#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_6
.
.
.
আবির : এই যে দেখো তোমার মা রান্না ঘরে কাজ করছে আর তোমার বাবা মনমরা হয়ে বসে আছে তোমার জন্য….. এটা দেখার বিষয় না বিষয়টা হলো তুমি যদি বউ না সাজো আজকে তাহলে তোমার বাবা মাকে আমার লোকের গুলি করবে….. ওই যে দেখছো লোকগুলোকে ওদের হাতে একটা করে গান আছে যদি তুমি বউ না সাজো তাহলে ওরা সাথে সাথে তোমার বাবা মাকে শুট করবে……
তিশা আবিরের কথা শুনে আবিরের দিকে তাকায়….
আবির : ভয় পেয়ে না সুইটহার্ট তুমি যদি বউ সাজো বিশ্বাস করো ওদের গায়ে কেউ একটা ফুলের টুকাও দিতে পারবে না…..
তিশা : এতো বাজে আপনি এতো….. কাজটা আপনি একদম ঠিক করছেন না মিস্টার আবির রহমান এর দাম কিন্তু আপনাকে দিতে হবে….
আবির : ওকে জান আমি দাম দিয়ে দিবো….. তুমি বরং চুপচাপ বউ সেজে ফেলে…..
তিশা রাগে নাক মুখ লাল হয়ে যাচ্ছে…..
আবির : আমি এখন আসি সুইটহার্ট ওরা তোমাকে বউ সাজতে হেল্প করবে ( সরি জান আমি এটা করতে চাই নি কিন্তু তুমি যে বড্ড জেদি যার জন্য আমাকে এসব বাধ্য হয়ে করতে হলো)
আবিরের ফোনে একটা কল আসে আবির ফোনটা পিক করে……
আবির : হ্যালো……
___হ্যালো স্যার নিবর স্যারকে পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে…
আবির : হোয়াট?? এটা কি করে হলো তোমরা থাকতে এত বড় অঘটন হলো কি করে ….
____স্যার আসলে নিবর স্যার তো আমাদেরকে ফাকি দিয়ে অন্য রাস্তায় চলে গিয়েছিল আর এখন রাস্তার মাঝে এসে দেখি নিবর স্যারের গাড়ি আর মানুষের কাছ থেকে জেনেছি যে নিবর স্যারকে পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে……
আবির : ঠিক আছে আমি এখনেই আসছি…..
আবির তাড়াতাড়ি করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যায়…..
আর এদিকে তিশা চিন্তায় পরে যায় কি এমন হলো যে এত তাড়াতাড়ি করে আবির বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলো…..
আবির গাড়ি ড্রাইভ করে পুলিশ স্টেশনে পৌছে…… পুলিশ স্টেশনে আবিরকে দেখে সবাই কিছুটা ভয় পেয়ে যায়… আবির সোজা ওসির কাছে যায়…..
আবির : আমার ভাই কোথায়???
থানার ওসি আবিরকে দেখে তাড়াতাড়ি চেয়ার থেকে উঠে দাড়ায়…..
ওসি : একি স্যার আপনি এখানে আমাকে বলতেন আমি নিজেই চলে যেতাম আপনার কাছে….
আবির : আমার ভাই কোথায় সেটা আগে বলুন????
ওসি : আপনার ভাই মানে…..
আবির : হে আমার ভাই যাকে আপনার এখানে তুলে নিয়ে এসেছেন….
নিবর : ভাইয়া আমি এখানে…..
আবির তাড়াতাড়ি করে নিরবের কাছে যায়….
আবির : নিবর তুই এখানে আসলি কি করে??? আর কি এমন হয়েছে যার জন্য পুলিশ তকে ধরে নিয়ে এসেছে…..
ওসি : স্যার আমি বলছি আসলে স্যার একটা বড় ভুল হয়ে গেছে একটা মেয়ে ফোন করে বলেছে যে ওনি নাকি রাস্তায় খুব জোরে গাড়ি চালাচ্ছেন যার জন্য রাস্তার সব মানুষের অসুবিধা হচ্ছে তাই আমার ওনাকে ধরে নিয়ে এসেছি এখানে তবে ওনাকে আমি লকাবে ডুকাই নি…..
আবির : নিবর কি হয়েছিল বলতো আমাকে??.
নিবর : আরে ভাইয়া আমার গাড়ির সামনে হঠাৎ করে একট মেয়ে চলে এসেছিল ভাগ্যিস আমি তাড়াতাড়ি ব্রেক করাতে বেচে গেছে….
