#স্বামীর অত্যাচার !!
#Part_16
মসজিদ থেকে নামাজ আদায় করে ঘরের ভিতরে ঢুকছে নিলয়….পড়নে সাদা পাঞ্জাবি আর পায়জামা দেখে আন্দাজ করে নিল তাহিন…..এত সকাল সকালিই বা এভাবে কোথায় থেকে আসবে….যেমনটা ভেবেছিল সেই ধারণটা ভুল প্রমান করে দিল নিলয়…অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে তাহিন….প্রথমবার নিলয়কে এভাবে দেখে ভালই লাগছে…কিন্তু নিলয়ের হঠাৎ এই পরিবর্তনটা বেশ ভাবাচ্ছে তাহিনকে…..
বিব্রতবোধ করছে নিলয়…,আস্তে আস্তে করে তাহিনের সামনে এসে…..একু গম্ভীর হয়ে বলল…
-এত অবাক হওয়ার কিছু নেই…….কেউ একজন বলেছিল….আল্লাহর দরবারে মন থেকে কিছু চাইলে ওনি নাকি কখনো খালি হাতে ফিরিয়ে দেননা…….তাই আজ ওনার কাছে একটা প্রিয় জিনিস চাইতে গেছিলাম…….
কি বলবে বুঝতে পারছেনা তাহিন….কিছু না বলে দ্রুত পায়ে নিলয়ের সামনে থেকে চলে গেল…
নামাজ আদায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে..বড্ড দোটানায় ভুগছে…..না পারছে নিলয়কে বুঝতে,না পারছে নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে গিয়ে অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিতে………সব কিছু কেমন যেন ভাবাচ্ছে তাহিনকে……ভাবনার ছেদ ঘটল হঠাৎ করে পিছন থেকে কেউ একজন এসে জড়িয়ে ধরতে…..নিলয় ছাড়া এমন কাজ কে বা করবে……
-গুড মর্নিং সুইটহার্ট….
তাহিন চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে……
-আমি কি ধরে নিব অভিমানটা একটু হলে ও কমেছে…?
-এমনটা কেন মনে হল…..?তাছাড়া আমি তো আগেও বলেছি আপনার উপর আমার কোনো অভিমান নেই….
-তাতো দেখতেই পেয়েছি…..না হয় তোমাকে জড়িয়ে ধরলে এভাবে চুপ থাকতে না…এতকক্ষে সরানোর জন্য কত কিছুই না বলে ফেলতে……
-বলে বা কি লাভ আপনি তো আর ছাড়বেন না….
-ছাড়ব না তো জান তাহলে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা কেন ভাবছ………
-সেটা তো আপনি ভালই জানেন…….
-তুমি ও তো ভাল করে জান কেন করছি এমনটা…তাহলে বারবার একিই কথা কেন বলছ…..?
-গিরিগিটি বারবার বদলালে মানুষ তাকে কি করে চিনবে বলেন তো….?
-কথাটা কি আমাকে বললে……?
-নিজে যখন নিজেই গায়ের উপর টেনে নিয়ে গেছেন তাহলে ধরে নেন আপনাকে…..
-যখন অবিশ্বাস করার প্রয়োজন ছিল না…তখন তো কোথায় ও একটা বিশ্বাস নিয়ে সব কিছু সহ্য করে গেছ…..তাহলে এখন কেন বিশ্বাস হচ্ছে না…….?
-…..………….
নিলয় তাহিকে ছেড়ে দিয়ে……..
-করতে হবে না বিশ্বাস তোকে…..শুধু এই বাড়ী থেকে এক পা বের হয়ে দেখা ট্যাং ভেঙে রেখে দিব……
কথাটা বলে তাহিনের হাত ধরে নিচে নিয়ে এসে…..ফুলিকে কফি করতে বলে….তাহিনকে গার্ডেনের দিকে নিয়ে গেল…..
-কেন এমন করতেছেন?
-জানোনা কেন করছি….আমার তো নাটক করতে ভাল লাগে এজন্য…..
-………….
