#শ্রাবণ_তোমার_আকাশে
#লেখনীতে-ইসরাত জাহান ফারিয়া
#পর্ব___১৬
এ বাড়িতে আসার পর বেলা পরিবারের প্রতিটি সদস্যদের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। তাঁদের
হাসি-আনন্দ, সুখে-দুঃখে পাশে থেকেছে। তবে নাজনীন বেগমের সাথে চলতে-ফিরতে গিয়ে ওর মনে হলো এই মহিলা উপরে উপরে যতোটা কোমলতা দেখায়, ভেতরে তা নয়। তবুও ও শ্বাশুড়ির মন রক্ষার জন্য ওনার নির্দেশনা মতোই সবকিছু করেন৷ তবে নাজনীন বেগম ওর সাথে খুব একটা খারাপ ব্যবহার করেন না, হাসিমুখেই কথা বলেন। শিলা আর আলম সাহেব খুব ভালো৷ তাঁদের সাথেও বেলার কথাবার্তা ফ্রি মাইন্ডের। পুরোদস্তুর একটা বিবাহিত নারীর মতোই নিজের সব দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করে যাচ্ছে।
বেলার পরিবারে শুধু ওর মা জানতো সবকিছু। তিনি প্রথমে শাইনির বাড়িতে ওকে রাখতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু সবকিছু শোনার পর সীমা বেগম নিজের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে মেয়ের কাজে সমর্থন দিয়েছেন। হাজার হোক, শাইনি এখনো বেলার স্বামী এবং অসুস্থ। তাঁর পাশে থাকা বেলার কর্তব্য। আর বাড়িতে এই বলে ম্যানেজ করেছেন যে, বেলা শাইনির কাছ থেকে দূরে থাকার জন্য ওর কোনো এক বান্ধবীর বাসায় উঠেছে। নাইমুদ্দীন সাহেবের খটকা লাগলেও বিষয়টা আর খতিয়ে দেখলেন না। মেয়ে যেখানেই থাকুক, ভালো থাকুক। ওই কুলাঙ্গারের কাছে কোনোভাবেই মেয়েকে গছিয়ে দেবে না। এবার আর কোনো ছাড় নেই, সোজা আইনী সহায়তার দ্বারস্থ হবেন তিনি।
এভাবেই পেরিয়ে যায় একটি মাস। শাইনির নিয়মিত ট্রিটমেন্ট চলছে। তবে ভালো-মন্দ কিছুই সে কাউকে বলে না। আলম সাহেবও বেলাকে কিছু জানায় না। জানতে চাইলে এড়িয়ে যায়। এভাবেই দিনগুলো কাটছে। বেলার অবশ্য শাইনির জন্য খুব চিন্তা হয়। তবে কোনোটাই সে প্রকাশ করে না।
রৌদ্রকরোজ্জ্বল দুপুর। শ্রাবণ মাস শেষ হয়েছে সপ্তাহ তিনেক আগে। এখন নীল আকাশ তার নীল রঙের মেঘবালিকাদের পসরা সাজিয়ে মেলা বসিয়েছে দূর দিগন্তে। সেদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বেলার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে, কিছুই ভালো লাগছিল না। ঘরের ভেতর থাকতে থাকতে ওর দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। গতকাল রাতে শাইনির শরীর বেশ খারাপ হয়ে যায়৷ রক্তবমি করেছে কয়েকবার। মাথা ঘুরা, দুর্বলতা তো ছিলোই। নিজের হাতে সবকিছু পরিষ্কার করেছে বেলা। ওর একটু ঘেন্না লাগেনি, অথচ কাজ করতে গিয়ে আঙুল কেটে যখন রক্ত চলে আসতো, তখন চিৎকার করে সারাবাড়িতে হুলস্থুল কান্ড বাঁধিয়ে বসতো। একদম সহ্য করতে পারতো