আবির : ঠিক আছে তুই যা গাড়িতে গিয়ে বস….
ওসি : হে স্যার ওনাকে নিয়ে যান আপনার সাথে…..
আবির : নেক্সট টাইম সবকিছু জেনে শুনে তারপর একজনকে ধরে নিয়ে আসবেন ওকে…. কথাটা যেন মনে থাকে
ওসি : হে স্যার মনে থাকবে আমার….
আবির : গুড আর সন্ধ্যায় আমার বিয়ে নিশ্চয়ই জানেন তাই সন্ধায় তাড়াতাড়ি চলে আসবেন এখন আমি আসি….
ওসি : ওকে স্যার….
আবির যাওয়ার সাথে সাথে ওসি চেয়ার বসে পড়ে পানির গ্লাস নিয়ে একদমে সবটা পানি খেয়ে ফেলে….
আবির গাড়ি ড্রাইভ করছে আর পাশেই নিরব বসে আছে……আর আবিরের গাড়ির পিছনে আর দুটা গাড়ি আছে গার্ডদের….. আবির নিরবের দিকে তাকিয়ে দেখে নিবর কিছু একটা নিয়ে ভাবছে….
আবির : কি ভাবছিস???
নিবর : মেয়েটা এত কেন সুন্দর?? আমি তো প্রেমেই পড়ে গেছি ভাইয়া ( অনমনে মুখ ফুসকে বেরিয়ে যায়)
আবির সাথে সাথে গাড়ি ব্রেক করে….
আবির : কি বললি তুই??
নিবর : কই কিছু না তো….
আবির : নিবর সত্যি কথা বল আমাকে….
নিবর : না মানে ভাইয়া ( মাথা চুলকাতে চুলকাতে….)
আবির : বুঝেছি বাংলাদেশে এসেই প্রেমে পড়ে গেছিস তাই তো….. ঠিক আছে নো প্রবলেম তর বিয়েটা আমি দিয়ে দেব যার প্রেমে তুই পড়েছিস এখন আপাতত বাড়ি আমরা বাড়ি যাই কেমন….
নিবর : হে ভাইয়া চলো……
নিরব : আচ্ছা ভাইয়া তুমি বলেছিলে আমি বিদেশ থেকে ফিরে আসার পর তুমি আমাকে একটা সারপ্রাইজ দিবে সেটা কি বলতো…
আবির : আগে তুই বাড়ি তো চল তারপর তোর সারপ্রাইজ দিবো এর আগেই যদি সবকিছু বলে দেই তাহলে সারপ্রাইজটা তো আর সারপ্রাইজ থাকে না তাই না….
নিরব : ঠিক আছে আগে বাড়ি যাই তারপরেই সারপ্রাইজটা দেখবো আমি….
আবির আর নিরব রহমান ভিলাতে এসে পৌছায় নিরব গাড়ি থেকে বের হয়ে তো পুরাই আবাক বাড়ি সাজানো দেখে….
নিরব : একি ভাইয়া বাড়িটা এতো সুন্দর করে সাজানো হয়েছে কেন?? তাহলে এটাই কি তোমার সারপ্রাইজ
আবির : না রে তোর সারপ্রাইজ ভিতরে আছে এখন তুই গিয়ে ফ্রেস হয়ে কিছু খাবার খেয়ে রেডি হয়ে নে একটু পরেই অনুষ্টান শুরু হবে….
নিরব : ভাইয়া আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা……
আবির : তকে এখন কিছু বুঝতে হবে তুই গিয়ে রেডি হ আর তর বিছানার উপর তর সব পোশাক রাখা আছে…
নিরব : আচ্ছা ভাইয়া আমি তাহলে আসি…..
সন্ধ্যায় হয়ে গেছে সব গেস্টরাও এসে পড়েছে…… শুধু তিশার বাড়ি থেকে কেউ আসে নি আবির গাড়ি পাঠিয়ে ছিলো তিশার বাড়িতে তিশার বাবা মা আর বোনকে আনার জন্য কিন্তু ওরা গাড়ি ফিরত পাঠিয়ে দিয়েছে….
আবির সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছে..
নিরব : ভাইয়া অনেকক্ষন তো হয়ে গেলো আমার সারপ্রাইজটা কোথায় বলো তো???
আবির : একটু ওয়েট কর তর সারপ্রাইজ এসে পড়বে…..
আবির সিড়ির উপরে তাকিয়ে দেখে তিশা নামচ্ছে তিশাকে দেখে আবির আবারও একটা বড় ধরনের ক্রাস খায়…..
