#স্বপ্নের_প্রেয়সী_সিজন_2
#ফাতেমা_তুজ
#part_52_53
52
রিফাত কে দেখে সবাই অট্টহাসি তে ফেটে পরলো। রিফাত ফারহানের দিকে রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই ফারহান মাথা চুলকালো। ফারাবি খোঁচা মেরে বলল
_ ভাইয়া তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
রিফাত ভ্রু কুঁচকে নিলো । আস্ত এক ভুত সাজানোর পর সত্যি ই কি তাকে সুন্দর লাগছে ? ভুত সাজানোর জন্য ওকেই কেন বেছে নেওয়া হলো । আর ও অনেকে ই তো ছিলো। তাদের কেন ভুত সাজালো না।
_ কি রে ভাই কি ভাবিস ?
_ আমাকেই কেন ভুত সাজালি বল তো ? এই সাদা ঢিলেঢালা চাদরে মতো কি একটা কস্টিউম এনেছি । ইয়াক
মনিকা তাচ্ছিল্য হেসে বলল
_ পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে এই কস্টিউম বানানো হয়েছে। তাতে ও ওনার চুলকোনির শেষ নেই।
পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে কস্টিউম বানিয়ে আনতাম ?
রিফাত কোমরে হাত গুঁজে নিলো। মনিকা এতো ফুঁসলে গেল তার মানে এই প্ল্যান টা ওর ছিলো। দাঁত কিরমির করতে করতে স্থান ত্যাগ করলো। পানি খেতে যেতেই সবাই হুমরি খেয়ে পরলো।
রিফাত অবাক হয়ে তাকালো। এদের সমস্যা টা কি তা বুঝে উঠতে পারলো না।
_ পানি খাওয়া যাবে না ।
_ কেন ?
ফারাবি ফাঁকা ঢোঁক গিলে নিলো। রিফাত যদি একবার নিজেকে দেখে তো নিজেই ভয় পেয়ে যাবে । ওকে পুরো অশরীরীর মতো লাগছে। যে কেউ ভয় পেতে বাধ্য।
মনিকা পরিস্থিতি সামলাতে আমতা আমতা করে বলল
_ তোমার ঠোঁটে যে সাদা পাউডার লাগানো হয়েছে সেটা চলে যাবে।
রিফাত সন্দিহান চোখে ফাহিম এর দিকে তাকালো। ফাহিম ও মনিকার কথাতে সায় দিলো। বিরক্তি তে ভরে উঠলো রিফাতের মুখ। সবাই কে আস্ত গিলতে ইচ্ছে করছে। বিরক্তির কারনে মুখ দিয়ে চ এর মতো শব্দ করলো। সবাই মুখ চেপে হাসছে। কিছু বলবে তার আগেই রাফাজ লাফিয়ে এলো।
_ তাড়াতাড়ি আয় , আর পাঁচ মিনিট বাকি।
রিফাত মাথা ঝাঁকালো । সবাই মুখ টা এমন করে রাখলো যেন কোনো বিশ্ব যুদ্ধে নেমেছে তারা। ফারাবি কাঠ হয়ে যাওয়া ঠোঁট টা জ্বিভ দিয়ে ভিজিয়ে নিলো।
যদি ও বকা খাওয়ার চান্স নেই। তবু ও পচন্ড ভয় হচ্ছে। প্লান টা সাকসেসফুল হলেই হয়। রিফাত এক পা এক পা করে এগোলো । ফারাবি ওহ পেছন পেছন যাচ্ছিলো । ফারহান দু হাতে চেপে ধরে বলল
_ তুই কোথায় যাচ্ছিস ? ধরা খাওয়ার শখ হয়েছে নাকি ?
ফারাবি মাথা হেলিয়ে বলল
_ উহহু একদম না।
_ এই দিকে আয়। আমরা সবাই আড়াল থেকে দেখবো।
রিফাত ধীর পায়ে বাবা মায়ের রুমের কাছে আসলো। সবাই আড়াল হয়ে আছে।
রিফাত দরজায় দু বার খটখট আওয়াজ করলো। করিডোরের লাইট টা কাটিং করা হয়েছে। মিনিট যাওয়ার পর ই দরজা খুলে গেল। রিফাত একটু আড়াল হয়ে গেল।রিফাতের বাবা এদিক ওদিক ঘুরে তাকিয়ে চলে গেলেন। আবার দরজায় খটখট আওয়াজ হলো ওনি আবার এসে ফিরে গেলেন। আবার দরজায় খটখট আওয়াজ হতেই খুলে দিলেন। রিফাত পালাতে যেতেই ওনি দেখে ফেললেন। হালকা করে চিৎকার করে উঠলেন। ফলে রিফাতের মা ও জেগে গেলেন। রিফাত একটু একটু করে হাঁটতে লাগলো। রিফাতের মা বাবা ও হাঁটতে লাগলেন।
ওনারা রিফাত কে চোর ভেবেছেন। আবার সাদা কাপড়ের ছায়া দেখে ও ভয় পেলেন খানিকটা। তবু ও পিছু নিলেন । করিডোরের লাইট টা জ্বলছে না দেখে ওনারা আতঙ্কিত হলেন।
এক পা দু পা করে আগাতে আগাতে সবাই ছাঁদে উঠে গেল। ছাঁদ ঘুটঘুটে অন্ধকার। রিফাতের বাবা লাইট টা আনেন নি। কোথা থেকে যেন মিন মিন করে ভুতুরে সুর ভেসে আসছেন। রিফাতের মা রিফাতের বাবার হাত ধরে বললেন
_ আগে লাইট নিয়ে আসি চলো।
_ সময় নেই। চোর টা পালিয়ে যাবে।
_ গেলে যাক আসো।
রিফাতের বাবা শুনলেন না। আরেকটু আগাতেই রিফাত সামনে এসে হাত দুটো নাড়াতে লাগলো। আর ছাদের এক ছাইটের পজেক্ট এ ভুতের বিকৃতি ছবি চলে আসলো। রিফাতের মা চিৎকার করে উঠলেন। ওনার স্বামী কে জড়িয়ে ধরতেই লাইট জ্বলে উঠলো।
সবাই চিৎকার করে বলল
_ happy 30 marriage anniversary.
