“কলেজর বড় আপু ৭ম পর্ব

0
1108

কলেজর বড় আপু
Sumon Al-Farabi
৭ম পর্ব
⬇⬇

আমি আরও দুই দিন অসুস্থ থাকলাম । এরপর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলাম ।
সামনে আমার টেস্ট পরীক্ষা । পরীক্ষায় ভালো করতে হবে তাই মনোযোগ দিয়ে পড়া শুরু করলাম ।
বিকেল বেলা টেবিলে বসে পড়ছি এমন সময় নীলাদ্রি রুমে আসলো
– কি রে পড়ছিস?
( শুনেও না শোনার ভান করে পড়েই যাচ্ছি )
– বাবাহ এতো মনোযোগ ? কানে কথা যাচ্ছে না ?
– কিছু বলবেন ?
– কি আর বলবো ?
– তাহলে প্লিজ আমায় বিরক্ত করবেন না । আমি একটু পড়ি । সামনে পরীক্ষা ।
– যতোই পড় না কেন রেজাল্ট তো ঐ ফেলই আসবে ।
– তাই ?
– তাছাড়া আবার কি? ফেল ছাড়া পাস করতে পারবি না।
– সেটা রেজাল্ট এ দেখা যাবে ।
– হুম ।
এরপর নীলাদ্রি রান্না ঘরে গেলো । বুঝলাম না এই মেয়ে ঠিক কি করতে চাচ্ছে ? আম্মু আব্বু র কাছে লক্ষী মেয়ে হয়ে গেছে অলরেডি ।
আজ জানতে চাইবো উনার আসল মতলব টা কি ?
রাতে খাওয়া করে এসে পড়তে বসলাম।।।।
– সারাদিন পড়ে কি লাভ। রেজাল্ট তো ঐ ফেল।
– হুম । তাই মনে হচ্ছে । একটা কথা বলি?
– হুম বল
– আপনি আমার সাথে বাজে ব্যবহার আর আব্বু আম্মু সাথে ভালো ব্যবহার করেন কেন ?
– ওহহ এই কথা
– হুম ।
– এটা জেনে তোর কি দরকার ?
– খুব জানতে ইচ্ছে করছে
– ওকে শোন তবে আমি তোর লাইফ হেল করতে এসেছি । তো ওনাদের কেন ক্ষতি করবো ।
– ওহহ আচ্ছা ।।
– আর ওনারা অনেক ভালো
– জানি। একি লাইট বন্ধ করলেন কেন ?
– আমি ঘুমাবো
– তো ঘুমান তার জন্য কি লাইট বন্ধ করতে হবে ?
– লাইট জ্বললে আমার ঘুম আসে না ।
– ওহহ আচ্ছা । রোজ তো দেরী করে ঘুমান।
– তো
– না মানে তাহলে আজ এতো তাড়াতাড়ি ঘুমাচ্ছেন যে?
– আমার ঘুম পাচ্ছে । আর এটা আমার ইচ্ছে । তোর তাতে কি ?
– না কিছু না । আপনি ঘুমান।
এরপর আমি বেলকুনিতে গিয়ে লাইট জ্বালিয়ে পড়তে শুরু করলাম ।
একটু পরে নীলাদ্রি আবার বেলকুনিতে আসলো।
– কি হলো ঘুমান নি?
– ঘুম আসছে না ।
– সে কি একটু আগেই তো বললেন আপনার ঘুম পাচ্ছে ।
– তখন পাচ্ছিলো বাট এখন পাচ্ছে না ।
– ওহ।
– আর তুই আমায় কেন বলছিস? তুই আমায় বলার কে?
– আমি বলার কেউ না ?
– কিহহ? তুই কে আমার?
– ভুলে যাবেন না আপনি আমার বিয়ে করা বউ।
– হা হা াহা।
– হাসার কি কিছু বললাম
– বউ? কার বউ?
– আমার বউ
– কে তোর বউ?
– আপনি ?
– ছোট লোক আবার স্বপ্ন দেখে আমায় বউ করার ।
– মানে ?
– আমি তোকে বিয়ে করছি শুধু তোকে এটা বোঝাতে যে আমার সাথে লাগতে আসার পরিনাম ভালো হয় না
– তাই । কি করবেন আপনি আমার?
– তোর জীবন থেকে হাসি সুখ সব মুছে দিবো।
– প্রার্থনা করেন । সফল হলেও হতে পারেন ।
– সফল তো আমি হবো ।
– এতো কনফিডেন্ট?
– অবশ্যই । কারণ আমি কখনো হারতে শিখি নি।
– এই জন্য তো আপনি জীবনের প্রকৃত সুখ টা উপলব্ধি করতে পারেন নি।
– মানে ?
– মাঝে মাঝে নিজে হেরে গিয়ে অন্য কে জিতিয়ে দেওয়ার মধ্যে একটা সুখ থাকে যা হাজার জয়ীর আনন্দ কে হার মানায়।
– তোর প্রবাদ তোর কাছেই রাখ।
– বাঙালী কখনো ভালো কথা কানে নেয় না । এই জন্য দেশের কোনো উন্নতি নেই ।
– তুই বলতে চাচ্ছিস তোর কথা শুনে আমি তোকে ক্ষমা করে দেই?
– আমি ক্ষমা চাইলে না আপনি আমায় ক্ষমা করবেন ?
– মানে ?
– আমি তো কোনো দোষ করিনি আমি প্রতিবাদ করেছি । আর প্রতিবাদ করা কোনো দোষ নয় ।
– তোকে এমন শিক্ষা দিবো যে জীবনেও কোনো মেয়ের দিকে তাকাতে সাহস পাবি না।