লাল লেহেঙ্গা মুখে হালকা গোলাপি মেকাপ ঠোটে হালকা লাল লিপস্টিক নাকে নথ চোখে কালো কাজল…… হাত বরতি চুড়ি খোপাতে বেলি ফুলের মালা কানের দু সাইডে কিছু চুল ফেলে রেখেছে…. তিশাকে আজকে হুর পরী লাগছে কিন্তু আপসোস তিশার মুখের ওই মিষ্টি হাসিটা নেই যেই হাসিটা হাসলে তিশাকে আরও বেশি মিষ্টি আর সুন্দর লাগতো….
সবাই তিশার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে তবে আমাদের হিরো কিন্তু কোনো অংশে কম নয় তাকেও আজকে অনেক মেয়েরা দেখে ক্রাস খেয়েছে কিন্তু যখন জানতে পারে আজকে আবিরের বিয়ে তখন থেকেই সবার মুখে একটা কথা আমি কোন আবিরের বউ হতে পারলাম না…. মেয়েটা খুব লাকি রে যে আবিরের বউ হচ্ছে এমন হ্যান্ডসাম ছেলেই তো সব মেয়েরা যায়
আবির আজকে একটা মেরুন কালারের পান্জাবি পড়েছে সাথে চুড়িদার গালতে একটা ওড়না…. চুলগুলো খাড়া করে রেখেছে মুখে খোচা খোচা দাড়ি বাম হাতে রোলেক্স গড়ি আর যেটা দেখে আবিরের প্রতি মেয়েরা ক্রাস খায় তার কারন আবিরের এডিটিয়োট……..
নিরব : ভাইয়া ওনি কে???
আবির : তর ভাবি….
নিরব : হোয়াট?? তুমি বিয়ে করছো আজকে আর আমাকে এখন বলছো….
আবির : আরে এটাই তো তর সারপ্রাইজ সবসময় বলতি না আমি যাতে বিয়ে করি তাই তো বিয়ে করছি….
নিরব : ভেরি বেট ভাইয়া তুমি আমাকে এখন বলছো তোমার বিয়ে আজকে আমি কিন্তু খুব রাগ করেছি তোমার উপরে…
আবির : আচ্ছা আচ্ছা বাবা আমার ভুল হয়ে গেছে সরি এই দেখ কান ধরছি…
নিরব : হুম ঠিক আছে…..
আবির গিয়ে তিশার পাশে দাড়ায় তিশা আবিরকে দেখে দুরে সরে যেতে চাইলে আবির তিশার হাত ধরে ফেলে…. আবির তিশার কান বরাবর নিচু হয়ে বলে….
আবির : কোথায় যাচ্ছো সুইটহার্ট আমাকে ছেড়ে??
তিশা : আমার হাত ছাড়ুন….
আবির : ঠিক আছে ছাড়ে দিবো কিন্তু আমার পাশে থেকে তুমি যাবে না….
তিশা : আপনার পাশে দাড়ালে আমার শরীর ঘিনঘিন করে বুঝলেন… ( রাগে)
আবির : ও মা তাই না….
তিশা : আমার হাতটা ছাড়ুন বলছি…
আবির : ঠিক আছে ছেড়ে দিছি কিন্তু এর পর কিন্তু আমার হাত থেকে ছাড়া পাবে না সুইটহার্ট……
আবির আর তিশাকে এক সাথে মুখোমুখি বসানো হয় কিন্তু কেউ কারো মুখ দেখতে পাচ্ছে না কারন ওদের মাঝখানে সাদা কাপড় দেওয়া থাকে….. কাজী আসে বিয়ে পড়ানোর জন্য আবিরকে কবুল বলার সাথে কবুল বলে দিলো কিন্তু তিশা কবুল বলছেই না কখন থেকে কাজী বলেই যাচ্ছে কবুল বলার জন্য কিন্তু তিশা বলেছেই না….
আবির একজনকে তিশার কাছে একটা ফোন দিয়ে পাঠায়…. তিশা ফোন ওপেন করে দেখে একটা মেসেজ….. তিশা মেসেজ ওপেন করে দেখে….
“”সুইটহার্ট তুমি এখন যদি তিন বার কবুল না বলো তাহলে নিশ্চয়ই তুমি বুঝতে পারছো আমি কি করবো তাই প্লিজ আমাকে এমন কিছু করাতে ব্যাধ্য করো না “””
তিশার বুঝতে বাকি রইলো এটা কার মেসেজ…..এর আবিরের মেসেজটা দেখে এটা বুঝতে পারলো ও কিসের কথা বলছে তাই তিশা ওর বাবা মা আর বোনের সুরক্ষার কথা ভেবে…… কাজী সাহেব কবুল বলার জন্য তিশাকে বলে তিশা সাথে কবুল বলা শুরু করে…..