সঙ্গে সঙ্গে রজনী গন্ধা ফুলের পাপড়ি গুলো ওনাদের মাথায় এসে পরলো। সবাই হৈ হুল্লর করে উঠলো।
রিফাতের মা বাবা অবাক চোখে তাকিয়ে রইলেন। বাচ্চা বাচ্চা ছেলে মেয়েরা এই সব কি আয়োজন করেছে।
বিস্ময়ে হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন।
সবাই জোড়ে চিৎকার করে উঠলো। উপর থেকে পার্টি স্প্রে ঝরানো হলো। সাথে পার্টি পেপার।
এবার পুরো লাইট অফ হয়ে গেল। সাদা প্রজেক্ট এ বড় মা আর বড় আব্বুর হাস্য উজ্জল ছবি গুলো আসতে লাগলো। পুরনো কতো স্মৃতি। রিফাতের বাবা যেদিন রিমাতের মা কে দেখতে যান সেদিন ই পছন্দ হয়ে যায়।
আর তারপর একদিন আলাদা করে দেখা করেন। সেদিন রজনী গন্ধা ফুল দিয়ে ভালোবাসা নিবেদন করেছিলেন ওনি। সেটাই ছিলো ওনাদের ভালোবাসার কিংবা সম্পর্কের প্রথম প্রেম ময় সংলাপ।
আর যার দরুন সব ডেকোরেশন করা হয়েজে রজনী গন্ধা দিয়ে।
সবাই হৈ হুল্লর করতে লাগলো। ফারহান আর ফারাবির বাবা মা ও এসে পরেছেন। সবাই রিফাতের মা বাবা কে উইস করলেন।
ওনারা খানিক টা লজ্জা পেলে ও বেশ খুশি হয়েছেন।
আজ ত্রিশ বছর পর পুরনো স্মৃতি গুলো। দুজনের চোখেই পানি চিক চিক করছে। অধিক সুখে চোখে জল যাকে বলে।
সবাই হাত তালি দিয়ে কেকের দিকে এগিয়ে গেলো। কেক টা কেঁটে সবাই মিলে আনন্দ করতে লাগলো।
অজ্রস ছবি তুলে নিলো। সবাই মিলে আনন্দ করে যে যার রুমে চলে গেল। কারন কাল সন্ধ্যা তে দারুন সব পার্টি আছে। ফারহান বলেছে কি সব সিক্রেট কাজ ও আছে। তাই সবাই কে এক টা করে শপিং ব্যাগ ধরিয়ে দিয়েছে।
আর বলেছে যেন সন্ধ্যার দিকেই শপিং ব্যাগ খুলে দেখে।
সবাই তাতেই সম্মতি জানিয়ে চলে গেছে।
ফারাবি নিজের ঘরে থাকবে বলে ঠিক করেছে কিন্তু ফারহান টেনে হিঁচড়ে তাকে তাদের বাসায় নিয়ে গেছে।
তার জন্য ফারাবির ভীষন রাগ হয়েছে।
গোমড়া মুখ করে বেডের উপর পা তুলে বসে আছে। পরনে ঢিলে ঢালা এক টা কুর্তি।
ফারহান বাথরুম থেকে ফ্রেস হয়ে এসে ট্রাওয়াল টা ফারাবির দিকে তাক করে ছুঁড়ে মারলো। ফারাবি ভ্রু কুঁচকে থেকে মুখ টা মলিন করে ফেললো।
এবার ফারহানের সত্যি ই খারাপ লাগলো। ফারাবির কাছে ধীর পায়ে এগিয়ে আসলো। ফারাবি মুখ তুলে তাকালো ও না।
ফারহান হাঁটু গেড়ে বসে ফারাবির কোলে মাথা রাখলো। ফারাবির কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। ফারহান কষ্ট পেল। ফারাবি কি আদৌ বুঝতে পারলো তার নিরবতা ফারহানের বুকে রক্ত ক্ষরন করে চলেছে। নাকি ফারাবি বুঝে ও না বুঝার চেষ্টা করলো।
ফারাবির হাত দুটো মুঠো বন্দী করে চুমু খেল। আবেগ প্রবন কন্ঠে বলল
_ এতো টা কষ্ট দিয়েছি আমি ?
