“নেতার মেয়ের সাথে প্রেম পর্ব_০৬

0
858

#গল্প: নেতার মেয়ের সাথে প্রেম
#পর্ব_০৬
_
_
চুপি চুপি চলে গেলাম ঈশিতা বাড়ির সামনে,,, কিন্তু গিয়ে কোনো ফায়দা হলো না কারণ ও তো আর ঘর থেকে বের হয় না,,,, তখন আমার মাথায় আসলো আমি যে কত একটা বোকা।,,,,,

যাই হোক তারপর বাসায় চলে আসলাম,,, বাসায় আসতেই টুম্পা আমাকে দেখে ফেলল আর বলতে লাগলো,,,,

√√কিরে ভাই তুই এত রাতে কোথায় গিয়েছিলে

টুম্পা এবং প্রশ্নে আমি একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম আর কি বলব ঠিক খুঁজে পাচ্ছিলাম না,,,,

√√কি হল কথা বলছিস না কেন কোথায় গিয়েছে এত রাত্রে আবার চুপিচুপি কাউকে না বলে
√√এত রাত কোথায় দেখছিস তুই মাত্র তো দশটা বাজে
√√আমার কাছে কি চোখ নেই মাত্র দশটা বাজে তুই আমাকে শিখাবি
√√আসল ঘুম আসছিল না তাই বাড়ি থেকে একটু ঘুরে আসলাম
√√এত ঢং না করে সোজাসুজি বলতে পারিস যে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজে গিয়েছিলি যেটা আমাকে বলা যাবে না
√√ও হ্যাঁ তাইতো একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজে গিয়েছিলাম যেটা তোকে বলা যাবে না এখন হয়েছে যা রুমে যা
√√তুই আমার সাথে আবার চোখ রাঙিয়ে কথা বলছিস আমি কিন্তু আম্মু আর আব্বুকে এখনই বলে দেব যে তুই এত রাত্রে বাইরে গিয়েছিলি
√√দয়া করে মাফ করে দেবেন আর কোন সময় এমন হবেনা এখন ঘরে যাই

টুম্পা আর কোন কথা না বলে ঠোঁট দুটো বাঁকিয়ে চলে গেল,,, ওর এমন কান্ড দেখে খুব হাসি পেল না,,, কারণ ওকে যখন অপমান করা হয় তখন সব সময় এমন করে আমার সাথে

আবার যখন আমার কাছ থেকে টাকা নিবে তখন একদম আর মানিব্যাগ শূন্য করে নিয়ে যাবে শুধু কলেজে যাতায়াতের ভাড়াটা রাখবে,,, তাও ওর কাছ থেকে অনেক কথা বলে তারপর ওই টাকাটা নিতে হয়

আসলে যার বোন আছে সে বোনের মর্ম বোঝে না আর যার নেই সে হতো বোনের জন্য প্রতিদিনই কিছু শূন্যতা ভোগ করে,,, তাই আমি আমার বোনকে কখনো অবহেলা করি না

তার অবশ্য একটাই কারণ দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝতে হয়,,, একদিন না হয় বোনটা অন্যের ঘরে চলে যাবে তখন তো আমি একা হয়ে যাবে তখন কি করব,, তাই ও আমার সাথে যত দুষ্টুমি করুক না কেন আমি এতে কিছু বলি না ওকে

এসব কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম বুঝতে পারিনি সকালে ঘুম ভাঙলো মোবাইল ফোনে,,, দেখি শাহানুর আমাকে ফোন দিয়েছে,,, তাই আমি তখন ঘড়ির দিকে তাকালাম তাকিয়ে দেখি দশটা বেজে গেছে,,,

তাই আর দেরি না করে নাস্তা না করেই চলে গেলাম কলেজে অবশ্য আম্মু বলছিল না খেয়ে যেতে কিন্তু আমি তা করিনি,,,,, কোন কথা না শুনে বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম,,,

কলেজে গেটের কাছে আসতে দেখি বন্ধুরা দাঁড়িয়ে আছে হয়তো আমার জন্য তাই ওদের কাছে গেলাম,,, ওদের কাছে যাওয়া মাত্রই ওরা বলতে লাগলো,,,

