সে আমার মানসিক শান্তি পর্ব -৩৬+৩৭

#সে_আমার_মানসিক_শান্তি
#পর্ব_৩৬
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

কোলাহল মুক্ত রাস্তা, নির্জন গাছের নিচে, মাথায় দু’হাত দিয়ে বসে আব্রাহাম। দু-চোখ অসম্ভব ভাবে লাল হয়ে গিয়েছে। আয়াতকে কোথায় রেখেছে। সে চিন্তা করতেই রজনী পার হয়ে যাচ্ছে। আজকে নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হচ্ছে। ভিষণ করে মায়ের কথা মনে পড়ছে। যখন মা ছিল। তখনই তো সময়টা ভালো ছিল। মায়ের শাসন, আদর, ভালোবাসা নিয়ে দিব্বি জীবন চলছিল৷ তবে বাবা-মাকে হারিয়ে কেনো এভাবে নিঃস্ব হলো? পৃথিবীতে আপন বলতে তার কেউ নেই। একটা মাত্র মানুষকে নিয়ে বাঁচতে চেয়েছিল। নিষ্ঠুর পৃথিবীর সেটাও সহ্য হলো না। তার থেকে সবকিছু ছিনিয়ে নিতে ব্যস্ত। এই পৃথিবীতে যার আছে, তাকেই বেশি করে সবকিছু দেওয়া হয়। আর যার নেই। তার থেকে সবকিছু কেঁড়ে নেওয়ায় ব্যস্ত হায়রে দুনিয়া। নিজের কষ্ট গুলো দীর্ঘশ্বাসের সাথে উড়িয়ে দিল। আয়াতের চিন্তায় মসগুল হয়ে পড়লো। মেয়েটাকে কোথায় রেখেছে আল্লাহ জানে? এত অভিনয় করে-ও, মেয়েটাকে উদ্ধার করতে পারলাম না। স্বামী হিসেবে নিজেকে ব্যর্থ মনে হচ্ছে। কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থাকলো আব্রাহাম। একা একা আর কত যুদ্ধ করবে, যুদ্ধে জেতার জন্য একজন সহযোগীর প্রয়োজন হয়। আব্রাহামের তো তা-ও নেই। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে উঠে দাঁড়ালো আব্রাহাম। বিষন্ন মন নিয়ে বাসার দিকে ছুটে চলল।

বাসায় এসে অবাক হলো আব্রাহাম। সাথে ঘিরে ধরলো রাজ্যের ভয়। এখন সে আয়াতের বাবা-মাকে কি জবাব দিবে? বলবে সে তাদের মেয়েকে রক্ষা করতে পারে নাই। তাদের মেয়েকে লাইফ সাপোর্ট দিতে পারে নাই। এতকিছুর পরে-ও কি আয়াতের বাবা-মা আয়াতকে তার কাছে রাখবে। আব্রাহামকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, আয়াতের আম্মু শান্ত কণ্ঠে বলল।

–দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছো কেনো বাবা? ভেতরে এসো। ভয় পাবার দরকার নেই। আমরা সবকিছু জানি। তোমাকে দোষ দিব কি? একটা কুলাঙ্গার মেয়ে পেটে ধরে ছিলাম। না জানি আমার আয়াতটাকে কোথায় লুকিয়ে রেখেছে। মেয়েটা আমার কতই না কষ্ট পাচ্ছে। তুমি একটা ব্যবস্থা করো না বাবা৷ আমার আয়াতকে ফিরিয়ে নিয়ে এসে দাও। কথা গুলো বলতে বলতে আয়াতের আম্মুর চোখে দিয়ে অশ্রুকণা গুলো গড়িয়ে পড়লো। মেয়ের জন্য মায়ের মনটা কেমন অস্থির হয়ে আছে। তা বাহিরে থেকে বোঝা না গেলে-ও, আয়াতের আম্মু জানেন ভেতরে কি হাহাকার পড়ে গিয়েছি মেয়ের জন্য। আয়াতের আম্মুকে কান্না করতে দেখে, আয়াতের আব্বু ধমক দিয়ে বলল।

–কি শুরু করলে, ছেলেটা বাহিরে থেকে এসেছে। যাও ওর জন্য খাবার নিয়ে আসো। স্বামীর কথা শুনে, এক মুহুর্ত দেরি করল না। দ্রুত পায়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল আয়াতের আম্মু। আব্রাহাম মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আব্রাহামকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, আয়াতের আব্বু শান্ত কণ্ঠে ডাক দিল।

–আমার পাশে এসে বসো। আব্রাহাম বিনাবাক্যে আয়াতের আব্বুর পাশে গিয়ে বসলো। আয়াতের আব্বু আব্রাহামের মাথায় হাত রেখে বলল।

