#পর্ব_১৮
গল্পঃ #ভালোবেসে_মরেছি🍂❣
writer: #Ashura_Akter_Anu
__________________
রাতে সবাই একসাথে খাওয়াদাওয়া শেষ করে যে যার রুমে চলে যায়।
মিহুও নিজের খাওয়া দাওয়া শেষ করে চলে আসে, কিন্তু অর্নব বাইরেই রয়ে যায়। চাঁদ ওঠা আকাশ দেখতে যে তার অনেক ভালোলাগে। তাই এই মূহুর্তটাও মিস করতে চায় না সে।
রুমে ফেরার পথে মিহু অর্নবের রুমের সামনে এসে থেমে যায়। একটু ইচ্ছে হচ্ছে ওর,অর্নবের রুমে ঢোকার৷ তাই দরজাটা একটু ফাঁকা করে ভেতরে উঁকি দেয়।
ঠিক তখনই পেছন থেকে একজন খুক খুক করে কেশে ওঠে৷ মিহু থতমত খেয়ে দরজা বন্ধ করে পেছনে তাকায়। দেখে তিথি সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
–কিরে? স্যারের রুমে তুই কি করছিস?
তিথির এমন প্রশ্ন শুনে চোখ উল্টাতে থাকে। মনে মনেই নিজেকে গালি দেয় সে। কিছু না ভেবেই উত্তর দেয়,
–আগে বল তুই এখানে কি করছিস?
–কি করছি মানে কি?রুমে যাচ্ছি।
–ওহহ।তা তোর পার ঠিক হয়ে গেছে?(চোখ ছোট করে)
–হ্যা রে, ভালো তো হবেই। স্যার নিজে এসে পায়ে মেডিসিন লাগিয়ে দিয়ে গেছিল আরও দু বার।আমি কত্ত না করলাম তাও লাগিয়ে দিয়ে গেল। ইশশ রে, আমি তো ওনার প্রেমে পরে গেছি মনে হয়। (দু গালে হাত দিয়ে)
মিহু কতাটি শুনে চিতকার দিয়ে বলে,
–“কিহহহ?”
তিথি চমকে ওঠে।
–কিরে চিতকার দিলি যে?
–দিবো না তো কি হ্যা?কি শুরু করেছিস?স্যারের প্রেমে কেউ পড়ে? উনি তো তোর কত্ত বড়।
–কোথায় বড়?ওনার এজ তো সাতাশ হবে হয়তো।আমি তো ভেবে নিয়েছি, গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করে ওনাকে প্রপোজ করবো।
মিহুর চারপাশে বাংলা ছায়াছবির মতো বজ্রপাত হলো।
তিথি আর কিছু না বলে মুচকি হাসতে হাসতে চলে গেল। এদিকে মিহুর প্রায় কাঁদো কাঁদো অবস্থা। অর্নব যদি তিথির প্রোপোজাল একসেপ্ট করে নেয় তাহলে?
এরপর নিজেই আবার ভাবে,আমি কি পাগল নাকি?এসব নিয়ে আমি কেন ভাবছি।ওরা যা করে করুক। ধুর। আমি আমার প্লান নতুন প্লানে মনোযোগ দিই।
রুমে গিয়ে মোবাইলটা নিয়ে নিজের পার্সোনাল গার্ড এর কাছে ফোন করে।
–হ্যালো, ইয়েস ম্যাম বলুন?