√√কিরে আজকেও দেরি করে আসলি যে তুই না তাড়াতাড়ি কলেজে আসিস [শাহানুর ]
√√আর বলিস না দোস্ত আজকে ঘুম থেকে ডাক দেয় নি তাই আরকি দেরি হয়ে গেছে
√√আচ্ছা তা না হয় বুঝলাম এখন চল ক্যাম্পাসে যাই

ক্যাম্পাসে বসে বসে গল্প করছিলাম ঠিক এই সময়,,, ইমন বলে উঠলো,,,,

√√বন্ধু দেখ কলেজে নতুন আজরাঈল আসছে

আমরা সবাই তখন বড় বড় চোখ দিয়ে ওর দিকে তাকালাম আর বলতে লাগলাম

√√আজরাইল আসছে কি বলছি যে সব পাগল নাকি,,,,
√√বিশ্বাস না হলে গেটের দিকে তাকিয়ে দেখ

ওর কথা শুনে আমরা সবাই একসাথে গেটের দিকে থাকলাম আর তাকানোর সাথে সাথে আমি বুঝতে পেরে গেলাম ওর দেখা আজরাইল টা কে,,,,

অবশ্য সবাই না ছিল আমি ঠিকই চিনতে পেরেছি কারণ,,, ওর ওই দু চোখের মায়াতে আমি প্রেমে পড়েছি

তবে আজকে ঈশিতা প্রতিদিনের মতো কালো বোরখা পড়ে আসেনি আজকে ওর সবকিছু সাদা এমনকি চোখ দুটো সাদা,,, শুধু হালকা গারো করে কাজল দিয়েছে দুচোখে,,,

এজন্যই ওর মায়া আরো দ্বিগুন বেড়ে গিয়েছে আমার কাছে,,,

√√বন্ধু তোরা বস আমি আসছি
√√কোথায় যাচ্ছে এখন তুই আবার
√√ঈশিতা আসছে ওর সাথে কথা বলে আসি
√√তুই তো দেখি এখন ওকে ছাড়া কিছুই বুঝিস না,,, আগে তো মেয়ের সামনে ভালো করে দাঁড়াতে পারতি না এখন এত কথাগুলো কোথা থেকে বলিস ,,,,,
√√এসব আজে বাজে কথা বাদ দে এখন আমি গেলাম

তারপর আমি ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম ইশিতার কাছে,,, এসে দেখি ঈশিতা একা একা আনমনে বসে আছে তাই আমি ওকে বলতে লাগলাম,,,,

√√কি হলো প্রিয়তম মন খারাপ,,,,
√√না তেমন কিছু না
√√তাহলে এভাবে উদাস মনে বসে আছে যে
√√এমনি ভালো লাগছে না কিছু
√√জানো কালকে রাত্রে না তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছিল,,,

আমার কাছ থেকে এমন কথা শুনে ঈশিতা আমার দিকে একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল,,,, তারপর বলতে লাগলো,,,

√√তারপর কি হয়েছিল
√√আমি তো তোমাকে দেখার জন্য তোমার বাসার সামনে চলে এসেছিলাম কিন্তু আমার তো মনেই নেই যে তুমি বাসা থেকে বের হও না,,,
√√ও আচ্ছা
√√আচ্ছা তোমার তো ফোন নেই তুমি আমারি ফোনটা নাও আমি তোমাকে কল দিব,,,
√√সরি এটা নিতে পারবো না
√√কেন এটা তো শুধু তুমি আর আমি জানব আর কেউ না
√√যদি কোনরকম ধরা পড়ে যায় আমার বাবা-মাকে মেরে ফেলবে
√√কেন তোমার বাবা তোমাকে মেরে ফেলবে কেন তোমাকে অধিকার নেই কাউকে ভালোবাসার
√√আছে তবে সেটা বিয়ের পর
√√জানো তোমাকে দেখার পর থেকে না আমার পুতুল ঘুমানোর আগে তোমার কথা মনে পরে আর খুব কথা বলতে ইচ্ছা করে তোমার সাথে কিন্তু তা আর হয়ে উঠে না তাই বলছিলাম
√√আমারো তো ইচ্ছা করে কিন্তু,,,,
√√আমি আর কোন কিন্তু শুনতে চাইনা তুমি এখন একটা নিবে,,,,,
√√আচ্ছা তা না হয় নিলাম কিন্তু একটা শর্ত আছে
√√তোমার সব শর্তে আমি রাজি কিন্তু এমন কোন শর্ত দিবেনা যেটা আমি মানতে পারব না
√√আরে পাগল আমি তোমাকে এমন কিছু বলবো না যাতে তুমি আমাকে হারিয়ে ফেলো
√√তাহলে হয়তো বুঝতে পারছ আমি তোমাকে কতটা পছন্দ করি
√√আচ্ছা এখন আমার শর্তটা শোনো,,,,,, তুমি তখনই আমাকে ফোন দিতে পারবে যখন আমি তোমাকে ফোন দিব
√√আচ্ছা শর্তটা মানলাম কিন্তু রাত্রে কিন্তু অবশ্যই আমাকে ফোন দিতে হবে কারণ ওই টাইমে না তোমার সাথে কথা বলতে খুব ইচ্ছা করে
√√আচ্ছা দিব এখন যাই
√√যাই মানে কোথায় যাবে একটু বস
√√তোমার তো শুধু আমার পাশে বসে থাকলে কাজ হয়ে যাবে আমার তো আর হবেনা ক্লাস আছে সময় দেখেছ কটা বাজে
√√ও হ্যাঁ তাইতো আচ্ছা চলো ক্লাসে চলে যায়

