১.
—”মিস অজান্তা অহি, আপনার বাবাকে ফাঁসির রায় থেকে বাঁচাতে চাইলে আজ সন্ধ্যার মধ্যে আমাকে বিয়ে করতে হবে।রাজি?”
পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর রোদ্দুর হিম কথাটা বলে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে অহির দিকে তাকালো।অহি গুম হয়ে বসে রইলো বেশ কিছুক্ষণ।এরকম প্রস্তাব পাবে তা তার মস্তিষ্কের জল্পনা কল্পনার ১০০ গজ তো দূরে থাক,এক আলোকবর্ষের মধ্যেও ছিল না।
মাথার অগোছালো ওড়নাটা টেনে টুনে সে পিঠ সোজা করে বসলো।তার দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়ে আছে কাচের গোল টেবিলের উপর সাজিয়ে রাখা পাথরের তাজমহলটির উপর!ধবধবে শ্বেত পাথরের তৈরি মমতাজের প্রতি শাজাহানের প্রগাঢ় ভালোবাসার প্রতিমূর্তির উপর!
টেবিলে নখের মাধ্যমে সৃষ্ট মৃদু টোকার শব্দে অহি চোখ তুলে তার সামনে সরকারি পোশাকে বসে থাকা মানুষটার দিকে তাকালো।সরাসরি মুখপানে নয়।ডানপাশের বুকের উপর খোদাই করা ‘রোদ্দুর হিম’ নামফলকটার উপর!ক’দিনই হলো বা মানুষটাকে সে চিনে!দেড় মাসের মতো হবে!অথচ কি অদ্ভুত প্রস্তাব দিয়ে বসলো!
রোদ্দুর অহির দিকে চেয়ে বলল,
—“আপনার বাবা খুনের কেসের আসামি।তাছাড়া বাদী পক্ষ ঢাকার নামকরা ব্যক্তি।প্রচুর ক্ষমতা তার!রাজনীতির বড় বড় ব্যক্তিবর্গের সাথে ইনভলভ!’রূপসা’ ব্যাংকের ওনার জনাব খালেকুজ্জামান ভিক্টিমের হয়ে লড়ছে।বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই, আপনার বাবার কোর্টের শুনানিতে ফাঁসির রায় হবে?”
অহির বুকের ভেতর জ্বলে পুড়ে গেল।এসব দিনগুলো ফেস করার জন্যই হয়তো সৃষ্টিকর্তা তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।বাবাকে ছাড়া একটা সেকেন্ড যেখানে সে কল্পনা করতে পারে না, তার সেই বাবা দেড় মাস হলো জেলে।অথচ তারা কিছুই করতে পারছে না।এর আগে দু বার কোর্টে শুনানি হয়েছে।তৃতীয় বারের মতো আবার হবে!সে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া বিক্ষিপ্ত মনটা লুকিয়ে প্রতিবারের মতো বললো,
—“স্যার,আমার বাবা খুন করেনি।আমার বাবার মতো ভালো মনের মানুষ পৃথিবীতে দুজন নেই!”
—“এটা শুধু আপনি আর আপনার পরিবার জানেন।আইন তো জানে না!তবে আপনার বাবার নির্দোষের পক্ষে আমি অনেকগুলো এভিডেন্স রেফারেন্স সহ খুঁজে পেয়েছি।আপনি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হলেই সেগুলো কোর্টে বা আপনাদের পক্ষের উকিলের হাতে হস্তান্তর করবো।”
অহি আর ভাবতে পারছে না।তার মতো নগণ্য একটা মেয়ের জন্য রোদ্দুর হিম কি জঘন্য ট্রিকস অবলম্বন করছে।তার ঘেন্না হচ্ছে, নিজের প্রতি!রোদ্দুর একটু ধমকের সুরে বলল,
—“কি হলো চুপ যে?কিছু একটা বলুন!”
অহি এবার বেশ স্বাভাবিক ভাবে রোদ্দুরের দিকে তাকালো।চিকন,সুতীক্ষ্ণ, মিহি স্বরে স্পষ্টভাবে বলল,
—“কয় রাতের জন্য?”
—“কি কয় রাতের জন্য?”
—“বলছি কয় রাতের জন্য বিয়ে করবেন?আপনি বেশ চালাক মানুষ।একটা কুৎসিত,নোংরা প্রস্তাবকে রঙ চঙ মাখিয়ে সুশীল করে আমার সামনে তুলে ধরলেন।আপনি কি মনে করেছেন আমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বোকা?আপনার এই সরকারি লেবাসের আড়ালের মানুষটাকে চিনতে পারবো না?আপনি সিনেমার আর দশটা পুলিশের মতো আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে নোংরা প্রস্তাব দিয়ে বসলেন।এর আগে আর কতগুলো মেয়েকে এভাবে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নিঃস্ব করেছেন?”