-তুমি বুঝনা কেন এমন করি……?বুঝবে কি করে তোমার তো ভালই লাগে আমাকে কষ্ট দিতে….তোমাকে আমি কষ্ট দিয়েছি কিনা এজন্য…..
-……………
– বুঝিস না কেন তুকে ছাড়া আমি থাকতে পারব না….
-কে বলছে পারবেন না..আমি চলে গেলে আপনি আরো ভালোই থাকবেন..তখন এত কষ্ট পেতে হবে না আপনাকে…..বোঝার মত কেউ থাকবে আপনার জীবনে যেটা হয়ত আমি পারব না….
-তুই বারবার আমাদের মাঝখানে আরেকজনকে কেন টেনে আনস….এই আমাকে ছাড়া তোর অন্য কাউকে ভাললেগেছে নাকি… যার জন্য তুই এভাবে বলতেছ….খুন করে ফেলব একদম এমন ভেবে থাকলে…তোর পিছনে বেশি ঘুরঘুর করছি বলে তোর সেটা সহ্য হচ্ছে না,না……আরো বেশি ঘুরব তোর সহ্য হোক আর না হোক তাতে আমার কি……..আমি দেখব আমার থেকে বেশি তোর পিছনে কে ঘুরে…..
-বাচ্চাদের মত কথা বলিয়েন না তো….
অন্য কাউকে ভাল লাগলে আপনাকে বিয়ে করতাম নাকি……
-তাহলে বল ভালবাসস আমাকে…..
-ভালনাসি না বললে মিথ্যা হবে…..বাসি কিন্তু আগের মত অনুভূতিটুকু আর হয় না….এখন অনুভূতির বদলে হাজারটা প্রশ্ন জাগে মনে…..
কথাটা বলে তাহিন নিলয়ের হাত ছেড়ে চলে আসতে ফুলি কফি নিয়ে হাজির…..
LIKE & Follow my page = #Update_কাহিনী
-আপনাগো কফি এই নেন….
-আমি ঘরেই গিয়ে খাব……
নিলয় ফুলিকে ইশারা করে…..দোলনার পাশে রাখা টেবিলটাতে রাখতে বলে….তাহিনের কাছে গিয়ে ওর হাত ধরে ফেলল….
ফুলি যেতে নিলয় তাহিনকে টেনে নিয়ে গিয়ে দোলনায় বসিয়ে দিল….
-আমার আর ভাল লাগছে না…..
-কোথায় যাবে বল….?
-কোথায় যাব মানে…?
-তুমিই তো বললে তোমার আর ভাল লাগ ছেনা….তারজন্য তো অবশ্যই কোথাও ঘুরতে যাওয়া উচিত…..
-আমি মোটেও সেটা বলনি….কি বলতে চেয়েছি সেটা আপনি ভাল করেই জানেন……
আচ্ছা ঠিক আছে কিছুক্ষণ চুপ থাকলাম…..ততক্ষণে কফিটা খেয়ে নাও….নাহলে কিন্তু…….
কফির কাপে চুমুক দিচ্ছে তাহিন…..মুগ্ধ নয়নে সেই দৃশ্যটা দেখছে যাচ্ছে নিলয়……আজ নিলয়ের সাথে সাথে আকাশটা ও যেন ওর কফির কাপে চুমুকের দৃশ্যটা দেখে খিলখিল করে হাসছে…….
নিলয় নিজের কাপে একটা চুমুক দিয়ে…তাহিনের থেকে ছো মেরে ওর মগটা নিয়ে নিজেরটা ওকে ধরিয়ে দিল…
-কফির কাপে তোমার যত রাগ জমে আছে
-আমি দিয়েছে চুমু কাপে…
-এবার যদি প্রেম ফিরে আসে..
তাহিন রাগি চোখ নিলয়ের দিকে তাকাল…. ইচ্ছে করছে কফিটা নিলয়ের মাথায় ঢেলে দিতে…আর ভাল লাগছে নিলয়ের প্যানপ্যানগুলো শুনতে…..এখন কিছু বললে আবার তর্কাতর্কি শুরু করে দিবে…তারচেয়ে চুপ থাকায় ভাল…তাহিন চুপচাপ কফিটা শেষ করে রুমে চলে গেল…….
