ডেন্জারাস_ভিলেন_হাজবেন্ড পর্ব শেষ

#ডেন্জারাস_ভিলেন_হাজবেন্ড

#লেখিকা_তামান্না

#অন্তিম_পর্ব

ফায়যান বাসার সামনে এসে গাড়ি রাখল। জারাকে কোলে করে ফায়যান দরজা খুলবে তখন দেখল পুরো বাসা খুব সুন্দর ভাবে সাজানো যেনো এখানে কারো বিয়ে হবে। একদম বিয়ের মহলের মত করে সাজানো হলো।

দুইজন সাজানো আয়োজন দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। রাহুল ফায়যানের পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলে।

—“এখানেই কি দাঁড়িয়ে চন্দ্রবিলাস করবে?

—“আমার বেডরুম আছে না এর জন্যে।

—“তাহলে চল দাঁড়িয়ে আছিস কেন? ভাবিরে নিয়ে ভেতরে ঢুক।

ফায়যান জারাকে আবারো জট করে কোলে তুলে নে। জারা তো চুপ করে সবার কান্ড দেখছে আর লজ্জায় গাল লাল করছে।

—“আজ মনে হয় মিশন বাসর রাত হবে!
জারার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে।

—“হুসস কি বলছেন কেউ শুনবে তো।

—“আহেম আহেম আপনাদের কি এতো জলদি পার্সনাল হতে ইচ্ছে করছে? জেহান প্রিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে বলে।

—“তোরা এক একটা দোস্ত না দুশমন তোদের বসের বাসর রাত কম্পলিট করতে তো দে।

—“হ হ এখন আমাদের কি দরকার?

—“আচ্ছা তাহলে তোদের বিয়ে হবো না যাহ বদদোয়া দেওয়ার ব্যবস্থা করতাছি।

—“না নানাআআআ। রাহুল জেহান একসাথে চিৎকার করে বলে।

সবাই তাদের অবস্থা দেখে হাসতে লাগে।

—“মামুনি। হঠাৎ কারো কন্ঠে সবাই সেদিকে ঘুরে তাকায়। জারা ছাড়া বাকি সবাই নরমাল রিয়েক্ট করল কিন্তু জারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।

—“মামুনি এদিকে আয় দেখ আমি সুস্থ হয়ে গেছি। দেখ এখন আমি দাঁড়িয়ে আছি।

—“চাচু…..বলেই জারা নায়েমানকে জড়িয়ে ধরে।
নায়েমান দুইদিন আগেই অজ্ঞান অবস্থা পেরিয়ে বাহিরের দুনিয়ায় ফিরে আসলেন। জারার সাথে হওয়া সব ঘটনা রাহুল উনাকে বলে। অবশেষে আবরারের শেষ পরিণতির কথা শুনে উনি শুকরিয়া আদায় করলেন। উনি যখন জানলেন ফায়যান আর জারা বাসার মধ্যে চলে আসতেছেন। তখন তিনিও নিজেকে আড়াল করে নেন। যেনো নিজের মেয়ের মত জারাকে বড় সারপ্রাইজ দিতে পারেন।

জারা উনাকে দেখে জড়া থেকে সরে উনার হাত কপালে ঠেকে চুমু দিয়ে বলে।

—“জানো চাচু ছোটবেলায় যখন কেউ ছিল না তখন তুমিই ছিলে একমাএ মানুষ যিনি আমাকে আশ্রয় দিয়ে ভালোবাসায় ভরে দিয়ে ছিলেন। আই হোপ আমার বাবা-মা যারাই ছিলেন না কেন তাদের জন্যে আমি বোঝা হলেও আমার আসল বাবা-মার একমাএ হকদার আপনি। যারা আমাকে জারজ করে গিয়েছিল তারা তো আর ফিরল না কিন্তু তাও তোমার পরিচয়ে আমি একজন বাবা পেয়েছি। খুব ভালোবাসি বাবা। বলে জারা নায়েমানকে জড়িয়ে ধরে।

