#স্বামী(সিজন—২)
#প্রথম_পর্ব
#সেলিনা_আক্তার_শাহারা
__________________________
“-বাসর রাতেই স্বামী মারা গেলে একটা মেয়ে বিধবা নয় বরং সে অপয়া হয়। ঠিক তেমনই অপয়া হয়েছে আজ তিতিল।
–না জেনে শুনে এক মাদক ব্যাবসাহির হাতে তুলে দিয়েছে তিতিল কে তার আপন বাবা নামক ব্যাবসায়িটা। টাকার মুখ দেখে ওর বাবা ফিদা।
” ধুম ধাম করে বিয়ে দিয়ে শশুর বাড়িতে প্রথম রাত তিতিলের।
তার স্বামী এক মাদক ব্যাবসায়ি তা অজানাই তিতিলের কাছে।
-চোখে হাজার সপ্ন। স্বামীর ঘরে এসে সে ভাবনায় মগ্ন আজ থেকে জীবন পাল্টে গেলো।সব গুছিয়ে নেবে সে।এই সংসারের গুনবতী গৃহীনি হয়ে দেখাবো।
“রাত তো বহু হল উনিটা এলো না এখনও!!!
বাসর রাতে কেও রাত ভর বাহিরে থাকে?
-ভাবতেই দরজাটা ধরম করে কেও খুলে দিয়েছে।আচমকা কে এলো তিতিল ভয়ে কাপটি মেরে বসেছে।মাথা উচু করে দেখার সোজগ টা হল না।কেও তিতিলের চুলের মুঠিটা ধরে ঘর থেকে টেনে বের করে দরজার বাহিরে ছুরে ফেলেছে।
মাথাটা উচু করে দেখতে পেলো তিতিল মানুষের ভির।
সবাই কি দেখতে এসেছে? এবার এক চিৎকার তার কানে পৌছলো। এই অপয়া মেয়েটা আসার সাথে সাথে আমার ছেলেটা মরল। একটু আসছি বলে বেরিয়েছিলো আর ফিরল না আমর ছেলেটা।
অপয়া মুখ পুরি।তর মরন হল না কেন! বেছে বেছে আমার ছেলে টা কেই খেতে হল??
” সব তিতিলের মাথার উপর দিয়েই গেলো।
সেদিন বহু লান্ছিত হয়ে বাপের বাড়ি ফিরে এসেছিলো তিতিল।মাতাল বাপ টার কাছেও শান্তি পেলো না।
মা তো আগেই দুনিয়া ছেরেছে। মা না মরে যদি এই বাপ টা মরত।তাহলে ভালো হত। মায়ের চিকিৎসা না করিয়ে তিতিলের বাবা সেই টাকায় মদ গিলেছে।
আর তার পর মা পৃথিবী ছারা। তিতিল মা হারা।
“-সেদিনের ঘটনায় তিতিলের বুক আজও কাঁপে।
বাবা এক মাদক ব্যাবসাহির কাছে আমায় বিয়ে দিয়েছিলো!!
বিয়ের রাতেই স্বামী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়, বৌ ঘরে রেখে নিজ আড্ডার উদ্দেশ্যে রৌনা দিয়েছিলো সেখানেই তাকে…….. ।কি কপাল তিতিলের। সে দিন শশুর বাড়ির সব লোকেরা যা নয় তা অপবাদ দিয়ে সেই বাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করেছিলো।
“-যাই ছিলো স্বামীর বাড়িকে আকরেই ধরতে চেয়েছিলো।তা তো হল না।আবার সেই নরকে হাজির তিতিল……. তবে লাশ টা তিতিলের দেখার কপাল হয়নি।দেকতে দেয়নি আদনান এর মা। আদনান নাম টার সাথেই নিজের নাম জুরতে গিয়ে মাঝ পথে ছিরে গেলো ডেই ধাগা। দেখতে এসেছিলো সময় মুখ দেখে বুঝতেই পারেনি এটা একটা অপরাধীর মুখ।
——–
বছর পার না হতেই তিতিলের আরেক জায়গায় বিয়ে ঠিক।
-এবার আর সপ্ন মনে আকছে না।
কারন মা হারা তার পর স্বামী হারা। সে অপয়া সবাই বলতো।তবে এখন তিতিল ও ভাবতে শুরু করল সত্যি সে অপয়া।
এবার ঐ ঘরে গেলে কাকে গিলে খাবে?
-এবার এত টা ধুম ধাম নয়।তিতিলের বাবাকে ওরা তেমন টাকা না দিলেও দেবে বলেছে।
আচ্ছা তিতিলের চেহারায় এমন কি আছে!!যার জন্য ওর বাবাকে নয় বরং উল্টো ছেলে পক্ষ হয়ে ওরা টাকা দেয়??
প্রথম স্বামীকে তিতিল দেখেছিলো একবার।দেখতে এসেছে সময়।
মাদক ব্যাবসাহি হলে কি নারি নেশা কি থাকবে না?
