#সত্যি_তোকে_অনেক_ভালোবাসি💖💖
#Part : 10
#ইসরাত_জাহান_প্রভা
মিরা: শুভ এভাবেই কী কোলে শুয়ে থাকবে??রাত তো ১২ টা বাজে।।চলো খেয়ে নেমে।ঔষধ খেতে হবে তো।
শুভ: আর একটু থাকি?
মিরা: না একদম না।।চলো ওঠো।।(শুভকে ঠেলে তুলতে তুলতে)
শুভ আস্তে আস্তে উঠে পড়লো।।
মিরা: খাওয়ায় দিবো?(খাবার প্লেট এনে)
শুভ: তো কী করবে??তুমি না খাওয়ায় দিলে আমি কী খেতে পারি??
মিরা: আচ্ছা বাবু।।আমি জানি তো।।হা করো এখন।।
মিরা শুভকে খাওয়ায় দিতে লাগলো।।শুভ ছোট বাচ্চার মতো গপাগপ খেতে লাগলো।।
শুভকে খাওয়ানোর পর মিরাকে শুভ খাওয়ায় দিলো।।মিরা হাসি হাসি মুখ নিয়ে খেতে লাগলো।।খাওয়া শেষে শুভ আবার মিরার কোলে শুয়ে পড়লো।।
মিরা: আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি তুমি ঘুমিয়ে পড়ো।।(হাত বুলাতে বুলাতে)
শুভ: আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি মিরা।।
মিরা শুভর কপালে মিষ্টি একটা চুমু দিয়ে বললো,আমিও তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি সোনা।।
একটু পর শুভ ঘুমিয়ে গেলো।।মিরা শুভকে বালিশে শোয়ায় দিয়ে নিজেও ঘুমাতে গেলো।।
…….
সকাল বেলা পড়াশোনার আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেলো মালিহার।।
মালিহা: এই পায়েল এত জোড়ে জোড়ে কে পরছে রে?(বিরক্ত নিয়ে)
পায়েল: কৈ?(কুচড়ে মুচড়ে)
মালিহা: ভালো করে শুনে দেখ।।(পায়েলের মাথায় টালা দিয়ে)
পায়েল: সকাল সকাল বিরক্ত করিস না তো আপু।।কোথায়?(বিরক্ত নিয়ে)
মালিহা: একটু ভালো করে কান পেতে শোন বোইন!!
পায়েল এবার শুনতে পেলো যে কেউ পড়ছে।গুনগুনিয়ে না অনেক জোড়ে জোড়ে।আবার মাঝে মাঝে চিৎকারও করছে।
মালিহা: শুনতে পারছিস?
পায়েল: হুম।।এটা নিশ্চই তোমার পড়ুয়া বাবু হবে।।যাকে তুমি ব ল দ বলে ডাকো।।(হা হা হা হা হা হা হা হা)
মালিহা: চুপ কর।।তোর মতো তো আর পড়া চোর না।।পড়ছে এটা তো ভালো।।
পায়েল: তাই বলে এত জোড়ে?
