#স্বামী (সিজন-২)❤️
#পর্ব -১৭
#সেলিনা_আক্তার_শাহারা
____________________________
“—-
– এটা কি হয়ে গেলো?? কেন উনি এমনটা করল।তিতিলের ভিষন কাঁন্না পাচ্ছে।সকালে তিতিল রিদয়ের বুকে নিজেকে বিবস্ত্র পেয়ে বড্ড অপরাধি বুধ করল।
উনার তো হুস ছিলোনা আমার তো ছিলো।তাও কেন দূরে সরতে পারলাম না।
এটা একদম ঠিক হয়নি।আমার কাছে সব সময় এমন জিনিসই আসে যা কখনোই আমার হবে না।রিদয়ও ঠিক তেমন।আরেকজনের ভালোবাসা আমি কেড়ে নিলাম না তো।
রিদয়ের সাথে তিতিল পেরে উঠেনি। রিদয়ের চোখে ছিলো তিতিলকে কাছে পাওয়ার এক ত্রিব্বতা।যা ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আরো বেরে গেছে।তিতিলের ঠোটের পরশে মাখিয়ে নিয়েছে নিজের মন কে…
এমন টা নয় তিতিল বাধা দেয়নি বাধা তো দিয়েছে তবে কাজ হয়নি।তিতিলের এত কথা তখন রিদয়ের ভালো লাগছিলো না।তাই মুখ বন্ধ করার অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করেছে রিদয়।
“-নিজের শাড়িটা এবার খুজা শুরু করল।কালকে রিদয় ওটা কোথায় ছুরে ফেললো?
ঐতো দরজার পাশেই পরে রয়েছে। সাথে রিদয়ের শার্টটাও….
বেভর ঘুমে রিদয়,নেশাটা এখনও কাটেনি কি ঘুম কানের কাছে ঢোল কাসা বাজালেও মনে হয় উঠবেনা।
“- বিছানার পাশে রিদয়ের শার্ট টা রেখে নিজের শাড়িটা শরিলে জরিয়ে রিদয়ের রুম ছেরে নিজের রুমে ভু ভু করে ছুটেছে।
ব্যাপারটা সবার থেকেই অজানা তিতিল কাল সারা রাত রিদয়ের ঘরে ছিলো।তবে একজনের নজরে পরেছে।সে ভালো করেই দেখতে পারছে তিতিলকে রিদয়ের রুম থেকে বের হয়ে নিজের ঘরে ঢুকতে।
” কোন শব্দ না করে সেই ব্যাক্তিটিও অজু করে তার ঘরে ফিরে গেলো।
——–
“বাথরুমে এসে তিতিলের কাঁন্নার বেগ আরো বেরে গেছে।
কেন এমন হয় আমার সাথে আমায় কোন পাপে গিলছে!!!
রাতের ব্যাপারটা উনি কেমন ভাবে নিবে জানা নেই।যদি আমার কাছে জানতে চায়,আমি কেন উনার সাথে সায় দিলাম তখন?
কোন মুখে উনার সামনে গিয়ে দাড়াবো??
“- বেশ অনেক ক্ষন পর বাথরুম থেকে ফ্রেস হয়ে বের হয়েছে।চোখ ফুলে গেছে।গাল গুলো লাল হয়ে রয়েছে।তিতিল কাঁন্না করলে ওর গাল লাল বর্ন হয়ে যায়।
এটা তো ছোট বেলা থেকেই এমনটা হয়।
“- বিছানায় মাথাটা হেলিয়ে দিয়েছে তিতিল।বড্ড ক্লান্ত লাগছে আর ঘুমও পাচ্ছে।রাতে ঘুম হয়নি বলে এমনটা হচ্ছে তা তো জানে, এখন ঘুমিয়ে গেলে নাস্তা বানাতে দেরি হবে।আর দেরি হলে ওরা খেয়ে বের হবে কখন?