না টকটকে লাল বর্ণের সেই রক্ত। নিয়তির পরিহাসে আজ নিজ হাতে, নিজের স্বামীর রক্তাক্ত বমি পরিষ্কার করেছে৷ তাতে ঘেন্না না লেগে ওর খারাপ লেগেছে, কষ্ট হয়েছে, চোখে জল এসে জমা হয়েছে। লোকটার শরীরের প্রতিটি জায়গায় র্যাশ হয়ে ফুলে ফুলে গেছে। ফর্সা শরীরটা তখন লালচে হয়ে যায়। শাইনির কষ্টে বেলার তখন বুক কেঁপে উঠে। খাওয়ার সময় নিজের হাতে খাইয়ে দেয়, কাপড়চোপড় ধুয়ে গুছিয়ে রাখে, হসপিটালের যাওয়ার দিনতারিখ মনে রাখে, নিয়মিত ঔষধ সেবন করায়। তাতে ওর বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেয়। চাওয়া একটাই, লোকটা যাতে সুস্থ হয়ে যায়। এই অনুভূতিটুকুকে বেলা মূল্যহীন ভাবতো। ভাবতো, একজন অসুস্থ মানুষের জন্য এটুকু করা মোটেও অন্য কোনো অনুভূতির নাম বহন করতে পারেনা। কিন্তু কাল রাতের পর, বেলা বুঝতে পারছে শাইনির জন্য জমানো সব অনুভূতি মোটেও মূল্যহীন নয়। সেগুলো খুব কঠিন অনুভূতি। সেই কঠিন অনুভূতির নাম ‘ভালোবাসা’। বেলার মতে, ভালোবাসা নামক অনুভূতি এক ধরনের অত্যাচার। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে কখনো যাওয়া যায় না, সহ্য করে নিতে হয়। নয়তো নিজেকেই সেই অত্যাচারে পুড়ে পুড়ে মরতে হয়। এই অত্যাচার পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর অত্যাচার।
বেলা শাইনিদের বাসার ছাদের দোলনাটায় একা বসে আছে। রাতের অসুস্থতার পর শাইনিকে ডাক্তার মাহমুদুল হাসান এসে দেখে গেছেন বাড়িতে। ও এখন ঘরে ঘুমাচ্ছে। বেলা সেই সুযোগে ছাদে উঠে এসেছে। নিজেকে কিছুক্ষণ সময় দিতে, ভাবনাগুলোর উত্তর বের করার জন্য। মনটাকে শান্ত করার জন্য। এমন সময় আলম সাহেব এসে ওর পাশে বসেন। বেলা ভাবনার গভীরতা থেকে বাস্তবে ফিরে আসে। আলম সাহেবের চোখের কোণে জমাকৃত পানি আর বিধবস্ত চেহারা দেখে কষ্ট হয় ওর। অথচ বেলার মনে পড়ে গতকাল রাতে শাইনি যখন অসুস্থ হয়ে যায়, তখ একবারের জন্য নাজনীন বেগম ওকে দেখতে আসেন। হালকা সেবাযত্ন করেন ঠিকই, তবে একজন মায়ের যেমন বিচলিত হওয়ার কথা বা কষ্ট পাওয়ার কথা সেসবের ছিঁটেফোঁটাও তাঁর মধ্যে ছিল না। যেন নেহাৎই তাঁর সংসারে শাইনি নামক ছেলেটা পড়ে আছে। সে তাঁর আপন কেউ নয়! বেলা ভাবছে প্রশ্নটা করবে কি-না আলম সাহেবকে। ওর ভীষণ কৌতূহল হচ্ছে। শেষমেশ ঠিক করলো জিজ্ঞেস করবে, তাতে যা-ই হোক না কেন!
বেলা নিচু কন্ঠে বলল, ‘আঙ্কেল একটা কথা ছিল!’
-বলে ফেলো মা।
বেলা ইতস্তত করে বলেই ফেললো, ‘কিছু মনে করবেন না আঙ্কেল, বলতে চাইছিলাম যে আন্টি এত স্বাভাবিক কেন ওনার বিষয়ে? ওনি কী কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তিত নাকি অন্য কোনো প্রবলেম আছে?’