ঘড়ির কাটা’য় ১০.৪৫মিনিট…..
ফোনটা বেজে উঠল তাহিনের…..ল’ইয়ারের নাম্বার দেখে রিসিভ করল……..কথা বলার এক পর্যায়ে নিলয় এসে ফোনটা কেড়ে নিয়ে ফ্লোরে ছুড়ে মেরে তাহিনকে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে….
-তোর সমস্যা কি……?কানে দিয়ে কথা ঢুকে নি তোর…?তোরে না বলছি ডির্বোসের কথা ভুলে ও মাথায় না আনতে…….তারপরে কেন কয়েকদিন পরে ডির্বোস পেপারটা পাঠাতে বললি…….?
তুই কি চাস আমি এমন কিছু একটা করি…যেটা তোর ভাল লাগবে না…….
-ছাড়ুন লাগছে আমার…..
-লাগুক আরো বেশি লাগুক….আমার ও লাগছে…
ছোট্ট একটা কাগজে সাইন করে দিলে সব অনুভূতি ভালবাসাগুলো শেষ হয়ে যাবে…?না কক্ষনো না বরং তোকে পাওয়া আঙ্কাকা আরো বাড়বে……
যতই তোর আমাকে অবিশ্বাস করিস না কেন তারপরে ও তুকে আমার সাথে থাকতে হবে……
নিলয় হাতটা পিছনে দিকে মুড়ে ধরাতে ব্যাথায় চোখ দিয়ে পানি পরছে তাহিনের…..হঠাৎ করে ওর চোখে পানি দেখে হুশ ফিরে পেল নিলয়….তাহিনকে ছেড়ে দিয়ে বিচলিত হয়ে পড়েছে……তাহিনের চোখ মুছে দিয়ে…..বুকের সাথে চেপে ধরে…….
-আ’ম সরি জান…..
তাহিন মূর্তির মত চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে…..নিলয় তাহিনকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে ……..নিলয়ের হুটহাট রেগে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নই… তাহিন সেটা বেশ ভাল করেই জানে…..
-ছাড়ুন আমাকে……
-হুম…
বলে নিলয় আরো শক্ত করে চেপে ধরল…….
-ছাড়ুন বলছি….আমার ব্যাথা লাগেনি….
-এবারের মত ক্ষমা করে দাও প্লিজ……
প্রমিস রাগটাকে কন্টোল করার চেষ্টা করব…
-হুম।
এবার তো ছাড়েন…
তাহিনের কথাগুলো নিলয়ের কেন যেন অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে…….
হঠাৎ করে এতটা পরিবর্তন…..নিশ্চয়ই মনে মনে অন্য কিছু ভাবছে….যাই ভেবেই থাক না কেন সুইটহার্ট বেলা শেষে তোমাকে আমারিই হতে হবে……
মনে মনে বাঁকা হাসি দিয়ে তাহিনকে ছেড়ে দিতে…মোবাইলটা বেজে উঠল নিলয়ের….আর সেই সুযোগে রুম থেকে বের হয়ে গেল তাহিন……
ওপর পাশ থেকে আফরিন বলল….
-যা বলছিস হয়ে গেছে….
-ওকে….
আফরিনের সাথে কথা বলে ওয়াশরুম ঢুকে গোসল করে বের হয়ে এল নিলয়…..রেড়ি হয়ে রুম থেকে হয়ে পাশে রুমে চলে গেল….নিলয় বেশ ভাল করেই জানে তাহিন এখন এই রুমে থাকবে না হয় রান্নাঘরে….
বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিলয়কে নিয়ে ভেবে যাচ্ছে তাহিন….নিলয়ের চোখের মুখে প্রতিবারই অনুতপ্ত সুরটা খুঁজে পেলে ও হাতটা ধরার সাহস হয়নি …একবার হোঁচট খেয়েছে যদি আরার ও হোঁচট খেতে হয়…কিন্তু মানুষ জীবনে চলার অনেক হোঁচট খাই…..হোঁচট খেয়ে ও পড়ে যাওয়ার ভয় থাকলে যে একটা সম্পর্কে টেনে নেওয়া যায় না…আর প্রতিবার যে হোঁচট খেয়ে পরে যাবে এমন তো নাও হতে পারে…..এবার না হয়…
ভাবনা শেষ হতে না হতে নিলয়ের গলার আওয়াজ শুনে ঘুরে তাকাল তাহিন….