মাথাটা বেশ ঝিম ঝিম করছে কিছুক্ষন বালিশে মাথাটা রেখে শুয়া যাক।তার পর না হয় রান্না ঘরের দিকে যাওয়া যাবে।
“———
-খাবার টেবিলে বসে রয়েছে সকলে। সকাল ৮ টা বাজছে। এখনো নাস্তা টেবিলে নেই।এটা বেশ নিরাশা জনক
জবে থেকে তিতিল এসেছে-৮ টার আগেই নাস্তা টেবিলে রেখে সকলকে ডেকে এনেছে।
তবে আজ না তার দেখা না নাস্তা।
এই রিদয়টার ও এখনও ঘুমও ভাংঙলো না কেন? থানায় যাবো কখন?? দিন দিন অলস হচ্ছে মনে হয়।
” বাহ নাস্তা চলে এসেছে।সবার নজর আজকে তিতিল কি রান্না করল!ওর রান্না মানে জিভে জল আনার মেশিন।
ওমা নাস্তা আনার মানুষটা চেন্চ কেন? তিতিল কোথায়!
-রোকেয়া বেগম সকলের দিকে তাকিয়ে মুখটা গুমরা করে নিলো।
তিতিল আসার আগে আমার রান্নাই চলতো এখানে ঐ মেয়ে এসেছে কয়দিন। আর আজ আমি নাস্তা বানানোতে সবার মুখ কালো কেন???
“না না ভাবি আসলে তিতিল তো সব একাই করে।ও আসার পর তো তুমি রান্না ঘরে আসোনা তাই ভাবলাম মেয়েটা কোথায় আজ। তোমায় রান্না ঘরে ঢুকতে দিলো কেমন করে?ও তো ওর রান্না ঘরে কাউকে ঢুকতে দেয় না।
– ও থাকলে তো বাধা দিবে।
” থাকলে মানে তিতিল কোথায়?
– এখনও শুয়ে আছে, তাই আমিই নাস্তাটা বানিয়ে ফেললাম।
“না না এই মেয়ে এত বেলা অবদি ঘুমাবে না কিছুতেই না।
শরিল খারাপ নয় তো??
একবার ডাকলে তো পারতে!!!
– আহা তুমি বড্ড প্রশ্ন করো আরিফ।তুমি খেয়ে তোমার কাজে যাও।এতটা দিন গাধার মত সংসারে ঘাটছে,একটা দিন না হয় দেরিতেই উঠলো।তা নিয়ে এত প্রশ্ন!
জেঠিমার ঝারিতে জুই ফুল কোন শব্দ করার সাহস পেলো না।বাবাকেই যা শাষাচ্ছে আমাদের তো শেষই করে দেবে।
চুপ চাপ নিজেদের প্লেটটা বারিয়ে দিয়েছে খাবারের জন্যে।
–
মেয়ে মানুষ মানেই বোকা প্রানী,
আর বোকাদের সাথে তর্ক করা মুর্খের কর্ম।তুই খা আরিফ। এই মহিলা সোজা কথা বলতে শিখেনি।
শরিফ রোকেয়া বেগম কে বেঙো করেই কথাটা বলেছে।
তুমি আমায় বোকা বললে??
– তা নয় কি। এখানে তো তিতিল কেন উঠলোনাতে প্রশ্ন এই জন্যে করা হচ্ছে যে মেয়েটার শরিল অসুস্থ কিনা।বা ডাক্তার ডাকা লাগবে কিনা।
আর তুমি সকাল বেলা আরিফকে ঝারা শুরু করলে।
—ধুর মরা তোমরাও না।
রোকেয়া বেগম চিন্তায় দিশাহারা।। তিতিল এত সকালে রিদয়ের ঘর থেকে কেন বের হল।
অন্য রকম গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।তাই একটু বিচলিত আর সবার কথার উল্টো জবাব দিচ্ছে।
-” ভাইয়া দেখো এই হতছারা ওর চাকরিটা হারাবে।নবাবের পুত্র তো নয় যে রাজ ভান্ডার থেকে সর্ণ মোদ্রা ভাংঙিয়ে বসে বসে খাবে।
যাহ তুই আবার রিদয়ের পিছনে পরলি কেন। খেতে বসেছিস খাসনা।
রোকেয়া বেগম নিজের ঘরে চলে গেছেন। শরিফের কথায় বড্ড রাগ হয়েছে।
এখন আরিফ রিদয়ের এই পাগলা ঘুম দেখে হয়রান।
বেলা কতটা হল ছেলেটা সব ভুলে…..
