স্বামী পর্ব ২৯+৩০

#স্বামী
#লেখনীতেঃ_নুসরাত_জাহান
#পর্বঃ_২৯

সোহান জান্নাতের কপালে চুমো দিয়ে বলল,
– কাঁদতে মানা করেছি না তবুও কেন কাঁদছ? মেজাজ গরম করাবে না। ভদ্রভাবে বলছি তবুও যদি কাঁদতে থাকো তাইলে আমার আসল রুপ দেখবে।

জান্নাত কেঁদেই চলেছে অনবরত। কী করবে নিজেই বুঝতে পারছে না। ইচ্ছা করছে নিজের জীবন নিজেই শেষ করে দিতে কিন্তু মা-বাবার কথা চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্তে যেতে পারছে না। দীর্ঘশ্বাস নিয়ে সোহানকে বলল,
– দেখুন আপনি কালকে সকালে একাই চলে যান আমি না হয় কয়েকদিন পরে যাব। বাবার শরীরটা তেমন ভালো না তাই এখানে আরও কিছুদিন থাকা লাগবে।
– আমি কোন কথা শুনতে চাই না তুমি আমার সাথে কালকে যাবে এটাই ফাইনাল। এতদিন এখানে ছিলে তো আর থাকার কোন প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া বিয়ের পরে স্বামীর অনুমতি না দিয়ে একরাত কোথাও থাকা যায় না। এখন আর কোন কথা শুনতে চাই না তাই চুপচাপ ঘুমিয়ে পর রাত অনেক হয়েছে।
– দেখুন।

জান্নাতের ঠোঁটে হাত চেপে ধরল সোহান। মুচকি হাসি দিয়ে বলল,
– আমার কথা কী কানে যাচ্ছে না? আমি কিন্তু একদম সহ্য করব না।
– আচ্ছা ঠিকাছে কালকে যাব তবে কয়েকদিন পরে আবার আসব।
– কয়েকদিন পরে আবার কেন আসবে? এখন তো সবাইকে দেখেই যাচ্ছ তাইলে আবার কেন আসতে হবে।
– তার মানে আমি কী আর গ্রামে আসতে পারব না?
– উঁহ জান্নাত। তুমি এত বেশি বুঝো কেন? সহজ জিনিসটা কিছুতেই বুঝতে চাচ্ছ না। তোমার কী ঝামেলা করতে ভালো লাগে নাকি বাবার মৃত্যু দেখতে! তুমি যদি চাও তাইলে বাবাকে এখনই টাকাটা ম্যানেজ করে দিতে বলি। বয়স্ক মানুষ টাকার চিন্তায় শেষমেষ জীবনটা না হারাতে হয়।
– নাহ্ নাহ্। আপনি এমনটা কারতে পারেন না। বাবাকে এসব ব্যাপারে কিছু বলবেন না তাইলে বাবা চিন্তায় পরে যাবেন। আমি আপনার সাথে যাব আর কখনও এবাড়িতে আসব না।
– ওহ্ ডার্লিং আমি কী তোমাকে আসতে নিষেধ করেছি বলো? তুমি যখন আসবে আমিও তোমার সাথে আসব কিন্তু আমাকে রেখে একা আর এখানে আসতে পারবে না।
– মনে মনে খুব রাগ উঠছে জান্নাতের তবুও কিছু বলার নেই। এই নোংরা মানুষের সাথে সংসার করা কখনো সম্ভব না। মানুষটার কোন রুপ খুঁজে পাচ্ছে না। জীবনটা এত সস্তা না তবুও আজ বাবার এত বড় একটা ভুলে কিছু করার মতো কোন জায়গা নেই। জান্নাত তো কূল কিনারা খুঁজে না পেয়ে আনাড়ি ভাবেই অথৈ সমুদ্রে ডুবছে যেখান থেকে মৃত্যু ছাড়া বের হওয়ার কোন উপায় নেই। অনেকক্ষণ ভাবার পরে সোহানকে বলল,
– শুয়ে পরেন আমার প্রচণ্ড ঘুম পেয়েছে।
– আমাকে একা রেখে ঘুমাবে?
– একা ঘুমাব না তো আরেকজন পাব কোথায়? তাছাড়া আমার এটা অভ্যাস। কথাটা বলেই ওপর পাশ ফিরে জান্নাত শুয়ে পরল।

