“নেতার মেয়ের সাথে প্রেম পর্ব_০৪

#গল্প: নেতার মেয়ের সাথে প্রেম
#পর্ব_০৪
……

ছাড়ুন আমাকে,,,, সবকিছু আপনার জন্য হয়েছে আপনি জানতেন আমার বাবার লোক গুলো আপনার সাথে এমন করলে রাব্বি ভাইয়া খুব বকা দিবে আমাকে,,,, তাই আপনি ইচ্ছা করে এমন কিছু করেছেন আমার সাথে,,, যাতে ভাই আমাকে বকা দেয় আর আপনি খুশি হন

ঠিক এই মুহূর্তে ঈশিতার মুখটা দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছে কারণ ও চোখের পানিগুলো দুই হাত দিয়ে মুছে আর কথাগুলো বলছে,,,

√√দেখেছেন আমি একদম সত্য কথা বলেছি আমি কান্না করছি আর আপনি হাসছেন,,, তার মানে কি দাঁড়ায় ভাই আমাকে বকা দিয়েছে আর আপনারা খুশি হয়েছেন তাই না,,, [ঈশিতা ]
√√তুমি ভুল ভাবছো,,,, আমি তোমাকে দেখে হাসছি
√√হাসবে নিতো এখন তো আমি হাসির পাত্র তাইতো হাসবেন,,,,
√√সত্যি কথা আমি এইসব কিছু জানতাম না আর এমন কিছু হয়ে যাবে আমি কখনো ভাবতে পারিনি আর তুমি শুধু শুধু ছোটদের মত কান্না করছ কেন

ঈশিতার সাথে কথা বলছিলাম ঠিক এই মুহূর্তে দেখি রাব্বি ইমন আর শাহরিয়ার এসে দাঁড়িয়েছে আর রাব্বি বলতে লাগলো,,,,

√√এই মেয়ে কি এখন এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছিস তাও আবার ওর সাথে তোকে নিয়ে কি বললাম তোর কানে যায়নি,,,,

যখন রাব্বি ঈশিতাকে এই কথাগুলো বলছিল ঠিক এই সময় ঈশিতা একবার আমার দিকে আরেকবার রাব্বির দিকে তাকাচ্ছিল,,,, হয়তো আশা করছিল আমি কিছু একটা বলব,,,

√√আসলে ভাইয়া,,,,, [ঈশিতা ]

ঈশিতা কে থামিয়ে দিয়ে রাব্বি বলতে লাগলো,,,

√√আসলে ভাইয়া মানে কি আসলে ভাইয়া এক চড় দিয়ে সব দাঁত ফেলে দেবো আমার কথা কানে যায় না,,,

এখন রাব্বির ধমকে ঈশিতা একটু শব্দ করে কান্না করে দিল,,, আর এটা একদম আর ভালো লাগলো না,, আর আমার এই ব্যাপারটা আর কেউ না বুঝলেও শাহরিয়ার বুঝে গেছে

√√কি হলো এখন এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছিস কেন যা এখান থেকে,,,

ঈশিতা যখন যাওয়ার জন্য অন্যদিকে ফিরল ঠিক এই মুহূর্তে আমি হাটা ধরলাম আর বলতে লাগলাম,,,,

√√দাঁড়াও ঈশিতা,,,,

ইশিতা পিছনে ঘুরে আমার হাতের দিকে তাকিয়ে আছে আর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে এটা স্পষ্ট ভাবে আমি দেখতে পেলাম,,,, আর তখন আমি রাব্বি কে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলাম,,,,

√√অনেক হয়েছে রাব্বি আর না,,, তুই শুধু শুধু মেয়েটার সাথে এমন করতে পারিস না,,, তুই ওকে কেন বকছিস,, দেখতে পাচ্ছিস মেয়েটা কান্না করছে তাও ওকে বকে যাচ্ছিস কোথায় আমাকে তো কিছু বললি না ভুলটা তো আমারই ছিল আমিতো ওকে ওই জায়গা থেকে হাত ধরে নিয়ে আসলাম কই কিছু বল আমাকে,,,
√√তুই ওই মেয়েটার জন্য আমাকে সব বলছিস,,,,
√√হ্যাঁ বলছি তার কারণ আমি যদি তোর কোন একটা প্রিয় মানুষকে এভাবে বকতাম আর তোর প্রিয় মানুষটা যদি কান্না করত তোর সামনে তখন কেমন লাগছে তোর,,,,