–চিন্তা করো না। আল্লাহ আছেন। উনি সব ঠিক করে দিবেন। সবকিছুর জন্য নিজেকে দায়ী মনে করো না। ভাগ্যে যা ছিল। তাই হয়ে গিয়েছে। ভাগ্যের ওপরে তোমার কোনো হাত নেই। তোমার জন্য আমার অনেক কষ্ট হয় জানো। বয়স হয়েছে, তুমি আমার থেকে অনেক ছোট। তাই নিজের অনুভূতি গুলো সঠিক ভাবে প্রকাশ করতে পারি না। আমার এক বন্ধু ওসি তাকে সবকিছু জানিয়েছি। কালকের মধ্যে একটা ভালো খবর পাব ইনশাআল্লাহ। কিন্তু তোমরা কথাটা আমার থেকে গোপন করে ঠিক করো নাই। আমার মেয়েটা অনেক কষ্ট পাচ্ছে। আমিও একদিন তোমাকে অসম্ভব ভাবে কষ্ট দিয়েছিলাম। তার শাস্তি হয়তো আল্লাহ আমাকে এভাবে দিচ্ছেন। তোমাকে আর আয়াতকে আলাদা করতে আমি আবরারকে সাহায্য করে ছিলাম। আগে যদি জানতাম তুমি আমার মেয়েটাকে এতটা ভালোবাসো। কখনোই তোমাদের আলাদা করতাম না৷ এখন বুঝতে পারছি, আমি জীবনে কতবড় ভুল করেছি। এত অশান্তির মাঝেও মাথার ওপরে একটা ভরসার হাত পেল আব্রাহাম। ভাবতেই মনটা একটু শান্ত হলো। সে ভাবতেও পারে নাই। আয়াতের বাবা-মায়ের থেকে এতটা ভালোবাসা পাবে। সে তো ধরেই নিয়েছিল। এই বুঝি সবকিছু শেষ। আয়াতের আম্মু আব্রাহামকে বলেও খাওয়াতে পারলো না। অনেক জোড়াজুড়ি করার পরে, দু’বার ভাত মুখে নিয়েছিল। রাতে আর কারো ঘুম হলো না।

পরের দিন সকাল বেলা বৃদ্ধ মহিলাটি খাবার নিয়ে, বসে আছে। রাতে আকাশের আসার কথা ছিল। রাত পেড়িয়ে সকাল হয়ে গিয়েছে। এখনো আকাশের আসার নামে খোঁজ নেই। এই দিকে এই মেয়েটাকে দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছে সে। একটা মানুষকে কতক্ষণ দেখেশুনে রাখা যায়৷ সারাদিন বিছানায় পড়ে পড়ে ঘুমায়। মন খুলে দুটো কথা বলতে পারে না৷ এমন মেয়ের দেখাশোনা কে করবে? বৃদ্ধের ভাবনার মাঝেই মেয়েটি নড়েচড়ে উঠলো। বৃদ্ধ মেয়েটির দিকে নজর দিল। মেয়েটি দু-হাত দিয়ে, নিজের দু-চোখ ডলতে লাগলো। বিরক্তিতে চোখ-মুখ কুঁচকে আছে তার। বৃদ্ধ মেয়েটির কাছে এগিয়ে গেল।

–তুমি সজাগ হয়েছো মেয়ে! তোমার নাম কি? তোমার বাসায় কোথায়? তুমি আকাশ বাবার কাছে, কি করে আসলে? বৃদ্ধের কথায় মেয়েটি চোখ পিটপিট করে তাকায়। আশেপাশে তাকিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে, আসলে সে কোথায় আছে। মেয়েটি আস্তে করে উঠে বসলো। মাথাটা তার ভার হয়ে আছে। সবকিছু কেমন জানি অন্ধকার দেখছে, প্রচন্ড ক্ষুদা পেয়েছে। মেয়েটি ঘুম মিশ্রিত কণ্ঠে বলল।

–এটা কোথায়, আমি এখানে কি করে আসলাম?

–তোমাকে আকাশ বাবা নিয়ে এসেছে।

–আকাশ কে?

–আমাদের সাথে এই বস্তিতে থাকে, তুমি হয়তো তাকে চিনবে না। তোমার নাম কি মেয়ে?