নায়েমান তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে।

—“মা তুই এতো সরল আর উদার মনের মানুষ যে সব কিছু মুখ বন্ধ করে সহ্য করে ফেলতি। একটুও আমাকে তোর চাচি মেহরানের করা কাজের কথা বলতি না। যার কারণে তোর মৃত্যুর পথটাও তারা বেছে দিয়ে ছিল। একবার বলতি তাহলে দেখতি আর জীবনে তোর উপর আঙুল তুলতো না। কিন্তু না তুই তো তোর চাচি আর বোনকে এতোই ভালোবাসিস যে তোর থেকে তাদের সব কথা লুকিয়ে রাখতে হলো। কেন বলিস নি রে মা? একটু……

—“চাচু আমি তোমাকে যেমন ভালোবাসি চাচি আর মেহরানকেও ঠিক তেমনি খুব ভালোবাসি। কখনো বিভেদ করে নি ভালোবাসার। হয়তো উনারা আমাকে পরিবারের অংশ ভাবতে পারিনি কিন্তু আমি তো ভেবেছি। আর চাচু উনারা যাই করুক না কেন আমি উনাদের হাজার দেওয়া শাস্তির মাধ্যমে সহ্য সবর রেখে পাড় করেছি তাই তো আমার জীবনে ফায়যান এর মত সঙ্গী এলো।

নায়েমান ফায়যান আর জারার হাত একসাথে ধরে বলে।

—“সারাজীবন হাসিখুশি থাকো আর তাড়াতাড়ি আমার ভাতিজা ভাগ্নে যা ভাবো নিয়ে আছো। খুশির মহল যেনো সবসময় বিরাজ করে ইনশাআল্লাহ।

—” ইনশাআল্লাহ বলে।

জারা দরজার কোণে কারো ছায়া দেখতে পেয়ে ডাক দে। সেখানের আড়াল থেকে উঁকি দিয়ে দেখে মেহরান। তাকে দেখে জারা মুচকি হেসে বলে।

—“আরে মেহরান বাহিরে কেন দাঁড়িয়ে আছো? ভেতরে আছো! সবাই আছি সবার সাথে ইন্জয় করো আছো…..
মেহরান আর চাচি একসাথে ধীর পায়ে আসে। নায়েমান তাদের না দেখে জারাকে বলে।

—“কলঙ্ক মানুষদের কেন ভেতরে ডাকছিস মামুনি? এদের কে ডুবে মরা উচিত। কিভাবে কোনো মেয়েকে মেরে ফেলার সাহস করেছিল। আমার থেকে তো রাহেলা আর মেহরানকে নিজের স্ত্রী ও কন্যা সন্তান বলতেও ঘৃণা হচ্ছে।
মামুনি এদের বের হয়ে যেতে বল আমি কখনো এদের চেহারা দেখতে চাই না! খুবই কড়া গলায় নায়েমান বলে। একদম হৃদয়কে শক্ত করে ফেলেন তিনি। কারণ একটা মেয়ের জীবন নিয়ে কিভাবে খেলতে পারল তার স্ত্রী তারই এক অনাথ মেয়ের সাথে। কিন্তু তিনি তো অনাথ না নিজের মেয়ে ভেবে বড় করে তুলেছেন জারাকে।
ভেবে চোখ দিয়ে টপটপ অশ্রু গড়াল উনার।

—“ও গো মাফ করে দাও অনুরোধ করছি আর কখনো কারো সাথে জুলুম নিযার্তন করব না। আমি যে জানোয়ারের মত খেলা করছি আমি নিজ মনে অনুতপ্ত হচ্ছি। আমার বাঁচার সাধ্য তোমাদের তিনজন ছাড়া আর কেউ নেই গো। শেষ বারের মত মাফ করে দাও…….নায়েমানের পা ঝাপটে ধরে রাহেলা কান্নামিশ্রিত কন্ঠে অশ্রু ফেলে ক্ষমা চাইতে থাকে।
জারা তোর চাচুকে বল না মাফ করে দিতে প্লিজ বল না? জারার হাত ধরে।

—“হ্যা হ্যা আমি বলছি।

—“মা আমাকে মাফ করে দে একজন ভালো মা আর্দশ স্ত্রী হতে আমি টাইম লাগিয়ে দিয়ে ছিলাম। কিন্তু এখন আমি সব বুঝতে পেরেছি। আমায় ক্ষমা করে দে মা ক্ষমা করে। জারার হাতে নিজের কপাল ঠেকে কান্না জড়িয়ে জড়িয়ে বলে।

