হিংস্রতার আড়ালে ভালোবাসা পর্ব ৪

#হিংস্রতার আড়ালে ভালোবাসা
#part:4
#writer:Jeba

বাচ্চাদের মতো অন্ধকার রুমে বসে বসে কাঁদছে হিয়া।জ্বরে তার সারা শরীর পুরে যাচ্ছে কিন্তু সেদিকে কোনো আক্ষেপ নেই তার।তার শুধু কিছুক্ষণ আগে বলা রিহান এর কথা গুলো ভেবে কান্না পাচ্ছে ।



হিয়া যখন সায়ন এর সাথে ফুচকা খাচ্ছিল তখন সবার সামনে হিয়ার গালে কষিয়ে কে যেন একটা থাপ্পড় মারে। হিয়া গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে দেখল চড় মারা মানুষ টা রিহান।এতোদিন এর সম্পর্কে আজ প্রথম রিহান তাকে চড় মেরেছে ।কিন্তু কোন দোষে কিছুই বুজতে পারছে না সে।সায়ন রিহান এর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,,,,

-এইটা কি হলো রিহান?তুমি এইভাবে অযথা হঠাৎ এসে হিয়া কে মারলে কেন?
-আমাদের স্বামী স্ত্রীর মাঝে কোনো থার্ড পার্সন এর কথা শুনতে চাই না।ইনফ্যাক্ট ছায়া ও দেখতে চাই না।

“সায়ন আর কিছু বলতে যাবে তখনি হিয়া হাত দিয়ে সায়ন কে ইশারা দিল যেন আর কিছু না বলে।হিয়া চাই না তার কারণে সায়ন অপমানিত হয়।সায়ন হিয়ার কথায় সেখান থেকে চলে গেল।আর হিয়া গিয়ে গাড়ি তে বসল।রিহান ড্রাইভিং সিটে বসে হিয়া কে কিছু বলে যাবে সেই মুহূর্তে হিয়া বলতে উঠল,,,,-রাস্তায় আর কোনো ধরনের নাটক চাই না।যা করার যা মারার বাসায় গিয়ে করবেন।প্লিজ এখন বাসায় চলুন।

বাসায় এসে হিয়া কে টানতে টানতে রুমে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল রিহান।হিয়ার দুই গাল চেপে ধরে বলল,,,,

-তোর কি পুষায় না?ওহ,,পুষাবে কিভাবে তুই তো আমার আদরই পাস নি।আর আদর পাবি কিভাবে আমি তো তোকে ঘৃণা করি।তাই বুজি সায়ন এর সাথে এতো,,,,,,,

রিহান কে আর কিছু বলতে না দিয়ে হিয়া বলতে লাগল,,,,
-তোর সাহস হলো কি করে আমাকে আর সায়ন কে নিয়ে এতো বাজে কথা বলার?ও আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড ।ওর আর আমার মাঝে যদি কিছু থাকতো তাহলে তোর মিথ্যে ভালোবাসার অভিনয়ে আমি বিশ্বাস করে আজ এতো কষ্ট পেতাম না।আসলে তুই এতোদিন মুখোশ পড়া একটা মানুষ ছিলি।হিংস্র প্রাণীর চেয়ে ও ভয়ানক তুই।



হিয়া কথাটা শেষ না করতেই রিহান হিয়ার গালে আরেকটা চড় বসিয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে চলে গেল।
হিয়া অন্ধকার রুমে বসে কাঁদছে শুধু রিহান এর বলা কথাগুলো ভেবে।


প্রায় তিন ঘন্টা পর রুমে আসল রিহান ।রুমের লাইট জ্বালিয়ে দেখল হিয়া চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।রিহান হিয়ার পাশে গিয়ে বসে হিয়া কে নিচে নামাতে গিয়ে ওকে স্পর্শ করে ভয় পেয়ে গেল।হিয়ার পুরো শরীর জ্বরে পুরে যাচ্ছে আর হিয়া বেহুঁশ হয়ে আছে।

রিহান হিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,
-তোকে মেরে ফেলা আমার উদ্দেশ্য নয়।যতটুকু কষ্ট পেয়েছি আমি প্রিয়া কে হারিয়ে ততটুকু কষ্ট দিয়ে তোকে তিলে তিলে শেষ করে দেওয়া ।আর এইটাই হলো আমার আসল উদ্দেশ্যে।আজ আমি এতো টুকু হিংস্র হয়েছিল শুধু মাত্র তোর জন্যই ।তোর জন্যই আমি আমার প্রিয়া কে হারিয়ে ফেলেছি।
তাড়াতাড়ি করে ফোন বের করে রিহান ডাক্তার কে ফোন দিল।ডাক্তার এসে চেকআপ করে বলল ওর তো অনেক জ্বর।জ্বরে শরীর দুর্বল হওয়ায় ও বেহুঁশ হয়ে গেছে।নিয়মিত ওষুধ খেলে আর রেষ্ট নিলে ঠিক হয়ে যাবে।


হিয়া অসুস্থ হওয়ায় আজ আর রিহান তাকে নিচে নামালো না। বিছানায় শুয়িয়ে রাখল আর হিয়ার একপাশে বিছানায় শুয়ে পড়ল রিহান ।

অপরদিকে সেই কখন থেকে হিয়ার নাম্বারে ডায়াল করে যাচ্ছে সায়ন।কিন্তু কল ঢুকছে না।বার বার নাম্বার দেখাচ্ছে ।দেখাবেই না কেন হিয়া যে রাগে তার ফোন টা অফ করে ফেলেছিল।


সকাল বেলা চোখ মেলে হিয়া অবাক হয়ে গেল।শুধু অবাক না তার কাছে মনে হচ্ছে সে বোধ হয় স্বপ্ন দেখছে,,,,

🌼🌼🌼
চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here