মালিহা: দারা আজ ওকে মজা দেখাচ্ছি।।(বিছানা থেকে উঠে)
নিলয়ের কানে হেডফোন আর হাতে বই।।বই এর পড়া গুলো জোড়ে জোড়ে পড়ছে আর যখনি গানের ফিল পাচ্ছে তালে তাল রেখে চিৎকার করছে।।
নিলয়: জৈব যৌগের বিক্রিয়ার কৌলল অনুসারে মুক্ত মূলক অথবা “আলবিদা আলবিদা মেরে রাহে আলবিদা মেরে সাসে কেহতিহে আলবিদা”আয়নিয় বিকারক উভয়ের মাধ্যমেই প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া সংঘটিত হতে পারে।।”মাইয়া রে মাইয়া রে তুই ছাইড়া গেলি রে।।আমার বুকটা এখন কাইন্দা মরে আমায় ছেড়ে দে।।লে লে লে লে লে লে লে……
মালিহা দৌড়ে এসে নিলয়ের কান থেকে হেডফোন খুলে ফেলে দিলো।।নিলয় অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।।
মালিহা:ঐ ব্যাটা চিৎকার করতাছোস কেনো?(চিল্লায়)
নিলয়:আমি তো পড়তেছিলাম(মায়া সুরে)
মালিহা: তাহলে কী আমার বর আইসা চিল্লাইতেছিলো??(রাগের মাথায়)
নিলয়: আপনি বিয়ে করেছেন?কবে?(আশ্চয হয়ে)
মালিহা: ঐ ব্যাটা আমি তরে বলছি যে আমি বিয়ে করেছি?আমারে দেইখা বোঝোস না আমি কুমারী?(রাগে ফুলতে ফুলতে)
নিলয়:একটু আগে যে বললেন আপনার বর এসে চিল্লাছিলো।(মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
মালিহা কপালে হাত দিয়ে ক্লান্ত সুরে আজানায় হারিয়ে বলে,আরে ব ল দ আমার বর তো তুমি।।আমি তো তোমাকেই বিয়ে…(জিহ্বা কামড়ে থেমে যায় মালিহা)
নিলয়: ব ল দ কে বিয়ে করবেন??কোনো প্রাণী কে বিয়ে করা যায়??(মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
মালিহা: ধন্যবাদ তুমি বুঝো নি।।আর সবচেয়ে বড় কথা তুমিই সেই ব ল দ।।(হাসি আর লজ্জা নিয়ে দৌড়ে বের হয়ে যায় মালিহা)
নিলয়: কিছুই তো বুঝলাম না।।যাইহোক (কানে হেডফোন দিয়ে)কোনো জৈব যৌগের অণু থেকে..”আলবিদা আলবিদা..থুক্কু চিল্লাইতে তো নিষেধ।।ভুইলাই গেছি।।(হা হা হা হা হা)
এতক্ষন দরজার আড়ালে লুকায় ছিলো মিরা।।চিৎকার শুনে নিলয়ের রুমে এসে মালিহার শাসন,মালিহার বিরক্ত আর মালিহার ভুলে মুখ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া ভালোবাসা সব কিছু খেয়াল করে মিরা।
মিরা:(এই ব্যাপার তাহলে।মালিহা নিলয়কে ভালোবাসে!কিন্তু নিলয়টা তো বোকা।।এইসব তো কিছুই বোঝে না।যাই হোক আমি আছি তো।।আমি মিলায় দিবো নি।।আমার শুভর পিছু তো ছাড়ছে।।){খুশি হয়ে}
……
পায়েল: কী রে আপু মুখ লুকিয়ে হাসতেছিস কেনো?(মালিহার কান্ড দেখে)
মালিহা: মুখ ফসকে বলে ফেলেছি যে,”তুমি একটা ব ল দ।।আমার বর তো তুমি।।আমি তোমাকেই বিয়ে…” বলেই আঁকটে গেছি।।
পায়েল: আল্লাহ!!(আশ্চয হয়ে)ভাইয়া কী বুঝতে পেরেছে?(আশ্চায নিয়ে)
মালিহা: ধুর।।ও বলে যে, ব ল দ কেও বিয়ে করা যায়?জানতাম না তো।।
মালিহা আর পায়েল হাসিতে লুটিয়ে পড়লো।।
পায়েল: ভাগ্যে পাইছিস একজনকে বইন!জোস বোকা!(হা হা হা হা)
মালিহা:একদম বোকা বলবি না।ভাসিটিতে টপ।।আর ও সরল প্রকৃতির।(পায়েলের মাথায় টোকা দিয়ে)
পায়েল:এখনি এই অবস্থা।।বাসর রাতে কী আদৌ কিছু হবে তোদের?(হাসতে হাসতে)
মালিহা: যাহ!!কী বলছিস এইসব?(লজ্জা নিয়ে)
পায়েল: আহারে!লজ্জা পাচ্ছো?লজ্জা পেয়ো না বইনা।।বুকে কষ্ট লাগে।।(নাটক করে)
মালিহা: আর নাটক করতে হবে না।।চল নিচে যাই।।
পায়েল: চল।।
…..