–আয়াত।

–তুমি আজ অনেক কয়দিন হলো অজ্ঞান হয়ে এখানে পড়ে ছিলে, তোমার কোনো খোঁজ খবর আমরা নিতে পার ছিলাম না। এখন তোমার হুস এসেছে। এখন বাবা-মায়ের নাম বলো। তুমি কোথায় থাকো সবকিছু বলো। আমরা তোমাকে তোমার বাসায় নিয়ে যাব।

–কিন্তু আমার মাঝে মাঝে জ্ঞান আসতো। আমাকে কে জানি খাইয়ে দিতো। আমি বুঝতে পারতাম। খাওয়ার পড়ে আর কিছু মনে থাকতো না। এটা কোন জায়গা আমাকে বলতে পারবেন।

–আমি তোমাকে খাইয়ে দিতাম মেয়ে। তোমার কোনো হুস ছিল না৷ বৃদ্ধের কথা শুনে, আয়াত ঝিম মেরে কিছুক্ষণ বসে থাকলো। প্রচন্ড মাথা যন্ত্রনা করছে। বৃদ্ধ মহিলাটি আয়াতকে পানি এনে দিলে, আয়াত হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিল। খাবারে জুটলো একটা শুকনো রুটি। প্রচন্ড ক্ষুদার্ত থাকায় কোনো কথা বলল না। বিনাবাক্যে খাবার শেষ করল। এখানে থেকে তার যাওয়ার প্রয়োজন। অনেক কিছু জানানোর প্রয়োজন। তার মতো দেখতে মেয়েটা কি আব্রাহামের কাছে চলে গিয়েছে। তার আব্রাহামকে তার থেকে কেঁড়ে নিয়েছে। আর ভাবতে পারলো না আয়াত। মস্তিষ্ক শূন্য হয়ে পড়েছে। প্রথম থেকে সবকিছু ভাবতে চাইলো। কিন্তু তার অবাধ্য মস্তিষ্ক আব্রাহাম ছাড়া কিছুই ভাবতে চাইছে না। আয়াত উত্তেজিত হয়ে বলল।

–আপনার কাছে ফোন আছে?

–আমি ফোন ব্যবহার করতে পারি না। আমাকে ফোন কিনে দিবে কে? ঠিকমতো খেতেই পাই না। আবার ফোন কিনবো কি করে? বৃদ্ধের অতিরিক্ত কথায় বিরক্ত হলো আয়াত৷ তার চোখ দু’টো আবার বন্ধ হয়ে আসতে চাইছে, তবু্ও বৃথা খোলা রাখার চেষ্টা করছে। আয়াত বুঝতে পারলো। খাবার খাওয়ার পড়েই তার প্রচন্ড ঘুম পায়। খাবারের মধ্যে কিছু মেশানো নেই তো আবার। আয়াত কিছু ভাবতে পারলো না। তলিয়ে গেল নিদ্রা দেশে। আয়াতকে ঘুমিয়ে যেতে দেখে হাসলো বৃদ্ধ মহিলা।

–আকাশ বাবা তোমাকে দেখতে আসে নাই। অনেক ভালো হয়েছে। তোমাকে তার হাতে তুলে দিব। সে আমাকে বলেছে। তোমাকে তার হাতে তুলে দিলে, সে আমাকে অনেক টাকা দিবে। অপেক্ষা শুধু সন্ধ্যার। কথা গুলো বলেই বৃদ্ধ মহিলাটি রুমের বাহিরে বের হয়ে গেল। যাবার আগে রুমে তালা লাগিয়ে দিয়ে গেল।

সারাদিন পেড়িয়ে গোধুলী লগ্নের দেখা মিলল। কাল রাত থেকে হন্যে হয়ে আয়াতকে খুঁজে চলেছে পুলিশ। আব্রাহাম আবরারের থেকে আহনাফের ফোন নাম্বার নিয়েছে। সেখানে থেকেই আশার আলো খুঁজে পেয়েছে সবাই। এখন শুধু পৌঁছানো বাকি। আস্তে আস্তে চারিদিকে আঁধার ঘনিয়ে আসতে লাগলো। অন্ধকার গলি দিয়ে আব্রাহাম, আয়াতের আব্বু, আর পুলিশ হেঁটে চলেছে। বস্তির প্রতিটি বাড়ি বাড়ি তল্লাসি চালাচ্ছে পুলিশ। মোটামুটি সব বাড়ি তল্লাসি করা শেষ হয়ে গিয়েছে। আয়াতকে কোথাও খুঁজে পেল না। বরাবরের মতো এবারও সবাই হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছিল। তখনই তালা বন্ধ বাড়িটা আব্রাহামের নজর কাড়ল। ধীর পায়ে রুমের দিকে, এগোতে লাগলো। যতই রুমে দিকে যাচ্ছে, ততই হৃৎস্পন্দনের গতিবেগ দিগুণ ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অদ্ভুত ভাবে ভেতরে অস্থিরতা কাজ করছে। আব্রাহামকে সামনের দিকে এগোতে দেখে একজন পুলিশ বলে উঠলো।

–কোথায় যাচ্ছেন?

–এই বাড়িটায় তালা বন্ধ কেনো?

