#মুক্ত_পিঞ্জিরার_পাখি
#Ipshita_Shikdar
#পর্বঃ২২
৫৪।
“পক্ষী, আমার কোর্ট কই? আর আমার ঘড়িটাই বা কোথায়?”
আরিজ চেঁচিয়ে উঠে শার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে। পক্ষী রান্নার কাজে ব্যস্ত, তাই ‘আসছি’ বলেও যেতে পারছে না। আজ সকালে বেশ দেরি করেই ঘুম ভাঙে তার, তাই সবকিছু করতে একটু হিমশিমই খাচ্ছে সে। যদিও জা আমিনায়ের থাকাতে দেরি করে উঠেও কোনোদিন অসুবিধা বোধ করেনি, তবে দিন দুয়েক হলো আমিনাও অসুস্থ। তাই একাহাতে সবটাই তার সামলাতে হচ্ছে।
“কী রে নাতবৌ! জামাই যে ডাকে, যাস না কেনো? জামাইয়ের কাজে যাওয়ার সময় দেওয়া ডাকে সাড়া না দেওয়া ভারী অন্যায়, এ ডাক যে সবচেয়ে আদর-সোহাগ মাখা ডাক।”
দাদীর কথায় একটু লজ্জাই পায় যুবতী। তবুও তা আড়াল করে কপাট রাগ দেখিয়ে বলে উঠে,
“আরে দেখো না দাদাজান, এত কাজ তার উপর তোমার নাতি ছোট ছোট জিনিসের জন্য এভাবে কা কা করছে! কী খাটাশ বলো তো!”
আজমিরি বেগম ভ্রুজোড়া কুঁচকে বলেন,
“তোর সাহস তো কম না ছোড়ি, তুই কিনা আজমিরি বেগমের নাতিকে খাটাশ বলিস!”
“সাহস কম হলে হবে বলো? আমি হলাম কিনা আজমিরি বেগমের নাতবৌ আর জামান বাড়ির ছোট বউ।।”
পক্ষীর কথায় হেসে দেয় বৃদ্ধা। এর মাঝেই আবার ডাক পড়ে পক্ষীর। আজমিরি হেসে আদেশ করেন,
“যা, যা, স্বামীর কাছে যা মেয়ে। আমি এদিকটা দেখছি।”
পক্ষী হাসিমুখে রান্নাঘর থেকে প্রস্থান করেন, আজমিরি বেগমও মিটমিট হাসতে হাসতে পরোটা ভাঁজছেন। আনমনেই তার মন ও মস্তিষ্কে অনুভূতিমর আঘাত করছে স্বামী আলোম জামানের সাথে জুড়ে থাকা মধুময় স্মৃতিগুচ্ছ।
যুবক যখন হেসে হেসে টাই বাধতে ব্যস্ত তখনই ঘরে প্রবেশ করে পক্ষী।
“এ কোনো কথা আরিজ! আপনি কী অন্ধ হয়ে গেছেন! খাটের উপরেই তো সব…”
নিজের কথাগুলো বলতে বলতে আরিজের দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে যায় সে। যুবত তো টাই, ঘড়ি পড়ে একদম বাহিরে বের হওয়ার জন্য তৈরি। সে কনফিউজ হয়ে জিজ্ঞেস করে,
“এই আপনি না কিচ্ছু পাচ্ছেন না, তাহলে…”
কথাটা বলতেই আরিজ তাকে নিজের নিকটে টেনে নেয়, বাহুবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যায় আরিজের মায়াবতী। ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে উঠে চোখজোড়া বন্ধ করে ফেলে সে। পরমুহূর্তেই তার চোখেমুখে ছিটকে পড়ে একঝাঁক উষ্ণ নিঃশ্বাস। এই নিঃশ্বাস তার এই কিছুদিনে খুব চেনাজানা হয়ে গেছে , এই নিঃশাসের সুভাষটাও তার খুব করে চেনা, খুব পরিচিত, খুব আপন।
