ডেন্জারাস_ভিলেন_হাজবেন্ড পর্ব ১

—“মাইয়াটারে খুঁজতেই হবে। সে এদিক কোনো একখান জায়গায় লুকাইছে! দেরি করিসনা মাইয়াটারে খুঁজ।

কয়েকজন ছেলে মিলে একটা মেয়ের খুঁজে জঙ্গলের ভেতরে চলে আছে। কারণ মেয়েটা তাদের থেকে বাঁচতে জঙ্গলের গভীরে ঢুকে পড়ে।

—“এখন আমি কই যাবো? সব দিকে অন্ধকার। কোনো রাস্তাও দেখতে পাবো না বাচাঁর কোনো চাঞ্জই নেই। ইয়া খোদা কোনো এক কুলকিনারা দেখাও।
মেয়েটা গাছের পিছে পিঠ ঠেকে বসে মনে মনে বলল।

—“ঐ পাইছস?
—“না বস !
—“ছিঃ একটা মাইয়া খুঁজতে এতোক্ষণ লাগে?
—“সরি বস।
—“চুপ যদি লিডার জানে তাহলে আমাদের মধ্যে কাউকেও জিন্দা রাখবে নাহ শুনছস! যেভাবেই হোক মাইয়াটারে খুঁজ ।
—“ভাই……..তাদের মধ্যে এক ছেলে বসকে ইশারা করে গাছের দিকে তাকাতে বলে।

বস সেদিকে তাকিয়ে দেখে গাছের ডালে উড়নার খানিক অংশ লেগে আছে। সে দাঁত কেলিয়ে সবাইকে সেদিকে যেতে বলে। ধীর পায়ে সেই গাছের দিকে আগাতে লাগে।

—“এরা কি চলে গেছে? দেখব কি একবার ! দেখি এখানে বসে থাকলে হবে না সব মুসিবতে ভরা।

মেয়েটা গাছের বিপরীত দিক থেকে মাথা হালকা বাঁকিয়ে আড়চোখে সেই লোকগুলো আছে কিনা দেখার জন্যে তাকায়।
যখন দেখল লোকগুলো ঠিক সেই গাছের সামনাসামনি আসছে। মেয়েটা ভয়ে এদিক ওদিক তাকায়। মুখ বাঁপাশে ঘুরাতেই দেখল তার উড়না গাছের ডালে ঝুলিয়ে আছে। এতে তার মাথায় একটা বুদ্ধি চাপল।

মেয়েটা নিজের গলার উপর থেকে উড়না খুলে গাছের ডালের সাথে প্যাঁচ দিয়ে দিল।
ধীরে ধীরে হামাগুড়ি দিয়ে মেয়েটা গাছের পাশ থেকে উঠে পড়ে সেখান থেকে পিছে আগাতে থাকে।

—“চুপচাপ চল মাইয়াটা ওখান আছে।

মেয়েটা পিছিয়ে যেতে যেতে তাদের থেকে খানেক দূরে চলে আসে। সে সামনে তাকিয়ে দৌড় লাগাবে তার আগেই গাছের এক ডালে তার পা লেগে যায়। সে দূর হেঁটে এসেছে একজোড়া পুরান ছিঁড়া জুতা পড়ে। যা দৌড়াতে দৌড়াতে জুতার তলা ছিঁড়ে যায়। মেয়েটার পা ডালের কাঁটায় জোরে গেঁতে ঢুকে যায়। এতে ব্যথায় সে চিৎকার দিয়ে উঠে। মেয়েটার চিৎকার শুনে সবাই সেখানে তাকাতেই মেয়েটাকে দেখতে পাই।

—“ঐ ঐ মাইয়া ওখান চল চল।
বসের পিছে সব ছেলেরা তেড়ে আসতে লাগে। মেয়েটা নিজের হাটুতে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে একপা একপা করে জোরে হাঁটতে থাকে।
অন্ধকারে সে কোথায় যাচ্ছে জানে না ! তবে তার থেকে নিজেকে যেভাবেই হোক এদের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। এই প্রত্যাশা নিয়ে মেয়েটা হাটু ভর করে হাঁটছে।

বস ছেলেদেরকে আগাতে বলে নিজে দাঁড়িয়ে পকেট থেকে গার্ন বের করে মেয়েটার দিকে টার্গেট করে।
আর বলে—“দেখ থাইমা যাহ নাহলে তোরে মাইরা লিডারের কাছে নিয়ে যামু। থাম কইছি!