তার কথা শেষ হতেই রোদ্দুর ঘর কাঁপিয়ে বলল,
—“স্টপ!একদম চুপ!আর একটা কথা বলবে তো এক থাপ্পড়ে দাঁত ফেলে দিবো।”
রোদ্দুর উঠে দাঁড়িয়ে কাচের টেবিল থেকে শ্বেত পাথরের তাজমহলটা ছুঁড়ে ফেলে দিল।পাথরের প্রতিমূর্তিটি দক্ষিণের দেয়ালে লেগে বিকট একটা শব্দ সৃষ্টি করে মুহূর্তে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেল।
অহির বুকের ভেতর ধ্বক করে উঠলো।সামনের মানুষটার হঠাৎ এত রেগে যাওয়া দেখে তার পিলে চমকে উঠলো।কিন্তু বাইরে প্রকাশ করলো না।নির্ভয়ে, প্রচন্ড রাগে সাপের মতো ফোঁস ফোঁস করতে থাকা মানুষটার দিকে তাকালো।রোদ্দুর হিম নামক মানুষটার শরীর কাঁপছে।ক্রমাগত কাঁপছে।চোখ দুটো থেকে আগ্নেয়গিরির জ্বলন্ত লাভা বের হচ্ছে।যার হল্কায় অহির জায়গা অন্য কেউ থাকলে সেকেন্ডে পুড়ে ভস্ম হয়ে যেত!কিন্তু অহি পুড়লো না।সে অনেক আগেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।ছাইয়ে যতই তাপ দেয়া হয় না কেন ছাই রূপান্তর হয় না!ছাইয়ের কিচ্ছু আসে যায় না।
রোদ্দুর আবার নিজের রকিং চেয়ার টেনে বসে পড়লো।বসেই মাথা চেপে পেছন ঘুরে গেল।হয়তো রাগ কমানোর চেষ্টা করছে।অহি তার পিঠের দিকে বেশ কিছুক্ষণ চেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
—“আমি কি চলে যাব স্যার?”
রোদ্দুর ঝট করে ঘুরে অহির দিকে মুখ করলো।উঠে দাঁড়িয়ে উত্তর দিকে আরেকটা টেবিলে রাখা জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢাললো।তারপর ঢকঢক করে পুরো গ্লাস এক নিঃশেষে খালি করে ফেলল।
পানি দেখেই অহির তৃষ্ণা পেল।স্বচ্ছ, চকচকে,ঝকঝকে পানি।জগ আর পানি দু’টোই শুভ্র! চট করে বোঝা যায় না জগে পানি আছে কি নেই!অহি ঢোক গিলল।সঙ্গে সঙ্গে তার পেটের ক্ষুধাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।গতকাল রাত থেকে তার কিচ্ছু খাওয়া হয়নি।এখন দুপুর হতে চলল!
—“কোথায় যাবে এই ভরদুপুরে?”
রোদ্দুরের গম্ভীর কন্ঠের প্রশ্ন শুনে অহি নড়েচড়ে দাঁড়াল।রোদ্দুর স্যার তাকে এতদিন আপনি করে বলতো।আজ তুমি করে বলা শুরু করেছে।কিছুদিন গেলে নিশ্চিত তুই তুকারি করবে।অবশ্য তার মতো তুচ্ছ মানুষকে তুই তুকারি করাই শ্রেয়।সে নরম গলায় বললো,
—“বাবার সাথে কি এখন দেখা করা যাবে?”
—“না!ভিজিটিং আওয়ার শেষ।সামনের শুক্রবার ছাড়া আর দেখা হওয়ার সুযোগ নেই।”
—“বাবাকে কোর্টে উঠাবে কবে?”
—“আনুমানিক দুদিন পর!এখনো ডেট ফাইনাল হয়নি।তোমাদের পক্ষের উকিলের সাথে যোগাযোগ রেখো ভালো করে।”
—“আমি আসছি স্যার!”
অহি সামনের দিকে পা বাড়াতেই রোদ্দুর দ্রুত বলল,
—“আমার প্রস্তাবের কি উত্তর দিলে?আমি সহজ ভাষায় তোমাকে বিয়ের প্রোপোজাল দিলে তুমি রাজি হবে না তা আমার থেকে ভালো কেউ জানে না!তুমি আমাকে একপ্রকার বাধ্য করেছো তোমার বাবার টপিকটা টানতে!আমি নিরুপায়।তবে খবরদার!আমার পোশাকের বা এই পেশাকে অপমান করবে না।আমার এই ট্রিকসের জন্য স্যরি বলছি।আগেই বললাম,আমার বিকল্প উপায় জানা নেই , তোমাকে বিয়েতে রাজি করানোর!শুধু জানি,তোমাকে এট এনি কস্ট,আমার বিয়ে করতেই হবে!”
