মোনালিসা
লেখা-ইসরাত জাহান তানজিলা
পর্ব-৩২
মোনা’কে বাসার সামনে পৌঁছে দিয়ে প্রিয়ম চলে যায়। মোনার আজ অফিসেও যাওয়া হয়নি। অস্থি মজ্জায় শুধু এখন প্রিয়ম’কে নিয়ে ভাবনা গেঁথে আছে। প্রিয়ম যে মোনার
অহর্নিশ উদ্বেগের কারণ হয়ে ওঠবে সেটা মোনা কয়েকদিন আগেও বুঝতে পারেনি। মোনার মনের সরল স্বীকারোক্তি সে প্রিয়ম কে ভালোবাসে। কিন্তু এটা মুখে প্রকাশ করতে অজ্ঞাত কারণে মোনার আত্মসম্মানে আঘাত হানে যেন। এটা মুখে প্রকাশ করা মানে যেন নিজের ব্যর্থতা। নিজের ব্যর্থতার কেউ কি কখনো প্রকাশ করে?মোনার মনে হচ্ছে ও প্রিয়ম’কে ভালোবাসে নি বরংচ প্রিয়মের কাছে হেরে গেছে। মোনা বিবশ চিত্তে নিজেই যেন বিমূঢ় হয়ে যায় প্রিয়ম’কে ভালোবেসে ফেলেছে এই ভেবে। ভালোবাসা জিনিস’টা বড্ড অদ্ভুত যেন! নিজের আপন খেয়ালে চলে।
লিলি বেগম ছেলের বউ হিসেবে বিভা’কে প্রত্যাশা করে। লিলি বেগম মোনা’কে খুব বেশি ভালোবেসেছে, মায়ের অপূর্ণতা পূর্ণ করার চেষ্টা করেছে। মোনা’কে যতই ভালোবাসুক কিন্তু প্রিয়মের সাথে মোনার প্রেম এমন কিছু প্রত্যাশা করবে না।যে মানুষ’টা এত ভালোবেসেছে তাঁর অপ্রত্যাশিত কাজ করবে? তাঁর আশা ভঙ্গ করবে? অন্যদিকে হাবিব সাহেব, ঘৃন্যিত একটা মুখ। পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ যেন। এমন কত শত যুক্তি রয়েছে প্রিয়ম’কে ভালো না বাসার। কিন্তু ভালোবাসার এক অদ্ভুত নিয়ম আছে। হাজার হাজার যুক্তি তার কাছে পরাস্ত। বিবেকের স্বচ্ছ চিন্তা-ভাবনা গুলোরও ঠাঁই নেই তার কাছে। ভবিষ্যতে কি হবে ,কি হবে না? এসব ভাবনা গুলোও যেন তখন অনাদৃত। সব কিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে শুধু একটা মন্ত্র’ই যেন দিগ্বিদিক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
মোনা অন্যমনস্ক হয়ে এসব চিন্তায় বিমগ্ন থাকে। কতক্ষণ ধরে কলিংবেল বেজে চলেছে। কলিংবেলের শব্দ মোনার কানে বিদ্ধ হলেও, অবচেতন মস্তিষ্কে দরজা খোলার সায় দিচ্ছে না। খানিক বাদে মোনার সম্বিত ফিরে যেন। ছুটে গিয়ে দরজা খুলে। নিশান দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মুখে নিদারুণ বিরক্তি, এতক্ষণ পর দরজা খোলায়। মোনা দরজা বন্ধ করে পুনরায় স্বীয় ভাবনায় মগ্ন হয়। মোনার দিনের অর্ধেকই যেন কাটে নানান চিন্তাভাবনায়।
প্রিয়ম অফিসে ব্যস্ত থাকায় আগের মত সারাক্ষণ ব্যাপি আর মোনা’কে বিরক্ত করা হয়ে ওঠে না। প্রিয়মের সে সব বিরক্তকর কাজ গুলো শূন্যতা হয়ে হৃদয়ে উঁকি দিচ্ছে যেন। প্রিয়মের যে সব বিরক্তকর কাজ গুলো’তে রাগে মোনার শ্বাসরুদ্ধ হয়ে যেত, মাথার রগ গুলো দপদপ করত। সে কাজ গুলোও প্রচণ্ড মিস করছে। মোনার এসব অবান্তর চিন্তা-ভাবনার অবসান ঘটে নিশানের ডাকে। রান্নার কথা যেন ভুলেই গেছে। মোনা নিজের উপর বিরক্ত হয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে কিচেনে যায়। দ্রুত হাতে সব কাজ করে।