নো রেসপন্স । ফারহানের বুক টা কেঁপে উঠলো। ফারাবির নিরবতা ওকে ভেঙে দিয়েছে। ফারহান এক পলক তাকিয়ে ব্যলকনিতে চলে গেল।
চাঁদ টা আধারে ডুবে আছে। মধ্য রাত্রী হলে ও অদূরে লাইট জ্বলছে। সবাই তার নিজ নিজ কাজে মত্ত। ফারহান অল্প পরিমানে হাসলো। তবু ও হাসি টা মিলিয়ে গেল।
বুকের ভেতর যন্ত্রণা হচ্ছে। আকাশের দিকে তাকিয়েই রইলো। মৃদু বাতাসে চুল গুলো নড়ছে। হঠাৎ পেছন থেকে কারো অস্তিত্ব অনুভব করে ফারহান ঘুরে তাকালো।
ফারাবি মাথা নিচু করে আছে। ড্রিম লাইট এর আলোতে মুখ টা কেমন উসকো খুসকো দেখাচ্ছে।
ফারহান কাছে গেল। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে ফারাবি কে জড়িয়ে ধরলো।
ফারাবির অবাধ্য চোখ দুটো বৃষ্টির বর্ষন নামিয়ে দিলো। এই টুকু সময়ের একাকীত্ব ওকে ও যে ভেঙে দিয়েছে।
নাক টেনে ভাঙা গলায় বলল
_ আমি আর কখনো এমন করবো না। খুব ভুল করেছি । আমাকে ক্ষমা করুন প্লিজ।
আমি জানি আপনাকে ছাড়া আমি একটা নিশ্বাস ও ফেলতে পারবো না।
_ উহহু তোকে অনেক দিন বাজতে হবে। আমি থাকি বা না থাকি তোকে অপেক্ষা করতে হবে। এভাবে চোখে নোনা জলের স্রোত আমার একদম পছন্দ নয়।
এবার একটু হাঁস তো।
ফারাবি ছলছল নয়নেই হাসলো। ফারাবির গালে লেগে থাকা নোনা জল টুকু উষ্ণ অধরে শুষে নিলো ফারহান। ফারাবি খুব শক্ত করে ফারহান কে জড়িয়ে ধরলো । ফারহান মৃদু হেসে ফারাবি গলায় ছোট করে কামড় বসিয়ে দিলো।
ফারাবি রাগি দৃষ্টি তে তাকাতেই ফারহান খিল খিল করে হেসে উঠলো। মধ্য রাত্রী তে সে হাসি বিকট শব্দ তুলছে। সে হাসির শব্দে দালান বিস্ফোরিত না হলে ও ফারাবির মন দগ্ধ হয়ে গেছে । প্রেমাগুনে জ্বলে গেছে। তবু ও অদ্ভুত শান্তি।
53
গাড়ির হর্ন আর বিকট আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেল ফারহানের। বিরক্তি তে নাক কুঁচকে নিয়েছে। চোখে মুখে সূক্ষ্ম ভাঁজ পরে গেছে। উঠতে গিয়ে টান অনুভব করলো। টানের উৎস দেখার জন্য পাশে তাকাতেই ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো। এক ফালি হেসে ঝুঁকে নিলো। ফারাবির তেলতেলে মুখ টা তে চেয়ে রইলো। সমস্ত বিরক্তি ভালো লাগা তে পরিনত হলো। মেয়েটা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। দেখতে কি নিষ্পাপ লাগছে। ফারাবির কপালে শুষ্ক ঠোঁট টা ছুঁইয়ে দিয়ে আবার আষ্ঠে পৃষ্ঠে জড়িয়ে শুয়ে পরলো। মেয়েটা ও উষ্ণতা পেয়ে ফারহান কে ঘুমের ঘোরে খামচে ধরলো। ফারহানের বুকে মুখ রেখেই শুয়ে রইলো।
ঘুম ভাঙলো সাড়ে আটটার দিকে। ফারাবি নিজেকে ছাড়াতে পারছে না। কারন ফারহান তাকে বুকে মিশিয়ে রেখেছে। ধীর হাতে ফারহানের বাহু ঝাঁকাতে লাগলো। ফারহানের ঘুম আসে নি। তাই একটু নড়চড়েই বুঝে গেল। আলতো হেসে উঠে পরলো। ফারাবি লম্বা হাই তুলে বলল
_ কাল এতো ঘুমিয়েছি । ফজরের সময় উঠতেই পারি নি।
_ কাল রাতে দেরি করে ঘুমানোর জন্য ই এমন টা হলো। যাই হোক ফ্রেস হয়ে নে। আমি নাস্তা বানিয়ে আনছি।
_ আপনি বানাবেন ?