তার পর আমি আর ঈশিতা দুজন একসাথে ক্লাসে চলে গেলাম,,,, ইশিতার একটা জিনিস খুব ভালো লাগে যখন ক্লাসে স্যার আসবে শুধু স্যারের কথাগুলো শুনবে আর কারো কথা নয়,,,

আর আমার কথা কি বলব আমি শুধু ওর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি কারণ ওর চোখে যে কি আছে আমি নিজেও জানিনা,,, কি পরিমান মায়া জোর চোখের ভেতর লুকিয়ে রেখেছে সেটা মনে হয় শুধু আমি দেখতে পাই

হয়তো মেয়েটিকে আমার জন্য বিধাতার সৃষ্টি করেছে,,,
আমার কথা কি বলব আমি শুধু ওর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি কারণ ওর চোখে যে কি আছে আমি নিজেও জানিনা,,, কি পরিমান মায়া জোর চোখের ভেতর লুকিয়ে রেখেছে সেটা মনে হয় শুধু আমি দেখতে পাই

হয়তো মেয়েটিকে আমার জন্য বিধাতার সৃষ্টি করেছে,,,

যাই হোক তারপর ক্লাস শেষ করে আমার ঈশিতা একসাথে ক্লাস থেকে বের হলাম তারপর ক্যাম্পাসে গিয়ে বসলাম,,, ক্যাম্পাসে বসে বসে আমি আর ঈশিতা কথা বলছিলাম ঠিক এই মুহূর্তে ওর বাবা এসে সামনে দাঁড়ালে,,,, আর ঈশিতা তখন নরম সুরে বলল,,,

√√_বাবা তুমি এইখানে,,,
√√কেন আমাকে বুঝি এইখানে আশা করোনি তুমি তাও আবার এত সুন্দর একটা মুহূর্তে
√√কি বলছে এসব তুমি বাবা
√√আমি কি তোমাকে এই জন্য ভার্সিটিতে ভর্তি করেছি তুমি কি আমাকে এই জন্য বলছি যে তুমি আরো পড়ালেখা করতে চাও,,,, আজকে দৃশ্যটা দেখার জন্য কি আমি তোমার ভার্সিটিতে এসেছিলাম
√√বাবা আসলে ও,,,,

ঈশিতাকে আর কোন কথা বলতে না দিয়ে ওর বাবা বলতে লাগলেন,,,,

√√তুমি চুপ করো আমি তোমার কাছ থেকে আর কোন কথা শুনতে চাই না,,,,,

তারপর ঈশিতার বাবার আমার সামনে আসলেন আর বলতে লাগলেন,,,,

√√এই ছেলে তোমার নাম কী
√√জি,,,,সিয়াম মাহমুদ
√√ওর সাথে তোমার কিসের সম্পর্ক
√√আসলে আঙ্কেল
√√আমি তোমাকে যা বলছি তুমি সেটা উত্তর দাও আর কোন কথা আমি শুনতে চাই না

ঈশিতার বাবার কাছ থেকে এমন কথা শুনে আমি চোখ বন্ধ করে বলে ফেললাম,,,,

√√আমি ওকে ভালোবাসি
√√আজকের পর থেকে যেন আমি তোমাকে আর ওর সাথে না দেখি,,,, আর যদি দেখেছি তাহলে পরবর্তী সময় তোমার সাথে কোন রকম কথা বলবো না,,,, পুরোপুরি কাজ করে দেখাবো,,,