-সুইটহার্ট আমার ঘড়িটা পাচ্ছি না প্লিজ একটু খুঁজে দাও তো…..
তাহিন ভ্রু কুচকে চোখ বড় করতে….
-আরে সত্যি তো পাচ্ছি না প্লিজ একটু রুমে আসো না…..
-আপনি রেখে আপনি খুঁজে পাচ্ছেন না তাহলে আমি কি করে খুঁজে পাব…..?
-অনেক সময় নিজে খুঁজে না পেলে সেটা অন্যজন এসে ঠিকিই খুঁজে পাই…
বলেই তাহিনের হাত ধরে রুমে নিয়ে গেল….
তাহিন ড্রয়ারটা খুলা মাত্র নিলয়ের ঘড়িটা দেখে রাগি চোখে নিলয়ের দিকে তাকাতে….
-এতক্ষণ আমি খুঁজে পেলাম না…আর দেখো তুমি আসামাত্র পেয়ে গেলে…সবকিছুর জন্য তোমাকে আমার প্রয়োজন….
নাও পরিয়ে দাও এবার….
বলেই হাতটা বাড়িয়ে দিল তাহিনের দিকে….
-আপনার কি হাত নেই……
নিজে পড়ে নেই….
ঘড়িটা নিলয়ের হাতে দিয়ে।।চলে যেতে…
নিলয় পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে……
-বলেছিলাম না আমি সুস্থ হলে হাতটা অকেজো হয়ে যাবে আর এখন থেকে তাই হবে…এখন তো শুধুমাত্র ঘড়িটায় পরিয়ে দিতে বললাম….এরপর থেকে তো সব করতে হবে….
-আল্লাহ কি আপনার হাতদুটো অকেজো করে ফেলে রাখার জন্য দিয়েছে…?
-অবশ্যই না…..তার ব্যাবহার তুমি সময়ে সময়ে ঠিকিই দেখতে পারবে……
-দেখার প্রয়োজন নেই ছাড়ুন তো….
-আমার কিন্তু সমস্যা নেই তোমাকে সারাদিন তোমাকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে….এবার কি করবে তুমি ডিসাইড কর…?
ঘড়িটা পরিয়ে দিল তাহিন….কত ঢং ঢংয়ের যেন আর শেষ নেই……..না হলে তো আবার যা বলে তাই করে ছাড়বে…..
-না পারালে ভাল হতো এভাবে জড়িয়ে ধরে রাখা যেত…..
-হুম বেশি বেশি ছাড়েন এবার….
তাহিনকে ঘুরিয়ে কপালে একটা চুমু দিয়ে
বের হয়ে গেল নিলয়……
অবাক দৃষ্টিতে দরজার বাইরে তাকিয়ে আছে তাহিন…..এতগুলো পিচ্চি পিচ্চি বাচ্চাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে…..আর সেই চোখের পলকে পিচ্চিগুলে পিছনে থেকে একটা লাল গোলাপ বের করে দৌড়ে এসে সবাই একসাথে চিৎকার করে #সরি বলে… গোলাপগুলো একে একে তাহিনের হাতে দিতে লাগল….ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে গেল তাহিন….কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না….এসব কি নিলয় করেছে কিন্তু একটু আগেই তো নিলয় বাসা থেকে বের হয়ে গেছে তাহলে……..?
তখনি একটা পিচ্চি তাহিনের হাতে একটা চিরকুট দিতে…. ঠোঁটে কোণে হাসি ফুঁটে উঠল তাহিনের চিরকুটা পড়ে….
-সরি সুইটহার্ট……
আমি না থাকলে তুমি বোর হবে যাবে সেটা আমি ভাল করেই জানিই…..তাই ওদের কে নিয়ে আসলাম তোমাকে বিরক্ত করার জন্য……যাতে আমার অনুপস্থিতিটা টের না পাও…..