ফারহান মাথা ঝাঁকালো । ফারাবি মোহনীয় দৃষ্টি তে তাকিয়ে বলল
_ যান আমি ও আসছি।
ফারহান সম্মতি জানিয়ে চলে গেল। ফারাবি দ্রুত ফ্রেস হয়ে কিচেনে চলে আসলো। ফারহান সব কিছু নামাচ্ছে।
_ কি বানাবেন ?
_ রুটি আর ভাজি । কিন্তু কি ভাজি করি বল তো। আলু তো কিছুতেই না।
_ আলুর পরোটা বানিয়ে দিন না।
_ একদম নয়। এভাবেই অসুস্থ হয়ে যাবি। অতিরক্ত তেল যুক্ত খাবার কম খেতে হবে। আমি বরং পেঁপে ভাজি করে নিই। ইয়া এটাই বেস্ট।
ফারাবি মুখ টা ছোট করে নিলো। খাবারের প্রতি এতো নজর ফারহানের। ফারহান এসেই তার প্রিয় খাবার গুলো আউট করে দিয়েছে। একটু তেল চর্বি জমলে খুব কি ক্ষতি ?
ফারহান কফি মগ ঠা ফারাবির দিকে এগিয়ে ইশারায় খেতে বললো।
ফারাবি কফি নিয়ে চুমুক দিলো। ব্ল্যাক কফি , ফারাবির ও খুব পছন্দ।
ফারহান একটু চুমুক দিয়েই আটা নামিয়ে নিলো। রুটি মেকার দিয়ে তো রুটি ভেজে নিবে। কিন্তু মাখতে তো হবেই।
ফারাবি কফি কাপ টা রেখে ফারহানের দিকে এগিয়ে এলো। বোলে আটা নিয়ে বলল
_ আটা আমি মাখতে পারি। আপনি পেঁপে বাজি করুন।
ফারহান মৃদু হেসে চলে গেল। ফারাবির বাবা প্রতি দিন রুটি খেতেন। একদিন মা অসুস্থ থাকায় আর বড় মা বাসাতে না থাকায় ওহ আটা মেখেছিল। বেশ চেষ্টা চালিয়ে সক্ষম হয়েছিলো। তাই রুটি বানাতে পারে সে। তবে অবশ্য ই রুটি মেকারে।
*
ফারহান সকালের দিকে ফারাবি কে বাসায় নামিয়ে দিয়ে কোথাও একটা চলে গেছে। কি নাকি কাজ আছে। ফারাবি থম থমে মুখ করে বাসা থেকে বেরিয়ে রিমির কাছে চলে গেল। খুব সম্ভবত রিমি কানে ইয়ারফোন গুঁজে গান শুনছে।
রিমির অভ্যাস এটা।
রাফাজ বেশ ব্যস্ত সময় পার করছে। শুধু রাফাজ নয় বাসার সবাই বেশ ব্যস্ত সময় পার করছে। একশ জনের আয়োজনের কথা থাকলে ও তিন শত জনের আয়োজন হচ্ছে। কারন ফ্যামিলির মানুষদের নিয়েই একশ জন পেরিয়ে গেছে। ঘনিষ্ঠ কিছু আত্মীয় স্বজন কে ও তো ইনভাইট করতে হয়। তাই সবার কাজ বেড়ে গেছে।
রিফাত গেট দিয়ে ঢুকছিলো ওমন সময় মালি পানির পাইপ ঘুরিয়ে নিলো।
আর পানি গিয়ে পরলো রিফাতের শরীরের। রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রিফাত চলে গেল।
মনিকা মুখ চেপে হাসতে লাগলো। কারন পানি তে চুপচুপ হয়ে গেছে রিফাত। মনিকা এবার হো হো করে হেসে দিলো। দাঁত কিরমির করতে করতে রিফাত চলে গেল।
মনিকা ফুলের ঝুরি নিয়ে আগাচ্ছিলো। হঠাৎ করেই আকাশ থেকে পানির বর্ষন হয়ে গেল। মনিকা হতবাক হয়ে গেল। হঠাৎ বৃষ্টির হেতু খুঁজতে উপরে তাকালো।
রিফাত বালতি হাতে হেসে যাচ্ছে। মনিকা ফুলের ঝুরি রেখে দিয়ে দৌড়ে গেল সে দিকে।
” এই মনিকা এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেন ? ভিজে গেলি কি করে ?”