কোথা থেকে কি হয়ে গেল কিছু বুঝতে পারলাম না আমি শুধু হা করে তাকিয়ে রইলাম আর কথাগুলো শুনলাম,,,, আর ওইদিকে ঈশিতার বাবা ঈশিতাকে নিয়ে চলে গেল,,,,

তাই আমিও আর ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে না থেকে বাসায় চলে আসলাম,,,, প্রতিদিনের মতো বন্ধুদের সাথে ঘোরাঘুরি পড়ালেখা ঘুম এসবের মধ্য দিয়ে দিনটা চলে গেল,,,

এতক্ষণ ইশিতার কথা মনে না পড়লে এই মুহূর্তে ঠিক মনে পড়ছে কারণ এখন আমি বিছানায় শুয়ে আছি রাতে ঘুমানোর জন্য,,, ফোনটা হাতে নিয়ে ভাবছি যদি এখন একটা ফোন দিত তাহলে ওর সাথে কথা বলতে পারতাম,,,,

ভাবতেই দেখি ইশিতা আমাকে ফোন দিল,, আর ফোন আসার সাথে সাথেই আমি ফোন রিসিভ করে বলতে লাগলাম,,,,

√√বাসায় কোনো সমস্যা হয়েছিল

ঈশিতা আমাকে নরম সুরে বলল,,,,

√√না,,, শুধু একটু মেরেছে
√√কি বলছো তোমাকে মেরেছে আর তুমি বলছো কোন সমস্যা হয়নি,,,, খুব মেরেছে
√√না শুধু দুটো চড় দিয়েছেন
√√ও আচ্ছা এখন নাহয় তুমি ঘুমাও তাহলে
√√শোনো তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল,,,

ঈশিতা যখন এই কথাগুলো বলছিল তখন কন্ঠটা কেমন ভেজা ভেজা লাগছিল,,,

√√হ্যাঁ বল,,,
√√তুমি আমাকে ভুলে যেতে পারবে
√√আমি কি তোমাকে ভুলে যাওয়ার জন্য ভালোবেসেছি,,,
√√সোন তুমি বরং আমাকে ভুলে যাও কারণ পরবর্তী সময় যদি আমার বাবা তোমাকে আমার সাথে দেখে তাহলে তোমাকে মেরে ফেলবে,,,,
√√এই পাগলি তুমি কার জন্য কান্না করছো তুমি দেখে নিও আমার কিচ্ছু হবে না,,,,
√√তুমি কি রোবট নাকি যে তোমার কিচ্ছু হবে না
√√তুমি দেখে নিও যদি আমি তোমাকে সত্যি ভালোবেসে থাকি তাহলে তুমি আমারি হবে,,,, আর তুমি কান্না করা থামবে আমার কিন্তু একটুও ভালো লাগছে না,,,,,

ঈশিতা সাথে কথা বলছিলাম হঠাৎ করে ফোনটা কেটে গেল,,, ভাবতে লাগলাম ও ধরা পড়ে গেল না তো যে আমি ওকে ফোনটা দিয়েছি,,, হাজার চিন্তা মাথায় ঢুকে গেল,,,, কাল ভার্সিটিতে গিয়ে তার সাথে কথা বলে সবকিছু ক্লিয়ার হতে হবে,,,,

এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি,, ঘুম থেকে উঠে আমি অবাক হয়ে গেলাম,,, কারণ প্রতিদিন টুম্পা আমাকে ডাক দেয় আজ তো ডাক দেয় নি অথচ আমি খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়েছি,,,,

হয়তো আমার মনটা ভার্সিটিতে পড়ে আছে তাই,,,, তাই তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে কলেজে চলে গেলাম,,, ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখি খুব কম মানুষই এসেছে তাই আমি বসে বসে ঈশিতার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম,,,

প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর তার দেখা মিলল,,, আরো কোনো কথা না বলে সোজা কলেজের পিছনে চলে গেল,,, আর আমি ওর সাথে কথা বলতে হই দিতে চলে গেলাম,,,

কারণ আমি জানি ও আমার সাথে কথা বলার জন্যই ওই দিকটাতে গিয়েছে,,, আমি কলেজে পিছনের দিকে গিয়ে দেখি ঈশিতা আনমনে সামনের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,,