আমার কাছ থেকে এমন কথা শুনে ঈশিতা আমার দিকে বড় বড় চোখ দিয়ে তাকিয়ে রইল আর রাব্বি স্তব্ধ হয়ে গেল আর বলতে লাগলো ঈশিতা কে,,,,,

√√দেখেছিস তোর জন্য আমার সাথে কিভাবে কথা বলছে আর তুই ওকে মারার জন্য তোর বাবাকে বললে,,, কে কাকে কতটা ভালোবাসে সেটা একটু যাচাই করে নিস তারপর না হয় কিছু একটা করবি,,,
√√আমিতো বাবা কেউ না সম্পর্কে কিছু বলিনি দেখে ফেলেছিল বাবার লোকেরা,,,[ঈশিতা ]

আমি তখন ঈশিতার হাতটা ছেড়ে দিলাম,,,, আর তখনই ইমন বলতে শুরু করলো,,,,

√√আরে দোস্ত ছেড়েছিস কেন ধরে রাখনা এখন থেকে না হয় আমরাই পাহারা দিব যাতে ওর বাবা দেখতে না পায়,,,

মনের কাছ থেকে এমন কথা শুনে ঈশিতা একটু লজ্জা পেয়ে গেল,,, যা ওর চোখ দেখে কি কি বুঝা যাচ্ছে,, আর তখন রাব্বি ইশিতাকে বলতে লাগলো,,,,

√√হয়েছে আর মন খারাপ করে থাকতে হবে না আমি তো তোর সাথে একটু মজা করলাম দেখলাম তুই আমার বন্ধুর সাথে কেমন করতে পারিস,,,

রাব্বির কাছ থেকে এমন কথা শুনে আমরা সবাই একটু অবাক হয়ে গেলাম আর ঈশিতা রাব্বির দিকে করুন দৃষ্টিতে চেয়ে রইল,,,, আর তখন আবার রাব্বি বলতে লাগলো,,,

√√আমি জানি তুই অনেক ভালো একটা মেয়ে তবে আমার বন্ধু কিন্তু খারাপ নয় তাহলে তুই বুঝে গেছিস

তখন ইশিতা ছোট্ট করে বলল,,,

√√হুমমমম
√√আর হ্যাঁ আমার বন্ধু কিন্তু তোর রূপ লাবণ্য দেখে প্রেমে পড়েনি,,, তুই জানিস বন্ধু আমাকে বলেছে তুই নাকি তোর চোখের নিচে কাজল এর ভেতর মায়া লুকিয়ে রাখিস একমাত্র আমার বন্ধু দেখতে পারে আর কেউ নয়,,,,

রাব্বিকে ওই দিন এই কথাটা বলেছিলাম কিন্তু হারামিটা যে এইভাবে ঈশিতাকে এই কথাটা বলে দিবে তা কখনো ভাবতে পারেনি,,,, তবে হ্যাঁ রাব্বির কাছ থেকে এমন কথা শুনে খুশিতে আমার দিকে শুধু তাকিয়েই রয়েছে,,,

√√কি হলো শুধু কি ওর দিকে তাকিয়ে থাকবি না কি

এমন একটা কথা শুনে ঈশিতা লজ্জায় চোখ নিচের দিকে দিয়ে দিল,,,, তখন আবার রাব্বি বলব

√√কি হলো কিছু বলছিস না যে,,,,, নিশ্চয়ই হয়তো ওকে ভালো লাগেনি তো তাইতো,,,

ঈশিতা একটু লজ্জা পেয়ে ছোট্ট করে বলল,,,,

√√জানিনা আমি,,,

আর এই কথাটা বলার পর ঈশিতা চলে গেল হয়তো কিছুক্ষণ থাকলে রাব্বি ওকে এমন কথা বলতো যাতে করে ও আরও লজ্জায় পড়ে যেত,,,,

আর ঈশিতা চলে যাওয়ার পর ওরা দেখি আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে ওদের এই চাউনি দেখে আমি বুঝতে পারলাম নিশ্চয়ই কোনো কুমতলব আছে,,,

আমি যখন উল্টো দিকে দৌড় দিতে যাব ঠিক তখনই আমাকে ধরে ফেলবো আর বলতে লাগলো,,,

√√বন্ধু তোমার নদীতে এখন নৌকা ভাসতেছে [ইমন ]
√√তো এখন আমি কি করব,,,
√√তা এখন আমাদের জীববা টা ও তো কিছু খাই খাই করতেছে কিছু খাওয়াও খুব খিদা লাগছে,,,