___
কয়েক দিন ধরে প্রিয়মের সাথে অনামা এক সম্পর্ক যাচ্ছে মোনার। মোনার স্বীয় স্বীকারোক্তির অভাবে এটা’কে প্রেম বলে অভিহিত করা যাবে না। প্রিয়ম দিনে দুচার বার ফোন দিয়ে খোঁজ নিবে। তেমন কোন কথা হয় না। খেয়েছ, কি করছো এসব ধরণের কথা। তবুও এর মাঝে ভালোলাগা, প্রশান্তি রয়েছে। অন্যরকম এক অনুভূতি রয়েছে ।
মোনার জীবন নিয়মমাফিক’ই চলছে। সকালে উঠে নাস্তা তৈরি করা,নিশান’কে স্কুলে পাঠানো, নিজে ভার্সিটি’তে যাবে,ভার্সিটি শেষে অফিস করে বাসায়।একই নিয়মে আবদ্ধ হয়ে চলছে জীবন।
প্রিয়ম মাঝে মাঝেই সকালে অফিসে যাওয়ার পথে মোনার সাথে দেখা করে যাবে। সকালে কলিংবেলের শব্দ ধ্বক করে পাঁজর কাঁপিয়ে দেয় মোনার। কলিংবেল বাজা মানেই একটা শব্দ যেন মোনার মন, মস্তিষ্ক জুড়ে তরঙ্গিত হয়।সেটা হলো সে এসেছে। মোনা প্রতিদিনের ন্যায় আজও উন্মত্ত হয়ে দরজা খোলে। দরজা খুলতেই প্রিয়মের স্নিগ্ধ হাসি মোনার মন জুড়ে শিহরণ জাগায়। প্রিয়মের গায়ের ঘ্রান’টা মোনার নাকে ভেসে আসে মৃদু বাতাসে। এই ঘ্রান’টার অপেক্ষায় অধীর হয়ে থাকে যেন। প্রিয়ম চেয়ার টেনে বসলো। মোনা ছুটে কিচেনে গেলো, নাস্তা বানানো শেষ হয়নি। নিশানের কে কাছে ডাকলো প্রিয়ম। নিশান প্রিয়মের কাছে এসে জড়সড় হয়ে দাঁড়লো। নিশানের মুখ দেখে মনে হয় প্রিয়ম’কে ভয় পায় ও। প্রিয়ম হেসে বলল,
-“নিশান তুমি আমায় দেখলে আড়ষ্ট হয়ে থাকো কেন?ভয় পাও?”
নিশান মাথা ঝাঁকিয়ে না বলে অন্য রুমে চলে যায়। প্রিয়ম চেয়ারে বসে বসে মোনা’কে দেখছে। রান্নাঘরের জানালা দিয়ে রুম থেকে স্পষ্ট দেখা যায়। প্রিয়ম চেয়ার ছেড়ে উঠে। শব্দহীন পায়ে ধীরে ধীরে রান্না ঘরের দিকে এগিয়ে যায়। মোনা কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে দ্রুত। প্রিয়মের উপস্থিতি টের পায় না। মোনার কপালে ভোরের শিশিরের মতো বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। মোনা বাম হাতের উল্টো পাশ দিয়ে ঘাম মুছছে। প্রিয়ম নিঃশব্দে কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকে সেখানে।প্রিয়ম হঠাৎ পিছন থেকে দুই হাতে মোনার কোমড় জড়িয়ে ধরে। মোনা অকস্মাৎ প্রচণ্ডভাবে চমকে পিছনে ঘুরতেই প্রিয়ম’কে দেখে। খুব কাছে প্রিয়ম। মোনা সর্বাঙ্গে কেঁপে উঠে মুহূর্তেই মুখ ঘুরিয়ে ফেলে। মোনার হাত-পা মৃদু কাঁপছে যেন। শ্বাস-প্রশ্বাস কয়েক মুহূর্তের জন্য বন্ধ হয়ে গেলো। মোনার শিরা উপশিরায়,শরীরের প্রতি রন্ধ্রে রন্ধ্রে তোলপাড় শুরু হলো। মোনা রোধ হয়ে আসা কন্ঠে বলল,
-“ছাড়ুন।”
প্রিয়ম ছাড়লো না। প্রিয়মের নিঃশ্বাস মোনার শরীরে বিঁধছে। অদ্ভুত এক স্পর্শানুভূতি মোনার শরীর মন অবশ করে রেখেছে যেন। যেখানে প্রিয়ম’কে বাঁধা দেওয়ায় ইচ্ছা খুব ক্ষীণ। প্রিয়ম আবেগপূর্ণ হয়ে ধরা গলায় বলল,
-“ছাড়বো না। বলো ভালোবাসো আমায়?”