ছোট মায়ের কথায় থমকে দাঁড়ালো। ভ্যাগা ভ্যাগা করে বলল
_ তোমার ছেলে ভিজিয়ে দিয়েছে। দেখো কি করেছে ।
ছোট মা একটু আফসোস করে আদুরে কন্ঠে বললেন
_ থাক মা এখন রাগ করিস না। তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে আয়। আমি বকে দিবো।
মনিকা কথা বাড়ালো না। সামনে যেতেই রিফাতের মায়ের মুখোমুখি । এবার মনিকা কেঁদে ই দিলো। আদুরে কন্ঠে সব বলল। রিফাতের মা একটা ট্রাওয়াল হাতে দিয়ে বললেন
_ চেঞ্জ করে আয়। আমি দেখছি বাদর টা কোথায়।
মনিকা ঠোঁট দুটো প্রশস্ত করে চলে গেল।
দুপুরের দিকে ফারহান বাসায় আসলো। ঘেমে পুরো একাকার হয়ে গেছে। ফারাবি তখন কিচেনে। রিমি ফারাবিদের বাসাতেই ছিলো । মোট কথা আজ সবাই এ বাসাতে। ডাইনিং থেকে পানি নিয়ে ফারহানের দিকে এগিয়ে দিলো। শার্টের দুটো বোতাম খুলে আলগা করে নিয়ে সোফা তে বসলো।
পানি টা খেয়ে রিমি কে বলল
_ আমার পাশে বস তো।
রিমি বসলো। ফারহান ভালো করে দেখে বলল
_ ফাহিম কে বিয়ে করতে কোনো অসুবিধা আছে ? আমি প্রথমে জোড় করেই বলেছিলাম। কিন্তু তুই না চাইলে বিয়ে টা হবে না।
রিমি মলিন হাসলো। মনের শান্তির জন্য সে বিয়ে টা করছে না সবার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বিয়ে টা করছে। এক জনের জন্য পুরো পরিবার কে কেন কষ্ট দিবে ?
ফারহান এগিয়ে এসে বোনের মাথায় হাত বুলালো। রিমির কপালে হালকা করে চুমু দিয়ে বলল
_ ফাহাদ কে এখনো ভালোবাসিস ?
রিমি চোখ ঘুরিয়ে নিলো। চোখ ফেটে পানি আসছে। যথাসম্ভব পানি থামানোর চেষ্টা করলো। ফারহান কিছু বললো না। নিশ্বাস ফেলে বোনের হাত টা ধরলো। দু হাতে মুষ্ঠি বদ্ধ করে নিলো। রিমি স্বাভাবিক হয়ে বলল
_ আমার সমস্যা নেই ভাইয়া। আমি কেন থেমে থাকবো। আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করবো ফাহিম কে ভালোবাসার।
কথা টা বেশ কষ্ট করেই বললো রিমি। ভালোবাসা শব্দ টা যে ফাহাদের সাথে জুড়ে আছে। এর রেশ কেঁটে যাবে একদিন। কিন্তু কষ্ট টা কোথাও না কোথাও থেকে যাবেই। তবু চেষ্টা করবে মুভ অন করার। ফারহান অধর কোনে হেসে চলে গেল।
সিঁড়ি তে দাঁড়িয়ে সমস্ত টাই শুনেছে ফাহিম। ঠোঁটের কোন প্রশস্ত করে নিচে নেমে আসলো।
*
” ফারাবি এই ফারাবি। কোথায় তুই ”
ফারহানের মায়ের ডাকে কিচেন থেকে হন্তদন্ত হয়ে বের হলো ফারাবি। হাত টা মুছতে মুছতে বলল
_ আন্টি এই যে আমি।
ফারাবির কথাতে ভ্রু কুঁচকে নিলেন ওনি। কন্ঠে কাঠিন্য এনে বললেন
_ একটা চর মারবো। আমি তোর কি হই। আন্টি হই ? মা বলবি বুঝেছিস?
ফারাবি লজ্জা মিশ্রিত মুখ টা লুকিয়ে মাথা ঝাকলো। ফারহানের মা কাছে এসে বললেন
_ আমার ছেলেটা চোখে হারাচ্ছে তোকে। যাহহ তোর রুমে বসে আছে।
ফারাবি লাজুক হেসে চলে গেল। এই লোকটা আর কাউকে পেলো না বলার জন্য। ইসসস কি লজ্জা।
দুপুরে সবাই এক সাথে লাঞ্চ করলো। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান হবে। গেস্ট রা বিকেলের মধ্যেই চলে আসবে। তা নিয়ে ব্যস্ত সকলে। এই দিন টা কতোটা গুরুত্বপূর্ন হতে চলেছে তা কেউ ই জানে না।
ফারহান স্মিত হেসে সব দিক সামলাচ্ছে। ফারহান ফোন করে সকলের বন্ধু বান্ধব কে ও ইনভাইট করে দিয়েছে। যা সকলের অজানা।
সারপ্রাইজ এ হার্ট এটার্ক না হয়ে যায়। ফারহান কে একা একাই হাসতে দেখে ফারাবি ভয় পেল।
এই ছেলেকে কি জিন ভুতে ধরলো? ফারাবি বুকে থু থু দিয়ে এগিয়ে গেল। ফারহানের সামনে হাত নাচাতেই ফারহান ধমক দিয়ে দিলো।
ফারাবি ছিটকে সরে গেল। আমতা আমতা করে বলল
_ না মানে হয়েছে কি আপনি একা একাই হাসছিলেন।
ভাবলাম ভুতে ধরেছে।
ফারহান ভরকে গেল। খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে বলল
_ এমনি হাসছিলাম। একটু পাশে বস জড়িয়ে ধরবো।
ফারহানের সোজা কথায় ফারাবির চোখ কপালে। এটা কেমন কথা ?