পিচ্চিদের বেশ ভাল লাগে তাহিনের…তাদের মধ্যে এতগুলা কিউট কিউট বাচ্চা ভাল না লেগে ও উপায় নেই….সারাদিন পিচ্চিগুলোর সাথে হৈ হুল্লোড় কেটে গেল তাহিনের দিনটা….বিকেল হতে সবাই বিদায় নিয়ে চলে গেল…পিচ্চিগুলোকে খাইয়ে দেওয়া থেকে শুরু করেছিল তাহিন..আগে থেকে নিলয় সবার জন্য খাবার অর্ডার করে রেখেছিল…..দুপুরের মধ্য সেগুলা ও দিয়ে যায়…….বেশ ভালই লাগল তাহিনের…. নিলয় যে এমন একটা কাজ করবে সেটা তাহিন ভাবতেই পারেনি..
অফিস থেকে ফিরে রুমে ঢুকতে তাহিনকে বিছানার শুয়ে থাকতে দেখে ঘাবরে গেল নিলয়….সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করেছিল এজন্য আবার জ্বর আসে নি তো…তাহিনের গায়ে হাত দিয়ে দেখতে চোখ খুলে তাকাল তাহিন……
-জ্বর তো নেই…..তাহলে কি খুব টার্য়াড লাগছে….?
-না তো….
-তাহলে শুয়ে আছো যে…?
-এমনিতে…
-আচ্ছা….
নিলয় ফ্রেশ হয়ে…একটু পর কফি বানিয়ে নিয়ে এসে তাহিনের হাতে দিয়ে বলল….
-নাও খেয়ে নাও….
ভাল লাগবে….
-আমি ঠিক আছি….তার প্রয়োজন নেই….
নিলয় তাহিনের কপালে একটা আঙুল হাঁটিয়ে বলল…
-এই যে তোমার কপালে একটা ক্লান্তির চাপ দেখা যাচ্ছে……সেটাই বলে দিচ্ছে তুমি ঠিক আছো কি নেই…
-বলেছে আপনাকে……
-বলতে হয়না…….তোমার চিন্তার কারণটায় যে আমি…….
তাহিন নিলয়ের হাত থেকে কফিটা নিয়ে এক চুমুক দিয়ে বলল…
-এবার আছে কিনা দেখুন তো…
নিলয় অবাক হয়ে তাহিনের দিকে চেয়ে আছে…..
-কফিটা কি আপনিই বানিয়েছেন..?
-না আমার হাত…..
আর সেটা খুব বাজে বানিয়েছেন নিশ্চয়?
-কেন আপনি খেয়ে দেখেন নি…..নিশ্চয় দেখেছেন এই অর্ধেক কফি গুলোয় বলে দিচ্ছে আপনি এই কাপে কতবার চুমুক দিয়ছেন….
নিলয় মুচকি হেসে…..
-হুম কারণ তোমার হাতের কফিটা আমার ছিল…আমি তো জানি আমি কফিটা খুব ভাল বানায়… কিন্তু তোমার চুমুক দেওয়া কফির স্বাদটা আলাদা যা সব কিছুকে হার মানায় আর এটা আমি কখনো মিস করতে চাই না….
বলেই তাহিনের হাত থেকে কাপটা নিয়ে নিলয়ের হাতেরটা তাহিনকে ধরিয়ে দিল…..
-তুমি তো জানতে এই কফিতে আমি চুমুক দিয়েছে তবু ও খেলে যে….
-তো কি করব আপনার মতো রাগ দেখিয়ে ভেঙে ফেলে দিব….
-প্লিজ বাদ দাও না এসব কথা….
-…………………………..
-এখন কি ভাল লাগছে….?
-হুম
-তাহলে চল….
-কোথায়?
-যেখানে দুচোখ নিয়ে যাবে….
-…..……………………..…
-রেডি হওয়ার আগে ওয়ারড্রবটা একটু খুলে দেখ….
-আমি কি বলেছি যাব…..