কি এক ধারালো মোহময় ছিলো সে গলা। প্রখর মোহে মোনা যে আচ্ছন্ন হয়ে গেলো। মোনা দুর্বল গলায় বলল,
-“ছাড়ুন।”
প্রিয়মের মুখ মোনার ডান কাঁধ বরাবর। ঠোঁটের উষ্ণ ছোঁয়া ধারালো ভাবে বিঁধছে সেখানে। নেশাগ্রস্ত মানুষের মতো অচেতন হয়ে শক্তিহীন পায়ে দাঁড়িয়ে রইল মোনা। প্রিয়ম পুনশ্চ জিজ্ঞেস করল,
-“মোনা ভালোবাসো আমায়?”
প্রিয়মের মিহি স্বরের কথা টুকু মোনার কান অবধি পৌঁছে। মোনা ঘোরলাগা অবস্থায় কোন ভাবনা চিন্তা বাদে প্রিয়মের স্পর্শেদ্রি’তে বিবশ হয়ে বলল,
-“ভালোবাসি।”
মোনার মুখ থেকে নিঃসৃত হওয়া এই একটা শব্দ শোনার জন্য প্রতীক্ষা করেছে মাসের পর মাস। সেই কাঙ্ক্ষিত শব্দ’টা শুনে প্রিয়মের মন জুড়ে বসন্তের হিমেল পবন মৃদু ভাবে বইতে লাগল। প্রিয়ম চোখ বন্ধ করে যেন সেই বসন্ত পবনের স্নিগ্ধাতা অনুভব করছে যেন। মোনা তীব্র সুখকর অনুভূতি’তে অবশ হয়ে বজ্রাহত মানুষের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকে যেন। কেউই কোন কথা বলছে না। মানুষ যখন খুব কাছে আসে তখন মুখে কথা হয়না,কথা হয় যেন হৃদয়ে হৃদয়ে নিঃশব্দের নীরবতায়।
প্রিয়ম মোনা’কে নিজের আলিঙ্গন থেকে মুক্ত করে দেয়। মোনা তাকায় না প্রিয়মের দিকে। প্রিয়মের দিকে তাকানো মোনার জন্য এখন পৃথিবীর সব থেকে দুরূহ কাজ যেন। মোনার ইচ্ছে করছে প্রিয়মের দিকে তাকিয়ে প্রিয়মের মুখাবয়ব দেখার। কিন্তু অস্বস্তি জড়িমা তার আপন চিত্তে মোনায় জড়িয়ে রেখেছে। মোনা ছুটে চলে যায় রুমে। গিয়ে দরজা বিকট শব্দে বন্দ করে দেয়।বন্ধ দরজার এপাশে দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে প্রিয়মের দেওয়া অনুভূতি টুকু এখনো অনুভব করছে যেন। সে অনুভূতির রেশ এখনো কাটেনি।
মোনা কয়েক মুহূর্ত পর চোখ খুলে। একটু তফাতেই বসে আছে নিশান। প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকায় মোনার দিকে। মোনা চোখ-মুখ স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। নাস্তানাবুদ মুখে নিশানের দিকে তাকায়।
-“স্কুলের যাওয়ার সময় হয়েছে।আসো রেডি করিয়ে দিই।”
মোনা নিশানের সাথে কথা বলছে কিন্তু মস্তিষ্কে একটু আগের অনুভূতি আন্দোলিত হতে থাকা। হৃৎপিণ্ড জুড়ে শীতল রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে যেন। মোনা অন্যমনস্ক ভাবে নিশান’কে রেডি করিয়ে দিচ্ছে। দরজার বাইরে থেকে প্রিয়মের কন্ঠ মোনার কানে আসে।
-“মোনা দরজা আটকে রেখেছো কেন?”