ফারহান অপেক্ষা করলো না। ফারাবি কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে রইলো। মিষ্টি এক ঘ্রান ভেসে আসছে। আচ্ছা এই ছেলেটা গায়ে কি মাখে ?
#স্বপ্নের_প্রেয়সী_সিজন_2
#ফাতেমা_তুজ
#part_54
ফারাবি কে স্কাই ব্লু রঙের শাড়ি লেহেঙ্গায় বেশ সুন্দর লাগছে। মুখে ব্রাইডাল মেকআপ নয়। তবে একেবারে কম সাজ ও নয়। সব থেকে সুন্দর হয়েছে আইলেনার টা। কারন এটা দিয়ে দিয়েছেন প্রান প্রিয় স্বামী ফারহান চৌধুরী। নিজের দিকে তাকিয়ে আনমনেই হাসলো। লজ্জা হাসিতে মাখো মাখো।
ফারহান অফ হোয়াইট কালারের সুট পরেছে। সুটের বোতাম গুলো খোলা। হাত দিয়ে চুল গুলো গোছাতে গোছাতে বলল
_ তাড়াতাড়ি চল সবাই কে সারপ্রাইজ দেওয়ার আছে।
ফারাবি ভ্রু কুঁচকে বলল
_ দুপুরে গিয়ে বড় মা আর বড় আব্বুর বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করলাম। এখন সন্ধ্যা তে কি পার্টি আছে বলুন তো ?
ফারহান দীর্ঘশ্বাস ফেললো। মুখ টা মলিন করে বলল
_ এতো জেনে কি করবি তুই ?
_ জানতে হবে না কেন ?
_ আহা সেটা বলি নি তো। শুধু সবার সাথে জানার কথা বলেছি।
এভাবে সারপ্রাইজ হয় বল তো ?
_ ঠিক আছে। তবে আমি বেশি ক্ষন এই ভারী জামাকাপড় পরে থাকতে পারবো না।
_ আচ্ছা রাত 9 টা অব্দি থাকিস প্লিজ ?
_ ওকে ডান।
ফারাবি হাসি হাসি মুখ করে ফারহানের হাতে হাত রাখলো। মিষ্টি এক ঘ্রানে পুরো শরীর কেঁপে উঠলো। ফারহান হেচকা টান মারতেই ফারাবি ফারহানের বুকে গিয়ে পরলো।
_ কি হয়েছে জান ? এভাবে শিউরে উঠলি কেন ? বর কে এখনো লজ্জা পাস ?
ফারাবি আমতা আমতা করতে লাগলো। এই কয়েক দিনে ও ফারাবি নিজের লজ্জা সংযত করতে পারে নি।
ফারহান কাছাকাছি এলেই শিউরে উঠে। এ কেমন বাজে অভ্যাস ?
তবে ভালোবাসায় কিছু বাজে অভ্যাস থাকা বেশ প্রয়োজনীয় ।
*
ফারাবি দের বাসার কাছে গাড়ি থামালো ফারহান। ফারাবি চমকপ্রদ প্রায়। কারন বাড়ির ডিজাইন টাই বদলে ফেলা হয়েছে। দুপুরের আয়োজনের কোনো রেশ নেই। এ যেন কোনো বিয়ের মঞ্চ। ফারহান অধর কোনে হাসি রেখে বাসায় প্রবেশ করলো। সন্ধ্যা সাত টা বাজে। ফারহান বাসায় আসতেই এক সঙ্গে সবাই বললো
_এই সব কি ফারহান ?
ফারহান ভাব নিয়ে দাঁড়ালো। কোনো উত্তর দিলো না। সবার পড়নে ব্রাইডাল সব মেকআপ আর গর্জিয়াস জামাকাপড়।
সব থেকে বড় কথা বাড়ি টাকে এতো টাই জাঁকজমক করেছে যে চারিদিকে শুধু লাইটিং ই দেখা যাচ্ছে।
ফারাবি বেশ বিরক্ত হলো। সবাই প্রশ্ন করলো অথচ ফারহান কোনো উত্তর দিলো না। এ কেমন সারপ্রাইজ?
