সংশয়
পর্ব :৩
#লেখক :ঐশি
তাসফিয়া চলে যেতেই ওই অপরিচিত নাম্বার হতে কল আসলো,,,।আমি কল রিসিভ করবো কি করবো না এসব ভাবছি ।তবুও রিসিভ করলাম,,
–আপনি কে সেটা জেনে গেছি আমি ,,,
–বলুন তো আমি কে ?
–আপনি তাসফিয়ার বাবা নন ।আপনি অন্য কেউ ,,
–অন্য কেউ টা কে সে ?বলেন তো দেখি ,,
–আপনি আপনার পরিচয় আর আপনার আমার সাথে কীসের শত্রুতা জানলে খুশি হতাম,,
–জানবেন সময় হলেই জানবেন,,,
এরপর লাইন কেটে যায় ।এখনো কে যে ওই মানুষ তা সঠিক ভাবে জানতে ই পারছি না ।আমার কোনো কিছু ই ভালো লাগছে না ।আমি কিছু ই বুঝতে পারছিলাম না কি করবো ।এদিকে কত কিছু ই ঘটে গেলো ।আমি না জেনে বুঝে ,যাচাই না করে কত কষ্ট ই না দিয়েছি আমার প্রিয় মানুষটাকে ।এই একটা ভুল এর জন্য তাকে আমার হারাতে হবে ।আমি জানি এই ভুল এর জন্য আমাকে ক্ষমা করবে না ।আমি সারা রাত শুধু এই কথা গুলো ভাবলাম ।কিছুদিন পরেই বিয়ে ।আমি কিছু ই করিনি ।কারন ভুল আমার ক্ষমা চাওয়ার মতো কোনো মুখ নেই আমার ।না জেনে না শুনে কত অপবাদ দিয়েছি ।
এভাবেই চলে এলো বিয়ের আগের দিন ।দুপুর এ খাচ্ছি ভাবছিলাম সেই মানুষটার কথা যে মানুষটার সাথে দীর্ঘ ৬ বছরের সম্পর্ক কিন্তু এই একটা ভুল এর কারনে আমি সব হারাবো ।পরোক্ষনে মাথায় এলো হাসপাতাল এর রিপোর্ট টা কি তবে ভুয়া ?এটা যাচাই করতে হবে ।কিন্তু পরে মনে হলো কি লাভ যাচাই করে কাল তো তার বিয়ে হয়ে যাবে ।আমি কিছু ই করতে পারবো না ।বিকেল এ বসে আছি ছাদে ,সুধু ভাবছি আজকে এই সময় এখানে বসে আছি কালকে সে হয়তো অন্য করো বউ হয়ে চলে যাবে ।কান্নাটা এমনিতেই চলে এলো ।হঠাৎ মোবাইল বেজে উঠলো,,
–হ্যালো ,,কে,,?
–আজ তো আমার গায়ে হলুদ আসবে না ?দেখে যেয়ো এই খারাপ মানুষটাকে পারলে একটু সান্তনা দিও ।আর আমার জন্য দোয়া করে যেয়ো ।তোমার পরিবারের সবাই কে আসতে বলো কেমন,,
–তুমি ঠিক আছো ?
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
–আরে আমার বিয়ে ঠিক থাকবো না ?বিয়ে তো একবার ই আসে তাই না ?