“তুমি কী বোকা পক্ষীরাণী? পক্ষীরাজ যে বাহিরে যাবে, তোমার নিকট থেকে দূরে যাবে তা তোমার জানা নেই। তাই সে যে খুব করে চায় যাওয়ার আগে তোমার একটু ভালোবাসা, স্পর্শ সাথে করে নিয়ে যেতে…
পক্ষীর হৃদস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে। কী উত্তর দিবে এই মোহিত কণ্ঠের অধিকারী পুরুষটিকে তার জানা নেই। অনুভূতির এক গভীর চাপে পিষ্ট হচ্ছে সে। খুব ধীর গলায় বলে উঠে,
“আরিজ, আপনার দেরি হচ্ছে। ছাড়েন প্লিজ আমাকে।”
কথাটা শুনেই ঘোর ভাঙে আরিজের। সে আলতো ভাবেই ছেড়ে দেয় পক্ষীকে এবং কিছু হয়নি এমন একটা ভাব ধরে কোর্ট গায়ে জড়াতে জড়াতে বের হয়ে যায়। যাওয়ার আগে শুধু বলে,
“আজ ব্রেকফাস্টটা বাইরে করবো। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলে দিয়ো।”
৫৫।
প্রিয়া প্রায় বিশ মিনিট ধরে অপেক্ষা করছে আরিজের, কিন্তু তার আসার নাম-গন্ধ নেই। অথচ, তার ভাবনা ছিল তার এতদিন পর ম্যাসেজ পেয়ে ছুটে আসবে আরিজ। আফসোস, তেমন কিছুই হলো না। এই বিষয়টি বুঝতেই গোপণে দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে।
মনে মনে ভাবে,
“হয়তো আমার মতো সেও মেনে নিয়েছে নিজের ভাগ্যকে, পক্ষীকে। কিন্তু কেন যেন বড্ড কষ্ট বোধ হচ্ছে তাতেও। ভালোবাসি তাই হয়তো।”
এর মধ্যেই কোনো এক শব্দে ঘোর ভাঙে তার, শব্দের উৎসের খোঁজে সামনে তাকাতেই দেখে আরিজ বসে, হয়তো তার ঘোরে থাকা কালেই এসেছে সে।
“কেমন আছো?”
প্রিয়ার প্রথম প্রশ্ন। আরিজের বড্ড অপরাধবোধ হচ্ছে, সে আজ মূলত প্রিয়ার সাথে সম্পর্ক সম্পূর্ণ রূপে শেষ করে দিতেই এসেছে।
ঠোঁটটা হালকা আরিজ উত্তর দিলো,
“ভালো, তুমি কেমন আছো?”
প্রিয়ার ঘুরিয়ে-প্যাঁচিয়ে কথা বলার স্বভাব নেই, সে বাড়িয়ে বলতেও ইচ্ছুক নয়, যথেষ্ট ক্যালকুলেটিভ ও প্র্যাকটিকাল নারী সে।
তাই বিনা দ্বিধাতেই বললো,
“ভালোই আছি স্বামী-সংসার নিয়ে। বেশ কয়েকদিন হলো বিয়ের, খারাপ থাকিনি, বরং ভালোই থেকেছি। জানি তুমি অবাক হচ্ছো, তবুও সত্যি এটাই আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে বাবা-মার জোরজবরদস্তিতে। তবে এখন ভাবলে মনে হয় ভালোই করেছে তারা, নাহলে নিজের স্বার্থে অন্যের কাঁচের সংসার ভেঙে দিয়ে ফেলতাম। আমার কবুল বলা হতো আরেকজনের স্বামীহীনা হওয়ার বদৌলতে। আদৌ সুখী হতাম কিনা জানি না। তবে তোমাকে সম্পূর্ণরূপে পেতাম না তা নির্ধারিত।”
সম্মুখে তরুণীর কথা বিস্মিত হয়ে শুনছে আরিজ। তার মন-মস্তিষ্কের নিকট প্রশ্ন তুলছে এ কী কোনো ঘোর বা স্বপ্নে শুনছে সে! সে যে খুব করে চায় এটা সত্য হোক।