√√আমি এখন কিছু খাওয়াতে পারব না আমার কাছে টাকা নেই তোরা যা তো শয়তানি করবি না,,,,,
√√আমাদেরকে ট্রিট না দিয়ে এখান থেকে একটুও নড়তে পারবি না,,,,,,তা না হলে কিন্তু ওই যে পুকুর দেখছিস ধাক্কা মেরে ফেলে দেবো তুই কিন্তু সাঁতার জানিস না

ওদের কথায় আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম কারন সত্যিই সাঁতার পারিনা,,, যদি পরে ফেলে দেয় তাই ওদেরকে ঐদিন ট্রিট দিতেই হল অবশেষে ওরা হোটেলে 1100 টাকা বিল করলো তিনজনে মিলে এত যে কিভাবে খেলো আল্লাই জানে,,,,

তারপর ওদের কে বিদায় দিয়ে বাসায় চলে আসলাম আর বাসায় এসে মনে পড়ল একটা কথা যা আপনাদেরকে বলা হয়নি ,,,,,,,
তারপর ওদের কে বিদায় দিয়ে বাসায় চলে আসলাম আর বাসায় এসে মনে পড়ল একটা কথা যা আপনাদেরকে বলা হয়নি ,,,,,,,আর সে কথাটি হচ্ছে,,,

রাব্বি,,,
মানে হয়তো আপনাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে ঈশিতা যদি নেতার মেয়ে হয় তাহলে রাব্বির এত ক্ষমতা কিভাবে হল,,, আপনি হচ্ছে ঈশিতার খালাতো ভাই আর রাব্বির বাবা হচ্ছে এই এলাকার এমপি,,, যা কারনে ঈশিতা রাব্বিকে ভাইয়া বলে ডাকে,,,

যাইহোক আপনার সাথে কথা বলতে বলতে বাসায় চলে আসলাম আর বাসায় এসে কলিংবেল দেয়া মাত্রই দেখি দরজা খুলে গেল,,, আর ভেতরে না ঢুকে দরজার ওপাশ থেকে আমার ছোট্ট বোন রাত্রি বলতেছে,,,,

√√ভাইয়া আজকে তোর নামে আমার কাছে বিচার দিসি
√√কেন আমি আবার কি করলাম যা কারণে তুই বিচার দিলাম ওর কাছে
√√আজকে ক্যাম্পাসে একটা মেয়ের সাথে কি করেছিস

রাত্রির কাছ থেকে এমন কথা শুনে আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম ভাবতে লাগলাম রাত্রি সব জেনে গেল না তো,,,,

√√ক্যাম্পাসে কি,,,,, মানে কিছু বুঝতে পারলাম না তো
√√এখন কিভাবে বুঝবি যখন মেয়ের হাত ধরে টানাটানি করছিলি তখন তো ঠিকই বুঝে ছিলি তাই না

তারপর আমি রাত্রে কাছে গিয়ে ওর কানে কানে বললাম,,,,

√√কালকে তোকে আমি দুপুরে লাঞ্চ করাব তাও আম্মুকে বলিস না প্লিজ বোন
√√তা হয় কি করে আমি আর তোর ফাঁদে পা দিচ্ছি না তুই আগে আরো অনেকবার এইসব করেছিস কিন্তু পরে আমাকে দিস নি
√√এবার দিব প্রমিস
√√আমি জানি তুই এই বারো দিবি না তুই প্রতিবার এমন করিস
√√একটু তো বিশ্বাস কর আমাকে
√√আচ্ছা যা করলাম যদি কালকে আমাকে রান্না করেছিস তাহলে কিন্তু মনে রাখিস আম্মুর কাছে এসে বলে দেব যে তুই মেয়ের পিছনে ঘুরঘুর করিস ভার্সিটিতে গিয়ে
√√আচ্ছা তা না হয় বলিস এখন আমি ঘরে গেলাম তোর সাথে প্যাচাল পারার সময় আমার নেই

তারপর রাত্রি আমাকে একটা ভেংচি কেটে চলে গেল আর আমিও চলে আসলাম পরে ফ্রেস হতে,,, আর প্রতিদিনের মত আজকের দিনটা এভাবে চলে গেল

সকালে নাস্তা করে আম্মুর থেকে বিদায় নিয়ে ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য আমি রাত্রি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি একটা রিকশার খোঁজে,,,,, যাই হোক অবশেষে একটা রিকশা পেলাম আর ওটাতে করে আমরা ভার্সিটিতে গেলাম গিয়ে রাত্রি ওর জায়গায় আমি আমার জায়গায় মানে কাছে চলে আসলাম,,,,,