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
–হ্যা,আসবো,,
কখন যে চোখ দিয়ে পানি ঝড়েছে খেয়াল ই করিনি ।আমি সন্ধা পর্যন্ত ছাদে বসে থাকলাম ।সন্ধায় বাসায় বসে ছিলাম যখন ই দেখি রুম এ তাসফিয়া ।আমি কোলে নিলাম ।তাকে নিয়ে এলো কে ?তাকে বলতে ই বললো ,,ওর আম্মু পাঠিয়েছে ড্রাইভার দিয়ে আমাকে নিতে ।আরো অনেকেই এসেছে ।আমি চললাম শেষ বারের মতো আমার প্রিয় মানুষকে ছুয়ে দিতে ।গাড়ি দিয়ে যাচ্ছি ঠিক ই মনে হচ্ছে এটাই হয়তো শেষ দেখা হবে আমার ।গায়ে হলুদ এর গেট বিশাল বড় করে বাধা ।আমি এগিয়ে যাচ্ছি ভিতরে ।ভিতরে যেয়ে দেখলাম সে হাসি খুশিতে ই আছে ।যাই হোক ভালো থাকুক এটা আমিও চাই ।যখন হলুদ লাগাবে তখন বাড়িতে একটা পুরুষ মানুষও নেই ।শুধু আমি ছিলাম ।গায়ে হলুদ এ নাকি ছেলেদের আগে হলুদ লাগাতে হয় কন্যার মুখে ।সবাই আমাকে বার বার ডাকছে যেতে চাচ্ছিলাম না তবুও গেলাম ।তাসফিয়া প্রথম প্রথম মিশতো না আর এখন আমার সাথেই সব সময় ।হলুদ হাতে নিয়ে কপাল এ শেষ বারের মতো ছুয়ে দিলাম ।তারপর তাসফিয়া দিলো ।সে একদম স্বাভাবিক ।এটাই হলো মেয়েদের মন সব পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে তারা ।সবাই গায়ে হলুদ এর গানে মজায় উল্লাসে ব্যাস্ত ।আমি আড়ালে যেয়ে কেবল দাড়িয়েছি ।হঠাৎ দেখলাম তাসফিয়া পাশে এসে দাড়িয়েছে ।কিছু বলার আগে ই সে বললো,,
–আমার নতুন জামা ,,সুন্দর না ?
–হ্যা,অনেক সুন্দর ,,
–কালকে আম্মুর সাথে আমিও চলে যাবো ,,,,তুমি যাবে ?
–না তুমি যাও,,
–তোমাদের বাসায় যদি আমরা চলে যেতাম তাহলে ভালো হতো না ?তোমাদের বাসায় অনেক খেলনা ,,
–তোমার আম্মুকে নিয়ে একদিন বেড়াতে এসো বাসায়,,
–ঠিক আছে ।আমার পাপাও তোমার মতো ই আমাকে অনেক আদর করতো ।
–তোমার পাপা এখন কোথায় ,?
–আকাশে চলে গেছে ।আম্মু যে কোথায় তা ও জানি না ।
–ও কি তোমার আম্মু না ?
–হ্যা এটাও আম্মু। দুইটা আম্মু আমার,,
–মানে তোমার আম্মু কোথায় এখন ,,
–জানি না ,,আমি তো এই আম্মুর সাথে পার্ক থেকে এসেছি ।
–তোমার কথা কিছু বুঝতেছি না ,,,,
–তুমি ঐ হলুদ শাড়ি পড়া আম্মুকে বলো আমি কিভাবে এলাম,,
যা ই হোক জানতে আমাকে হবেই সব ।গায়ে হলুদ শেষ হলো রাত ১২ টায় ।সবাই যখন বাসায় চলে যাচ্ছে তখন দেখি তাসফিয়া তার মাকে মানে আমার প্রিয় মানুষকে টেনে নিয়ে আসছে ।এসে ই বললো,,
–কি জন্য ডেকেছো বলো?
–তাসফিয়া কে ? কি তার পরিচয় ?
–ও আমার মেয়ে আর কিছু ই জানার দরকার নেই ,,
–সত্যি টা বলো আমি চলে যাবো,,
–বলার মানুসিকতা নেই তবুও বলছি শুনো,,তোমার সাথে একদিন দেখা করে বাসায় ফিরার সময় তাসফিয়াকে তার মা এর সাথে ই দেখি ।তাসফিয়া এমনিতে আমার কোলে আসার জন্য ডাকছিলো ।আমি পাশে যেয়ে শুধু দাড়িয়েছি হঠাৎ খেয়াল করলাম তার মা পড়ে যাচ্ছে ।অনেকে ধরে হাসপাতাল এ নিয়ে যাই কিন্তু বাচাঁতে পারিনি ।শুধু একটা বলেছিলেন তাসফিয়ার বাবা ঠিক ই ওকে একদিন নিয়ে যাবে ।এরপর থেকে আমাকে ই আম্মু ডাকে ।ভেবেছিলাম তোমাকে সব বলবো কিন্তু বলিনি দেখতে চেয়েছিলাম তুমি কতটা ভালোবাসো আমাকে ,,
–তাহলে তুমি পছন্দ করে কাউকে বিয়ে করছো ?