–সত্যি তো রুমটায় তালা বন্ধ কেনো? রাতের আঁধারে এটা নজরে আসে নাই। রুম ভেঙে দেখা উচিৎ। উদ্ভুদ ভাবে আমাদের ট্র্যাক করা লোকেশন মিলে গিয়েছে। ওরা আর বিলম্ব করল না। দ্রুত তালা ভাঙার ব্যবস্থা করল। সবাই রুমে প্রবেশ করে দেখলো, পুরো রুম জুড়ে অন্ধকার বিরাজমান করছে। সবাই ফোনের আলো জ্বলিয়ে, পুরো বাসা তল্লাসি করতে লাগলো। একটু পরে আয়াতের বাবার কণ্ঠ শোনা গেল।

–তোমরা সবাই এদিকে এসো। আয়াতকে পেয়েছি। আয়াতের বাবার কথা শুনে, সবাই ছুটে আসলো। আয়াত অচেতন হয়ে পড়ে আছে। আয়াতের দিকে তাকিয়ে আব্রাহামের বুকটা চিনচিন করে উঠলো। বড়দের সামনে নিজেকে যথেষ্ট দমিয়ে রাখার চেষ্টা করল। একজন পুলিশ আয়াতের নাকের সামনে হাত রেখে বলল।

–বেঁচে আছে। দ্রুত হসপিটালে নেওয়া উচিৎ। পুলিশটির কথা শুনে প্রচন্ড রাগ হলো আব্রাহামের তাকে সরিয়ে দিয়ে, সে গিয়ে আয়াতের কাছে বসলো। আয়াতকে কিছুক্ষণ দেখলো। তারপরে শান্ত কণ্ঠে বলল।

–আয়াতকে ঘুমের ঔষধ দেওয়া হয়েছে। তাই কোনো হুস নেই। ঔষধের রেশ কেটে গেলে, ঠিক হয়ে যাবে। তার আগে আয়াতকে এখানে থেকে নিয়ে যেতে হবে। বড্ড নোংরা পরিবেশ। আব্রাহাম খুব সাবধানতার সাথে আয়াতকে তুলে বসালো। দুই একবার ডাক ও দিল। কিন্তু কোনো রেসপন্স আসলো না। আব্রাহাম সবাইকে এগোতে বলল। সে আয়াতকে নিয়ে আসছে। সবাই বাহিরে যেতেই আব্রাহাম আয়াতকে কোলে তুলে নিল। আস্তে করে রুম থেকে বেড়িয়ে আসলো। গাড়িতে উঠে একহাতে আয়াতকে আগলে রাখলো। আব্রাহামদের বাসার সামনে পৌঁছে দিয়ে, পুলিশ চলে গেল। আয়াতের আব্বু পুলিশদের ধন্যবাদ জানাতে ভুলল না। আয়াতকে বিছানায় শুয়ে দাওয়া হয়েছে। আয়াতের আম্মু পানি দিয়ে, মেয়ের মুখ যত্ন সহকারে মুছিয়ে দিচ্ছে। পাশেই আব্রাহাম আর আয়াতের আব্বু বসে আছে। মেয়েকে হাতে পেয়ে যেনো নিজেদের জীবন হাতে পেয়েছে। আব্রাহাম কেমন চুপচাপ হয়ে বসে আছে। মুখে হাসির রেশ টুকু নেই। আব্রাহামের দিকে এক পলক তাকিয়ে। আয়াতের আব্বু শান্ত কণ্ঠে বলল।

–আয়াতের আম্মু চলো রান্না করবে। কাল থেকে কারো ঠিকমতো খাওয়া হয় নাই। মেয়েটা সজাগ হলে, কিছু খাওয়াতে হবে। তার আগেই কিছু রান্না করে রাখতে হবে।

–আর একটু থাকি আয়াতের কাছে, মেয়েটার মুখ শুকিয়ে গিয়েছে। না জানি কত কষ্ট দিয়েছে আমার মেয়েটাকে। আহনাফের বিচার আল্লাহ করবে। কোনোদিন ভালো হবে না৷ আমি আরোহীকে কোনো মাফ করবো না। এই জীবনে আরোহী যেনো আমার মুখের সামনে না আসে, আরোহী আমার সামনে আসলে, ওকে কিছু একটা করে ফেলবো।

–সে সময় হলে দেখা যাবে। তোমার শরীর ভালো না৷ এত রাগ করতে হবে না। আজকে তোমাকে রান্নার কাজে সাহায্য করবো। আব্রাহাম ফ্রেশ হয়ে নিক। আমরাও ফ্রেশ হয়ে আসি চলো। স্বামীর কথা বুঝতে একটু বেগ পেতে হলো। কথাটা বোঝার সাথে সাথে বিলম্ব করল না। ধীর পায়ে রুম ত্যাগ করল। উনার চলে যেতেই আব্রাহাম আয়াতের শুকনো মুখের দিকে তাকালো।