ফায়যান নায়েমানকে উদ্দেশ্য করে বলে।

—“চাচু মাফ করে দেওয়াই ভালো। মানুষ মাএই ভুল। ভুলটা যদি পাঁচ-সাতবারের বেশি হয়ে যায় তাহলে সেটা ক্ষমার অযোগ্য।

—“হ্যা আমি মানছি চাচি আমার সাথে অনেক জুলুম নিযার্তন করেছে কিন্তু বিশ্বাস করেন আমার বিন্দুমাএ অভিযোগ নেই। প্লিজ চাচু মাফ করে দেন আর মেহরানকে নিজের বুকে জায়গা দেন।

নায়েমান জারা ফায়যানে একসাথে জড়িয়ে বলে।

—“তোমাদের কথাগুলো সত্যি খুব নিষ্পাপ। এত ভুলের মাঝেও আপনজনের কথা ভেবে সব করতে থাকো। তোমাদের কথামত আমি তাদেরকে মাফ করে দিলাম। কিন্তু…..

—“কিন্তু কি চাচু? ভ্রু কুঁচকে জারা জিগ্গেস করল।

—“তোর কথায় মাফ তো করে দিচ্ছি। কিন্তু এদের বল আমার আথে একটুও কথা না বলতে মাফ করছি চুপচাপ থাকতে আমার উপরে বা নিচে কোনো ধরনের কথা যেনো না বলে।
কথা শেষ করে নায়েমান রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দে। জারা আহ্লাদী কন্ঠে চাচি আর মেহরানকে বলে।

—“কিছু হবে না চাচুর মনের পরিবেশটা ঠান্ডা হোক তারপর অবশ্যই উনি আপনাদের গ্রহণ করবে।

জারার মিষ্টি কথা শুনে মেহরান তার হাত ধরে আপু ডাকে। জারা আজ প্রথম মেহরানের মুখে আপু ডাকতে পেয়ে কেমন যেনো একটা বোন পেয়েছি সেরকম ফিল করল।

—“হ্যা বলো মেহরান?

—“আমাকেও মাফ করে দাও আপু। বলেই মেহরান জারাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগে। আমিও খুব খারাপ করেছি তোমার সাথে। শাস্তি পেয়েছি সব ভুল কাজ করার জন্যে। কিন্তু এবার আর নয় আপু।
জারাকে জড়িয়ে ধরেই বলল। জারাও তার বোনকে মাফ করে দিল।

আজ রাতের জন্যে তারা ফায়যানের বাসায় থাকবে। সকালে যে যার মত কাজে চলে যাবে,, বাসায় ফিরে যাবে।

জারা ছাদের দুলনায় গিয়ে বসে চাঁদ দেখছে। আর মাঝমধ্যে দুলান দিচ্ছে। ফায়যান রুমে গিয়ে জারাকে ডাকতে লাগে। কিন্তু পুরো রুমে কোথাও জারাকে না পেয়ে ঘাবড়ে যায়। সে ওয়াশরুমে মনে করে সেদিকটায় ডাক লাগায় তাও রেসপন্স না পেয়ে বেলকনিতে এসে উপরের দিকে তাকাতেই দেখে জারার কালো ঘন চুল বাতাসের সাথে বারি খেয়ে খেয়ে উড়ছে। ফায়যান একটা সাদা টিশার্ট গায়ে জড়িয়ে দুই কাপ গরম কফি নিয়ে ছাদে যায়। জারা বেখেয়ালি হয়ে চাঁদের দিকে তাকায় আছে।

—“কফি??? জারার মুখের সামনে ধরে। হঠাৎ ফায়যানকে সামনে দেখে ভয় পেয়ে যায় জারা। সে বুকে হাত রেখে হাঁফ ছেড়ে বলে।

—“উহ ভয় পেয়ে দিয়ে ছিলে। কফিটা হাতে নিয়ে এক চুমুক খেয়ে বলে।

—“আমিও কি বসতে পারি?
মুচকি হেসে ফায়যান তার গা ঠেসে বলল।

জারা মাথা নাড়িয়ে হ্যা জানায়। কিন্তু ফায়যান বসে নি। সে জারার দিকে চোখজোড়া সরু করে বলে।

—“পুরো জায়গায়ই তো তুমি দখল করে রাখছো আমি কই থেকে বসবো?

