শেষ বিকেলের আলো পর্ব ৪

শেষ বিকালের আলো
তানিশা আহমেদ
পর্ব ৪

আচমকা রুমাইসার হাত টেনে দাড় করিয়ে দিল কেউ। রুমাইসা ভয়ে আরো জোরে চিৎকার করে উঠল। পেছন থেকে লোকটা চিৎকার করে বলল “আজ তোরে পাইসি আমি, মাইরাই ফালামু “।

রুমাইসাকে আটকে দেওয়া মানুষ টার দিকে তাকাতেই রুমাইসা দেখল এক বয়স্কা মহিলা। বয়স খুব সম্ভবত ৬০ এর মত হবে। তবে শরীরে এখনো বেশি শক্তি আছে। কারন খুব জোরে রুমাইসার হাত ধরে আছে। বাচ্চা টা খুব জোরে জোরে কান্না করছে আর রুমাইসা ভয়ে আতঙ্কে জমে যাচ্ছে।

লোকটার দিকে তাকিয়ে বয়স্কা মহিলা বলল ” রাত বিরাইতে মাল খাইয়া তোর মাথা গেসে নাকি মহি? ”

রুমাইসা বিষ্ময়কর চোখে একবার মহিলার দিকে তাকাচ্ছে একবার লোকটার দিকে। লোকটা ফোস ফোস করছে দাড়িয়ে দাড়িয়ে। কিন্তু সামনে আগাচ্ছে না। লোকটা এবার মুখ খুলল।

“চাসি, সামনের তে সইরা যা তুই। এই হারামজাদি আমারে অনেক জ্বালাইসে। আজকা ওর মাইয়া আর ওরে কব্বরে পাঠামু আমি। আমার যা হোওনের হোক গা।”

মহিলক হুংকার ছেড়ে বলল “ত, যাইয়া তোর বউরে ধর গা। এই ছেড়ি কি দোষ করছে। এইডা তোর বউ বাচ্চা না। ”

কথা শেষ করতেই সেই খালা নামক মহিলা টাও চলে আসল। সে এক রকম আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করল “কি হইসে রহিমা আফা চিল্লাও কেন রাইতে? ”

রুমাইসার হাত রহিমার হাতে দেখে পুনরায় জিজ্ঞেস করল “কিরে ছ্যাড়ি তুই হেনো কে? কি হইসে তোর?”

রহিমা নামক মহিলা টা খুব উচ্চস্বরে বলল “মহিরে থামা জুই এর মা। না হুলে আজকা মাইরাই ফালামু আমি ওরে। পাইসে কি হ্যা , এই বস্তির ভিত্রে ওর লাইগা দুই দিন পর পর অশান্তি আমি সইতাম না। আজকা এই ছেড়িরে ঘরের তে দৌড়ানি দিসে মাইরা ফালাইব।বউরে মারসে ৫ বছর আগে,অহনো হেইটার ঝাল মিটে নাই ওর। যারে না তারেই মারতে যায়। ”

রুমাইসা অবাক হয়ে সব শুনছিল। ভয়ে আরো জমে গেল, কারন লোকটা তাহলে আসলেই পেশাদার খুনি। ভয়ে হাত পা কাপছে ওর। একটু আগেই মা মেয়েকে মেরে ফেলতে নিয়েছিল লোকটা । গায়ে কাটা দিয়ে উঠল ওর।

রুমাইসা ইতিমধ্যে জানতে পারল সারাদিন যার সাহায্য নিয়ে চলছিল ওনাকে জুই এর মা বলে জানে সবাই। যাক এই উছিলায় নাম টা জানা হল ওর। মহি নামক লোকটা তখন যেন পুরো চোটে মাতাল হয়ে আছে। মাথায় কথা ঢুকছে না। বিরবির করে কি সব যেন বলছে একা একা। জুই এর মায়ের মাথা নিচু হয়ে গেল যেন এত কথা শুনে। চুপচাপ দাড়িয়ে থেকে কিছু সময় তারপর মহি নামের লোকটার নাম ধরে ডাক দিল।

“মহি বাবা ঘরে আয়। ঘরে যেয়ে ঘুমিয়ে থাকবি যা। ”

