“কলেজের বড় আপু ৬ষ্ঠ পর্ব

কলেজের বড় আপু
.
Sumon Al-Farabi
.
৬ষ্ঠ পর্ব
.
এরপর রুমে গেলাম । গিয়ে ফ্রেশ হওয়ার জন্য বাথরুমের দিকে যেতে লাগলাম
– এই দারা তুই ওদিকে কই যাস?
– বাথরুমে
– তুই আমার বাথরুমে যাবি?
– হুম ।
– তুই জানিস ওটা আমার পারসোনাল বাথরুম ।
– তো
– ঐ বাথরুম আমি ছাড়া কেউ ইউজ করে না
– তো
– তুই কি করে ভাবলি তোর মতো একটা ফকির কে আমি আমার বাথরুমে যেতে দিবো?
– আপনি তো অপমান করার জন্য এখানে আসছেন । আমি ভুলেই গেছি । বলেন কোন বাথরুমে যাবো ।
– নিচে যা। কাজের লোকের বাথরুমে । ওদের টা তোর বাথরুমের থেকে ভালো।
– হতে পারে আপনারা ধনী মানুষ ।
– যা ওখানে যা।।।
এরপর আমি নিচে আসলাম । এসে একজন মহিলা কে দেখলাম। তাকে সালাম দিলাম।
– কি জামাই বাবু আপনি কি খোঁজেন ?
– নিচে নাকি বাথরুম আছে
– হ্যা কিন্তু আপনি কি করবেন ?
– কিছু না । একটু ফ্রেশ হবো ।
– নীলাদ্রি আপার ঘরে তো আছে ।
– জানি । ওটাতে উনি আছে ।
– ওহহ। …
– কি হইছে ভাইয়া
– আপা মনি জমাই বাবু এই বাথরুমে না কি যাবে ।
– কেন ? রুমেই তো আছে
– ওটাটে তোমার আপু আছে ।
– ওহহ আচ্ছা আপনি আমার টাতে আসেন ।
– না থাক । এটাতেই হবে ।
– কি যে বলেন না। আসেন তো।
এরপর আমি শালিকার বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রুমে গেলাম ।
– তুই আসলেই একটা ছোটলোক
– মানে ?
– কারো রুমে ঢুকতে গেলে যে নক করতে হয় জানিস না ? না কি বাবা মা শিখায় নি?
– ওহহ। আপনি আমার স্ত্রী তাই নক করি নি। নেক্সট টাইম আর ভুল হবে না ।
– মনে থাকে যেন ?
– তবে একটা কথা আপনি আমায় যা বলার বলেন কিন্তু আব্বু আম্মু কে নিয়ে কিছু বলবেন না ।
– আর তুই ও এতো স্ত্রী স্ত্রী করবি না।
– আচ্ছা ।
– কি খুঁজিস ?
– আপনার বই গুলো কোথায়
– ও গুলো তো হিয়া কে দিয়ে দিছি ।
– মানে ?
– মানে হিয়া আমার ছোট বোন । ওকে ফোন করে বই গুলো নিয়ে যেতে বলেছি ।
– কিন্তু কেন?
– ও আমার বোন তাই ।
– কিন্তু আমি এখন কি পড়বো ?
– তুই কি পড়বি আমি কেমনে জানবো?
– আপনি তো বলেছিলেন আপনার বই আমায় পড়তে দিবেন
– তোর কি করে মনে হলো আমার বই আমি তোর মতো ছোটলোক কে পড়তে দিবো?
– কি বলতে চাচ্ছেন আপনি ?
– কিছুই না । আমি দেখবো তুই কি করে ইন্টার পাশ করিস
– একটা কথা হয়তো আপনি জানেন না শকুনের দোয়ায় গরু মরে না ।
– তুই আমায় শকুন বললি?
– আমি কাউকে ইনডিকেট করে বলি নি।
– তাহলে কাকে বললি?
– আমি একটা প্রবাদ বললাম । এখন যার ভাবনা যেমন।
– মানে ?
– আপনি যদি মনে করেন আপনি শকুন তবে এখানে তো আর আমার কিছুই করার নেই ।
– তোরে.. তোরে তো আমি দেখে নিবো।
এরপর রাতে নীলাদ্রির বাবা খাওয়ার জন্য ডাকলো । গেলাম , গিয়ে সালাম দিলাম ।
– তো বাবা কেমন লাগছে আমাদের বাড়ি ?
– অনেক ভালো।
– আমার মেয়ে কেমন?
– অনেক ভালো। অনেক যত্ন করে আমায়।
– তাই ? ও যে এতো তাড়াতাড়ি পরিবর্তন হয়ে যাবে বুঝতেই পারি নি ।
– হুম ।।।
– খাচ্ছো না কেন খাও
– আমার তো খাওয়া শেষ ।
– আচ্ছা ঠিক আছে তুমি রুমে যাও।
– আচ্ছা । ।
রুমে এসে শুয়ে পড়লাম । অনেক ক্লান্ত লাগছে ।
– এই তুই আমার বিছানায় শুয়ে আছিস ? তোর সাহস তো কম না ?
– আসলে অনেক ক্লান্ত লাগছে তো তাই
– তো আমি কি করবো ? মেঝেতে শুয়ে পরতে পারিস নি?
– আসলে
– চুপচাপ বিছানা থেকে উঠে যা।
– আপনি চিল্লাবেন না আমি যাচ্ছি ।
– তাড়াতাড়ি ।
অনেক ক্লান্ত ছিলাম তাই মেঝেতে শোয়ার পরও তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরলাম ।
মাঝরাতে হঠাৎ জাগনা পেলাম । শীত লাগছে কেন জানি । চোখ মেলে দেখি আমার জায়গায় পানি ।