ক্লাসে এসে দেখি বন্ধুরাও ক্লাসে বসে আছে আমার চোখ দুটো শুধু ঈশিতাকে খুজছে,,,, ঈশিতাকে না পেয়ে ভেবে নিলাম যে এখনো আসেনি তাই আমি একটা সিটে বসে পরলাম আর বসে বসে বন্ধুদের সাথে কথা বলছিলাম,,,,,

আর ঠিক পাঁচ মিনিট পর থেকে জিনিসটা এসে আমার পাশে বসলো আর এটা দেখে সবাই অবাক হয়ে গেল,, আর আমি তো সবার আগে ইফতার দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলাম,,,,

কারণ ঈশিতাকে আজকে একদম পরীর মত লাগছে,,, নাকি ভাবছেন হয়তো ঈশিতা আজকে শাড়ি লেহেঙ্গা কামিজ এইসব পড়ে এসেছে,,,,

না,, এগুলোর মধ্যে কোনটাই ঈশিতা আজকে পড়েনি তবে হ্যাঁ,,, আজকে সে তাকে একদম অন্যরকম লাগছে চোখ একটু গাঢ় করে কাজল দিয়েছে সাদা বোরকা পরেছে,,, মানে কথা বলতে গেলে পায়ের জুতো থেকে শুরু করে মাথা পর্যন্ত সবকিছুই সাদা চোখ দুটো কাজলে ভরা,,,,,

ঈশিতার চোখের দিকে তাকালে যে এত মায়া দেখতে পায় আমি তা অন্য কোথাও দেখিনি,,,, আমি নিজে ভেবে উত্তর পাই না কি আছে ইশিতার চোখের ভেতর যার জন্য আমাকে এত টানে ওর দিকে

সবাই সবার মত আড্ডা দিচ্ছে কিন্তু আমি ইসিতার দিকে তাকিয়ে এসব কথা ভাবছিলাম তবে আমার ঘোর কাটল ঈশিতার কথা,,,,

ঈশিতা আমাকে আস্তে করে একটা খোঁচা দিয়ে বললো,,,

√√এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে না থেকে সামনের দিকে তাকান ক্লাসে স্যার এসেছে

আমাকে এই কথাটা বলে ঈশিতা মুচকি হাসছে তা ওর চোখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে,,, লজ্জার নারীদের ভিতর কে বেশি থাকলেও ঈশিতার কোথায় আমার কেমন যেন একটু লজ্জা লাগল আমি না কেমন একটা পাগল সারাদিন শুধু ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে

আমি একটু পরে ঈশিতাকে আস্তে আস্তে বললাম,,,

√√ক্লাস শেষ হলে আমি পুকুরপাড়ে তোমার জন্য অপেক্ষা করবো যদি ইচ্ছে হয় এসো,,,,

স্যার চলে যাওয়ার পর আমি ক্লাস থেকে বের হয়ে সোজা পুকুরপাড় চলে গেলাম,,, আর সেখানে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম আমার সেই প্রিয় মানুষটির জন্য,,,,

অবশেষে আমার অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো কারণ ঈশিতা পুকুরপাড়ে আসলো আর এসেই আমাকে বলতে লাগলো,,,,

√√এতক্ষণ বুঝি আমার জন্য অপেক্ষা করছিলেন
√√আপনার জন্য কেন অপেক্ষা করতে যাব আমার কি খেয়ে দেয়ে কোন কাজ নেই

আমার কাছ থেকে এমন কথা শুনে ঈশিতা যেন কেমন করে আমার দিকে তাকালো আর আমি তখন আবার বলতে শুরু করলাম,,,,

√√আমার একটা প্রিয়তমা আছে তার জন্য মেয়েদের ওয়েট করছি আর সে এখন আমার সামনে দাড়িয়ে আছে,,,
√√আপনার সাথে আমার কিছু ইম্পর্ট্যান্ট কথা ছিল
√√হ্যাঁ বলবেই তো,,,শুধু ইনপরটেন কথা কেন ছাড়াও আরো অনেক কথা বলতে পারো,,,,,
√√মনোযোগ দিয়ে শুনুন আমি এখন যা বলব আপনি কোন কথা না বলে শুধু শুনবেন
√√আচ্ছা তা না হয় শুনলাম

চলবে_________________________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here