—–” ১২ টা বাজে??
হায় হায় পাঁচ মিনিট বলে তো পুরো সকাল পার করে দুপুর গরিয়ে এলো। এত ঘুৃম চোখের কোন কোনে ছিলো।
নাস্তাও হয়তো কারো করা হয়নি।বাবা জেঠু- আর বাকি সবাইও কি না খাওয়া এখন অবদি।
জলদি জলদি উঠে তিতিল রান্না ঘরে পা দিয়েছে।
“- গিয়ে কিছুটা শান্ত হয়েছে।জেঠিমা দুপুরের রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছে।তার মানে নাস্তাটা উনিই করেছে। যাক ভালোই হল কেউ না খেয়ে বার হয়নি।
জেঠিমা আসল আমি ঘুম..৷
” কথা বলার সোজগটা তিতিলকে দেয়নি রোকেয়া বেগম।
টেবিলে খাবার রাখা আছে হাত মুখ ধুয়ে খেয়ে নাও।
–”
মাথাটা কেমন পন পন করছে।সবাই তো দেখছি যে যার কাজে চলে গেছে। আমি না উঠায় বাবা রাগ করেনিতো?? আর কেউ ডাকলোই না আমায়।
ভাবতে ভাবতে রাতের কথা স্মরন হল। উনি কি চলে গেছে??
বেশ রাগ হয়েছে হয়তো।আমায় যদি এসব নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করে তখন???
_________
“-ফোনটা যে বেজেই চলছে।তা এত ক্ষন রিদয়ের কানে না গেলেও এবার কানে পৌছাচ্ছে।
হাই তুলে ফোনটা হাতে নিতেই চোখ কপালে।দুপুর হয়ে গেছে?
এত গুলো কল থানা থেকে।
আর আমি এখানে কখন এলাম??? আমিতো সেতুর ঐখানে খাবার খাচ্ছিলাম।
“- চাদর থেকে নিজেকে বার করে আরো অবাক।একি আমার শার্ট কে খুললো??
আহহহহহ মাথাটা এত যন্ত্রনা করছে কেন?
আমার এই হাল কি করে? বাড়ি এলাম কি করে।কিছুই মাথায় ঢুকছে না।
আমিতো কাল সেতুর বেড রুমে ছিলাম আর তার পর….
এতটা না ভেবে ফোনটা তুলা যাক। ওর স্যারের ফোন। আচ্ছা শাষানি খেয়েছে।এই মুহুর্ত্বে আগে চাকরি বাঁচানো জরুরি।নাকি ভাবা।
“ফ্রেস হয়ে পুলিশের পোষাক টা পরে নিয়েছে রিদয়। আজ চাকরিটা থাকলেই হয়।
পথ চলতে চলতে এবার বারান্দায় রিদয়। তিতিলের দিকে চোখ পরতেই দুজন ঘাবরে গেলো..
উনি এখনও বাড়িতে??
এখন যদি আমায় কোন প্রশ্ন করে??
ভিরু গলায় তিতিলের পানে চেয়ে রিদয় এক কাপ চা চাইলো।!!! এক কাপ চা হবে?
তিতিল ঘেমে একাকার। হাত পা কাঁপছে।চেয়ার থেকে উঠে কেমন কাপঁনি শরিল সহ হাটছে। বেশ অস্বাভাবিক আচরন।যা রিদয়কে ভাবাচ্ছে এ এমন করছে কেন? চা চেয়েছি নাকি পিচাসের মত রক্ত চাইছি???
#স্বামী (সিজন-২)❤️
#পর্ব -১৮
#সেলিনা_আক্তার_শাহারা
_________________________
“- রিদয় তিতিলের এই আচরনে বেশ বিচলিত।ও এমন করছে কেন? আমি কি ভূত নাকি দেখে ভয় পেয়ে গেলো।
– চা টা আর খাওয়া হল না। তার তারা আছে তাই কোন শব্দ ছারা চলে গেলো। তিতিল একটু হাফ ছেরে বাঁচলো। এখন না হয় বাঁচলো কিন্তু পরে কি হবে!!