তিশা : ক…. বু…. ল ক…. বুল…. ক… বু… ল…
তিশা খুব কষ্ট করে তিন বার কবুল বলে….ছয় লক্ষ একটা টাকা দেনমহর ধার্য করে আবির আর তিশার বিয়ে সর্ম্পূন হয়……
#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_7
.
.
.
.
.
তিশা ফুল দিয়ে সাজানো খাটে বধু সাজে বসে আছে…. কিছুক্ষন পরেই আবির ঘরে আসে তিশা রাগে সাপের মতো ফুসছে…. আবির মুচকি একটা হাসি দিয়ে খাটে এসে বসে তিশার হাত ধরতে যাবে সাথে সাথে তিশা খাট থেকে নেমে যায়…
তিশা : একদম র্স্পশ করবেন না আমাকে আপনার ওই নোংরা হাত দিয়ে…
আবির নিজের হাতে তাকিয়ে বলে…
আবির : নোংরা হাত আমার কোথায় সুইটহার্ট আমার হাত তো একদম পরিস্কার…
তিশা : দেখতে পরিস্কার কিন্তু আপনার ওই হাতের ইশারাতে আমার বাবা মা আর বোনের মুত্যৃর কথা হয়েছে…… (রাগে)
আবির : আরে ওইটা তো আমি তোমাকে ভয় দেখিয়েছি যাতে তুমি আমাকে সবার সামনে বিয়ে করতে পারে….
তিশা : বাহ খুব ভালো কাজ করেছেন আপনি…. আমাকে বিয়ে করে মনে হচ্ছে যেন আকাশের চাদ পেয়ে গেছেন….
আবির : চাদ তো আমি অনেক আগেই পেয়ে গেছি এখন শুধু সেই চাদকে ধরার অপেক্ষা…..
আবির তিশার দিকে এক পা এক পা করে এগিয়ে যাচ্ছে আর তিশা পিছিয়ে যাচ্ছে….
তিশা : কি করেছেন আপনি?? একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না…
আবির : কেন কাছে আসবো না?? তুমি আমার বিয়ে করা বউ তাহলে তো তোমার কাছেই আসবো …
তিশা : আমি বলছি তো আপনি ও খানেই ধেমে যান….
তিশা পিছাতে পিছাতে আলমারির সাথে আটকে যায় আবির তিশার অনেক কাছে চলে আসে তিশা পাশ কেটে চলে যেতে চাইলে আবির তিশার দুপাশে হাত রেখে তিশাকে আটকে দেয়…
তিশা : কি… করছেন আপনি এসব??
আবির তিশার ঠোটের দিকে নিজের মুখ এগিয়ে নিছে… তিশা নিজের দু চোখ বন্ধ করে ফেলে…. প্রায় অনেকক্ষন হয়ে যায় তিশা কোনো অনুভব না পেয়ে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে আবির তিশার এক হাত দুরে দাড়িয়ে আছে…. আবির নিজের দু ভ্রু নাচিয়ে বলে….
আবির : কি ভেবেছিলে?? তোমাকে আমি কিস করবো…. আরে চিন্তা করো না আমি এতটাও খারাপ না যে নিজের বউয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে তাকে কিস করবো….. তোমার জন্য একটা গিফট এনেছি…
তিশা : কিসের গিফট?? আমি আপনার কাছ থেকে কোনো গিফট টিফট নিবো না বুঝেছেন…. এখন শুধু একটাই চিন্তা আমার এই বাড়ি থেকে আমি কখন বের হতে পারবো সারাজীবনের জন্য….
আবির : তুমি কোনো দিনও এই বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না যতক্ষন না আমি চাইবো….
তিশা : ওও তাই নাকি তার মানে বলতে চাইছেন আপনি আমি এই বাড়ি থেকে বের হতে পারবো না…
আবির : না আমার অনুমতি ছাড়া এই বাড়ি থেকে কোনো মশা মাছিও বের হতে পারে না আর তুমি বের হবে কি করে সুইটহার্ট….
তিশা : ঠিক আছে আমি ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই বাড়ি থেকে বের হবো…..