আলম সাহেব গম্ভীর মুখে তিক্ত গলায় যা বললেন তা বেলার ভাবনার বাইরে ছিলো।
-শাইনি আসলে নাজনীনের পুত্র নয়।
বেলা যেন ঝটকা খেলো একটা। একটু জোরেই সে জিজ্ঞেস করলো, ‘মানে? আন্টি ওনার মা নন?’
-না।
-তাহলে?
-শাইনি নাজনীনের সৎপুত্র। কিন্তু এটা শাইনি আজ অবধি জানতে পারেনি, আমরা বলিনি। নাজনীন বেশ কয়েক বার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমার কারণে পারেনি। এজন্যই আমার ছেলের প্রতি ওর আচরণ ভালো ছিলনা।
বেলা অবাক হলো। শাইনি নাজনীনকেই নিজের মা জানে। তার যে নিজের একটা মা ছিল সেটা ও জানেইনা। এতগুলো বছরে একবারও জানায়নি কেউ ওকে এই কথাটা? অদ্ভুত!
আলম সাহেব যে পুরোনো দিনের স্মৃতির খোঁজ দিতে লাগলেন বেলাকে। তাঁর কন্ঠস্বর কাঁপছে।
-শাইনির মা’ শাহানাকে বিয়ে করেছিলাম পরিবারের কথায়। খুব সুন্দরী ছিল সে। রুপে-গুণে অনন্যা যাকে বলে। শাইনির জন্মের কয়েক মাসের মাথায় ওর এক কঠিন অসুখ দেখা দেয়৷ গ্রামের ডাক্তাররা কিছুতেই সেটা ধরতে পারছিলেন না। কথায় আছে, মানুষের মৃত্যু যত ঘনিয়ে আসতে থাকে, মানুষ ততই মৃত্যুকে উপলব্ধি করতে পারে। আমি ওকে ঢাকায় সবচেয়ে বড় হসপিটালে নিয়ে আসি, চিকিৎসা করাই এবং জানতে পারি ওর ক্যান্সার। যেনতেন নয়, লিউকেমিয়া। শাহানা একথা জানতে পেরে খুব ভেঙ্গে পড়ে৷ শাইনির মুখের দিকে তাকিয়ে ও আমাকে আরেকটা বিয়ে করার জন্য জোর করে। আমি রাজি ছিলাম না, কিন্তু ওর জোরাজুরিতে বাধ্য হয়েই আমি নাজনীনকে বিয়ে করি। শাইনি তখন দেড় বছরের শিশু৷ আমাদের বিয়ের কিছুদিন পরেই শাইনির মা মারা যায়। আমি তখন শাইনিকে নাজনীনের হাতে তুলে দিয়ে বলি কখনো যাতে মায়ের অভাব বুঝতে না দেয়৷ ওর যে মা নেই সেটা যেন না বুঝে।’
বেলা জিজ্ঞেস করলো, ‘তারপর?’
আলম সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, ‘তারপর! আমি শাহানার মৃত্যুর পর একেবারে ঢাকায় স্যাটেল হয়ে পড়ি। আর নাজনীন ঠিকই শাইনিকে দেখাশোনা করতো তবে তেমনভাবে নয়। গা-ছাড়া ভাবে। সে বিরক্ত হতো। অথচ শাইনি এই নাজনীনেরই ন্যাওটা ছিল। সারাক্ষণ মা মা করতো। নাজনীন তা পছন্দ করতোনা। তবে মুখ ফুটে কিছু না বললেও কাজে তা দেখিয়ে দিতো। সে শাইনিকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে রাখতো। মনে মনে চাইতো আমার ছেলেটা যাতে খারাপ পাল্লায় পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। আর আমি ওকে বাড়ি থেকে বের করে দিই। আমার ছেলেটা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চেয়েছিলো। নাজনীন হিংসা করে ওকে এসব থেকে দূরে পাঠিয়ে দেয়। এক্সামে টিকে গেলেও পরবর্তীতে খারাপ বন্ধুবান্ধবদের পাল্লায় ঠেলে দেয়। আমি কখনো ভাবতেই পারিনি মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে হয়ে নাজনীন কীভাবে এসব করতে পারে! অথচ শাইনি নিজের আপন মায়ের চেয়েও বেশি আপন ভাবতো ওকে। ইভেন এখনো ভাবে।’
-কিন্তু আমাকে যে বললেন, ছেলেকে খুব ভালোবাসেন?