মেয়েটা ছেলেটার কথায় তোয়াক্কা না করে সামনে হাঁটতে থাকে। বস টার্গেট রেখে গানের ট্রিগারে আঙুল ঢুকিয়ে চাপ দে।
দেয়ার পর পরই বুলেট মেয়েটার দিকে চলে আসে। মেয়েটা সামনে তাকিয়ে হেঁটে যেতেই পিছে বুলেট তার দিকে তেড়ে আসতে দেখেই —“আহহহহহহহ। চিৎকার দিয়ে হাঁটতেই তার পা পিছলে পড়ে যায় পাহাড়ের নিচে গভীরে।

বস ভয়ে সে দিকে এসে দেখে জঙ্গলের উপর থেকে প্রায় ছয় ফিট নিচে নদী। সেখানে মেয়েটার পা পিছলে নিচে পড়ে গেল। সে কপাল এ হাত চেপে বসে পড়ে। ছেলেরা সবাই ভয়ে মাথা নিচু করে ফেলে।

—“এই কি হল? মাইয়া….মাইয়াটা নিচে পইড়া গেল। এ লিডার কাউরে জিন্দা রাখব না। মাইরা ফেলাইবো। সবাইরে মাইরা ফেলাবো……. বস পিছলা জায়গার কিছুটা কাছে এসে মেয়েটার কোনো ধরনের চিৎকার শুনা যায় কিনা দেখতে লাগে।
—” মাইয়ার কতাও হুনা যাইতাছে না। আমরা মরুম!

বসের কথায় সবাই তড়তড় করে কাঁপছে।

মেয়েটার চিৎকার উপরে ছেলেদের কান অব্দি পৌঁছাচ্ছে না। সে পাহাড়ের সাথে লেগে নিচে গড়িয়ে পড়ছে।
নদীর কাছে গড়িয়ে আসতেই পাহাড়ের গায়ে লেগে থাকা ডালটা ধরে ফেলল। সে ভয়ে আর্তকে সেটা জোরে চেপে ধরে। চোখ দিয়ে অজ্রস পরিমাণে নোনাজল বেয়ে পড়ছে তার। তাও বাঁচাবার জন্যে না আসে কোনো আপনজন না আসে কেউ। সে মুখটা কিছুটা ঘুরে নিচে তাকিয়ে দেখে। নদীর পানির ঢেউ খুব গভীর। পানির স্রোত আবহমানভাবে বয়ে যাচ্ছে।

—“এখান থেকে কিভাবে বের হবো? আশেপাশে কোনো দড়িও দেখছি না নিচে গভীর নদীর স্রোত পড়লে বাঁচা অসম্ভব মনে হচ্ছে! আহহহহ

—“আমার হাত ছুটে যাচ্ছে, গাছের ডালের অংশ ভেঙ্গে যাচ্ছে। তাহলে কি এখানেই শেষ আমার জীবন! কখনো কি আর কাউকে আমার জীবনে সঙ্গীরুপে পাবো না? হয়তো না এই দুনিয়ায় ভালোর চেয়ে খারাপের দামটায় প্রাধান্য ভালোর দাম আছে কিনা আদৌও জানতে পারলাম না হয়তো আর জানা হবেও না। অবেহলা,কুফা,খারাপ,নষ্টা,বাজে,অসহ্যকর মেয়ের কপালে ভালো বলতে কিছু নেই। বিদায় হয়ে যাওয়াটাই বেটার!

আস্তে আস্তে গাছের ডাল ভেঙ্গে পাহাড়ের গায়ের শেষ মূলে লেগে আছে। মেয়েটা আসমানের দিকে তাকিয়ে আল্লাহ চলে আসতেছি তোমার কাছে!

গাছের ডাল ভেঙ্গে গেল। মেয়েটা নিজের বাহুডোরা উয়া করে খুলে দিল। যেনো আসমানে কোনো এক পাখি উড়ছে নিজের মনের আনন্দ এ। হ্যাঁ সেও আনন্দ নিয়েই যাচ্ছে। হয়তো তার আশা-নিরাশা,,সুখ কপালে নেই বা হয়তো আছে থাকলে ত ফিরবেই আর না থাকলে সারাজীবনের জন্যে পরকালে চলে যাবে। ভাবনার মধ্যে ডুবে থেকে মেয়েটার চোখ দিয়ে আরেক ফুট নোনাজল বেয়ে পড়ল। সে শান্তিতে নিজের চোখজোড়া বন্ধ করে ফেলে।
হয়তো তার আর দেখা মিলবে না এই পৃথিবীতে। চিরজীবনের জন্যে ঘুমিয়ে পড়বে শান্তিতে।

মেয়েটা পানিতে পড়ে গেল। পড়তেই……সেখানের গভীরে চলে যায়🙂।

একবছর দুইমাস পর💥…….





—-“আমার মামুনি উঠবা নাহ? দেখো ভার্সিটির সময় হয়ে গেছে উঠো মা!