–হ্যা,,আমাকে শাকিল পছন্দ করতো অনেক আগে থেকেই সেটা তুমি জানতে ।সে এখনো ভুলেনি আমাকে এই মেয়ে নিয়েও সে রাজি আমাকে বিয়ে করতে ।হয়তো ভালোবাসে আমাকে অনেক ।,,
কোনো কথা বলিনি ।ফিরে আসি একা একা ই ।বাসায় এসে ভাবলাম একটু ঘুমাবো ।কিন্তু তার আগে ই ফোন এ কল আসলো ।কল রিসিভ করতেই তাসফিয়া বলতে শুরু করলো,,,
–আম্মু তো অনেক কান্না করছে ,,,তোমার জন্য ,,।তোমাদের বাসায় আমাদের কে থাকতে দিবে ?
–তোমার আম্মু কোথায় ?কেনো কান্না করে ?
–তোমার জন্য ।তুমি আম্মু কে বিয়ে করে ফেলো ।তোমাকে বাবা ডাকবো ,,
এরপর তাসফিয়ার ও কান্নার আওয়াজ ই শুনলাম ।কল কেটে গেলো ।কি করবো জানি না কিছু ই ।ভাবনায় আমার পুরো মাথা ঘুরে যাচ্ছে ।তবে আমি তো তাকে কান্না করতে দেখিনা ।সে একা একা ই বেশ ভালো আছে ।কিভাবে যে কি করবো এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম ।সকাল এ উঠে ফ্রেশ হয়ে মাত্র রুম এ আসলাম ।তখন ই তাসফিয়া বসে আছে ।তখন বললাম,,
–কার সাথে এসেছো তুমি ?
–আন্টির সাথে ,,
–ওহ ভালো ।নাস্তা করেছো সকাল এ ?
–হ্যা ।পাপা আম্মুকে কি বিয়ে করবে না ?
–তোমার ওই পাপা টা অনেক ভালো মামুনি ।
–না ওই আংকেল কে ভালো লাগে না তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে ।
–চলো তোমাদের বাসায় যাই ।
বিয়ের সাজে দুপুর এ বসে আছে সে ।অপরুপ সুন্দর লাগছে তাকে ।হয়তো সে হবে অন্য কারো ।জামাই পক্ষ এসেছে ।আমি দেখিনি খাবার টেবিল এ অনেক দূরে বসে আছি ।হঠাৎ ই দেখলাম কিছু পুলিশ আসলো ।এসেই শাকিল কে খুজতে লাগলো ।খুজে পেয়েও গেলো ।তাকে কি কারনে জবাব দিহি করতে চাইছে বুঝতেই পারছি না ।হঠাৎ তাকে ধরে নিয়ে গেলো ।সারা বাড়ি হাওমাও লেগে গেলো ।মনে মনে একটা সান্তানা পেলাম এই সুযোগ নিজের প্রিয় মানুষ কে আমার করে নেওয়ার ।উঠে যখন ই সামনের দিকে যাচ্ছি তখন ই পিছন থেকে ডাক পড়লো ,,
–পাপা,পাপা,,
দুই পাপা ডাকলো কে ?পিছনে তাকাতেই দেখি তাসফিয়ার সাথে তাসফিয়ার মতো হবুহ একজন ই ।আমি একদম স্তব্দ হয়ে গেলাম ।
চলবে,,
#আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী পার্ট দিবো। আসা করি সবাই লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।