আবির : চ্যালেজ্ঞ করছো আমাকে……
তিশা : হে করছি…
আবির : ঠিক আছে তোমার চ্যালেজ্ঞ এক্সসেপ্ট করলাম আমি… তুমি যদি এই ২৪ ঘন্টার ভিতরে বাড়ি থেকে বের হতে পারো তাহলে আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি তোমাকে আমার জীবন থেকে সারাজীবনের জন্য দুরে সরিয়ে দিবো…. কিন্তু তুমি যদি এই ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাড়ি থেকে বের হতে না পারো তাহলে তুমি কি করবে???
তিশা : ঠিক আছে আমিও তাহলে আপনাকে কথা দিচ্ছি আমি যদি এই ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই বাড়ি থেকে বের হতে না পারি তাহলে সারাজীবন আমি এই বাড়িতেই থাকবো কোনো দিন আমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো না….
আবির : ওয়াও এই তো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি আমি তো ভাবছিলাম তোমাকে কি করে এই বাড়িতে রাখতে পারি আর সেই তুমি কি না এমন শর্ত দিয়ে বসলে তাহলে তুমি ধরেই রাখো তুমি এই বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না….
তিশা : এটা তো এখন বুঝা যাবে মিস্টার আবির রহমান আমি এই বাড়ি থেকে বের হতে পারবো নাকি পারবো না এটা তো ২৪ ঘন্টা পর বুঝা যাবে…. আর আপনার কথাটা মনে রাখবেন যে আমি এই বাড়ি থেকে বের হতে পারলে আপনি কি করবেন….
আবির : এই আবির রহমান যাকে একবার কথা দেয় সেটা অব্যশই রাখবে কিন্তু বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর… এখন গিয়ে শুয়ে পড়ো রাত অনেক হয়েছে এখন তো বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না অনেক রাত হয়ে গেছে তাই গিয়ে শুয়ে পড়ো….
আবির গিয়ে সোফাতে শুয়ে পড়ে…
সকালে তিশা আযানের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গে… তিশা সোফাতে তাকিয়ে দেখে আবির নেই…..
তিশা : গেলো কোথায় বজ্জাতটা??? জাহান্নামে যাক তাতে আমার কি আমি বরং ওযু করে নামাজটা পড়ে নেই….
তিশা ওযু করে জায়নামাজ ফ্লোরে বিছিয়ে নামাজ পড়ে নেয়…. নামাজ পড়ে তিশা সবসময়ের মতোই বেলকনিতে দাড়িয়ে র্সূযউদয় দেখে….. তিশা নিচে তাকিয়ে আবির আর একটা ছেলে মাথায় টুপি পড়ে বাড়িতে ডুকছে…
তিশা : বাবা বজ্জাতটা নামাজও পড়ে মসজিদে গিয়ে এতো ভালো কিন্তু সাথে ওই ছেলেটা কে আবার???
আবির ঘরে ঢুকে দেখে তিশা খাটের উপে নেই আবির চিন্তায় পড়ে যায় এত সকালে তিশা বাড়ি থেকে চলে যায় নিতো আবির ঘর থেকে বের হতে যাবে এমন সময় তিশা কাশি দিয়ে উঠে তিশার কাশির শব্দটা শুনে আবির নিশ্চিন্ত হয়…. তিশা কাশিটা যেন বেড়েই যাচ্ছে….. তিশার মুখের সামনে হঠাৎ করে কেউ একজন পানির বোতল ধরে…. তিশা তাকিয়ে দেখে আবির….,. তিশা আবিরের দিক থেকে মুখ সরিয়ে নেয়….
আবির : আমার উপর রাগ করে নিজেকে কষ্ট দিবে না তাই পানিটা খেয়ে নাও প্লিজ….
তিশা আবিরের কাছ থেকে পানির বোতলটা নিয়ে পানি খায়…
তিশা : ধন্যবাদ পানি দেওয়ার জন্য….
আবির : বাবা বাবা তুমি দেখা যায় ধন্যবাদও দিতে পারো….
তিশা : এই আপনার প্রবলেম কি বলুন তো?? আমাকে একটু একা থাকতে দিন….
আবির : ঠিক আছে…. আর এটা কি ভেবেছো কি করে বাড়ি থেকে বের হবে???
তিশা : আমি এটা আপনাকে বলতে যাবো কেন?? যে আমি কি করে এই বাড়ি থেকে বের হবো….
আবির : ওওও এটাও তো একটা কথা…. ঠিক আছে বলো না….
আবির যেতে চাইলে তিশা আবিরকে ডাক দেয়….