বিস্মিত গলায় জিজ্ঞেস করে সে,
“কী বললে তুমি বিয়ে করেছো? যদি সত্যি তা-ই হয়ে থাকে আমার তোমার নিকট কোনো অভিযোগ নেই, বরং আমি আনন্দিত তোমার আনন্দে।”
“আনন্দিত নাহয়ে উপায় আছে! শেষ পর্যন্ত সম্পর্কের দায় থেকে মুক্ত হচ্ছো। আমি খুব আগেই বুঝতে পেরেছিলাম, আমার নামটি তোমার হৃদয়ে ফিঁকে পড়ে গেছে। কিন্তু এই হৃদয়টা মানেনি, সে তারপরও তোমায় চেয়েছে। ঐ উপরওয়ালা তা চায়নি তাই তো অপরিকল্পিত এই বিয়ে এবং সবকিছু। যাকগে আমি যাচ্ছি এখন। বিদায়বেলায় একটা কথাই বলতে চাই আমি, শুনতে ইচ্ছুক না হলেও মনযোগ দিয়ো শুনো। ভালো থেকো, পাশে যে মানুষটি আছে তাকেও ভালো রেখে, তবে একটু আমায়ও মনে রেখো।”
অনেকটা তাচ্ছিল্য মাখানো কথাগুলো বলে কোনোদিকে না তাকিয়ে উঠে চলে যায় সে আরিজের দৃষ্টিসীমানার বাইরে। আরিজ ভেবেছিল মেয়েটি খুব করে কষ্ট পাবে তার ছেড়ে চলে যাওয়ায়। কিন্তু ভাগ্য তার ভাবনাকে নিছকই এক ভ্রান্তি প্রমাণ করলো।
প্রিয়া বাসায় ফিরতেই দেখে বাড়িতে কোনো মানুষের আনাগোনা নেই। কিছুটা কৌতূহল থেকেই ছুটা কাজের লোক সাথীকে জিজ্ঞেস করতেই সে বলে,
” সবাই বাইরে গেসে ভাবি, কোন খালার বাসায় যানি। তয় ভাই বাড়িতেই, ঘরেই বইয়া রইসে।”
“আচ্ছা, ঠিক আছে।”
বলে ক্লান্ত চোখেমুখে ঘরে প্রবেশ করে। খাটের দিকে তাকাতেই দেখে মাহদি গম্ভীর ভঙ্গিমায় বসে, যেন কোন এক বিষয়ে খুব চিন্তিত সে, রেগেও হয়তো। বেশি কিছু না ভেবে নিজের হিজাব খুলতে শুরু করে সে, আজ প্রথমবারের মতো বোরখা পড়েছে সে একটু অস্বস্তি হলেও খুব কমফোর্টেবল ফিল করেছ। আজ তার চিন্তা করতে হয়নি ওড়না বুক থেকে সরে যাচ্ছে কিনা, ভালো দেখাচ্ছে কিনা, অন্তর্বাস দেখা যাচ্ছে কিনা, বের হওয়ার আগে চুলগুলো সুন্দর করে গোছাতে সময়ও দিতে হয়নি, কোনো পুরুষ তার রূপের মোহে ডুবে তাকে একদৃষ্টিতে দেখে অস্বস্তিতেও ফেলেনি আজ। সত্যিই খুব ভালো লেগেছে, যদিও বোরখাটা শ্বশুরবাড়ির মন রাখতেই পড়েছিল সে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এই বস্ত্রটা তার জন্য খুব সুবিধাদায়কই হয়েছে।
প্রিয়া যখন নিজ ভাবনায় ব্যস্ত হয়ে বোরখা খুলে ফেলেছে লতখনই মাহদি তার পিছনে এসে দাঁড়ায় তার। আয়নায় মাহদিকে দেখে চমকে উঠে সে। কিন্তু তাতে যুবকের একবিন্দু ধ্যান নেই, সে অগ্নিদৃষ্টিতে আয়নায় প্রিয়ার প্রতিচ্ছবি দেখছে। হঠাৎই প্রিয়ার পিঠ বুকে মিশিয়ে ফেলে, অন্যরকম অনুভূতির আবেশে চোখজোড়া বন্ধ হয়ে আসে তার।
“তোমার সাথে ঐ ছেলেটা কে ছিল?”