রহিমা নামক মহিলা টি যেন ফুসছে এক রকম। পারছে না লোকটা কে খুন করে দেয়। মহি তাও দাড়িয়ে থেকে টলছে এক রকম। আর বারবার কেবল একি কথা বলছে “ওই কলঙ্কিনী রে আমি মাইরা ফালামু। ”

রুমাইসার বুক কেপে উঠছে বারবার এটা শুনে। মনে হচ্ছে যেন ও কেই এসব কথা বলছে লোকটা। বাচ্চা টা কান্না থামাচ্ছেই না। রহিমা নামক মহিলা টা রুমাইসার হাত তখনো ধরে। ওর মেয়ের কান্না দেখে বলল “আয় ঘরে থুইয়া আসি তোরে।সারা রাইতেও আর দরজা খুলবি না কেউ ধাক্কাইলে। আয় আমার লগে ডর নাই। ”

জুই এর মা মাথা নিচু করে রুমাইসা কে বলল “যা আফার লগে রুমে যা আর ডর নাই। সকালে কথা কমু নে তোর লগে।”

মহি বাবারে ঘরে আয় দেহি। রাইত হইয়া গেসে অনেক। বেয়ানে উঠতে হইব কামে যামু আমি।

রুমাইসা দরজা আটকে বসে আছে রুমে। মেয়েকে ঘুম পারিয়ে জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছে বাইরে। খুব সাহস করে জানালার একটা কপাট খুলে দিয়েছে ও। আজকের ঘটনার পর ভয় টা যেন হুট করে কোথায় গায়েব হয়ে গেছে। এর থেকে ভয়ংকর আর কি হতে পারত ওদের সাথে। লোকটা থেকে বেচে না পালিয়ে গেলে হয়ত লোকটা এতক্ষনে ওদের লাশ ফেলে দিত এই রুমে। চোখেন কোন বেয়ে পানি পড়ছে। কি সুন্দর মুহুর্ত ছিল তখন। কিন্তু দুর্ভোগ নামল ওর আর অভির ভালোবাসা পূর্ণতা পাওয়ার পর ই।

সবে মাত্র ইন্টার পরীক্ষা শুরু হয়েছে। দুইটা পরীক্ষা ভালোয় ভালোয় দিয়েছে। হঠাৎ করেই তৃতীয় পরীক্ষার দুই দিন আগে বমি করে অবস্থা খারাপ। খাবারের গন্ধ নাকে নিলেই বমি আসছে। সবাই ভাবল পেটের সমস্যা হয়ত ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু রুমাইসার ততদিনে অনেকখানি বুঝ হয়ে গেছে। রুমাইসা ভয় পেয়ে গেল । ও আবার প্রেগন্যান্ট হয়ে গেল না তো। ভয়ে ভয়ে আত্মা উড়ে যাচ্ছে ওর। সকালেই টেস্ট করাতে হবে যে কোন উপায়ে। রাতে অভি কে ফোন দিয়ে সব জানাল।

অভি বারবার নিশ্চিত করছিল এটা মনের ভুল এমন কিছুই না। কিন্তু রুমাইসার মন মানতে নারাজ একদম। পরদিন কোন কারনে বাসা থেকে বের হতে পারে নি টেস্ট টাও সম্ভব হয় নি। এদিকে পরবর্তী এক্সামের আগে হাতে আর একদিন আছে। গত দুই দিনের টেনশনে কিছুই পড়তে পারি নি। রুমাইসা ঠিক করল, যা হওয়ার হবে আগে এক্সাম টা দেক। তারপর টেস্ট করবে। অভির দিক থেকে এসব ব্যাপারে কোন বাধা ছিল না। বরং অভি বারবার বুঝাচ্ছিল এক্সাম টা ঠিকভাবে দেওয়ার জন্য।রুমাইসার খুন গর্ব হয় ভালোবাসার মানুষ হিসাবে এমন কাউকে পেয়েছে। যে ওর সব রকম সিচুয়েশনে কিভাবে ম্যাজিক এর মত ওর পাশে দাড়ায়।