মাতাল বাপ কে রাজি করিয়ে এই রুপবতীকে ঘরে তুলতে পারলেই হয়।
সেটা না হয় বুঝলাম।এবার কি দেশের টপ সন্ত্রাসীর হাতে দেবে নাকি!!
– এক বার যদি তিতিলের হবু স্বামী টার দেখা পেতো তাহলে জিজ্ঞাসা করত সে।কেন এই দয়া.. ।
বাবা এবার কোন গুহায় বন্দি করবে আমায়…..
–বিয়ের দিন তেমন লোক কান হল না। না সামনা সামনি বসিয়েছে তাদের।
এক রুমে ছেলে অন্য রুমে মেয়ে রেখে বিয়ের কাজ শেষ।
তার পর আর ছেলের পাত্তা নেই। একাই নাকি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেছে।
তিতিলের দূর সম্পর্কের ফুপি ব্যাপার টা ভালো ভাবে নিলো না।ভাই এবার মেয়েটার সাথে কি করতে চলছে।
যাই হক তিতিলের সদ্য স্বামীর দুই বোন তিতিলের কাছে হাজির।ভাবি ভাবি তো করে যাচ্ছে তবে ভাইয়ের খবর নেই।
“-ভাবি তুমি আমাদের রিদয় ভাইকে দেখেছো??
ওহহ দেকবে কি করে ভাইটা যে কি- একটি বার দেখাও দিলো না তোমায়।
-যাক নাম টা জানা গেলো রিদয়…..
” রিদয়ের আরেক বোন এবার বলে উঠলো।
আহ জুই থাম না।ভাই হয়তো রাতে একবারে দেখতে চাইছে তাই দেখা দেয়নি।
—ভাবি আমি ফুল-আর ওর নাম জুই।আমাদের মা নেই ভাবি আমাদের মা হয়ে থাকবে আমাদের সাথে?….
ফুলের কথায় তিতিলের বুকটা কাপনি দিয়েছে।মা হিনা কত কষ্টের তা জানা তিতিলের.
তিতিল নিজ ঘুমটা টা খুলে দুজনকে দেখে নিলো।ভারি মিষ্টি মেয়ে। তবে তিতিলের বহু ছোট… আর কথা কত পাকা পাকা জেনো বুড়ি দাদী…
ওমা চেহারা তো এক রকম কেন???
-তিতিল কিছু বলার আগে জুই বলে দিলো তিতিলের মনে থাকা পশ্নের উওর।
“—জমজ ভাবি জমজ।
-তোমাদের নাম দুটো বেশ সুন্দর..
জুই ফুল…। শব্দ দুটো হলেও আলাদা নয় কেও কারো থেকে।
“-রিদয়ের জেঠি আর তার বাবা তিতিল কে সসন্মানের সাথে ঘরে তুলেছে।
মধ্যবিও ফ্যামেলি বুঝা যাচ্ছে।
লম্বা করে ঘর টা ৫ টা রুম সামনে বারান্দা। তবে ছাদ নয় টিনের চাল।বেশ ভালো লাগছে বাড়িতে এসে। একটু বড় উঠান পর সামনা সামনি আরেক টা এমন বাড়ি। ওটা কার???
–তিন নম্বর রুম টায় তিতিল কে রাখা হয়েছে তার মানে এটাই তার থাকার ঘর।
“-জুই ফুল অনেক ক্ষন তিতিলের আচল তলে বসে ছিলো – এর মধ্যে বাড়িতে কে কে আছে সব জানা হল।
পাকা বুড়ি দুটো ১০ ম শ্রেনীতে এবার।
—“।রাত হয়েছে আর ঘুমও পাচ্ছে। বাড়িতে মহিলা বলতে রিদয়ের জেঠিমা ছারা কেও নেই।
-জেঠু জেঠিমা – তাদের এক ছেলে আছে। বাবা দুই বোন এই রিদয়ের পরিবার।
” জুই আর ফুল নিজ রুমে চলে গেছে।পাশের ঘর টা তাদের।এর পরের টা তিতিলের শশুরের।
“তিতিলের চোখও নিভু নিভু হয়ে আসছে। ঘর টা হেটে দেখে নিলো।
ওর স্বামীর একটা ছবি অবদি নেই?? ইস থাকলে ভালো হত। দেখতে পেতাম।
খাটে হেলান দিয়ে এবার চোখ বন্ধ করে নিয়েছে।ঘুৃমের সাথে আর পেরে উঠলো না।
দরজাটা খুলা রেখেই ঘুমের রাজ্যে।
————-
“-সকালে চোখ খুলতেই তিতিল নিজেকে বালিশে পেলো।এটা কি করে হয়?আমি তো ওখানে শুয়ে….
এবার দরজায় কেও টক টক করছে। বাহিরে কেও হয়তো দাড়িয়ে আছে…
কথাটা ভাবতেই এবার চোখ অন্য দিকে ঘুরল…
তিতিলের আচমকা মুখ থেকে বেরিয়ে এলো.আল্লাহ এটা..কি????।
” (চলব??)