———
“- সারা দিন অফিসে খেটে আরিফ রহমান বাড়ি এসেছে।এসে দুইটা কারনে সে চিন্তিত।এক তিতিলের কি হল আজ।এখনও চা নিয়ে এলো না, এলাম তো সেই কখন.
দুই হল জুই ফুল এখনও বাড়ি আসেনি বান্ধবির বাড়িতে নাকি আজ থাকবে।এটা একদম বাজে অভ্যাস ওরা মেয়ে আর বড় হচ্ছে অন্যের বাড়িতে থাকা ঠিক নয়। দিন কাল বড্ড খারাপ।আরিফ রহমানকে ফুল ফোন দিয়ে পারমিশন নিয়েছে।তবে বেশ জেদ ধরে ছিলো তাই রাজি হওয়া।
“— ওমা ভাবি চা টাও তুমি আনলে! তিতিলের কি শরিল খারাপ নাকি??
— শাড়ির আঁচলে হাতটা মুছতে মুছতে রোকেয়া বেগম আরিফ রহমানের পাশে বসেছে।
না তিতিল বাড়ি নেই।
” আরিফ সবে মাএ চায়ে চুমুক দিয়েছে,শরিলের ক্লান্তি দূর করতে তার চা চাই।
তবে তার ভাবির কথায় ভিষম খেলো আরিফ। চোখ গুলো সরু করে একটু জোরেই চেচিয়ে উঠলো।
—–বাড়ি নেই মানে?কোথায় তিতিল।
“- আহ আরিফ! বিরক্তকর মুখের হাপ ভাব রোকেয়া বেগমের’ওর চেচানিতে আরো বিরক্ত হল।আরিফের পাশ থেকে উঠে রোকেয়াও মেজাজ গরম করা উওর দিলো।
তোমরা দুই ভাই শান্তি পূর্ন ভাবে কথা বলতে পারো না নাকি!
এমন ভাবে জিজ্ঞাসা করলে জেনো তিতিল ৫ বছরের ছোট্ট মেয়ে।
” sry ভাবি আসলে আমার এমন আচরন ঠিক হয়নি।আসলে তিতিল এখানে তেমন কিছুই চেনেনা।জায়গাটা বেশ নতুন ওর জন্যে। আর জুই ফুলও বাড়ি নেই, এখন আবার তিতিল তাই হঠাৎ মাথাটা বিগরে গেলো।
“-হুম হয়েছে হয়েছে।তোমাদের দুই ভাইয়ের মাথা সব সময় বিগরেই থাকে।
জুই ফুল নাকি ওদের বান্ধবির বাড়িতে থাকবে তুমি নাকি অনুমতি দিয়েছো,তিতিল জানতে পেরে আমার থেকে ওদের বান্ধবির বাড়ির ঠিকানা নিয়ে ওদের আনতে গেছে।
বড্ড খেপে বের হয়েছে।
তুমি কেন পারমিশন দিলে ঐ কারনে।
–বাপরে বাপ আমি তো বাদ্ধ হয়েছিলাম তো তাই।তবে যাই হক ভালোই হল তিতিলের ভয়ে যদি বাড়ি চলে আসে।
তবে ভাবি একা একা জেতে পারবে তো????
——–
“-
” মুখটা শুকিয়ে রয়েছে রিদয়ের।আজ বড্ড কথা শুনতে হয়েছে।এত আরাম করার শখ তো পুলিশের চাকরিতে জোগ দিয়েছো কেন?
কোন দায়িত্ব্য বোধ কিছুই নেই…
এমন আরো বহু কথা আর কৈফিয়ত দিয়ে এসেছে থানায়। থানায় যদি অফিসারই না থাকে তাহলে সাধারন মানুষ কার কাছে সাহাজ্য চাইবে???