এক্সাম শেষ করেই বাসায় ফিরে টেস্ট করালো রুমাইসা। টেস্টের রেজাল্ট দেখে রুমাইসার আত্মা উড়ে গেল। পজেটিভ রেজাল্ট, কিভাবে সম্ভব । কাপা কাপা হাতে অভি কে ফোন দিয়ে সবটা জানালো। দুইজন ই ফোনের এপাশে ওপাশে নিশ্চুপ। কিছু বলার নেই যেন। তবুও অভি বলল কাল ওর সাথে হসপিটালে যেয়ে টেস্ট করাতে। অনেক সময় বাসায় রেজাল্ট উল্টাপাল্টা আসে।

রুমাইসার সারা রাত ঘুম হয় নি সেদিন। কি হবে সবাই যখন জানবে, নাকি অভি এর বাচ্চা এবর্সন করাতে বলবে। কিছুই ভালো লাগছে না ওর। পরদিন অভির সাথে হসপিটালে ডক্টর এর এপোয়েনপেন্ট নিল। ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করে ডক্টর যখন চেকাপ করাতে ওকে ভেতরে নিল সেই অনুভূতি টা কোন দিন ভুলবে না রুমাইসা। রুম থেকে মুখ কালো করে বের হয়েছিল ও। কারন রেজাল্ট আসলেই পজেটিভ। আর ও দুই মাস যাবত প্রেগন্যান্ট কিন্তু বুঝতে পারে নি একদম। থমথমে মুখ নিয়ে বাসায় ফিরল দুজন। কি করবে বাচ্চার। সারা রাস্তা রুমাইসা কান্না করেছে আর অভির কাছে বিয়ে করার আকুতি জানিয়েছে। অভি কোন উত্তর দেয় নি।

সাত দিন পর অভি জানালো এক্সাম শেষ হতেই ও বাসায় মানুষ পাঠাবে। ওদের সম্পর্ক টা কে এবার নতুন রূপ দিবে। শত হোক ওদের বাচ্চা আসছে দুনিয়ায়। কেন নিষ্ঠুর এর মত ওরা ফেলে দিবে ডাস্টবিনের কোনায়। রুমাইসার খুশি টা সেদিন দেখার মত ছিল। শুধু অপেক্ষা ছিল কখন পরীক্ষা শেষ হবে। আর অভি তো প্রতি ঘন্টায় ফোন দিয়ে নিজের বাচ্চার আর রুমাইসার খবর নিত।

সব তো ঠিক ই চলছিল এক্সম শেষ হল। এর মাঝে অভি গ্রামে গেল ওর বাসা থেকে মানুষ পাঠানোর জন্য।কিন্তু গ্রামে যাওয়ার পর হুট করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল অভির সাথে। ফোন, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো কোথাও অভির হদীস নেই। রুমাইসার তখন চার মাস চলছে। পেট কিছুটা ফুলে গেছে। ওর চলাফেরার উপর ফুপুর কিছুটা সন্দেহ জেগেছে ইদানীং। প্রতিদিন ই আজেবাজে কথা শুনায়। আর ফুপাকে বলছে ছেলে দেখতে ওর বিয়ে দিয়ে দিবে এবার। রুমাইসা খুব টেনশনে আছে অভিকে নিয়ে। চার টা রাত কেটে গেছে অভিকে ছাড়া। রুমাইসা পারছিল না শুধু ওর গ্রামে ছুটে যায়। কিন্তু ও শুধু জানে অভি সিলেটের কোন এক জায়গায় থাকে। কোন দিন জিজ্ঞেস ও করে নি অভিকে।

আবার এক সপ্তাহ পর অভি ফোন দিয়ে জানাল বাসায় বেশ সমস্যা হয়েছে তাই আসতে পারে নি। আর ওর ফোন চুরি হয়ে গিয়েছিল তাই যোগাযোগ ও করতে পারি নি।তবে খারাপ খবর হল ওর বাসায় ও কে এখন বিয়ে করাবে না। এই নিয়ে ঝামেলা চলছে। রুমাইসার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। এবার কি হবে।প্রায় প্রতিদিন ই রুমাইসার কথা হত অভির সাথে। আর অভি ও কে আশ্বাস দিতে বাসায় রাজি করাবে। কিন্তু ১৫ দিন পাড় হওয়ার পর কোন সুরাহ না দেখে অভি শহরে ফিরে আসল।