মোনা উত্তর দেয়না। প্রিয়মের মুখোমুখি হওয়ার সাহস হারিয়ে ফেলেছে। ওপাশ থেকে পুনশ্চ বলে,
-“মোনা আমি চলে যাচ্ছি।”
মোনার গলার স্বর মন্থর। বলল,
-“যান।”
মোনার প্রত্যুত্তর প্রিয়মের কানে হয়ত পৌঁছেছে নয়ত পৌঁছে নি।প্রিয়ম নির্বিবাদে চলে যায় কথা বাড়ায় নি। ঘটনার রেশ কাটতে মোনার বেশ সময় লেগেছে। এমন অনুভূতির সাথে মোনা প্রথম পরিচিত হওয়া। প্রথম প্রেমানুভূতি, প্রথম স্পর্শানুভূতি প্রচণ্ড তীক্ষ্ণ, প্রখর,শাণিত। যার রেশ কাটতে সময় একটু বেশি লাগে।
___
মোনা ভার্সিটি’তে যায়। সব কিছু’তে অমনোযোগী। কেউ কোন কথা বললে বিহ্বল চিত্তে হ্যাঁ, হুঁ বলে। হঠাৎ প্রবল জোরে একটা ধাক্কা পড়লো মোনার কাঁধে। হঠাৎ এমন আক্রমনে মোনা অপ্রস্তুত ভাবে কেঁপে উঠলো। পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখে শ্রুতি দাঁড়িয়ে আছে। মোনা ভড়কে গিয়েছে দেখে শ্রুতি হাসলো। পলকেই গম্ভীর হয়ে বলল,
-কি হয়েছে মোনা তোমার? সারাক্ষণ চিন্তিত ভাব নিয়ে বসে থাকো?আমায় বলা যায় না?”
শ্রুতি এই টুকু বলে মোনার পাশে বসল ঘনিষ্ঠ হয়ে। তারপর আবার মোনার কাঁধে মৃদু ধাক্কা দিয়ে আগ্রহী গলায় পুনর্বার বলল,
-“কি হয়েছে বলো তো? তমসাচ্ছন্ন ভাব নিয়ে থাকো।”
মোনা শ্রুতির দিকে তাকিয়ে হাসলো। কোন এক অজ্ঞাত কারণে মোনার শ্রুতির কাছে বলতে ইচ্ছে হয়না কিছু। মোনা হাই তুলতে তুলতে বলল,
-“আরে কিছু না। বাংলাদেশের কথা মনে পড়লো হঠাৎ।”
শ্রুতির কাছে কথা’টা গ্রহনযোগ্য মনে হলো না কেন জানি। বরাবরের মতো পুনরায় আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না।
-“বলবে না তুমি আমার কাছে। যাকগে বাদ দিই। আচ্ছা ভার্সিটির পর রেস্টুরেন্টে যাবে?”
-“তোমার আর সমীরের মাঝে কাবাবের হাড্ডি হতে যাবো?”
-“আমার সাথে যতবার গিয়েছো কখনো কি তোমার নিজেকে কাবাবের হাড্ডি মনে হয়েছে? আমরা অমন না।”
শ্রুতি একটু থামে। হঠাৎ একটা কথা মাথায় আসে।বলবে কি বলবে না তাই নিয়ে দ্বিধান্বিত হচ্ছে। ইতস্তত বোধ করে বলেই ফেলল,
-“প্রিয়ম কে আসতে বলি?”
