#তুই_যে_শুধুই_আমার [ ❤You are only mine❤ ]
#সিজন_২
#Part_4
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat [ Tanzin Islam Ishika ]
।
🌻এইদিকে🌻
সায়রা বাসায় এসে ধাম ধাম পায়ে বাসার ভিতরে ধুকে,, তা দেখে আমিনুল সাহেব মানে সায়রার বাবা বুঝতে পারেন যে তার মেয়ে কোন কারনে অনেক রেগে আছে,, সায়রা রুমে গিয়ে নিজের ব্যাগ বেডে ফেলে ধারাম করে বেডে শুয়ে পড়ে,, আমিনুল সাহেব তখন সায়রার রুমে আসে,, দেখে সায়রা শুয়ে আছে,, তিনি সায়রার পাশে গিয়ে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে,, মাথায় কারো স্পর্শ পেয়ে সায়রা চোখ খুলে দেখে বাবা,, বাবাকে দেখে সে উঠে বসে,,
।
সায়রাঃ বাবা তুমি,,
।
আমিনুল সাহেবঃ কিরে তুই আজকে আমার সাথে কথা না বলেই চলে আসলি,, এমন তুই যখন রেগে থাকিস তখনই করিস,, তা আজকে রেগে থাকার কারন কি,,
।
সায়রাঃ আমায় তুমি এত ভালো কিভাবে বুঝো,, আমার মুড কেমন তা আমায় দেখে কিভাবে বলে দাও,,
।
আমিনুল সাহেবঃ কারণ আমি তোর বাবা,, তোকে আমি না বুঝলে কে বুঝবে বল,, আর এমনেও বাবাদের কাছে না একটা স্পেশাল পাওয়ার থাকে জানিস,, তারা তাদের সন্তানের চেহারা দেখেই তাদের সন্তানের মনের কথা বুঝে যেতে পারলি বুঝলি,,
।
সায়রাঃ হুম,,
।
আমিনুল সাহেবঃ তা বল এখন কি হয়েছে,,
।
সায়রা এইবার সব খুলে বলে,,, সব শুনে আমিনুল সাহেব হেসে বলে,,
।
আমিনুল সাহেবঃ এতটুকুর জন্য এমন করার কি দরকার ছিল শুনি,, সামান্য ট্যান্টই তহ পড়েছিল আর একটা মিরোরই তহ ভেঙ্গেছিল,, ঠিক করে নিলেই তহ হতো,,
।
সায়রাঃ মোটেও না,, তুমি জানো না আমার কাছে তোমার দেওয়া সামান্য জিনিসও কত মূল্যবান,, আর তারউপর এই স্কুটি তুমি আমায় নিজে এফডি ভেঙ্গে তারপর কিনে দিয়েছিলে,, আমার না করা সত্তেও,, তাহলে বুঝো এইটা আমার কাছে কত স্পেশাল,,, আমি এইটা তে একটা আচড়ও সহ্য করতে পারবো না,, তুমি আমার জন্য কি তা আমি বলে বুঝাতে পারবো না,,
।
আমিনুল সাহেবঃ আমার জন্য এতটা পজেসিভ হওয়াটা কি ঠিক বলতো,, আমি কি আর সারাজীবন তোর সাথে থাকতে পারবো বল,,
।
সায়রাঃ চুপ,, একদম বাজে বকবে না,, পৃথিবীতে যদি কাউকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসি তা হলে তুমি,, তোমার কিছু হলে আমি সহ্য করতে পারবো না,, মরে যাব আমি,, কাদো কাদো হয়ে,,
।
আমিনুল সাহেবঃ আরেহ আরেহ কানছিস কেন,,
।
সায়রাঃ তহ কি করবো,, আর কোন এমন কথা বলবে না তা না হলে আমি বাসা ছেড়ে তোমায় ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাব,,
।
আমিনুল সাহেবঃ হাইরে আমার পাগলি মেয়ে,, এত ভালবাসিস আমায়,,
।
সায়রা নিজের বাবাকে জরিয়ে ধরে বলে,,
।
সায়রাঃ হ্যাঁ অনেক বেশি ভালবাসি,, অনেক অনেক বেশি,,,
।
তখন পিছন থেকে ইমা বেগম মানে সায়রার মা বলে উঠে,,
ইমা বেগমঃ আর আমায় তহ কেউ ভালবাসে না, সব ভালবাসা তহ দুই বাপ আর মেয়ে ভাগাভাগি করে নিলে,, আমার জন্য তহ কোন কিছুই অবশিষ্ট রইলো না,,
।
সায়রা তখন বাবাকে ছেড়ে দিয়ে মাকে জরিয়ে ধরে বলে,,