অহি ঘুরে দাঁড়িয়ে রোদ্দুরের চোখে চোখ রাখল।মনে মনে বলল,
—“এখন প্লিজ এটা বলবেন না যে আমার মতো একটা সাধারণ মেয়েকে আপনি ভালোবেসে ফেলেছেন!”
রোদ্দুর বেশিক্ষণ তার চোখের দিকে চেয়ে থাকতে পারলো না।চোখ সরিয়ে নিল।অহি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
—“আপনার কি মনে হয় এই মুহূর্তে আমি বিয়ের মুডে আছি?”
—“অকে।তোমার বিষয়টা কনসিডার করলাম।আজ সন্ধ্যার মধ্যে বিয়ে করতে হবে না।তোমার বাবার ঝামেলাটা মুক্ত হলে আমায় বিয়ে করলেই হবে।কিন্তু তোমায় আমি বিশ্বাস করি না।একটা পেপারে সই করতে হবে তাহলে।চুক্তিনামা আর কি!তোমার বাবা সুস্থ মতো জেল থেকে বের হলে তুমি আমায় বিয়ে করবে!”
অহি কিছুক্ষণ ভেবে বলল,
—“আমার সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগবে।পরে জানাব আপনাকে!আপনি হয়তো কোনোভাবে টের পেয়েছেন যে আমি পুলিশ পেশাকে মনে প্রাণে ঘৃণা করি!সেজন্য এই ভাবে আমায় নিজের জালে আটকাতে চাইছেন!”
রোদ্দুর ধীরপায়ে এগিয়ে এলো অহির দিকে।উৎসুক দৃষ্টি নিয়ে চেয়ে আছে অহির দিকে।এক সমুদ্র গভীরতা সে দৃষ্টিতে।অহি ধপ করে পাশের চেয়ারটাতে বসে পড়লো।মাথা নিচু করে ওড়নার এক প্রান্ত শক্ত করে চেপে ধরলো।
রোদ্দুর চেয়ারটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে অহির মুখটা সামনে আনলো।নিজে একটু ঝুঁকে বলল,
—“অজান্তা, আমার জানামতে তুমি অত্যন্ত সূক্ষ্ম বুদ্ধিসম্পন্ন একটা মেয়ে।আশা করি ভুল পদক্ষেপ নিয়ে সবাইকে হুমকির মুখে ফেলবে না।কোথায় যাবে এখন?পুলিশের গাড়ি তোমাকে নামিয়ে দিয়ে আসবে।”
অহির দমবন্ধ হয়ে আসছে।কি একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়লো।সে নিচের দিকে চেয়েই বলল,
—“ধন্যবাদ, গাড়ি অফার করার জন্য।তবে গাড়ির প্রয়োজন নেই।আমি বাড়ি যাব এখন।রিকশা করে একাই যেতে পারবো।”
—“তোমাকে এই ভরদুপুরে রিকশা করে যেতে হবে না।”
এটুকু বলেই রোদ্দুর সোজা হয়ে দাঁড়াল।দু পা পিছিয়ে গলা ফাটিয়ে দু বার বলল,
—“কনস্টেবল বিদ্যুৎ!এদিকে আসো!”
প্রায় তৎক্ষনাৎ যুবক এক ছেলে দরজা ঠেলে বলল,
—“ইয়েস স্যার!”
রোদ্দুর এক নজর অহির দিকে চেয়ে বলল,
—“বিদ্যুৎ,মিস অজান্তাকে আমার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে উনার বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসো!”
—“ইয়েস স্যার!আমি বাইরে অপেক্ষা করছি।”
বলেই বিদ্যুৎ দরজা চাপিয়ে চলে গেল।
রোদ্দুরের কন্ঠের দৃঢ়তা দেখে অহি আর কিছু বলার সাহস পেল না।সে এখন এই মানুষটার হাতের গুটি।ইচ্ছে মতো তাকে নিয়ে ছক সাজাচ্ছে!