√√কি হল আমার প্রিয় তোমার মন খারাপ
√√মন খারাপ হবে না জানো কালকে রাত্রে আম্মু দেখে ফেলেছে আমি তোমার সাথে কথা বলছিলাম
√√আমি এটা রাত্রি বুঝতে পেরেছিলাম কারণ তুমি যখন ফোনটা কেটে দিয়ে বন্ধ করে রেখেছিলে,,,

√আম্মু আমাকে একটা বকা দেয় না কিন্তু শুধু বলেছে তোর আব্বু জানতে পারলে তো অনেক মারবে আর সাথে তোমাকেও,,,

আর আমি তখন ঈশিতার দু গালে হাত রাখলাম আর বলতে লাগলাম,,,

√√আচ্ছা তুমি এমন কেন

ঈশিতা কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে আমাকে বলল,,,

√√কেমন,,,,
√√একদম ছোট বাচ্চাদের মত
√√তুমি বললেই হলো,,,,
√√তুমি যদি বাঁচায় না হও তাহলে এভাবে ছোট বাচ্চাদের মত শুধু কান্না করো কেন
√√আমার ভালো লাগে তাই
√√কিন্তু তোমার কান্না দেখে তো আমার ভালো লাগেনা,,, মাঝেমধ্যে একটু হাসিও পায় যেমন এখন খুব হাসি পাচ্ছে কিন্তু হাসতে পারছি না
√√তুমি সব জায়গায় শুধু মজা করো,,, আমি আছি তোমাকে নিয়ে চিন্তায় আর তুমি কিনা বলছো এখন হাসি পাচ্ছে,,,,, আমি কান্না করছি কোথায় আমাকে একটু বলবে যে কান্না করো না |তা না করে তুমি
√√হয়েছে হয়েছে,,,, আর বলতে হবে না অনেক বলেছ এখন একটু চুপ কর,,,,

তারপর আমার কথা শুনে ঈশিতা চুপ করে গেল,,, আর চোখের পানি গুলো এমন ভাবে মুচসল যাতে করে চোখের কাজল সব নষ্ট হয়ে গেল আর আশেপাশে রয়ে গেলাম,,,,,

√√তুমি শুনে একটা ছোট বাচ্চা
√√তুমি আবার আমাকে বাচ্চা বলছো
√√আছে নাকি তুমি বলো তোমাকে চুপ করতে বলেছি চোখের পানিগুলো তো মুছতে বলিনি
√√চোখে পানি মুছবো না তো এভাবে রেখে দেবো
√√এভাবে রাখবে কেন চোখের পানি মুছতে হবে একটু ভালোভাবে মুছে দেখো তো তুমি তোমার চোখে আশেপাশে কাজল দিয়ে কি করেছো,,,, একদম আজরাইল এর মত দেখা যাচ্ছে
√√কি তুমি আমাকে আজরাইল বললে,,, আমি কি দেখতে আজরাইল এর মত,,,, যাও তোমার সাথে আমি আর কথা বলবো না
√√আরে আমি কি ওটা বলছি নাকি আমি বলছি এখন তোমাকে এমন দেখা যাচ্ছে

তারপর আমি পকেট থেকে টিস্যু বের করে,,, ইশিতার চোখের আশেপাশের চুলগুলো ঠিক করে দিচ্ছি আর বলছি,,,,

√√তোমার কি কোন ধারনা আছে তোমারি চোখের কাজলে কত মায়া লুকিয়ে আছে,,,
√√ঈশিতা শুধু আমার দিকে তাকিয়ে আছে
√√এভাবে তাকিয়ে থেকো না মায়ায় পড়ে যাবে,,,,পরে কিন্তু চাইলেও আর ভুলতে পারবে না আমাকে
√√আমি তো চাই যাতে আমি তোমাকে ভুলতে না পারি,,,

তারপর এভাবে ঈশিতার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে ক্লাস শেষ করে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় যাচ্ছিলাম,,,,,

ঠিক তখনই কোথা থেকে যেন কতগুলো লোক এসে আমাকে মারতে লাগল,,, মারতে মারতে এক পর্যায়ে আমাকে বলতে লাগলো

√√তোকে আমি আগেই বলেছিলাম যে ঈশিতা সাথে কোনরকম যোগাযোগ করবে না কিন্তু তুই তার পরেও আজকে আবার চলাচল করছিস