–আপনাকে যে কাজটা করতে বলেছিলাম সেটা করেছেন?(দৃঢ় গলায়)
–ম্যাম কাজটা হয়ে গেছে। আপনার কথামতো কাল ওরা সময়মতো ঠিক জায়গায় পৌঁছে যাবে।
–ওকে ফাইন।কোন ভুল যেন না হয়।ওকে?আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখান থেকে ফিরে আসবো। কালও চলে আসার সম্ভাবনা আছে।
–ওকে ম্যাম।
–লিসেন ওয়ান মোর থিং,ছোট আব্বু কেমন আছে?।
–ম্যাম উনি ভালো আছেন।আপনার কথামতো ওনাকে বলেছি আপনি দুবাই আছেন।
–গুড।
ফোনটা কেটে দিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে মিহু।শান্তির ঘুম কখনো ঘুমোয়নি সে। সবসময় একটা কষ্ট চেপে রেখেছে নিজের মাঝে। আজও সে কষ্টটা আছে। তবে এখানকার হাওয়ায় আলাদা জাদু আছে।এখানে আসার পর থেকেই কেমন যেন অনেক হালকা লাগছে ওর কাছে। আজ যাই হোক শান্তির ঘুম হবে হয়তো।
মিহু শান্তির ঘুম ঘুমোলেও একজোড়া চোখ এখনো জেগে। সেই চোখ দুটোও চায় মিহু ঘুমোক। তবে জীবনের মতো।কিন্তু আজ পর্যন্তও সে এ কাজে সফল হতে পারেনি। অনেক চেষ্টা করেও কিচ্ছুটি করতে পারেনি শুধু একজনের জন্য,আর সে হলো মিহুর পার্সোনাল গার্ড শাফিন । যে প্রচন্ড চালাক।মিহুর জীবনে ঘটে যাওয়া সকল কিছু সে জানে।মিহুর ক্যারেক্টারটির ব্যাপারে সবকিছুই সে জানে । আজ পর্যন্ত তার কারনে মিহুর গায়ে কোন আঁচ লাগেনি। শাফিন মিহুর কাছে খুবই বিশ্বস্ত। মিহুও শাফিনকে প্রচুর বিশ্বাস করে।
🍂
____________
আজকে মিহু মরতে মরতে বেচে গেছে। সেটা অবশ্য অর্নবের জন্য। অর্নব পাশে না থাকলে আজ সে হয়তো বেচে থাকতে পারতো না।
গাড়ি করে সবাই মিলে ঘুরতে বেরিয়েছিল।রাস্তার ধারেই গাড়ি পার্ক করে সবাই বেরিয়ে পড়ে। তবে গাড়ির দরজার ভেতর মিহুর জামা আটকে লক হয়ে যায়। ধীরে সুস্থেই জামাটা সে ছাড়াচ্ছিল। একটু পর দেখতে পায় দূর থেকে একটা কালো গাড়ি অনেক স্পিডে আঁকাবাকা করে চলে আসছে। মিহুর শত্রুর অভাব নেই।ওর কেন জানি মনে হচ্ছে গাড়িটা ওর দিকেই আসছে। জামাটা টেনে ছিঁড়ে ফেলতে চাইছে তবে পারছে না।গাড়িটা আরও কাছে চলে আসছে। মিহুর মনে হচ্ছে কোনভাবে আজকে সে নাও বাচতে পারে। এ জন্য চোখটা বন্ধ করে নিজের বাবা মায়ের কথা মনে করতে থাকে সে।
এর মাঝে অর্নব দৌড়ে একটা বটি দা এনে মিহুর জামাটা কেটে রাস্তার পাশেই ঝাপ দেয়। কালো গারিটা মূহুর্তের মাঝে এসে ওদের গাড়িটা চূর্ণবিচুর্ন করে রেখে যায়।
মিহু চোখ খুলে দেখে অর্নব ওকে জড়িয়ে মাটিতে পড়ে আছে। অনেকটা ভয়ও পেয়েছে দেখে মনে হচ্ছে। তাই অর্নবকে ও জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।
ওদের আশেপাশে লোকজন জড় হয়ে যায়।অর্নব মিহুকে উঠিয়ে বসালে একজন ওর হতে পানির বোতল ধরিয়ে দেয়।অর্নব নিজের হাতেই ওকে পানিটা খাইয়ে দেয়।
অর্নব ভাবে,মিহুর রেস্ট নেয়া উচিত। তাই ওকে কোলে তুলে নেয়। মিহু অর্নবকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। একটা গাড়ি করে ওরা রিসোর্টে ফিরে আসে।
______
“”আজকের প্লানটাও আনসাকসেসফুল শিট্””
.
.
#চলবে___
.
.