জান্নাত শুয়ে পরলে সোহানও জান্নাতের পাশে শুয়ে জড়িয়ে ধরল। জান্নাতের প্রচণ্ড বিরক্ত লাগছে সোহানের স্পর্শে। গাঁ ঘিনঘিন করছে কিন্তু কী করবে কিছুই করার নেই। পরিবারের জন্য সব কিছুর সেক্রিফাইজ করতে হবে নিজের সমস্ত জিনিস।
মা-বাবাকে কিছুতেই বুঝতে দেওয়া যাবে না টাকার ব্যাপারটা। বাবা জানতে পারলে ভীষণ লজ্জা পাবে। বাবা ভালো করেই জানে জান্নাত ধার টার নেওয়াটা একদম পছন্দ করে না তার উপরে এত বড় এমাউন্ট! সব কিছু মিলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে জান্নাত।

সকালবেলা মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙল জান্নাতের। চোখ খুলে পাশে তাকিয়ে দেখে সোহান ঘুমিয়ে আছে। উঠার জন্য চেষ্টা করতে নজরে পরল সোহানের এক হাত তার পেটের উপরে দিয়ে রেখেছে। আস্তে করে হাত সরিয়ে বিছানা থেকে নামার জন্য পা বাড়াতে যাবে তখনি সোহান আরও জোরে জাপটে ধরল।
– কী হল ছাড়ুন? মা ডাকছে।
– ডাকলে ডাকবে। এতদিন পরে বউকে কাছে পেলাম আর এত সকালবেলাই সে ডাকাডাকি শুরু করল। তাদের কী কমনসেন্সের অভাব নাকি বুঝলাম না। আসলে গ্রামের মানুষজন অসামাজিক।
– এটা আপনার বাসা না তাই এখানে বসে যা খুশি তাই করতে পারেন না। বড়দের সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করুণ। তাছাড়া তারা যদি আমাদের অন্যকোন ভাবে দেখতে পায় তাইলে এটা খুবই লজ্জার বিষয়। জান্নাতের মা সখিনা বেগম আবারও খুব জোরে ডাকল।
এবার জান্নাত সোহানের হাত সরিয়ে দিয়ে নিচে নেমে মায়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাস করল,
– জি মা কিছু লাগবে।
– আমি নাস্তা বানাব তাই তো হেল্প লাগবে। জামাইকে তো আর আমরা যা খাই দেওয়া যাবে না তাই ভালো মন্দ করে খাওয়াতে হবে।
– মা চুলায় আগে চা বসিয়ে দাও। সকালবেলা আগে চা খাবে তারপর হাতমুখ ধুয়ে এলে নাস্তা দিব। এমনিতে তার কফি খাওয়ার অভ্যাস কিন্তু এই মূহুর্তে তো কফি এনে খাওয়ানো যাবে না।
– ঠিকাছে।

সখিনা বেগম চুলায় চায়ের কেটলিটা বসিয়ে দিল। আজকে গরুর দুধের চা বানিয়ে দিব।
– হুম।

সখিন বেগম জান্নাতকে দেখে ভীষণ অবাক হচ্ছেন তার ধারণা ছিল আজকে জান্নাতকে খুব রাগান্বিত লাগবে যেহেতু জান্নাত সোহানকে একদম সহ্য করতে পারে না। তার উপরে না বলে হুট করে চলে এসেছে। তাইলে কী জান্নাতকে কিছু জিজ্ঞাস করবে এটা নিয়ে সংকোচে ভুগতে লাগল সে। বারবার জিজ্ঞাস করবে করেও করার মতো সাহস পাচ্ছে না। এমনিতেই জান্নাত খুব রাগি তার উপরে যদি জিজ্ঞাস করে তাইলে যদি আবার রেগে যায় তাই চেপে যায় সে।