ওদের এমন কথা শুনে আমার বুঝতে বাকি রইল না যে ওরা কি জন্য আমাকে মারছে আর ওরা কারা,,, আমাকে মারার পর যখন ওরা চলে যাচ্ছিল তখন আমি একটু মুচকি হেসে ওদেরকে বলছিলাম,,,,

√√আমাকে মারলে কি আমি আমার ভালোবাসাকে ভুলে যাব,,, যদি এটা ভাবো যে আমি ঈশিতাকে ভুলে যাবো একটু আমাকে মারলেই,,,, তবে এটা তোমাদের সম্পূর্ণ ভুল ধারণা,,

ওকে ভালোবেসেছি,,,, কতটুকু ভালবাসি সেটা বলবো না শুধু ভালোবাসি এটাই জানি,,, তবে যে কিছু বকাটে ছেলে আমাকে সে মারবে আর বলবি তুই তাকে ভুলে যা এর জন্য যে আমি ঘুমোতে একটা মেয়েকে আমার লাইফ থেকে সরিয়ে দেবো তা তো আর হয় না

√√তোকে এত মারার পরেও কি তোর শিক্ষা হলো না
√√জোর করে ভালবাসা হয় না আর আমিতো ঈশিতাকে কোনরকম ডিস্টার্ব করিনি ভালোবেসেছি,, আশাকরি ঈশিতাও আমাকে অনেকটা ভালোবাসি

তারপর ওরা চলে গেল আর আমি ওখানে বসে রইলাম একটু পর বুঝতে পারলাম আমার মাথা থেকে রক্ত পরছে তার মানে মাথাটা একটু ফেটে গেছে,,,,তাই দেরি না করে ডাক্তারের কাছে চলে গেলাম মাথাটা ব্যান্ডেজ করে আর শরীরে কিছু জায়গায় ব্যান্ডেজ করে চলে আসলাম বাসায়

বাসায় আসতেই আম্মু আমাকে দেখে কান্না করে দিল আর বলতে লাগলো,,,,

√√কি হয়েছে বাবা তোর,,, মাথায় ব্যান্ডেজ করার কেন কে মেরেছে বল
√√মা তুমি চিন্তা করো না একটু ব্যাথা পেয়েছি আর আমাকে কেউ মারেনি অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে একটা ছোট্ট ,,,,

তারপর আমি আম্মুর সাথে আর কিছু কথা বলে রুমে চলে আসলাম,, ইচ্ছে করেই আম্মুর সাথে বেশি কথা বলিনি কারণ আর একটু কথা বলে আম্মু বুঝে যাবে যে আমি একসিডেন্ট করিনি কারও হাতে মার খেয়েছি তাও একটা মেয়ের জন্য,,,,,

রাতে আব্বু এসে আমাকে দেখে গেল আর আমি আব্বু ঠিক একই রকম কথা বললাম যে ছোট্ট একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে,,, আর টুম্পার কথা কি বলব সারাক্ষণ আমার পাশে বসে আছে,,,

আর একটু পর পর চোখ দিয়ে পানি ফেলছে,,, আসলে আমার বোনটা যে আমাকে কতটা ভালোবাসে তা তো আমি জানি,,, যখন একটু রাত হল আমি ওকে বললাম ঘরে চলে যেতে আমাকে কি বলল জানেন,,,, ও আমাকে বলেছিল যে ভাইয়া রাতে যদি তোর পানি পিপাসা লাগে,,, তোর তো পায়ে ব্যথা কিভাবে যাবি আমি না হয় তোকে পানি এনে দেব

কখন যে ঘুমিয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি,,,, ঘুম থেকে উঠে নিজেকে অনেকটা সুস্থ মনে হচ্ছে আর ঝুম্পাকে দেখি আমার পাশেই খাটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে,,,

তারপর ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম ক্যাম্পাসে,,,,, ক্যাম্পাসে যাওয়ার সাথে সাথে ঘটলো আরেক ঘটনা,,,কোথায় আমি আমার বোনের জন্য রাত জাগবো তানা ও আমার জন্য রাত জাগতেছে।।

,কারণ,,,,,বন্ধুরা আমার মাথায় ব্যান্ডেজ দেখে খুব অবাক হয়ে গেল,,,, আর খুব উত্তেজিত হয়ে বলতে লাগল,,,