অহি সালাম দিয়ে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গিয়ে দরজার হাতলে হাত রেখে ঘোরাতেই রোদ্দুর বলল,
—“থাক!বিদ্যুৎকে যেতে হবে না।চলো,তোমাকে আমি বাড়ি পৌঁছে দিবো।তার আগে দুজন একসাথে লাঞ্চ করবো!”#গল্পের_নাম: ||গাঙচিল||
#লেখিকা: অজান্তা অহি (ছদ্মনাম)
#পর্ব____০২
অহি সালাম দিয়ে দ্রুত পায়ে এগিয়ে দরজার হাতলে হাত রেখে ঘোরাতেই রোদ্দুর বলল,
—“থাক!বিদ্যুৎতের যেতে হবে না।আমি তোমাকে বাড়িতে পৌঁছে দিবো।তার আগে দুজন একসাথে লাঞ্চ করে নিবো।”
অহি জমে গেল।সে ভেবেছিল এখান থেকে বের হয়ে বিদ্যুৎ কে বুঝিয়ে না করে দিবে যে, সে একাই যেতে পারবে।তারপর রিকশা নিয়ে চলে যাবে।কিন্তু এখন?সে কিছু একটা বলতে নিতে রোদ্দুর থামিয়ে দিয়ে বলল,
—“দুই মিনিট!জাস্ট দুই মিনিট অপেক্ষা করো।আমি চেঞ্জ করে আসছি।”
অহি কোনো প্রতিক্রিয়া করলো না।যেভাবে ছিল সেইভাবেই ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো।
একটু পরেই রোদ্দুর এসে তার পাশে দাঁড়াল।অহি দরজা খুলে দ্রুত বহির্গমন গেটের দিকে এগিয়ে গেল।এই জেলখানাতে ঢুকলেই তার নিঃশ্বাস আটকে আসে।গা গুলিয়ে উঠে।বমি বমি পায়!তাহলে তার বাবা কিভাবে রয়েছে?অথচ যতবার সে বাবার সাথে দেখা করতে গেছে ততবার বাবার মুখে লজ্জামিশ্রিত হাসি।
—“দাঁড়িয়ে পড়ো এখানে।গাড়ি নিয়ে আসছি!”
রোদ্দুর উত্তর দিকে হাঁটা ধরলো।অহি এই প্রথম মানুষটার দিকে ভালো মতো তাকালো।এখন সরকারি লেবাস অঙ্গে নেই।পোশাক পালটেছে।অফ হোয়াইট শার্ট আর কালো জিন্সে কি সুন্দর লাগছে মানুষটাকে!এতসুন্দর একটা মানুষ তাকে বিয়ের অফার দিয়েছে,যেন বিশ্বাস হতে চায় না।হোক না সে বিয়ে ক্ষণিকের জন্য!এই তো দেড় মাস আগে তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল ট্রাকের ড্রাইভারের সাথে।কালো কুচকুচে ঠোঁটের, হলুদ দাঁতের বিশ্রী মনের মানুষ ছিল সে।প্রথম দেখাতে বার বার অহির বুকের দিকে তাকাচ্ছিল।বিয়ে ঠিক হওয়ার পর সুযোগ বুঝে তো একবার তার স্পর্শকাতর জায়গা হাতও দিয়েছিল!
অহি বড় করে শ্বাস নেয়।ততক্ষণে রোদ্দুর গাড়ি নিয়ে এসেছে।অহি এগিয়ে গিয়ে বলল,
—“কোথায় বসবো?সামনে না পিছনে?”
রোদ্দুর সামনের দরজা খুলে বলল,
—“এখানে!”
অহি দ্বিরুক্তি না করে উঠে পড়লো।রোদ্দুর স্যার তাকে সহজে ছাড়বে না।কিন্তু তার যতদ্রুত সম্ভব বাড়িতে পৌঁছাতে হবে।তার চেয়ে রোদ্দুর স্যারের সব কথা মেনে নিয়ে এক ফাঁকে বেরিয়ে পড়লেই হবে!
রোদ্দুর গাড়ি স্টার্ট দিল।পুরান ঢাকার কলতা বাজার নামক এক ঘিঞ্জি এলাকায় অহির বাড়ি।গাড়ি সেদিকেই ছুটছে।অহি কিছু বললো না।রোদ্দুর স্যার তাদের বাড়ি চিনে।প্রথম বার তার বাবাকে গ্রেফতার করতে এই মানুষটাই গিয়েছিল।তার চকিতেই দেড় মাসের আগের ঘটনাটা মনে পড়লো!
সেদিন অহির বিয়ে ছিল।তার বিয়ের দিন বরপক্ষ এসে পৌঁছানোর আগেই নানা বয়সী এক গাড়ি পুলিশে বাড়ি ভরে গেল।বাইরে থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি আর প্রচুর হট্টগোলের আওয়াজে চমকে উঠে অহি।দ্রুত বিছানা থেকে নেমে জানালার ভাঙা অংশের ফুটো দিয়ে বাহিরটা দেখার চেষ্টা করে।বিয়ের কনেকে যে এত সহজে বাইরে বের হতে নেই!