জান্নাত চায়ের মগ হাতে করে রুমে ঢুকল। বিছানার উপরে পায়ের উপরে পা তুলে বসে বসে কী যেন ভাবছে সোহান। জান্নাতকে দেখে কপাল কুঁচকাল।
জান্নাত চায়ের মগ নিয়ে রুমে ঢুকল।
– আমার জন্য চা করেছ কেন? আমি চা খাব না।
– কেন খাবেন না? মা এত কষ্ট করে বানিয়ে দিল আর আপনি বলছেন খাবেন না এটা কোন কথা হল।
– খাব না বললাম তো আবার কথা বাড়াও কেন?
জান্নাত চায়ের মগটা বিছানার এক কোণে রেখে সোহানকে বলল,
– আচ্ছা নিলয় কী বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে? বিষয়টা তো জানতে পারলাম না।
কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
– নিলয় মারা গেছে। কেউ ওকে খুন করেছে।
– তার মানে সেদিনের নিউজটা সত্যি! যদি নিলয় খুন হয়েও থাকে তাইলে কে খুন করতে পারে আপনার ধারণা?
জান্নাতের প্রশ্নে গলার ভেতরে ঢোক গিলল সোহান। কপাল ঘামে চুপচুপ করছে। হাত দিয়ে ঘাম মুছতে লাগল।

– কী হল চুপ কেন? আপনি নিলয়ের খুনের ব্যাপারে কিছু জানেন?
-“……..”
#স্বামী
#লেখনীতেঃ_নুসরাত_জাহান
#পর্বঃ_৩০

জান্নাতের কথা শুনে সোহানের চোখ কপালে উঠল। কিছুক্ষণ নিরবতা কাটানোর পরে জান্নাত আবারও বলতে লাগল
– কী হলো চেহারার রঙ এভাবে পাল্টে গেল কেন? কোন সমস্যা হয়েছে নাকি?
-“…….”
– কী ব্যাপার কথা বলছেন না কেন?
-“……… ”
– বাহ্ মুখে ভালোই তালা লাগিয়েছেন। ঠিকাছে আপনার কথাবলা লাগবে না।

একটুপরে সোহান নিচু গলায় বলল,
– জান্নাত তুমি বারবার নিলয়ের খুনের ব্যাপারে আমাকে জিজ্ঞেস কর কেন? আমি কী জানি যে নিলয়কে কে বা কারা খুন করেছে। ইভেন আমাকে মেরে ফেলার জন্য চেষ্টা করল তবুও ভালোবাসায় আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছে। আমাকে হত্যা করার জন্য যারা চেষ্টা চালিয়েছিল তাদেরই এখন পর্যন্ত কোন খবর পেলাম না। আমি কারও মুখ দেখাতে পারিনি শুধুমাত্র কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছি। খুব পরিচিত লেগেছিল কণ্ঠস্বরটা কিন্তু তখন খেয়াল করতে পারিনি।
– আশ্চর্য! আমি আপনাকে বারবার নিলয়ের খুনের ব্যাপারে প্রশ্ন করলাম কখন? মাত্রই তো জিজ্ঞেস করলাম।

– আচ্ছা সবকিছু বাদ দাও। এখন তুমি বাসার সবাইকে বলে দাও আমরা দুপুরে খেয়ে রওনা দিব।
-“…………”
– কী হল চুপ হয়ে গেলে কেন? নিরবতা পালন করলে কোন লাভ নেই আমার সাথে তোমাকে যেতেই হবে।

– আচ্ছা আপনি বসেন আমি দেখছি মা কী করেন?