অভি রুমাইসা কে বলল আর কয়টা দিন ম্যানেজ করতে। অভি আলাদা ফ্ল্যাট নিবে। ওর একাই বিয়ে করে নিবে কাউকে লাগবে না ওদের। কারন রুমাইসা জানে অভির হাতে কোন দিন মেয়ে দিবে না ওর ফুপু। রুমাইসা রাজী হল। এর মাঝে পাচ মাসে পড়তেই ওর পেট অনেক বেড়ে গেল। এবার ফুপির সন্দেহ একদম বেড়ে গেল। এক রকম গোয়েন্দাগিরি করে বের করে ফেলল রুমাইসা প্রেগন্যান্ট। আর পায় কে ওনাকে, পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলল। অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করতে লাগল। খুব মারল রুমাইসা কে সেদিন। রুমাইসার ফুপা এ খবর শুনে নিস্তেজ হয়ে গেল। ওর ফুফাতো ভাই ছিল বয়সে ওর অনেক বড়। সে ও ওইদিন খুব মারল ও কে। এক রকম ডিসিশন নেওয়া হল বাচ্চা এবর্শন করে দিবে ওরা। এ পাপ নিয়ে সমাজে বাচা যাবে না । এবর্শন এর পরেই বিয়ে দিবে, পাত্র ঠিক করা আছে ওর ফুপুর।সে রাতে কত হা পা ধরল রুমাইসা কেউ শুনল না। ওর ফোন টাও নিয়ে নিল ওর কাছ থেকে।

সে ঘটনার এক মাস কেটে গেছে। রুমাইসা এখন অভির কাছে আছে। অভি সেদিন জোর করে সবার সামনে থেকে রুমাইসা কে নিয়ে এসেছে। এসব কাহিনির পর ওর ফুপুর বাড়ি থেকে রুমাইসার সাথে সব সম্পর্ক ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ওর যত জিনিস আছে সব পাঠিয়ে দিয়েছে। রুমাইসা একদম ভেঙে পড়েছিল তখন। কিন্তু অভির সাপোর্ট আর ভালোবাসায় সবটা সামলে আবার নিজেকে দাড় করিয়েছে। তখনো ওদের বিয়েটা হয় নি। এতকিছুর মাঝে বিয়ে জিনিসটা নিয়ে অভি কোন ভ্রুক্ষেপ করে নি রুমাইসাও ভাবে নি। সময়টা যখন ভালো চলছিল তখন রুমাইসা বিয়ের আবদার করল। অভিও রাজি হল বিয়ের জন্য।রুমাইসার তখন সাত মাস। নড়াচড়া করা একদম নিষেধ ওর জন্য। তবুও বিয়ের আবদার টা অভি না করে নি। তবে চাকরির জন্য একদম সময় হচ্ছিল না ওর। একটু বেশি টাকার জন্য আগে থেকে ই ছুটির দিনগুলোতে সময় দিত অফিসে। রুমাইসা বারবার না করেছিল কিন্তু অভির এক কথা, আমার বাবুটা অভাবে বড় হবে সেটা আমি চাইব নাকি।

সাত মাসের শেষ এর দিকে সেপ্টেম্বর ২৮ তারিখে ওরা বিয়ের ডেট ফিক্সড করল। সবকিছু কেনাকাটা শেষ। মেহমান বলতে দুইজনের ক্লোজ কিছু বন্ধু বান্ধবী।২৮ তারিখ সকাল বেলায় হঠাৎ খবর আসল অভির মা হার্ট এটাক করে হসপিটালে ভর্তি। অভি যেন টাকা নিয়ে এখনি হস্পিটালে চলে আসতে। অভি এক মুহুর্তে ভেঙে পড়ল। একে আজ বিয়ের দিন, তারপর রুমাইসার এখন সাত মাস বাসায় কেউ নেই দেখার। আর ওর মা ওইদিকে হসপিটালে কি করবে এখন। রুমাইসা নিজেকে শক্ত রেখে অভি কে সাহস দিল ও একা থাকতে পারবে। অভি যেন যায় ওর মায়ের কাছে। অভি অবশেষে সবকিছু গুছিয়ে রাজি হল তার আগে যা যা লাগে রুমাইসা কে কিনে দিয়ে গেল।