-ওসব লোক দেখানো। আমিও আগে তাই ভাবতাম কিন্তু সময়ের সাথে বুঝতে পারি ওর জন্যই আমার ছেলে আজ এমন।
-আপনি কিছু বলেননি?
-বলেছি। তাতে ওর কোনো যায় আসেনা। সবার সামনে ভালো মানুষীর নাটক করে। আমি যে শাইনিকে ভালোবাসি, ওর সব আবদার পূরণ করি এটা ওর মোটেও পছন্দ না। আমি ভাবতেই পারিনা নাজনীন এমন কেন? ওর সব চাহিদা আমি পূরণ করি। আসলে পর কখনো আপন হয়-ই না। সবাই স্বার্থপর আর লোভী!
বেলা বলল, ‘ওনি হয়তো চান-না আমি আপনাদের পরিবারে বউ হয়ে থাকি। ওনার গা-ছাড়া কথাবার্তা আমি সেদিন ঠিক বুঝতে পারিনি। প্রথমে বললেন আমি যাতে ওনার ছেলের জন্য স্যাক্রিফাইস না করি, পরে আবার বললেন যাতে সময় নিয়ে ভাবি আর ডিভোর্স না করি৷ মানে ইনডিরেক্টলি ওনি এটাই বুঝাতে চান যাতে আমি এই বিয়েটা ভেঙে দিই। কিন্তু কেন বুঝতে পারছিনা।’
আলম সাহেব অবাক হয়ে বললেন, ‘ও তোমাকে এসব বলেছে?’
বেলা মাথা নাড়ালো।
-জি। প্রায়ই বলে।
আলম সাহেব শ্লেষের হাসি হাসলেন। পরক্ষণেই রাগী স্বরে বললেন, ‘ও আসলে নিশার সাথে শাইনির বিয়ে দিতে চেয়েছিল। যাতে করে সম্পত্তি হাতাতে পারে।’
বেলা অবাক হয়ে বলল, ‘ওনি তো ওদের সম্পর্কের বিষয়ে জানতোনা৷ তাহলে?’
-জানতো প্রথম থেকেই। লুকিয়েছে সবার কাছ থেকে।
-ওনার নিজেরও তো সন্তান আছে আঙ্কেল। শিলা তো ওনারই মেয়ে তাইনা? নাকি না?
আলম সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, ‘হুম। শিলা ওর আর আমার মেয়ে। নাজনীন চায় আমি আমার সব সম্পত্তি শুধু শিলার নামে করে দিই।’
-সে তো আপনার মেয়েই!
-হুম। কিন্তু শাইনি ও তো আমারই ছেলে।
-একটা ভালো পরিবার পেলে হয়তো তিনি এমন হতেন না।
বেলা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। বলল, ‘আপনি ওনাকে শাসন করেননি?’
-মা মরা ছেলে। কখনো শাসন করতে পারিনি। তবে বুঝিয়েছি অনেক। অফিসের কাজে সময় দিতে গিয়ে, চারদিক সামলাতে গিয়ে আমি ছেলেটাকে ঠিকঠাক শাসন করতে পারিনি। তবে মনের দিক থেকে অনেক বেটার সে৷ অথচ দেখো, সে-ও মায়ের পথে পথযাত্রী হতে চলেছে। একই রোগ ওর শরীরে বাসা বেঁধেছে। আমি কী করবো বুঝতে পারছিনা।
আলম সাহেব মাথা নাড়ালেন। তার চোখ ভেজা। গলা ভারী। বেলার গলা ধরে আসছে। ঘরে যাওয়া প্রয়োজন। সে এবার জিজ্ঞেস করলো, ‘আর কিছু বলবেন আঙ্কেল?’
