই উনার ফোন বেজে উঠলো। আমি বিছানার উপর রাখা ফোনের দিকে একনজর তাকালাম। ফোনের স্ক্রিনে “”নওমী “” নামটা জ্বলজ্বল করছে। এটাতো একটা মেয়ের নাম। উনাকে একটা মেয়ে কেনো ফোন দিয়েছে ?? উনি একবার ফোনের দিকে তাকিয়ে আবার আমার দিকে তাকালেন। আমার থেকে সরে উঠে বসে ফোনটা রিসিভ করে বারান্দায় চলে গেলেন। আর আমি অবাক হয়ে ভাবছি আমার সামনে কথা বললে কি হতো উনার ?? কি এমন গোপন কথা আছে উনাদের ?? যায় হোক আমার কি ?? কিছুদিন পর তো আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে । তারপর তো উনি আরেকটা বিয়ে এমনিই করে নিবে। তখন আমি থাকব একপ্রান্তে আর উনি আরেক প্রান্তে। এখন থেকেই এগুলো হজম করা শিখতে হবে। কিন্তু আমার ভিতর এত জ্বলছে কেনো ??উফফ ভাবতে ভাবতে আমার মাথাটা নির্ঘাত যাবে। আমি আর দেরি না করে কাবার্ড থেকে একটা ত্রি পিস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। এতক্ষণ উনার এইসব জামা পরে কিরকম যেনো অসস্তি লাগছিলো। ত্রি পিস টা পরে এখন অনেক শান্তি লাগছে।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখি উনি এখনই বারান্দায় দাড়িয়ে কথা বলছেন। এত কিসের কথা উনার ?? এতসময় হয়ে গেলো এখনই কথাই বলে যাচ্ছে। কি এক অবিরাম প্রক্রিয়া তাদের। আমি খুব মনোযোগ সহকারে উনাকে দেখলাম। মাঝেমধ্যে উনি ভ্রু কুচকে মন দিয়ে অপরপাসের কথা শুনছেন তো আবার হেসে উঠছেন। সেই হাসি কখনো জোড়ে বা আবার কখনো নিঃশব্দ। মাঝেমধ্যে আবার মাথা চুলকাচ্ছেন। যেনো লজ্জাবতী লতা। উফফ ইপশী। এসব আবোলতাবোল ভাবতে ভাবতে তুই একদিন ঠিকই পাবনা হসপিটালের স্থায়ী বাসিন্দা হবি। এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমি বারান্দার দিকে আর না তাকিয়ে নিজের রুমে চলে এলাম। উনি আর আমি একই রুমে থাকি না। আমি আমার রুমে এসে দরজা লাগিয়ে বিছানায় বসে পড়লাম। দাত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে খানিকক্ষণ ভাবলাম। ভাবতে ভাবতে এর কোনো সমাধান পেলাম না। আচ্ছা ওরা কি এখনও কথা বলছে ?? এতক্ষণ ?? কিসের এত কথা ?? আমি আর না সহ্য করতে পেরে দরজা টা খুলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। উনার রুমে এসে দেখি উনি বারান্দায় এখনই ফোনে কথা বলছেন একটা মাইয়া মানুষের সাথে এত কিসের কথা থাকতে পারে সেটা আমার মাথায় ঢুকছে না। হটাত উনি ফোন টা কেটে দিয়ে রুমে আসলেন। আমাকে একবার দেখে নিজের শার্টের বোতাম গুলা লাগিয়ে বলতে লাগলেন,
” আচ্ছা শুনো আমি একটু বাইরে যাবো। আসতে সন্ধে গিয়ে যেতে পারে। এসে যাতে তোমাকে দেখি এই বাসাই আছো। নাহলে তো বুঝোই আমি কি করবো। অবশ্য বাসার সামনে গার্ডকে বলে রাখবো তোমাকে পাহারা দেওয়ার জন্যে। লোকটা আবার অনেক টাকা পাগল। তাই আমার আয়ত্তে আনা সহজ হবে। ”
আমি উনাকে কিছু জিজ্ঞেস করবো বলেই জড়তার জন্যে করতে পারছিনা আবার না করেও থাকতে পারছিনা। আর পারলাম না পেটের ভিতর রাখতে। । আমি ধীর পায়ে উনার সামনে এস দারিয়ে মাথাটা নীচু করে ক্ষীণ আওয়াজে বলি,
” একটু আগে যার সাথে এত কথা বলছিলেন ও কে ছিল বলবেন ?? ”
উনি আমার দিকে বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকালেন। তারপর হটাৎ কি মনে একটা করে বাকা হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
” তোমার সতীন। ”
চলবে…
[ গল্পটা কি আপনাদের বিরক্ত করছে ?? না মানে এই যেমন টানা হেচড়া করে বড় করলে যেমন হয় তেমন হয়ে যাচ্ছে ?? আসলে রাগ করবেন না। কাহিনী সাজাতেই এত বড় করতে হচ্ছে। নাহলে আরো আগেই শেষ হয়ে যেত। আমি দেখি তারাতারি শেষ করতে পারি কিনা ।
হ্যাপী রিডিং 🖤 ]
চলবে..