সায়রাঃ কে বলেছে তোমায় কেউ ভালবাসে না,,, আমি বাসি তহ,, তাও এতত গুলা,,
।
তখন পিছন থেকে আমিনুল সাহেব বলে উঠে,,
।
আমিনুল সাহেবঃ আমিও বাসি তহ,,
।
ইমা বেগমঃ হইসে পাম দিতে হবে না,, জানা আছে আমায় কে কত ভালবাসে,,
।
সায়রাঃ মায়ায়া,, এমন বলতে পারলা,, কাদো কাদো হয়ে,,
।
ইমা বেগমঃ হইসে তোর আর ইমোশনাল ড্রামা করতে হবে না,,, যা ফ্রেশ হয়ে আস আমি খাবার সার্ভ করছি,,, তোর পছন্দের পাস্তা রেঁধেছি,,,
।
সায়রাঃ সত্যি,,
।
ইমা বেগমঃ হ্যাঁ,,
।
সায়রা ওর মার গালে একটা চুমু খেয়ে বলে,,
।
সায়রাঃ ইউ আর দি বেস্ট মম এভার,,
।
ইমা বেগমঃ হাইরে পাগলি মেয়ে আমার,, যা ফ্রেশ হয়ে আস,,
।
সায়রা কিছু না বলে খুশি হয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়,, তা দেখে ইমা বেগম আর আমিনুল সাহেব এক গাল হেসে রুম থেকে চলে যায়,,,
।
।
সকালবেলা,,
সায়রা রেডি হয়ে বেরিয়ে যায় অফিসের জন্য,, অফিসে এসে বসের ওয়েলকামের জন্য সব কিছু রেডি করতে শুরু করে,, প্রায় কিছুক্ষণ পরেই বস চলে আসে,, সকলেই ফুলের তোড়া নিয়ে তাকে ওয়েলকাম জানানোর জন্য দাড়িয়ে থাকে,, সায়রাও একটি ফুলের তোড়া নিয়ে দাড়িয়ে আছে,,
এমন সময় দরজা দিয়ে একটা ছেলে ভিতরে প্রবেশ করে,, ব্লু সুট এন্ড প্যান্ট পড়া,, ভিতরে অফহোয়াইট শার্ট,, চুল গুলো সিল্কি হওয়ায় কপালে এসে পড়েছে,, হাতে একটা ব্লু বেল্টের ঘড়ি,, চোখে ব্লু সেডের সানগ্লাস,, সকলের বুঝতে দেরি নেই যে এইটাই তাদের বস,, সব মেয়েরা তহ দেখে হা,,
সেই ছেলেটি সামনে এসে দাড়াতেই নিশি গিয়ে তাকে ওয়েলকাম জানায়,,
।
নিশিঃ Welcome sir.. Glad to have you again😊
।
ছেলেটি উত্তরে শুধু এক মুচকি হাসি দিল,, তখন নিশি তাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়,,
।
নিশিঃ গাইস এনি হচ্ছে আমাদের এই ফ্যাশন হাউসের ওনার মি. আরুশ খান এন্ড এস ওয়েল এস আ প্রফেশনাল ডিজাইনার,, সবাই নিশ্চয়ই তার শুনেছো,,
।
নিশির কথ সকলেই মাথা ঝুলায় যার মানে হ্যাঁ তারা চিনে,, এইদিকে সায়রার কেন জানি ছেলেটাকে চেনা চেনা লাগছে,, কিন্তু মনে করতে পারছে না কই দেখেছে,, চশমার জন্য চেহারাটা ক্লিয়ার না,,
সায়রা এই নিয়ে বেশি মাথা না ঘামিয়ে হাতের ফুল গুলো দেখতে থাকে,,
সকলেই একেক করে আরুশকে ফুল দিয়ে স্বাগতম জানাচ্ছে,, দেখতে দেখতে সায়রার পালা এসে পড়ে,, সায়রা হাসি মুখেই ফুলের তোড়াটা এগিয়ে দেয় আরুশের হাতে,, আরুশ তখন কিছুক্ষণ সায়রার দিকে তাকিয়ে থাকলো,, তার পর হাতে থাকা বাকি ফুল গুলো পাশের টেবিলে রেখে নিজের চশমা খুলে দাড়ায়,, এইবার সায়রা তাকে চিনতে পারে,, এইটা সেই কালকের মি. উগান্ডার প্রেসিডেন্ট থুক্কু ওই গাড়িওয়ালা পোলাটা,,
আরুশকে চিনার সাথে সাথে সায়রার চেহারার হাসি আকাশে উড়ে গিয়ে কালো মেঘের পিছে লুকিয়ে যায়,, আর এক চেহারায় এক ঝাক কালো মেঘ নিজের জায়গা দখল করে নেয়,,
আরুশ সায়রার এমন বাংলা পেঁচের মত মুখ দেখে এক বাকা হাসে,,
।
আরুশঃ Don’t you like to welcome me??