মিসেস রাহেলা বেগম নিজের মেয়েকে ঘুম থেকে উঠার জন্যে জানালার কাছে এসে পর্দা সরিয়ে দিলেন। রোদের জাপসা আলো উনার মেয়ের চোখে পরতেই হাই তুলে উঠে বসে।
মিসেস রাহেলা কে দেখে উনাকে জড়িয়ে ধরে।

—“গুড মনিং মাম্মা।
—“গুড মনিং মামুনি। চলো উঠো নাস্তা করতে হবে। আমি এখনই তোমার ফেভারিট আলুর পরোটা বানাব। আজ পেট ভরে খেয়ে দেয়ে ভার্সিটিতে যাবা।
—“ওকে মাম্মা আমি ফ্রেশ হয়ে নি।

মিসেস রাহেলা তার মেয়ের রুম থেকে বের হয়ে কিচেনের দিকে আসেন। তিনি মেয়েকে ত ঠিকিই খাবারের কথা বলল। কিন্তু কিচেনে এসে যখন দেখল পুরু কিচেন সাফ হয়ে আছে কোনো রান্নাবান্না হয় নি। তখনই রেগে ফুস ফুস করে বলেন।

—“তাহলে মহারাণী এখনও উঠে নি? সকালে ডাকার পরও উঠল না। আমার কথা অমান্য করার শাস্তি তোকে পেতে হবে।

মিসেস রাহেলা কিচেন থেকে বের হয়ে ঘরের বাহিরে হলের দিকে এসে কুড়েঘরের দরজায় নক করে। প্রায় পাঁচ মিনিট নক করার পরও যখন দেখল দরজা খুলছে না তখন তিনি আশপাশ তাকিয়ে কিছু একটা খুঁজতে লাগে।
—“এতো পেলাম। এবার দরজাটায় ভেঙ্গে দেবো।

মিসেস রাহেলা কুড়াল হাতে নিয়ে দরজার হ্যান্ডেল বরারব চালান দে । দরজা হ্যান্ডেল ভেঙ্গে যায় কেননা দরজাটা ছিল কাঠের লোহার দরজা হলে সহজে ভাঙ্গতো না।

মেয়েটা কিছু ভাঙ্গার শব্দে জট করে বেড থেকে পড়ে যায়। সে উঠে নিজের চোখ কুচলিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে মিসেস রাহেলা তার ঘরের ভেতর ডুকে পড়েছে।

—“ঐ তোকে সকালে কি বলেছিলাম মনে নেই? মেয়েটার কান মুচড়ে ধরে বলল।
—“আহহহ চাচি ছাড়েন খুব ব্যথা পাচ্ছি।
—“পাহ আরো ব্যথা পাহ আমার বাসায় থেকে আমারই কথা শুনিস না তার জন্যে এটুকু ব্যথা ত কিছুই না। আরো ব্যথা চাইলে দিতে পারি কিন্তু……..

—“ও রাহেলা গো আমার চা কই? অফিসে যেতে হবে ত তাড়াতাড়ি নাস্তা দাও। এখন লেইট করলে বস রাগ করবে।
রাহেলার হাজবেন্ড মিস্টার নায়েমান হক করিডোরে দাঁড়িয়ে পএিকা দেখা থেকে চোখ সরিয়ে কুড়ঘরটার দিকে তাকিয়ে জোর গলায় বলে।

—“জ্বীই আনছি। উফফ এই মেহরান এর আব্বুর জন্যেই তুই সবসময় বেঁচে যাস। মেয়েটার কান মুচড়ে ধরেই বলে।
—“আহহহ চাচি।
—“এখন উঠ নবাবজাদী (কান ছেড়ে দিয়ে বলে) খানা খেয়ে মেহরানের সাথে ভার্সিটিতেও যেতে হবে। আস তাড়াতাড়ি।

মিসেস রাহেলা যাওয়ার পর মেয়েটা মুখ চেপে কান্না করতে লাগে। কিন্তু মুখের উপর বলে—“আইছে ঢং-র সুলতানা হতে 😒! টাইম আমারও আসবে চাচিজান। কান ঝেড়ে নাড়া দিয়ে ফিসফিস করতে থাকে। উফফ কত জোরে মুচড় দিল।

তার চাচির করা ব্যবহার শুধু আজ নয় পুরো একবছর ধরে দেখে আসছে। আজ করুক বা কাল করুক চোখের জল ত মাঝের মধ্যে বের হয়েই যায়। তার চোখের পানি দেখার মত কেউ নেই বলে খুব কাতর। কিন্তু বাস্তব জগতে ঠিকে থাকতে সে নিজেকে তাদের হাতে সফে দিয়েছে।