চলবে…..#সে_আমার_মানসিক_শান্তি
#পর্ব_৩৭
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

ঘড়ির কাঁটায় রাত দু’টো ছুঁই ছুঁই। আয়াতের পাশেই আব্রাহাম ঘুমিয়ে আছে। কয়টা দিন ঠিকমতো ঘুম হয় নাই। রাতে খাবার খেয়েই সকলে ঘুমিয়ে পড়েছে। আয়াতের ঘুমে ভেঙে যায়। পুরো রুম জুড়ে আলো বিরাজমান করছে৷ মাথায় হাত দিয়ে উঠে বসলো আয়াত। শরীরটা প্রচন্ড দুর্বল লাগছে। মাথা কেমন ঘুরছে। উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল। পুরো শরীর আপনা-আপনি কাঁপছে। স্থীর হয়ে বসলো আয়াত। আশেপাশে ভালোভাবে দু-চোখ বুলিয়ে নিল। এটা তো বস্তির রুম নয়। হ্যাঁ এটা তার নিজের রুম। হুট করেই আয়াত পেছনে তাকালো। আব্রাহামের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে, বুকটা প্রশান্তিতে ভরে গেল। কতগুলো দিন পরে, মানুষটাকে প্রাণ ভরে দেখতে পারবে সে। ঘড়ির দিকে চোখ যেতেই অবাক হয়ে গেল আয়াত। এখন রাত দু’টো বাজে, নাকি দিন দু’টো বাজে! সকালের পরে আর কিছু মনে নেই। আচ্ছা সে এখানে আসলো কি করে? নিশ্চয়ই আব্রাহাম নিয়ে এসেছে। এখন একটু কিছু খাওয়ার প্রয়োজন। খালি পেটে মস্তিষ্ক কাজ করে চায় না। কোনোরকমে উঠে দাঁড়ালো। দেওয়ালের সাথে ভর দিয়ে ওয়াশরুম চলে গেল। ফ্রেশ হয়ে এসে, আবার বিছানায় বসলো। শরীর যেনো আর টানছে না। ড্রয়িং রুম পর্যন্ত হেঁটে যাবার শক্তি টুকু পাচ্ছে না আয়াত। বাধ্য হয়ে আব্রাহামকে ডাকতে লাগলো। আব্রাহামের থেকে কোনো রেসপন্স আসলো না। আয়াত আব্রাহামের একটু কাছে গিয়ে, মাথায় হাত বুলিয়ে ডাকতে লাগলো। মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেতেই সজাগ হলো ইন্দ্রিয়। ঘুম ঘুম চোখে দু-চোখ মেলে তাকালো আব্রাহাম। আয়াতকে বসে থাকতে দেখে, তড়িঘড়ি করে উঠে বসলো। মুহূর্তের মধ্যে হৃদস্পন্দনের গতিবেগ দিগুণ মাত্রায় বেড়ে গেল। বিলম্ব না করে, দু’হাতে আয়াতকে নিজের বুকের মধ্যে আগলে নিল। আয়াত অনুভব করতে পারছে, মানুষটার অস্থিরতা। আয়াত মিনমিন করে বলল।

–আমার অনেক ক্ষুদা পেয়েছে। আমাকে একটু খেতে দিবে। বৃদ্ধ মহিলাটি আমাকে শুধু রুটি খেতে দিয়েছিল। আয়াতের কথা শুনে, আব্রাহামের খারাপ লাগলো। আয়াতের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল।

–একটু অপেক্ষা করো। আমি এখনই খাবার গরম করে নিয়ে আসছি। বলেই আব্রাহাম চলে গেল। আয়াত মুগ্ধ নয়নে মানুষটার যাবার দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষটার ঘুমের রেশ ভালোভাবে কাটেনি। তার এক কথায় কেমন হন্যে হয়ে চলে গেল। রান্না ঘর থেকে টুকটাক শব্দ পেয়ে ঘুম ভেঙে যায় আয়াতের আম্মুর। উঠে আসবে কি না সেই ভেবে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন। দু-চোখে ঘুম আসায়, আর বেরোতে ইচ্ছে করল না। ঘুমিয়ে গেল। আব্রাহাম খাবার গরম করে, নিজ হাতে আয়াতকে খাইয়ে দিচ্ছে। আয়াত বলতে চেয়েছিল অনেক কিছু। কিন্তু আব্রাহাম শোনেনি। তার একটু বিশ্রামের প্রয়োজন। শুয়ে থাকতে থাকতে আয়াত প্রচন্ড বিরক্ত। একটা মানুষ আর কতক্ষণ শুয়ে থাকবে। কিন্তু আব্রাহামের চোখের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলতে পারলো না। আব্রাহামের সাথে তাকে ঘুমোতে হলো।