√√এই দোস্ত মাথা কি হয়েছে কেন,, [ইমন ]
√√কেউ কি তোকে মেরেছে বল আমাদের =[শাহরিয়ার ]
√√তোর শরীর থেকে যতটুকু রক্ত বেরিয়েছে তার থেকে দ্বিগুন আমরা যাব [রাব্বি ]
√√আরে তোরা এমন ভাবে উত্তেজিত হচ্ছিস কেন আমার কিছুই হয়নি জাস্ট একটু এক্সিডেন্ট
√√মিথ্যা কথা,,,,

সবাই চমকে উঠলাম আর সবথেকে বেশি ভয় তো আমি পেয়ে গেলাম কারণ আমি বলেছি এটা জাস্ট একটু অ্যাক্সিডেন্ট পেছন থেকে যে মিথ্যা কথা বলে কেউ আওয়াজ করবে তা তো কখনো ভাবতে পারিনি,,,

পেছনে তাকিয়ে দেখলাম ঈশিতা,,, একটু একটু করে আমার কাছে এসে আমার মাথা ব্যান্ডেজ এ হাত রাখল,, আর আমি তখন স্পষ্ট তার চোখে পানি দেখতে পেলাম,,,,

তখন ঈশিতা সবার উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো,,,,

√√ও অ্যাক্সিডেন্ট করে নি
√√তার মানে কি বলতে চাচ্ছেন ও এখন আমাদের সাথে মিথ্যা কথা বলেছে [শাহানুর ]
√√হ্যাঁ ও মিথ্যা কথা বলেছে,,,
√√তাহলে সত্যটা কি একটু দয়া করে বল [রাব্বি ]
√√ওকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়েছে

ঈশিতার কাছ থেকে এমন কথা শোনার সাথে সাথেই সব বন্ধুরা আমার দিকে একটু রাগী দৃষ্টিতে তাকাল আর বলতে লাগলো,,,

√√তুই আমার সাথে মিথ্যা কথা বললে কেন,,,[শাহানুর ]
√√ওসব কথা পরে হবে কে মেরেছে আগে সেটা বল,,, [রাব্বি ]

এসব কথার মাঝখানে থেকেই নরম সুরে মাথা নিচু করে ঈশিতা বলে উঠলো,,,,

√√আমার বাবা
√√ইমন রাফি শাহনূর তোর আমার ভালো বন্ধু আর যদি তোদের মধ্যে কারো এমন কিছু একটা হত আমিও খুব রাগ করতাম রাগ করাটাই স্বাভাবিক,,,,

তবে হ্যাঁ আমি চাই না এর জন্য কোনো রকম ঝগড়া হোক,,, মারামারি রক্ত এসব একদমই ভালো লাগে না
হ্যাঁ ঈশিতা বাবার লোকের আমাকে মেরেছে,,, মেরেছে তো কি হয়েছে,,,,

এখন কি এর জন্য আবার ওর বাবার লোকেদের মারতে যাব আমরা,,,, তা কখনও নয়,,,, কারণ মাইরের বদলে মাইর দিলে কি সব ঠিক হয়ে যাবে,,, কখনো ঠিক হবে না,,, তার থেকে বরং এটা আরও বড় আকার ধারণ করবে

একটা কথা কি জানিস তোরা,,,,

√√সরাসরি বলে ফেলো এতো পেচিয়ে কথা না বলে কি বলতে চাচ্ছিস তুই,,,,
√√পৃথিবীতে কোন একটা প্রাণী যদি তোকে ঘৃণা করে,,, তাহলে তুই তার মধ্যখানে জয় করতে হবে যখন তুই ওকে ভালোবাসা দিবি,,,, আর সবথেকে বড় কথা হচ্ছে,,, যিনি গতকাল আমাকে মেরে রক্তাক্ত করেছে তিনি বেশি তার বাবা,,,

আমার ভালোবাসার মানুষের বাবা,,, আর এখন যদি আমরা ওই মানুষটিকে মেরে রক্তাক্ত করে আসি তাহলে হয়তো আমার এই ভালবাসার মানুষকে খুব কাঁদবে,,,, হ্যাঁ হয়তো ঈশিতা বলবে যে কোন কথা কাজটা ঠিক করেনি আমাদেরকে ও এ কাজটা থেকে আটকাবে না কিন্তু রাতের আঁধারে ঠিকই ও ওর বাবার জন্য অজরে চোখের জল ফেলবে,,,,