– হুম, তবে তাড়াতাড়ি এসো।

জান্নাত সামনের দিকে হাঁটা শুরু করল। দরজার কাছে গিয়ে পা বাড়াবে বলে থ মেরে থমকে দাঁড়ায়। মুখটা আড়চোখে ঘুরিয়ে সোহানের দিকে নিষ্পলকভাবে একপলক তাকিয়ে আবারও হাঁটা শুরু করল। রুম থেকে বেরিয়ে সোজা মায়ের কাছে যায়। জান্নাতের চাচা এসে বলল,

– কী রে মা জামাইয়ের সাথে এভাবে রাগ করে বাপের বাড়ি আসতে নেই। আমার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার সময় বলেছিলাম বাবার বাড়ি থেকে লাল বেনারসি পরে স্বামীর বাড়ি যাচ্ছিস তার বের হওয়ার সময় যেন সাদা দাফনের কাপড়ে মুড়িয়ে বের হও। আজ পর্যন্ত আমার মেয়ে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি আসে না। যখন আমার দেখতে ইচ্ছা করে গিয়ে দেখে আসি অথবা ও স্বামীকে নিয়ে আসে আবার তার সাথে চলে যায়।
– জান্নাতের মনে মনে ভীষণ রাগ হচ্ছে। নিজের মেয়ের এত সুনাম করছেন সত্যিটা কী জানেন যে তার মেয়ে লোপা কতটা কষ্টে আছে। স্বামী কতবার বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। মারতে মারতে সমস্ত শরীর রক্তে লাল হয়ে গেছে। মায়ের কাছে কল করে কত কেঁদেছে। কতবেলা না খেয়ে সারাদিন পার করেছে সেটা তো আমরাই ভালো জানি। অথচ নিজের বাবা হয়ে তার মেয়ের খবর জানে না। ইনি বাপ নাকি কসাই!

– কী রে মা কথা বলছিস না কেন?
সখিনা বেগম জান্নাতের কাঁধে হাত রেখে বলল,
– মেয়েটার শরীর তেমন ভালো না। যখন সুস্থ হবে তখন আপনার কাছে যাবে দেখা করতে। তখন না হয় সব কিছু জিজ্ঞাস করে নিবেন।

– ঠিকাছে।

জান্নাতের চাচা চলে গেলে সখিনা বেগম মেয়ের হাত ধরে রান্নাঘরে ঢুকল।
সখিনা বেগম মেয়ের দিকে তাকিয়ে থাকল। জান্নাতের হাব ভাব তার কাছে ভালো লাগছে না। গতকাল রাতে জামাইয়ের আসায় জান্নাতকে ভীষণ বিরক্ত লাগছিল কিন্তু এখন তো স্বাভাবিক লাগছে। জান্নাতকে দেখে মনে হচ্ছে ও জামাইয়ের সাথে ফিরে যাবে। কিন্তু রাতে জামাই কী এমন বলল যার কারণে জান্নাত এত চুপচাপ হয়ে গেল। মেয়েটাকে ভালো করেই চিনে সে এত সহজে হার মানার মেয়ে না। তিনি ভেবেছিলেন জান্নাত আসার পরে যা বলেছেন তাতে করে অনেক ঝগরা ঝামেলা হবে কিন্তু না কোন কিছুই হয়নি হবে অবাক হয়েছেন।
– জান্নাত তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
– আমি জানি মা তুমি কী জিজ্ঞেস করবে? তবুও শুনছি তুমি কী বলতে চাচ্ছো?

– তুই কী জামাইয়ের সাথে ফিরে যাবি?

– যাবো না যেতে হবে?

– যেতে হবে মানে? কী হয়েছে?

– কী আর হবে মা যার কোন কূল নেই তার আবার কী হবে? আমি লাশের মতো বেঁচে আছি। দেহ থেকে কবে যে প্রাণ পাখিটা চলে যাবে কেউ বুঝতেই পারবে না।

– এভাবে বলিস না। তুই এত তাড়াতাড়ি চলে যাওয়ার কথা বলতে পারলি?