পরের দিন সকাল বেলা আয়াতের আগে ঘুম ভেঙেছে। আয়াত ড্রয়িং রুমে এসে, নিজের মাকে দেখে অবাক হয়ে গেল। আয়াতকে দেখে আয়াতের আম্মু হাতের ঝাড়ু ফেলে, মেয়েকে জড়িয়ে ধরলো। মেয়ের সমস্ত মুখশ্রীতে অধর ছোঁয়াল। চিৎকার করে আয়াতের বাবাকে ডাকলো। আয়াতের সবকিছু কেমন জানি নতুন নতুন লাগছে। সবকিছু কেমন জানি মাথার ওপরে দিয়ে যাচ্ছে। হয়তো কয়টা দিন সবার সাথে ছিল না। তাই সবকিছু নতুন নতুন লাগছে।

–তোর কখন জ্ঞান ফিরেছে মা? তোর অনেক ক্ষুদা পেয়েছে তাই না। কি খাবি মাকে বল। মা এখনই রান্না করে নিয়ে আসছে।

–আম্মু আমি রাতে খেয়েছি। আব্রাহাম আমাকে খাইয়েছে। তোমরা এখানে কবে এসেছো?

–দু’দিন হলো এসেছি মা। তোর শরীর কেমন লাগছে? আহনাফ কি তোকে খুব বেশি কষ্ট দিয়েছে।

–আম্মু জানো আমার মতো দেখতে একটা মেয়ে। চেহারার কোনো অমিল ছিল না। আমি খুব অবাক হয়েছিলাম। কিছু বুঝে উঠার আগেই আহনাফ ভাই আমাকে অজ্ঞান করে দেয়। তারপরে আর কিছু মনে নেই।

–তোকে কিছু বলতে হবে না। আমরা সব জানি।

–আমার মতো দেখতে মেয়েটাকে কি তোমরা দেখেছিলে, রজনী আপু কোথায়? রজনী আপু ঠিক আছে?

–হ্যাঁ রজনী ঠিক আছে। রজনীর সাথে তোর মতো দেখতে মেয়েটাও এসেছিল। এতদিন আব্রাহামের কাছেই ছিল। কালকেই তো মেয়েটাকে ধরলো। আর মেয়েটা কে শুনবি। আয়াতের আম্মুর কথা শুনে, আয়াতের বুকের মধ্যে চিনচিনে ব্যথা অনুভব করল। মেয়েটা আব্রাহাম সাথে ছিল। তারা কি একই রুমে, একসাথে। আয়াত আর ভাবতে পারলো না। দু-চোখ বন্ধ করে ফেলল। আয়াতকে চোখ বন্ধ করতে দেখে, ভ্রু কুঁচকে তাকালো আয়াতের আম্মু।

–শুনবি না কে ছিল?

–কে ছিল আম্মু?

–তোর প্রাণ প্রিয় বোন আরোহী। যার জন্য বারবার নিজের জীবনের ঝুঁকি নিস। মেয়েটা এত সুন্দর করে আমাদের বোকা বানালো। আমরা গুন অক্ষরেও টের পেলাম না। ভাগ্যিস আব্রাহাম ধরতে পেরেছিল।

–আম্মু একটু অপেক্ষা করো। আমি রুম থেকে আসছি। তুমি রান্না করো। আমার শরীর ভালো লাগছে না। না হলে তোমাকে সাহায্য করতাম।

–আমাকে সাহায্য করতে হবে না। রুমে গিয়ে বিশ্রাম কর। একটু পরে আমি তোর রুমে খাবার নিয়ে যাচ্ছি। আয়াত দেরি করল না। দ্রুত পায়ে রুমে আসলো। এসেই আব্রাহামকে ডাকতে লাগলো।

–এই আব্রাহাম উঠো। এত কিসের ঘুম তোমার। আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। তারপরে ঘুমাও। আয়াতের ডাক পেয়ে দু-চোখ ডলতে ডলতে উঠে বসলো আব্রাহাম। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বলল।

–কি হয়েছে? খারাপ লাগছে। কিছু খাবে? এত চেচামেচি করো না, মাথার ওপরে চাপ পড়বে। এত চাপ তোমার ব্রেইন নিতে পারবে না।