তাদের ভাড়া বাড়ির সদর দরজার সামনে যে কয়েক হাত উঠোন তাতে তিল ধারণের জায়গা অবশিষ্ট নেই।সাত আট জন সরকারি পোশাক গায়ে লোক গম্ভীর মুখে দাঁড়িয়ে আছে।আর তাদের ঘিরে বিয়ে উপলক্ষে আসা দূর সম্পর্কের উৎসুক মানুষজন ভিড় জমিয়েছে।
অহি ব্যস্ত ভঙ্গিতে এদিক ওদিক তাকাল।কিন্তু এত মানুষের ভিড়ে কোনো পরিচিত মুখ নজরে এলো না।তার বাবা কই?
সে শাড়ির আঁচল ভালো মতো গায়ে জড়িয়ে বাইরে বের হলো।তার গায়ে দু একবার ব্যবহৃত অল্প দামের শাড়ি।যার মাঝে মাঝে ছোপ ছোপ রঙ উঠা!সে এসবে পাত্তা না দিয়ে ভিড় ঠেলে সামনে এসে দাঁড়াল।ততক্ষণে পুলিশগুলো চেয়ারে বসে পড়েছে।বিয়ে উপলক্ষে ২৫ টা চেয়ার ভাড়া করে আনা হয়েছিল।তারা সেখানেই নিজেদের আসন পেতেছে!
অহি যে বিয়ের কনে হয়ে বাইরে বের হয়েছে তার দিকে কারো নজর নেই।সবাই আকাশের রঙ গায়ে মেখে বসে থাকা পুলিশগুলোর দিকে পলকহীন চোখে তাকিয়ে আছে।
সে কয়েক সেকেন্ড নিয়ে নিজেকে শক্ত করে শান্ত গলায় বললো,
—“বাড়িতে পুলিশ কেন?”
এতক্ষণে সবাই ঘোর কেটে তার দিকে তাকাল।কিন্তু কেউ কোনো উত্তর দিল না।চারিদিকে পিতপতন নিরবতা যেন!মরা বাড়িতেও এত নিঃশব্দতা বিরাজ করে না।ইনিয়ে বিনিয়ে কান্নার আওয়াজ অন্তত থাকে।
অহি জোর গলায় বললো,
—“কি হলো?কেউ কথা বলছেন না কেন?পুলিশ কেন বাড়িতে?মা কই?বাবা কই?শফিক কোথায় গেল?”
অহির গা থরথর করে কাঁপছে।বিয়ে নিয়ে চিন্তা করে দুদিন ঠিকমতো খাওয়া হয়নি।আজ সকাল থেকেও সে না খেয়ে।মাথা প্রচন্ড ঘুরছে।সামনের সবকিছু ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।সে কি অজ্ঞান হয়ে যাবে?অজ্ঞান হলে বিয়ে কে করবে?তার জায়গা কবুল বলার মতো কেউ কি আছে?
মাথা এলিয়ে পরে যেতে নিতেই কেউ একজন স্বযত্নে হাত চেপে ধরলো।চিকন পুরুষালি একটা কন্ঠ কানে বাজলো।ক্ষীপ্র গলায় বলছে,
—“একটা চেয়ার দিন এদিকে।উনাকে বসাতে হবে।আর কেউ একটু পানি নিয়ে আসুন।কুইক!”