ফায়যান কফি নিয়ে মুখ ফিরিয়ে নে। জারা কিছু একটা ভেবে মুচকি হেসে দাঁড়িয়ে ফায়যানকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নে। ফায়যান তাকিয়ে বলে।

—“ছাদে কি রোমান্স করবে?

—“তুমি কি রোমান্স ছাড়া অন্যকিছু পারো না?
মুখ ফুলিয়ে বলে।

—“পারি তো তোমাকে কিস করতে চুমু দিতে কোলে নিতে যেখানে সেখানে শুরু করে দিতে। দুষ্টুমি ফেস করে বলে।

—“তুমি যে বেশরম সেটা কি তুমি জানো?
কোমরে হাত রেখে বলে। ফায়যান কফিতে চুমুক দিয়ে দুলনায় বসল। জারার দিকে তাকিয়ে কিছুই না শুনার ভান করে বলে।

—“তুমি কি আমায় কিছু বলেছো? জারা শুনে…….. ওই তোমাকে আমি বেশরম বলছি আর তুমি বলো আমি কি কিছু বলছি? জারা চোখ গরম করে বলে। আরে তা কবে বললা? আর বললেও সরি কানে ব্লুটুথ লাগানো ছিল।ফায়যান কথাটা বলে আরামছে কফি খেতে থাকে। জারা বাচ্চাদের মত করে কফি খেতে লাগে।

জারা নিজের ঠোঁট কামড়ে ফায়যানের গলায় হাত রেখে তার হাটুর উপর বসে। আচমক প্রথমবার জারা এমন কিছু করবে ফায়যন ভাবেও নি। জারা বসে তার বুকের মধ্যে একটা কামড় লাগাল। ফায়যান হালকা ব্যথা পেয়েও কিছু বলল না। জারা ফায়যানের চেহারা স্বাভাবিক দেখে বলে।

—“কি চিৎকার দেন?
—“চিৎকার মেয়েরা দে আমি কেন দেবো?
—“তোমাকে কামড় দিছি ব্যথা পাও নি?
—“এটা…….. এটার মধ্যে ব্যথা পাবো?
—সত্যি নাকি মিথ্যা? জারা ঠোঁট উল্টিয়ে বলে।
—“তাতে কিছু যায় আসে না। ফাস্ট টাইম বউ এ লাভ বাইট দিসে বলে কথা।

জারা মুচকি হেসে ফায়যানের বুকে মাথা রাখল।
ফায়যান ও তাকে চেপে ধরে শক্ত করে যেনো পড়ে না যায়।
এভাবে কিছুক্ষণ তারা মিলে চাঁদের আলো উপভোগ করল। পরে ফায়যান নিজেই জারাকে রুমে এনে বেডে শুয়ে দিল।

জারার মুখের উপর থাকা চুলগুলো কে নেড়ে তার মুখে স্লাইড করে করে বলে।

—“ঘৃণার দুনিয়ায় ভালোবাসার ফুলও যে আছে তা তোমাকে না পেলে জানতাম না মেরি জান। নেশাজড়িত কন্ঠে জারার মুখে ফুঁ দিল।

—“হুম মরণ অমরণ জগতে ভালো সঙ্গী যে সবার কপালে খুব একটা জুটে নাহ কিন্তু আমার কপালে তোমার মত সঙ্গী আসার কথা আগেই লিখে রেখেছিল আল্লাহ। তাই তো পেলাম। এক অপূর্ব অনূভুতি নিয়ে।

ফায়যান ধীরে ধীরে ঘোরে চলে যায়। ভরে যায় তাদের রাতটা এক ভালোবাসার অসীম সম্পর্কের টানে।

৯ বছর পর……..💥

—-“তুই আমার বুঝছিস তোকে আমি ছাড়া কেউ স্পর্শ করলে তার হাত আমি কেটে মাটিতে পুঁতে দেবো।
জুবাইয় তৃষার হাত ধরে বলে।

—“আহ…আ…. আমি জা….জানি না। তো……তুমি কিসের কথা বলছো? তৃষা ভয়ে কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