– আমি এমনিতেই তাকাই না।
– এই তোর মুখ থেকে এই মুচকি হাসি আমার একদম সহ্য হয় না ।
– তাতে আমার কি? আমি তো এমনই ।
– দূর তোর সাথে কথা বলে অযথা সময় নষ্ট না করে ঘুমাই।
– হুম আপনি তাই করেন । আমি ও শান্তি করে একটু পড়ি ।
– তুই মর তাতে আমার কি?
– আমি মরলে আপনিই বিধবা হবেন । ( মুচকি হেসে )
– তুই যদি আর আমার সামনে এভাবে হাসিস তবে মুখ সেলাই করে দিবো।
– আমি আপনার জন্য তো আমার স্টাইল চেঞ্জ করবো না তাই না।
– দূর । তোর সাথে কথা বলাই বেকার
নীলাদ্রি রাগ করে রুমে চলে গেল । আমিও চুপচাপ পড়তে শুরু করলাম । শুধু শুধু এসে আমার সময় নষ্ট করে দিয়ে চলে গেল ।
ও যে ইচ্ছে করেই এতো তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লো তা আমি আগেই বুঝতে পারছি ।
পরের দিন সকাল বেলা বাসার সামনে সবাই র্যাকেট খেলছে । তাই আমিও নিচে গেলাম । গিয়ে আমিও খেলতে শুরু করলাম । এমন সময় হঠাৎ নীলাদ্রি আসলো
– আমিও খেলবো
– আপনি পারবেন না।
– নীলাদ্রি পারে না এমন কোনো কাজ নাই ।
– ডায়লগ
– কি বললা?
– কিছু না । এই রবি এই নে ওনার সাথে খেল
– সুমন তুই খেল।
– না আম্মু ।
– ছাড়তো আম্মু । ভয় পাইছে ।
– আমি কাউকে ভয় পাই না ।
– তা তো দেখতেই পারছি ।
– কি?
– যদি ভয় না পাও তবে আসো খেলি।
– ওকে ।
এরপর খেলতে শুরু করলাম । আমি গেমের কাছাকাছি চলে আসছি কিন্তু ও এখনো…..
দেখলাম নীলাদ্রি র মুখটা অনেকটা চুপসে যাওয়া বেলুন হয়ে গেছে । তাই ইচ্ছা করেই খারাপ খেলতে লাগলাম ।
খেলা শেষে আমি গেম খাই। নীলাদ্রি সেই লেভেলের খুশি । কারণ আমায় হারাতে পেরেছে ।
আম্মু আব্বু আর যারা ওখানে আমার সাথে ছিলো সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।
আমি সবার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে রুমে আসলাম ।
একটু পরে নীলাদ্রি ও আসলো। আমি জানি এখন উনি লেকচার শুরু করবেন ।
– কি রে ? দেখলি কিভাবে তোকে হারিয়ে দিলাম ?
– হুম ।
– তুই আগেই জানতি পারবি না তাই প্রথমে না বলেছিলি তাই না ।
– হুম ।
– যেটা পারিস না সেটার আশেপাশে ঘুরিস কেন?
– এমনি। যদি কিছু শিখতে পারি ।
– তোর লজ্জা নেই ?
– কেন ?
– তুই আমার কাছে হারলি মানে একটা মেয়ের সাথে হারলি
– তো
– তো মানে? তুই তবুও মুচকি হাসছিস?
– তো কি করবো
– তুই ছেলে হয়ে একটা মেয়ের সাথে হারলি তোর লজ্জা পাওয়া উচিত
– হুম । কেন ছেলে কি মেয়ের কাছে হারতে পারে না ? মেয়েরা কি মানুষ নয়? তারা কি ভালো খেলতে পারে না ?
আর ছেলে মেয়ে খেলায় যে সব সময় ছেলেকেই জয়ী হতে হবে এমন তো কোনো আইন নেই । আপনি ভালো খেলেন তাই আপনি জয়ী । এটাই তো আসল কথা যে ভালো খেলবে সেই জিতবে
– হুম । আমি জানি আমি ভালো খেলি।
– হুম । জয়ী আপনি কিন্তু আনন্দ টা আমার বেশি ।
– মানে
– কিছু না ।
– ওহ।
– আর কিছু বলবেন ?
– কেন?
– না মানে আমি এখন পড়তে বসবো
– তো?
– তখন আমার কানের কাছে বকবক করবেন না প্লিজ
– কি? আমি বকবক করি
– এই না না আমি সেটা বলিনি
– তুই সেটাই বলছিস। তুই শুধু একটু দারা তারপর দেখ তোর কি হাল করি ।
– সেটা পরে দেখা যাবে
– শুধু অপেক্ষা কর একটু
– ওকে ।
নীলাদ্রি রাগ করে বাইরে চলে গেল । আমিও হাফ ছেড়ে বাঁচলাম । এবার শান্তি মতো একটু পড়তে পারবো ।
……………
…………..
………….
…………
………..
……….
………
……..
…….
……
…..
….

..
.
to be continue

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here