কেউ একজন তার পিঠে হাত রেখে যত্ন করে চেয়ারে বসিয়ে দিল।চেয়ারে বসে যেন অহি একটু শক্তি ফিরে পেল।বন্ধ হয়ে যাওয়া চোখের পাতা খুলে সামনে তাকাল।তার সামনে পুলিশের পোশাক পরা এক সুদর্শন যুবক চিন্তিত মুখে দাঁড়িয়ে আছে।চোখে চোখ পরতেই সে হাতের গ্লাসটা তার দিকে বাড়িয়ে বলল,
—“আপনি একটু পানি খান।বেটার ফিল করবেন।”
অহি হাত বাড়িয়ে গ্লাসটা নিয়ে ঢকঢক করে পানি খেল।এখন একটু ভালো লাগছে।পানির গ্লাসটা হাতে রেখেই তার সামনে কিছুটা ঝুঁকে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার দিকে তাকাল।মানুষটার বুকের ডানপাশে ছোট্ট করে নাম খোদাই করা।’রোদ্দুর হিম’! নামটা সে মনে মনে দুবার উচ্চারণ করলো।
তার কিছুক্ষণ পরেই অহির বাবা জলিল এলো।হাতে বাজারের থলে নিয়ে।পুলিশ বাড়িতে দেখে তিনিও চমকে যান।কিন্তু পরক্ষণে আর নিস্তার পেল না।পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেল।জলিলের অপরাধ হলো তিনি যে ব্যাংকের পিয়ন,সেই ব্যাংকের অন্য একটা পিয়নকে পুরনো বিবাদের রেশ ধরে জলিল মেরে ফেলেছে।
গতকাল রাতে তার লাশ পাওয়া গেছে।পকেটে একটা রশিদ ছিল যেটা প্রমাণ করে ভিক্টিমের কাছে তিন মাসের বেতন মিলিয়ে হাজার পঁচিশেক টাকা ছিল।যেদিন টাকা তুলেছে সেদিনই খুন হয়েছে।যেটা জলিল খুন করে নিয়েছে।কেউ কেউ কানাঘুষা করছে টাকাটার জন্যই জলিল তাকে খুন করেছে।মেয়ের বিয়ের খরচের জন্য তার টাকার একান্ত প্রয়োজন ছিল।
পুলিশ যখন জলিলকে ধরে নিয়ে গেল তখন জলিল একটা কথাও বললো না।কোনো প্রতিবাদ করলো না।যেন সে জানতো এই সময়ে পুলিশ আসবে।অহিও কোনো টু শব্দ করলো না।কোনো কান্নাকাটি করলো না।যেন জমে পাথর হয়ে গেছে।বাড়িতে শুধু একটা মানুষ কান্না করলো।যে এখনো করে। সে হলো অহির মা।যিনি কান্না করে আর সবসময় অহিকে গালিগালাজ করে।কারণ এসব নাকি অহির জন্য হয়েছে।
সেদিন সন্ধ্যা হতেই বরপক্ষ আসলো।কিন্তু বিয়ে হলো না।কারণ বরপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দিল তারা একটা খুনীর মেয়েকে বাড়ির বউ করবে না।অহি তখনো কান্না করলো না।নিশ্চুপ সব মেনে নিল।আস্তে আস্তে বাড়ি ফাঁকা হয়ে গেল।খুনী পরিবারের সাথে কোনো আত্মীয় যোগাযোগ রাখলো না।আসামির খাতায় তাদেরো নাম উঠতে পারে এই ভয়ে!
—“তোমাকে দেখে অনেক উইক লাগছে।কতদিন হলো খাওয়া বন্ধ করেছো?”
রোদ্দুরের প্রশ্নে অহির ঘোর কেটে বাস্তবে ফিরে।সে বড় করে শ্বাস নিয়ে বলল,
—“সকালে খেয়েছি।”
—“খবরদার আমাকে মিথ্যে বলবে না।রিমান্ডে নিবো কিন্তু তোমাকে!আমি ইনভেস্টিগেশন অফিসার হিসেবে সব মামলার তদন্ত করি।কারো মুখ দেখলেই বুঝতে পারি তার মনের খবর!আমার কাছে মিথ্যে বলার আগে সাত বার ভেবে বলবে!”
—“জ্বি!”
—“কি খাবে বলো?কোন রেস্টুরেন্টে গাড়ি থামাব?”
অহি উত্তর দিল না।আজকাল সে অনেক কথারই কোনো উত্তর দেয় না!সামনের ব্যস্ত সড়কে গভীর দৃষ্টিতে সে তাকায়।একটা বয়স্ক লোকের কোলে কয়েক মাস বয়সের ফুটফুটে একটা বাচ্চা মেয়ে।বাচ্চা মেয়েটার মুখের সাথে অহি নিজের হারিয়ে যাওয়া অতি প্রিয় কারো সাদৃশ্য খুঁজে পেল।এই প্রথম তার বুক ভারী হয়ে আসলো।অশ্রুগ্রন্থি তরতর করে জানাল যখন তখন অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যায় ভাসাবে!অহি দাঁত কামড়ে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা চালিয়ে গেল।
সঙ্গে সঙ্গে ফোনের রিংটোন কানে আসলো।রোদ্দুর স্যারের ফোন বাজছে।কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে গাড়িটা নিরাপদ আশ্রয়ে সাইড করা রাখলো রোদ্দুর।ফোনটা হাতে নিয়ে বলল,
—“চুপচাপ বসে থাকো অজান্তা।আমি বাইরে থেকে কথা বলে আসছি।ইম্পর্ট্যান্ট কল!”