সালাউদ্দিন থানায় রিদয়ের নেশার বিষয় টা চেপে গেছে।নয়তো আজ তিন মাসের ও বেশি সময়ের জন্যে সাসপেন্ড হতে পারতো।
তবে রিদয়কে জিজ্ঞাসা করেছে ওর এমন হাল কেন হয়েছিলো।
— স্যার আপনায় আমরা সবাই আইডিয়াল হিসাবে মান্য করি।তবে গত কাল রাতে আপনায় দেখে মনে বড্ড কষ্ট পেয়েছি।
রিদয় সালাউদ্দিনের দিকে হাবার মতই তাকিয়ে।কারন ওর কথার ধরন সে বুঝতে পারল না।আর না জিজ্ঞাসা করল। এখন মোড নেই কথা বলার।
নিজেরই যখন খবর রাখতে পারে না , তো জনগনের কি খুজ নেবে।
“-শত চিন্তা আর অপমান বুধ নিয়ে বাড়ি ফিরেছে রিদয়।
কাল রাতে কি করে বাড়ি এলো।আর তার কন্সট্রেবলই বা কাল রাতের কথা কি জানতে চাইছে। কাল উনিই আমায় বাড়ি আনল না তো।
সেতুর সাথে কথা বলতে হবে।ওর বেডরুম থেকে আমার বেডরুম অবদি কি করে এলাম।আর গত কাল রাতে ওর ব্যাবহার বড্ড খারাপ ছিলে।আমার কোলে চরে বসে পরেছিলো।
“- মাথাটা নত করে নিজর ঘরে ঢুকেছে রিদয়।
ওর মাথাটা এমন নত হওয়া দেখে আরিফ তিতিল সবাই অবাক।
সবে মাএ তিতিল জুই আর ফুলকে বড্ড শাষান শাষিয়ে বাড়িতে এনেছে।ভাবিমার এমন কঠর আদেশ তার মায়া মমতা জেনো এই রাগে আরো ভেসে উঠেছে।
জুই ফুলের বড্ড ভালো লেগেছে এই শাষন টা। আর আরিফেরও এমনটাই তো চাইছিলো শক্ত হাতে জেনো সংসারটার হাল ধরে নেয়।
”
রিদয়ের মন খারাপের কারন টা অজানাই রইলো।এই সময় রিদয় কারো সাথে কথা বলা পছন্দ করে না। যার কারনে আরিফ আর তার রুমে পা বারালো না।
“-
—তিতিল!!!
তিতিল….
দুই ডাক দিতেই হন্ত দন্ত হয়ে তিতিল রিদয়ের দোয়ারে হাজির।
জ্বি!!!
ভয় ভয় গলা তিতিলের। কি জানি জিজ্ঞাসা করে ফেলে তার উওর কি দেবে সে।
“- এদিকে এসো…
— একপা সামনে তো দুই পা পিছনে দিয়ে তিতিল চলছে।ওর চলার গতিতে রিদয় বিরক্ত।
এটা সার্কাস হচ্ছে নাকি??
চেচিয়ে গলা ফাটিয়ে নেবে নাকি এমন করে কথা বলছে কেন???
তিতিল ভয় পেয়ে এবার রিদয়ের সামনে হাজির তাও তিন লাফে।
“- আরিফের ঘর থেকে চিৎকারটা শুনতে পেয়েছে।আরিফ তখনও বসে।
রাগ অভিমান ভালোবাসা সবটাই তিতিলকে মানতে হবে।
কারন তাকে নিয়ে সারা জীবন ঘর তো সেই করবে।আমি কয়দিনই বা আছি।
“— গত কাল রাতে আমায় কে বাড়ি পৌছে দিয়েছে তিতিল।
মাথাটা এখনও নিচু করে বসে রিদয়। রিদয় ভাবছে সেতু আসল না তো যার কারনে তিতিল এতটা দূরে সরে আছে ওর থেকে।
– তিতিল ভয়ে কোন রকম হেয়ালি না করে সোজা উওর দিলো আপনার থানা থেকেই একজন এসেছিলো
“” থানা থেকে!!