মাতা-পিতা যতই খারাপ হোক না কেন সে তো মা আর বাবাই,,, আর আমি চাইনা ঈশিতা কোনোরকম কষ্ট পাক,,,, আমাকে মেরেছে এটা আমার কোন কষ্ট নেই,,

আর হ্যাঁ তোদেরকে একটা কথা বলি কিছু মনে করিস না ,,,, তোরা হয়তো ভাবছিস আমি তোদের কথা না রেখে ইশিতার কথা ভাবলাম,,,, হয়তো আমার কাছে এই ভাবনাটা ভুল কারণ,,,, ঈশিতা আমার ভালোবাসা,,,আর তো আমার সেই ভালোবাসাকে ভালো রাখার ছায়া,,,

কথাগুলো বলে যখন ইসিতার দিকে তাকালাম তখন দেখি ইশিতা অজরে কান্না করছে ,,,,, আর তখন রাব্বি ঈশিতার কাছে গেল আর বলতে লাগলো,,,

√√জীবনে যদি কোন ভালোবাসার মানুষ পেয়ে থাকিস তাহলে আমার এই বন্ধুকে পাবি,, কারণ ওর থেকে বেশি ভালোবাসা তোকে আর কেউ দিতে পারবে না,,, ভালবাসতে পারবে না,,, দেখেছিস তোকে ছাড়াও তোর ফ্যামিলিকে কেয়ার করে কারণ ওদের যদি অযত্ন হয় তাহলে কষ্ট পাবি তুই ,,,, দেখেছিস আমার বন্ধুটা কখনোই চায় না যে তুই কষ্টে থাক,,,,

যদি জীবনে কখনো তোর আমার এই বন্ধুটাকে খারাপ মনে হয় তাহলে একবার ভেবে দেখিস চলে যাওয়ার আগে,,,,, তুই চলে গেলে এই ছেলেটির কি হবে,,,,

তারপর শাহানুর আমার কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো আর বলতে লাগলো,,,,

√√তুই আজকে আবার প্রমাণ করে দিলে ভালোবাসার থেকে বড় কিছু আর হয় না রে,,,, জীবনে যতদিন বেঁচে থাকবো তোদের জন্য দোয়া করব,,, যাতে তোরা খুব সুখী হতে পারিস ,,,,,

ওরা কথাগুলো বলে তিনজন একসাথে চলে গেল,,, শুধু ওই জায়গায় রয়ে গেলাম আমি আর ঈশিতা,,, আর তখন সে তার দিকে চেয়ে দেখি এখনো মেয়েটির কান্না করে যাচ্ছে,,,,

√√এই যে পাগলি তুমি এখনো কান্না করছো

শুধু আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলছে,,, হঠাৎ করে আমাকে জড়িয়ে ধরল,,,, আর আমি যখন বলতে লাগলাম,,,

√√কি হলো পাগলী টা মনে হয় খুব গভীরভাবে আমার প্রেমে পড়ে গেছে,,,, তা এভাবে সবার সামনে আমার বুকে না পড়ে থেকে একটু ওঠা যাবে,,,,

তারপর ঈশিতা আমার বুক থেকে ওর মাথাটা সরিয়ে বলতে লাগলো,,,,

√√এতো ভালোবাসো আমায়
√√তুমি কি জানো তোমাকে পাওয়ার জন্য আমি কতগুলো বছর অপেক্ষা করেছি,,,

আমার সব বন্ধুরাই সেভেনের থেকেই প্রেম করত কিন্তু আমি করতাম না তার একটাই কারণ ছিল আর সেই কারণ কি হলো তোমার মতো একটি মেয়েকে আমি খুজছিলাম,,,,,

আর ভাবতাম যদি কোনদিন মেয়েটাকে পেয়ে যায় তাহলে ওই আমার হবে জীবনের প্রথম ভালোবাসা,,, জানিনা তুমি আমার জীবনসঙ্গী হতে পারবে কিনা কিন্তু এটা জানি যে তুমি যদি আমার ছেড়ে চলে যাও তাহলে হয়তো আমি আর আসতে পারবো,,,, তখন হয়তো বাঁচার ইচ্ছেটাই শেষ হয়ে যাবে,,,

চলবে_________________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here