ফারহান স্টেজ এ উঠে গেল। একটা গিটার রাখা আছে। গিটারের গায়ে হাত বুলিয়ে টুংটাং আওয়াজ তুললো। ফারহানের এমন কান্ডে বিরক্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফারহান মৃদু কন্ঠে দু এক লাইন গাইলো। সবাই মুখে কুলুপ গুঁজে আছে।
ফারহান আলতো হেসে ফারাবির দিকে তাকিয়ে বলল
” আমি আমার প্রেয়সী কে তো পেয়ে গেছি। কিন্তু আমার প্রিয় কিছু মানুষ তাঁদের প্রেয়সীর শোকে কাতর হয়ে আছে। তাঁরা বোধহয় স্বপ্নে ও তাঁদের প্রেয়সীর জন্য ছটফট করে। এই সব কি দেখা যায় ? ”
সবার ভ্রু কুঁচকে গেছে। ফারহান মাইক টা মুখের কাছে এনে শিস বাজালো। সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ এসে ভীর করলো। যে যার বন্ধু দের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।
ফারহান ধীরে ধীরে ফারাবির কাছে আসলো। ফারাবির মুখে ফু দিয়ে আলতো হাসলো। ফারাবি বিস্ময়ে অবাক। ফারহান বলা শুরু করলো
” তো সবাই বিয়ের জন্য প্রস্তুত তো ? ”
জোড়ে আওয়াজ আসলো হ্যাঁ । ফারহান বিগতলি হেসে সেই লাইন টা আওড়ালো।
” যাদের বিয়ে তাঁদের হুস নেই আর বন্ধু বান্ধবের ঘুম নেই ? ” আরে ওদের কে রাজি করা সবাই।
সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে বন্ধুরা ঘিরে ফেললো তিন জুটি কে । রিফাত , মনিকা ,
রিমি , ফাহিম আর রাফাজ তনির বিয়ে। ফারহান ফারাবি কে চোখ টিপে দিলো। ফারাবি কোমড়ে হাত গুঁজে বলল
_ ডেঞ্জারাস।
আধ ঘন্টা পর সবাই রাজি হলো। যদি ও সবাই চাইছিলো বড় কোনো এরেঞ্জ করে বিয়ে টা করতে । ফারহানের যুক্তি তে থেমে গেল।
ফারহান বলেছে ওদের সাথে সবার ও গেট টুগেটার হবে। আর বিয়ের কথা ও জানিয়ে দেওয়া হবে।
সবাই এতে রাজি হয়ে গেছে। দ্বিমত করার কোনো কারন নেই। কারন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় রা তো আছেন ই।
অবশেষে তিন জুটির বিয়ে হয়ে গেল। ফারহানের বাহু তে মাথা রেখে ফারাবি বলল
_ ইসসস আমাদের ও যদি হতো।
_ আবার বিয়ে করতে চাচ্ছিস ? আমার কিন্তু সমস্যা নেই। আমি ও না হয় আবার বাসর করে নিবো।
ফারাবি নাক কুঁচকালো। ছেলেটা যথেষ্ট লুচু। যেখানে সেখানে লুচুগিরি করে বসে।
ফারহান আলতো হাতে ফারাবি কে জড়িয়ে ধরলো। নাক নাক ডুবিয়ে বলল
_ আমাদের ভালোবাসা টা খুব রেয়ার জানিস ?
_ কেমন ?
_ তিন টে বছর দুজন ই কষ্ট করেছি। ভালোবাসার ফিলিংস থাকতে ও কেউ কাউ কে জানাই নি। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর ও কখনো ছুঁইয়ে দেখি নি। অসম্পূর্ন রেখেছিলাম হালাল সম্পর্ক গুলো ওহ। জানিস কেন ?
ফারাবি উত্তর দিলো না। কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে ফারহান বলল
_ ভালোবাসা। এই ভালোবাসার একটা গভীর জোড় আছে সেই জোড়েই তোকে পেয়েছি আমি। মানছি আমি এর লিমিট ক্রস করেছি তবে আমার কলিজা কে বুকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমি এই টুকু তো করতেই পারতাম তাই না ?
_ উহহুহ পারতেন না। কারন আমি না চাইলে কখনোই আপনি আমাকে স্পর্শ করতেন না। বিয়ে টা ও ঝোঁকের বসেই করেছেন। যার জন্য আপনি কষ্ট পাচ্ছিলেন ।
তবে যাই হোক সেটাই ছিলো আমাদের প্রেমের সূচনা।
ভালোবাসি আমি , খুব ভালোবাসি।
ফারহান মৃদু হাসলো। ফারাবির কপালে ভালোবাসার পরস দিয়ে নিলো। চোখ থেকে দু ফোঁটা নোনা জল ফারাবির ঠোঁটে এসে পরলো। ফারাবির বুক ধক করে উঠলো।
_আপনি
_ উহহহু একদম নয়। ফারহান যার তার জন্য কাঁদে না। তুই জানিস ও না তুই আমার কাছে কি।
ফারাবি শিউরে উঠলো। ছেলেটা এতো কেন ভালোবাসে ওকে ?
*
একটা রিসোর্ট বুক করেছে ফারহান। রিসোর্ট টা বাসা থেকে মিনিট পাঁচেক দূরে। সম্পূর্ন রিসোর্ট বুক করে নিয়েছে। পুরো ফ্যামলি সহ সবাই কে রিসোর্ট এ নিয়ে এসেছে। কাল নাকি সবাই কে নিয়ে ফ্যামিলি পার্টি হবে।
_ এ সবের কি দরকার ছিলো ফারহান ? মানছি তুমি টাকা ইনকাম করো তাই বলে সমস্ত জুয়েলারি ও তুমি ই দিবে ?