– পারলাম না পরিস্থিতি আমাকে এমনটা বলতে বাধ্য করেছে। মা তোমরা আমার জীবনটাকে নষ্ট করে দিয়েছ সেটা তোমরা স্বীকার কর আর নাই বা কর। গাছে গোড়া কেটে আগায় পানি ঢাললে গাছ বাঁচে না মা। তেমনি আমিও বাঁচতে পারব না।

– জান্নাত তোকে একটা কথা বলি। তুই ভাবতে পারিস এটা তোর মায়ের আদেশ নয় অনুরোধ। জান্নাত জামাইকে দেখে মনে হচ্ছে সে এখন অনুতপ্ত। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে তাই তো তোর কাছে ছুটে এসেছে তোকে নিয়ে যেতে।

– মা তুমি আমাকে এমন অনুরোধ করার চেয়ে মেয়ে ফেল তাইলে আমি আরও বেশি খুশি হব।
– জান্নাত তুই যদি আবারও মরার কথা বলিস তাইলে তোর সাথে আমি আর কখনও কথা বলব না।

– না মা এমনটা তুমি করতে পার না।

– শোন মানুষ অপরাধ করে ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমা করে ভালো হওয়ার সুযোগ দিতে হয়। না হলে তোর আর তার ভেতরে পার্থক্য কোথায়? তাছাড়া অসুস্থতা নিয়ে সে ছুটে এসেছে তোর কাছে এর চেয়ে কী চাওয়ার আছে বল? একজন স্বামী যদি তার স্ত্রীর কাছে নত হয় তাইলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত। সংসার করতে গেলে স্বামীর অনেক বড় বড় ভুল ক্ষমা করে দেওয়াই উত্তম। একটা সংসার ভাঙার চেয়ে ঘসে মেঝে জোড়া লাগাতে পারতে সেটাই প্লাস পয়েন্ট সবার জন্য। এতে করে উভয়েরই মঙ্গল হয়।
– বিনা দোষে ও আমাকে এতটা দিন কষ্ট দিয়েছে। গায়ে হাত পর্যন্ত তুলেছে আর তুমি তাকে ক্ষমা করে দিতে বলছো? সবকিছুর ক্ষমা হলেও তার ক্ষমা নেই। আমার মনে সে আর কখনও উঠবে না। তার প্রতি আমার ঘৃণাটাই আছে।
– মায়ের কথা রাখবি না?
– মা হয়ে মেয়ের কথা একবারও চিন্তা করছো না? তোমার মেয়েকে তুমি তো ভালো চিনো। এত সহজে ভেঙে পরার মতো মেয়ে না আমি। তবুও তুমি এসব বলছো?
– জামাইয়ের প্রতি এতটা ঘৃণা জন্ম হয়ে গেছে তোর?
– হ্যাঁ মা। এটা একমাত্র সোহানের কারণেই সম্ভব হয়েছে। আমি এখন দায়বদ্ধ হয়ে তার সাথে যাব ঠিকি কিন্তু সমস্যা সমাধান হয়ে গেলে সোহানকে ডিভোর্স দিয়ে চলে আসব।
– ডিভোর্স?
– হ্যাঁ মা ডিভোর্স। এটা ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই।
নিজেকে মানানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। আমি আর পারছি না হাপিয়ে উঠেছি। নিজের মন প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেছিলাম সংসারটা বাঁচিয়ে রাখার জন্য কিন্তু কোনভাবেই সম্ভব হয়নি। আজ আমি অসহায়ের মতো স্বামীর বাড়ি ছেলে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। জানো কোন মেয়ে বিনা কারণে স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে আসে না। মা তোমার যদি আমাকে নিয়ে কোন সমস্যা হয় তাইলে বলে দাও আমি আর কখনও তোমার বাসায় আসব না। দরকার হলে রাস্তায় থাকব।
– জান্নাত তোকে কী আমি আসতে নিষেধ করেছি।

-মা কী বিষয় নিয়ে কথা বলছেন?

– মুখটা ঘুরিয়ে সখিনা বেগম বলল, তেমন কিছু না আমি জিজ্ঞেস করছিলাম জামাই তোকে কী আজকেই নিয়ে যাবে নাকি?

– ওহ্ আচ্ছা। কালকে সকালে চলে যাব।
– ওহ্।

চলবে……..
চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here