#হিংস্রতার আড়ালে ভালোবাসা
#part:2
#writer:Maliha islam Tafsi (jeba)
🌼
সকালে ঘুম থেকে উঠে দুচোখ মেলে হিয়া নিজেকে ফ্লোরে আবিষ্কার করল।
আমি তো রাতে বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলাম তাহলে ফ্লোরে আসলাম কিভাবে ?হায় আল্লাহ এই শীতে শয়তান টা আমাকে ফ্লোরে শুয়ে দিয়ে নিজে বিছানায় আরাম করে কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমাচ্ছে ।একটা মানুষ এতো হিংস্র হতে পারে?ছিঃ!!!!কিভাবে পারল?ফ্লোরে শুয়ে দিল কিন্তু একটা কম্বল ও কি আমার গায়ে দিয়ে দিতে ইচ্ছে করল না??শয়তান দাঁড়া এখন তোকে মজা দেখাচ্ছি!!!
”
”
”
রিহান ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠল ঠান্ডায় । সারা শরীরে তার কাঁপুনি শুরু হয়ে গেছে ঠান্ডায় ।সারা শরীর বিছানা একদম পানিতে ভিজে গেছে। চোখ মেলে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখল হিয়া মুখে হাত চেপে হাসতাছে।মনে হচ্ছে যেন হাসি চেপে রাখার বৃথা চেষ্টা করতাছে।পরক্ষণেই রিহান হিয়ার পাশে থাকা বালতি টা দেখতে পেল। এতক্ষণে সে বুঝতে পারল হিয়া ব্যতীত এই কাজটা আর কারো না।
”
”
হিয়া হাসছে তো হাসছেই কোনোমতেই তার হাসি থামছে না রিহান এর এই অবস্থা দেখে।হিয়া মুখের হাসি সংযত করে রিহান এর দিকে তুরি মেরে বলল–
কি হলো?তুমি ভিজলা কিভাবে কলিজা?খুব ঠান্ডা লাগছে বুঝি?আহারে,,তুমি কতো আরাম করে ঘুমাচ্ছিলে । ইশশশ,,এতো আরামের ঘুমটা নষ্ট হয়ে গেল।কই তুমি না আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিবা? এখন তো আমার মনে হচ্ছে আমি তোমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছি।।।।
”
”
কথাটা বলে হিয়া আবার হাসতে শুরু করল। রিহান বিছানা থেকে উঠে আস্তে আস্তে হিয়ার দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। চোখ দুটো দেখে হিয়ার মনে হচ্ছে এখন হয়তো তাকে গিলে খেয়ে ফেলবে। হিয়ার মুখে চোখে এখন ভয়ের ছাপ ভেসে উঠতে লাগল। রিহান আচমকা হিয়ার হাত টা ধরে টেনে ওয়াশরুমে নিয়ে গেল।
হিয়া বুঝতে পারছে না আসলে কি করতে যাচ্ছে রিহান?
রিহান হিয়া কে ঝরনার নিচে দাড়াল।তারপর ঝরনা টা ছেড়ে দিল।হিয়া ঠান্ডায় সরে যেতে লাগলে রিহান তার কোমর জরিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বলল—-
-খুব হাসছিলি না একটু আগে আমাকে ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে? এখন হাস।আমার এখন তোর হাসি টা দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। হাসতে বলছি হাস,,,,,, (চিৎকার দিয়ে বলল রিহান )
।
।
হিয়া চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইল। ঠান্ডায় কাঁপতে শুরু করলে সে আর রিহান মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে হিয়া কে দেয়ালের চেপে ধরে একটু ও নড়ছে না সে।
”
”
একটা মানুষ এতো পরিবর্তন হতে পারে?আমাদের এতোদিন এর সম্পর্কে আমি আজ পর্যন্ত এতো রাগে দেখি নি রিহান কে। ও তো আমাকে একটু ও কষ্ট পেতে দিতো না আর আজ এতো কষ্ট দিচ্ছে । ওফফ,,আমি তো ভুলেই গেছি যে এতোদিন পর্যন্ত আমি মুখোশ পড়া রিহান কে ভালোবেসেছি ।কাল থেকে আমার সাথে এক নতুন রিহান এর পরিচয় যার চোখে মুখে শুধু হিংস্রতার ছাপ (মনে মনে কথাগুলো ভাবল হিয়া)
🌼
🌼
একঘন্টা পর হিয়া কে নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হলো রিহান । ঠান্ডায় অনবরত কাঁপছে হিয়া।কেমন একটা মানুষ কে ভালোবাসে সে যে তাকে কষ্ট দিয়ে শান্তি পাচ্ছে ।ভেবেই আরো কষ্ট হচ্ছে হিয়ার।
হিয়া একটা হালকা নীল কালার শাড়ি পড়ে রেডি হয়ে নিল।নীচে গিয়ে হিয়া তার শাশুড়ি মাকে সালাম করল। তিনি হিয়া কে নাস্তা করার জন্য বসতে বলল তখন রিহান উপর থেকে বলল হিয়া আমাদের সাথে নাস্তা করবে না।কথাটা বলতে বলতে রিহান নিচে নেমে আসল।
।
।
-তাহলে কার সাথে করবে ভাই? (রিহান এর ভাই সিফাত)
-ও নিজে বানিয়ে খাবে।
রিহান এর কথায় হিয়া চোখ বড় বড় করে তাকালো।
কি বলছে শয়তান টা।আমি নিজে কেন বানিয়ে খাবো এতো নাস্তা টেবিলে থাকতে? (মনে মনে বলল হিয়া )
-কিন্তু??? (রিহান এর মা)
-মা তুমি ভালো করেই জানো আমি কি করছি?প্লিজ আমার রাস্তায় বাঁধা দিয়ো না মা। চলো আমরা নাস্তা করি।আর হে হিয়া জান তোমার খিদে লাগলে নিজে বানিয়ে খেয়ে নিও।
।
।
রিহান এর কথায় হিয়া অপমানবোধ করল।সাথে সাথে দৌড়ে রুমে চলে গেল।গিয়ে দরজা লাগিয়ে কাঁদতে লাগল–
এতো হিংস্র,,,এতো অমানবিক তুমি?ভালোবাসার আড়ালে ধোকা দিলে আমাকে।ভেবেছিলাম যতই হিংস্রতা দেখাও না কেন একটু হলেও হয়তো আমাদের এতোদিন এর সম্পর্কে আমি তোমার জায়গা পেয়েছি।কিন্তু তোমার মনে যে শুধু হিংস্রতা আর হিংস্রতা।।
🌼
চলবে,,,,,,