রোদ্দুর গাড়ির দরজা খুলে বের হয়ে গেল।গাড়ি থেকে বেশ দূরে গিয়ে কথা বলছে।অহি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো।এই সুযোগ!এই সুযোগে তাকে পালিয়ে যেতে হবে ক্ষণিক সময়ের জন্য।তার কোলের উপর থাকা ছোট্ট থলের মতো ব্যাগ থেকে কলম আর খাতা বের করলো।বাবা জেলে যাওয়ার পর থেকে এগুলো তার ব্যাগে রেখেছে।যখন তখন প্রয়োজন পড়ে।
কলম খাতা তার নয়।এগুলো তার দুই বছরের ছোট ভাই শফিকের।শফিক এবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে।পড়াশোনার সাথে অহির সম্পর্ক নেই বছর চারেক হলো।তেইশ বছর চলছে তার।এতদিনে হয়তো ভার্সিটির পাঠ চুকে যেত।
খাতার একটা পৃষ্ঠা ছিঁড়ে তাতে গুটিগুটি অক্ষরে লিখল,
“শ্রদ্ধেয় স্যার,
আমি আপনার সব শর্তে রাজি।শুধু আমার বাবাকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করুন।প্লিজ!”
এটুকু লিখে ড্রাইভিং সিটের উপর কাগজের টুকরো ভাঁজ করে রাখলো।তারপর আস্তে করে দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে গেল।এক পলক রোদ্দুরের দিকে তাকালো।রোদ্দুর হাত নেড়ে নেড়ে কাউকে কিছু বুঝানোর চেষ্টা করছে।অহি চোখ সরিয়ে সামনে তাকালো।বড় বড় পা ফেলে রোদ্দুর নামক মানুষটার আড়ালে চলে গেল।ইশ!এভাবে যদি সে সারাজীবন মানুষটার আড়ালে থাকতে পারতো! যদি কোনোদিন আর দেখা না হতো!
দশ মিনিট পর রোদ্দুর গাড়ির কাছে আসলো।ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে দরজা খুলে বলল,
—“স্যরি!অনেক লেট হয়ে……. ”
সামনে তাকাতেই তার চোখ ছানাবড়া!মেয়েটা নেই!দরজা বন্ধ করে সে দ্রুত এদিক ওদিক হেঁটে খুঁজলো।কিন্তু অহির গায়ের গন্ধও নেই।রোদ্দুর রিমান্ডে আসামিদের যে জঘন্য গালি দেয় তার বেশ কয়েকটা নিজেকে দিল।এত গর্দভ কেন সে?গাড়ির ডোর লক করে গেলেই হতো!আর পালাতে পারতো না।
নিস্তেজ শরীরে সে দরজা খুলল।ড্রাইভিং সিটে বসতে নিতেই কাগজটা নজরে এলো।কাগজটা হাতে নিয়ে দরজা বন্ধ করে সিটে বসে পড়লো।
এবড়ো থেবড়ো করে কাগজ ছেঁড়া।ভেতরের লেখা পড়ে রোদ্দুরের মুখে প্রশান্তির হাসি ফুটে উঠলো।মেয়েটা এত অদ্ভুত কেন?নিজের চারপাশে কেমন রহস্যের মায়াজাল বিছিয়ে রেখেছে।রোদ্দুর সেই মায়াজালে আটকে গেছে।এখন না বের হয়ে আসতে পারছে,না কাছে যেতে পারছে!মেয়েটার এই রহস্যের মায়াজাল ভেদ করে তার কাছে পৌঁছাতে হবে যে!
২.
রোদ্দুরের গাড়ি থামলো ছবির মতো সুন্দর ডুপ্লেক্স একটা বাড়ির সামনে।সামনের লনে প্রচুর সবুজ ঘাস আর ফুলের বাগান।বাগানের বেশিরভাগ ফুল বিদেশি। সে গাড়িটা দক্ষিণ দিকে পার্ক করে কলিং বেল চাপলো।দরজা খুলে দিল নাজমা খালা।রোদ্দুর নিজের বাড়িতে ঢুকে বলল,
—“খালা, মায়ের জন্য খাবার প্যাকিং করো।ফ্রেশ হয়ে নিয়ে যাব আমি!গতকাল যেতে পারিনি।আজ যেতেই হবে!”
—“জে আচ্ছা! ”
রোদ্দুর আর কথা বাড়াল না।দ্রুত সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেল।প্রথম ধাপে পা রাখতেই তার বাবার কন্ঠ কানে আসলো।মুহূর্তে রোদ্দুরের চোয়াল শক্ত হয়ে গেল।
—“রোদ্দুর, এদিকে এসো!কথা আছে।”
রোদ্দুর ঘুরে দাঁড়িয়ে তার বাবার দিকে তাকালো।তার বাবা আজাদ রহমান সোফায় বসে পেপার পড়ছে।তার সামনের ছোট্ট কাচের টেবিলে এক গ্লাস লেবুর শরবত।শরবতে টুকরো টুকরো বরফ এখনো ভাসছে।আজাদ রহমানের বিশাল বড় বিজনেস।বৈধ অবৈধ ভাবে প্রচুর টাকা ইনকাম করেছে এবং এখনো করছে।রোদ্দুর অন্য দিকে তাকিয়ে বলল,
—“তাড়াতাড়ি বলুন।কাজ আছে আমার!”