বুঝতে পরলাম এটা ওনার কাজ । কিন্তু কিছু বললাম না । কারণ আম্মু বলছে কিছু না বলতে ।
ওপাশে মুখ করে হাসছে যার শব্দ স্পষ্ট আমার কানে ভেসে আসছে ।
উঠে জামা খুঁজতে লাগলাম । কিন্তু আমার জামা যে ব্যাগে আছে সেই ব্যাগ টাই তো খুজে পাচ্ছি না ।
এই হালকা শীতের রাতে এমন আধা ভিজে আবস্থায় থাকা যে কতো টা কষ্ট কর তা ঐ দিন বুঝেছি ।
সারা রাত এমন ভেজা কাপড়ে ছিলাম । আমি বুঝতে পারলাম আমি অসুস্থ হবো । কিন্তু এখানে আমার সেবা করার কেউ নেই । তাই যে করেই হোক কাল সকালে আমায় বাসায় যেতেই হবে ।
রাতেই একটা বন্ধু কে ফোন দিলাম । তারপর ওকে বললাম যদি আমার শ্বশুর কথা বলতে চায় তাহলে কি বলবে । সব কিছু শিখিয়ে দিলাম ।
সকাল বেলা অনেক খুজে ব্যাগটা খাটের নিচে পেলাম । রাতে সব জায়গায় খুঁজলাম শুধু এই জায়গা ছাড়া । আমি এখানে খুঁজতে এসেও খুজি নি। ভেবেছিলাম এখানে থাকবে না । মহামানব রা ঠিকই বলে সফলতা তোমার এতোটাই নিকটে যা তুমি কল্পনা করো না । তাই কখনো হাল ছেড়ো না ।
ড্রেস চেঞ্জ করে বাইরে আসলাম । দেখি শ্বশুর মশাই বসে আছে । গিয়ে সালাম দিলাম
– কিছু বলবে?
– হুম ।
– বলো?
– আমার একটা বন্ধু অসুস্থ । তাই আমায় বাসায় যেতে হবে
– না আব্বু ওর কেউ অসুস্থ নয়। ও মিথ্যে কথা বলছে
– কি বলছিস এসব ?
– হ্যা। তোমার যদি সত্যি কোনো বন্ধু অসুস্থ থাকে তবে তাকে ফোন দাও আমি নিজে শুনতে চাই ।
এরপর আমি আমার বন্ধুকে ফোন দিলাম এবং লাউড করে শ্বশুর মশাই কে কথা বলতে দিলাম. ও সালাম দিলো এরপর আমি যা যা বলতে বলেছিলাম ও তাই তাই কপি করলো।
– এতো সত্যি বলছে তুই শুধু জামাই কে মিথ্যে বললি। তো তোরা যা আজ।
– আমি একাই যাই উনি না হয় পরে যাবে ।
– আচ্ছা ।
এরপর আমি তাড়াতাড়ি করে ব্যাগ নিয়ে গো টু বাড়ি ।
আমার ধারনা টাই সত্যি । বিকেল হতে না হতেই আমার জ্বর শর্দি এসে হাজির । মনে হয় দাওয়াত করে রাখছিলাম।
– তোর তো ভালোই জ্বর আসছে ।
– হুম ।
– বউমাকে বলবো
– না থাক
– কেন?
– ও একটু বাবার বাসায় ঘুরতে গেছে থাক না। আর তুমি তো আছোই।
– আচ্ছা ঠিক আছে ।
পরের দিন সকাল বেলা দেখি নীলাদ্রি বাসায় এসে হাজির । এমা এতো আম্মুর কাছে এসে মায়া কান্না জুড়ে দিলো।
– কি হইছে কান্না করছো কেন ?
– ওকে কাল কতো বার করে বললাম যে আমাকেও সাথে নাও কিন্তু ও নিলোই না। আজ ও অসুস্থ আমায় একবার ও বলে নি। আমি কি পর???
– আরে না মা। আচ্ছা ঠিক আছে তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আমি আপাতত এর পাশে আছি ।
– আচ্ছা ।
মেয়েরা আসলেই বহুরূপী এদের মন বোঝার ক্ষমতা কারো নাই ।। ।।।
এরা কখন কি করে হয়তো সেটা এরা নিজেও জানে না ।
সামান্য প্রতিশোধ নেবার জন্য এই মেয়েটা কতো অভিনয় করছে । এই অসুস্থ শরীর নিয়েও আমার চিৎকার করে হাসতে ইচ্ছে করছে ।।।
একটু পরে নীলাদ্রি আসলো।
– আম্মু আপনি রুমে যান আমি মাথায় পানি পটি লাগিয়ে দিচ্ছি ।
– আচ্ছা ।
এরপর আম্মু চলে গেল । সাথে সাথে নীলাদ্রি দরজা বন্ধ করে এসে শুয়ে পড়লো ।
– কি হলো শুয়ে পড়লেন যে?
– তো কি করবো ?
– ওহহ কিছু না ।
– তুই কি ভাবছিস তোর মাথায় পটি লাগিয়ে দিবো আমি ?
– আমি জানতাম দিবেন না । কিন্তু আম্মু কে পাঠালেন কেন ?
– একটু কষ্ট পা। তোর কষ্ট দেখতে আমার অনেক ভালো লাগে ।
আমি জানতাম না মানুষ বিষেশ করে মেয়ে মানুষ এতো টা পাষান হয়। সৃষ্টি কর্তা ছেলেদের একটা বিশেষ গুণ দিছে কষ্ট গুলো হাসি মুখে সহ্য করার। তাই হাসি মুখে সব সহ্য করে গেলাম ।
………….
…………
………..
………
……..
……
…..
….

..
.
to be continue

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here