–নিকুচি করেছে তোমার ব্রেইন। ভারে যাক শরীর। আগে বলো আরোহী আপুর সাথে এক রুমে ঘুমিয়ে ছিলে নাকি? বলেই রাগান্বিত হয়ে আব্রাহামের দিকে তাকালো। আয়াতের কথা শুনে আব্রাহাম চোখ বড় বড় করে তাকালো। হতভম্ব হয়ে আয়াতের দিকে তাকিয়ে আছে। আব্রাহামকে তাকিয়ে থাকতে দেখে রাগান্বিত হয়ে বলল।

–এই ছেলে ওভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। দেখো মাথায় কিন্তু আগুন জ্বলে গিয়েছে। এত গুলো দিন আরোহী আপুর সাথে থাকলে, অথচ বুঝতে পারলে না। ওটা আমি না। এই তোমার ভালোবাসা। আমি তোমাকে নিয়ে কত গর্ব করতাম। তোমাকে নিয়ে আমার অনেক অহংকার ছিল। তাহলে সবই কি বৃথা।

–তাতে তোমার কি মেয়ে? তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না। আমাকে যদি ভালোবাসতে তাহলে, এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, একটা বার আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করতে। আমাকে মানুষ বলে গন্য করো না নাকি। আমাকে হেলাফেলা মনে হয়। তোমার যদি কিছু হয়ে যেত, তাহলে আমার কি হতো একটা বার ভেবেছিলে। আমি হলাম গিয়ে হতভাগা মানুষ। আমি মরে গেলে কারো যাবে আসবে না। আমার আপন বলতে তুমিই ছিলে, সেই তুমিটার কিছু হয়ে গেলে, আমি একদম নিঃস্ব হয়ে যেতাম। আমি হারালে ক্ষতি নেই। কিন্তু তুমি হারালে ক্ষতি আছে। আমার কথা ভাবোনি ভালো কথা। নিজের বাবা-মায়ের কথা অন্তত ভাবতে পারতে। আমাকে দয়া দেখিয়ে বিয়ে করেছো। এটাই আমার কাছে অনেক। কিন্তু কোনো কিছু করার আগে আমার কথা ভাব্বে, এটা ভাবা বিলাসিতা ছাড়া কিছুই না।

–এভাবে কথা বলছো কেনো? আমি তো রজনী আপুকে বাঁচাতে গিয়ে…বাকি কথা শেষ করতে পারলো না আয়াত। আব্রাহাম মলিন মুখ করে উঠে চলে গেল। আব্রাহামকে দেখেই বুঝতে পারছে, মানুষটা গভীর ভাবে আহত হয়েছে। একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল আয়াত। আব্রাহাম ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িং রুমে চলে গেল। আয়াতের আব্বু ড্রয়িং রুমে বসে খবরের কাগজ পড়ছিলেন। আব্রাহামকে দেখে কাগজটা টেবিলে রাখতে রাখতে বলল।

–আব্রাহাম কিছু না মনে করলে, আয়াতকে আমরা কয়টাদিন আমাদের বাসায় রাখতাম। তুমি সারাদিন বাহিরে থাকো। আয়াতকে ঠিকমতো দেখাশোনা করতে পারবে না। আবার কাজে গিয়েও মন বসাতে পারবে না। আমাদের কাছে থাকলে, আয়াত অনেক ভালো থাকবে। একটু সুস্থ হলেই, তুমি আয়াতকে নিয়ে এসো।

–আপনাদের মেয়ে আপনারা যখন খুশি নিয়ে যাবেন। আমাকে বলতে হবে না। তবে খেয়াল রাখবেন আব্বু। চৌধুরী বাড়ির কেউ যেনো আয়াতের আশেপাশে না আসে। রজনী ভাবি আয়াতকে চৌধুরী বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলে, একদম যেতে দিবেন না। এটা আপনার কাছে আমার অনুরোধ বলতে পারেন।

–আমি কোথাও যাব না। আমার কিছু হয় নাই। আমি একদম ঠিক আছি। দু’দিন পর পর তোমাদের বাসায় গেলে, লোকে কথা শোনাবে না। তোমরা আমাদের বাসায় আসোই না। একবার যখন এসেছো। আর যেতে দিব না। তোমরাই আমার কাছে থাকবে। আমার আর জার্নি করতে ইচ্ছে করছে না। আয়াতের কথা শুনে আব্রাহাম গম্ভীর কণ্ঠে বলল।

–বাবা-মা যা বলে শুনতে হয়। তুমি অসুস্থ। আমি সারাদিন হসপিটালে থাকি। আব্বু ঠিকি বলেছে। তুমি তাদের কাছে থাকলে, নিশ্চিতে থাকতে পারবো। আয়াত মিনমিনে কণ্ঠে বলল কিন্তু? আয়াতের কথাকে উপেক্ষা করে আব্রাহাম বলল কোনো কিন্তু নয়। আজই তুমি তাদের সাথে চলে যাবে। আয়াত হতাশ হয়ে চুপ হয়ে গেল। মানুষটা ভিষণ ভাবে রেগে আছে। একটু পরে আয়াত আনমনে হেসে উঠলো। উচ্ছ্বাসিত কণ্ঠে বলল।