(মেয়েটার নাম জারা। সে তার পরিবারের সাথে থাকে। পরিবার বলতে তো এরাই চাচা চাচি আর চাচাত বোন মেহরান। তার চাচা বেসরকারি কোম্পানিতে বিক্রি করা,,মাল ওজন করে কোম্পানিতে জমা করার কাজ করেন। তবে বেতন খুব ভালোই পান যার কারণে উনার মেয়ের স্বভাব বিগড়ে আছে। তাদের সম্পর্কে জারা বেশ ভালো আর মিশুক তার চাচার সাথে। অন্যদিকে রাহেলা বেগম জারাকে দুইচোখে সহ্য করতে পারে না। শুধু নিজের স্বামীর কথা রাখতে জারাকে নিজের বাসায় তাদের সাথে রেখেছে। মেহরান জারাকে যাস্ট ঘৃণা করে চাকরাণী গোলাম বেশ্যা ভাবে। জারাকে প্রতিমুহুর্ত অপমান করা যেনো মেহরানের একটা নিত্যদিনকার শখ। যেটা পূরণ না করলে তার রাত-দিন মিলিয়ে কিছুই ভালো লাগে না।

জারা একজন চঞ্চল,,ভালো,,মিষ্টি,,উদার মনের মেয়ে। তার মনটা খুব বন্ধুত্বপূর্ণ যার কারণে সকলেই তার সাথে মিশে কথা বলতে পছন্দ করে। কিন্তু এর মাঝে ঠকিয়ে যাবার সম্ভাবনাও থাকে বেশিরভাগ।
চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে দেখতে যেমন মায়াবী তেমন গায়ের রঙ শ্যামলা। সুন্দর না হলেও মায়া যেনো তার চোখ মুখে ফুটে থাকে। এতে অসৌন্দর্যের মাঝেও বিরাট সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে। চুলগুলো কোমর পর্যন্ত ছড়ানো,,কানের নিচে আর ঘাড়ে গাড় কালো তিল। জারা মাএ ৫’৫ ইঞ্চি তাও ঘরের কাজে তার মনোবল অটুট থাকে।

এবার গল্পে ফিরি)

জারা খাট চেপে ধরে শরীরে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে ওয়াশরুমে যায়।

—“ও গো মেহরানের আব্বু নাস্তা দিয়েছি। খেতে আসেন। মিসেস রাহেলা নাস্তা রেডি করে টেবিলে নাস্তা সার্ভ করছেন। মিস্টার নায়েমান বুকে হাত রেখে শ্বাস ফেলে করিডোর থেকে ড্রাইনিং রুমে আসেন।

—“মাম্মা আমার ফেভারিট ব্রেকফাস্ট তাড়াতাড়ি দাও। আজকে খুব শীগ্রই ভার্সিটিতে যাব।
—“ওহ আমার মামুনি খুব ভালো পড়াশুনায় কত আগ্রহ! কথাটা তিনি নায়েমান আর জারাকে কুঁচা মেরে বললেন।
মেহরান ঠোঁট উল্টিয়ে বাঁকা হাসল জারার দিকে তাকিয়ে।

জারা শুনে চোখ ঘুরিয়ে টেডি স্মাইল দিয়ে খেতে বসল। খেতে খেতে সে চাচির দিকে আড়চোখে তাকিয়ে ভবিষ্যৎ এ চাচির মেয়ের কথা ভাবে।
—“উহ ভালো মেয়ে! ভালোর পিছে যে কত বড় ডাইনি চুইপা আছে যেদিন জানবেন সেদিন নিশ্চিত হার্ট স্ট্রোক করবেন😌। এক্করে জোস সিন ক্রিয়েট হবে।

আজ গাড় পিংক কালারের থ্রি-পিচ সাথে লাইট পিংক কালার হিজাব পড়ে জারাকে খুব অপূর্ব লাগছে। আর মেহরান যে ড্রেসটা পড়েছে তা বুকের দিক শুরু করে হাটুর দিকে নেট লাগানো সবুজ কালারের শর্ট ড্রেস,,সাথে হাই হিল। ভাগ্য ভালো ভেতরের কিছু দেখা যাচ্ছে না। নইতো মান ইজ্জত ডুবিয়ে দিত।

জারা……

……….চলবে………

#ডেন্জারাস_ভিলেন_হাজবেন্ড

#লেখিকা_তামান্না

#সূচনা_পর্ব

[বিঃদ্র—“চলবে নাকি দৌড়াবে?🙄। না মানে আপনারা সবাই চাইলে আরকি গল্পটা চালাব। নতুন গল্প আশা করি সবার মজা ভালো লাগবে কারণ গল্পটা এবার ভিলেনি জামাই নিয়ে লেখমু যখন দিখা যাক সামনে কিতা হবে। অবশ্যই থ্রিলার + রোমাঞ্চ হবে। হেপ্পি রিডিং গাইস]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here