ওহহ সালাউদ্দিন স্যারই হবে তাহলে।
কাল কখন এলাম কি করে এলাম কিছুই মাথায় আসছে না আর সালাউদ্দিন স্যারই আমায় পেলো কোথায়!!!
এলাম এসে ঘুমিয়ে গেলাম দুপুর অবদি ঘুমালাম তাও কোন খুজ পেলাম না।
“—- তিতিল তো এবার রিদয়ের কথায় অবাক।কি বলে? কাল রাতে এত কিছু ঘটলো আর উনি এসে ঘুমিয়ে গেলো এটুকুই জানলো???
–আচ্ছা তিতিল আমার শার্ট আর ঐ ইয়ে মানে প্যান্ট টা তুমিই খুলেছিলে??? আসলে রিদয়ও লজ্জা পাচ্ছে এমন কথা জিজ্ঞাসা করতে।তবে জানতে তো হবে।এভাবে পরনের কাপর খুললো কেন? আর কেই এই অকাজ করল!! চোখ বন্ধ করেই জিজ্ঞাসা করেছে রিদয়।
এই প্রশ্নের উওর কি দিবে তিতিল।আর পারবেনা উওর দিতে।এই প্রশ্ন এরানোর একটাই পথ এখান থেকে কেটে পরা।যা ভাবা তাই কাজ।
রিদয় বেশ চিন্তিত।একজন এক কথা বলে দিলো।আরেক জনকে কিছু জিজ্ঞাসা করলাম সে গায়েব।
আর যে সব জানে তার ফোন বন্ধ।
নাহ সেতুর সাথে দেখা করতেই হবে।
ফ্রেস হয়ে জামা চেন্চ করে রিদয় সেতুর ফ্ল্যাটে যাবার জন্যে পা বারিয়েছে।
–
কোথাও যাচ্ছেন???
” এটাই রিদয়ের প্রথম পিছু ডাক। তিতিল দরজার পাশেই ছিলো যায়নি কোথাও। চুপি চুপি কি আমায় পাহারা দিচ্ছিলো?
আর আজ কোথায় যাচ্ছি কিনা জানতে চাইছে।
আসলে জানার কারন হল কাল তো নেশা করে এসেছে।আর আজও কি নেশা করতেই যাচ্ছে??
“হুম একটু কাজ আছে!!
এত রাতে কি কাজ তা জিজ্ঞাসা করার সাহস হল না তিতিলের।তবে কখন ফিরবে তা জানা অন্যায় নয়।
কখন ফিরবেন???
“—এটা বাড়ি না কোর্ট!হালকা মুচকি হাসি দিয়ে রিদয় তিতিলের দিকে ঘার বাকিয়ে উওর দিলো ঘন্টা খানেকের ভিতর ফিরব।বাবাকে খেয়ে ঘুমিয়ে পরতে বলো।
“- এই সুন্দর করে উওর দেয়াটাই তিতিলের জন্যে অনেক।
কালকের ঘটনার কথা জানতে চাইলো না কেন? উনার কি মনে নেই? নাকি জেনেও না জানার ভান।
আমিকি বললবো উনায়…।
ছি ছি কি করে বলবো যে কাল রাতে উনি….
____________
“- রিদয় ছুটে গেছে সেতুর কাছে তার তো জানতে হবে।কি হয়েছে কালকে কেন বাড়ি আসা থেকে শুরু করে শেষ অবদি তার মনে হচ্ছে না।
– দরজা আজকেউ খুলা, তাই দেরি নয় সোজা ভেতরে ঢুকে গেছে রিদয়।
তবে সেতুর দেখা মিললো না মিললো রুহি তার তার আরেক সাথির।
” সেতু!!!
“নাম টা উচ্চারনের সাথে সাথেই রুহি দাড়িয়ে পরল।ওমা রিদয় ভাইয়া! এই সময়।
আসুন বসুন ভাইয়া।
— না সেতু কোথায় একটু ডেকে দাও তো রুহি।
ব্যাস্ততায় কাটছে রিদয়ের মন।বসতেও ইচ্ছা হচ্ছে না। মনে হচ্ছে বসলেই সময় আরো ছুটবে
” সেতু তো Out of city…
কিহ??