-হ্যাঁ।
-কী?
-একটা অনুরোধ।
-কীসের অনুরোধ?
-আমার ছেলেটার পাশে থেকো। খুব পছন্দ করে তোমায়! খুব ভালোবাসে।
বেলা ঢোক গিলে বলল, ‘কিন্তু আমি পছন্দ করিনা। ওনার ব্যবহার আমার মাথায় রক্ত ওঠিয়ে দেয়। কিডন্যাপের মতো জঘন্য কাজ করেছেন ওনি।’
-প্লিজ। আমার ছেলেটা অসুস্থ। তুমি পাশে থাকলে কিন্তু ভরসা পাবে।
বেলা বলল, ‘প্লিজ আংকেল, এভাবে অনুরোধ করবেন না, কথা দিতে পারছি না আমি! এখন মানবিকতার খাতিরে আছি, কিন্তু বাবা জানতে পারলে এক মুহূর্ত আমাকে থাকতে দিবে না।
আলম সাহেব নির্লিপ্ত কণ্ঠে বললেন, ‘তোমার পরিবার মানুক আর না মানুক, এখনো তুমি শাইনির স্ত্রী।’
বেলা চমকে উঠলো। কথাটা বাস্তব সত্য।
মাথা নিচু করে বেলা বলল, ‘বাবা আবার ব্যবস্থা করছেন!’
-ততদিন পর্যন্ত একটু সময় দাও। মানছি আমার ছেলে ভালো নয়!
-চেষ্টা করবো।
বেলা ছাদ থেকে নেমে এলো। ওর পা কাঁপছে। দ্রুত পায়ে শাইনির ঘরে এগিয়ে গেলো সে। লোকটাকে ভালোবাসে সে! দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে শাইনির শিয়রে বসলো সে৷ শাইনি ধীরে ধীরে চোখ খুলে তাকালো। বেলা জিজ্ঞেস করলো, ‘কিছু প্রয়োজন?’
-হুম।
বেলা ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো, ‘কী?’
-ভালোবাসা।
-মানে?
-ভালোবাসা প্রয়োজন।
বেলা লজ্জা দূরে ঠেলে বলল, ‘আপনি অন্য কাউকে ভালোবাসুন, আর আমাকে আপনি ভুলে যান।’
শাইনি অসুস্থ কন্ঠে বলল, ‘চাইলেই সবাইকে ভালােবাসা যায় না! আর যাকে ভালােবাসা যায় তাকে ভুলে থাকা যায় না।’
বেলা বলল, ‘মন থেকে ভালোবাসলে সবই সম্ভব। আবার হয়তো অন্য কোনো সুন্দরীকে দেখলে তাঁকেও পটিয়ে বিয়ে করে ফেলবেন। হুহ!’
শাইনি মুচকি হাসলো। নম্র কন্ঠে বলল, ‘অন্যদের মতাে আমি অভিনয় করতে পারিনা, কিন্তুু যতটুকু ভালোবেসেছি সবটাই মন থেকে। অন্য কাউকে পাইনি বলে যে তােমাকে ভালােবাসি এমনটা নয়। তোমাকে ভালােবাসি বলেই অন্যকাউকে পেতে চাই না। ভালোবাসি লজ্জাবতী লাজুকলতাকে।’
বেলা চোখ বন্ধ করে বলল, ‘ভালোবাসি। খুব ভালোবাসি।’
চলবে…ইনশাআল্লাহ!
(গল্পের এন্ডিং আগেই ভেবে রেখেছি। এখন আপনারা যদি হ্যাপি বা স্যাড এন্ডিং পড়তে না চান তাহলে আমি জোর করবো না। গল্পের প্লট অনুযায়ীই আগাবে। আর মাত্র কয়েকটা পর্ব হবে। এখনই বলবো না স্যাড হবে নাকি হ্যাপি। দুটোই হতে পারে, না-ও হতে পারে। হ্যাপি রিডিং।)