তখন রুমে জারা এসে বলে। “তোরা আবারো ঝগড়া শুরু করলি জুবাইয় ছাড় তৃষাকে! দেখ সে ব্যথা পাচ্ছে।”

জুবাইয় জারার কথায় তৃষার হাতের দিকে তাকায়। তার হাতের গোড়া লাল হয়ে গেছে। এ দেখে সে তড়িঘড়ি মলম এনে তৃষাকে নিজের কোলে বসিয়ে সুন্দর করে মলম লাগাতে থাকে।

—“আরে তুই তৃষাকে কোলে নিলি কেন? জারা জুবাইয়ের কান্ডে হতভম্ব হয়ে বলে।

—“সে আমার বউ আর আমি তার #ডেন্জারাস_ডেভিল_হাজবেন্ড।

—“কি? কথাটা শুনে চোখজোড়া বড় করে হা হয়ে যায় জারা।

—“এই না হলো আমার ছেলে। ফায়যান এসে জুবাইয়ের পিঠে হাত বুলিয়ে দে আর তৃষা গিয়ে জারার পিছে গিয়ে লুকায়। শাড়ির আচঁল ধরে জারার হাত ধরল।

ফায়যান জুবাইয়কে খেলার জন্যে বাহিরে নিয়ে যায়। জারা বেলকনিতে এসে বাপ-ছেলের ইন্জয়মেন্ট দেখছে। তৃষা জারার পাশে এসে বলে।

—“চাচি জুবাইয় ভাইয়া এতো রাগী কেন আমাকে অন্য ছেলের সাথে খেলতেই দে নাহ।
মুখ ফুলিয়ে জারার কোলে মাথা রাখল।

তারা বেলকনির সোফায় বসে কথা বলছিল। তৃষা এসে জারার পাশে বসে।

জারা তৃষার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে।

—“সে রাগি নয় তার ইচ্ছাটা শুধু তুমি।

তৃষা চাচির কথা কিছুই বুঝল না সে ঘুমিয়ে যায়। জারা তাকে ধরে বেডে শুয়ে ঘুম পাড়িয়ে দে।

নিজের রুমে আসতেই ফায়যান তাকে টান মেরে বুকে নিয়ে নে।

—“কি গো দেখলে আমার ছেলে আমার মত হলো। এটিটিউট ফেস করে ফায়যান বলে।

—“উহ তোমার মত দুই নাম্বারের ডেভিল জামাই হবে আরকি।

—“কার? ভ্রু কুঁচকে ফায়যান জিগ্গেস করে।

—“বাহ রে তোমাকে সাধু বাপজান কি জুবাইয় সাধে ডাকে? কিছু না বুঝার ভান করে থাকো।

ফায়যান মুচকি হেসে বলে—“তোমার গর্ভ থেকে হয়ে পৃথিবীতে আসলো আমাদের ছেলে জুবাইয় বলে। আর যেখানে জুবাইয়ের ডেভিল হাজবেন্ড হওয়ার কথা সেটা সময় আসলে দেখা যাবে তৃষার ডেভিল হাজবেন্ড।

নিশ্চয় বুঝতে পারলেন জুবাইয় হলো ফায়যান জারার একমাএ ছেলে। যার মাএ ৯বছর চলে। আর সেই ছেলে এখন থেকে বর হওয়ার অপেক্ষায় আছে তৃষার। তৃষা হলো রাহুল আর অরিতার মেয়ে। যার বয়স ৭বছর চলছে । মুখের বুলি আধও তেমন ফুটে নি। ভালোবাসা নামক বন্ধনটা কি এখনো বুঝে নাহ সেখানে জুবাইয় এর বর হওয়ার কথা তো দূরের ব্যাপার।

গতবছরই জেহান আর প্রিয়ারও বিয়ে হয়েছিল। তারা ইউএসএ তে সিফ্ট হলো। জেহানের টেকনিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির কাজের জন্যে। কয়েকদিন আগেই সুখবর আসল। যে প্রিয়া গভবর্তী। তারা রাহুল অরিতার বিয়ের পরই বিয়ে করল। রাহুল তো ফায়যানকে তাড়াহুড়ো করে অরিতার সাথে বিয়ে দিতে বলে। এরপর তাদের বিয়ে হলে একবছর পর তৃষা অরিতার গর্ভে আসল আর বর্তমানে পৃথিবীর আলো দেখছে।