রুমাইসা বাস্তবে ফিরে আসল। ইচ্ছে করছে চিৎকার দিয়ে কান্না করতে। তারপর এর ঘটনা টা যেন ওর জন্য ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত একদম।

সেদিন অভি পৌঁছে ফোন দিয়ে জানালো ও ঠিক আছে আর রুমাইসা যেন ঘন ঘন কল না দেয় ও ব্যাক না করলে। দিন রাত গুলো যেন এক রকম যাচ্ছেতাই ভাবে কাটছিল। অভির চিন্তায় খেতে ইচ্ছে করে না ওর। কিছু ভালো লাগে না। যোগাযোগ নেই অভির সাথে কোন। ফোন দিলে কেউ ধরে না। দেখেত দেখতে আবার এক মাস চলে গেছে। ক্যালেন্ডার এর দিকে তাকিয়ে আছে রুমাইসা। এই ৮ টা মাসের ভেতর তিন টা মাস অভিকে খুব কাছ থেকে পেয়েছে। বাকি মাস গুলোতে অভির কোন না কোন সমস্যা লেগেই ছিল কিংবা ওদের দূরত্ব বেশি ছিল। নিয়তি ওর সাথে কি খেলা খেলতে চাইছে।

নভেম্বর ২,সকাল ১০ টা , রবিবার। রুমাইসার ফোনে হঠাৎ কল আসল অভির নাম্বার থেকে। রুমাইসা খুশিতে পাগল হয়ে ফোন রিসিভ করল। ওপাশ থেকে বাতাসের আর গাড়ির আওয়াজ আসছে। ওপাশ থেকে অভি বলল “জান কেমন আছো ? ”

রুমাইসা রাগ করে বলল “অভি আমায় ছাড়া কি বিয়ে করে ফেললে? একটা মাস একটুও খবর নিলে না? ”

“জান এগুলা তুমি কিভাবে বল। মাথা খারাপ। আম্মুর অবস্থা সিরিয়াস ছিল। পুরা একটা মাস কি গেছে আমার উপর দিয়ে জানো। না ফোন হাতে নিতে পারসি না কিছু। তার উপর বাসায় জমি জমা নিয়ে চাচাদের সাথে লাগল ঝামেলা। কি রেখে কি করব বল। আম্মু কে হারায় ফেলতাম আর একটু হলে।”

রুমাইসার খুব অনুশোচনা হল। অকারণে রাগ করছিল ওর উপর। “সরি জান। বুঝি নি। তুমি আমায় মাফ করে দেও প্লিজ প্লিজ। ”

“উফ এমন করে বল কেন। আমার বাবু কেমন আছে বল আর আমার সোনা পাখি টা কেমন আছ বল। ”

“দুজনি ভালো আছি। আমার বাবু তার বাবা কে মিস করছে। কবে আসবে জিজ্ঞেস করছে। ”

“আমার বাবুর আম্মু কে বলে দেও তার জান পাখি আসতাসে ঢাকা তে। সে যেন অপেক্ষা করে কোথাও না যায় উড়ে। ”

খুশিতে রুমাইসা আত্মাহারা হয়ে যায়। অনেকক্ষন কথা বলে ফোন রেখে দিল দুজন। রুমাইসার আজ খুশির দিন। পেটে হাত রেখে বলল “আম্মু,তোমার আব্বু আসছে অবশেষে আমাদের কাছে।”

সন্ধ্যা ৭ টা।রুমাইসা ফ্লোরে পড়ে আছে অজ্ঞান হয়ে। একটু আগে ফোন এসেছিল অভির নাকি এক্সিডেন্ট হয়েছে এবং স্পট ডেথ।তারপর ফোন টা কেটে গেছে আর কথা বলে নি। রুমাইসার চারিদিক অন্ধকার হয়ে গেছে।

(কেউ ভাববেন না গল্প টা এখানে শেষ । কারন গল্পের আসল পর্ব এখনো বাকি। এটা বাকি গল্প গুলা থেকে আলাদা হবে অনেকটা। আশা করি পাশে থাকবেন।কোথাও ভুল পেলে কমেন্টে কাইন্ডলি জানাবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here