।
সায়রা এইবার মনের মধ্যে সাহস যুগিয়ে বলে,, ফুল বাড়িয়ে বলে,,
সায়রাঃ ইয়াহ হোয়াই নোট,, ওয়েলকাম মি. খান
।
আরুশ ফুলের তোড়াটা নিয়ে বলে,,
।
আরুশঃ থেংক ইউ,,
।
সায়রা কিছু না বলে চুপচাপ সাইডে সরে আসে,,, তখন আরুশ বলে,,
।
আরুশঃ আই হ্যাভ টু সে সামথিং ওল অফ ইউ,, সো লিসেন মায় ওয়ার্ডস কেয়ারফুললি,, আই ডোন্ট রিপিট আ থিং টুয়াইস,, গোট ইট,,
।
সবাই মাথা নাড়ায়,,
।
আরুশঃ গত ১ বছর আমি দেশে ছিলাম না,, একটা ডিজাইনিং কোর্সের জন্য,, তখন আমার অনুপস্থিতিতে নিশিই আমার জায়গায় সকলকে গাইড করে এবং নতুন অনেককেই এড করে,, দ্যাটস নোট আ বিগ ডিল,, বাট এখন থেকে আমি সব কিছু আমিই দেখা শোনা করবো,, আর আমার রুলস অনুযায়ী সকলকে চলতে হবে আর তা মানতে হবে,,
আপনারা অনেকই আছেন যারা এইখানে খুব বেশি দিন ধরে কাজ করছেন না,, তাই আপনারা হয়তো আমার সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না,, আর যেহেতু এখন থেকে আপনারা সবাই আমার আন্ডারে কাজ করবেন সেহেতু আপনাদের আমি রুলস গুলো ক্লিয়ার করে দিতে চাই,,
আমার অফিসে লেট করে আসা যাবে না,, লেট করে আসলে তাকে সেইদিন ১ ঘন্টা ওভারটাইম করতে হবে,, কাজের প্রতি কোন টাইপ অনিহা দেখানো যাবে না,, সপ্তাহে একবার সকলের জন্য একটা প্রেজেন্টেশন আয়োজন করা হবে যেখানে আপনারা আপনাদের সকল ডিজাইনস প্রেজেন্টেশন করবেন,, আর এইটাতে মাস্ট সবাইকে থাকতেই হবে,, সকলের এক্টিভিটি আমি নিজে চেক করবো,, যাদের এক্টিভিটি একদম লো হবে তাদের এইখান থেকে বের করে দেওয়া হবে,, আমার এইখানের ভুলের মাফ নেই,, ভুল হলে শাস্তি ভোগ করতেই হবে,, এখন ভুলটা আমার দ্বারাই হক না কেন,, আমাকেও শাস্তি পেতে হবে,,আমার সব কথা ওয়ার্ড টু ওয়ার্ড শুনতে হবে,,গোট ইট,,
।
সবাই শুধু মাথা ঝুলায়,,
।
আরুশঃ এন্ড ইয়েস ওয়ান মোর থিং,, আপনারা কেউ নিজ ইচ্ছায় চাকরি ছাড়তে পারবেন না,, এইখানে আসার আগেই আপনাকে একটা এগ্রিমেন্টে সাইন করানো হয়েছে সেখানে ক্লিয়ারলি লিখা ছিল যে আপনারা একবার এইখানে আসলে ৬ বছরের আগে নিজ ইচ্ছায় জবটা ছাড়তে পারবেন না,, কিন্তু আমি যখন তখন যে কাউকে বরখাস্ত করতে পারবো,, আশা করি সকলেই এইবার ক্লিয়ার,,, নাও গো ব্যাক টু ইউর ওয়ার্ক,,
।
এই বলে আরুশ নিজের কেবিনে চলে যায়,, আর সবাই এইবার একেকজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করে,, কি বলবে বুঝতে পারছে না,, এইদিকে এইসব রুলস টুলস শুনে সায়রার মাথায় বাশ পড়সে,, সায়রা মূর্তির ন্যায় দাড়িয়ে আছে,, ঠিক তখন,,
।
।
#চলবে