কখন গেলো?আর কেনই বা?? আর কোথায়??
– আসলে রিদয় ভাইয়া ওর
সেখানে যাওয়া বাদ্ধতা মূলক ছিলে।অফিস থেকে পাঠানো হয়েছে ঐ নদী ভাংঙা মানুষের কিছু দূরঅবস্থ্যার কথা নিয়ে রিপোর্ট করতে হবে।
“ওহহ ওর ফোনটাও বন্ধ??
হ্যা হয়তো চার্জ নেই।
আমায় একবার বলেও গেলো না!!
রুহিকে জিজ্ঞাসা করব নাকি? না না রুহিতো কাল ছিলো না ওকে বলে লাভ নেই।বরং সেতুর সাথেই কথা বলতে হবে।
সেতুকে না পেয়ে রিদয় আরো উতলা হয়ে উঠলো।
—_______
“-তবে সেতু তার রুমেই ছিলো রুহিকে দিয়ে মিথ্যা বলানোর কারন টা সেই জানে।মাথায় কোন পেঁচ ঢুকেছে কে জানে।
“- রাস্তায় আসার সময় সালাউদ্দিনের সাথে দেখা হল রিদয়ের।থানায় এত সব জিজ্ঞাসা না করলেও এখানে বলা জেতেই পারে।
সালাউদ্দিন বাজার করছে।
রিদয়কে দেখে স্যালুট দিয়ে স্যার বলে সম্মধন করলো।
“- সব সময় এটা করার দরকার নেই।আপনি আমার গুরুজন।
-গুরুজন হলেই কি আপনি আমার সিনিয়র তাই সন্মান তো পাওয়ারই কথা।
” চলুন ঐ চায়ের দোকানে যাওয়া যাক।
—সালাউদ্দিন বুঝতে পারছে রিদয় কেন তাকে ডাকছে।ডাকাটা স্বাভাবিক।
চায়ের দোকানের বাহিরে কাঠের তৈরি বেন্চে ওরা বসেছে।দুটো চায়ের কথা বলে রিদয় সালাউদ্দিনকে প্রশ্ন করে।
আচ্ছা গত কাল আপনিই আমায় বাড়ি পৌছে দিয়েছেন তাই তো??
— সালাউদ্দিনের হ্যা সূচক জবাব।
তবে রিদয় এটাই আশা করেছিলো কারন তিতিল বলেছে।
“আমায় কোথা থেকে এনেছেন?? আর আমি এমন কি করেছি যার জন্যে আমার উপরে একটা আলগা রাগ আপনার চোখে দেখা যাচ্ছে।
।
— স্যার কাল রাতে আপনায় আমি মাতাল অবস্থ্যায় সেতু ম্যাডামের বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিলাম ।
কিহহ মাতাল?? কিন্তু আমিতো কোন নেশা করিনি!!
-জানিনা স্যার রুহি ম্যাডাম ফোন দিয়ে বললো আপনি ওদের ওখানে।আর আপনি কেমন করছেন।ওরা নাকি কোথাও বেরিয়েছে।তাই আমি জেনো আপনায় বাড়ি পৌছে দিই। আর বাড়িতে নিয়ে আপনার স্ত্রী আর আমি আপনায় বিছানায় শুইয়ে দিয়েছিলাম।
চা টা আর খাওয়া হল না।
রুহি!! কিন্তু ফ্ল্যাটে আমি আর সেতু ছিলাম।আমার শরিল খারাপ করলে সেতুর ফোন দেবার কথা।রুহি দিলো??
আর নেশাই বা কখন করলাম??
সেতু আমায় নেশা জাতীয় কিছু খাইয়ে দেয়নি তো??
আর খাইয়ে দিয়ে ফ্ল্যাট থেকে গায়েব??
গত কাল না জানি নেশার ঘুরে কি কি করেছি।বাবা!! বাবা আমায় পেলো আস্ত রাখবে না। বাবা কি জানতে পেরেছে নাকি না!!
–চলবে
চলবে……