তাহলে রেডি হওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠেনা….
-আমি রেড়ি করে কোলে করে নিয়ে গেলে তখন যাবে নিশ্চয়…..
রেড়ি হয়ে রুমে ঢুকে আয়নার দিকে তাকাতে চোখ আটকে গেল নিলয়ের…..সোনালি পাড়ের উপর স্টোনের কাজ করা কালো শাড়ীতে তার অপ্সরীকে দেখে….হাজার দোকান ঘুরে এই শাড়ীটা চুজ করে নিয়ে এসেছে নিলয় তার মায়বতীর জন্য…এই জন্য বোধয় তার মায়াবতীকে আরো বেশি মায়াবী লাগছে…….অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে নিলয়….চোখ যেন সরাতেই পারছেনা……এমন হলে তো যাওয়ায় হবে না…..তাহিন রেডিই আছে নিলয় আর কিছু না বলে তাহিনকে নিয়ে বের হয়ে গেল……..
খোলা আকাশের নিচে প্রিয়জনের হাতের উপর হাত রেখে রিক্সা করে ঘুরে বেড়ানোর একটা অন্যরকম অনুভূতি আছে সেটা জানা ছিল না নিলয়ের……
তাহিনের ডায়রিতে এমন অনেক অনুভূতির কথা লেখা আছে সেটা না পরলে আজ এমন অনুভূতিটায় যেন পেত না নিলয়….. নিলয় তাহিনকে জড়িয়ে ধরতে গেলে তাহিন সেটা খেয়াল করে কনু দিয়ে নিলয়ের পেটে আস্তে করে আঘাত করল…নিলয় আহ করে শব্দ করে পেটে উপর হাত দিয়ে বলল…
-এটা কি করলে সুইটহার্ট ….?
-আপনি কি করতে চাচ্ছিলেন আগে সেটা বলেন…..?
-আরে আমি তো তোমার কাঁধে হাত রেখে একটু জড়িয়ে ধরতে চেয়েছিলাম….
-এটা জড়িয়ে ধরার জায়গা নাকি…..?
-তা নয়তো কি….রিক্সার মধ্যে মানুষ আজকাল লিপ কিস করতে পারলে আমি কেন জড়িয়ে ধরতে পারব না….
-এক্ষুনি নামুন বলছি না হলে আপনাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিব….অসভ্য লোক কোথাকার…..
-ডিরেক্ট না বললে তুমি তো বুঝতে না আবার এজন্য ….
-বোঝার দরকার ও নেই……
আসলেই আপনি লোকটায় খারাপ…রিক্সার মধ্যে মানুষ কি করে সেটা দেখে বেড়ান তাহলে….
-আরে এসব দেখতে হয় নাকি…তাছাড়া আমার কোনো শখ নেই এসব দেখার বুঝেছ…..
চুপচাপ বসে আছে তাহিন…..বেশ কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি পর বড় একটা রেস্টুরেন্ট নিয়ে গেল তাহিনকে……
তাহিনকে চুপ করে থাকতে দেখে নিলয় তাহিনের হাত ধরে….
-সত্যি সুইটহার্ট আমি ইচ্ছে করে তাকায় নি……
-তো তাকিয়ে থাকতেন বারন করেছে কে?
-প্রমিস এবার থেকে তোমাকে ছাড়া আর কাউকে দেখবনা….প্রয়োজন হলে চোখে কালো চশমা দিয়ে থাকব….
-আপনার মনে হয় আমি রাগ করেছি…. আর এটা নিয়ে অযতা রাগ করার কি আছে…
-সত্যি তো….
-হুম।।।
তাহিনের পছন্দমত খাবার অর্ডার করল নিলয়…নিলয় ওর পছন্দ অপছন্দ নিয়ে কখনো মাথা গামায় নি….হঠাৎ সবকিছু ওর পছন্দ মাফিক হওয়াতে বেশ অবাক হচ্ছে তাহিন….যদি ও সেটা এখনো প্রকাশ হতে দিচ্ছে না নিলয়ের সামনে……
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন…..
Wait for the next part
#LIKE & Follow my page = #Update_কাহিনী