ভারী গলায় প্রশ্ন করে উঠে মাহদি। হতবাক হয়ে চোখজোড়া খুলে প্রিয়া। মাহদি বলতে শুরু করে,
“জানো, জীবনে কোনোদিন কোনো নারীর দিকে প্রেমের দৃষ্টিতে তাকানো তো দূরে থাক মুগ্ধ দৃষ্টিতেও তাকাইনি নিজের হবু স্ত্রীকে খুঁজে পাওয়ার পূর্বেই আমি এতোটা ভালোবেসেছি। সবসময় কামণা করেছি আমার স্ত্রীও যাতো আমার মতো হয়, আমিই যাতে তার জীবনের প্রথম ভালোবাসা হই, প্রথম পুরুষ হই। আমার হৃদয়মহল, তাতে সজ্জিত আশা ও স্বপ্নের আয়না সব চুরমার হয়ে গিয়েছিল রেস্টুরেন্টের বাহির থেকে তোমাকে ঐ ছেলের… তুমি বলো না আমার ভাবনা মিথ্যে, বলো না প্লিজ!”
প্রিয়া ভেবেই পাচ্ছে না সে কী বলবে। হঠাৎই শক্ত হয়ে উঠে সে অনায়াসেই বলে ফেলে এক ডাহা মিথ্যে।
“আপনি ভুল ভাবছেন, উনি আমার কাকাতো বোনের স্বামী।”
কথাটা বলতেই মাহদি চোখজোড়া বদ্ধ করে তাকে জড়িয়ে ধরে পিছন থেকে। চোখ তুলে তাকালেই হয়তো সে দেখতে পেতো প্রিয়ার চোখের কোণে জমা হওয়া অশ্রুবিন্দু। প্রিয়া মনে মনে বলে,
“এক সম্পর্ক হারিয়েছি ভাগ্যের জোরালো ঝড়ে, আর পারবে না সে হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত দিতে। আর পারবো না দরকার হলে মিথ্যের আশ্রয়ই নিবো।”
প্রিয়া খুব ভালো করেই জানে বাঙালি স্বামীরা স্ত্রীর অন্য পুরুষের সাথে জড়িয়ে থাকা অতীত মোটেই সহ্য করতে পারে না, বরং ক্রোধে পাগল হয়ে যায়। যেসব পুরুষ মেনে নেয় তার মতে তাদের অস্তিত্ব কল্পনাতেই কেবল। সে আর না ভেবে নিজেও মাহদির হাতের উপর হাত রাখে। কারণ আরিজের দেওয়া আঘাতের মলম কেবল মাহদির ভালোবাসাই হতে পারে।
৫৬।
“কী হলো বাবা, তুমি আমাদের ডাকিয়েছো কেন?”
নিপুর বাবা প্রশ্ন করে উঠে পালককে। আজ হঠাৎ করেই সকাল সকাল কল করে নিপুর বাবাকে ডাকায় পালক, সেই সাথে নিজের বাবা-মা এবং স্ত্রীকেও উপস্থিত রেখেছে।
“আপনার মেয়েকে চিরতরের জন্য আপনার সাথে পাঠিয়ে দিতে।”
অত্যন্ত শান্ত গলায় বলে ফেলল পালক। নিপুর বাবা রমিজ মিয়া হতবাক, একবার সবার দিকে চোখ বুলিয়ে নেন। সবাই তার মতোই চোখ বড় করে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে বিষয়টা। জামাইকে জিজ্ঞেস করে উঠেন,
“এসব কী বলছো, বাবা?”
তাকে বিচলিত দেখালেও পালককে মোটেও বিচলিত দেখালো না। সে অনায়াসেই বললো,
“যা শুনছেন তা-ই বলতে চাচ্ছি, আপনার মেয়েকে এক্ষন আমার বাড়ি থেকে নিয়ে বের হবেন।”
নিপু উত্তেজিত হয়ে উঠে,
“এই তুমি কী বলছো এসব আব্বাকে! তোমার মাথা ঠিক আছে?”