–তাহলে তুমি থেকে কি করবে? তোমাকে রান্না করে কে খাওয়াবে? তোমাকেও আমাদের সাথে যেতে হবে। তুমি আমাদের বাসা থেকে হসপিটালে আসবে। তুমি কিন্তু না বলতে পারবে না। আম্মু তোমার জামাইকে কিছু বলো। আয়াতের কথা শুনে, রাগান্বিত হয়ে আয়াতের দিকে তাকালো আব্রাহাম। আয়াতের গড়াগড়ি খেয়ে হাসতে ইচ্ছে করছে। খুব শখ ছিল দূরে সরিয়ে দেওয়ার। এখন দেখো কেমন লাগে। আয়াতের কথায় সায় দিয়ে আয়াতের আম্মু বলল।

–আয়াত ভুল কিছু বলেনি। তোমরা দু’জন খাও। আমি আয়াতের রুমে গিয়ে, আয়াতের আর আব্রাহামের জামা কাপড় গুছিয়ে নিচ্ছি। কথা গুলো বলেই আয়াতকে নিয়ে চলে গেল। আয়াতের কান্ড দেখে আনমনেই হাসলো আব্রাহাম। এই তো তার আয়াত। এই মেয়েটাকেই তো সে ভালোবাসে। কতদিন পরে বুকের মধ্যে প্রশান্তির শীতল হওয়া বয়ে গেল।

ঘড়ির কাঁটায় রাত বারোটা ছুঁই ছুঁই। আব্রাহাম সেই সকালে বেড়িয়েছে। এখনো বাসায় আসে নাই। আয়াত কখন থেকে শাড়ি পড়ে, সুন্দর করে সেজে আব্রাহামের জন্য অপেক্ষা করছে। আব্রাহাম আসছে না দেখে রাগ হলো আয়াতের। এত কিসের রাগ হ্যাঁ মানুষটার। আমি যদি সত্যি সত্যি হারিয়ে যেতাম। তাহলে কি করতো। এত রাগ কার ওপরে দেখাতো। তবে সে যে কাজ করেছে। আব্রাহামের রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক নয়। দরজায় কলিং বেল বেজে উঠলো। আয়াত নিচের দিকে যাচ্ছিলো। তখনই দেখলো আয়াতের চাচাতো ভাই দরজা খুলে দিচ্ছে। আয়াত আর সামনের দিকে এগোলো না। দৌড়ে বেলকনিতে গিয়ে লুকিয়ে পড়লো। আব্রাহাম এসে তাকে খুঁজে কি না। সে সেটা দেখতে চায়।

আব্রাহাম রুমে প্রবেশ করে পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে নিল। আয়াতকে দেখতে না পেয়ে ভ্রু কুঁচকে ফেলল। বেলকনির দরজার দিকে চোখ যেতেই হাসলো। তারপরে ব্যাগ থেকে জামা বের করে ফ্রেশ হতে চলে গেল। আয়াতের মন খারাপ হয়ে গেল। তখনই নজর যায় ফ্লোরে পড়ে থাকা নিজের শাড়ির আঁচলের দিকে, আয়াত নিজেই নিজের কপাল চাপড়ালো। আব্রাহাম ফ্রেশ হয়ে বিছানায় এসে বসলো। আয়াত আব্রাহাম সামনে এসে, সুন্দর একটা হাসি উপহার দিয়ে বলল।

–আমাকে কেমন লাগছে?

–ভালো।

–শুধু ভালো?

–কানে কম শুনো? কথাটা বলেই বেলকনির দিকে চলে গেল। আয়াতও আব্রাহামের পিছু পিছু চলে গেল। আব্রাহাম বেলকনির গ্রিল ধরে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। আয়াত আব্রাহামকে পেছনে থেকে জড়িয়ে ধরলো। আয়াত জড়িয়ে ধরার সাথে সাথে আব্রাহামের অভিমানের পাল্লা দিগুন ভাবে ভারি হয়ে গেল। কেনো সে তার কথা না ভেবে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিল। আব্রাহাম আয়াতের হাত ছাড়িয়ে দিয়ে চলে যেতে লাগলো। তখনই আয়াত বলে উঠলো।

–আব্রাহাম দেখো একটা ছেলে সুন্দর না। আয়াতের কথা কর্নপাত হতেই চট করে ঘুরে দাঁড়ালো আব্রাহাম। আয়াত সাথে সাথে আব্রাহামকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।

চলবে…..

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here