প্রতি টা ডায়মন্ড জুয়েলারির প্রাইজ তো হাই লেভেল এর । আমাকে বলতে পারতে ?
_ আব্বু এতো ভেবো না তো। সবাই কে গিফ্ট দিয়েছি আমি। তাছাড়া আমি তো আমার বিয়ে তে কাউকে ইনভাইট করি নি। তাই আর কি
ফরহাদ চৌধুরী মৃদু হাসলেন। পাগল ছেলে তাঁর । ওনি এই সব নিয়ে প্রশ্ন করতেন না। যদি না ব্যাংক থেকে হিউজ পরিমানে ফারহানের লোন না নেওয়া থাকতো।
যত ভালোই ইনকাম হোক না কেন। ব্যাংক এর কাছে ঋনগস্ত ফারহান । যথাসম্ভব পরিশোধ করা টাই উত্তম। তা না করে এতো কস্টলি আয়োজন করেছে। আর তাই ওনি প্রশ্ন গুলো করলেন।
_ এই আসো না কেন ? ছেলে মেয়েরা হাসি ঠাট্টা করবে আর তুমি কি দাঁড়িয়ে দেখবে ?
লজ্জা করবে না নাকি ?
স্ত্রীর কথাতে ফরহাদ চৌধুরী সামান্য লজ্জা পেলেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রস্থান করলেন।
ফারহান সবাই কে লজ্জা দিতে ব্যস্ত। ফারহানের এমন সব কথায় ফারাবিই লজ্জা পাচ্ছে।
_ ফারহান ভাই শোনো তুমি বাসর করেছো আমরা কি বাঁধা দিয়েছিলাম ?
তুমি কেন আমাদের বাসরে বাঁধা দিচ্ছো ?
_ রাইট আচ্ছা ফারহান আমি তো তোর বড় ভাই আর যাই হোক আমাকে রেহাই দে।
_ নো কোনো রেহাই নেই। পঞ্চাশ হাজার করে দাও আর বাসরের পারমিশন পাও।
ফারাবি আমাকে প্রমিস করিয়েছে পঞ্চাশ হাজার করে না দিলে একদম ই যেতে দেওয়া যাবে না।
ফারাবি অবাক চোখে তাকালো। এই সব কখন বললো সে ? ফারহানের দিকে বোকার মতো চেয়ে থেকে ফারহান কে ঝটকা মেরে বলল
_ আমি কখন
_ আরে থাম তো বলেছিলিস হয়তো কখনো। এখন চুপ চাপ দেখ ।
ফারাবি নুইয়ে গেল। ফাহিম বিরক্তিকর শব্দ করে বলল
_ উইদাউট পিপারেশন এ আছি ভাই। নো টাকা পয়সা । এবার প্লিজ আমার বউ এর সাথে একটু কথা বলতে দাও।
_ ফারহান মনিকা আমাকে মেরেই ফেলবে। প্লিজ ভাই যেতে দে।
ফারহান চোখ টিপে বলল
_ বউ কে কাবু রাখতে পারো না কেমন পুরুষ তুমি। শালা তুই দশ হাজার টাকা বেশি দিবি।
রিফাতের কপালে ভাঁজ পরলো। রিফাত তেড়ে আসতেই ফারহান বলল
_ একদম না। বহুত প্যারা দিয়েছিস । এখন টাকা দে না হলে দূর হয়ে যাহহ।
_ আপনি এমন করছেন কেন ? দেখুন তো রাত এগারো টা বেজে গেছে।
ছেড়ে দিন না প্লিজ
_ ছেড়ে দিবো ?
_ হুমমম
_ আচ্ছা যাহহহ ছেড়ে দিলাম। বুঝেছিস আমার বউ বলেছে বলে ছাড়লাম। তবে শুধে আসলে পরে নিয়ে নিবো কিন্তু।
সবাই মাথা ঝাঁকালো। ফারাবির হাত ধরে ফারহান চলে আসলো। ফারহানের গাঁয়ে ভর দিয়ে ফারাবি বলল
_ কোলে করে নিয়ে যান আমায় ।
_ সিউর তো ?
_ হুমমম
ফারহান বাঁকা হাসলো। ফারাবি কে কোলে করে নিয়ে রিসোর্ট এর বাইরে চলে আসলো। আজ সারা রাত চন্দ্র বিলাশ করবে ওরা। ফারাবি হঠাৎ করেই ফারহানের গলায় চুমু দিয়ে দিলো। ফারহান মৃদু ছন্দে দু এক লাইন গান ও গাইলো। ফারাবি ঘোর লাগা চোখে ফারহানের দিকে তাকিয়ে রইলো। এই ছেলেটার মুখের মায়া ফারাবির চিত্ত কাঁপিয়ে তুললো। ভালোবাসার প্রখরতা নতুন ভাবে শিখছে সে।
**