কিন্তু এতকিছুর মাঝে জারা তার প্রিয় চাচু নায়েমানকে খুব মিস করে। জুবাইয় যখন পাঁচবছর ছিল তখন তিনি পরলোকগমন করে শেষবারের মত তিনি জুবাইয়কে কোলে নিয়ে খেলেন এমনকি নিজের মেয়ের সন্তানদের মানে উনার নাতি-নাতনীর সাথেও খেলাধুলা করে রাতের শেষ দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। চাচি একা হলেও আমাদেরকে পেয়ে খুশিতে দিন কাটায়। তিনি জারাকে আগের চেয়ে অনেক ভালোবাসে যেমনটা চাচু বাসতো। মেহরান বোনেরও বিয়ে হলো এক ভালো ছেলের সাথে। ছেলেটা অবশ্যই ফায়যান ঠিক করে দিয়ে ছিল। সে ছিল ফায়যানের অফিসের এক কলিগ ফ্রেন্ড। যার নাম ছিল নোয়াসেব। তার সাথে বেশ ভালো পরিচিত থাকায় মেহরানের কথা জানায়। পরে কথা পাক্কা হলে বিয়ে হয়। এরপর তাদের থেকে শুনা যায় মেহরানের দুই জমজ সন্তান হয়েছে এক মেহের আরেক শ্রেয়।

জারা এতোক্ষণ এ্যালবামের মধ্যে সবার ছবি দেখে কথাগুলো ভাবতেছিল। ফায়যান তো আধামার্কা রোমান্স করে ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে ডুকে গিয়ে ছিল। তার মাঝে সে আপনাদেরকে পরিবারের বাকি সদস্যদের কথা জানায়।

ফায়যান বের হয়ে তাওয়াল দিয়ে মাথা মুছে জট করে পিছ থেকে জারাকে জড়িয়ে ধরে।

—“চলো আজ আরেকবার ডুব দেই ভালোবাসার জগতে। নেশাজোড়া কন্ঠে জারার কানে চুমু দে।

—“না দেব না নয়তো লেখিকা না জানে আমাদের বাসরের কাহিনি কিরকম করে দে। পরে লজ্জায় লাল হয়ে থাকব।

ফায়যান মুচকি হেসে বলে—“লেখিকা আমাদের গল্প যে সবার মাঝে ফুটিয়ে তুলেছে সেটার জন্যে তো উনাকে এতোগুলা থ্যাংকু। আমরাও যায় এবার ভালোবাসার অতল সাগরে। ঘেমে হবো একাকার। কি বলো মিসেস হাসান? দুষ্টুমি হেসে জারাকে নিয়ে ডুব দে ভালোবাসার কাছে।

থাক তাদের মত তারা ভালোবাসার ঘরে। আমরাও চলি অজানা আরেক কাহিনির পথে। তাদের প্রেমকাথা থাকুক সারাজীবন।

……………সমাপ্ত…………

[বিঃদ্র—“সরি আর থ্যাংকু সবাইকে আমার সাথে এই গল্পের মাঝে থাকার জন্যে। আপনাদের রেসপন্স আপনাদের পড়ার আগ্রহটায় আমাকে লেখায় উদ্দীপ্ত করেছিল। সত্যি আমার লেখা আপনাদের ভালো লেগেছে অনেক আলহামদুলিল্লাহ । ইনশাআল্লাহ পরবর্তীতে আরো সুন্দর গল্প নিয়ে হাজির হবো।

আর গল্পটা এতোটুকু তে শেষ করলাম এর জন্যে আমিও দুঃখ প্রকাশ করছি। স্টাডিতে বিজি থাকার কারণে গল্পটা ঠিকভাবে লেখার সময়ও পেলাম না তার জন্যে গল্পটা খুব একটা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারিনি। তবে অসীম কষ্ট করেছি গল্পটা হেপ্পি এন্ডিং দেওয়ার। আর দেখেন হেপ্পি এন্ডিং হলো। সেভাবেই বলি
হেপ্পি রিডিং]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here