যুবক মুচকি হাসে।
“এতদিন ঠিক ছিল না এখন হয়েছে। প্রিয় শ্বশুর মশাই সরি এক্স শ্বশুর মশাই আপনার স্ত্রী আল্লাহর ত্রিশটা দিন আমার বাড়িতে এসে পড়ে থাকায়, ফ্রীর খাবার ভিতরে নেয়, যাওয়ার সময় কতটুকু গাট্টি নেয় তা বাদই দিলাম, আবার আপনার ছোট সন্তানের পড়াশোনার খরচও আমিই টানি, আর আপনার বউকে আমার মা কী খোঁটা দিবে সে-ই খোঁটা দেয়। কত বড় সাহস আমার অগোচরে আমার বাপ-মাকে খোঁটা দেয়, আমার বোনটাকেও বাড়ি ছাড়া করেছে মিথ্যে বলে। এমন ধাউস আমি আর বাড়ি রাখছি না। আর আপনার মেয়ে সে আমাকে স্বামী হিসেবে দু আনা দাম অবধি দেয় না। আমার বাপ-মাকে এতোটা জ্বালিয়ে ফেলেছে যে তারা বাড়ি ছাড়তে প্রস্তুত। এই মেয়ে শোন, তোরে এক তালাক…”
ক্রোধে আর কথা বলতে পারছে না সে, বরং বড় বড় শ্বাস ফেলছে। নিজেকে সামলে কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে দাঁড়িয়ে যায় সে সোফা থেকে।
“শোনেন তিনদিনের মধ্যে আপনার মেয়েরে আমি ডিভোর্স পাঠাবো। আর আপনারা যা লোভীর জাত টাকার চিন্তা করবেন না, কাবিনের টাকাও দিয়ে দিবো।”
নিজের মনের রাগ মেশানো সব কথাবার্তা জাহির করে বেরিয়ে যায় সে। সে বেরিয়ে যেতেই ধপ করে মাটিতে বসে পড়ে নিপু, তার বাবা সোফায় মাথা নত করে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে। স্ত্রীকে বলেছিলেন বেশি বাড় না বাড়তে, কিন্তু শুনেনি সেই নারী। অতঃপর মেয়ের সংসার ভাঙন।
অপরদিকে পালকের পিতা-মাতার মুখে আজ গর্বের জৌলুস, তারা ভেবেছিল ছেলেটার কাছে বোধহয় তাদের গুরুত্ব এখন শূণ্যের কোঠরে, তাই অন্যায় জেনেও চুপ থাকে। কিন্তু না, তার ছেলে তাদের জন্যও ভেবেছে। হয়তো বহু দেরিতে কিন্তু বুঝেছে যে তাদের কাছে এটাই বেশি। কিন্তু তাদের বেশ দ্বিধাও বোধ হচ্ছে সামনে বসে থাকা তাদের বয়সী লোকটার অবস্থা দেখে। কিন্তু কর্ম যেমন ফল তো তেমন পেতেই হতো। তাই কিছু না বলে নিঃশব্দে তারাও বসার ঘর ত্যাগ করে।
আঞ্জুমান শেখ স্বামী সহ প্রস্থান করতেই রমিজ মিয়া উঠে দাঁড়ান। মেয়ের কাঁধে হাত রেখে বলেন,
“চল, বাড়ি চল। এনারা তোকে আর রাখবে না। আগেই সাবধান করেছিলাম তোর মাকে, শুনলো না সে। এখন আর কেঁদে লাভ কী বাড়ি চল বরং।”
নিজ শক্তিতেই মেয়েকে নিয়ে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হয়ে যান তিনি। একটা অটো ডাক দিয়ে এক কাপড়েই মেয়েকে নিয়ে নিজের বাড়ির দিকে রওনা হন। এছাড়া তার নিকট আর উপায় কী!
চলবে…