তিশা : শুনুন….
আবির : হুম বলো….
তিশা : ওই ছেলেটা কে??
আবির : কোন ছেলেটা???
তিশা : যে ছেলেটার সাথে আপনি একটু আগে বাড়িতে ডুকলেন সেই ছেলেটা….
আবির : ওও আচ্ছা…. তার মানে তুমি আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে উপর থেকে দেখছিলে তাই তো….
তিশা : শুনুন আমার এতো শখ নেই যে আপনাকে দেখবো তাও আবার লুকিয়ে লুকিয়ে….
…
আবির : শখ নেই তোমার আমাকে দেখার …… একদিন তুমি আমাকে চোখে হারাবে এক মুর্হূত তুমি আমাকে না দেখে তাকতেই পারবে না…..
তিশা : সেগুড়ে বালি….. এটা কোনো দিন হবে না যে আমি আপনাকে চোখে হারাবো আমি আপনাকে দু চোখে দেখতে পারি না বুঝতে পেরেছেন….. তাই আমি আজকে যে করেই হোক এই বাড়ি থেকে বের হবো…
আবির : ঠিক আছে দেখা যাবে সুইটহার্ট… আর ওই ছেলেটার সাথে তোমাকে আমি পরে পরিচয় করে দিবো কেমন??? এখন আমার খুব ঘুম পাচ্ছে যাই একটু ঘুমাই গিয়ে…..
তিশা : এখন আবার কিসের ঘুম তাও আবার সকালে….
ব্রেকফাস্ট করার জন্য নিরব অনেকক্ষন ধরে ডায়নিং টেবিলে বসে আছে কিন্তু আবিরের কোনো দেখা নাই….
নিরব : ভাইয়া বিয়ে করে পুরাই গেছে আমি যে ছোট ভাই হয়ে অপেক্ষা করছি কখন থেকে তার কোনো মুল্যই নেই ওনার কাছে…
আবির : কিরে একা একা কি বিড়বিড় করচ্ছিস???
নিরব : এতক্ষনে তোমার আসার সময় হলো তাই না ভাইয়া….
আবির : আরে ঘুমিয়ে পড়ছিলাম তাই একটু লেইট হয়েগেছে…
নিরব তিশাকে আসতে দেখে বলে…
নিরব : গুড মর্নিং ভাবি…
তিশা : গুড মর্নিং…( আবাক হয়ে বলে)
আবির : আচ্ছা তিশা তোমার সাথে আমার ছোট ভাইটার পরিচয় করে দেই…. ও হলো নিরব রহমান আমার একমাএ আদরের ছোট ভাই ও এতদিন বিদেশে ছিলো পড়াশোনার জন্য গতকালকে দেশে ফিরেছে আর এখন থেকে ও আমাদের সাথেই থাকবে….
তিশা : ওওওও( তাতে আমার কি?? আমি তো আজকে চলে যাবো এই বাড়ি থেকে)
আবির তিশা আর নিরব ব্রেকফাস্ট খেতে শুরু করে…
নিরব : আচ্ছা ভাইয়া শুনো আমাকে ব্রেকফাস্ট করে বেড়ুতে হবে অনেক দিন পরে দেশে ফিরেছি তো তাই বুন্ধরা সবাই মিলে একটা পার্টি রেখেছে তাই আজকে ফিরতে আমার রাত হবে…
আবির : আচ্ছা যা তবে গার্ড আর ড্রাইভার নিয়ে যাবি সাথে করে….
নিরব : আচ্ছা… তাহলে আমি আসি
আবির : আচ্ছা সাবধানে যাস….
আবির তিশাকে লক্ষ্য করে তিশা ব্রেকফাস্ট না করে একজন কাজের মহিলার দিকে তাকিয়ে আছে ….
আবির : তিশা কি হলো খাচ্ছো না কেন???
তিশা নিজের ঘোর থেকে ফিরে আসে….
তিশা : কি হয়েছে???
আবির : বলছি খাচ্ছো না কেন????
তিশা : আমার ইচ্ছে আমি খাই বা না খাই তাতে আপনার কি???
আবির সব র্সাভেন্টদের ইশারা করতে এখান থেকে চলে যায়….. আবির তিশার হাত ধরে টান দিয়ে এনে নিজের কোলে বসায়…..
তিশা : আরে এসব কি করছেন?? ছাড়ুন আমাকে…
তিশা উঠতে চাইলে আবির তিশার কোমড় চেপে ধরে…. তিশা আবিরের হাত থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ছটপট করে….
#চলবে