আজাদ রহমান পেপারে মনোযোগ দিয়ে বলল,
—“তোমাকে আর কতবার বলবো যে চাকরি ছেড়ে দাও!ও দু পয়সার চাকরি করতে হবে না।আরে আমার অফিসে এসির নিচে বসে যে রোগা ছেলেটা কম্পিউটার চালায় ওর বেতনও তো তোমার থেকে বেশি।তোমার বেতন আর কত?বিশ -তিরিশ বা তার চেয়েও কম।রাইট?কাল থেকে অফিসে জয়েন করো।আমার একা সামলাতে কষ্ট হচ্ছে।”
—“আপনাকেও আর কতবার বলবো যে আমি মরে গেলেও আপনার অফিসে জয়েন করবো না।এরচেয়ে আমার দু পয়সার চাকরি ঢেড় ভালো।যদিও আপনাকে এসব বলার প্রয়োজন মনে করছি না,তবুও বলছি!আমি সেকেন্ড ক্লাস অফিসার হয়েই কয়েক মাস পর সিঙ্গাপুর সীমান্তে একটা মিশনে যাব।ওখান থেকে ফিরলে আমার যোগ্যতা অনুসারে প্রমোশন হতে পারে।সরাসরি ASP! আসছি!”
আজাদ রহমান এবার পেপার রেখে রোদ্দুরের দিকে চেয়ে তীক্ষ্ণ নজরে বলল,
—“খুব তো বড় বড় কথা বলো।এদিকে বাপের গাড়ি নিয়ে ফুটানি করছো।আজ আবার কোন থার্ড ক্লাস মেয়েকে গাড়িতে চড়িয়েছিলে?কোন ভিক্ষুকের বাচ্চা? ঝোলা কাঁধে কে ওই মেয়ে?”
রোদ্দুর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না।বুকপকেট থেকে চাবির গোছা হাতে নিয়ে ঢিল দিয়ে রাগান্বিত কন্ঠে বলল,
—“থুথু ফেলি আপনার গাড়িতে।কাল থেকে আমি পায়ে হেঁটে অফিসে যাব।আর লাস্ট বারের মতো বারণ করছি আমার পেছনে গোয়েন্দা সেট করবেন না!”
তারপর ধুপধাপ পা ফেলে উপরে উঠে গেল।
৩.
সারাদিনের ক্লান্ত শরীরটা বিছানায় মেলে দিতেই অহির ফোনটা বেজে উঠলো।সে শুয়ে আছে ছোট্ট একটা রুমে।কাঠের চৌকির শক্ত বিছানায়।ফোনটা হাতের নাগালে নেই।জানালার পাশের পায়া ভাঙা টেবিলের উপর।ফোন আনতে হলে তাকে উঠতে হবে।
বাবার বিষয়ে জরুরি কল ভেবে অহি উঠে পড়লো।যতক্ষণে ফোন হাতে নিল ততক্ষণে কেটে গেছে।পুরনো বাটন ফোন।কললিস্টে গিয়ে দেখলো রোদ্দুর স্যার দিয়ে সেইভ করা নাম্বার।সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় বারের মতো ফোন বেজে উঠলো।অহি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কল রিসিভ করলো।কানে নিয়ে বিনীত স্বরে বলল,
—“আসসালামু আলাইকুম স্যার!”
(চলবে)
অসংখ্য ধন্যবাদ এবং ভালোবাসা সবাইকে পাশে থাকার জন্য।পড়তে থাকুন।সব ক্লিয়ার হবে।পুলিশ প্রফেশন সম্পর্কে প্রচুচুচুর জ্ঞান না থাকলেও গল্প লেখার জন্য যতটুকু দরকার ততটুকু রপ্ত করার চেষ্টা করেছি।❣️🥰 ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো।🤎রাতে বোনাস পার্ট দেয়ার চেষ্টা করবো।🙂
(চলবে)
#গল্পের_নাম: ||গাঙচিল||
#লেখিকা: অজান্তা অহি (ছদ্মনাম)
#পর্ব_০১
আস্তে আস্তে সব ক্লিয়ার হবে।পুলিশ প্রফেশন নিয়ে তেমন আইডিয়া নেই।ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো।🙂