অনু নিশানের রুমে এসে দেখে চারদিকে শুধু রঙ্গের ছোঁয়া।।নিশান চুপ করে বসে কিছু একটা আঁকছে।।
অনু: কী আঁকছো নিশান?(নিশানকে পেছন থেকে ডেকে)
চমকে ওঠে নিশান।।
অনু: এ মা চমকে গেলা কেনো?(আশ্চায স্বরে)
নিশান: না হঠাৎ ডাকলে তো তাই চমকে গিয়েছি।।কাল আমার আট Axhibition আছে তো তাই কিছু আট নিয়ে ব্যস্ত আছি।।
অনু: কীহ??আগে তো কখনও বলো নি?(আশ্চায হয়ে)
নিশান: হঠাৎ করেই বললো তো তাই বলা হয়ে উঠেনি।।
অনু: তুমি যে আট করো তা তো আগে কখনও বলো নি।।আজকেই তোমার রুমে এই রং তুলি দেখছি আমি।।
নিশান: ভালো লাগা তো।।তাই কখনও এটা নিয়ে বলা হয় নি।।রাগ করিও না আমার ওপর।।(মায়া নিয়ে)
অনু: আরে না গো রাগ করি নি।।আগে বোলতা তাহলে এতটা Surprise হতাম না।।
নিশান: হুম।।(হাসি নিয়ে)
অনু: আমায় কাল নিয়ে যাবে না EXHIBITION এ?
নিশান: সবাই যাবে অনু।।(হাসি নিয়ে)
অনু নিশানের ছবি আঁকা দেখতে লাগলো আর আশ্চায হতে লাগলো।।
অনু: এতটা সুন্দর করে ছবি আঁকো তুমি?(আশ্চায হয়ে)
নিশান: এমনি চেষ্টা করি।।
অনু: তোমার Exhibition শেষ এ আমার ছবি এঁকে দিবে সোনা?
নিশান: এসো আমার সাথে।।(অনুর হতে ধরে)
নিশান অনুকে ঘরের অপর রুমে নিয়ে গেলো।।অনু চারদিকে তাকিয়ে শুধুই অবাক হয়ে যাচ্ছে।।প্রতিটা কোণে এমন কী মেঝের প্রান্তগুলোতেও তার ছবি আঁকা।।অনু সজোরে নিশানের বুকে ঝাপিয়ে পড়লো।।
অনু: এত বড় Surprise এর জন্য তৈরী ছিলাম না নিশান।।
নিশান: হুম।।(অনুকে বুকের মাঝে বিশাল জায়গা এঁটে দিয়ে)
……
বই নিয়ে হেঁটে হেঁটে পড়ছে নিলয়।।কোনো দিকেই তার চোখ নেই।।শুধু বইয়ের দিকেই চোখ।।পায়েল মালিহার লেখা নিলয়ের জন্য প্রেমপএ নিয়ে দৌড় শুরু করেছে।।মালিহাও পায়েলের পিছে দৌড়ানো শুরু করেছে।।পায়েল নিলয়ের সামনে এসে থেমে যায় এবং সরে দাঁড়ায়।।নিলয় খুব সুন্দর ভাবে বিক্রিয়াটা মাথায় গেঁথে নিচ্ছে আর এক প্রান্ত ক্রস করছে।।ঠিক ঐ সময়ে মালিহা দৌড়ে এসে নাজেকে সামলাতে না পেড়ে নিলয়ের উপর সজোরে ধাক্কা খেয়ে নিলয়ের বুকের ওপর পড়ে যায়।।
নিলয়: ও আপু গো পড়ে গেলাম গো!কমর ভেঙ্গে গেলো গো!আমার বিক্রিয়া থেমে গেলো গো।।(মালিহাকে বুকে জড়িয়ে চিল্লাতে চিল্লাতে।।)
মালিহা নিলয়ের চিল্লানিতে থমকে গেছে।।বিরক্ত আর রাগে হাত দিয়ে নিলয়ের মুখ চেপে ধরে বললো,ঐ চুপ করো প্লিজ।।চিল্লাই তো কানের পোকা মেরে ফেলতাছো।।(রাগে)
চলবে,,,,
( গল্পটা সবার কেমন লাগছে????)