কথা’ট বলেই মোনার দিকে তাকিয়ে বিদ্রুপ স্বরূপ জিহ্বায় কামড় দেয় শ্রুতি। মোনার প্রতিক্রিয়া যে এ ব্যাপারে ভয়াবহ সে শ্রুতি পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারে। কিন্তু শ্রুতির ধারণা মিথ্যা হলো। মোনা স্বাভাবিক গলায় বলল,
-“প্রিয়ম এখন অফিসে।”
স্বাভাবিক নিয়মের বিঘ্ন ঘটেছে যেন। শ্রুতি ভ্রু কুঁচকে তাকালো। আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলল,
-“প্রিয়মের কথা বললাম তাও এত স্বাভাবিক গলায় উত্তর দিয়েছে। বিশাল পরিবর্তন!”
মোনা হেসে বলল,
-“তোমার কি ধারণা আমি সব সময় মানুষের সাথে রুক্ষ ব্যবহার করি? আর প্রিয়মের কথা বললে আমি রাগ করবো কেন?”
-“হ্যাঁ পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে আমার তো সে ধারণাই ছিলো।প্রেম-ট্রেম হয়ে গেলো নাকি?”
মোনা বিরক্ত হয়ে তাকালেও কয়েক মূহুর্ত পর হেসে দিলো। নিপুণতার সাথে প্রসঙ্গ দ্রুত পাল্টাতে বলল,
-“তোমার আর সমীরের বিয়ের ব্যাপারে কি হলো?”
কথার স্রোতে প্রিয়মের ব্যাপার’টা হারিয়ে গেলো। মোনা এটাই চেয়েছিল। কিছুক্ষণ পর আবার ক্লাস শুরু হয়।
ভার্সিটি শেষে শ্রুতি খুব জোর করলো মোনা’কে রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাওয়ার জন্য। মোনা নানান অজুহাতে গেলো না। সমীর আর শ্রুতির মাঝে অস্বস্তি লাগে মোনার। মোনা ওঁর অফিসে যায়। রাতে হয়ত প্রিয়ম ফোন দিবে নয়ত দেখা করতে আসবে। কিভাবে যাবে প্রিয়মের সামনে? মোনার মুখ রক্ত জবার মত রক্তিম হয়ে ওঠে লজ্জায় কিংবা অস্বাচ্ছন্দ্যে।
___
মোনা অফিস শেষে বাসায় ফিরে। আগের মত আজ আর ক্লান্ত লাগেনি। অফিস থেকে এসে নিশানের পাশে বসে গল্প করে,নিশান’কে সঙ্গ দেয় কতক্ষণ। তারপর ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে। মোনা প্রতীক্ষা করছে একটা ফোন কলের নয়ত ম্যাসেজ টিউনের।মোনার স্পহণীয় ম্যাসেজের টিউন বাজে।
“বারান্দার নিচে আমি।একটু আসো। লজ্জাবতী রানী কে দেখি।”
মোনা বারান্দায় যেতে উদ্যত হয়। আবার মন্থর হয়ে যায়। অস্বস্তি জেঁকে ধরেছে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে,বুকের ভিতর দুরুদুরু করছে। আবার কয়েক পা সামনে বাড়ায়। তমসাবৃত রাত। ঘন আঁধারের চাদর চারদিক’টা জড়িয়ে রেখেছে। অন্ধকারে শুধু প্রিয়মের হাতে মোবাইলের টর্চে একটা মানব আকৃতি বুঝা যায়। মুখ দেখা যায় না। মোনা জানে প্রিয়ম কালো শার্ট বা টি-শার্ট গায়ে।যা অন্ধকারের সাথে মিশে আছে।
মোনার হাতের টর্চের আলো আর রুম থেকে আসা আলো’তে প্রিয়ম মোনা’কে স্পষ্ট দেখছে। মোনার মুখে রক্তিম সূক্ষ্ম বর্ণ ফুটে উঠেছে। এই অন্ধকারে সেটা হয়ত প্রিয়মের দৃষ্টিগোচর হয়েছে নয়ত হয় নি। কিছু চমৎকার মুহূর্ত এভাবে নিঃশব্দে কেটে যায়। যার সাক্ষী এই তিমির রাত।
(চলবে)
Kothay haria gelen dada golpo ta ses korben na naki next part ta Kobe pabo Khub interesting golpo ta
আজ বাকী পর্বগুলো আপলোড দেবো। পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আর বন্ধুদেরও আহ্বান করুন আমাদের ওয়েবসাইটে এসে গল্প পড়তে।